শীত
টানা ৩ দিন দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা পঞ্চগড়ে
টানা তিন দিন দেশের উত্তর প্রান্তের হিমালয় কন্যা খ্যাত পঞ্চগড় জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বিরাজ করছে। রবিবার সকাল ৯টায় পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করে।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রাসেল শাহ জানান, গত তিন দিন ধরে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বিরাজ করছে। এর মধ্যে রবিবার (৯ জানুয়ারি) ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস, শনিবার (৮ জানুয়ারি) ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি ও বৃহস্পতিবার (৭ জানুয়ারি) ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: পঞ্চগড়ে দিনেও তাপমাত্রা কমেছে, বিপাকে দরিদ্র মানুষেরা
সংশ্লিষ্টরা জানান, জেলায় রাতে ও দিনের তাপমাত্রায় কিছুটা তারতম্য হলেও শীতের প্রকোপ কমছে না। ফলে শীতার্ত অসহায় ছিন্নমূল দিনমজুর খেটে খাওয়া মানুষ বিপাকে পড়েছে। ঘনকুয়াশা ও উত্তরের হিমেল বাতাসে জেলাবাসী বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
ফরিদপুরে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ
ফরিদপুরের বিভিন্ন এলাকায় বসবাসরত সুবিধাবঞ্চিত তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করেছেন ডিজিটাল কন্টেন্ট ক্রিয়েটর পারভেজ চোকদার।
মঙ্গলবার ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত সদর উপজেলার রথখোলা, শোভারামপুর, শিবরামপুর ও গঙ্গাবর্দীসহ বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে তাদের হাতে কম্বল তুলে দেন তিনি।
এর আগে দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের দেবিগঞ্জে ভাইরাল হওয়া ব্রেস্ট ক্যান্সারে আক্রান্ত নারীর পাশে দাঁড়িয়ে আলোচনায় আসেন তিনি।
আরও পড়ুন: জেসিআই ঢাকা এন্ট্রপ্রেনার্সের উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরণ
ইউটিউব ও ফেসবুক থেকে আয়ের একটি অংশ সমাজের অবহেলিত মানুষের উন্নয়নে নিয়মিত ব্যয় করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে পারভেজ চোকদার বলেন, তৃতীয় লিঙ্গের মানুষেরা পরিবার থাকতেও বঞ্চিত, অনেকেই তাদের কষ্টের খবরও রাখেন না।
তিনি বলেন, যে যার অবস্থান থেকে সুবিধাবঞ্চিত মানুষের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়ালে অন্তত কিছু মানুষ ভালো থাকতে পারবে। তাতে সমাজের সামগ্রিক উন্নয়ন সাধিত হবে।
তাছাড়া পারভেজ নিয়মিত সুবিধাবঞ্চিত ও অবহেলিত মানুষদের পাশে থাকবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন।
আরও পড়ুন: মিঠাপুকুরে ‘সাইল্যান্ট হ্যান্ডস সাপোর্ট’র শীতবস্ত্র বিতরণ
চাঁপাইনবাবগঞ্জে ডায়রিয়ার প্রকোপ, বাড়ছে শিশু রোগীর চাপ
চাঁপাইনবাবগঞ্জে গত কয়েকদিন ধরে শিশুদের ডায়রিয়া রোগের প্রকোপ বেড়েছে। রোটা ভাইরাসের প্রভাবে শীতের হিমেল হাওয়ার কারণে ডায়রিয়া বাড়ছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। তাই অভিভাবকদের বাড়তি সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন তারা।
জানা গেছে, বেডের তুলনায় সাত গুণ রোগী হওয়ায় হাসপাতালের বারান্দায় রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালে শীতকালীন রোটা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিন অন্তত ৬০ শিশু হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। শীতের তীব্রতা ও ঠান্ডা বাতাস থেকে রক্ষা পেতে বিশেষ ব্যবস্থা নিয়ে বারান্দার চারদিকে কাপড় দিয়ে ঘিরে দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
এদিকে, হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা শিশুর স্বজনরা ওষুধ না পাওয়ার অভিযোগ করছেন। তবে পর্যাপ্ত পরিমাণে ওষুধ ও চিকিৎসা ব্যবস্থা রয়েছে দাবি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের।
আরও পড়ুন: গাজীপুরে ডায়রিয়া আক্রান্ত ৩ শতাধিক রোগী হাসপাতালে
সদর উপজেলার মহারাজপুর গ্রামের তাসলিমা বেগম আড়াই বছরের নাতনী তাইয়েবাকে নিয়ে দুইদিন ধরে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তিনি বলেন, ওয়ার্ডের ভেতরে তো দূরের কথা বারান্দাতেই জায়গা পাওয়া যায় না। পাটি বিছিয়ে গত সোমবার (২০ ডিসেম্বর) থেকে চিকিৎসা নিচ্ছি। বাইরে থেকে সবকিছু কিনতে হচ্ছে। ওষুধ, এমনকি খাবার স্যালাইনও কিনতে হচ্ছে বাইরে থেকে।
মৃদু শৈত্যপ্রবাহ: পঞ্চগড়ে জনজীবনে দুর্ভোগ
গত কয়েকদিন থেকে পঞ্চগড়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বিরাজ করছে। হিমালয় কন্যা পঞ্চগড়ে উত্তরের হিমেল হাওয়ায় জনজীবনে দুর্ভোগ বেড়েছে। ঘনকুয়াশার পাশাপাশি মৃদু শৈত্যপ্রবাহে অসহায়, ছিন্নমূল, দিনমজুরসহ খেটে খাওয়া মানুষ কাঁবু হয়ে পড়েছে।
বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে দেখা গেছে, তীব্র শীতের মধ্যেও বিভিন্ন এলাকায় দিনমজুর, খেটে খাওয়া মানুষদের কাজ করতে হচ্ছে। কৃষক শ্রমিকরা মাঠে হাল চাষে ব্যস্ত। তবে গ্রামাঞ্চলের দরিদ্র পরিবারগুলোর বাড়ির সামনে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণে চেষ্ট করছে। শিশু ও বৃদ্ধসহ অনেকেই একত্রে মিলে রোদ পোহাতে দেখা গেছে।
আরও পড়ুন: পঞ্চগড়ে দিনেও তাপমাত্রা কমেছে, বিপাকে দরিদ্র মানুষেরা
শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জেলা সদরসহ বিভিন্ন হাসপাতালগুলোতে শিশু ও বৃদ্ধসহ বিভিন্ন বয়সীরা ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্টসহ শীত ও শীতজনিত নানা রোগী ভর্তি হয়েছেন। হাসপাতালগুলোতে কোন শয্যা ফাঁকা নেই। বহির্বিভাগেও রোগীর চাপ বেড়েছে।
পঞ্চগড়ে দিনেও তাপমাত্রা কমেছে, বিপাকে দরিদ্র মানুষেরা
পঞ্চগড়ে দিনেও তাপমাত্রা কমতে শুরু করেছে। বিকাল থেকে সকাল পর্যন্ত বইছে উত্তরের হিমেল হাওয়া। শৈত্যপ্রবাহের কারণে জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে অসহায় ছিন্নমূল, দিনমজুর, খেটে খাওয়া গ্রামীণ জনপদের দরিদ্র সাধারণ মানুষরা পড়েছে বিপাকে।
সোমবার সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে ৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
জানা গেছে, ভোরে ঘন কুয়াশায় চারদিক ঢেকে যাচ্ছে। হিমেল বাতাসের কারণে মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছে না। তবে অনেকেই জীবিকার তাগিদে শীতের মধ্যেও কাজে যাচ্ছেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রোদের তীব্রতা বেড়ে গেলেও বেলা গড়াতে না গড়াতেই আবারও হিমেল বাতাস প্রবাহিত হওয়ায় তাপমাত্রা কমে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: পঞ্চগড়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ, তাপমাত্রা ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস
পঞ্চগড় শহরের তেলিপাড়া এলাকার বাসিন্দা জবেদ আলী বলেন, ‘গত দুদিন ধরে ঠান্ডা বেড়েছে। বাতাসও বেশি। এই শীতে আমার মত বৃদ্ধ ও শিশুদের প্রয়োজন জ্যাকেট সোয়েটার। সরকার এগুলো দিল ভালো হতো। অন্তত শীতের হাত থেকে বাঁচতে পারতাম।’
চুয়াডাঙ্গায় বছরের সর্বনিম্ন ৭ ডিগ্রি তাপমাত্রা, জনজীবন বিপর্যস্ত
চুয়াডাঙ্গায় হাড় কাঁপানো শীতে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে ছিন্নমূল ও অসহায় মানুষের দুর্ভোগ চরমে। সোমবার (২০ ডিসেম্বর) চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বনিম্ন ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সূর্যের দেখা মিললেও শৈত্যপ্রবাহের কারণে কমেনি শীতের দাপট। ফলে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে এ এলাকার মানুষ।
তীব্র শীতে প্রয়োজনীয় কাজ ছাড়া কেউ ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন না। ফলে সব থেকে বেশি সমস্যায় পড়েছেন দিন আনা দিন খাওয়া মানুষগুলো। সোমবার ভোরে এলাকার বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে ও চায়ের দোকানে শীত নিবারণের চেষ্টায় আগুন জ্বালিয়ে উত্তাপ নিতে দেখা গেছে নিম্ন আয়ের মানুষগুলোকে।
রিকশাচালক মাসুম বলেন, আজ প্রচণ্ড শীত লাগছে। ঠান্ডার জন্য রিকশা চালানো যাচ্ছে না। হাত ও পায়ের পাতা মনে হচ্ছে বরফ হয়ে যাচ্ছে। পেটের দায়ে বাড়ি থেকে বের হলেও পেসেঞ্জার পাওয়া যাচ্ছে না।
আরও পড়ুন: পঞ্চগড়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ, তাপমাত্রা ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস
পঞ্চগড়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ, তাপমাত্রা ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস
হিমালয়ের কূলঘেষা সীমান্তবর্তী উত্তরের পঞ্চগড় জেলায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে এখানে ৯ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হচ্ছে। বিকাল থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত ঘনকুয়াশার পাশাপাশি উত্তর দিক থেকে বয়ে আসা মৃদু হিমেল বাতাস প্রবাহিত হচ্ছে।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রাসেল শাহ জানান, রবিবার সকাল ৯টায় পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। এটিই দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। গতকাল শনিবারও এখানে একই তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার এখানে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। ডিসেম্বরের শেষ নাগাদ থেকে এখানে শীতের প্রকোপ আরও বাড়বে এবং ঘনকুয়াশার পাশাপাশি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন: শীতে রোটা ভাইরাসের প্রকোপ: মতলব হাসপাতালে শিশু রোগীর ভিড়
তিনি জানান, দিনের বেলায় রোদের তেজ বেশি থাকায় রবিবার ২৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি, শনিবার ২৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি, শুক্রবার ২৬ দশমিক ৩ ডিগ্রি ও বৃহস্পতিবার ২৬ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। বাতাসের আদ্রতা এই জেলায় ৯৩ থেকে ১০০ শতাংশ এবং ২ থেকে ৫ নটিকেল মাইল বেগে প্রতিঘণ্টায় বাতাস বয়ে যাচ্ছে।
এদিকে এবার পঞ্চগড়ে একটানা সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বিরাজ করলেও দিন ও রাতের তাপমাত্রার বেশ পার্থক্য থাকছে। রাতে ও সকালে তাপমাত্রা কমে যাচ্ছে আবার দিনের মধ্য ভাগে রোদের প্রচণ্ড তাপে উষ্ণতা ছড়িয়ে দিচ্ছে। জেলা শহরসহ প্রত্যন্ত অঞ্চলে
অপরদিকে, জেলা প্রশাসন জেলার পাঁচ উপজেলায় এবছরও ২২ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। বিতরণকৃত শীতবস্ত্রের সংখ্যা চাহিদার তুলনায় নগন্য।
পঞ্চগড় শহরের ডোকরোপাড়া এলাকার বাসিন্দা মো. মজিরুল ইসলাম জানান, অন্যান্য বছরগুলোতে এই সময়ে সারাদিন সূর্য্যের মুখ দেখা যেত না, মানুষ ঘর থেকে বের হতে পারতো না। উত্তরের হিমেল বাতাস প্রবাহিত হতো। কিন্তু এবার শীতের পরিস্থিতিটা একটু ব্যতিক্রম। সকাল রাতের শীত থাকলেও দিনে তেজদীপ্ত রোদ উষ্ণতা ছাড়ায়।
আরও পড়ুন: পঞ্চগড়ে কুয়াশার চাদর ভেদ করে সূর্যোদয়
পঞ্চগড় জেলা পরিবেশ পরিষদের সভাপতি ও পঞ্চগড় সরকারি মহিলা কলেজের ভুগোল ও পরিবেশ বিদ্যা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান তৌহিদুল বারী বাবু জানান, দ্রুত সূর্য্যউদয় হওয়ায় তাপমাত্রা প্রখর হওয়ায় কুয়াশা ফরমেশন হয় না। এজন্য দিনের বেলা তাপমাত্রা গ্রীষ্মকালীন তাপমাত্রার মতই। আবার বিকাল বেলা র্যাপিডলি তাপমত্রা কমে যাওয়ায় রাতে ও সকালে তাপমাত্রা কম হচ্ছে। ভূগোলের ভাষায় জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে পঞ্চগড়ে সান রাইজ টু সানসেট আবহাওয়ার তারতম্যের সৃষ্টি হচ্ছে।
পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম জানান, শীতবস্ত্রের চাহিদা চেয়ে মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে। আশা করছি খুব শিগগির আরও শীতবস্ত্র বরাদ্দ পাওয়া যাবে। জেলা প্রশাসক সরকারের পাশাপাশি সকল বেসরকারি ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এবং সামর্থ্যবানদের শীতার্তদের রক্ষায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।
শীতের মৌসুমে বাইক রাইড করার প্রয়োজনীয় টিপস
শারীরিক ব্যায়ামের কোন সময় নেই। শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা সব ক্ষেত্রেই ব্যায়ামের প্রয়োজন। তবে শীতের সময় ব্যায়ামটা বেশ উপভোগ্য। যদিও অনেকের ক্ষেত্রে এ সময়টাতে ঘর থেকে বের হওয়াটা বেশ শীতল হিমালয় জয় করার মতই হয়ে যায়। আর সেটা যদি হয় বাইক রাইডিং, সেখানে আরও অনেক কিছু রক্ষণাবেক্ষণের ব্যাপার চলে আসে। সেই প্রস্তুতির কথা জানিয়ে দিতেই এবারের ফিচার শীতে বাইক রাইডিং নিয়ে।
শীতের মৌসুমে বাইক রাইড-এর সমস্যাগুলো
ত্বক ঠান্ডা বাতাসের সংস্পর্শে আসা
প্রচণ্ড ঠান্ডা আবহাওয়া বাইক চালানোর সময় চামড়ায় রীতিমত সূঁচের মত ফোটে। বাইক দ্রুত গতিতে সামনে চলার সময় মুখসহ শরীরের অনাবৃত অংশগুলো বিপরীত দিক থেকে ধেয়ে আসা ঠান্ডা বাতাসের সংস্পর্শে আসে। বাতাসটা কতটুকু ঠান্ডা তার থেকে ত্বকের ক্ষতির দিকটা নির্ভর করে কতক্ষণ ধরে বাইক চলছে তার উপর। খুব স্বল্প সময়ের তীব্র শীতও শরীরের বিভিন্ন অংশের জন্য হুমকি হতে পারে।
অনেক সময় দীর্ঘক্ষণ বাইক চালানোয় শরীর গরম হয়ে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমে যায়; এমনকি শীতেও। এই ঘামও ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাছাড়া স্থান ভেদে বাতাসের গতিবেগের উপর নির্ভর করছে কতক্ষণ চোখ খোলা রেখে বাইক চালিয়ে যাওয়া যাবে।
আরও পড়ুন: বিভিন্ন পুষ্টিগুণে ভরা শীতের সবজি
পিচ্ছিল রাস্তাঘাট
শীতে শিশির জমে রাস্তা পিচ্ছিল হয়ে যাওয়া স্বাভাবিক ব্যাপার। মাঝে মাঝে কখনো হাল্কা বৃষ্টিপাত শীতের কোন রৌদ্রজ্জ্বল দিনে যে কোন বাইক রাইডারকে চমকে দেয়। তাই বাইকের চাকা যত ভালোই হোক না কেন; ভেজা চাকা নিয়ে কোন রকমে হয়ত সোজা অনেকটা পথ ছুটে যাওয়া যেতে পারে। কিন্তু বাঁক নেয়া বা ইউ টার্ন নিয়ে ঘুরে আসা? অবশ্যই কোন ভালো ধারণা হবে না। বাংলাদেশে তুষারপাত অমাবস্যার চাঁদের মত হলেও বাইক নিয়ে দীর্ঘ ভ্রমণে যাবার ক্ষেত্রে বিশেষত কোন মফস্বল শহরে বা গ্রামের বিস্তীর্ণ ঘাসে ভেজা মাঠ পেরবার সময় অত্যাধুনিক টায়ারের কাটাগুলোও অদ্ভূত আচরণ করতে পারে।
দৃষ্টিগোচরতা
অক্টোবরের মাঝামাঝি সময় থেকেই শুরু হতে থাকে ছোট দিন ও দীর্ঘ রাতের মৌসুম। তার মানে কম আলোতে বা কখনো সম্পূর্ণ অন্ধকারে বাইক চালানোটা হরহামেশাই ঘটবে। এমনকি বাইকের হেডলাইট এবং টেললাইটের উপরও এ সময় পুরোপুরি নির্ভর করা দুষ্কর। যেহেতু ইঞ্জিন চালিত বিভিন্ন ছোট-বড় গাড়ির সাথে রাস্তা শেয়ার করতে হচ্ছে, তাই কুয়াশার কারণে ক্ষণিকের অন্ধত্বও অনেক বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে। এছাড়া খোলা ম্যানহল, রোড ব্রেকার, রাস্তার পাশের আইল্যান্ড, নুয়ে পড়া গাছের ডালপালা, ও ল্যাম্প পোস্টের পাশাপাশি হঠাৎ রাস্তা পারাপার হওয়া মানুষের ঝামেলা তো আছেই।
পড়ুন: নেপাল ভ্রমণ: শত বছরের তীর্থস্থান ঘুরতে হিমালয়ের দেশে
শীতের প্রথম বাজার ধরতে ব্যস্ত যশোরের সবজি চাষিরা
যশোরে আগাম শীতের সবজি দ্রুত বাজারে তুলতে, খাবারে বেশি স্বাদ যোগতা এবং বেশি টাকা আয় করার জন্য চাষিরা দিন রাত কাজ করে যাচ্ছেন।
জেলার সদর উপজেলার চুড়ামনকাটি, সাতমাইল, চুড়ামনকাটি, বারিনগর, হৈবতপুর, কাশিমপুর, বন্দবিলা, লেবুতলা, নোঙরপুর, ইছালি ইউনিয়নসহ বিভিন্ন জেলার সবজি চাষের কেন্দ্রস্থল। সেখানে এখন ফুলকপি, বাঁধাকপি, মটরশুটি, মুলা, বোতল করলা এবং বিভিন্ন ধরনের পালং শাকের মতো শীতকালীন সবিতে মাঠ সবুজ হয়ে উঠছে।
সরকারি সূত্র জানায়, দেশের চাহিদার প্রায় ৬০ শতাংশ সবজিই যশোর থেকে সরবরাহ করা হয়। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে সবজি দেশের অন্যান্য স্থানে সরবরাহ করা হয়।
আরও পড়ুন: বাড়ছে খুলনার চুইঝালের কদর, যাচ্ছে থাইল্যান্ডে
যদিও এ বছর দীর্ঘ অনাবৃষ্টি আর তীব্র গরমের জন্য অনেক কৃষক সময়মতো শীতকালীন সবজির চাষ শুরু করতে পারিনি, এ কারণে একটু দেরি হয়েছে। এর মধ্যেও কিছু কৃষক স্থানীয় বাজারে উৎসাদিত সবজি স্থানীয় বাজারে সরবরাহ করে ভালো দাম পাচ্ছে।
কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, চলতি বছরের অক্টোবর মাসের মাঝিমাঝি সময়ে রবি মৌসুম শুরু হয়েছে। এ সময় শীতকালীন সবজির আবাদ শুরু হয় চলবে মার্চ মাসের মাঝিমাঝি পর্যন্ত।
ইতোমধ্যে জেলায় ১৬ হাজার ৭৩০ হেক্টর জমিতে সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে ৪ হাজার ১৩৫ হেক্টর জমিতে বাঁধাকপি, ফুলকপি, শিম, মূলা, লালশাক- পালংশাক, সবুজ শাকসহ নানা ধরনের সবজি চাষ হয়েছে।
খুলনায় জমে উঠেছে শীতের পিঠা বিক্রি
জ্বলন্ত চুলায় লাকড়ি দিয়ে চার-পাঁচটি মাটির খোলায় চিতই পিঠা বানাচ্ছেন নুরুজ্জামান নুরু। চুলার অল্প আঁচে উড়ছে ধোঁয়া। তৈরি হচ্ছে সুস্বাদু চিতই। আর চুলা থেকে নামানোর পর মুহূর্তেই তা চলে যাচ্ছে অপেক্ষামান ক্রেতার হাতে। ক্রেতারা রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে সেই পিঠা কিনছেন। কেউ বা নিয়ে যাচ্ছেন পরিবারের জন্য। কেউ আবার দাঁড়িয়েই খাচ্ছেন।
পাশের দোকানে ক্রেতাদের ভিড় সামলাতে ব্যস্ত নুরুর বড় ভাই রুহুল আমীন। রাস্তার পাশে এই দুই ভাইয়ের দোকানে অর্ধশত মানুষ পিঠা কেনার জন্য ভিড় জমিয়েছেন। খুলনা মহানগরীর শান্তিধাম মোড়স্থ জাতিসংঘ শিশু পার্কের পশ্চিম পাশে প্রতিদিনি সন্ধ্যায় এমন দৃশ্য দেখতে পাওয়া যায়।
নুরুজ্জামান বলেন, প্রতিবছর শীত মৌসুমে এলে পিঠা বিক্রি করি। এবার প্রায় ১৫-২০ দিন হয়েছে চিতই পিঠা বিক্রি শুরু করেছি। পাঁচ টাকা করে প্রতি পিস। বিক্রিও খুব ভালো।
মামুন নামে এক বেসরকারি চাকরিজীবী নুরুর দোকান থেকে পিঠা কিনে প্রশংসা করে বলেন, এখানকার পিঠার মান ভালো। তাই প্রতিবছরই কিনে থাকি। এবারও কিনেছি।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে পুনাক পিঠা মেলায় মুগ্ধ দর্শনার্থীরা
সোলেমান নগরের প্রবেশপথে পাশাপাশি দুই দোকানে পাটিসাপ্টা, ভাপা, পুলি, তেলের পিঠা ও চিতই পিঠা বিক্রি করছেন রফিক এবং সাহানারা। রফিক জানান, পুলি পিঠা ১০ টাকা পিস, পাটিসাপ্টা ১৫ টাকা ও পাঁপড় তিন পিস ১০ টাকায় বিক্রি করছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, পিঠা তৈরির ছাঁচে চালের গুঁড়ি নিয়ে তার ওপর গুড়, নারকেল ছিটিয়ে ভাপে দিচ্ছেন দোকানি। খোলায় বানানো হচ্ছে চিতই পিঠা। সন্ধ্যার পরেই পিঠার দোকানে ভিড় করছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে ছোট ছোট পিঠার দোকান সাজিয়ে বসেছেন বিক্রেতারা। অনেকে আবার পিঠা বিক্রির দোকান দিয়ে পেশা পরিবর্তন করছেন।
মহানগরীর রূপসা ঘাট, পিটিআই মোড়, দোলখোলা মোড়, গফফারের মোড়, শিশু হাসপাতাল রোড, তারের পুকুর পাড়, পিকচার প্যালেস মোড়, ক্লে রোড, মহারাজ চত্বর রোড, স্টেশন রোড, কদমতলা রোড, খান জাহান আলী রোড, সোনাডাঙা বাস স্ট্যান্ড, মোল্লা বাড়ির মোড়, নিউ মার্কেট, খালিশপুর, দৌলতপুর, রেল স্টেশনসহ বিভিন্ন এলাকায় রাস্তার মোড় আর ফুটপাতে গড়ে উঠেছে প্রায় শতাধিক অস্থায়ী পিঠার দোকান।
মৌসুমী পিঠা ব্যবসায়ীরা মোড়ে মোড়ে পিঠার দোকান নিয়ে বসে পড়েছেন। আর সাধারণ মানুষও খাচ্ছেন এসব ধোঁয়া-ওঠা গরম গরম পিঠা।
দোকানিরা জানান, খুব বেশি পুঁজি লাগে না বলে সহজে এ ব্যবসা শুরু করা যায়। জ্বালানি হিসেবে লাকড়ি, অকেজো কাঠের টুকরা, কিংবা গাছের শুকনো ডাল ব্যবহার করছেন তারা। তবে কেউ কেউ আবার পিঠা তৈরি করতে গ্যাসের সিলিন্ডার ব্যবহার করছেন। কিছু গুড়, আটা, নারকেল নিয়ে এ ব্যবসায় খুলে বসা যায়।
সোনাডাঙা মোল্লা বাড়ির মোড়ের পিঠা বিক্রেতা আব্দুস সালাম বলেন, পাটিসাপ্টা, পুলি, চিতই, খিজানো পিঠা ও তেলের পিঠা বিক্রি করেন তিনি। দামে কম ও মান ভালো হওয়ায় দোকানে প্রায় ক্রেতাদের ভিড় লেগে থাকে।
আরও পড়ুন: বোয়ালমারীতে সন্ধ্যায় ফুটপাতে পিঠা বিক্রির ধুম
করোনা প্রতিরোধে ‘আইডিয়া’র ‘ইমিউনিটি পিঠা’