বাজেট
বাজেট ২০২২-২৩: অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা ও পণ্যের পর্যাপ্ত সরবরাহ প্রধান চ্যালেঞ্জ হতে পারে
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, পণ্য সরবরাহ ও এলডিসি উত্তরণ এই তিনটি বিষয়কে আগামী বাজেটে বড় চ্যালেঞ্জ মনে করছেন অর্থনীতিবিদ ও শীর্ষ ব্যবসায়ীরা।
তারা বলেন, পণ্য উৎপাদন ব্যহত, সরবরাহ বাধাগ্রস্ত এবং আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি জনিত অর্থনৈতিক সমস্যাগুলো আগামী বাজেটে চিহ্নিত করতে হবে। বৈশ্বিক চাপ মোকাবিলায় অভ্যন্তরীণ সক্ষমতা বাড়াতে হবে। একই সঙ্গে এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকারি-বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়ানো, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও সামাজিক সুরক্ষা বাড়ানোরসহ নানা সুবিধা আগামী বাজেটে থাকতে হবে।
দ্য বিজনেস পোস্ট মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ‘ইকোনোমিক চ্যালেঞ্জ অ্যান্ড দ্য আপকামিং বাজেট ফর ফিনান্স্যিয়াল ইয়ার-২০২৩’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা আসন্ন বাজেট নিয়ে এসব কথা বলেন।
শনিবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে বিজনেস পোস্ট কার্যালয়ে এর আয়োজন করে ইংরেজি দৈনিক দ্য বিজনেস পোস্ট।পত্রিকাটির নির্বাহী সম্পাদক নাজমুল আহসানের সঞ্চালনায় বক্তারা তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন।
আরও পড়ুন: বাজেট ২০২২-২৩: খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে সারে ভর্তুকি বাড়াবে সরকার
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, বাজেটের মূল চ্যালেঞ্জ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ। বর্তমান মূল্যস্ফীতি এর উৎস বৈশ্বিক পরিস্থিতি। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে জ্বালানির দাম বৃদ্ধি। যখন বৈশ্বিক কারণে মূল্যস্ফীতি বাড়ে তখন আভ্যন্তরীণ পলিসি দিয়ে ঠেকানো যাবে না। এক্ষেত্রে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তাদের কতটা সুরক্ষা দিতে পারে বাজেটে তার প্রতিফলন থাকা উচিত। এ জন্য সামাজিক নিরাপত্তা বাড়ানো যায়। কিন্তু যাদের প্রয়োজন তারা সঠিকভাবে তা পায় না। এই তহবিলের টাকা তসরুফ হয়। এটা প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট নয়। সুতরাং, এ খাতে আগামী বাজেটে বরাদ্দ বাড়ানো উচিত।
একই সঙ্গে পেনশনকে সামাজিক নিরাপত্তা খাত থেকে বাদ দেয়া উচিত। প্রত্যেক বছর বাজেটের যে আকার থাকে সংশোধিত বাজেটে তা কমানো হয় এবং বাস্তবে আরও কম হয়। বাজেটের সংখ্যা কতটুকু অর্থবহ এমন প্রশ্ন তুলেন এ অর্থনীতিবিদ।
তিনি বলেন, এই প্রবণতা থেকে বেরিয়ে আসা উচিত। এ ক্ষেত্রে বাজেটের আকার কমানো নয়। ব্যয় সক্ষমতা বাড়ানো দরকার। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সর্বনিম্ন সরকারি ব্যয় বাংলাদেশের।
মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, রাজস্ব না বাড়লে ব্যয়ের মাত্রা কমবে। নেপাল ও ভারতে ট্যাক্স জিডিপি রেশিও ২২ শতাংশ। আর পাকিস্তানেও ১৫ শতাংশ। বাংলাদেশে বর্তমানে ১০ শতাংশ অনুপাতে বাড়াতে হবে। যারা কর দেন তাদের উপর চাপ দেয়া হয়। অথচ টিআইএন (ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নম্বর) ধারীর সংখ্যার অর্ধেক ট্যাক্স রিটার্ন দেন না। তাদের কাছ থেকে কেন কর পাওয়া যায় না তা দেখার বিষয় আছে।
তিনি বলেন, এখন শিক্ষিতদের মধ্যে বেকারত্বে হার বেশি। এ ব্যাপারে বাজেটে পদক্ষেপ থাকা উচিত। কারণ গত এক দশক ধরে বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ স্থবির। এ ক্ষেত্রে ফান্ডিং ও ক্যাপিট্যাল মার্কেট সমস্যা সামাধান করা দরকার।
আরও পড়ুন: ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাজেটে বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি দ্বিগুণ হতে পারে
ব্যবসার সহজীকরণ সূচকে পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ। তবে আগের চেয়ে বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ওয়ান স্টপ সার্ভিস উন্নতি হয়েছে। বর্তমানে ব্যক্তি পর্যায়ে বিনিয়োগকারীদের ক্ষেত্রে কিছুটা অগ্রগতি থাকলেও প্রাতিষ্ঠানিক সমস্যা রয়েছে। আগামী বাজেটে এ বিষয়ে নির্দেশনা থাকতে পারে।
খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, একটা সংস্কারের ভিতর থেকে বেরিয়ে আসছিল দেশ। কোভিড উত্তর ভালোভাবে যাচ্ছিল এবং ব্যবসায়ীরা বিনিয়োগে উৎসাহিত হচ্ছিল। ওই সময়ের পর থেকে সাপ্লাই চেইন বাধাগ্রস্থ হয়েছে। একই সঙ্গে ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। যুদ্ধের কারণে সামগ্রিক জ্বালানি মূল্য বৃদ্ধি ও সরবরাহ সংকটের চাপ এখন অর্থনীতিতে বিরাজমান।
সিপিডির রিচার্স ডিরেক্টর বলেন, ব্যালেন্স অব পেমেন্টে চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে। রপ্তানি বেড়েছে, তবে এখন রপ্তানি চেয়ে আমদানি ব্যয় প্রবৃদ্ধি বেশি। এ ক্ষেত্রে রেমিট্যান্স ও বৈদেশিক ঋণ দিয়ে সমতা করতে পারে। তবে সেটা চ্যালেঞ্জের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। আগামী কিছু দিন ফরেন এক্সচেঞ্জ মার্কেটে অস্থিশীল পরিস্থিতি থাকবে। ডলারের মূল্য স্থিতিশীল রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের যৌক্তিক ব্যবস্থা নিতে হবে। খোলা বাজারে ডলারের দাম বেশি। এক্ষেত্রে সঠিক পদক্ষেপ না নিলে হুন্ডিতে রেমিট্যান্স বেড়ে যাবে। এ জন্য খোলা বাজার থেকে ডলার কেনা-বেচার বিষয়ে নজরদারি বাড়াতে হবে।
তিনি বলেন, পণ্য সরবরাহ ঘাটতি মোকাবিলায় পদক্ষেপ থাকতে হবে। মূল্যস্ফীতি জনিত সংকট ধীরে ধীরে বাড়ছে। মূল্যস্ফীতি এখন যে জায়গায় দাঁড়িয়েছে এই সময়ের প্রেক্ষাপটে খাদ্য মূল্যস্ফীতি কমেছে আর খাদ্যবর্হিভূত বেড়েছে। এটা কি করে হয় এমন প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। মূল্যস্ফীতি ধরে রাখার প্রবণতা আছে এটা ঠিক নয়।
আরও পড়ুন: জাতীয় বাজেট উপস্থাপন ৯ জুন: মুস্তফা কামাল
মোয়াজ্জেম বলেন, ঋণের সুদ একটি নির্দিষ্ট হারে রাখার কারণে ঋণ ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এসএমই খাতে ৯ শতাংশ সুদে ঋণ দিয়ে ব্যাংকগুলোর পোষায় না। এ কারণে ব্যাংকগুলো এসএমই ঋণে নিরুৎসাহিত হবে। আগামীতে এসএমই খাতের স্বার্থে সুদ হারের এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন পড়বে।
তিনি আরও বলেন, আগামী বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি বাড়াতে হবে। বিশেষ করে শিল্পের শ্রমিকের জন্য খাদ্য সরবরাহ বৃদ্ধি এবং দরিদ্র ও খুবই সীমিত আয়ের মানুষের সহায়তা দেয়া যেতে পারে।
কর্মসংস্থান বাড়ানোর বিষয়ে তিনি বলেন, বেসরকারি খাতে কর্মসংস্থানের সৃষ্টিতে সুবিধা বাড়ানো। একই সঙ্গে যেসব সরকারি প্রকল্পে কর্মসংস্থান বাড়ানোর সুযোগ আছে সেসব ক্ষেত্রে প্রাধিকার দেয়া। এমন সমাপ্ত প্রকল্পগুলোতে নতুন করে বরাদ্দ দেয়া উচিত। এছাড়া অঞ্চল ভিত্তিক প্রকল্প গ্রহণ করা প্রয়োজন। নির্বাচনের আগে ছোট ছোট প্রকল্পে সংসদ সদস্যদের চাপ থাকবে। এটি না করে কর্মসংস্থান ভিত্তিক প্রকল্পে নজর দিতে হবে।
এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মজিদ বলেন, আগামী বাজেটে করোনা, যুদ্ধ ও এলডিসি উত্তরণ এই তিনটি চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ নিয়েই বাজেটের পরিকল্পপনা করতে হবে। এ জন্য তিন বছরের রোলিং সিস্টেম বাজেট করতে হবে।
৯ মাসে এডিপি ৪৫ শতাংশ বাস্তবায়ন হয়। বাকিটা বাস্তবায়ন হয় তিন মাসে। বাজেটে এ বিষয়ে সাজেশন দেয়া এবং এ বিষয় পরিবর্তন করার সুযোগ থাকতে হবে। বাজেট বাস্তবায়নের বাজেট বাস্তবধর্মী হতে হবে। প্রকল্প বাস্তবায়ন কোয়ালিটির উন্নতি করতে হবে। প্রকল্পের কাজ শেষ না হলেও যাতে ওই টাকা পরের বছর পায় এমন নিশ্চিয়তা দিয়ে কাজ শেষ করার ব্যবস্থা করতে হবে।
বাজেট ২০২২-২৩: খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে সারে ভর্তুকি বাড়াবে সরকার
দেশীয় খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে ২০২২-২৩ অর্থবছরের আসন্ন বাজেটে সারের ভর্তুকি বাড়িয়ে ১৫ হাজার কোটি টাকা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
বিশ্ববাজারে সারের দাম ৫৮ শতাংশ বৃদ্ধি সত্ত্বেও সরকার কৃষকদের প্রণোদনা হিসেবে আরও ফসল উৎপাদন নিশ্চিত এবং স্থানীয় বাজারে খাদ্যদ্রব্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করতে দাম বৃদ্ধি এড়াতে চায়।
২০০৮-০৯ থেকে ২০২০-২১ পর্যন্ত গত ১৩ বছরে সরকার একক এই খাতের জন্য প্রায় ৮২ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়েছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে সারের ভর্তুকি বাবদ সাত হাজার ৭১৭ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে।
খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কৃষকদের সার ও বীজে প্রণোদনাসহ কৃষি উপকরণ ব্যবহারে উৎসাহিত করছে কৃষি মন্ত্রণালয়।
আরও পড়ুন: খাদ্য ও কৃষি নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত বাংলাদেশ: পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, সম্প্রতি অর্থ বিভাগের সুপারিশের পর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এক বৈঠকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
কৃষি খাতে আরও কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে চায় এবং জাতীয় নির্বাচনের আগে খাদ্য উৎপাদনে যেকোনো ধরনের অস্থিতিশীলতা এড়াতে চায় বলে জানান এই কর্মকর্তা।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, জিডিপিতে কৃষি খাতের অবদান প্রায় ১৩ শতাংশ।
আরও পড়ুন: পতিত জমি চাষে সব ধরনের সহযোগিতা দেয়া হবে: কৃষিমন্ত্রী
২০২১-২২ অর্থবছরে সরকার এই খাতের জন্য ভর্তুকি হিসাবে মোট সাড়ে ৯ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়। কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে সারের দাম বৃদ্ধির কারণে ২০২২ সালের এপ্রিল পর্যন্ত সরকারের প্রকৃত ভর্তুকি দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৩ হাজার ৩৩২ কোটি টাকা। তবে চলতি অর্থবছরে ভর্তুকি ২৫ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সম্প্রতি সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক দাবি করেন, ২০২২-২৩ সালের বাজেটে কৃষিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে বলে এ বছর সরকার সার ভর্তুকি বাবদ ৩০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করবে।
২০২২-২৩ অর্থবছরে বাজেটে বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি দ্বিগুণ হতে পারে
সরকার ২০২২-২৩ অর্থবছরের আসন্ন বাজেটে বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি দ্বিগুণ করে ১৮ হাজার কোটি টাকা করার কথা ভাবছে।
মঙ্গলবার অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আসন্ন বাজেটে সামগ্রিক ভর্তুকি এবং প্রণোদনা বরাদ্দ ১৬ হাজার ৬২০ কোটি টাকা বেড়ে আনুমানিক ৫৭ হাজার ৪৫ কোটি টাকা হবে।
চলতি বাজেটে বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি নির্ধারণ করা হয়েছিল ৯ হাজার কোটি টাকা। এ বছর এ খাতে ভর্তুকি দ্বিগুণ করা হচ্ছে। তবে সংশোধিত বাজেটে, বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি তিন হাজার কোটি টাকা বেড়ে ১২ হাজার কোটি টাকা হয়েছে।
প্রতিবছর বাজেটে ভর্তুকি ও প্রণোদনা বাড়ছে। ফলে বরাদ্দও বাড়ানো হচ্ছে। যেমন ২০২২ অর্থবছরের বাজেটে ভর্তুকি ও প্রণোদনা হিসেবে বরাদ্দ ৪০ হাজার ৪২৫ কোটি টাকা, যা সংশোধিত বাজেটে ১২ হাজার ৮৫৭ কোটি টাকা বাড়িয়ে ৫৩ হাজার ২৮২ কোটি টাকা করা হয়েছে।
বাজেট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, করোনাভাইরাস মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের বিরূপ প্রভাবের কারণে আসন্ন বাজেটে ভর্তুকি, প্রণোদনা ও ঋণ সহায়তায় বরাদ্দ আনুমানিক ২৬ দশমিক ১৩ শতাংশ বা ২৭ হাজার ৯১০ কোটি টাকা বেড়ে এক লাখ ৭৭ হাজার ১৪৫ কোটি টাকা করা হয়েছে।
এর আগে ২০২২ অর্থবছরের বাজেটে এই তিনটি খাতে বরাদ্দ ছিল এক লাখ ৪৯ হাজার ২৩৫ কোটি টাকা।
অর্থ বিভাগের হিসাব অনুযায়ী, আগামী ২৩ অর্থবছরের বাজেটের আকার প্রায় ছয় দশমিক ৭৮ ট্রিলিয়ন টাকা। এর মধ্যে ভর্তুকি, প্রণোদনা ও নগদ ঋণ; এই তিনটি খাতে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে এক লাখ ৭৭ হাজার ১৪৫ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন: জাতীয় বাজেট উপস্থাপন ৯ জুন: মুস্তফা কামাল
ক্ষতি কমাতে তামাকজাত পণ্যের দাম বৃদ্ধির দাবি
তরুণ প্রজন্মকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে সিগারেট ও অন্যান্য তামাকজাত পণ্যের ওপর কর বৃদ্ধির দাবিতে রবিবার একটি ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অংশগ্রহণকারীরা তাদের দাবি জানাতে ‘রেইজ ট্যাক্স সেভস লাইভস বিডি’ হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে ফেসবুকে ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ডসহ তাদের ছবি আপলোড করে অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো-ফ্রি কিডসের সহযোগিতায় তামাকবিরোধী অ্যাডভোকেসি সংস্থা প্রজ্ঞা এ মানববন্ধনের আয়োজন করে।
আরও পড়ুন: তামাকবিরোধী সাংবাদিকতায় ফেলোশিপ পেলেন ৪ গণমাধ্যমকর্মী
অনুষ্ঠানে আসন্ন অর্থবছর ২০২২-২৩ এ জাতীয় বাজেটে সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক আরোপের মাধ্যমে তামাকজাত পণ্যের দাম বাড়ানোর দাবি জানানো হয়।
তামাকবিরোধী সংগঠনগুলো দাবি জানায়, আগামী জাতীয় বাজেটে সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক (এসডি) হিসেবে সাড়ে ৩২ টাকা আরোপ করে ১০ স্টিকের নিম্ন-স্তরের সিগারেটের খুচরা মূল্য ৫০ টাকা নির্ধারণ করা।
১০টি মাঝারি স্তরের সিগারেটের খুচরা মূল্য ৪৮ টাকা ৭৫ পয়সা সম্পূরক শুল্কসহ ৭৫ টাকা; ১০টি উচ্চ-স্তরের সিগারেটের ৭৮টাকা সম্পূরক শুল্কসহ ১২০ টাকা এবং ১০টি প্রিমিয়াম স্তরের সিগারেট সাড়ে ৯৭ টাকা সম্পূরক শুল্কসহ ১৫০ টাকা দাম নির্ধারণ করা।
আরও পড়ুন: প্রস্তাবিত বাজেট তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনের অন্তরায়
প্রস্তাবিত হারে তামাকের দাম বাড়ানো হলে এটি ১৩ লাখ প্রাপ্তবয়স্ককে ধূমপান থেকে বিরত থাকতে উৎসাহিত করবে। এছাড়া চার লাখ ৪৫ হাজার প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের অকাল মৃত্যু প্রতিরোধ করবে এবং দীর্ঘমেয়াদে চার লাখ ৪৮ হাজার যুবকের মৃত্যু প্রতিরোধ করবে। এছাড়া সরকারকে ৯ হাজার ২০০ কোটি টাকা অতিরিক্ত রাজস্ব আয় করতে সহায়তা করবে।
এছাড়া বিড়ি, জর্দা ও গুলের ওপর সম্পূরক শুল্ক আরোপের মাধ্যমে দাম বাড়ানোর দাবি জানানো হয়েছে।
প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এ বি এম জুবায়ের বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক আরোপ করে তামাকজাত পণ্যের দাম বাড়ালে সরকারের রাজস্ব বাড়বে ও তামাকজনিত মৃত্যু ও ক্ষয়-ক্ষতি কমবে।’
মহামারি পরিস্থিতি পুনরুদ্ধারের জন্য বাজেটের বাস্তবসম্মত ব্যয় পরিকল্পনা প্রয়োজন: সিপিডি
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) সরকারের প্রতি আসন্ন ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য একটি সুস্পষ্টভাবে বাস্তবায়নের দিক-নির্দেশনাসহ বাস্তবসম্মত বাজেট প্রণয়নের আহ্বান জানিয়েছে। বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সিপিডি ২০২৬ সালের মধ্যে দেশের অর্থনীতিকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উত্তরণের (এলডিসি) জন্য বাজেট বাস্তবায়ন কাঠামো শক্তিশালীকরণ এবং ঝুঁকির কারণ ও সেগুলো পুনরুদ্ধারের পরিকল্পনার ভিত্তিতে বাজেট বরাদ্দ করার বিষয়ে কিছু সুপারিশ দিয়েছে।
মঙ্গলবার ধানমন্ডিতে সিপিডির কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সিপিডি তাদের বাজেট সুপারিশ প্রকাশ করে।
সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বাজেট প্রস্তাব পাঠ করেন এবং সিপিডির বিশিষ্ট ফেলো অধ্যাপক মুস্তাফিজুর রহমান, গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম এবং সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান সুপারিশ সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন।
আরও পড়ুন: বিশ্ববাজারের তুলনায় বাংলাদেশে খাদ্যের দাম অনেক বেশি: সিপিডি
সিপিডি প্রযুক্তিগত অগ্রগতি এবং প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা উভয় ক্ষেত্রেই সামগ্রিক কর-রাজস্ব খাতের সংস্কারের ওপর জোর দিয়েছে।
উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উত্তোরণের পর বাংলাদেশ আমদানি শুল্ক আরোপের ক্ষেত্রে একটি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবে। তাই এলডিসি-পরবর্তী পরিস্থিতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে রাজস্ব আয়ের পরিকল্পনা প্রয়োজন।
সিপিডি সুশাসন নিশ্চিত করতে সরকারি ব্যয়ের তথ্যাদিতে সাধারণ জনগণের অভিগম্যতার সঙ্গে সঙ্গে সরকারি ব্যয়ে আরও স্বচ্ছতা ও প্রাতিষ্ঠানিক জবাবদিহিতার আহ্বান জানিয়েছে।
রপ্তানি প্রণোদনা খাতকে একটি সমন্বিত ব্যবস্থার আলোকে সংস্কার করতে হবে। যাতে প্রকৃত যোগ্য খাত শুধুমাত্র প্রণোদনা পেতে পারে।
২০৩০ সালের মধ্যে একটি সুস্থ ও উন্নত দেশ গড়তে শিক্ষা, কৃষি, শিশু ও নারী স্বাস্থ্য উন্নয়নে বাজেট ব্যয় বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে সিপিডি।
আরও পড়ুন: বাজেটে জীবন, জীবিকার সুরক্ষায় সুনির্দিষ্ট রূপরেখা নেই: সিপিডি
বাজেটের সুপারিশগুলো মহামারি পরিস্থিতি পুনরুদ্ধার এবং খাদ্যমূল্য বৃদ্ধির বৈশ্বিক প্রভাবের জন্য পর্যায়ক্রমে সামাজিক সুরক্ষা সংক্রান্ত বরাদ্দ বাড়ানোর বিষয়েও দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছে।
সুপারিশে বলা হয়েছে, মহামারিজনিত কারণে প্রান্তিক জনগণ খুব বেশি ভুগছে। অন্যদিকে খাদ্য মূল্যবৃদ্ধি তাদের জীবনকে আরও দুর্বিষহ করে তুলেছে।
স্থির আয়কারী জনগোষ্ঠী এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠী মহামারির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এরপর যদি আবার খাদ্যের দাম বেশি হয়ে যায় তবে তারা পুষ্টি সমস্যার সম্মুখীন হবে। বাজেটে খাদ্য মূল্যে ভর্তুকি যেমন দরকার, তেমনি বিভিন্ন প্রান্তিক মানুষের জন্য প্রণোদনা নির্ধারণ করা দরকার।
সংস্থাটি মার্কিন ডলারের সঙ্গে বাংলাদেশি টাকার স্থিতিশীল বিনিময় হারের প্রস্তাব করেছে। কারণ এটি অভ্যন্তরীণ বাজারে পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি এবং শিল্প উৎপাদন খরচের মূল্যবৃদ্ধি উভয়কেই প্রভাবিত করেছে।
মহামারি পুনরুদ্ধারের সরকারি কৌশলের প্রশংসা করে সিপিডি বলেছে যে, সরকারি নীতি সঠিক; কিন্তু বাস্তবায়ন জটিল এবং কখনও কখনও বিতরণ প্রক্রিয়া বিলম্বিত হয়।
আরও পড়ুন: দেশের রপ্তানি, সরকারি ব্যয় কমে যাওয়াটা বড় উদ্বেগের: সিপিডি
শিল্পীদের স্বার্থে যা কিছু ভালো তা নিয়েই আমরা এগোচ্ছি: সাইমন সাদিক
ঢাকাই সিনেমার বিভিন্ন সংকটের মধ্যেও যে কজন চিত্রনায়ক হাল ধরেছেন, তাদের একজন সাইমন সাদিক। সারাবছর একাধিক সিনেমার শুটিং নিয়ে যেমন চলে তার ব্যস্ততা, তেমনি শিল্পী সমিতির হয়ে বিভিন্ন কার্যক্রমে তার প্রয়াস প্রশংসনীয়। সংগঠনটির এবারের নির্বাচনে ‘সহ-সাধারণ সম্পাদক’ পদে জয় সেটি আবারও প্রমাণ করে।
শিল্পী সমিতি নিয়ে সাইমন সাদিক বলেন, ‘আমাদের কার্যক্রম চলছে। সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব নিপুণ আপু পালন করছেন। শিল্পীদের স্বার্থে যা কিছু ভালো হয় সেগুলো নিয়েই আমরা এগোচ্ছি। এই সংগঠনের সঙ্গে জড়ানোর অন্যতম কারণ সবার যেন পাশে থাকতে পারি, এক হয়ে শিল্পীদের জন্য কিছু করতে পারি। সেই চেষ্টা সবসময় ছিল, এখনও আছে।’
শিল্পী সমিতির নানা জটিলতা শেষে আবারও শুটিং নিয়ে ব্যস্ত সাইমন। সম্প্রতি শেষ করলেন ‘মায়া’র কাজ।এতে তার বিপরীতে রয়েছে শবনম বুবলি।
আরও পড়ুন: আবারও জয়া আহসানের হাতে ‘ব্ল্যাক লেডি’
‘মায়া’ প্রসঙ্গে সাইমন ইউএনবিকে বলেন, ‘আসলে কাজটির প্রস্তাব যখন পাই, তখন আগ্রহ তৈরি হয়েছিল বলেই কাজটি করা। তাই গল্পের পছন্দের বিষয়টি তো রয়েছেই। এছাড়া মাল্টি কাস্টিং-এর একটি সিনেমা। যেটি সবসময় বাজেটের কারণে নির্মাণ হয় না। সেই জায়গা থেকে নতুন একটি চ্যালেঞ্জ। পর্দায় এখন দর্শক গল্পের ভিন্নতা দেখতে বেশি আগ্রহী, সেই জায়গা থেকে নিরাশ হবেন না আশা করি।’
সাইমনের পরবর্তী ব্যস্ততা ‘হাহাকার’ সিনেমার শুটিং নিয়ে।সিনেমাটির পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান মানিক। এই প্রসঙ্গে নায়ক বলেন, ‘মানিক ভাইয়ের সিনেমা আমার ক্যারিয়ারের অন্যতম অংশ। যার জন্য আমি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছি। এছাড়া সে আমাকে বোঝেন। এতে কাজটাও সহজ হয়ে যায়।’
একদিকে সাইমনের হাতে যেমন রয়েছে অনেক সিনেমার কাজ। অন্যদিকে মুক্তির অপেক্ষায় থাকার সিনেমার সংখ্যাও কম নয়। সেগুলো হলো ‘আনন্দ অশ্রু’, ‘নদীর বুকে চাঁদ’,‘নরসুন্দরী’, ‘গ্যাংস্টার’, ‘বাহাদুরী’, ‘দ্বায়মুক্তি’ ও ‘লাইভ’।
আরও পড়ুন: ওয়েব দুনিয়ায় আফসানা মিমির অভিষেক
মহামারি মোকাবিলায় সহায়তার জন্য এডিবিকে ধন্যবাদ অর্থমন্ত্রীর
মহামারির ক্ষতিকর প্রভাব কাটিয়ে উঠতে তাৎক্ষণিক সহায়তার জন্য এশীয় উন্নয়ন ব্যাংককে (এডিবি) ধন্যবাদ জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
বাংলাদেশে এডিবির সহায়তার চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, এডিবি করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের সম্ভাব্য অর্থনৈতিক সংকটের জন্য এক বিলিয়ন মার্কিন ডলার বাজেট সহায়তা,করোনা মোকাবিলায় জরুরি সহায়তায় স্বাস্থ্যখাতের জন্য ১০০ মিলিয়ন ডলার, করোনা ভ্যাকসিন কেনার জন্য ৯ দশমিক ৪০ মিলিয়ন ঋণ সহায়তা,মহামারি চলাকালীন ৯ দশমিক ৩৪ মিলিয়ন ডলার অনুদান সহায়তা দিয়েছে।
সোমবার সচিবালয়ে এডিবির নির্বাহী পরিচালক সমীর কুমারের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
আরও পড়ুন: কোভিড মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বের প্রশংসায় এডিবি
মন্ত্রী বলেন, এডিবি বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান উন্নয়ন সহযোগী। ১৯৮২ সাল থেকে বাংলাদেশকে ১৯ দশমিক ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ সহায়তা দিয়েছে।
কামাল এলডিসি থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের পর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আরও উন্নয়ন সহায়তা প্রদানের জন্য এডিবিকে বিশেষভাবে আহ্বান জানান।
তিনি সার্বিক উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ভবিষ্যতে বাংলাদেশ ও এডিবির মধ্যে এ ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রাখার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
জবাবে সমীর কুমার বলেন, এডিবি মহামারি থেকে উত্তরণের জন্য বাংলাদেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তা পুনরুদ্ধারে প্রথম থেকেই সহযোগিতা করে আসছে এবং ভবিষ্যতেও বাংলাদেশের পাশে থাকবে।
আরও পড়ুন: দেশের সব নাগরিকের জন্য পেনশন ব্যবস্থা শিগগিরই: অর্থমন্ত্রী
সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে ঘরে বসে না থেকে মাঠে নামার আহ্বান রাষ্ট্রপতির
সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে রাজনৈতিক দলগুলোকে ঘরে বসে না থেকে মাঠে নামার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
তিনি বলেন, ‘রাজনীতিকে সঠিক পথে পরিচালিত করতে হলে রাজনৈতিক দলগুলোকেই এগিয়ে আসতে হবে। এক্ষেত্রে শুধু সদিচ্ছা ব্যক্ত করাই যথেষ্ট নয়। ঘরে বসে না থেকে মাঠে নেমে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে পারলে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন সম্ভব।’
নির্বাচন কমিশন (ইসি) পুনর্গঠন নিয়ে চলমান সংলাপের অংশ হিসেবে সোমবার সন্ধ্যায় খেলাফত মজলিসের সাথে আলোচনায় রাষ্ট্রপতি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: ইসি নিয়ে রাষ্ট্রপতির সংলাপ: সুশীল সমাজকেও চায় তরিকত
আলোচনায় খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদেরের নেতৃত্বে ৮ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বঙ্গভবনের দরবার হলে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আলোচনায় অংশ নেন।
এসময় রাষ্ট্রপতি বলেন, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের স্বার্থে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠন গুরুত্বপূর্ণ। রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত এ ব্যাপারে কার্যকর অবদান রাখতে পারে।
খেলাফত মজলিসের প্রতিনিধিদল নির্বাচন কমিশন আইন প্রণয়ন, নির্বাচন কমিশনকে নিরপেক্ষ ও শক্তিশালীকরণ, নির্বাচনের পরিবেশ রক্ষাসহ পাঁচ দফা প্রস্তাব পেশ করেন।
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রপতির সংলাপ: ইসি গঠনে আইন চায় ন্যাপ
তারা নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করার জন্য প্রয়োজনীয় বাজেটের সংস্থান, জনশক্তি নিয়োগ ও দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষণের সুযোগ সৃষ্টির প্রস্তাব দেন।
রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব সম্পদ বড়ুয়া, সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস এম সালাহ উদ্দিন ইসলাম, রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন এবং সচিব (সংযুক্ত) মো. ওয়াহিদুল ইসলাম খান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
কেসিসি’র ৬০৮ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা
খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) ২০২১-২২ অর্থ বছরের জন্য ৬০৮ কোটি ২ লাখ ৫৬ হাজার টাকার বাজেট ঘোষণা করেছে। কেসিসি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক বৃহস্পতিবার দুপুরে নগর ভবনের শহীদ আলতাফ মিলনায়তনে এ বাজেট ঘোষণা করেন।
প্রস্তাবিত এ বাজেটে রাজস্ব ব্যয় ধরা হয়েছে ১৯৮ কোটি ৮৫ লাখ ৯৩ হাজার টাকা এবং সরকারি বরাদ্দ ও উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা থেকে উন্নয়ন খাতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪০৯ কোটি ১৬ লাখ ৬৩ হাজার টাকা। গত ২০২০-২১ অর্থ বছরে বাজেটের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫০৪ কোটি ৩১ লাখ ২২ হাজার টাকা। সংশোধিত বাজেটে এর আকার দাঁড়িয়েছে ৩৬৯ কোটি ১৯ লাখ ২৬ হাজার টাকা। লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের হার ৭৩.২০ শতাংশ।
বাজেট ঘোষণাকালে সিটি মেয়র বাজেটের মূল বৈশিষ্ট্যগুলো তুলে ধরে বলেন, বাজেটে এবারও নতুন কোন কর আরোপ করা হয়নি। বকেয়া পৌরকর আদায়, নবনির্মিত সকল স্থাপনার ওপর প্রচলিত নিয়মে কর ধার্য্য এবং নিজস্ব আয়ের উৎস সম্প্রসারণের মাধ্যমে করপোরেশনেরআয় বৃদ্ধির পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এটি একটি উন্নয়নমুখী বাজেট। বাজেটে সড়ক ও ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন, জলাবদ্ধতা নিরসন, বর্জ্যব্যবস্থাপনার উন্নয়ন, নাগরিকসেবা সম্প্রসারণ, কোভিড-১৯ প্রতিরোধ, মশকনিধন, অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন, ধর্মীয় উপাসনালয়-পার্ক-বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান-রাস্তাঘাট উন্নয়ন, কেসিসি’র বিভিন্ন দপ্তর আধুনিক প্রযুক্তির আওতায় আনা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধি এবং স্বাস্থ্যব্যবস্থাপনার উন্নয়ন বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে।
মেয়র বলেন, কেসিসি একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। এটি কেবল সরকারি বা বিদেশি সাহায্য ও ঋণের ওপর নির্ভরশীল থাকতে পারে না। কেসিসিকে নিজস্ব আয়ের ওপর নির্ভর করে নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে।
আরও পড়ুন: স্বাস্থ্য খাতের বাজেট লুট হচ্ছে: জিএম কাদের
মেয়র জানান, কেসিসির নিজস্ব সংস্থাপন ব্যয় মিটিয়ে এবং ব্যয় সংকোচন করে রাজস্ব তহবিল হতে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক খাতে মোট ৫১ কোটি ৯৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। প্রস্তাবিত বাজেটে রাজস্ব খাত থেকে উন্নয়ন খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৩৮ কোটি ৪৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা। অবকাঠামো ও রাস্তাঘাট উন্নয়নের সাথে সাথে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য রাজস্ব তহবিল থেকে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা। মানববর্জ্য উন্নয়ন এবং মশক নিধনের জন্য কঞ্জারভেন্সি খাতে ১১ কোটি ৮০ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এডিপির জন্য থোক বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৫৫ কোটি টাকা। উক্ত বরাদ্দ থেকে পূর্ত খাতে ২৭ কোটি ৯৪ লাখ টাকা, নগরীতে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের দায়িত্ব খুলনা ওয়াসার হলেও বিশেষ প্রয়োজনে জরুরি পানির চাহিদা মেটানোর জন্য গভীর ও অগভীর নলকূপকে সাবমারসিবল পাম্পে রূপান্তর করার জন্য এখাতে ৭৫ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। ভেটেরিনারি খাতে ৫০ লাখ টাকা, জনস্বাস্থ্য খাতে ১০ কোটি ২ লাখ টাকা, কঞ্জারভেসি খাতে ১৫ কোটি ৭৯ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
তিনি জানান, বর্তমানে সিটি কেরপোরেশন এলাকায় বিভিন্ন দাতা সংস্থার ১৫টি উন্নয়ন প্রকল্প চলমান রয়েছে এবং চারটি প্রকল্পের কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। এসব প্রকল্পে ২০২১-২০২২ অর্থ বছর ১৫৩ কোটি ১৬ লাখ ৬৩ হাজার টাকার উন্নয়ন সহায়তা পাওয়ার আশা করা যায়। জাতীয় এডিপিভুক্ত তিনটি প্রকল্পে ২০১ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুন: প্রস্তাবিত বাজেট তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনের অন্তরায়
১৩ হাজার ৯৮৭ কোটি টাকার সম্পূরক বাজেট পাস
বাজেট অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কেসিসির অর্থ ও সংস্থাপন বিষয়ক স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও কাউন্সিলর শেখ মো. গাউসুল আজম। এসময় কেসিসির প্যানেল মেয়র, কাউন্সিলর, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, ব্যবসায়ী নেতারা, সরকারি কর্মকর্তা, কেসিসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর উদ্যোগে সিলেট হাসপাতালে অক্সিজেন প্লান্ট স্থাপনে ২ কোটি টাকা বরাদ্দ
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেনের উদ্যোগে সিলেট এম এ জি ওসমানী হাসপাতালের ৫ম তলা থেকে ৮ম তলায় অক্সিজেন প্লান্ট ও সেন্ট্রাল অক্সিজেন কার্যক্রম বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সিলেট সিটি করপোরেশনের অনুকূলে এককালীন ২ কোটি টাকার সরকারি মঞ্জুরি জ্ঞাপন করা হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ প্রশিক্ষিত আফগান সন্ত্রাসীদের ব্যাপারে বাংলাদেশ 'সতর্ক থাকবে': পররাষ্ট্রমন্ত্রী
সম্প্রতি স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের এক আদেশে চলতি ২০২১-২২ অর্থ বছরের বাজেটের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে ‘সিটি করপোরেশনের জন্য উন্নয়ন সহায়তা’ খাতে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর অভিপ্রায় অনুযায়ী এ অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ বিশ্বনাথে করোনা ও শ্বাসকষ্ট রোগীদের ‘অক্সিজেন বন্ধু রুহুল’
উক্ত সরকারি মঞ্জুরি আদেশে উল্লেখ করা হয়, সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মঞ্জুরীকৃত অর্থের আয়ন-ব্যয়ন কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।