ছাত্রলীগ
জ্ঞান ফিরেছে চমেক ছাত্র আকিবের
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে (চমেক) ছাত্রলীগের দু’পক্ষের সংঘর্ষে গুরুতর আহত মাহাদি জে আকিব হোসেনের (২০) জ্ঞান ফিরেছে। বর্তমানে তার লাইফ সাপোর্ট খুলে ফেলা হয়েছে।সোমবার (১ নভেম্বর) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চমেক অধ্যাপক ও ক্লিনিক্যাল নিউরো সার্জন ও নিউরো সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান এসএম নোমান খালেদ চৌধুরী। তিনি বলেন, ছেলেটার জ্ঞান ফিরেছে। কথাও বলেছে। অবস্থা কিছুটা উন্নতির দিকে। তাকে আইসিইউতে রেখে চিকিৎসা দেয়া হবে।
আরও পড়ুন: ‘হাড় নেই চাপ দিবেন না’আইসিইউ’র বাইরে অপেক্ষমান আকিবের বাবা গোলাম ফারুক মজুমদার কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, নোংরা রাজনীতির বলি আমার ছেলে। রাজনীতির কারণে ছেলের এই অবস্থা। আমি চাই, কারও সন্তানের যেন এ অবস্থা না হয়। আল্লাহ’র কাছে এখন শুধুই একটাই প্রার্থনা, আমার ছেলে যেন সুস্থ হয়ে ওঠে। শুধু বসে আছি ‘কখন বাবা ডাক শুনবো’।সংঘর্ষের ঘটনায় মামলার বাদী ও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের পঞ্চম বর্ষের ছাত্র তৌফিকুর রহমান বলেন, আকিবের অবস্থা উন্নতির দিকে। তার লাইফ সাপোর্ট খুলে ফেলা হয়েছে। তার জ্ঞানও ফিরেছে। আকিবকে কোনো প্রশ্ন করলে উত্তর দিতে পারছে। তবে তার পুরোপুরি সুস্থ হতে অনেক সময় লাগবে।
আরও পড়ুন: চমেকে সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা, গ্রেপ্তার ২উল্লেখ্য গত শুক্রবার (২৯ অক্টোবর) ও শনিবার (৩০ অক্টোবর) চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে কয়েক দফা সংঘর্ষ হয়। এ সময় তিনজন আহত হন। তাদের মধ্যে গুরুতর আহত আকিবকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় শনিবার রাতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী মো. তৌফিকুর রহমান বাদী হয়ে নগরের পাঁচলাইশ থানায় ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
‘হাড় নেই চাপ দিবেন না’
চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন কুমিল্লার মেধাবী ছাত্র মাহাদী জে আকিব (আকিব হোসেন)। সে স্বপ্ন পূরণ হওয়ার আগেই নিজ প্রতিষ্ঠানে আজ অনেকটা জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে লড়ছেন তিনি। কলেজের ৬২তম ব্যাচের এমবিবিএস দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছাত্র আকিব বর্তমানে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় শনিবার (৩০ অক্টোবর) সকালে আকিবের মাথা হকিস্টিক দিয়ে পিটিয়ে থেঁতলে দেয়া হয়েছে। মাথায় মারাত্মক জখম নিয়ে ভর্তি হন চমেক হাসপাতালে। অস্ত্রোপচারের পর তাঁর ঠাঁই এখন আইসিইউতে।
তার মাথার ব্যান্ডেজে লেখা আছে ‘হাড় নেই চাপ দিবেন না’। এমন একটি ছবি রবিবার (৩১ অক্টোবর) ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।আকিব হোসেন ছাত্রলীগের শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারীরা তাকে মারধর করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
আরও পড়ুন: ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে সংঘর্ষ: চমেক বন্ধ, হল ছাড়ার নির্দেশচিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আকিবের ব্রেইনে মারাত্মক জখম হয়েছে। এ ক্ষত সেরে ওঠতে দীর্ঘ সময়ের প্রয়োজন হতে পারে। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত রবিবার রাতে আকিবের জ্ঞান ফেরেনি। তবে জ্ঞান ফিরে আসলেও তার স্বাভাবিক চলাফেরা নিয়ে শঙ্কিত চিকিৎসকরা।জানা যায়, শনিবার হামলার পর গুরুতর আহত হয়ে আকিবকে প্রথমে চমেক হাসপাতালের ওয়ানস্টপ সেন্টারে নেয়া হয়। পরবর্তীতে হাসপাতালের ২৮ নম্বর ওয়ার্ড নিউরো সার্জারিতে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। এরপর পাঁচ সদস্যের একটি বিশেষজ্ঞ মেডিকেল টিমের তত্ত্বাবধানে মাথায় অস্ত্রপচার হয় আকিবের। প্রায় তিন ঘণ্টার বেশি সময় ধরে চলা এ অস্ত্রপচারে নেতৃত্ব দেন চমেক হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. নোমান খালেদ চৌধুরী।অধ্যাপক নোমান খালেদ ছাড়াও মেডিকেল টিমে ছিলেন, বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউরো সার্জারি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. আখলাক হোসেন, অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসেন, চমেক হাসপাতালের নিউরোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. হাসানুজ্জামান, কলেজের অধ্যক্ষ ডা. সাহেনা আক্তার।
আরও পড়ুন: বগুড়ায় ছাত্রলীগের দু’পক্ষের সংঘর্ষ: আহত ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যুঅধ্যাপক ডা. নোমান খালেদ চৌধুরী বলেন, অপারেশন সফল হয়েছে। তবে আকিব গুরুতরভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। মাথার হাড়ে ফ্র্যাকচার হয়েছে। সাথে ব্রেইনেও গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। ইনজুরিটা খুব ভয়াবহ হওয়ায় এই মুহূর্তে কোন মন্তব্য করতে চাই না। তবুও আমি খুবই আশাবাদী।স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. আ ম ম মিনহাজুর রহমান জানিয়েছেন, আকিবের চিকিৎসার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। তিনি বলেন, আকিবের ব্রেনে অপারেশন করতে হয়েছে। ওর ব্রেনে রক্ত জমে গিয়েছিল বিভিন্ন জায়গায়। ওই রক্তগুলো সরানো হয়েছে। সরানোর পরেও সে আউট অব ডেঞ্জার না। এজন্য তাকে আপাতত ভেন্টিলেটরে রাখা হয়েছে।সেদিনের ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে আকিবের একজন সহপাঠী বলেন, কলেজের মেইন গেইটের কাছে অবস্থান করছিলেন আকিবসহ আরও কয়েকজন। হঠাৎ তারই রাজনৈতিক মতাদর্শের ছাত্রলীগের অপর একটি পক্ষ তাকে’সহ কয়েকজনকে ধাওয়া করে। সাথে থাকা সবাই দ্রুত সরে যেতে পারলেও প্রতিপক্ষ আকিবকে ঘিরে ফেলে। এরপর লোহার চেইন, বোতল এবং ধারালো রামদা দিয়ে ওর মাথায় আঘাত করে মুমূর্ষু অবস্থায় ফেলে রেখে পালিয়ে যায়।মাথা থেঁতলানো অবস্থায় সহপাঠীরা আকিবকে চমেক হাসপাতালে নিয়ে যায়। বর্তমানে সে হাসপাতালটির আইসিইওতে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছে। এখনও ফেরেনি সংজ্ঞা।ছাত্রলীগের দুই পক্ষের এ সংঘর্ষে আকিব ছাড়াও মাহফুজুল হক (২৩), নাইমুল ইসলাম (২০) সহ আরও দুজন আহত হন।
এ ঘটনায় ১৬ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। মামলার আসামিরা হলেন- সাদ মোহাম্মদ গালিব (২১), আহসানুল কবির রুমন (২১), জাহিদুল ইসলাম জিসান (২১), মাহাদি বিন হাশিম (২৪), আসিফ বিন তাকি (২৫), ইমতিয়াজ উদ্দিন চৌধুরী (২১), মাহতাব উদ্দিন রাফি (২১), জাহিদুল আলম জিসান (২১), সৌরভ ব্যাপারী (২১), মো. আনিস (২১), রক্তিম দে (২১), এইচ এম আসহাব উদ্দিন (২১), তানভীর ইসলাম (২১), নাজমুস সাদাত আসিফ (২১), এনামুল হাসান সীমান্ত (২১) ও রিজওয়ান আহমেদ (২১)।
আরও পড়ুন: ঢাবিতে ছাত্রলীগ নেতাকে মারধরের ‘অভিযোগ’এদিকে এই ঘটনার পর উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে কলেজ প্রশাসন শনিবার থেকে মেডিকেল কলেজ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেন।চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ সাহেনা আক্তার জানান, ঘটনা তদন্তে ইতোমধ্যে পাচঁ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
চমেকে সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা, গ্রেপ্তার ২
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনায় ১৬ জনের নাম উল্লেখ করে ২৪ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। শনিবার (৩০ অক্টোবর) রাতে চমেক ছাত্রলীগের একাংশ এ মামলা দায়ের করেছে। মামলার বাদী হলেন ৫৮তম ব্যাচ ৫ম বর্ষের শিক্ষার্থী তৌফিকুর রহমান।
পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল কবির বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় জড়িত দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তারা হলেন-রক্তিম দে (২১) ও এনামুল হোসেন ওরফে সীমান্ত (২১)। তারা দুজন এমবিবিএস দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। রক্তিম ১১ নম্বর ও এনামুল এজাহারভুক্ত ১৫ নম্বর আসামি বলে জানায় ওসি।
গতকাল শনিবার সকালে এবং আগের দিন শুক্রবার মধ্য রাতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ছাত্রাবাস ও ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের বিবাদমান দুটি গ্রুপের মধ্যে দুদফা সংঘর্ষের পর শনিবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। রাতেই আবাসিক শিক্ষার্থিরা হল ছেড়ে চলে যায়।
সংঘর্ষে মাহফুজুল হক (২৩), নাইমুল ইসলাম (২০) এবং মাহাদি জে আকিব হোসেন (২০) নামে তিনজন আহত হয়েছেন। তাদের চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এর মধ্যে আকিব হোসেনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। তার মাথার হাঁড় ভেঙ্গে গেছে।
পড়ুন: ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে সংঘর্ষ: চমেক বন্ধ, হল ছাড়ার নির্দেশ
চমেক হাসপাতালের আইসিইউ বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. রঞ্জন কুমার নাথ জানান, আকিবের মাথায় অস্ত্রোপচার শেষে তাকে আইসিইউতে রাখা হয়েছে।
এদিকে সংঘর্ষের ঘটনায় সার্জারি বিভাগের প্রফেসর ডা. মতিউর রহমানকে আহ্বায়ক করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন-কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মুকেশ কুমার দত্ত, মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. আরিফুর রহমান, হোস্টেল কমিটির চেয়ারম্যান ডা. মিজানুর রহমান চৌধুরী ও ছাত্রাবাসের তত্ত্বাবধায়ক ডা. রিজোয়ান রেহান।
পড়ুন: বিয়েতে মাংস না দেয়ায় বর-কনেপক্ষের সংঘর্ষ, আহত ৮
ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে সংঘর্ষ: চমেক বন্ধ, হল ছাড়ার নির্দেশ
ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের পর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। শনিবার সন্ধ্যার মধ্যে হল ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। গঠন করা হয়েছে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি।
আহতরা হলেন- মাহফুজুল হক (২৩), নাইমুল ইসলাম (২০) এবং আকিব হোসেন (২০)। তাদের চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জানা গেছে, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গতকাল শুক্রবার গভীর রাতে এবং শনিবার সকালে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে দুই দফা সংঘর্ষ হয়। এতে তিনজন নেতাকর্মী আহত হয়। সংঘর্ষে লিপ্ত দুই গ্রুপ শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র আজম নাছিরের অনুসারী বলে জানা গেছে।
এদিকে সকালে সংঘর্ষের পর চমেক একাডেমিক কাউন্সিলে কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ প্রশাসনের উপস্থিতিতে দুই পক্ষের মধ্যে একটি বৈঠক হয়েছে। এর আগে গত মার্চে একই ছাত্রাবাসে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সিট দখল ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগ বারবার সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।
পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল কবির বলেন, রাতের ঘটনার জের ধরে সকালে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে ঝামেলা হয়। এতে কয়েকজন আহত হয়েছে। কি কারণে এই ঘটনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
ঘটনার পর হাসপাতাল ও ক্যাম্পাস এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তবে কী কারণে এই সংঘর্ষের সূত্রপাত, সে বিষয়ে কিছু জানাতে পারেননি ওসি। এ ঘটনায় এখনো থানায় কোনো অভিযোগ দায়ের হয়নি বলে জানান তিনি।
চমেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. সাহেনা আক্তার বলেন, একাডেমিক কাউন্সিলের বৈঠকে আমরা অনির্দিষ্টকালের জন্য কলেজ বন্ধের ঘোষণা দিয়েছি। পরবর্তী নির্দেশনা দেয়া না পর্যন্ত কলেজ বন্ধ থাকবে। আমরা সব শিক্ষার্থীদের হল ছেড়ে দেয়ার জন্য বলেছি। এছাড়া এ ঘটনায় পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী সাতদিনের মধ্যে তদন্ত কমিটিকে রিপোর্ট জমা দেয়ার জন্য বলা হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয়েছে ড. মতিউর রহমানকে।
আরও পড়ুন: চমেক ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার
চমেক হাসপাতালে আগুন: লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি
ঢাবিতে ছাত্রলীগ নেতাকে মারধরের ‘অভিযোগ’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের দ্বারা মারধরের শিকার হওয়ার অভিযোগ করেছেন সিলেটের কানাইঘাট সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এম এম আব্দুল্লাহ আল হাদী (২৫)।
শুক্রবার (২৯ অক্টোবর) রাত ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি সংলগ্ন ডাসের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় মারধরের শিকার এম এম আব্দুল্লাহ আল হাদী রাজধানীর শাহবাগ থানায় শুক্রবার রাতেই মামলার আবেদন করেছেন। আবেদনে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আমির হামজা, জগন্নাথ হল শাখা ছাত্রলীগের কর্মী পলাশ, ঢাকা কলেজ শাখা ছাত্রলীগের কর্মী রুদ্রিক রাব্বির নাম উল্লেখ সহ অজ্ঞাত আট থেকে নয় জনের কথা উল্লেখ করেছেন।
আরও পড়ুন: সেগুনবাগিচা থেকে ঢাবি শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
মামলার আবেদনে আব্দুল্লাহ আল হাদী অভিযোগ করেন, তিনি সিলেট থেকে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতির সাথে দেখা করার জন্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আসেন। ঘটনার দিন রাত আনুমানিক দশটার সময় তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ডাসের এক পাশে বসে ছিলেন। এ সময় শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আমির হামজা ও তার সহযোগীরা তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। পরে এক পর্যায়ে আমির হামজার নেতৃত্বে তাকে মারধর করা হয়।এ সময় রাব্বির তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে একটি ষ্টিলের পাত দিয়ে মাথার পেছন দিকে আঘাত করে। এতে তার মাথা ফেটে যায়। অভিযুক্তরা তার মুঠোফোন ও সাথে থাকা অর্থ ছিনিয়ে নেয়। পরে তার চিৎকারে আশেপাশের লোক জড়ো হলে অভিযুক্তরা তাকে হুমকি দিয়ে সটকে পড়ে।
তিনি আরও বলেন, 'উপস্থিত লোকজনের সহায়তায় আমি রিকশা যোগে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্যে যাই। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক আমার মাথার জখমস্থানে ১৩টি সেলাই করেছেন।'
আরও পড়ুন: করোনার টিকা উৎপাদনে এএফসি-ঢাবির চুক্তি
এদিকে অভিযোগের বিষয়ে জানতে আমির হামজার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি হামলার দায় অস্বীকার করেন। তিনি ইউএনবিকে বলেন, 'আমি ঘটনাস্থলে উপস্থিতই ছিলাম না। আমি নয়টা পর্যন্ত মধুর ক্যান্টিনে ছিলাম। তারপর ছাত্রলীগ সভাপতির জন্মদিনের কেক কাটার জন্যে রোকেয়া হলের সামনে যাই। আমি নোংরা রাজনীতির শিকার।'
হামলায় জড়িত হিসেবে অভিযুক্ত বাকিরাও ঘটনার দায় অস্বীকার করেন।
শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মওদুত হাওলাদার বিষয়টি সম্পর্কে অবগত আছেন বলে জানান। তিনি বিস্তারিত জানতে পুলিশের রমনা জোনের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশীদের সাথে যোগাযোগ করতে বলেন।
আরও পড়ুন: ঢাবি’র দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে গবেষণায় চৌর্যবৃত্তির অভিযোগ সত্য নয়
হারুন অর রশীদের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, 'এ বিষয়ে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।' মামলা গ্রহণ করা হয়েছে কি না সে বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে পারেননি তিনি।
পীরগঞ্জের ঘটনায় ছাত্রলীগকে জড়ানোর অপচেষ্টা ব্যর্থ: তথ্যমন্ত্রী
পীরগঞ্জের ঘটনায় ষড়যন্ত্রকারীরা ছাত্রলীগকে জড়ানোর যে অপচেষ্টা করেছে তা ব্যর্থ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।মঙ্গলবার দুপুরে রাজশাহী সার্কিট হাউজে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি একথা বলেন। সংসদ সদস্য মো. আয়েন উদ্দিন ও আদিবা আঞ্জুম মিতা, রাজশাহীর ডেপুটি কমিশনার আব্দুল জলিল, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার, সহসভাপতি নওশের আলী, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান পরিষদের সভাপতি অনিল কুমার সরকার প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: হামলার দায় ফেসবুক এড়াতে পারে না: তথ্যমন্ত্রীতথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘রংপুরের পীরগঞ্জে হিন্দু সম্প্রদায়ের ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগের অপরাধে গ্রেপ্তারদের মধ্যে মো. সৈকত মন্ডল যাকে নানা অপকর্মের কারণে ছাত্রলীগ থেকে অনেক আগে বের করে দেয়া হয়েছে, তাকে কারমাইকেল কলেজ ছাত্রলীগের সদস্য বলে অপপ্রচার চালানো হয়েছে।’রংপুর মহানগর ছাত্রলীগ এ বিষয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছে বলে জানান ড. হাছান। তিনি বলেন, ‘বিবৃতিতে তারা বলেছে, সে একজন অনুপ্রবেশকারী ছিল এবং সে কোনো না কোনোভাবে একটা বিভাগের কমিটিতে একেবারে সর্বনিম্ন পর্যায়ে তার নাম যুক্ত করে। পরে তাকে বের করে দেয়া হয়েছে। যাকে আগেই ছাত্রলীগ থেকে বের করে দেয়া হয়েছে, সে যখন কোনো অপকর্ম করে, তখন সে দায় কখনো ছাত্রলীগের ওপর দেয়া যায় না।’
আরও পড়ুন: মির্জা ফখরুলই ভালো জানেন কুমিল্লার ঘটনা কিভাবে ঘটেছে: তথ্যমন্ত্রী‘ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে সব সময় একটি বিরূপ প্রচারণা চালানো হতে দেখা যায়’-উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, ‘দুর্নীতি খোঁজার নামে বা কোনো কিছুর গন্ধ পাওয়া যায় কি না, সেভাবেও ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু এটি পরিষ্কার যে, পীরগঞ্জের ক্ষেত্রে কোনোভাবেই ছাত্রলীগকে দোষারোপ করার সুযোগ নেই।’এ সময় ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘লন্ডনে বসে ষড়যন্ত্র করার কারণে দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট হচ্ছে। বাংলাদেশে দুর্গাপূজা উপলক্ষে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার উদ্দেশ্যে পূজামণ্ডপে যে কোরআন শরীফ রেখে এসেছিল, সে কারো ফরমায়েশে এ অপকর্ম করেছে। এই ঘটনার পর ভিডিও করা হয়েছে এবং সেটি আবার সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করে সারাদেশে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে, নানা ধরনের পোস্ট দেয়া হয়েছে। উত্তেজনা ছড়িয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এই দেশে শান্তি-সম্প্রীতি বিনষ্ট করা হয়েছে। কারা এর পেছনে আছে সহসাই বের হবে।’তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এটি খুবই স্পষ্ট যে কারা সাম্প্রদায়িকতা নিয়ে রাজনীতি করে। সাম্প্রদায়িকতা নিয়ে রাজনীতি করে বিএনপি-জামাত এবং ধর্মান্ধ উগ্রগোষ্ঠী। অপরাধীদের যারা প্ররোচনা দিয়েছে, তারা আমাদের পবিত্র ইসলাম ধর্মকে অবমাননা করেছে, হিন্দু ধর্মকেও অবমাননা করেছে, একইসাথে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করেছে। তাদেরকে খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে সরকার বদ্ধপরিকর।’
আরও পড়ুন: ইসলামের নামে বিভেদ সৃষ্টিকারীদের রুখে দাঁড়ান: তথ্যমন্ত্রীএদিন সকালে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বাংলাদেশ টেলিভিশনের রাজশাহী উপকেন্দ্র পরিদর্শন করেন এবং আগামী সংসদ নির্বাচনের আগেই সেখানে বিটিভি’র পূর্ণাঙ্গ স্টেশন স্থাপনের ঘোষণা দেন। বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালক সোহরাব হোসেন এ সময় উপস্থিত ছিলেন। পরে ড. হাছান মাহমুদ বিটিভি উপকেন্দ্রের চত্বরে একটি আম গাছের চারা রোপণ করেন।
সাম্প্রদায়িক সহিংসতার সাথে আ’লীগ জড়িত: বিএনপি
বিএনপির সিনিয়র নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায় অভিযোগ করেছেন, সরকারের নীল নকশা অনুযায়ী ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা সাম্প্রতিক সাম্প্রদায়িক সহিংসতার সাথে সরাসরি জড়িত ছিলেন।
তিনি বলেন, আমরা হামলার শিকার কিছু মন্দির পরিদর্শন করেছি এবং প্রত্যক্ষদর্শী ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য লোকদের সাথে কথা বলেছি। এসব হামলার সঙ্গে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের সরাসরি সম্পৃক্ততা সঠিক তদন্তের মাধ্যমে পাওয়া যাবে।
বিএনপির নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে এই মন্তব্য করেন বিএনপির সাম্প্রদায়িক সহিংসতা পর্যবেক্ষণ কমিটির প্রধান গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। কমিটি এর আগে সহিংসতা সংগঠিত হওয়া এলাকাগুলো পরিদর্শন করেছেন।
আরও পড়ুন: বিএনপি নেতা রিজভী ও দুলুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
এ সময় সরকার হামলাকারীদের বিচারের আওতায় এনে শাস্তির কোনো পদক্ষেপ নেয়নি বলে অভিযোগ করেন তিনি।
গয়েশ্বর বলেন, ‘বিএনপির নেতা-কর্মীদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে তাদের তুলে নেয়া বা গ্রেপ্তার ও হয়রানি করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে এবং এভাবে একটি নীলনকশার অংশ হিসেবে হামলাকারীদের আড়াল করা হয়েছে। নিঃসন্দেহে, এটা বলা যেতে পারে যে সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাদের হয়রানি করার জন্য পরিকল্পিতভাবে এই ঘটনা ঘটিয়েছে।
তিনি বলেন, যদিও হামলাকারীদের সম্পর্কে গোয়েন্দা সংস্থা ও পুলিশের কাছে তথ্য রয়েছে। কিন্তু সাম্প্রদায়িক সহিংসতার দায়ে করা মামলায় নিরীহ ও শান্তিপ্রিয় মানুষকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন: পরিবেশ তৈরি হলে বিএনপি নির্বাচনে যাবে: ফখরুল
গয়েশ্বর বলেন, ‘আমরা বলব না যে শুধুমাত্র হিন্দুরাই এই হামলার মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কারণ আমরা মনে করি পুরো জাতিকে আক্রমণ করা হয়েছে। এই আক্রমণকারীদের প্রতিহত করার জন্য আমাদের অবশ্যই সমন্বিত প্রচেষ্টা চালাতে হবে।
তিনি গণমাধ্যমকে প্রকৃত অপরাধীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ার এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান।
এর আগে ১৭ অক্টোবর, বিএনপি সাম্প্রতিক সাম্প্রদায়িক হামলায় ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানো এবং ঘটনার সত্যতা তদন্তের জন্য দুটি কমিটি গঠন করে।
আরও পড়ুন: ই-কমার্স কেলেঙ্কারির সঙ্গে আ.লীগের লোকেরা জড়িত: বিএনপি
২৩ অক্টোবর গয়েশ্বর নেতৃত্বাধীন কমিটি কুমিল্লা ও চাঁদপুরের তিনটি মন্দির পরিদর্শন করে এবং পুরোহিত ও প্রত্যক্ষদর্শীসহ ক্ষতিগ্রস্তদের সাথে কথা বলেন।
চবি থেকে ছাত্রলীগের ১২ নেতাকর্মী বহিস্কার
আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে জড়ানোসহ বিভিন্ন অপরাধে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের ১২ কর্মীকে বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
রবিবার (১৭ অক্টোবর) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের হেলথ, রেসিডেন্স অ্যান্ড ডিসিপ্লিনারি কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সোমবার থেকে বহিষ্কারাদেশ কার্যকর হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া বলেন, গত কয়েকদিনের দুই পক্ষের সংঘর্ষ জড়িতদের সিসিটিভি ফুটেজ ও গোয়েন্দা তথ্য যাচাই-বাছাই করে ১২ জন শনাক্ত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব রেসিডেন্স হেলথ অ্যান্ড ডিসিপ্লিনারি কমিটি। গতরাতের সভায় অভিযুক্ত ১২ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করা হয়েছে।
ছয় মাস বহিষ্কৃতরা হলেন-অর্থনীতি ২০১১-১২ সেশনের ফরহাদ, লোকপ্রশাসন ১৪-১৫ সেশনের অহিদুজ্জামান সরকার, সমাজতত্ত্ব ১৫-১৬ সেশনের আরিফুল ইসলাম, ইতিহাস ১৫-১৬ সেশনের জুনায়েদ হোসেন জয়, পরিসংখ্যান ১৬-১৭ সেশনের আকিব জাভেদ, আইন বিভাগ ১৭-১৮ সেশনের খালেদ মাসুদ, কম্পিউটার বিজ্ঞান ১৮-১৮ সেশনের তানজিল হোসেন, আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট ১৯-২০ সেশনের মো. নাঈম, আরবি ১৯-২০ সেশনের তৌহিদ ইসলাম, বাংলা ১৯-২০ সেশনের সাইফুল ইসলাম।
এক বছর বহিষ্কৃতরা হলেন- আইন বিভাগের ২০১৪-১৫ সেশনের মির্জা কবির সাদাফ, রসায়ন ১৬-১৭ সেশনের আশরাফুল আলম নায়েম।
আরও পড়ুন: চবিতে উৎসবমুখর পরিবেশে ঢাবির ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত
করোনায় মারা গেলেন চবির সাবেক ডিন গাজী সালাহ উদ্দীন
চবির সব পরীক্ষা অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত
এমসি কলেজে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ: চাঁদাবাজি মামলার চার্জ গঠন পেছাল
সিলেট এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে স্বামীকে আটকে রেখে নববধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় চাঁদাবাজি ও ছিনতাইয়ের মামলার চার্জ গঠন পিছিয়েছে।
মঙ্গলবার (১২ অক্টোবর) প্রথমবারের মতো গণধর্ষণ, চাঁদাবাজি ও অস্ত্র আইনের দুটি মামলার নথিপত্র একসাথে সিলেটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে উপস্থাপন করা হয়। ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহিতুল হক আদালতে মামলার অতিরিক্ত চাপ ও স্টেনো না থাকায় চাঁদাবাজি ও অস্ত্র আইনের মামলার অভিযোগ গঠন পিছিয়ে দেন।
ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি এডভোকেট রাশিদা সাঈদা খানম জানান, স্টেনোগ্রাফার না থাকার প্রেক্ষিতে চার্জ গঠনের তারিখ পেছানো হয়েছে। একই সাথে আদালতে ৩ আসামি অব্যাহতির আবেদন করেছে।
আদালতে মামলা জটের কারণে চাঁদাবাজি ও অস্ত্র আইনের মামলার অভিযোগ গঠন পিছিয়েছে বলে জানিয়েছেন বাদীপক্ষের আইনজীবী প্যানেলের প্রধান অ্যাডভোকেট শহিদুজ্জামান চৌধুরী। পরবর্তী ধার্য তারিখে চাঁদাবাজি ও অস্ত্র আইনের মামলার অভিযোগ গঠন ও আসামিদের অব্যাহতির আবেদনের ব্যাপারেও শুনানি হবে।
২০২০ সালের ৩ ডিসেম্বর ছাত্রলীগের ৮ নেতাকর্মীকে অভিযুক্ত করে চাঞ্চল্যকর এই মামলার অভিযোগপত্র প্রদান করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহপরান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ইন্দ্রনীল ভট্টাচার্য।
এর মধ্যে ধর্ষণ মামলার অভিযোগপত্র নারী ও নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ও চাঁদা দাবি ও গাড়ি ছিনতাইয়ের ঘটনায় মামলাটির অভিযোগপত্রটি মহানগর দায়রা জজ আদালতে জমা দেয় পুলিশ।
আরও পড়ুন: এমসি কলেজে গৃহবধূ ধর্ষণ: নতুন করে গঠন হবে মামলার অভিযোগ
অভিযোগপত্রে সাইফুর রহমান, শাহ মাহবুবুর রহমান রনি, তারেকুল ইসলাম তারেক, অর্জুন লস্কর, আইনুদ্দিন ওরফে আইনুল ও মিসবাউল ইসলাম রাজন মিয়াকে সরাসরি ধর্ষণে সম্পৃক্ত এবং রবিউল ইসলাম ও মাহফুজুর রহমান মাসুমকে ধর্ষণের সহযোগী হিসেবে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এই আটজনই বর্তমানে জেলহাজতে রয়েছেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. শহীদুজ্জামান জানান, এসমি কলেজ ছাত্রবাসে আলোচিত এ ধর্ষণের অভিযোগে একটি ও ভুক্তভোগীর স্বামীর কাছে চাঁদা দাবি ও গাড়ি ছিনতাইয়ের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে আরেকটি মামলা করে।
অ্যাডভোকেট মো. শহীদুজ্জামান জানান, বাদীপক্ষ মনে করে একই ঘটনায় পৃথক দু’টি মামলা দুই আদালতে বিচারকাজ পরিচালিত হলে সাক্ষীরা দুই আদালতেই সাক্ষী দিতে হবে। এতে নানা অসঙ্গতি দেখা দিবে। এতে বিচার প্রক্রিয়াও ব্যাহত হবার আশঙ্কা থেকেই যায়। তাই দু’টি মামলাই একই আদালতে বিচার করার জন্য আদালতে আবেদন জানানো হয়েছে। পরে হাইকোর্ট দুটি মামলা একই আদালতে বিচারের আদেশ দেন।
এ আদেশের পর সিলেটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে দুটি মামলা একসাথে বিচার করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
ধর্ষণের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গত ১৭ জানুয়ারি আট আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়। কিন্তু এখনো সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়নি।
পড়ুন: এমসি কলেজে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ: অধ্যক্ষ ও হোস্টেল সুপারকে সাময়িক বরখাস্তের নির্দেশ
এমসি কলেজে ধর্ষণ: ধর্ষণ ও চাঁদাবাজির বিচার একসাথে চলবে
গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৯টার দিকে টিলাগড় এলাকার এমসি কলেজে স্বামীর সাথে বেড়াতে আসা ওই গৃহবধূকে ক্যাম্পাস থেকে তুলে ছাত্রাবাসে নিয়ে ধর্ষণ করেন কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মী।
এ ঘটনায় পরদিন সকালে ভুক্তভোগীর স্বামী বাদী হয়ে শাহপরাণ থানায় ছাত্রলীগ কর্মী সাইফুর রহমানকে প্রধান আসামি করে ছয়জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ২-৩ জনকে আসামি করে মামলা করেন।
মামলায় গ্রেপ্তার আট আসামি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। বহুল আলোচিত এ মামলায় ৪৯ জনকে সাক্ষী রাখা হয়েছে।
গাইবান্ধায় ছাত্রলীগ নেতা হত্যা: ঢাকায় গ্রেপ্তার ২
গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান রকি হত্যা মামলায় ঢাকা থেকে দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
তারা হলেন ইমরান (৩৪) জেলা শহরের পূর্বপাড়া এলাকার ইলিয়াস মিয়ার ছেলে ও রবিন (২৮) পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আসাদুজ্জামান হাসু মিয়ার ছেলে।
সোমবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম।
জেলা পুলিশ সুপার বলেন, রকি হত্যা মামলার এজাহারনামীয় আসামি ইমরানকে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। সেখানে একটি লোহা গলানোর কারখানায় পরিচয় পাল্টিয়ে আত্মগোপনে ছিলেন তিনি। পরে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে রবিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের আদালতে তুলে রিমান্ড আবেদন করা হবে বলেও জানান এসপি।
এর আগে গত ১১ জুলাই রাতে গাইবান্ধা জেলা শহরের পূর্বপাড়ার হালিম বিড়ি ফ্যাক্টরির সামনে আশিকুর রহমান রকিকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায় একদল দুর্বৃত্ত। পরে স্থানীয়রা তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে গাইবান্ধা জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় পরদিন নিহত ছাত্রলীগ নেতার বড় ভাই আতিকুর রহমান সরকার বাদী চার জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও সাত থেকে আট জনকে আসামি করে সদর থানায় মামলা করেন।
পড়ুন: ২ বান্ধবীকে ধর্ষণের পর হত্যা: যশোরে ২ আসামির ফাঁসি আজ
শিগগিরই মুহিবুল্লাহর হত্যাকারীদের আইনের আওতায় আনা হবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী