আওয়ামী লীগ
বিএনপি’র ষড়যন্ত্র রুখতে আওয়ামী লীগের শক্তি জনগণ ও সংগঠনের ঐক্য: দীপু মনি
শিক্ষামন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি বলেছেন, বিএনপি-জামাত ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে দেশের জনগণকে কিছু দিতে পারেনি, বরং কেড়ে নিয়েছে। তারা মানুষ হত্যা, জুলুম ও নির্যাতন,আগুন সন্ত্রাস করেছে। জাতীয় নির্বাচন আসলে তারা ষড়যন্ত্র শুরু করে এবং গুজব ছড়ায়। তারা তথাকথিত আন্দোলনের নামে আওয়ামী লীগকে ভয় দেখায়। তাদের এসব ষড়যন্ত্রের রুখে দিতে আমাদের শক্তি হচ্ছে জনগণ ও সংগঠনের ঐক্য।
সোমবার বিকালে চাঁদপুর স্টেডিয়ামে সদর উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা নেতৃত্বে থাকায় আজ দেশের মানুষের গড় আয় ও আয়ু বৃদ্ধি পেয়েছে। একই সাথে মানুষের জীবন যাত্রার মান উন্নত হয়েছে। দেশে এখন আর কোন কুঁড়েঘর নেই। কমপক্ষে টিনের ঘরের মধ্যে বসবাস করেন। প্রধানমন্ত্রী দেশের প্রতিটি মানুষের জন্য ভাবেন এবং কাজ করেন। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বের অনেক দেশেরই অবস্থা তলানিতে। এমন পরিস্থিতেও আমরা অন্যদের তুলনায় ভাল আছি। কিন্তু খেটে খাওয়া মানুষগুলোতে কিছুটা হলেও কষ্টে আছেন। তবে এমন পরিস্থিতি থাকবে না।
দীপু মনি আরও বলেন, সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। জাতীয় নির্বাচনসহ সকল নির্বাচেন সফল করতে আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। দেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রার জন্য শেখ হাসিনার সরকার বার বার দরকার।
আরও পড়ুন: অসাংবিধানিক পদ্ধতিতে সরকারের পতন হবে না: কৃষিমন্ত্রী
চাঁদপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি নুরুল ইসলাম নাজিম দেওয়ানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী।
সম্মেলন উদ্বোধন করেন জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি নাছির উদ্দিন আহমেদ। প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল।
পৌর আওয়ামী লীগের (ভারপ্রাপ্ত) সভাপতি রাধা গোবিন্দ গোপ, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের (ভারপ্রাপ্ত) সাধারণ সম্পাদক আলী এরশ্বাদ মিয়াজী ও পৌর আওয়ামী লীগের (ভারপ্রাপ্ত) সাধারণ সম্পাদক আমিনুর রহমান বাবুল এর যৌথ সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার আব্দুর রব ভুঁইয়া, ডাঃ জে আর ওয়াদুদ টিপু, জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানব বিষয়ক সম্পাদক এবং চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র জিল্লুর রহমান জুয়েল।
এর আগে পবিত্র কুরআন তিলাওয়াত, গীতা পাঠ, জাতীয় সংগীত পরিবেশন, জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন উদ্বোধন করেন ডা দীপু মনিসহ অন্যান্য নেতারা।
সম্মেলনের আলোচনা পর্ব শেষে চাঁদপুর সদর উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগের বিগত কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেন চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নাছির উদ্দিন আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল।
অনেক বছর পর সদর উপজেলা ও পৌর আওয়ামীলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে নেতাকর্মীরা সদরের বিভিন্ন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড থেকে ব্যানার, ফ্যাস্টুন ও নানা ধরনের ক্যাপ, টি-শার্ট পড়ে খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে সম্মেলন স্থানে এসে উপস্থিত হন। এতে শহরের বিভিন্ন স্থানে সৃষ্টি হয় যানজট।
আরও পড়ুন: প্রশাসন যেখানে অনুমতি দিয়েছে, বিএনপিকে সেখানেই সমাবেশ করতে হবে: হানিফ
নয়াপল্টনে বিএনপিকে সমাবেশ করতে দেবে কি না, তা পুলিশ কমিশনারের ব্যাপার: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগের গণসমাবেশ: পোলো গ্রাউন্ডে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী
বিশাল জনসভায় ভাষণ দিতে চট্টগ্রামের পলো গ্রাউন্ডে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দশ বছর পর চট্টগ্রাম শহরে এটাই তার প্রথম জনসভা।
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে দেখতে ও তার বক্তৃতা শুনতে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে কয়েক লাখ মানুষ বন্দর নগরীর সমাবেশস্থলে এসেছেন।
রেলওয়ে পলো গ্রাউন্ডে বিশাল গণসমাবেশের আয়োজন করে চট্টগ্রাম মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ।
কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাবের পর ২৭ মাসেরও বেশি সময় পর ২৪ নভেম্বর যশোরে জনসভার পর এটি ঢাকার বাইরে জনসমাবেশে শেখ হাসিনার দ্বিতীয় উপস্থিতি।
শেখ হাসিনার আগমন শুধু চট্টগ্রাম নয়, সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলে আ.লীগের নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করেছে।
চট্টগ্রামের জনসভার মাঠে সকাল থেকেই কয়েক লাখ মানুষের সমাগম ঘটে এবং কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সমাবেশস্থল কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়।
এরপর জনতা আশপাশের এলাকা, রাস্তাঘাট ও ফাঁকা জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে- বিকেল ৩টা ৫ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নৌকা আকৃতির মঞ্চে আগমনের আগেই মানবসমুদ্রে পরিণত হয়।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে আ.লীগের জনসভা: বাহারি রঙের পোশাকে পলোগ্রাউন্ডে নেতাকর্মীদের ভিড়
চট্টগ্রামে প্রধানমন্ত্রীর সমাবেশে আওয়ামী লীগ কর্মীর মৃত্যু
চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ড মাঠে প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় অজ্ঞান হয়ে এক আওয়ামী লীগ কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। রবিবার দুপুর ১২টার দিকে নগরীর রেলওয়ে পলোগ্রাউন্ড মাঠে এ আওয়ামী লীগের জনসভাস্থলে এ ঘটনা ঘটে।
মৃত জহিরুল ইসলাম বাচা (৪৭) জেলার চন্দনাইশ উপজেলার ছৈয়দাবাদ গ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা।
আরও পড়ুন: ইবিতে পিলারের আঘাতে নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু!
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) নূরুল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, বেলা সাড়ে ১২টার দিকে পলোগ্রাউন্ডের সভা থেকে জহিরুল ইসলাম নামে একজনকে অজ্ঞান অবস্থায় হাসপাতালে আনার পর চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
চিকিৎসকরা জানান, হার্ট অ্যাটাকে তার মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে সমাবেশস্থলে থাকা সংবাদকর্মীরা জানান, দুপুরে সমাবেশ স্থলে শ্লোগান দিতে দিতে অজ্ঞান হয়ে মাঠে পড়ে যান জহিরুল। পরে নেতাকর্মীরা তাকে দ্রুত চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে তার মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুন: মৌলভীবাজারে মিনিবাসচাপায় মায়ের মৃত্যু, মেয়ে গুরুতর আহত
ঢাবি এলাকায় ধাক্কা দিয়ে প্রাইভেটকার টেনে নিয়ে গেল নীলক্ষেতে, হাসপাতালে নারীর মৃত্যু
ঐতিহাসিক শান্তি চুক্তির ২৫ বছর পূর্তি: বিশিষ্ট নাগরিকরা বলছেন প্রত্যাশা অপূর্ণ রয়ে গেছে
প্রত্যাশা এখনও অপূর্ণ রয়ে গেছে উল্লেখ করে দেশের বিশিষ্ট নাগরিকেরা সকল প্রতিবন্ধকতা দূর করে পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ সকল প্রতিশ্রুতি পূর্ণ বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছেন।
১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সঙ্গে ঐতিহাসিক পার্বত্য চুক্তির মাধ্যমে দীর্ঘ দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে বিরাজমান রক্তক্ষয়ী সংঘাতের অবসান ঘটাতে সক্ষম হয়।
সরকারের পক্ষে জাতীয় সংসদের তৎকালীন চীফ হুইপ আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ ও উপজাতীয়দের পক্ষে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় ওরফে সন্তু লারমা এ চুক্তিতে সই করেন। এরপর কেটে গেছে ২৫টি বছর। কিন্তু এখনও এই চুক্তি পুরোপুরি বাস্তবায়ন নিয়ে বিতর্কের শেষ হয়নি। এখনও মধ্যে অশান্ত পার্বত্য অঞ্চল। প্রতিনিয়ত ঘটছে ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত ও গুম, অপহরণ, চাঁদাবাজি।
চুক্তি সইয়ের ২৫ বছর পেরিয়ে গেলেও পাহাড়িদের মধ্যে চুক্তি বাস্তবায়ন নিয়ে রয়েছে নানান অভিযোগ।
তাদের অভিযোগ, চুক্তির মূল ধারাগুলো আজও বাস্তবায়ন হয়নি। হয়নি ভূমি সমস্যার সমাধান। পাহাড়ে বসবাসরত সাধারণ মানুষের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন ঘটেনি। রয়েছে নানা হতাশা ও বঞ্চনা।
আর পার্বত্য শান্তি চুক্তির ২৫তম বর্ষপূর্তিতে পাহাড়ের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন সংগঠন নানা কর্মসূচির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তৎকালীন শান্তি বাহিনীর আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) এর পক্ষে রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে পৃথক পৃথক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: পার্বত্য শান্তিচুক্তির ২৪তম বর্ষপূর্তি আজ
রাঙামাটি সংসদ সদস্য ও খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি দীপংকর তালুকদার বলেন, পাহাড়ে শান্তিচুক্তির পক্ষের নিরীহ মানুষদের খুন, অপহরণ করে যে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছে, তাতে শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
তিনি বলেন, শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নে প্রয়োজন পার্বত্য চট্টগ্রামে একটা অনূকুল পরিবেশ এবং এখানকার মানুষের ভিতরে একটা সমঝোতার আত্মবিশ্বাস তৈরি করা।
দীপংকর তালুকদার বলেন, শান্তিচুক্তির স্বপক্ষের সকল শক্তি সম্মেলিতভাবে কাজ করার একটা পরিবেশ তৈরি করা হলো প্রধান শর্ত। কিন্তু আমরা কি দেখছি, শান্তিচুক্তির একটা পক্ষ আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য তিন পার্বত্য জেলায় উঠে পড়ে লেগেছে। আজ পর্যন্ত এই শান্তিচুক্তির ২৫ বছরে অবৈধ অস্ত্রধারীদের হাতে যারা শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নের কথা বলে আসছে, তাদের হাতে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কর্মী ছাড়া অন্যকোন রাজনৈতিক দলের কোন কর্মী নিহত হয়েছে বলে আমাদের জানা নেই। তাহলে আওয়ামী লীগকে যদি নিশ্চিহ্ন করতে চায়, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের যদি হত্যা করে শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন করতে চায়, তাহলে এটা তো আমরা মনে করছি বোকার সঙ্গে বসবাস।
তিনি বলেন, শান্তিচুক্তি সই করে দুই পক্ষের ভেতরে যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে, সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছে; এটা শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নে পক্ষে বড় অন্তরায়। আমরা হতাশ না হয়ে আবার পূর্বের অবস্থায় ফিরে যাবো, অস্ত্র হাতে নিবো এই ধরনের স্লোগান না দিয়ে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ ভাবে শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন করা সম্ভব। আমরা চাই যে সমস্ত অবাস্তবায়িত শর্ত ও ধারাগুলো আছে এগুলো যেন দ্রুত বাস্তবায়িত হয়।
তিনি আরও বলেন, এখনো দেখছি তাদের নৈরাজ্যমূলক আচরণ, অস্ত্রের ভাষায় কথা বলা, শান্তিচুক্তির পক্ষের শক্তিকে দুর্বল করা, গুলি করে মানুষ হত্যা করা; এইভাবে শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন কখনো সম্ভব নয়। শান্তিচুক্তি যারা সই করেছে, শান্তিচুক্তি যারা মানে; তাদের পক্ষে শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন করা সম্ভব। যারা শান্তিচুক্তি মানে না, শান্তিচুক্তি বিরোধিতা করে, তাদের পক্ষে শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। তাই আস্থা ও বিশ্বাস রেখে শান্তিচুক্তি পূর্ণবাস্তবায়নে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি সহ সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য ঊষাতন তালুকদার বলেন, পার্বত্য শান্তিচুক্তি পুর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন না হলে পাহাড়ের সমস্যা কোনও দিনও সমাধান হবেনা।
আরও পড়ুন: পার্বত্য চট্টগ্রামবাসীর প্রতি প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত আন্তরিক: উশৈ সিং
তিনি বলেন, পার্বত্য শান্তিচুক্তি পূর্ণবাস্তবায়ন উল্লেখযোগ্য সমস্যা, কিন্তু প্রধান অন্তরায় নয়। প্রধান অন্তরায় হলো আমাদের মধ্যে আর সরকারের মধ্যে একটা বুঝাবুঝির অভাব। তাই এটার কারণে শান্তিচুক্তি পূর্ণবাস্তবায়ন হচ্ছে না। সরকারের কি ভাবনা সেটা পরিস্কার হওয়া দরকার। সরকার যে ভাবে যাচ্ছেন সেভাবে যাবেন, নাকি যথাযথ রাস্তায় আসবেন। ঠিক ট্র্যাকে আসবেন, না ভুল ট্র্যাকে যাবেন। ভুল ট্র্যাকে গেলে তো সমাধান হবে না।
তিনি বলেন, সরকার যত সময়ক্ষেপণ করবে, ততই দলবাজি হবে, নানা অস্ত্রবাজি হবে, নানান চাঁদাবাজি হবে, আরও দল গজিয়ে উঠবে। তখন শান্তিচুক্তি পূর্ণবাস্তবায়ন আরও জটিল আকার ধারণ করবে। তাই আমরা চাই সরকার শান্তি চুক্তি যেসব ধারা অবাস্তবায়িত হয়ে আছে তা দ্রুত বাস্তবায়ন করে পাহাড়ে শান্তির সুবাতাস বয়ে আনুক।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক সদস্য মিজ নিরূপা দেওয়ান পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির ২৫ বছর পূর্তিতে তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, আমরা তো প্রত্যেক বছরই বলছি। কিন্তু আমাদের প্রাপ্তির প্রত্যাশা যতটুকু ছিল, সেটা প্রায়ই পূরণ হয়নি। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির মূল লক্ষ্যই প্রতিষ্ঠিত হয়নি।
তিনি বলেন, যে কোন দেশের সংবিধানে মানুষের রাজনৈতিক অধিকার, অর্থনৈতিক অধিকার, স্বাধীনভাবে চলাফেরার অধিকার ও মত প্রকাশের অধিকার থাকে। কিন্তু আমাদের পার্বত্য এলাকার মানুষেরা এখানে তা পুরোপুরি উপভোগ করতে পারছে না।
এদিকে, পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির চেয়ারম্যান কাজি মজিবুব রহমান বলেন, পার্বত্য চুক্তির ২৫ বছরে এসেও পাহাড়ে জেএসএস (সন্তু), জেএসএস (এমএন লারমা), ইউপিডিএফ (প্রসীত), ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক), মগ লিবারেশন পার্টি (এমএলপি) ও কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টসহ (কেএনএফ) একাধিক সশস্ত্র গ্রুপের জন্ম হয়েছে। চলছে অস্ত্রের মহড়া, মহোৎসবে চলছে চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, গুম, খুন ও অপহরণ। তাদের হাতে পাহাড়ি-বাঙালি সকলে জিম্মি।
তিনি আরও বলেন, পার্বত্য চুক্তির শর্তানুযায়ী পাহাড় থেকে একটি ব্রিগেডসহ ২৩৮টি নিরাপত্তা বাহিনীর ক্যাম্প প্রত্যাহার করা হয়েছে। খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদে ৩০টি বিভাগ, রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদে ৩০টি বিভাগ ও বান্দরবান জেলা পরিষদে ২৮টি বিভাগ হস্তান্তর করা হয়েছে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, পার্বত্য চুক্তি করার সময় বাঙালি জনগোষ্ঠীর জাতিসত্তাকে অস্বীকার করে তাদের অ-উপজাতি আখ্যা দিয়ে দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকে পরিণত করা হয়েছে। শিক্ষা, কর্মসংস্থান, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন সুবিধায় উপজাতীয়দের নানা অগ্রাধিকার শর্তযুক্ত করে বাঙালিদের প্রতি বৈষম্য করা হয়েছে।
এছাড়াও রাষ্ট্রীয় নানা সুবিধা নিয়ে আঞ্চলিক সংগঠনগুলো বাংলাদেশের চেতনা, সার্বভৌমত্ব, অখণ্ডতা ও উন্নয়ন বিরোধী কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। তারা দেশি-বিদেশি ইন্ধনে পার্বত্য চট্টগ্রামকে বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করার ষড়যন্ত্র করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
এদিকে বিশিষ্টজনেরা মনে করেন, শান্তি চুক্তির মাধ্যমে পাহাড়ের সাধারণ মানুষ যে শান্তির আশা করেছিল, মানুষের সে আশা পুরোপুরি পূরণ হয়নি। পার্বত্য চুক্তি পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন করতে হলে চুক্তি সইকারী দু’পক্ষকেই এগিয়ে আসতে হবে।
পাহাড়ের বিরাজমান সংঘাত বন্ধ করে পার্বত্য শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নে সরকার ও জনসংহতি সমিতি দু’পক্ষই আলোচনার মাধ্যমে সংকট নিরসনে কার্যকর পদক্ষেপ নেবে এমন প্রত্যাশা পাহাড়ের শান্তিপ্রিয় মানুষের।
এদিকে, শান্তিচুক্তি ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে রাঙামাটিতে জেলা পরিষদের উদ্যোগে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।
এছাড়া শান্তি চুক্তি সইকারী অন্যতম সংগঠন জনসংহতি সমিতিসহ অন্যান্য সংগঠনসমূহ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
আরও পড়ুন: পার্বত্য চট্টগ্রামের শান্তি রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
১০ ডিসেম্বরের সমাবেশ নিয়ে আ.লীগের ফাঁদে পা দিবে না বিএনপি: গয়েশ্বর
বিএনপির সিনিয়র নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, তাদের দল রাজধানীর ১০ ডিসেম্বরের জনসভাকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের সহিংসতা উসকে দেয়ার ফাঁদ এড়িয়ে চলবে।
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ আমাদের সাতটি সমাবেশে সর্বত্র সংঘর্ষের উসকানি দেয়ার চেষ্টা করেছিল। আমি মনে করি এটি অস্বাভাবিক নয় যে তারা ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় একই চেষ্টা করবে... তবে আমি স্পষ্টভাবে বলতে চাই যে আমরা (বিএনপি) সরকারের ফাঁদে পা দেব না। আমরা সংঘর্ষ এড়িয়ে সমাবেশ করব।’
বৃহস্পতিবার বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণের পর দলের ঢাকা জেলা শাখার নবগঠিত কমিটির নেতাদের সঙ্গে আলাপকালে গয়েশ্বর চন্দ্র এসব কথা বলেন।
তিনি অভিযোগ করেন যে সরকার প্রশাসনকে ব্যবহার করে এবং দলের আগের সমাবেশে বাস চলাচল বন্ধ করে সহিংসতা সৃষ্টির জন্য বিরোধী কর্মীদের উসকানি দেয়ার জন্য বিভিন্ন প্রচেষ্টা চালিয়েছিল।
আরও পড়ুন: বিচারপতিরা চাকরির ভয়ে বিচারকাজ করতে পারছেন না: গয়েশ্বর
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর বলেন, ১০ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে ঢাকা সমাবেশ করার জন্য তাদের দল ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অনুমতি চেয়েছে।
‘তারা (সরকার) অনুমতি দিতে না পারলেও আমরা সেখানে সমাবেশ করব। আমরা বলেছি ১০ ডিসেম্বর সমাবেশ হবে। আমরা অনুমতির জন্য অপেক্ষা করব না, কারণ আমাদের অনুমতি দেয়া হোক বা না হোক আমরা সমাবেশের ব্যবস্থা করব,’ বলেন তিনি।
চলমান আন্দোলনের গতি অব্যাহত রাখার পদক্ষেপের অংশ হিসেবে গত ২৭ সেপ্টেম্বর ১০টি বিভাগীয় শহরে ধারাবাহিক জনসভার ঘোষণা দেয় বিএনপি।
দলটি ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, খুলনা, রংপুর, বরিশাল ও ফরিদপুর এবং সিলেটে সাতটি সমাবেশ করেছে, অষ্টমটি ২৬ নভেম্বর কুমিল্লায় এবং ২৩ ডিসেম্বর রাজশাহীতে একটি। ১০ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগরীতে গণসমাবেশ।
আয়োজকরা জানান, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির নিন্দা, ভোলা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ ও যশোরে পুলিশের অভিযানে পাঁচ দলের নেতাকর্মীর মৃত্যু এবং বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার মুক্তি নিশ্চিত করতেই এই সমাবেশ।
আরও পড়ুন: গণজাগরণের জন্য সঠিক সময়ের অপেক্ষায় বিএনপি: গয়েশ্বর
প্রধানমন্ত্রীর জনসভার জন্য প্রস্তুত যশোর
যশোরে প্রধানমন্ত্রীকে প্রধান অতিথি রেখে বৃহস্পতিবারের জনসভার প্রস্তুতি নিচ্ছে আওয়ামী লীগ। আশা করা হচ্ছে, আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা জনসভায় যোগ দিবেন।
যশোর স্টেডিয়ামে সমাবেশস্থলে ইতোমধ্যে নৌকা আকৃতির মঞ্চ প্রস্তুত করা হয়েছে।
মঙ্গলবার থেকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জেলা প্রশাসন সতর্কতার সঙ্গে কাজ করছে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) ডগ স্কোয়াড মোতায়েন করা হয়েছে। কারণ প্রায় ‘দশ লাখ’ লোক সমাবেশে যোগ দেবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এখন মেগাপ্রজেক্ট নয় জনকল্যাণমুখী প্রকল্প নিয়ে আসুন: প্রধানমন্ত্রী
যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও মঞ্চ সজ্জা উপ-কমিটির আহ্বায়ক আব্দুল মজিদ জানান, সমাবেশ সফল করতে তারা প্রস্তুত রয়েছে।
যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য শোনার জন্য জেলা ও দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।
আগামীকাল যশোর স্টেডিয়াম জনসমুদ্রে পরিণত হবে বলে আশা প্রকাশ করে মিলন বলেন, সুশৃঙ্খল ও উৎসবমুখর পরিবেশে সমাবেশ করতে বাড়তি প্রস্তুতিও নেয়া হয়েছে।
আ.লীগের এই নেতা বলেন, ‘যশোরে প্রধানমন্ত্রীর জনসভা প্রমাণ করবে আওয়ামী লীগ নৈরাজ্য ও বিশৃঙ্খলার বিরুদ্ধে। আর দল মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গে তাল মিলিয়ে দেশকে এগিয়ে নিতে বদ্ধপরিকর।’
আরও পড়ুন: বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে উদার ও স্বচ্ছ সম্পর্ক চায় বাংলাদেশ: প্রধানমন্ত্রী
সমাবেশ সফল করতে ৪০০ স্বেচ্ছাসেবকের একটি দল গঠন করা হয়েছে। এই কমিটির সদস্যরা সমাবেশে আগতদের সহযোগিতা করবেন বলে জানিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক এবং শৃঙ্খলা ও স্বেচ্ছাসেবক উপ-পরিষদের আহ্বায়ক সুখেন মজুমদার।
যশোর স্টেডিয়ামে সমাবেশস্থলের সংযোগস্থলে আবদুর রাজ্জাক কলেজের মাঠে খাবার পানি ও স্যানিটেশনের প্রস্তুতিও যথাযথভাবে সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী জাহিদ পারভেজ।
যশোর বিমানবন্দর থেকে স্টেডিয়াম পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের দেয়াল প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য ও দলের বিভিন্ন স্লোগান ও রঙে রাঙানো হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত সড়কের সংস্কার কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে।
যশোর সদরের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর শুভেন্দু কুমার মুন্সি জানান, অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছতে ১২টি নির্দিষ্ট রুট দেয়া হয়েছে। সমাবেশের দিন শহরে কোনও যানবাহন প্রবেশ করবে না।
তিনি আরও বলেন, জেলা আওয়ামী লীগের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী প্রায় ২০টি পার্কিং এলাকা নির্বাচন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ৫০ শিল্প ইউনিট ও অবকাঠামো উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
খেলা হবে ডিসেম্বরে, আওয়ামী লীগ প্রস্তুত: ওবায়দুল কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ডিসেম্বর আমাদের বিজয়ের মাস। এই মাসে খেলা হবে, বিএনপির দুঃশাসনের বিরুদ্ধে। ভোট চোরের বিরুদ্ধে খেলা হবে। আওয়ামী লীগ প্রস্তুত। টাঙ্গাইল তৈরি। খেলা হবে, আগুন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে।
তিনি বলেন, বিএনপি ১৩ বছরে ১৩ মিনিট আন্দোলন করতে পারে নাই। বেগম খালেদা জিয়ার জন্য বিএনপি নেতারা একটা মিছিল পর্যন্ত করতে পারে নাই। তারা এখন সরকার পতনের আন্দোলন করবে। খালেদা জিয়াকে নিয়ে ১০ ডিসেম্বর তারা নাকি বিজয় মিছিল করবে। তারা এখন ‘খোমেনি স্টাইলে’ ক্ষমতায় আসতে চায়। আমরা যদি ডাক দেই তাহলে বিএনপি পালানোর পথ খুঁজে পাবে না।
আরও পড়ুন: বিএনপিকে নিয়ে বিপদে আছে দেশের মানুষ: ওবায়দুল কাদের
গতকাল সোমবার বিকালে টাঙ্গাইল স্টেডিয়ামে জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। দীর্ঘ সাত বছর পর এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হল। সর্বশেষ বিগত ২০১৫ সালের ১৮ অক্টোবর জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর খুনীদের পুরষ্কৃত করেছিলেন, এই খুনীদের বিচারের পথ বন্ধ করতে আইন করেছিলেন। যারা বঙ্গবন্ধুর খুনীদের পুরষ্কৃত করেছিলেন, যারা এই খুনীদের বিচার বন্ধে আইন করেছিলেন তাদের বিরুদ্ধে খেলা হবে। যারা বঙ্গবন্ধুর খুনীদের ক্ষমা করেছিলেন বাংলাদেশের মাটিতে তাদের ক্ষমা নাই। এদের ক্ষমা করা যায় না।
সেতুমন্ত্রী বলেন, বরিশালে নাকি মানুষের ঢল নেমেছিল। দুবাইয়ের টাকা আকাশে উড়ে। বিএনপি সেই টাকা দিয়ে সাধারণ মানুষকে সরকারের বিরুদ্ধে উষ্কে দিচ্ছে। এই সরকার দেশের সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করছে। সাধারণ মানুষের প্রতি বিএনপির কোন দরদ নেই। এদের দরকার ক্ষমতার ময়ূর সিংহাসন। তাই জনগণকে সরকার পতনের আন্দোলনে উষ্কানি দিচ্ছে।
তিনি বলেন, শুনলাম বিএনপি তাদের হারানো ক্ষমতা ফিরে পেতে আন্দোলন করছে। আসলে তারা তারেক রহমানের হারানো হাওয়া ভবন ফিরে পেতে আন্দোলন করতে চাইছে। এই তারেক রহমানের অপশক্তির বিরুদ্ধে খেলা হবে।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুলকে উদ্দেশ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির সময় আমরা ঘরে থাকতে পারি নাই। আমাদের নেতাকর্মীরা ঘরে থাকতে পারে নাই। আর আপনারা এখন এসিতে বসে থাকেন। অপেক্ষা করুন, আন্দোলন কাকে বলে, কত প্রকার ও কী কী তা দেশের জনগণ আপনাদের বুঝিয়ে দেবে। এরপর বাঁশের লাঠিতে পতাকা লাগিয়ে রাস্তায় নামলে খবর আছে।
নতুন কমিটি গঠন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগে কমিটি নিয়ে কোন বাণিজ্য হবে না। কোন পকেট কমিটি হবে না। কর্মীরা যাকে চায় তিনিই নেতা হবেন। দুঃসময়ে যাদের হাজার পাওয়ারের লাইট দিয়েও খুঁজে পাওয়া যাবে না তাকে নেতা বানানো হবে না।
সম্মেলন উদ্বোধন করেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য, কৃষিমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক। প্রধান বক্তা ছিলেন দলের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম। বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য, শাহজাহান খান এমপি, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, আব্দুর রহমান, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ ও ডা. দীপু মনি।
মির্জা আজম তার বক্তব্যে বলেন, শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসেছিল বলেই বাংলাদেশ আজ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। খালেদা জিয়া যখন ক্ষমতায় ছিলেন তখন এই বাংলাদেশের মানুষ না খেয়ে মারা যেত। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আছে বলেই দেশের মানুষ আজ সুখে আছে, শান্তিতে আছে। দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আবার শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় আনতে হবে।
মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, বিএনপি’র পলাতক নেতা তারেক রহমান ‘টেক ব্যাক বাংলাদেশ’ ডায়লগ দিয়ে বাংলাদেশকে পেছনের দিকে নিয়ে যেতে চায়। বাংলাদেশের মানুষ আর পেছনে ফিরে যেতে চায় না। তাই দেশের জনগণ বিএনপিকে প্রত্যাখ্যান করেছে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রসঙ্গে কামরুল ইসলাম বলেন, আমাদের পরিষ্কার কথা। তত্ত্বাবধায়ক সরকার এই বাংলাদেশের মাটিতে আর হবে না। বিজয়ের মাস আমাদের মাস। এই মাসে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সকল অপশক্তি মোকাবেলা করব।
সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমান খান ফারুক।
বিশেষ বক্তা ছিলেন প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ, শিক্ষা ও মানবসম্পদবিষয়ক সম্পাদক শামসুন নাহার চাঁপা, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম, মোহাম্মদ সাঈদ খোকন। এছাড়া দলের স্থানীয় নেতারা বক্তব্য দেন। সঞ্চালনায় ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট জোয়াহেরুল ইসলাম।
সম্মেলনের দ্বিতীয় পর্বে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক মঞ্চেই দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ইচ্ছার কথা উল্লেখ করে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে যথাক্রমে ফজলুর রহমান খান ফারুক ও অ্যাডভোকেট জোয়াহেরুল ইসলাম জোয়াহেরের নাম ঘোষণা করেন। উপস্থিত কাউন্সিলররা স্বতঃস্ফূর্তভাবে তা সমর্থন করেন। ফারুক ও জোয়াহের দুজনেই দ্বিতীয় মেয়াদে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হলেন।
আরও পড়ুন: বিএনপি নেতারা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যাচারে লিপ্ত: ওবায়দুল কাদের
দেশের নিরাপত্তা ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় বিএনপি বড় অন্তরায়: ওবায়দুল কাদের
চতুর্থ শিল্প বিপ্লব নিয়ে আ.লীগের দুই দিনব্যাপী কর্মসূচি
চতুর্থ শিল্প বিপ্লব (ফোরআইআর) নিয়ে দুই দিনব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। দলটির বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপকমিটির উদ্যোগে ৪ ও ৫ নভেম্বর এ কর্মসূচি পালিত হবে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লব নিয়ে উপমহাদেশে এটিই প্রথম কোনো রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি।
বুধবার (২ নভেম্বর) বেলা সোয়া ১১টায় রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মো. আবদুস সবুর।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, দুই দিনব্যাপী এই আন্তর্জাতিক কনফারেন্সটি ৪ ও ৫ নভেম্বর রাজধানীর রমনায় অবস্থিত ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি) অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে। কনফারেন্সের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে 'স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের পথে যাত্রা এবং ডেল্টা প্ল্যান বাস্তবায়ন'।
আবদুস সবুর বলেন, 'পরিবর্তনশীল বিশ্বে যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দল হিসেবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ প্রস্তুত রয়েছে। ইতোমধ্যে আমরা আমাদের প্রায় সব দলীয় কার্যক্রম ডিজিটাল মাধ্যমে পরিচালনা করছি। শুধু তা-ই নয়, তথ্যপ্রযুক্তিতে দক্ষতা তৈরির মাধ্যমে মেধাবী তরুণদের কর্মসংস্থান তৈরির সুযোগ করে দেয়া হচ্ছে। এক কথায় বলতে গেলে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য দেশ ভালোভাবে প্রস্তুত রয়েছে।'
আরও পড়ুন: চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় যুবকদের প্রযুক্তিগত জ্ঞান অর্জনের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
তিনি বলেন, 'কনফারেন্স থেকে যে সকল সুপারিশমালা আসবে সেগুলো দলের দপ্তরে এবং সরকাররের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কাছে জমা দেয়া হবে। যেন ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ বির্নিমাণে কার্যকর পদক্ষেপ রাখতে পারে।'
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে দলটির বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপকমিটির চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য প্রফেসর ড. হোসেন মনসুর, উপকমিটির সদস্য ও আন্তর্জাতিক কনফারেন্স উপলক্ষে গঠিত ১১টি উপকমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ছাড়াও দুই দিনব্যাপী এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনে দেশি-বিদেশি ৬৬২ টি গবেষণাপত্র থেকে বাছাইকৃত প্রায় ২৫০টি গবেষণাপত্র উপস্থাপন করা হবে।
তিনি আরও বলেন, ফোরআইআরকে সফলভাবে কাজে লাগিয়ে দ্রুত অগ্রসরমান বাংলাদেশ ডিজিটালাইজেশনের মধ্য দিয়ে টেকসই অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের ক্ষেত্রে রোল মডেল হয়ে থাকবে। এই সম্মেলনে ফোরআইআর প্রযুক্তি ব্যবহারে সরকারের উদ্ভাবনী কর্মসূচি বাস্তবায়নে ও সম্ভাবনাময় প্রযুক্তি উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে পেশাদার বিজ্ঞানী, প্রকৌশলী, শিক্ষাবিদ,গবেষক ও শিক্ষার্থীরা তাদের মতামত এবং চিন্তাভাবনা বিনিময় করতে পারবেন। যা ২০৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশ ও শতবর্ষী ডেল্টা প্লান বাস্তবায়নের ক্ষেত্রেও পথ দেখাবে। এছাড়াও বর্তমান অবস্থান থেকে ভবিষ্যৎ স্বপ্নপূরণের পথ অনুসন্ধানে দেশি-বিদেশি প্রতিভাবানদের দলগত ব্রেইন-স্টর্মিং সেশনে অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেবে।
আরও পড়ুন: চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে নেতৃত্ব প্রদানের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি: জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী
সবুর বলেন, দ্বিতীয়, তৃতীয় শিল্প বিপ্লব আমরা ধরতে পারিনি। কিন্তু আমরা চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের এই সময়ে বিশ্বকে নেতৃত্ব দিতে পারি সে লক্ষ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি উপদেষ্টা জনাব সজিব ওয়াজেদ জয়ের সঠিক দিক নির্দেশনায় এগিয়ে যাচ্ছি।
চতুর্থ শিল্প বিপ্লবকে সামনে রেখে দেশে বিভিন্ন স্থানে হাউটেক পার্ক স্থাপন করছে সরকার। উদ্যোক্তাদের সহায়তায় দেশে অনেকগুলো এক্সেলারেটর ও ইনকিউবেটর প্রতিষ্ঠা করেছে। এডভান্সড টেকনোলজিতে দেশের মেধাবী তরুনদের দক্ষ করে গড়ে তুলতে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে গবেষকদের উৎসাহ ও প্রণোদনা দেয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে বুয়েট পোস্ট গ্রাজুয়েশন রিসার্চের জন্য বৃত্তি চালু করেছে। পিএইচডি প্রোগ্রামের গবেষকদের প্রতিমাসে ৪৫ হাজার টাকা করে,মাস্টার্স প্রোগ্রামে ৩০ হাজার টাকা করে বৃত্তি দিচ্ছে বুয়েট।
এছাড়াও টিচিং এসিস্ট্যান্ট ও রিসার্চ এসিস্ট্যান্ট হিসেবে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রজেক্টে গবেষণার সুযোগ করে দিচ্ছে। পর্যায়ক্রমে দেশের সব কারিগরি বিশ্ববিদ্যালয়ে এই গবেষণা সহায়তা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও প্রযুক্তি খাতে সমন্বিতভাবে কাজ করলে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে নেতৃত্ব দেয়া সম্ভব
দুই দিনব্যাপী আয়োজনে যা থাকছে:
৪ নভেম্বর সকাল ১০ টায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এই আন্তর্জাতিক কনফারেন্সটির শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করবেন।
প্রথমদিন বেলা সোয়া ১১ টায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি) অডিটরিয়ামে কনফারেন্সের প্রথম মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, বেলা ১২ টায় দ্বিতীয় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন থাইল্যান্ডের এআইটি'র বঙ্গবন্ধু চেয়ার প্রফেসর ড. জয়শ্রী রায়।
দুপুর আড়াইটায় থেকে বিকাল ৫টায় পর্যন্ত আইইবিতে মোট ৯টি ভেন্যুতে আলাদা আলাদা টেকনিক্যাল সেশন অনুষ্ঠিত হবে।
দ্বিতীয় দিন আইইবি'র কাউন্সিল রুমে সকাল ১০টায় তৃতীয় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) উপাচার্য অধ্যাপক ড. সত্য প্রসাদ মজুমদার।
সকাল ১১ টা ২০ মিনিট থেকে এক ঘণ্টা আইইবিতে মোট ৯টি ভেন্যুতে আলাদা আলাদা টেকনিক্যাল সেশন অনুষ্ঠিত হবে। দুপুর ২ টা ২০ মিনিটে চতুর্থ এবং শেষ মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন আইইইই'র ইতিহাসের প্রথম বাঙালি প্রেসিডেন্ট ড. সাইফুর রহমান।
বিকাল ৩ টা থেকে দুই ঘণ্টাব্যাপী মোট ৯টি ভেন্যুতে আলাদা আলাদা টেকনিক্যাল সেশন অনুষ্ঠিত হবে। প্রত্যেকটি অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জাতীয় নেতৃবৃন্দ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।
আন্তর্জাতিক কনফারেন্সটির সমাপনী অনুষ্ঠান ৫ নভেম্বর সন্ধ্যা ৭টায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি) অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে। সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের মাননীয় মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
আরও পড়ুন: চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের বড় চ্যালেঞ্জ দুর্নীতি: পরিকল্পনামন্ত্রী
বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ঢাকা জেলা আ. লীগের নবগঠিত কমিটির শ্রদ্ধা নিবেদন
ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের নবগঠিত কমিটির সভাপতি বেনজীর আহমদ ও সাধারণ সম্পাদক পনিরুজ্জামান তরুন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন। মঙ্গলবার বিকাল ৩টায় ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে তারা শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এ সময় জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক কমিটি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সব নেতা, ভ্রাতৃপ্রতিম ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: সাংবাদিক তোয়াব খানকে শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন
শনিবার (২৯ অক্টোবর) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের পুরাতন বাণিজ্য মেলার মাঠে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের নতুন কমিটির সভাপতি পদে বেনজীর আহমদ ও সাধারণ সম্পাদক পদে পনিরুজ্জামান তরুনের নাম ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
নতুন কমিটির সভাপতি বেনজীর আহমদ আগের কমিটিতেও সভাপতি ছিলেন। ২০০৪ সালে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হয়ে দ্বিতীয় মেয়াদে এ দায়িত্বে রয়েছেন তিনি। তিনি ঢাকা-২০ (ধামরাই) আসনের সংসদ সদস্য।
পনিরুজ্জামান তরুন এর আগে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। এ ছাড়া তিনি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন এবং ঢাকা জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি পদে ছিলেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় কমিটির সদস্য আব্দুল বাতেন ভুইয়া, ঢাকা জেলার সাবেক সহসভাপতি সওকত শাহীন, সাবেক মহিলা সম্পাদক হালিমা আক্তার লাবন্য, ধামরাই এর মেয়র গোলাম কবীর, সাভারের মেয়র আব্দুল গনি, সাবেক সদস্য সিরাজুল ইসলাম, নবাবগন্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরিফ সিকদার।
আরও পড়ুন: টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর প্রতি রাষ্ট্রপতির শ্রদ্ধা নিবেদন
টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন প্রধানমন্ত্রী ও তার পরিবারের সদস্যদের
বিএনপিকে নিয়ে বিপদে আছে দেশের মানুষ: ওবায়দুল কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দেশের মানুষ কোন বিপদে নেই, প্রকৃতপক্ষে বিএনপিকে নিয়েই দেশের মানুষ বিপদে আছে।
মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বিভ্রান্তিকর বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি একথা বলেন।
আরও পড়ুন: বিএনপি সাম্প্রদায়িক দল এবং পাকিস্তানকে ভালোবাসে: ওবায়দুল কাদের
কাদের বলেন, জনগণ মনে করে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের জন্য বড় হুমকি হচ্ছে বিএনপি। মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ ও গণতন্ত্র বিএনপির হাতে নিরাপদ নয়। বিএনপি তাদের রাজনৈতিক দেউলিয়াত্ব ঘোচানোর জন্য কখন কী ঘটিয়ে বসে তা নিয়ে জনগণ দুশ্চিন্তায় আছে।
তিনি বলেন, দেশ নাকি গভীর সংকটে আছে, বিএনপি মহাসচিবের এমন বক্তব্যের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন সংকটে দেশ নয়,গভীর সংকটে আছে বিএনপি, সংকটে তাদের পরাশ্রয়ী রাজনীতি।
বিএনপি প্রতিদিন আন্দোলনের হুমকি দেয় কিন্তু তাদের আন্দোলনের নেতা কে সেটাই তারা জানে না-এমন মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির চেয়ারপারসন ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দুজনেই দণ্ডপ্রাপ্ত। একজন ইয়াতিমের টাকা আত্মসাৎ করায় দণ্ডপ্রাপ্ত।
কাদের বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার মহানুভবতায় ঘরে বসে চিকিৎসা গ্রহণের সুযোগ পেয়েছেন তিনি।
বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, আর একজন রাজনীতি করবে না বলে মুচলেকা দিয়ে কাপুরুষের মত বিদেশে পালিয়েছে এবং ১০ ট্রাক অস্ত্র ও ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি।
আরও পড়ুন: বিএনপি নেতারা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যাচারে লিপ্ত: ওবায়দুল কাদের
ওবায়দুল কাদের বলেন, নিরাপদ দূরত্বে থেকে নিজে বিলাসী জীবন-যাপন করছেন, আর নেতাকর্মীদের চাঙা করতে দূর থেকে শব্দ বোমা ছুঁড়ছে আর স্বপ্ন দেখছে ক্ষমতার ময়ূর সিংহাসনের।
দেশের জনগণ আর পিছনে ফিরে যেতে চায় না, বিএনপি তাদের দুর্নীতির বরপুত্র,হাওয়া ভবনের স্রস্টা, দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি তারেক রহমানকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না বলে মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
বিবৃতিতে কাদের আরও বলেন, দেশে বর্তমানে গণতন্ত্রের কোনও সংকট নেই, সংকট বিএনপির মনস্তত্ত্বে।
বিএনপি সবসময় তাদের বক্তব্যে কৃত্রিম সংকটের গন্ধ পায়। তারা স্বাধীনতা গেল বলে হা-হুতাশের রাজনীতি করে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন বিএনপিকে এই সংকট থেকে উত্তরণে অপরাজনীতির কৌশল পরিহার করতে হবে।
বিবৃতিতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশা প্রকাশ করে বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে ধারণ করে বিএনপি সঠিক পথে ফিরে আসলেই তা হবে দেশের রাজনীতির জন্য সহায়ক।
আরও পড়ুন: দেশের নিরাপত্তা ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় বিএনপি বড় অন্তরায়: ওবায়দুল কাদের