অর্থনীতি
অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার পেলেন ক্লডিয়া গোল্ডিন
শ্রমবাজারে লিঙ্গ ব্যবধানসংক্রান্ত গবেষণার জন্য অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ক্লডিয়া গোল্ডিন (৭৭)।
সোমবার (৯ অক্টোবর) স্টকহোমে রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সের সেক্রেটারি জেনারেল হ্যান্স এলেগ্রেন এই পুরস্কার বিজয়ী হিসেবে ক্লডিয়া গোল্ডিনের নাম ঘোষণা করেন।
গোল্ডিন এই পুরস্কার জয়ী তৃতীয় নারী।
অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কারবিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান জ্যাকব সভেনসন বলেছেন, ‘শ্রমবাজারে নারীর ভূমিকা বোঝা সমাজের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ক্লডিয়া গোল্ডিনের যুগান্তকারী গবেষণার জন্য ধন্যবাদ, আমরা এখন অন্তর্নিহিত কারণগুলো এবং ভবিষ্যতে কোন বাধাগুলো সমাধান করা প্রয়োজন হতে পারে সে সম্পর্কে আরও অনেক কিছু জানি।’
পুরস্কার কমিটির সদস্য রান্ডি হজালমারসন বলেছেন, গোল্ডিন সমাধানের প্রস্তাব দেয়নি, তবে তার গবেষণা শ্রমবাজারে বিদ্যমান লিঙ্গবৈষম্য সম্পর্কে বুঝতে নীতি নির্ধারকদের সাহায্য করবে।’
হজালমারসন বলেন, ‘তিনি বৈষম্যের উৎস, সময়ের সঙ্গে এটি কীভাবে পরিবর্তিত হয় এবং কীভাবে এটি বিভিন্ন পর্যায়ে বিকশিত ও পরিবর্তিত হয় তা ব্যাখ্যা করেন।’
তিনি বলেন, ‘সুতরাং এটি একটি জটিল নীতিগত প্রশ্ন, কারণ আপনারা যদি অন্তর্নিহিত কারণটি না জানেন, তবে কোনো নির্দিষ্ট নীতি (সমাধান) কাজে আসবে না।’
আরও পড়ুন: শান্তিতে নোবেল পেলেন ইরানের সমাজকর্মী নার্গেস মোহাম্মদি
হজালমারসন আরও বলেন, ‘ফলে সমস্যাটি বোঝার ও সঠিকভাবে ব্যাখা করার মাধ্যমে আমরা আরও ভালোভাবে এগিয়ে যেতে পারব।’
তিনি বলেন, গোল্ডিনের আবিষ্কারগুলোর ‘বিশাল সামাজিক প্রভাব রয়েছে।’
এলেগ্রেন জানান, পুরস্কারপ্রাপ্তির পর গোল্ডিন ‘বিস্মিত ও খুব, খুব আনন্দিত’।
গত সপ্তাহে চিকিৎসা, পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, সাহিত্য ও শান্তিতে পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছিল।
১৯৬৮ সালে সুইডেনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক অর্থনীতিতে পুরস্কার প্রবর্তন করে। এটি আনুষ্ঠানিকভাবে আলফ্রেড নোবেলের স্মৃতিতে অর্থনৈতিক বিজ্ঞানে ব্যাংক অব সুইডেন পুরস্কার হিসেবে পরিচিত।
আগামী ডিসেম্বরে অসলো ও স্টকহোমে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। প্রত্যেক নোবেল বিজয়ী ১১ মিলিয়ন সুইডিশ ক্রোনার (প্রায় ১ মিলিয়ন ডলার) নগদ পুরস্কার, ১৮ ক্যারেট স্বর্ণপদক ও সার্টিফিকেট পাবেন।
আরও পড়ুন: সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন নরওয়ের লেখক জন ফসে
পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার জিতলেন ৩ বিজ্ঞানী
চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও চলতি অর্থবছরে অর্থনীতিকে কোভিড পূর্ব অবস্থায় ফেরানোর আশা সরকারের
অর্থনৈতিক অগ্রগতির ক্ষেত্রে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ থাকা সত্ত্বেও চলতি অর্থবছরের (২০২৩-২৪) শেষ নাগাদ অর্থনীতিকে কোভিড-১৯-পূর্ব প্রবৃদ্ধির গতিতে ফিরিয়ে আনার আশা করছে সরকার।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীন অর্থ বিভাগের ম্যাক্রোইকোনমি উইং প্রণীত 'মধ্যমেয়াদি সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বিবৃতিতে ২০২৩-২৪ থেকে ২০২৫-২৬'-এ অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের জন্য সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরা হয়েছে।
সংস্থাটি বলছে, ২০২০ সালে মহামারি শুরুর সঙ্গে সঙ্গে গত তিন বছরের বড় অংশের জন্য অর্থনীতি তার দ্রুতগতির প্রবৃদ্ধির গতিপথ থেকে ছিটকে পড়েছিল। উহানে প্রাদুর্ভাবের তিন মাসেরও কম সময়ের মধ্যে ২০২০ সালের মার্চ মাসে বাংলাদেশে প্রথম কোভিড-১৯ আক্রান্তের খবর পাওয়া গিয়েছিল।
সম্প্রতি প্রকাশিত ত্রৈমাসিক জিডিপি ডেটা (আইএমএফ নির্ধারিত শর্ত অনুসারে) এটি প্রমাণ করে। এতে দেখা যায়, ২০১৯-২০ অর্থবছরের শেষ প্রান্তিকে (এপ্রিল থেকে জুন ২০২০) অর্থনীতি ৭ দশমিক ৮৬ শতাংশ সংকুচিত হয়েছে, কারণ ভাইরাসটি বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছিল।
আরও পড়ুন: দীর্ঘমেয়াদে বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণমান নেতিবাচকে নামাল ফিচ
গত মাসে পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) প্রকাশিত আংশিক ত্রৈমাসিক তথ্য অনুসারে, ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬ দশমিক ৫ থেকে ৮ শতাংশ। চতুর্থ ত্রৈমাসিকে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধির (সংকোচন) কারণে অর্থনীতি কতটা ছিটকে পড়েছিল তা এটিতে প্রতিফলিত হয়েছে।
কোভিড-১৯-এর কারণে সৃষ্ট মন্দা আগামী অর্থবছরের (২০২০-২১) প্রথম ৬ মাসের অর্থনৈতিক কর্মক্ষমতাকে হতাশাজনক করে তুলে। এটি তৃতীয় তিন মাসেও (জানুয়ারি থেকে মার্চ,২০২১) পুনরুদ্ধারের কোনো লক্ষণ দেখা যায়নি।
২০২১-২২ অর্থবছর শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশ একটি সফল টিকাদান কর্মসূচি বাস্তবায়ন এবং লকডাউন বিধিনিষেধ তুলে নিয়ে কোভিড-১৯ মোকাবিলায় প্রস্তুত বলে মনে হয়েছিল। তৃতীয় ত্রৈমাসিকে (জানুয়ারি থেকে মার্চ, ২০২২) জিডিপি প্রবৃদ্ধি ১০ শতাংশ ছুঁয়েছে।
তবুও যখন পুনরুদ্ধারের কাজ চলছিল, তখন ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরুর সঙ্গে সঙ্গে বিশ্বজুড়ে হোঁচট খাওয়া শুরু হয়। আন্তর্জাতিক জ্বালানি বাজারে অস্থিতিশীলতা এবং সরবরাহ শৃঙ্খল বিঘ্নিত হওয়ার ফলে কোভিড পরবর্তী দেশের পুনরুদ্ধারের গতি আবারও হ্রাস পায়।
যদিও কোভিড-১৯-এর কারণে সৃষ্ট সংকোচনের মতো কিছুই ছিল না, তবুও ২০২২ অর্থবছরের শেষ ত্রৈমাসিকে অর্থনীতি মারাত্মক মন্দার সম্মুখীন হয়েছিল, যা আগের ত্রৈমাসিকের সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ থেকে মাত্র ২ দশমিক ৬ শতাংশে নেমে এসেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, 'বাংলাদেশও তার অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলতে প্রস্তুত। তবে প্রকৃত তথ্য-উপাত্ত থেকে জানা যায়, কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাবের সময়ও বাংলাদেশ প্রশংসনীয় সাফল্য অর্জন করেছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের শেষ নাগাদ কোভিড-১৯-পূর্ব প্রবৃদ্ধির পথে ফিরে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।’
আরও পড়ুন: বাংলদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে ২১.১৫ বিলিয়ন ডলার, যা বলছেন অর্থনীতিবিদরা
সবকিছু পরিকল্পনা অনুযায়ী চলতে থাকলে এবং তা ধরে রাখতে পারলে ২০২৫-২৬ অর্থবছরে আবারও ৮ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করা সম্ভব।
অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় পরিকল্পিত প্রবৃদ্ধি থেকে প্রকৃত বিচ্যুতি সামান্য রয়ে গেছে বলেও প্রতিবেদনটিতে উঠে এসেছে।
ম্যাক্রোইকোনমিক পলিসি বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, মূলধন সংগ্রহ উন্নয়নের মূল চাবিকাঠি এবং তাই সরকার তার লক্ষ্য পূরণের জন্য সরকারি বিনিয়োগের পাশাপাশি বেসরকারি বিনিয়োগকে উৎসাহিত করার লক্ষ্য নিয়েছে।
২০২১-২২ অর্থবছরে মোট বিনিয়োগ ছিল জিডিপির ৩২ শতাংশ, যেখানে বেসরকারি ও সরকারি খাতের অবদান ছিল যথাক্রমে ২৪ দশমিক ৫ শতাংশ ও ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। দীর্ঘ ও মধ্যমেয়াদি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বিনিয়োগের মাত্রা আরও বাড়াতে হবে।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, সরকারি বিনিয়োগের বাস্তবায়নের হার বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে। উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের গতি বাড়াতে পারলে প্রয়োজনীয় মাত্রায় বিনিয়োগ অর্জন করা সম্ভব।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘বিষয়টি চিহ্নিত করে প্রকল্পের নকশা ও বাস্তবায়ন উভয় স্তরেই কিছু কাঠামোগত পরিবর্তন আনার পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার।’
অর্থ বিভাগের নথিতে বলা হয়েছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বিশ্বব্যাপী জ্বালানি সরবরাহকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে। রাশিয়া বিশ্বব্যাপী জ্বালানির একটি প্রধান সরবরাহকারী দেশ। তাই যখন যুদ্ধ শুরু হয়েছিল, তখন পণ্যের দাম দ্রুত বেড়েছিল।
প্রায় সব দেশের মতো বাংলাদেশও এ সমস্যায় ভুগতে পড়ে যায়। ২০২২ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট মুদ্রাস্ফীতি বেড়ে দাঁড়ায় ৮ দশমিক ৭ শতাংশে এবং ২০২৩ সালের মার্চের মধ্যে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৯ দশমিক ৩ শতাংশে।
এদিকে বিশ্বব্যাপী পণ্যের দাম ইতোমধ্যেই কমছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো নীতিগত হার বাড়িয়েছে এবং এর কারণে আশা করা হচ্ছে যে আগামী মাসগুলোতে মুদ্রাস্ফীতি কমে আসবে।
আরও পড়ুন: অর্থনীতিকে করোনা পূর্ববর্তী অবস্থায় ফেরাতে চায় সরকার
আইএমএফ অনুমান করেছে, গৃহীত পদক্ষেপগুলো মাঝারি মেয়াদে মুদ্রাস্ফীতি হ্রাস করতে সরকারগুলোকে সহায়তা করবে। অর্থ বিভাগ পূর্বাভাস দিয়েছে, ২০২৩-২৪ সালে গড় মুদ্রাস্ফীতি উল্লেখযোগ্যভাবে ৬ দশমিক শূন্য শতাংশে নেমে আসবে। যদিও প্রথম তিন মাসে (জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর) এর কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি।
মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ও দরিদ্রদের আয় সুরক্ষায় সরকার ধীরে ধীরে মুদ্রানীতি কঠোর করার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় জিনিসগুলোর অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বাড়ানোর উপর জোর দিয়েছে।
নথিতে বলা হয়েছে, খাদ্য মুদ্রাস্ফীতি দরিদ্রদের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে। এটি মাথায় রেখে সরকার ভর্তুকি ও প্রণোদনাসহ বিভিন্ন পদক্ষেপের মাধ্যমে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধিতে উৎসাহিত করেছে।
কৃষি খাতকে সহায়তা করতে এ খাতে ঋণ বিতরণ বাড়ানো হয়েছে।
২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারির শেষে গত অর্থবছরের প্রথম ৮ মাসে কৃষিঋণ ও অকৃষি পল্লি ঋণ বিতরণের পরিমাণ ছিল ২১ হাজার ৬৬ কোটি টাকা, যা এক বছর আগের তুলনায় প্রায় ১৪ শতাংশ বেশি।
সরকারের সহায়ক নীতির সহায়তায় শিল্প উৎপাদনের সাধারণ সূচক (মাঝারি এবং বৃহৎ আকারের উৎপাদন) বাড়ছে, যা সম্প্রসারিত শিল্প উৎপাদনকে প্রতিফলিত করে।
আরও পড়ুন: শিগগিরই এসক্রো বাস্তবায়ন কমিটি গঠন করবে বাংলাদেশ ব্যাংক
বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও পাবলিক পলিসি বিশ্লেষক ড. মাসরুর রিয়াজ মনে করেন, বেশ কয়েকটি সামষ্টিক অর্থনৈতিক সূচক অস্থিতিশীল হয়ে পড়ায় চলতি অর্থবছরের মধ্যে কোভিড পূর্ব প্রবৃদ্ধির গতি ফিরে পাওয়া খুব চ্যালেঞ্জিং হবে।
ইউএনবির সঙ্গে আলাপকালে, তিনি সরকারকে প্রথমে সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল করার দিকে মনোনিবেশ করার পরামর্শ দেন, যা দীর্ঘমেয়াদে অর্থনীতিকে আরও টেকসই করে তুলবে।
উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি, বৈদেশিক মুদ্রা/ডলারের তীব্র সংকট প্রতিরোধ, এলসি খোলা ও দেশীয় মুদ্রা টাকার ওঠানামার বিষয়টি আগে সমাধান করতে হবে বলেও উল্লেখ করেন ড. রিয়াজ।
তিনি বলেন, ‘অর্থনীতিকে কোভিড-পূর্ব প্রবৃদ্ধির হারে ফিরিয়ে আনতে হলে প্রথমে এই সমস্যাগুলোর সমাধান করা উচিত, যা স্বল্প সময়ের মধ্যে খুব চ্যালেঞ্জিং ও কঠিন হবে।
ড. রিয়াজ আরও বলেন, 'প্রবৃদ্ধির দিকে মনোনিবেশ না করে অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করার সময় এসেছে। দীর্ঘমেয়াদে নন-পারফর্মিং লোনের উচ্চ হার কমানো, মুদ্রাস্ফীতি যৌক্তিক সীমার মধ্যে রাখা এবং বিনিময় হারে স্থিতিশীলতা অর্জনের মাধ্যমে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়বে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের ২০২৪ অর্থবছরের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমাল বিশ্বব্যাংক
বাংলাদেশের রিজার্ভ-সামষ্টিক অর্থনৈতিক অবস্থা পর্যালোচনা করছে আইএমএফ
বাংলাদেশকে দেওয়া ৪ দশমিক ৭০ বিলিয়ন ডলার ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি ছাড়ের আগে দেশের সর্বশেষ বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভসহ সামষ্টিক অর্থনৈতিক অবস্থা পর্যালোচনা করছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) একটি প্রতিনিধিদল।
আইএমএফ ঋণের একটি শর্ত ছিল যে গত জুন পর্যন্ত প্রকৃত (নিট) বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২৪ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থাকতে হবে।
শর্ত অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি) ওই পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রাখতে পারেনি।
বুধবার (৪ অক্টোবর) সফররত আইএমএফ প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে বৈঠক করেন।
আরও পড়ুন: নভেম্বরে আইএমএফের ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি পেতে পারে বাংলাদেশ
আলোচনায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অগ্রগতি, সাফল্য ও বিভিন্ন শর্ত পূরণে ব্যর্থতার কথা উঠে আসে। রিজার্ভের শর্ত পূরণে ব্যর্থতার কথাও বৈঠকে জানানো হয়।
আইএমএফ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, প্রতিষ্ঠান এবং ব্যবসায়িক গোষ্ঠীর সঙ্গে বেশ কয়েকটি বৈঠক করবে। আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতা, ব্যাংকিং খাতের সংস্কার, তারল্য ব্যবস্থাপনা, ডলারের বাজারদরের লেনদেন, রাজস্ব ব্যবস্থাপনার আধুনিকীকরণ, ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ গণনা পদ্ধতি, সুদের হার এবং মুদ্রানীতি বাস্তবায়ন নিয়ে আলোচনা করবে সংস্থাটির প্রতিনিধি দল।
বৈঠকে বিবি আইএমএফকে জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অধিকাংশ শর্ত পূরণ করা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক বুধবার সাংবাদিকদের বলেন, ঋণ অনুমোদনের সময় আইএমএফ আমাদের কিছু শর্ত দিয়েছিল, সেগুলোর মধ্যে কিছু পূরণ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: আইএমএফ’র হিসাব অনুযায়ী বাংলাদেশের রিজার্ভ ২৩.৫৭ বিলিয়ন ডলার
দু’টি ব্যর্থতা আছে - রিজার্ভ সংরক্ষণ সামান্য কম এবং রাজস্ব সংগ্রহ কম। তবে অন্যান্য অনেক ক্ষেত্রে সফলভাবে বাস্তবায়ন করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
শর্ত অনুযায়ী ব্যাংকগুলোর আর্থিক স্থিতিশীলতার প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভ গণনা করা হচ্ছে। মুদ্রার একটি বাজার-নির্ধারিত বিনিময় হারও চালু করা হয়েছে। সুদের নতুন নিয়ম চালু করা হয়েছে।
মেজবাউল বলেন, ‘আমি আইএমএফের দেওয়া শর্তাবলি উল্লেখ করেছি যা অর্জন করা হয়েছে এবং যেগুলো অর্জিত হয়নি। কেন হয়নি তাও জানানো হয়েছে।’
আরও পড়ুন: বৈদেশিক মুদ্রার পরিসংখ্যান মিলছে না: অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন
ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিদেশি ব্যবসায়ীদের দেশে বিনিয়োগের আহ্বান বাণিজ্যমন্ত্রীর
ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) দেশসহ বিভিন্ন দেশের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে আরও বেশি বিনিয়োগ করার আহ্বান জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
বাংলাদেশ বর্তমানে বিনিয়োগের উত্তম জায়গায় পরিণত হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগ করে কেউ কখনো ক্ষতিগ্রস্ত বা হতাশ হয়নি।
বুধবার (৪ অক্টোবর) রাজধানীর গুলশানে রেনেসাঁ হোটেলে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘বাংলাদেশে পরিচালিত ইউরোপীয়ান কোম্পানিগুলোর বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: বাংলদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে ২১.১৫ বিলিয়ন ডলার, যা বলছেন অর্থনীতিবিদরা
এ সময় বাংলাদেশে ইতোমধ্যে যেসব বিদেশি প্রতিষ্ঠান বা ব্যবসায়ী বিনিয়োগ করেছেন, তাদের সহযোগীদের বাংলাদেশের বিনিয়োগের ইতিবাচক পরিবেশ সম্পর্কে জানানোর অনুরোধ করেন টিপু মুনশি।
মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে অবকাঠামোগত ও যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ সব খাতে অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (এসইজেড) প্রতিষ্ঠাসহ অনেক মেগা প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে এবং আরও কিছু প্রকল্প বাস্তবায়নের পথে রয়েছে। যার ফলে বাংলাদেশ বিনিয়োগের উত্তম জায়গায় পরিণত হয়েছে।
ইউরোপ ও বাংলাদেশ উভয়ের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের অপার সম্ভাবনাকে একত্রে উন্মোচনে সংশ্লিষ্টদের কাজ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি আরও বলেন, আমাদের যৌথ প্রচেষ্টার মাধ্যমে বাংলাদেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে একটি পারস্পরিক লাভজনক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক নতুন মাত্রা পাবে। বিনিয়োগের পরিবেশ সৃষ্টি করতে বাধাগুলো চিহ্নিত করে দ্রুত সমাধানের জন্য পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার।
সরকারের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের সম্পর্ক অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ উল্লেখ করে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে এসে ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিবেশ দেখে বিনিয়োগ করতে উৎসাহ দেন বাণিজ্যমন্ত্রী ।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ২০২৬ সালে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে বের হবে। এরপর স্বাভাবিকভাবেই আমাদের সামনে কিছু চ্যালেঞ্জ তৈরি হবে। কাজেই নিশ্চিন্তে বসে থাকার কোনো উপায় নেই। আসন্ন পরিস্থিতি ও সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় আমাদের এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে।
আরও পড়ুন: মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞা পোশাক রপ্তানিতে প্রভাব ফেলবে না: বিজিএমইএ
তিনি আরও বলেন, রানা প্লাজা ঘটনার পর বিভিন্ন নীতি পরিবর্তনের ফলে আমাদের পোশাকখাতে নতুন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। ফলে ইইউ বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগে এগিয়ে আসতে পারে। ইউরোপ ও বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের পূর্ণ সম্ভাবনাকে উন্মুক্ত করে আমাদের বাণিজ্য বাধা, অবকাঠামো উন্নয়ন, গুণমান, শ্রম অধিকারসহ অসংখ্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে।
সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে যোগ দেন বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মিয়া।
তিনি বলেন, স্থানীয় ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য সব ধরনের সেবা নিশ্চিত করতে বিডা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। চলতি বছরের ডিসেম্বরে বিডার অনলাইন ওয়ান স্টপ সার্ভিস (ওএসএস) প্ল্যাটফর্ম হতে বিনিয়োগকারীদের জন্য সব ধরনের সেবা স্বল্প সময়ের মধ্যে নিশ্চিত করা হবে।
সেমিনারে বক্তব্য রাখেন ডিসিসিআই সভাপতি ব্যারিস্টার মো. সামীর সাত্তার, ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি ।
আরও পড়ুন: `কমনওয়েলথ বিজনেস এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড’পেল ইসলামী ব্যাংক
২০২৪ সালে শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি ১.৭ শতাংশ বৃদ্ধির পূর্বাভাস বিশ্বব্যাংকের
২০২৪ সালে শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি ১ দশমিক ৭ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। এর আগে, ২০২৩ সালে দেশটির অর্থনীতি ৩ দশমিক ৮ শতাংশ সংকুচিত হয়।
মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) বিশ্বব্যাংক তার ষান্মাষিক পূর্বাভাসে এ তথ্য জানিয়েছে।
বিশ্বব্যাংক বলেছে, ঋণ পুনর্গঠন এবং জটিল কাঠামোগত সংস্কার বাস্তবায়নের অগ্রগতির উপর প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা নির্ভর করে।
বিশ্বব্যাংক মঙ্গলবার তার সর্বশেষ পূর্বাভাসে জানিয়েছে, শ্রীলঙ্কার সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য উন্নত রাজস্ব সংহতি গুরুত্বপূর্ণ।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের ২০২৪ অর্থবছরের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমাল বিশ্বব্যাংক
দেশটিতে একটি সরকার-নেতৃত্বাধীন কর সংস্কার প্যাকেজ ২০২২ সালের মে থেকে বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে- নতুন করের প্রবর্তন, বিস্তৃত পরিসরে করের হার ও ভিত্তিগুলো সমন্বয়, কর সংগ্রহের দক্ষতা বৃদ্ধি প্রভৃতি।
মালদ্বীপ, নেপাল ও শ্রীলঙ্কার জন্য বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারিস এইচ হাদাদ-জারভোস বলেছেন, ‘অর্থনৈতিক সংকটের শুরু থেকেই শ্রীলঙ্কা গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার করেছে। পুনরুদ্ধারের জন্য আর্থিক ঝুঁকিগুলো মোকাবিলা করার সময় সংস্কারমূলক একটি টেকসই প্রবৃদ্ধির পথ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
তিনি বলেন, জনগণের আস্থা তৈরি করতে এবং উন্নততর জনসেবা প্রদানের সঙ্গে ব্যয়ের স্বচ্ছতা এবং ক্রমাগত সংস্কারের মাধ্যমে কর রাজস্ব সংগ্রহের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকা উচিত।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নে ২০০ মিলিয়ন ডলার সহায়তার অনুমোদন বিশ্বব্যাংকের
বাংলাদেশ-বিশ্বব্যাংকের ৩০০ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি সই
আসন্ন জলবায়ু সংকট এড়াতে প্রধান অর্থনীতিগুলোকে অবশ্যই ন্যায্য অংশীদারিত্ব করতে হবে: জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রী
অভিযোজন ও প্রশমনের মধ্যে জলবায়ু অর্থায়নের সমান বণ্টনের জন্য ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের বারবার আহ্বানে খুব কম সাড়া পাওয়া গেছে বলে অভিযোগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার জাতিসংঘ সদর দপ্তরে 'ডেলিভারিং ক্লাইমেট জাস্টিস: অ্যাক্সিলারেটিং অ্যাম্বিশন অ্যান্ড ইমপ্লিমেন্টেশন অন অ্যাডাপ্টেশন অ্যান্ড ওয়ার্নিংস ফর অল' শীর্ষক জলবায়ু উচ্চাকাঙ্ক্ষা বিষয়ল শীর্ষ সম্মেলনের উচ্চ পর্যায়ের থিমেটিক সেশনে তিনি বলেন, ‘অভিযোজন তহবিলকে প্রত্যাশা পূরণ করতে হবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, জলবায়ু ন্যায়বিচারের প্রবক্তা হিসেবে বাংলাদেশ এজেন্ডাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যেকোনো গঠনমূলক পদক্ষেপের সঙ্গে একাত্ম হতে প্রস্তুত রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করি, বিশ্বের প্রধান অর্থনীতিগুলো জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়ে সৎ থাকবে এবং আসন্ন সংকট এড়ানোর জন্য তাদের ন্যায্য অংশীদারিত্ব করবে।’
তিনি বলেন, জলবায়ু অভিযোজনে বাংলাদেশকে সাধারণত বিশ্বনেতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে জাতিসংঘ স্বীকৃত কমিউনিটি ক্লিনিক মডেলের জন্য সম্মাননা পেলেন প্রধানমন্ত্রী
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের কাছে বেশ কয়েকটি প্রকৃতি-ভিত্তিক, কাঠামোগত এবং প্রযুক্তিগত সমাধান রয়েছে যা বিশ্বের অন্যান্য অংশে একইভাবে প্রয়োগ করা যেতে পারে।’
তিনি উল্লেখ করেন, সরকার ২০৫০ সালের মধ্যে ২৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের প্রত্যাশিত প্রয়োজনীয়তা নিয়ে এর জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা প্রকাশ করেছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা অ্যাডাপটেশন পাইপলাইন অ্যাকসেলারেটর অর্থায়ন ও প্রযুক্তিগত সহায়তায় একটি কার্যকর মডেল দেখতে চাই।’
তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ আগাম সতর্কীকরণ ব্যবস্থায় যথেষ্ট বিনিয়োগ করেছে।
তিনি বলেন, ১৯৭০ সালের ভোলা ঘূর্ণিঝড়ে যে লাখ লাখ মানুষ মারা গিয়েছিল তার তুলনায় সরকার প্রাণহানির সংখ্যা এক অঙ্কে নামিয়ে এনেছে।
আরও পড়ুন: বাইডেনের নৈশভোজে যোগ দিলেন প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘৬৫ হাজার উপকূলীয় মানুষের সমন্বয়ে আমাদের বিশ্বের বৃহত্তম কমিউনিটি স্বেচ্ছাসেবক কর্মসূচি রয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার জন্য আমাদের সর্বশেষ জাতীয় পরিকল্পনা একটি সমন্বিত বহু-বিপজ্জনক আগাম সতর্কতা পদ্ধতি গ্রহণ করেছে।’
তিনি জানান, বাংলাদেশ আবহাওয়ার পূর্বাভাসে নিয়মিত আপডেট দিতে মোবাইল প্রযুক্তি ব্যবহার করছে।
তিনি বলেন, ‘দেশব্যাপী ভূমিকম্প মডেলিং নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের উপস্থিতিতে মহড়া পরিচালনার জন্য জাতিসংঘের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ।’
তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা প্রমাণ করে যে অভিযোজন ও আগাম সতর্কীকরণে বিনিয়োগ নিখুঁত অর্থবহ।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আশা করি আমাদের উন্নয়ন অংশীদাররা জলবায়ু ন্যায়বিচার প্রদানের জন্য এই সুযোগগুলো কাজে লাগাবে।’
আরও পড়ুন: কোভিড-১৯ এর মতো আরেকটি মহামারি প্রতিরোধে বিশ্বকে অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিতে হবে: জাতিসংঘের উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশ-ভারত অর্থনীতির নতুন যুগে পা দিয়েছে: শাহরিয়ার আলম
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেছেন, বাংলাদেশ ও ভারত অর্থনীতির একটি নতুন যুগে পা দিয়েছে। এটি উভয় দেশের অর্থনীতি ও দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের উন্নয়নে সাহায্য করবে।
তিনি আরও বলেছেন, এটি বৈদেশিক মুদ্রার নিট চাহিদা কমাতে পারে। এতে মার্কিন ডলার কিছু পরিমাণে বর্তমান অ্যাকাউন্ট সম্পর্কিত বাণিজ্য প্রবাহের নিষ্পত্তিতে এবং ব্যবসা করার খরচও কমিয়ে দেবে।
বাংলাদেশে এই অঞ্চলের সবচেয়ে উদার বিনিয়োগ ব্যবস্থার সুবিধা নিতে ভারতীয় ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানান প্রতিমন্ত্রী।
মঙ্গলবার (১১ জুলাই) শাহরিয়ার আলম ঢাকার গুলশানে ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডের প্রধান কার্যালয়ে ইবিএল-ইন্ডিয়া বিজনেস ডেস্কের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
এসময় তিনি ঘোষিত ‘ভারতীয় রুপিতে বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্য নিষ্পত্তি’ পদ্ধতির উল্লেখ করেন।
আরও পড়ুন: জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে ইসির সঙ্গে ইইউ প্রতিনিধিদলের বৈঠক
ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশন এবং বাংলাদেশ ব্যাংক ১১ জুলাই ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ভারতীয় রুপিতে (আইএনআর) বাণিজ্য শুরু করে।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, ব্যাংকিং ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সদস্য, ব্যবসায়ী প্রতিনিধি এবং গণমাধ্যমকর্মীরা ছিলেন।
অনুষ্ঠানটি যৌথভাবে পরিচালনা ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার।
হাইকমিশনার উল্লেখ করেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে গত এক দশকে ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্ক উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তিত হয়েছে। এর মধ্যে দুই দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক এবং সংযোগ ছিল অন্যতম। যা সেই রূপান্তরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বহিঃপ্রকাশ।
তিনি দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের উল্লেখযোগ্য সম্প্রসারণ এবং অর্থনৈতিক সম্পৃক্ততা বাড়ানোর নতুন উপায় খুঁজে বের করতে উভয় দেশের সরকারের সমন্বিত প্রচেষ্টার উপরও জোর দেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ ও ভারতের মুদ্রায় বাণিজ্য লেনদেন রিজার্ভের ওপর চাপ কমাবে: হাইকমিশনার
ভারতীয় হাইকমিশনার বলেছেন, আইএনআর-এ দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য নিষ্পত্তির জন্য নতুন প্রক্রিয়া চালু করা উভয় দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রচেষ্টার চূড়ান্ত পরিণতি ছিল, যা দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের জন্য বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর নির্ভরতা হ্রাস করে লেনদেনের খরচ কমাতে সাহায্য করবে। একই সঙ্গে সময়, গতি, দক্ষতা ও বাণিজ্য নিষ্পত্তির সুবিধার উন্নয়ন করে এবং প্রতিযোগিতামূলকতা ও সামগ্রিক বাণিজ্যের পরিমাণ বাড়ায়।
স্থানীয় ব্যবসার দীর্ঘস্থায়ী চাহিদার প্রতিক্রিয়ায় এই প্রক্রিয়াটি চালু করা হয়েছিল স্বীকার করে তিনি বলেন, দীর্ঘমেয়াদে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যকে আরও বাড়ানোর অসাধারণ সম্ভাবনা রয়েছে, বিশেষ করে ব্যাপক অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তির (সিইপিএ) প্রেক্ষাপটে। শিগগিরই আলোচনা শুরু হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেন, ক্রমবর্ধমান ভূ-রাজনৈতিক জটিলতায় বিশ্বের দেশগুলো অর্থনৈতিকভাবে লড়াই করছে। ভারতীয় রুপিতে (আইএনআর) ভারত-বাংলাদেশ বাণিজ্যের শুরুটা জটিলতাগুলো হ্রাস করে বাণিজ্য প্রসারের নতুন পথ খুলে দেবে বলেও জোর দেন তিনি।
ভারত থেকে এই নতুন ব্যবস্থায় অংশগ্রহণের জন্য বর্তমানে মনোনীত ভারতীয় ব্যাংকগুলো হলো স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া এবং আইসিআইসিআই ব্যাংক, আর বাংলাদেশের মনোনীত ব্যাংকগুলো হলো সোনালী ব্যাংক ও ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড।
আইএনআর-তে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য নিষ্পত্তির জন্য নির্ধারিত ভারতীয় ব্যাংকগুলোতে একটি বিশেষ রুপি ভোস্ট্রো অ্যাকাউন্ট (এসআরভিএ) খোলার জন্য মনোনীত বাংলাদেশি ব্যাংকগুলোর প্রত্যেকটিকে অন্তর্ভুক্ত করে৷
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রের আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়া ঢাকায় পৌঁছেছেন
আনুষ্ঠানিকভাবে আইএনআর-তে বাণিজ্য শুরুর জন্য তাদের ব্যাংকের মাধ্যমে প্রথম রপ্তানিকারক এবং আমদানিকারকদের মধ্যে একটি আনুষ্ঠানিক ‘লেটার অব ক্রেডিট, অর্থাৎ এলসি নথিপত্রের বিনিময়’ করা হয়েছিল।
বাংলাদেশ থেকে আইএনআর- তে ১৬ মিলিয়নের প্রথম রপ্তানি করেছিল বগুড়ার তামিম অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। ভারতে আইসিআইসিআই ব্যাংকে আমদানি এলসি খোলা হয়েছিল এবং বাংলাদেশের রপ্তানিকারকের ব্যাংক ছিল এসবিআই।
বাংলাদেশে আইএনআর- তে প্রথম ১২ মিলিয়নের আমদানি করে নিতা কোম্পানি লিমিটেড, ঢাকা। আমদানি এলসিটি বাংলাদেশের এসবিআই ঢাকা শাখায় খোলা হয়েছিল, যার এসবিআই রপ্তানিকারকের (টাটা মোটরস) মুম্বাইয়ের ব্যাংক সিএজি শাখায়।
আরও পড়ুন: আইসিটি প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের প্রতিনিধি দলের বৈঠক
অর্থনীতি মর্যাদাপূর্ণ অবস্থায় নেই, দেশ চালাতে সর্বত্র বৈদেশিক ঋণ খুঁজছে সরকার: মোশাররফ
বিএনপির সিনিয়র নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, সরকার যখন দেশ চালাতে এদিক-ওদিক বিদেশি ঋণ খুঁজছে, তখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের অর্থনীতি একটি মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে বলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে বাস্তবতা আড়াল করার চেষ্টা করছেন।
তিনি বলেন, ‘জেনেভায় গিয়ে আমাদের দখলদার প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে আমাদের দেশের অর্থনীতি একটি মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে... এভাবে ফাঁপা কথা দিয়ে সত্যকে বেশিদিন চেপে রাখা যাবে না। বাংলাদেশের অর্থনীতি যেমন আমরা জানি, গোটা বিশ্বও তা জানে।’
এক আলোচনা সভায় বিএনপি নেতা বলেন, ডলারের অভাবে আমদানি বন্ধ থাকলেও সরকার দেশ পরিচালনার জন্য বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক ঋণ সংস্থার কাছে বিদেশি ঋণ ‘ভিক্ষা’ করছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মোশাররফ বলেন, সরকার বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনার জন্য জ্বালানি ও বিদ্যুত আমদানি করতে না পারায় মানুষ ভয়াবহ লোডশেডিং-এর সম্মুখীন হচ্ছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের অর্থনীতির অবস্থা সবাই জানে। মুদ্রাস্ফীতি বাড়ছে, ডলারের সংকট তীব্র হচ্ছে, পণ্যের দাম ক্রমাগত বাড়ছে, এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সংকটের মধ্যে রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্স কমে যাচ্ছে। এগুলোই বাস্তবতা। তাহলে প্রধানমন্ত্রী কীভাবে দাবি করবেন বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন একটি মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে আছে?
বৃহস্পতিবার জেনেভায় ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৯ সাল থেকে দেশে গণতন্ত্র ও স্থিতিশীলতার ধারাবাহিকতার কারণে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে অর্থনৈতিকভাবে একটি মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) সংবাদপত্রের কালো দিবস উপলক্ষে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে বিএনপি মিডিয়া সেল।
১৯৭৪ সালের ১৬ জুন তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার তার অনুগত চারটি পত্রিকা ছাড়া সব সংবাদপত্র বন্ধ করে দেয়। সংবাদপত্র বন্ধের স্মরণে একদল সাংবাদিক দিনটিকে ‘কালো দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছেন।
মোশাররফ বলেন, বর্তমান অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকট থেকে মুক্তি পেতে শক্তিশালী আন্দোলনের মাধ্যমে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করার বিকল্প নেই।
আরও পড়ুন: স্যাংশনে আ.লীগ সরকারের হাঁটু কাপতে শুরু করেছে: ফখরুল
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় থাকলে বাংলাদেশে কখনোই অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। এই সরকারের অধীনে নির্বাচনে না যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। বাংলাদেশের জনগণও বিশ্বাস করে আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে অতীতে যেমন সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি, ভবিষ্যতেও হবে না।
বিএনপি নেতা আরও বলেন, ক্ষমতাসীন দল যতই চেষ্টা করুক না কেন তাদের দল এবার সরকারের কোনো ফাঁদে পা দেবে না। ‘আমাদের অবশ্যই গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে এই শাসককে অপসারণ করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ক্ষমতা হারানোর ভয়ে ঘাবড়ে যাওয়ায় ক্ষমতাসীন দলের নেতারা বিভিন্ন বিষয়ে পরস্পরবিরোধী মন্তব্য করছেন।
আরও পড়ুন: নির্বাচনের আগে বিএনপিকে মাঠছাড়া করার ষড়যন্ত্র করছে সরকার: ফখরুল
বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ২০০৯ সাল থেকে দেশে গণতন্ত্র ও স্থিতিশীলতা বজায় থাকায় বাংলাদেশ এখন বিশ্বে অর্থনৈতিকভাবে একটি মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে।
ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত ‘নিউ ইকোনমি অ্যান্ড সোসাইটি ইন স্মার্ট বাংলাদেশ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার এম নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দেশ বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক সূচকে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করেছে।
আরও পড়ুন: ওয়ার্ল্ড অব ওয়ার্ক সামিটে যোগ দিতে মঙ্গলবার জেনেভা যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দেশ এলডিসি থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হলেও ২০১৫ সালে নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে।
তিনি আরও উল্লেখ করেছেন যে মাথাপিছু আয় বেড়ে হয়েছে ২ হাজার ৮২৪ মার্কিন ডলার, যা ২০০৬ সালে ছিল ৫৪৩ মার্কিন ডলার। দারিদ্র্যের হার প্রায় ৪১ দশমকি ৫ শতাংশ থেকে প্রায় ১৮ দশমিক ৭ শতাংশে নেমে এসেছে এবং চরম দারিদ্র্যের হার ২৫ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমে ৫ দশমিক ৬ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যার পর অবৈধভাবে রাষ্ট্রক্ষমতায় আসা খুনিরা দেশের মানুষের উন্নয়নে কিছুই করেনি।
গণতন্ত্র ছাড়া দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি ১৯৮১ সালে দেশে ফিরে দীর্ঘ সংগ্রামের মধ্য দিয়ে দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে কাজ করেন।
তার সরকার ৫০ লাখ গৃহহীন ও ভূমিহীন মানুষকে ঘর দিয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, দেশে একজন মানুষও গৃহহীন ও ভূমিহীন থাকবে না।
প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন, কোভিড-১৯ মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং পরবর্তী নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞা বিশ্বব্যাপী খাদ্যপণ্য ও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির কারণে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে।
আরও পড়ুন: ওয়ার্ল্ড অব ওয়ার্ক সামিটে যোগ দিতে জেনেভার উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছেন প্রধানমন্ত্রী
তবে শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার এই চাপ কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে।
একটি জাতির ভবিষ্যৎ গড়তে ভিশন থাকা দরকার উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ রূপকল্প ২০২১ ঘোষণা করেছিল এবং সেই রূপকল্প ইতোমধ্যেই বাস্তবায়িত হয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশকে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে সরকার রূপকল্প-২০৪১ ঘোষণা করেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, সরকার সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: চতুর্থ শিল্প বিপ্লব যাতে মানবতাকে ক্ষুণ্ন করতে না পারে: শেখ হাসিনা
বাংলাদেশ ২০২৩-২৪ সালে অর্থনীতির সব খাতে পাকিস্তানকে পেছনে ফেলেছে: প্রতিবেদন
পাকিস্তানের সংবাদপত্র ডেইলি জং এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বাংলাদেশ ২০২৩-২৪ সালে অর্থনীতির সব খাতে পাকিস্তানকে পেছনে ফেলেছে। বুধবার ভারতীয় গণমাধ্যম এএনআইয়ের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ৭১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বাজেট পেশ করেছে এবং জিডিপির হার ৭.৫ শতাংশ। যেখানে পাকিস্তানের জিডিপির হার মাত্র ৩.৫ শতাংশ এবং মুদ্রাস্ফীতি ২১ শতাংশ।
দৈনিক জং হল একটি উর্দু সংবাদপত্র যার সদর দপ্তর পাকিস্তানের করাচিতে।
দৈনিক জং এর ওই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, নতুন অর্থবছরের জন্য বাংলাদেশের কাছে প্রায় ৩১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রিজার্ভ রয়েছে, যেখানে পাকিস্তানের কাছে ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের কম এবং তাও বন্ধুত্বপূর্ণ দেশগুলোর কাছ থেকে ঋণ নিয়ে।
স্বাধীনতার পর ৫২ বছরে বাংলাদেশের রপ্তানি ৫২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে, যেখানে পাকিস্তানের রপ্তানি এখনও ৩১.৭৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে রয়েছে।
এতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, চলতি বছরে বাংলাদেশের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা ৬৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং পাকিস্তানের ৩৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
পরিসংখ্যান অনুসারে, পাকিস্তান মাত্র ২১.৫বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত রপ্তানি ও পরিষেবা দিতে সক্ষম, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক কম।
আরও পড়ুন: 'পাকিস্তান' শব্দ যুক্ত থাকা আইনের তালিকা চেয়েছেন হাইকোর্ট
অন্যদিকে, পাকিস্তানি প্রাইভেট টেলিভিশন চ্যানেল জিও নিউজ সম্প্রতি জানিয়েছে যে পাকিস্তান তার সবচেয়ে খারাপ অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকটে ভুগছে, যা দেশটির জনগণকে বিপাকে ফেলেছে।
প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফের নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের প্রচেষ্টা সত্ত্বেও দুর্বল আর্থিক সংকট দেশকে গ্রাস করেছে।
জিও নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের অর্থ মন্ত্রণালয় কম বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহের কারণে উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি এবং বৈদেশিক ঋণ পরিশোধসহ অনিশ্চিত বৈশ্বিক ও অভ্যন্তরীণ অর্থনৈতিক পরিবেশ থেকে উদ্ভূত চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে সতর্ক করেছে।
মন্ত্রণালয় তার মাসিক আউটলুক বুলেটিনে জানিয়েছে, মে মাসে মূল্যস্ফীতি ৩৪-৩৬ শতাংশের মধ্যে থাকবে বলে অনুমান করেছে।
আরও পড়ুন: ৭১-এ গণহত্যা বিষয়ক চিত্রপ্রদর্শনী প্রসঙ্গে পাকিস্তানের গণমাধ্যমে প্রকাশিত মন্তব্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গোচরে
পাকিস্তানে বাংলাদেশ হাইকমিশনে স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন