রাশিয়া
ইউক্রেন সম্পর্কে বিস্ময়কর কিছু তথ্য
প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য এবং সমৃদ্ধশালী ইতিহাসে ভরপুর দেশ ইউক্রেন। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন বিভক্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ ছিল ইউরোপের এই দেশটি। এখন রাশিয়া আবার ইউক্রেনকে তার অংশ হিসেবে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে। ফলে দুই দেশের পরিস্থিতি ক্রমাগত উষ্ণতার দিকে মোড় নিচ্ছে। এই রাজনৈতিক অস্থিরতার বাইরে ইউক্রেনের ঐশ্বর্যমন্ডিত অবস্থিতি একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ হিসেবে স্থায়ীত্বের দাবি রাখে। এই নিবন্ধ সাজানো হয়েছে ইউক্রেন সম্পর্কে বিস্ময়কর কিছু তথ্য নিয়ে।
ইউক্রেনের ১০টি বিস্ময়কর তথ্য
১। ইউরোপের দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ
রাশিয়ার পর আয়তনের দিক থেকে ইউক্রেন ইউরোপের বৃহত্তম দেশ। ৬০৩,৬২৮ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের দেশটির জনসংখ্যা অবশ্য সে তুলনায় অনেক কম; প্রায় ৪ কোটি ৩৬ লাখ।
২। ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট
ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের সাতটিই অবস্থিত ইউক্রেনে। এর মধ্যে রয়েছে কিয়েভের সেন্ট-সোফিয়া ক্যাথিড্রাল, লভিভের ঐতিহাসিক কেন্দ্র, চেরনিভ্সি বিশ্ববিদ্যালয়, কার্পেথিয়ানের অনন্য কাঠের গির্জা এবং সেগুলোর চারপাশে বিচ গাছের বন।
তীর্থযাত্রীরা সোফিয়া কিভস্কা গির্জা এবং সেন্ট মাইকেলের গোল্ডেন-গম্বুজ মঠ দেখার জন্য নিয়মিত আসেন অনেক দূর-দূরান্ত থেকে।
পড়ুন: ইউক্রেনের বেসামরিক এলাকায় হামলা জোরদার রুশ বাহিনীর
ইউক্রেনের বেসামরিক এলাকায় হামলা জোরদার রুশ বাহিনীর
ইউক্রেনের বেসামরিক এলাকায় হামলা জোরদার করেছে রাশিয়ান বাহিনী। মঙ্গলবার আগ্রাসনের ষষ্ঠ দিনে রুশ বাহিনী ইউক্রেনে দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভের সেন্ট্রাল স্কয়ার এবং কিয়েভের প্রধান টিভি টাওয়ারে বোমাবর্ষণ করেছে। এ ঘটনার কঠোর সমালোচনা করে একে সন্ত্রাসের নির্লজ্জ প্রচারণা বলে অভিহিত করেছেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
জেলেনস্কি বলেন, ‘কেউ ক্ষমা করবে না। কেউ ভুলবে না।’
এদিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন মঙ্গলবার (স্থানীয় সময়) তার প্রথম স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন ভাষণে ইউক্রেনে হামলার জন্য রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ‘মূল্য দিতে’ হবে দায়ী করে তার বিস্তৃত দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরবেন।
ইতোমধ্যে শত শত রাশিয়ান ট্যাঙ্ক এবং অন্যান্য যানবাহনের ৪০ মাইলের (৬৪ কিলোমিটার) দীর্ঘ সেনা বহর প্রায় তিন মিলিয়ন লোকের রাজধানী কিয়েভের দিকে অগ্রসর হয়েছে।
রুশ বাহিনী দক্ষিণে ওডেসা এবং মারিউপলের কৌশলগত বন্দরসহ অন্যান্য শহরগুলোতে তাদের আক্রমণ জোরদার করেছে।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনে যুদ্ধাপরাধের বিষয়ে তদন্ত করবে আইসিসি
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের সবচেয়ে বড় স্থল যুদ্ধের ষষ্ঠতম দিন রাশিয়া কার্যত বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপীয় ইউনিয়ন দেশটির ওপর নানা নিষেধাজ্ঞা অব্যাহতে রেখেছে।
ইউক্রেনে যুদ্ধে মৃতের সংখ্যা এখনও অস্পষ্ট। একজন ঊর্ধ্বতন পশ্চিমা গোয়েন্দা কর্মকর্তার মতে, যুদ্ধে ৫ হাজারের বেশি রাশিয়ান সৈন্য বন্দী বা নিহত হয়েছে। তবে ইউক্রেন সেনা ক্ষয়ক্ষতির কোনো সামগ্রিক হিসাব দেয়নি।
জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস বলছে, তারা ১৩৬ বেসামরিক মানুষের মৃত্যুর রেকর্ড করেছে। প্রকৃত সংখ্যা আরও অনেক বেশি বলে মনে করা হচ্ছে।
ব্রিটেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত দুই দিনে জনবহুল এলাকায় রাশিয়ার বিমান ও কামান হামলার সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে আরও বলা হয়, তিনটি শহর- খারকিভ, খেরসন এবং মারিউপল-রাশিয়ান বাহিনী দ্বারা বেষ্টিত হয়ে পড়েছে।
পড়ুন: রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে পরবর্তী শান্তি আলোচনা বেলারুশ-পোল্যান্ড সীমান্তে
৫৭১০ রুশ সেনা হত্যার দাবি ইউক্রেনের
ইউক্রেনে যুদ্ধাপরাধের বিষয়ে তদন্ত করবে আইসিসি
ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা চালানোর কারণে দেশটিতে সম্ভাব্য যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের বিষয়ে ‘যত দ্রুত সম্ভব’ তদন্ত শুরু করার পরিকল্পনা করছেন বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের প্রধান প্রসিকিউটর করিম খান।
তিনি বলেছেন, তিনি ইউক্রেনে পর্যবেক্ষণ চালিয়ে যাবেন। এ সময় তিনি ‘সংযত ও আন্তর্জাতিক মানবতা আইনের প্রযোজ্য নিয়ম কঠোরভাবে মেনে চলার আহ্বান জানান।’
আরও পড়ুন: রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে পরবর্তী শান্তি আলোচনা বেলারুশ-পোল্যান্ড সীমান্তে
জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান মিশেল ব্যাচেলেট বলেছেন, তার কার্যালয় বৃহস্পতিবার থেকে ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনে সাত শিশুসহ ১০২ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং ৩০৪ জন আহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করেছে।
তবে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের সদস্য রাষ্ট্র নয় ইউক্রেন ও রাশিয়া। ইউক্রেন আদালতের এখতিয়ার মেনে নিয়েছে যা করিম খানকে তদন্তের ক্ষমতা দিয়েছে।
করিম খান তার দলকে অপরাধের প্রমাণ কীভাবে সংরক্ষণ করা যায় তা খুঁজতে বলেছেন এবং এ বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ হলো তদন্তের জন্য আদালতের বিচারকদের কাছ থেকে অনুমোদন নেয়া।
আরও পড়ুন: ৫৭১০ রুশ সেনা হত্যার দাবি ইউক্রেনের
৫৭১০ রুশ সেনা হত্যার দাবি ইউক্রেনের
ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের প্রথম পাঁচ দিনে পাঁচ হাজার ৭১০ জন রুশ সেনা হত্যার দাবি করেছে ইউক্রেনীয় সামরিক বাহিনী। মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
ফেসবুকে পোস্ট করা এক ভিডিও বার্তায় ইউক্রেনীয় সেনাপ্রধানের এক মুখপাত্র বলেন, এ সময়ের মধ্যে দুই শতাধিক রুশ সেনাকে বন্দী করেছে দেশটির সেনাবাহিনী।
এই কর্মকর্তা আরও দাবি করেন, ১৯৮টি রুশ ট্যাঙ্ক, ২৯টি প্লেন, ৪৮৬টি সাঁজোয়া যান ও ২৯টি হেলিকপ্টার ধ্বংস করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনে আটকে পড়া ভারতীয়দের উদ্ধারে যাচ্ছেন ৪ মন্ত্রী
তবে এককভাবে এসব তথ্যের সত্যতা তাৎক্ষণিক যাচাই করতে পারেনি বিবিসি।
ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ধারণা করছে, ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের কারণে রুশ সেনাবাহিনীর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
ইউক্রেনের সঙ্গে লড়াইয়ে রুশ সেনা হতাহতের বিষয়টি প্রথম থেকে অস্বীকার করলেও রবিবার মস্কো তাদের সেনা হতাহতের বিষয়টি স্বীকার করে।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনের খারকিভ শহরে আহত ৪৪
অবিলম্বে নাগরিকদের কিয়েভ ত্যাগের নির্দেশ ভারতের
ভারত তার সমস্ত নাগরিককে ‘যেকোন উপায়ে’ অবিলম্বে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ ছেড়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
মঙ্গলবার ইউক্রেনের ভারতীয় দূতাবাস এক টুইট বার্তায় জানিয়েছেন, ‘শিক্ষার্থীসহ সকল ভারতীয় নাগরিকদের আজ জরুরিভাবে কিয়েভ ত্যাগ করার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। বিশেষত ট্রেনে বা অন্য যে কোনও সম্ভাব্য উপায়ে।’
সোমবার রাতে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তার চারজন জৈষ্ঠ মন্ত্রীকে ইউক্রেনের প্রতিবেশী দেশগুলোতে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। শুধুমাত্র ভারতীয়দের নয়, সেই দেশে আটকা পড়া বিদেশি নাগরিকদেরও সরিয়ে নিতে সহায়তা করার ব্যাপারে মন্ত্রীদের নির্দেশ দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি।
সোমবার রাতে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি গণমাধ্যমকে বলেছেন, উদ্ধার প্রচেষ্টা চলছে। স্থলভাগে পরিস্থিতি জটিল হতে চলছে, যা বেশ উদ্বেগজনক। কিন্তু আমরা আমাদের উদ্ধার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করতে সক্ষম হয়েছি।
আরও পড়ুন: কিয়েভমুখী ৪০ মাইল দীর্ঘ রাশিয়ান সেনাবহর
তিনি বলেন, সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে নয়, আমরা পরামর্শ জারি করার পর থেকে প্রায় আট হাজার ভারতীয় নাগরিক ইউক্রেন ছেড়েছে।
এক বিবৃতিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ‘প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেছেন যে বিভিন্ন দেশে তার বিশেষ দূত হিসাবে চার সিনিয়র মন্ত্রীর সফরটি উদ্ধার প্রচেষ্টাকে তরান্বিত করবে।
এর আগে গত সপ্তাহে কূটনৈতিক সমাধানের ওপর জোর দিয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে অবিলম্বে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
আরও পড়ুন: রাশিয়ান কামানের গোলায় ৭০ সেনা নিহতের দাবি ইউক্রেনের
ইউক্রেন সংকট সমাধানে ভারতের হস্তক্ষেপ চাওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর মোদি রুশ প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী অবিলম্বে সহিংসতা বন্ধ এবং কূটনৈতিক আলোচনা ও সংলাপের পথে ফিরে আসার জন্য সব পক্ষ থেকে সমন্বিত প্রচেষ্টার আহ্বান জানিয়েছেন।
বর্তমানে ইউক্রেনে প্রায় ১৫ হাজার ভারতীয় রয়েছে বলে জানা গেছে।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহরে গোলাবর্ষণ, কিয়েভে বিস্ফোরণ
রাশিয়ান কামানের গোলায় ৭০ সেনা নিহতের দাবি ইউক্রেনের
রাশিয়ান কামানের গোলায় কিয়েভ ও খারকিভের মধ্যবর্তী শহর অকথারকার একটি সামরিক ঘাঁটিতে ৭০ জন ইউক্রেনেীয় সেনা নিহত হয়েছে।
দেশটির সামি অঞ্চলের প্রশাসনিক প্রধান দিমিত্রো জিভিতস্কি টেলিগ্রাম অ্যাপে এ তথ্য জানিয়েছেন।
দিমিত্রো টেলিগ্রামে একটি চারতলা বিল্ডিংয়ের পুড়ে যাওয়া শেলের ছবি পোস্ট করেছেন।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহরে গোলাবর্ষণ, কিয়েভে বিস্ফোরণ
পরে একটি ফেসবুক পোস্টে তিনি বলেছেন, রবিবার যুদ্ধের সময় অনেক রাশিয়ান সৈন্য এবং কিছু স্থানীয় বাসিন্দাও নিহত হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিবেদনটির সত্যতা নিশ্চিত করা যায়নি।
এদিকে, ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভে সোমবার গোলাবর্ষণ করেছে রুশ সামরিক বাহিনী। বেলারুশ সীমান্তে মস্কো-কিয়েভের আলোচনা শেষ হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই এই হামলার অভিযোগ করেছে ইউক্রেন। এছাড়া শত শত ট্যাঙ্ক এবং অন্যান্য যানবাহন নিয়ে দেশটির রাজধানী কিয়েভ অভিমুখে এগিয়ে যাচ্ছে রাশিয়ান বাহিনী।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনের খারকিভ শহরে আহত ৪৪
ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহরে গোলাবর্ষণ, কিয়েভে বিস্ফোরণ
ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভে সোমবার গোলাবর্ষণ করেছে রুশ সামরিক বাহিনী। বেলারুশ সীমান্তে মস্কো-কিয়েভের আলোচনা শেষ হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই এই হামলার অভিযোগ করেছে ইউক্রেন। এছাড়া শত শত ট্যাঙ্ক এবং অন্যান্য যানবাহন নিয়ে দেশটির রাজধানী কিয়েভ অভিমুখে এগিয়ে যাচ্ছে রাশিয়ান বাহিনী।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, তাকে ছাড় দিতে বাধ্য করার লক্ষ্যে ধাপে ধাপে গোলাবর্ষণ করা হচ্ছে।
জেলেনস্কি সোমবার গভীর রাতে এক ভিডিও ভাষণে বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি রাশিয়া এই সহজ পদ্ধতির মাধ্যমে (ইউক্রেনের ওপর) চাপ সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে।’
তবে এর আগে দুই দেশের প্রতিনিধি দলের যে আলোচনা হয়েছিল তার বিস্তারিত বিবরণ দেননি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতির আহ্বান ম্যাক্রোঁর
এদিকে, ইউক্রেনে আগ্রাসনের মধ্যে পারমাণবিক অস্ত্র বহনকারী বাহিনীকে উচ্চ সতর্কতায় থাকার নির্দেশ দিয়েছেন রাশিয়ায় প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এ জাতীয় পদক্ষেপ পশ্চিমা দেশগুলোর সাথে উত্তেজনা আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
রবিবার শীর্ষ কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠকে পুতিন এই নির্দেশনা দেন।
ন্যাটো জোটের শীর্ষ নেতাদের ‘আগ্রাসী বিবৃতি’ এবং কঠোর আর্থিক নিষেধাজ্ঞার উদ্ধৃতি দিয়ে পুতিন রাশিয়ার পারমাণবিক অস্ত্র বহনকারী বাহিনীকে উচ্চ সতর্ক থাকার এ নির্দেশনা জারি করেন।
পুতিনের একজন শীর্ষ সহযোগী এবং রাশিয়ান প্রতিনিধিদলের প্রধান ভ্লাদিমির মেডিনস্কি বলেছেন, ‘অভিযানের পর উভয় পক্ষের মধ্যে প্রথম আলোচনা প্রায় পাঁচ ঘন্টা স্থায়ী হয়েছিল এবং প্রতিনিধি ‘কিছু নির্দিষ্ট পয়েন্ট খুঁজে পেয়েছেন যার উপর সাধারণ অবস্থানগুলো পূর্বাভাস দেয়া যেতে পারে।’
আরও পড়ুন: ইউক্রেনে আটকে পড়া ভারতীয়দের উদ্ধারে যাচ্ছেন ৪ মন্ত্রী
তিনি বলেন, আগামী দিনে তারা আলোচনা চালিয়ে যেতে রাজি হয়েছেন।
বেলারুশ সীমান্তে আলোচনা শেষ হওয়ার সাথে সাথে কিয়েভে বেশ কয়েকটি বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায় এবং রাশিয়ান সৈন্যরা শহরের দিকে অগ্রসর হয়।
ম্যাক্সার টেকনোলজির দেয়া স্যাটেলাইটের ছবিতে দেখা যায়, সাঁজোয়া যান, ট্যাঙ্ক, গোলাবারুদ ও লজিস্টিক্যাল যান নিয়ে রুশ বাহিনী শহরের কেন্দ্র থেকে ১৭ মাইল (২৫ কিলোমিটার) দূরে ছিল এবং প্রায় ৪০ মাইল পর্যন্ত দীর্ঘ ছিল।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনে ১৬ শিশু নিহত ও ৪৫ জন আহত: প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি
ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতির আহ্বান ম্যাক্রোঁর
ইউক্রেনে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ। সোমবার রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাথে ফোনালাপে এ আহ্বান জানান তিনি।
গত বৃহস্পতিবার থেকে রাশিয়ান সশস্ত্র বাহিনী ইউক্রেনে সামরিক অভিযান পরিচালনা করছে।
ফরাসি প্রেসিডেন্টের কার্যালয় এক বিবৃবিতে এ কথা জানিয়েছে।
এতে বলা হয়, ফোনালাপে ফরাসি প্রেসিডেন্ট তিনটি দাবির কথা তুলে ধরেছেন, সেগুলো হলো-বেসামরিক নাগরিক এবং তাদের বাসস্থানের ওপর সব ধরণের হামলা বন্ধ করা, বেসামরিক অবকাঠামো, মহাসড়কে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, বিশেষ করে কিয়েভের দক্ষিণে এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের প্রতি সম্মান।
বিবৃবিতে বলা হয়, পুতিন আশ্বস্ত করেছেন যে তিনি এই তিনটি বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ করতে ইচ্ছুক।
এর আগে রাশিয়ান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রাশিয়ান সৈন্যরা ইউক্রেনীয় শহরগুলোকে হামলার লক্ষ্যবস্তু করছে না। এছাড়া বেসামরিক জনগণের জন্য কোন হুমকি নেই বলেও জানায় তারা।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনে আটকে পড়া ভারতীয়দের উদ্ধারে যাচ্ছেন ৪ মন্ত্রী
ইউক্রেনে ১৬ শিশু নিহত ও ৪৫ জন আহত: প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি
ইউক্রেনে আটকে পড়া ভারতীয়দের উদ্ধারে যাচ্ছেন ৪ মন্ত্রী
যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনে আটকে পড়া ভারতীয় নাগরিকদের উদ্ধারে ইউক্রেনের প্রতিবেশি দেশগুলোতে চারজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে নয়াদিল্লি।
সোমবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সভাপতিত্বে এক উচ্চ-পর্যায়ের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। ইতোমধ্যে ইউক্রেন থেকে ৮ হাজার ভারতীয় নাগরিককে সরিয়ে নেয়া হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই শিক্ষার্থী।
বিদেশ মন্ত্রণালয়েলর মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি গণমাধ্যমকে বলেছেন, পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল হতে চলেছে, যা বেশ উদ্বেগজনক, কিন্তু আমরা আমাদের সরিয়ে নেয়ার প্রক্রিয়াটি ত্বরান্বিত করতে সক্ষম হয়েছি৷ সংঘাত শুরু হওয়ার পর প্রায় ৮ হাজার ভারতীয় নাগরিক ইউক্রেন ছেড়েছে।
এক বিবৃতিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ‘প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেছেন যে বিভিন্ন দেশে তার বিশেষ দূত হিসাবে চার সিনিয়র মন্ত্রীর সফরটি সরিয়ে নেয়ার প্রচেষ্টাকে তরান্বিত করবে।
পড়ুন: পুতিন-মোদি ফোনালাপ: ইউক্রেনে সামরিক অভিযান বন্ধের আহ্বান
এর আগে গত সপ্তাহে কূটনৈতিক সমাধানের ওপর জোর দিয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে অবিলম্বে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
ইউক্রেন সংকট সমাধানে ভারতের হস্তক্ষেপ চাওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর মোদি রুশ প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী অবিলম্বে সহিংসতা বন্ধ এবং কূটনৈতিক আলোচনা ও সংলাপের পথে ফিরে আসার জন্য সব পক্ষ থেকে সমন্বিত প্রচেষ্টার আহ্বান জানিয়েছেন।
বর্তমানে ইউক্রেনে প্রায় ১৫ হাজার ভারতীয় রয়েছে বলে জানা গেছে।
পড়ুন: ইউক্রেনে ১৬ শিশু নিহত ও ৪৫ জন আহত: প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি
রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে শান্তি আলোচনা শুরু
ইউক্রেনে রুশ সেনা ঢুকার পঞ্চম দিনে দু’দেশের প্রতিনিধি দল যুদ্ধ অবসানের লক্ষ্যে আলোচনা শুরু করেছেন বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্টের কার্যালয় জানিয়েছে, দেশটি তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতি এবং ইউক্রেন থেকে রুশ সেনা প্রত্যাহার চায়।
এদিকে রুশ আলোচক ভ্লাদিমির মেডিনস্কি বলেছেন, মস্কোও দু’পক্ষের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট একটি চুক্তি করতে চায়।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনে ১৬ শিশু নিহত ও ৪৫ জন আহত: প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি
এ আলোচনা শুরু হওয়ার আগে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রুশ সৈন্যদের অস্ত্র জমা দেয়ার আহ্বান জানান।
এছাড়া তিনি অবিলম্বে ইউক্রেনকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য পদ দেয়ার জন্য জোটটির প্রতি আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: রাশিয়ান হামলায় বিশ্বের বৃহত্তম কার্গো বিমান পুড়ে ছাই
এর আগে বিবিসি ইউক্রেন কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে জানায়, রাশিয়ার সঙ্গে শান্তি আলোচনার জন্য দেশটির প্রতিনিধি দল ইউক্রেন-বেলারুশ সীমান্তে পৌঁছেছে।
তাদের প্রধান আলোচ্য বিষয় থাকবে- যুদ্ধবিরতি ও ইউক্রেন ভূখণ্ড থেকে রুশ সেনা প্রত্যাহার।