রাশিয়া
ইউক্রেন ‘টার্নিং পয়েন্টে’: জেলেনস্কি
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, তার দেশ এখন টার্নিং পয়েন্টে রয়েছে। এছাড়া হামলা কমিয়ে দেয়া হচ্ছে রাশিয়া যে দাবি করেছে তা নিয়েও জেলেনস্কি সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।
তিনি বলেন, রাশিয়ার সাথে অব্যাহত আলোচনা কেবল ‘কথার কথা’।
রাশিয়ার হামলা কমিয়ে দেয়ার প্রতিশ্রুতি বিষয়ে জেলেনস্কি বলেন, ‘আমরা জানি যে এটি প্রত্যাহার নয় বরং বিতাড়িত হওয়ার পরিণতি। তবে আমরা এটাও দেখছি যে রাশিয়া এখন ডনবাসে নতুন হামলার জন্য তার বাহিনীকে কেন্দ্রীভূত করছে এবং আমরাও এর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি ‘
জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া রাতের ভিডিও ভাষণে ইউক্রেনের পেসিডেন্ট এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘যদি আমরা সত্যিই স্বাধীনতার জন্য এবং গণতন্ত্র রক্ষার জন্য একসাথে লড়াই করি, তবে এই কঠিন সময়ে ট্যাংক, যুদ্ধবিমান ও অস্ত্র চাওয়ার অধিকার আমাদের রয়েছে। স্বৈরশাসকের পাশাপাশি স্বাধীনতাকে সশস্ত্র হতে হবে।’
ভাষণে বুধবার ঘোষণা করা অতিরিক্ত ৫০০ মিলিয়ন সহায়তা জন্য তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ধন্যবাদ জানান।
এদিকে বুধবার রাশিয়ান বাহিনী কিয়েভ এবং উত্তরাঞ্চলীয় শহর চেরনিহিভের আশেপাশের এলাকা ও দেশের অন্যান্য অংশে আক্রমণ আরও জোরদার করেছে বলে ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
শান্তি আলোচনায় ইউক্রেনীয় প্রতিনিধিদলের প্রধান ডেভিড আরাখামিয়া জানিয়েছেন, ভিডিওর মাধ্যমে ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে শুক্রবার পুনরায় আলোচনা শুরু হবে।
পড়ুন: কিয়েভ ও চেরনিহিভ থেকে সামরিক তৎপরতা কমাবে মস্কো
ইসরায়েলে বন্দুকধারীর হামলায় নিহত ৫
কিয়েভ ও চেরনিহিভ থেকে সামরিক তৎপরতা কমাবে মস্কো
তুরস্কের মধ্যস্থতায় শান্তি আলোচনার পর পরই ইউক্রেনের কিছু অঞ্চল থেকে সৈন্য প্রত্যাহার করে নেয়ার কথা ঘোষণা করেছে রাশিয়া।
মস্কো জানিয়েছে, তারা রাজধানী কিয়েভের চারপাশে এবং উত্তরাঞ্চলীয় চেরনিহিভ শহরে তাদের সামরিক তৎপরতা উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কমিয়ে দেবে।
২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরু হওয়ার পর যুদ্ধ বন্ধে রাশিয়ার এই সিদ্ধান্তকে সবচেয়ে ইতিবাচক ঘটনা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, রাশিয়ার ডেপুটি প্রতিরক্ষামন্ত্রী আলেকজান্দার ফোমিন বলেছেন, তাদের এই সিদ্ধান্তের উদ্দেশ্য হচ্ছে পারস্পরিক আস্থা বৃদ্ধি করা এবং আরও সমঝোতার পরিবেশ তৈরি করা।
তুরস্কে তিন ঘণ্টা ধরে বৈঠকের পর তুর্কী পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভুলত কাভুসগলুও আলোচনায় বড় ধরনের অগ্রগতি হয়েছে জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, উভয়পক্ষের মধ্যে আলোচনা শুরু হওয়ার পর থেকে এবারই উল্লেখযোগ্য রকমের অগ্রগতি ঘটলো।
রাশিয়ার কর্মকর্তারা বলেছেন, এই আলোচনা এখন এক বাস্তব পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছে।
কিয়েভের ওপর রাশিয়ার সামরিক আক্রমণের পরিকল্পনা অনেকদিন ধরেই থমকে আছে।
ইউক্রেনের সৈন্যদের প্রতিরোধের মুখে রাজধানীর আশেপাশের কিছু জায়গা থেকে রুশ বাহিনী ইতোমধ্যে পিছু হঠতে বাধ্য হয়েছে।
পড়ুন: রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ: শরণার্থীর সংখ্যা প্রায় ৪০ লাখ
দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় মারিউপোলসহ যেসব জায়গায় বড় ধরনের সংঘর্ষ হচ্ছে সেসব জায়গার ব্যাপারে কিছু বলা হয়নি।
ইস্তাম্বুলের শান্তি সংলাপে ইউক্রেনের প্রতিনিধি দলটি জানিয়েছে, তাদেরকে নিরাপত্তার গ্যারান্টি দেয়া হলে পশ্চিমা প্রতিরক্ষা জোট ন্যাটোতে যোগ না দিয়ে তারা নিরপেক্ষ দেশ হিসেবে ভূমিকা পালনের প্রস্তাব দিয়েছে।
আর এটাই রাশিয়ার প্রধান দাবি।
শিয়ার প্রতিনিধি দলটি জানিয়েছে, তারা এই প্রস্তাব প্রেসিডেন্ট পুতিনের কাছে পৌঁছে দেবেন।
রাশিয়ার ডেপুটি প্রতিরক্ষামন্ত্রী আলেকজান্দার ফোমিন শান্তি আলোচনায় অংশ নেন।
রুশ টেলিভিশনকে তিনি বলেছেন, ‘ইউক্রেনের নিরপেক্ষতা এবং পরমাণু-মুক্ত মর্যাদা এবং নিরাপত্তার ব্যাপারে’ অগ্রগতি হয়েছে।
এর পরই রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সামরিক তৎপরতা নাটকীয়ভাবে কমিয়ে আনার কথা ঘোষণা করে।
ইউক্রেন পক্ষের মধ্যস্থতাকারী ওলেকসান্দার চ্যালি সাংবাদিকদের বলেছেন, তাদের দেশের ‘ভৌগলিক অখণ্ডতা ও নিরাপত্তার জন্যেই ইউক্রেনের নিরপেক্ষ অবস্থান গ্রহণের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। কূটনৈতিক ও রাজনৈতিকভাবে তা অর্জন করা হবে।’
ইউক্রেন বলছে কিয়েভ ও চেরিনিহিভ এই দুটো জায়গা থেকে রুশ সেনা কমিয়ে আনার লক্ষণ তারা দেখতে পাচ্ছেন।
তবে তারা বলছেন নতুন সৈন্য মোতায়েন রাশিয়ার জন্য কঠিন হয়ে পড়েছে।
বৈঠকে যুদ্ধবিরতি নিয়ে কোনো মীমাংসা হয়নি। তবে প্রেসিডেন্ট পুতিন ও প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির মধ্যে সামনাসামনি একটি বৈঠক অনুষ্ঠানের জন্য উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে বলে জানা গেছে।
পড়ুন: নিরপেক্ষ অবস্থান নিয়ে আলোচনার জন্য প্রস্তুত জেলেনস্কি
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ: শরণার্থীর সংখ্যা প্রায় ৪০ লাখ
রুশ আগ্রাসনের কারণে ইতোমধ্যে প্রায় ৪০ লাখ লোক শরণার্থী হিসেবে ইউক্রেন ছেড়েছে। তবে সম্প্রতি শরণার্থীর ঢল কিছুটা হ্রাস পেয়েছে।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার দেশটির বর্ডার গার্ড ও বিভিন্ন সাহায্যকারী সংস্থা এসব তথ্য জানিয়েছে।
এছাড়া দেশের পক্ষে যুদ্ধ করতে কিছু ইউক্রেনীয়কে তাদের দেশে আটকে রাখা হয়েছে, কেউ কেউ আবার নিজেদের বাড়ি ছাড়লেও শেষ পর্যন্ত যুদ্ধ কোনদিকে আগায় তা বোঝার জন্য দেশের অন্য প্রান্তে বসে অপেক্ষা করছে। কিছু বয়স্ক ও অসুস্থব্যক্তি এবং কিছু মানুষ নিজ ইচ্ছায়ই এখনও নিজেদের বাড়িতেই রয়ে গেছে।
২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া রুশ আগ্রাসনের পর বোমা হামলা থেকে বাঁচতে প্রথম দুই সপ্তাহেই ইউক্রেনের যুদ্ধ-পূর্ব জনসংখ্যার চার কোটি ৪০ লাখের মধ্যে প্রায় ২৫ লাখ দেশ ছেড়ে চলে যায়।
সোমবার জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) ঘোষিত সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুসারে, মোট শরণার্থীর সংখ্যা এখন ৩০ লাখ ৮৭ হাজারে পৌঁছেছে।
তবে, আগের ২৪ ঘন্টায় শুধুমাত্র ৪৫ হাজার মানুষ ইউক্রেনের সীমানা অতিক্রম করেছে।
আরও পড়ুন: নিরপেক্ষ অবস্থান নিয়ে আলোচনার জন্য প্রস্তুত জেলেনস্কি
পোলিশ সীমান্ত রক্ষীদের একজন মুখপাত্র আনা মিচালস্কা বলেন, যারা যুদ্ধ শুরু হলে চলে যাওয়ার জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিল তারা প্রথম দিকেই দেশ ছেড়েছে।
ইউএনএইচসিআর বলেছে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের সবচেয়ে খারাপ শরণার্থী সংকটের সূত্রপাত করেছে এই যুদ্ধ। পোল্যান্ড, রোমানিয়া, মলদোভা, হাঙ্গেরি, স্লোভাকিয়ায় বিপুল সংখ্যক ইউক্রেনীয় আশ্রয় নিয়েছে। শুধুমাত্র পোল্যান্ডেই ২৩ লাখ শরণার্থী আশ্রয় নিয়েছে। অন্যদিকে রোমানিয়ায় রয়েছে প্রায় ছয় শরণার্থী। এছাড়াও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এক লাখ শরণার্থীকে আশ্রয় দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
সিরিয়ায় ১১ বছর ধরে চলা বিধ্বংসী যুদ্ধেও এত দ্রুত, এত অধিক সংখ্যক শরণার্থী সংকট তৈরি হয়নি।
পোল্যান্ডে ইউএনএইচসিআর-এর জ্যেষ্ঠ জরুরি সমন্বয়কারী অ্যালেক্স মুন্ড বলেছেন, আমরা আশা করি নতুন করে শরণার্থীর ঢল হ্রাস পাবে। তবে আমি বিশ্বাস করি যুদ্ধের একটি রাজনৈতিক সমাধান না হওয়া পর্যন্ত, এটা হওয়ার কোনও গ্যারান্টি আছে।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থাও (আইওএম) অনুমান করেছে, ইউক্রেনের আরও ৬৫ লাখ মানুষ রুশ আগ্রাসনের ফলে তাদের বাড়িঘর থেকে বিতাড়িত হয়েছে, কিন্তু তারা দেশের অভ্যন্তরে বাস্তুচ্যুত হয়ে রয়েছে।
আরও পড়ুন: দোহা ফোরামে জেলেনস্কির ভিডিও বার্তা
রাশিয়াকে থামাতে বিলম্ব করেছে ইউরোপ: জেলেনস্কি
নিরপেক্ষ অবস্থান নিয়ে আলোচনার জন্য প্রস্তুত জেলেনস্কি
নিরপেক্ষ অবস্থান গ্রহণ করে একটি শান্তি চুক্তির ব্যাপারে আলোচনা করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদোমির জেলেনস্কি। একই সাথে তার আগে কোন তৃতীয় পক্ষের নিশ্চয়তা এবং একটি গণভোট হতে হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
রাশিয়ান সাংবাদিকদের সাথে এক সাক্ষাৎকারে তিনি এমন বক্তব্য দিয়েছেন। এর পরপরই তার সাক্ষাৎকার প্রকাশ না করার ব্যাপারে মস্কো থেকে সতর্কবার্তা এসেছে।
সোমবার বিবিসির এক প্রতিবেদেনে এ তথ্য জানানো হয়।
চলতি সপ্তাহেই তুরস্কে ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে পরবর্তী মুখোমুখি আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।
সেখানে ইউক্রেনের স্বাধীনতা প্রাধান্য পাবে বলে উল্লেখ করেছেন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি।
এদিকে ইউক্রেন অভিযোগ করেছে যে, মারিউপল থেকে জোর করে হাজার হাজার বেসামরিক ইউক্রেনীয়ান নাগরিকদের সীমান্ত পার করে রাশিয়া নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
স্যাটেলাইট ইমেজে দেখা গেছে, মারিউপলের পূর্বে রাশিয়ার সীমান্তের ভেতরে একটি অস্থায়ী শিবির। যেখানে পাঁচ হাজারের মতো ইউক্রেনীয়ানকে রাখা হয়েছে।
রাশিয়ান হামলায় বিধ্বস্ত গুরুত্বপূর্ণ বন্দরনগরী মারিউপল।
পড়ুন: দোহা ফোরামে জেলেনস্কির ভিডিও বার্তা
ইউক্রেনের ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী ইরানা ভেরেশুক বলেছেন, ৪০ হাজারের মতো ইউক্রেনীয়ানকে রাশিয়া নিয়ন্ত্রিত এলাকায় জোর করে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
রাশিয়াতে রয়েছেন মারিউপলের এরকম একজন শরণার্থী বলেচেন, ‘আমাদের সবাইকে জোর করে নিয়ে আসা হয়েছে।’
মারিউপলের কর্তৃপক্ষ বলছে, এক লাখ ৪০ হাজারের মত বাসিন্দা অবরুদ্ধ শহরটি থেকে পালাতে সক্ষম হলেও আরও এক লাখ ৭০ হাজারের মতো মানুষ সেখানে আটকে পড়েছেন।
তিন সপ্তাহ ধরে সেখানে রাশিয়ান বোমা হামলা শহরটিকে ধ্বংসস্তুপে পরিণত করেছে। আতঙ্কগ্রস্ত অধিবাসীরা মাটির নিচে আশ্রয় নিয়েছে। ব্যাপক খাবার, পানি ও ঔষধের সংকটের মুখে পড়েছেন তারা।
পড়ুন: দুই বছর পর আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু ভারতের
মস্কো থেকে আমেরিকান কূটনীতিক বহিষ্কার
মস্কোর আমেরিকার দূতাবাস থেকে বেশ কয়েকজন কূটনীতিককে বহিষ্কারের প্রক্রিয়া শুরু করেছে রাশিয়া।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা বুধবার কূটনীতিকদের একটি তালিকা পেয়েছে যাদের রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ‘পার্সোনা নন গ্রাটা’ বলে ঘোষণা করেছে। এই আদেশের মধ্যে কতজন কূটনীতিক রয়েছে তা বলা হয়নি।
সোমবার রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দেশটিতে মার্কিন রাষ্ট্রদূত জন সুলিভানকে তলব করে। ইউক্রেন আক্রমণের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে 'যুদ্ধাপরাধী' বলায় মস্কোর পক্ষ থেকে এর কড়া প্রতিবাদ জানানো হয়।
বৈঠকের পর রাশিয়া জানিয়েছে, তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার কাছাকাছি, যা হবে একটি নজিরবিহীন পদক্ষেপ।
এর আগে চলতি মাসের শুরুর দিকে জাতিসংঘে রাশিয়ান মিশনের ১২ সদস্যকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত জানিয়েছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। গুপ্তচরবৃত্তিতে জড়িত থাকার অভিযোগে তাদের ‘গোয়েন্দা অপারেটিভ’ হিসেবে অভিযুক্ত করে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।ইউক্রেনে রাশিয়ান আগ্রাসনের পঞ্চম দিনে বাইডেন প্রশাসন এই পদক্ষেপ গ্রহণ করে।
জাতিসংঘে মার্কিন মিশন এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘তাদের জাতীয় নিরাপত্তার পরিপন্থী গুপ্তচরবৃত্তিমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত হয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসের সুযোগের অপব্যবহার করেছেন রুশ কূটনীতিকরা।’
পড়ুন: ‘গুপ্তচরবৃত্তির’ অভিযোগে ১২ রুশ কূটনীতিককে বহিষ্কার করল যুক্তরাষ্ট্র
পুতিনকে ‘যুদ্ধাপরাধী’ বলায় রাশিয়ার কড়া প্রতিক্রিয়া
ইউক্রেনে ৭ থেকে ১৫ হাজার রুশ সেনা নিহত: ন্যাটো
উত্তর আটলান্টিক নিরাপত্তা জোটের (ন্যাটো) একজন শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা বলেছেন, ইউক্রেনে চার সপ্তাহের যুদ্ধে ৭ থেকে ১৫ হাজার রুশ সেনা নিহত হয়েছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেছেন, ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষের তথ্য, ইচ্ছা বা অনিচ্ছায় রাশিয়ার প্রকাশ করা তথ্য এবং গোয়েন্দা তথ্যের ওপর ভিত্তি করে এ সংখ্যা অনুমান করা হয়েছে।
এদিকে, ইউক্রেন তাদের নিজস্ব সামরিক ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে সামান্যই তথ্য প্রকাশ করেছে। পশ্চিমারাও এ বিষয়ে তেমন কিছু বলেননি। তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমার জেলেনস্কি প্রায় দুই সপ্তাহ আগে বলেছেন, রুশ হামলায় প্রায় ১ হাজার ৩০০ ইউক্রেনীয় সেনা নিহত হয়েছে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এরপর খুব দ্রুত ইউক্রেন সরকারের পতন ঘটবে বলে মনে করা হলেও বুধবার (২৩ মার্চ) পর্যন্ত পূর্ণ চার সপ্তাহের যুদ্ধে রুশ সৈন্যরা দেশটির একমাত্র খেরসন শহর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।বন্দর নগরী মারিউপোল ও খারকিভ শহর দখলের জন্য রুশ বাহিনী গোলাবর্ষণ অব্যাহত রেখেছে।
পড়ুন: রাশিয়ার বিরুদ্ধে ১৫ উদ্ধারকর্মী আটকের অভিযোগ ইউক্রেনের
চুক্তি নিয়ে আলোচনা করতে প্রস্তুত ইউক্রেন: জেলেনস্কি
ইউক্রেনে হামলার শিকার জাহাজের দুই কোটি ২৪ লাখ মার্কিন ডলার ক্ষতিপূরণ দাবি
ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে রাশিয়ান রকেট হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত ‘এমভি বাংলার সমৃদ্ধি’ জাহাজের ক্ষতিপূরণ চেয়েছে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন (বিএসসি)।
রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বীমা প্রতিষ্ঠান সাধারণ বীমা করপোরেশনের কাছে দুই কোটি ২৪ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার ক্ষতিপূরণ চেয়ে সম্প্রতি চিঠি দিয়েছে এ সংস্থাটি। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ দাঁড়ায় ১৯৩ কোটি ৩২ লাখ টাকা।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনে বাংলাদেশি জাহাজে রকেট হামলা, নিহত এক নাবিক
বিএসসির সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশের সাধারণ বীমা কর্পোরেশন এবং লন্ডনভিত্তিক বিজলে ইন্স্যুরেন্স যৌথভাবে ওই টাকা পরিশোধ করার কথা।
সাধারণ বীমার কাছে ক্ষতিপূরণ চেয়ে চিঠি দেয়ার বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমোডর সুমন মাহমুদ সাব্বির। তিনি বলেন, নিয়ম মেনেই যথাসময়ে বীমার টাকা দাবি করা হয়েছে।
সূত্র মতে, নিয়ম অনুযায়ী, বিজলে ইন্স্যুরেন্স ও সাধারণ বীমা করপোরেশন ক্ষতিপূরণের টাকা পরিশোধ করবে। তবে ক্ষতিপূরণ কত হবে তা নির্ধারিত হবে সালিশির মাধ্যমে। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ শেষ না হওয়া পর্যন্ত ওই জাহাজে কোনো আন্তর্জাতিক ক্লাস সোসাইটির সার্ভেয়ার গিয়ে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করতে পারবেন না। এ কারণে ক্ষতিপূরণের টাকা পেতে সময় লাগতে পারে বলে ধারণা করছেন বিএসসির কর্মকর্তারা। জাহাজটি ২০১৮ সালে বিএসসির বহরে যুক্ত হয়।
আরও পড়ুন: দেশে ফিরলেন ‘বাংলার সমৃদ্ধি’র ২৮ নাবিক
তখন এটির নির্মাণ ব্যয় পড়েছিল ২৫ দশমিক ৩০ মিলিয়ন ডলার, যা বাংলাদেশের মুদ্রায় ২১৫ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ৮৫ টাকা দরে)।
এদিকে বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজে হামলার ঘটনায় একজন যুগ্মসচিবের নেতৃত্বে সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়।
উল্লেখ্য গত ২ মার্চ অলভিয়া বন্দরের অদূরে নোঙর করা জাহাজটিতে রকেট হামলায় থার্ড ইঞ্জিনিয়ার মো. হাদিসুর রহমান ঘটনাস্থলেই মারা যান। পরে জাহাজটিকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করে সরকার। বর্তমানে জাহাজটি ওই বন্দরেই রয়েছে।
কিয়েভ-মস্কো আলোচনা বাস্তবসম্মত হয়ে উঠছে: জেলেনস্কি
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রাশিয়ার সঙ্গে শান্তি আলোচনা আরও বাস্তবসম্মত হয়ে উঠতে শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন।
জাতির উদ্দেশে দেয়া সর্বশেষ ফেসবুক ভিডিও ভাষণে তিনি বলেন, ‘রাশিয়ার দাবিগুলো ‘আরও বাস্তবসম্মত’ হয়ে উঠতে শুরু করেছে।’
তবে আলোচনা ফলপ্রসূ হতে আরও সময় লাগবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
জেলেনস্কি বলেন, ‘এখনও প্রচেষ্টা প্রয়োজন, ধৈর্য্য প্রয়োজন। যেকোনো যুদ্ধ একটি চুক্তির মাধ্যমে শেষ হয়।’
বুধবারর ভিডিও কন্ফারেন্সের মাধ্যমে উভয় পক্ষ আবার আলোচনায় বসবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
মার্কিন কংগ্রেসে বুধবার ভাষণ দেয়ার কথা রয়েছে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির।
এদিকে, ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে বোমাবর্ষণ আরও জোরদার করেছে রাশিয়া। বন্দর শহর মারিউপোলতে নতুন করে আক্রমণ শুরু রুশ সামরিক বাহিনী।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করার পর থেকে ইতোমধ্যে ৩০ লাখেরও বেশি ইউক্রেনীয় পোল্যান্ড এবং অন্যান্য প্রতিবেশি দেশগুলোতে পাড়ি জমিয়েছে। জাতিসংঘের তথ্যমতে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে ইউরোপের বৃহত্তম শরণার্থী সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে ইউক্রেন যুদ্ধের মাধ্যমে।
পড়ুন: রুশ হামলায় কিয়েভে আগুন, পরিদর্শনে ইইউ এর ৩ নেতা
আলোচনা চলমান সত্ত্বেও ইউক্রেনে রুশ হামলা অব্যাহত
ইউক্রেনে রুশ হামলায় মার্কিন সাংবাদিক নিহত
ইউক্রেনে রাশিয়ার সেনাবাহিনীর হামলায় এক মার্কিন ভিডিও সাংবাদিক নিহত এবং আরেক সাংবাদিক আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে কিয়েভ অঞ্চলের পুলিশ।
নিহত ওই মার্কিন সাংবাদিকের নাম ব্রেন্ট রেনাড (৫০)।
রবিবার ইউক্রেনীয় পুলিশ তাদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে জানায়, রুশ সেনারা রাজধানীর কাছে ইরপিনে ব্রেন্ট রেনাড ও আরেক সাংবাদিকের গাড়িতে গুলি চালায়। আহত সাংবাদিককে কিয়েভের একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনের সামরিক ঘাঁটিতে রুশ বিমান হামলায় নিহত ৩৫
নিউইয়র্ক টাইমসের এক মুখপাত্র বলেছেন, ৫০ বছর বয়সী রেনাড একজন ‘প্রতিভাবান চলচ্চিত্র নির্মাতা যিনি কয়েক বছর নিউইয়র্ক টাইমসে এ অবদান রেখেছেন। তবে মৃত্যুকালে তিনি সংবাদপত্রটির জন্য কাজ করছিলেন না।’
ইউক্রেনীয় পুলিশ বলছে, ‘অবশ্যই সাংবাদিকতা পেশা ঝুঁকিপূর্ণ। তা সত্ত্বেও মার্কিন নাগরিক ব্রেন্ট রেনাড তার জীবন দিয়ে হামলাকারীর প্রতারণা, নিষ্ঠুরতা ও নির্মমতা তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন।’
এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভান সিবিএস নিউজকে বলেছেন, মার্কিন সরকার ইউক্রেনীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপ করবে যে এটি কীভাবে ঘটেছে এবং তারপরে ‘যথাযথ পরিণতি কার্যকর করবে’।
আরও পড়ুন: রাশিয়ার আক্রমণ শুরুর পর থেকে ৮৫ শিশু নিহত: ইউক্রেন
ইউক্রেন নিয়ে কিছু বাংলাদেশি গণমাধ্যমের সংবাদ প্রচার পক্ষপাতমূলক: রুশ রাষ্ট্রদূত
ইউক্রেন পরিস্থিতি ও সেখানে রাশিয়ার পদক্ষেপ নিয়ে সংবাদ প্রচারে বাংলাদেশি কিছু গণমাধ্যমের ‘পক্ষপাতমূলক দৃষ্টিভঙ্গি’র অভিযোগ তুলে তাদের সমালোচনা করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার ভি. মান্তিতস্কি।
তিনি এটাকে ঢাকা ও মস্কোর সম্পর্ক নষ্ট করার ‘ইচ্ছাকৃত প্রচেষ্টা’ বলেও বর্ণনা করেছেন।
রবিবার বাংলাদেশের প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক সংবাদমাধ্যমের সম্পাদক, রেডিও ও টিভি প্রধানদের কাছে এক খোলা চিঠিতে রুশ রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘ইউক্রেন পরিস্থিতি ও সেখানে রাশিয়ার পদক্ষেপের প্রতি কিছু বাংলাদেশি গণমাধ্যমের দৃষ্টিভঙ্গি পক্ষপাতদুষ্ট বলে মনে করি। আর এটা যারা সর্বদা রাশিয়ান ফেডারেশন ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের মধ্যে পারস্পরিক সুবিধাজনক সহযোগিতাকে ক্ষুন্ন করতে চায় সেই শক্তির ইচ্ছাকৃত প্রচেষ্টার ফল।’
আরও পড়ুন: বন্যা প্রতিরোধ সক্ষমতা বৃদ্ধিতে আরও বাঁধ দরকার: অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী
রাষ্ট্রদূত ১৯৭১ সালের কথা উল্লেখ করেন যখন বাংলাদেশিরা ভারত ও ইউএসএসআরের সক্রিয় সমর্থনে বাঙালিদের প্রতি হয়রানি, বৈষম্য ও সহিংসতা বন্ধ এবং মাতৃভাষায় কথা বলার অধিকার উপভোগের অবাঙালি প্রভুদের উৎখাত করে।
তিনি বলেন, ‘পূর্ব ইউক্রেনের দনবাস অঞ্চলের রুশ ভাষাভাষী জনগণ আট বছর ধরে একই অধিকার পাওয়ার জন্য সংগ্রাম করে আসছে এবং কিয়েভ শাসনে তারা গণহত্যারও শিকার হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি আমার খোলা চিঠির মাধ্যমে আপনার পাঠকরা ইউক্রেনের চারপাশের বিষয়ে একটি বিকল্প দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে পরিচিত হতে সক্ষম হবেন।’
আরও পড়ুন: ইউক্রেনের সামরিক ঘাঁটিতে রুশ বিমান হামলায় নিহত ৩৫
সম্পাদকদের কাছে তার চিঠিটি বাংলাদেশি পাঠকদের কাছে আবারও ইউক্রেনে রাশিয়ার ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ এর লক্ষ্য ও কার্যক্রম ব্যাখ্যার একটি প্রচেষ্টা বলেও জানান তিনি।
রাষ্ট্রদূতের মতে লক্ষ্যগুলো হলো:
১. ইউক্রেনের রুশ ভাষাভাষী বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষা করা যারা আট বছর ধরে কিয়েভ সরকার দ্বারা গণহত্যার শিকার হয়েছে;
২. নব্য ফ্যাসিবাদ নির্মূল করা;
৩. ইউক্রেনে পারমাণবিক অস্ত্রের বিকাশ রোধ করা এবং
৪. ইউক্রেনে ন্যাটোর সামরিক ঘাঁটি স্থাপন বন্ধ করা।
কার্যক্রমগুলো হলো:
১. ইউক্রেনকে নিরস্ত্রীকরণ এবং ডিনাজিফাই করা (নাৎসি মতাদর্শ থেকে মুক্ত করা);
২. মহান দেশপ্রেমিক যুদ্ধে পরাজিত হওয়ার পর ইউক্রেনে মাথা চাড়া দিয়ে উঠা নব্য ফ্যাসিবাদের অবসান ঘটানো;
৩. রাশিয়ান ফেডারেশনের সীমান্তে সামরিক হুমকি দূর করা;
৪. শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের জন্য হুমকিস্বরূপ ইউক্রেনের আগ্রাসী সত্তাকে নিরস্ত্র করা এবং
৫. রাশিয়ান ফেডারেশনের আদালতে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ইউক্রেনের বেসামরিক নাগরিক এবং রাশিয়ান নাগরিকদের বিরুদ্ধে অপরাধ করেছে এমন ব্যক্তিদের চিহ্নিত করা এবং শাস্তি দেয়া।
রাষ্ট্রদূত মানতিতস্কি বলেন, ‘আমরা ইউক্রেন দখলের পরিকল্পনা করছি না। আমরা ইউক্রেনের জনগণের সঙ্গে যুদ্ধ করছি না। আমরা জোর করে কারও ওপর কিছু চাপিয়ে দিতে চাই না। আমরা অনেকবার ব্যাখ্যা করেছি ইউক্রেনের পরিস্থিতি এমনভাবে বিকশিত হয়েছে যে এটি রাশিয়ার নিরাপত্তার জন্য সরাসরি হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
আরও পড়ুন: রাশিয়ার আক্রমণ শুরুর পর থেকে ৮৫ শিশু নিহত: ইউক্রেন