রাশিয়া
রাশিয়া আলোচনার জন্য এখনও প্রস্তুত: সের্গেই লাভরভ
ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালালেও রাশিয়া সব সময় আলোচনার জন্য প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ।
ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, রুশ সরকারি সংবাদ সংস্থাই আইআরএকে লাভরভ বলেছেন, ‘দুঃখের বিষয় এই যে আমাদের পশ্চিমা বন্ধুরা আন্তর্জাতিক আইনকে মর্যাদা দেননা। বরং তারা তাকে ধ্বংস করতে চেষ্টা করছেন এবং তাদের গড়া ‘আইন-ভিত্তিক বিশ্ব ব্যবস্থা’ বাস্তবায়নে চেষ্টা করে চলেছেন।’
তিনি বলেন, ‘আমেরিকান সহকর্মী এবং ন্যাটো সদস্যদের সাথে আমরা কথা বলেছি।’
লাভরভ বলেন, আন্তর্জাতিক আইন এবং আন্তর্জাতিক দায়-দায়িত্ব অনুসরণের পথ এখনও খোলা রয়েছে।
তিনি বলেন ‘ন্যায়বিচার এবং জাতিসংঘ চার্টারের মূল নীতিতে ফেরার জন্য যে কোনো আলোচনায় বসার জন্য রাশিয়া সব সময় প্রস্তুত থাকবে।’
এর আগে বৃহস্পতিবার ভোরে একটি টেলিভিশন ভাষণে পূর্ব ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
ঘোষণার পর রুশ সৈন্যরা উত্তর, দক্ষিণ এবং পূর্ব দিক দিয়ে ইউক্রেনে ঢুকে পড়ে।
অভিযানের প্রথম দিনেই ইউক্রেনের অনেক বড় বড় শহর এবং সেনা ঘাঁটিতে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলার খবর পাওয়া গেছে।
পড়ুন: রুশ হামলা বন্ধে ভারতের হস্তক্ষেপ চায় ইউক্রেন
ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের বদলে সংলাপের আহ্বান ঢাকার
রুশ হামলা বন্ধে ভারতের হস্তক্ষেপ চায় ইউক্রেন
ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার হামলা চালানোর পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হস্তক্ষেপ কামনা করেছে ইউক্রেন। এরপর বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লি সব পক্ষকে সংযত থাকার পরামর্শ দিয়েছে।
দিল্লিতে নিযুক্ত ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূত ইগোর পোলিখা স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘মোদিজি অন্যতম ক্ষমতাধর ও সম্মানিত বিশ্ব নেতা। রাশিয়ার সঙ্গে আপনার বিশেষ সুবিধাজনক ও কৌশলগত সম্পর্ক রয়েছে। মোদিজি পুতিনের সঙ্গে কথা বললে আমরা আশাবাদী তিনি সাড়া দেবেন।’
তিনি বলেন, ‘রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের যে বিশেষ সুবিধাজনক সম্পর্ক রয়েছে তার পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের আরও সক্রিয়ভাবে সম্পৃক্ত হওয়া উচিত। শুধু আমাদের নিরাপত্তার জন্য নয়, আপনার নিজের নাগরিকের নিরাপত্তার জন্যও আমাদের ভারতের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।’
আরও পড়ুন: বেলারুশ থেকে হামলা চালাচ্ছে রাশিয়া: ইউক্রেন
এদিকে ইউক্রেনে আটকে পড়া ভারতীয় নাগরিকদের শান্ত ও যে যেখানে আছে সেখানে অবস্থান নেয়ার পরামর্শ দিয়েছে কিয়েভে অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাস।
ভারতীয় দূতাবাস এক পরামর্শ বার্তায় বলেছে, ‘ইউক্রেনের বর্তমান পরিস্থিতি খুবই অনিশ্চিত। দয়া করে শান্ত থাকুন এবং যেখানে আছেন নিরাপদে থাকুন। আপনার বাড়ি, হোস্টেল, বাসস্থান বা ট্রানজিটে থাকুন।’
প্রায় ১৫ হাজারের মতো ভারতীয় নাগরিক ইউক্রেনে আটকে পড়েছেন।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনের বিমান ঘাঁটি ধ্বংসের দাবি রাশিয়ার
এর আগেও ইউক্রেন সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধান চেয়েছিল ভারত।
বৃহস্পতিবার রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা চালিয়েছে। রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনী ট্যাঙ্ক ও ভারী সরঞ্জামসহ সব দিক থেকে প্রতিবেশী দেশটিতে প্রবেশ করেছে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ইউক্রেনের প্রধান প্রধান শহরে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ও বিস্ফোরণের কথা জানিয়েছে।
বেলারুশ থেকে হামলা চালাচ্ছে রাশিয়া: ইউক্রেন
রাশিয়ার সামরিক বাহিনী প্রতিবেশি দেশ বেলারুশ থেকে ইউক্রেনে হামলা চালাচ্ছে বলে দাবি করেছে ইউক্রেনের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী।
সংস্থাটি বলছে, বেলারুশের সমর্থনে রাশিয়ান সৈন্যরা আক্রমণের অংশ হিসাবে আর্টিলারি ব্যারেজ খুলেছে। জবাবে ইউক্রেনীয় সীমান্তরক্ষীরাও পাল্টা গুলি চালাচ্ছে।
এর আগে রাশিয়া তাদের মিত্র দেশ বেলারুশে সামরিক মহড়ার জন্য সৈন্য মোতায়েন করেছে যা যুদ্ধের শঙ্কাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ বেলারুশের সীমান্ত থেকে মাত্র ৭৫ কিলোমিটার (৫০ মাইল) দক্ষিণে অবস্থিত।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনের বিমান ঘাঁটি ধ্বংসের দাবি রাশিয়ার
এদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, এই হামলার জন্য বিশ্ব ‘রাশিয়াকে জবাবদিহি করবে।’
ন্যাটো মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গ রাশিয়ার পদক্ষেপকে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন এবং ইউরোপীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসাবে নিন্দা করেছেন।
জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ স্কোলজ ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার হামলাকে ‘ইউক্রেনের জন্য একটি ভয়ানক দিন এবং ইউরোপের জন্য একটি অন্ধকার দিন’ বলে অভিহিত করে রাশিয়ার সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা করেছেন।
বৃহস্পতিবার সকালে চ্যান্সেলর বলেন, ‘ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা আন্তর্জাতিক আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন। এটা কোনোভাবেই ন্যায়সঙ্গত হতে পারে না।’
এর আগে বৃহস্পতিবার সকালে একটি টেলিভিশন ভাষণে পূর্ব ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের নির্দেশ দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তবে এই অভিযান বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপত্তার উদ্দেশে বলে দাবি করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের নির্দেশ পুতিনের
ইউক্রেনের বিমান ঘাঁটি ধ্বংসের দাবি রাশিয়ার
রাশিয়ার সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তারা ইউক্রেনের বিমান প্রতিরক্ষা সম্পদ এবং বিমান ঘাঁটি ধ্বংস করেছে।
বৃহস্পতিবার রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রুশ হামলায় ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করা হয়েছে।
এদিকে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, রাশিয়ার আক্রমণ প্রতিহত করার সময় তারা পাঁচটি রুশ বিমান গুলি করে ভূপাতিত করেছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুযারি) সকালে একটি টেলিভিশন ভাষণে পূর্ব ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের নির্দেশ দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তবে এই অভিযান বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপত্তার উদ্দেশে বলে দাবি করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট।
আরও পড়ুন: সেনাবাহিনীকে থামান, ‘শান্তিকে সুযোগ দিন’: পুতিনকে জাতিসংঘ প্রধান
ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের নির্দেশ পুতিনের
পূর্ব ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের নির্দেশ দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তবে এই অভিযান বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপত্তার উদ্দেশে বলে দাবি করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট।
বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুযারি) সকালে একটি টেলিভিশন ভাষণে পুতিন বলেছেন, ইউক্রেন থেকে আসা হুমকির প্রতিক্রিয়ায় এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ইউক্রেন দখল করার কোনো লক্ষ্য রাশিয়ার নেই। তবে যে কোন ধরনের রক্তপাতের জন্য ইউক্রেনকে দায়ী করা হবে বলে সতর্ক করে দেন পুতিন।
পুতিন অন্যান্য দেশকেও সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, রাশিয়ার কর্মকাণ্ডে হস্তক্ষেপ করার যে কোনো প্রচেষ্টা ‘তারা কখনও দেখেনি এমন পরিণতি’ ভোগ করতে হবে।
পড়ুন: ইউক্রেন থেকে দূতাবাস সরিয়ে নিচ্ছে রাশিয়া
দুই অঞ্চলকে স্বীকৃতি ইউক্রেনের সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন: জাতিসংঘ প্রধান
ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক পদক্ষেপ
ইউক্রেন থেকে দূতাবাস সরিয়ে নিচ্ছে রাশিয়া
রাশিয়া ও ইউক্রেনের চলমান সংকটের মধ্যে ইউক্রেনের কিয়েভ থেকে দূতাবাস সরিয়ে নিতে শুরু করেছে রাশিয়া। এছাড়া ইউক্রেনও রাশিয়ায় অবস্থান করা নিজ দেশের নাগরিকদের দ্রুত রাশিয়া ত্যাগের নির্দেশনা দিয়েছে।
রাশিয়া ইউক্রেনের কূটনৈতিক পদ থেকে কর্মকর্তা প্রত্যাহার শুরু করেছে। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হুমকির কথা বলে ইউক্রেন থেকে দূতাবাস সরিয়ে নেয়ার পরিকল্পনা ঘোষণার একদিন পর এমন তথ্য জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা তাস।
কয়েক সপ্তাহ শান্তি প্রচেষ্টা নিলেও কিয়েভ কর্তৃপক্ষও ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের ইঙ্গিত দিয়েছে। ইউক্রেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দেশটির নাগরিকদের রাশিয়া ভ্রমণ না করার পরামর্শ দিয়েছে এবং সেখানে অবস্থান করা নাগরিকদের দ্রুত রাশিয়া ত্যাগের সুপারিশ করেছে।
আরও পড়ুন: দুই অঞ্চলকে স্বীকৃতি ইউক্রেনের সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন: জাতিসংঘ প্রধান
রাশিয়া ও ইউক্রেনের চলমান সংকটের মধ্যে পূর্ব ইউক্রেনের বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত দুটি রুশপন্থী অঞ্চলকে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেয় মস্কো। এছাড়া এর কয়েক ঘণ্টা পর সেখানে সৈন্য মোতায়েনের নির্দেশও দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
এদিকে মঙ্গলবার জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তেনিও গুতেরেস পূর্ব ইউক্রেনের দুই অঞ্চলকে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেয়ায় রাশিয়ার উদ্যোগের সমালোচনা করে এটি ইউক্রেনের সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন বলে মন্তব্য করেন। একই সঙ্গে আঞ্চলিক অখণ্ডতা এবং মস্কোর এই পদক্ষেপ ‘শান্তিরক্ষার ধারণার বিকৃতি’ ঘটেছে বলে দাবি করেন তিনি।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক পদক্ষেপ
দুই অঞ্চলকে স্বীকৃতি ইউক্রেনের সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন: জাতিসংঘ প্রধান
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তেনিও গুতেরেস পূর্ব ইউক্রেনের দুই অঞ্চলকে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেয়ায় রাশিয়ার উদ্যোগের সমালোচনা করে এটি ইউক্রেনের সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন বলে মন্তব্য করেছেন। একই সাথে আঞ্চলিক অখণ্ডতা এবং মস্কোর এই পদক্ষেপ ‘শান্তিরক্ষার ধারণার বিকৃতি’ ঘটেছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
জাতিসংঘ প্রধান মঙ্গলবার সাংবাদিকদের বলেন, আমরা জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীদের কৃতিত্বের জন্য গর্বিত, কিন্তু যখন এক দেশের সৈন্যরা অন্য দেশের ভূখণ্ডে তার সম্মতি ছাড়া প্রবেশ করে, যেমনটি রাশিয়ান বাহিনী করেছে, ‘তারা তা নয়। তারা নিরপেক্ষ শান্তিরক্ষী নয়-তারা মোটেও শান্তিরক্ষী নয়’ যেমনটি মস্কো করেছে।
গুতেরেস বলেন, রাশিয়ার একতরফা পদক্ষেপ জাতিসংঘের সনদের সাথেও ‘সাংঘর্ষিক’ এবং পূর্ব ইউক্রেনে শান্তি পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে ‘মিনস্ক চুক্তির স্পষ্ট লঙ্ঘন’।
তিনি ‘এই সংকটময় মুহূর্তে’ অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি, ‘সংযম এবং যুক্তি’ এবং এই বিপজ্জনক পরিস্থিতিকে দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাবে এমন পদক্ষেপ বা বিবৃতি বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
পড়ুন: ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক পদক্ষেপ
এদিকে, নতুন আইন পাশের মাধ্যমে ইউক্রেনের বিদ্রোহী অধ্যুষিত অঞ্চলে নিজেদের দখলকে সুরক্ষিত করার জন্য আরও একধাপ এগিয়ে গেল রাশিয়া। এই আইনের মাধ্যমে মস্কো ইউক্রেনে সেনা মোতায়েনের অনুমোদন পাবে। অন্যদিকে এই পদক্ষেপের কারণে মস্কোর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা ঘোষণার প্রস্তুতি নিচ্ছে পশ্চিমারা।
রাশিয়ার এই নতুন আইন কোনো রকম বিচার-বিবেচনা ছাড়াই অনুমোদন দেয়া হতে পারে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্ররা আশঙ্কা করছে এই আইনটি ইউক্রেনীয় ভূখণ্ডে অনুপ্রবেশের জন্য একটি অজুহাত হিসাবে ব্যবহার করতে পারে রাশিয়া। কেননা এর একদিন আগে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন পূর্ব ইউক্রেনের দুটি অঞ্চলের স্বাধীনতার স্বীকৃতি দিয়েছে।
সোমবার গভীর রাতে পুতিন ডিক্রিতে স্বাক্ষর করার পরপরই সাঁজোয়া বাহিনীর কনভয়কে বিচ্ছিন্নতাবাদী-নিয়ন্ত্রিত অঞ্চল জুড়ে ঘুরতে দেখা গেছে। তবে তারা রাশিয়ান কি না তা তাৎক্ষণিকভাবে পরিষ্কার হয়নি।
পড়ুন: পূর্ব ইউক্রেনের দুই অঞ্চলকে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি রাশিয়ার, সেনা মোতায়েনের নির্দেশ
ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক পদক্ষেপ
নতুন আইন পাশের মাধ্যমে ইউক্রেনের বিদ্রোহী অধ্যুষিত অঞ্চলে নিজেদের দখলকে সুরক্ষিত করার জন্য আরও একধাপ এগিয়ে গেল রাশিয়া। এই আইনের মাধ্যমে মস্কো ইউক্রেনে সেনা মোতায়েনের অনুমোদন পাবে। অন্যদিকে এই পদক্ষেপের কারণে মস্কোর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা ঘোষণার প্রস্তুতি নিচ্ছে পশ্চিমারা।
রাশিয়ার এই নতুন আইন কোনো রকম বিচার-বিবেচনা ছাড়াই অনুমোদন দেয়া হতে পারে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্ররা আশঙ্কা করছে এই আইনটি ইউক্রেনীয় ভূখণ্ডে অনুপ্রবেশের জন্য একটি অজুহাত হিসাবে ব্যবহার করতে পারে রাশিয়া। কেননা এর একদিন আগে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন পূর্ব ইউক্রেনের দুটি অঞ্চলের স্বাধীনতার স্বীকৃতি দিয়েছে।
সোমবার গভীর রাতে পুতিন ডিক্রিতে স্বাক্ষর করার পরপরই সাঁজোয়া বাহিনীর কনভয়কে বিচ্ছিন্নতাবাদী-নিয়ন্ত্রিত অঞ্চল জুড়ে ঘুরতে দেখা গেছে। তবে তারা রাশিয়ান কিনা তা তাৎক্ষণিকভাবে পরিষ্কার হয়নি।
আরও পড়ুন: পূর্ব ইউক্রেনের দুই অঞ্চলকে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি রাশিয়ার, সেনা মোতায়েনের নির্দেশ
এদিকে, রুশ কর্মকর্তারা এখনও বিদ্রোহী অধ্যূষিত পূর্বাঞ্চলে কোনো সেনা মোতায়েনের কথা স্বীকার করেননি। তবে ডনেটস্কের বিচ্ছিন্নতাবাদী স্থানীয় কাউন্সিলের সদস্য ভ্লাদিস্লাভ ব্রিগ সাংবাদিকদের বলেছেন, রাশিয়ান সেন্যরা ইতোমধ্যেই এই অঞ্চলের উত্তর ও পশ্চিমে অবস্থান নিয়েছে।
বিদ্রোহী অঞ্চলগুলোকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসাবে স্বীকৃতি দেয়ার পুতিনের এই সিদ্ধান্ত প্রায় আট বছরের পুরনো বিচ্ছিন্নতাবাদী সংঘাতকে উস্কে দেয়া হবে। আট বছর আগের সংঘাতে ১৪ হাজারেরও বেশি মানুষকে হত্যা করা হয় এবং ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় ডনবাস নামের শিল্প কেন্দ্রকে ধ্বংস করা হয়।
২০১৪ সালে ইউক্রেনীয় ক্রিমিয়া উপদ্বীপ রাশিয়ার অধিগ্রহণের কয়েক সপ্তাহ পরে সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকেই ইউক্রেন এবং তার পশ্চিমা মিত্ররা মস্কোর বিরুদ্ধে সেনা ও অস্ত্র দিয়ে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সমর্থন করার অভিযোগ করেছে। রাশিয়া বরাবরই এই অভিযোগগুলো অস্বীকার করেছে।
মঙ্গলবার রাশিয়ান পার্লামেন্টের উভয় কক্ষে যে খসড়া বিল দ্রুত পাশের চেষ্টা করা হচ্ছে, তাতে বিচ্ছিন্নতাবাদী অঞ্চলে রাশিয়ান সামরিক ঘাঁটিগুলোতে সেনা মোতায়েন সহ সামরিক সম্পর্কের কথা বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: সংকট সমাধানে পুতিনকে আলোচনার প্রস্তাব ইউক্রেনের
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কি দেশবাসীকে শান্ত থাকার পরামর্শ দিয়ে রাতে দেয়া এক ভাষণে বলেন, ‘আমরা কাউকে বা কিছুকে ভয় করি না। আমরা কারো কাছে ঋণী নই। এবং আমরা কাউকে কিছু দেব না।’
ইউক্রেনের স্টেট ডিপার্টমেন্ট জানিয়েছে পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবা মঙ্গলবার ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে দেখা করবেন।
ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ওলেক্সি রেজনিকভে এই টুইটে বলেছেন, ‘ক্রেমলিন ইউক্রেনের বিরুদ্ধে তার নিজস্ব আগ্রাসনকে স্বীকৃতি দিয়েছে।’ মস্কোর এই পদক্ষেপকে ‘নতুন বার্লিন প্রাচীর’ হিসাবে বর্ণনা করে এবং পশ্চিমাদের দ্রুত রাশিয়াকে নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য আহ্বান জানান তিনি।
হোয়াইট হাউস তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বিচ্ছিন্নতাবাদী অঞ্চলে মার্কিন বিনিয়োগ ও বাণিজ্য নিষিদ্ধ করার জন্য একটি নির্বাহী আদেশ জারি করে এবং অতিরিক্ত ব্যবস্থা - হিসেবে মঙ্গলবার নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করতে পারে।
অন্যান্য পশ্চিমা মিত্ররাও বলেছে তারা নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করার পরিকল্পনা করছে।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনে হামলা চালালে রাশিয়া বাজার ও প্রযুক্তি পণ্য অবরোধের মুখে পড়বে
পূর্ব ইউক্রেনের দুই অঞ্চলকে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি রাশিয়ার, সেনা মোতায়েনের নির্দেশ
পূর্ব ইউক্রেনের বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত দু’টি রুশপন্থী অঞ্চলকে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেয়ার কয়েক ঘণ্টা পর সেখানে সৈন্য মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এর মধ্য দিয়ে ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ আসন্ন বলে ইঙ্গিত দিচ্ছে।
পুতিনের স্বাক্ষরিত ডিক্রির পর সৈন্যরা অগ্রসর হচ্ছে কি না সে ব্যাপারে স্পষ্ট কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি তবে সৈন্য মোতায়েনকে ‘শান্তি বজায় রাখার’ প্রচেষ্টা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের আশংকা সত্যি হলে বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির শঙ্কা রয়েছে।
আরও পড়ুন: সংকট সমাধানে পুতিনকে আলোচনার প্রস্তাব ইউক্রেনের
এদিকে ইউক্রেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য দেশের অনুরোধে মঙ্গলবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ একটি জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, ‘আমরা কাউকে ভয় করি না। আমরা কারো কাছে ঋণী নই এবং আমরা কাউকে কিছু দেব না।’
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রি কুলেবা মঙ্গলবার ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে সাক্ষাত করবেন।
আরও পড়ুন: নিউইয়র্কে ব্লার্ড ফ্লু শনাক্ত
সংকট সমাধানে পুতিনকে আলোচনার প্রস্তাব ইউক্রেনের
চলমান সংকট সমাধানে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে আলোচনায় বসার প্রস্তাব দিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
মিউনিখে এক নিরাপত্তা সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আমি জানি না রাশিয়ান ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট কি চান, তাই আমি একটি আলোচনায় বসার প্রস্তাব করছি।’
এদিকে মিউনিখে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের সাথেও বৈঠক করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট।
বৈঠকে জেলেনস্কি বলেন, রাশিয়া আলোচনার জন্য স্থান বেছে নিতে পারে।
তিনি বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ সমাধানের স্বার্থে ইউক্রেন শুধুমাত্র কূটনৈতিক পথ অনুসরণ করবে।’
তবে এ বিষয়ে ক্রেমলিন থেকে তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
পড়ুন: বাইডেন ‘নিশ্চিত’ পুতিন ইউক্রেনে হামলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন
শনিবার পূর্ব ইউক্রেনের রাশিয়াপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতারা ইউক্রেনে একটি পূর্ণ সামরিক সংহতির নির্দেশ দেয়ার কয়েক ঘন্টা পর জেলেনস্কি এসব কথা বলেন।
পশ্চিমা নেতারা ক্রমবর্ধমান ভয়ানক সতর্কবার্তা দিয়েছেন যে, রাশিয়া তার প্রতিবেশির উপর আক্রমণ আসন্ন বলে মনে হচ্ছে।
কয়েক দিনের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হতে পারে এমন আশঙ্কায় জার্মানি এবং অস্ট্রিয়া তাদের নাগরিকদের ইউক্রেন ছেড়ে যেতে বলেছে। জার্মান বিমানবাহী সংস্থা লুফথানসা রাজধানী কিয়েভ এবং ওডেসার ফ্লাইট বাতিল করেছে।
কিয়েভে ন্যাটোর লিয়াজোন অফিস জানিয়েছে, তারা কর্মীদের ব্রাসেলস এবং পশ্চিম ইউক্রেনের শহর লভিভে স্থানান্তরিত করছে।
পড়ুন: ইউক্রেন সীমান্তে আরও ৭ হাজার সেনা মোতায়েন করেছে রাশিয়া, দাবি যুক্তরাষ্ট্রের