হত্যা
টাকা ও স্বর্ণ লুট করতেই মা-মেয়েকে হত্যা করেন জোবায়ের: পুলিশ
নারায়ণগঞ্জের নিতাইগঞ্জে বাড়ি থেকে টাকা ও স্বর্ণ লুট করতেই মা ও অন্তঃসত্ত্বা মেয়েকে হত্যা করেছেন অভিযুক্ত যুবক আল জোবায়ের (২৬)। তার বরাত দিয়েই নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আমির খসরু এ তথ্য জানিয়েছেন। গ্রেপ্তারের পর মঙ্গলবার রাতে গোয়েন্দা পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে জোবায়ের পুলিশের কাছে এই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
এদিকে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জোবায়েরের তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। বুধবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের বিচারিক হাকিম নূর মহসিনের আদালতে অভিযুক্ত জোবায়েরকে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়। আদালত শুনানি শেষে তার তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে অভিযুক্ত জোবায়েরকে আসামি করে সদর মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন নিহত রুমা চক্রবর্তীর স্বামী রামপ্রসাদ চক্রবর্তী।
গ্রেপ্তার জোবায়ের শহরের পাইকপাড়ার আলাউদ্দিন মিয়ার ছেলে।
নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান এ খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মামলার মূল রহস্য উদ্ঘাটন, এই ঘটনার সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছে কিনা জানতে জোবায়েরকে রিমান্ডে নেয়ার আবেদন করা হয়। আদালত তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
আরও পড়ুন: মসজিদে নামাজরত মুসল্লিকে হামলা: আসামি বিমানবন্দরে গ্রেপ্তার
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আমির খসরু বলেন, ‘জোবায়েরকে আমরা ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি বলেছেন, তার নিজের চলার জন্য টাকা দরকার। এ কারণে নিতাইগঞ্জের সবচেয়ে বড় বাড়িটি তিনি টার্গেট করেন। ছয়তলা ভবনের একটি ফ্ল্যাটে কলিংবেল বাজিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ওই ফ্ল্যাটের কেউ দরজা খোলেননি। তখন পাশের রামপ্রসাদ চক্রবর্তীর ফ্ল্যাটে কলিংবেল চাপেন তিনি। ওই ফ্ল্যাটের দরজা খুললে ভেতরে ঢুকে রুমা চক্রবর্তীর গলা চেপে ধরেন জোবায়ের। এ সময় রুমার গলার মালা ছিনিয়ে নেন। এরপর ছুরি মেরে রুমাকে হত্যা করেন। রুমার মেয়ে অন্তঃসত্ত্বা ঋতু চক্রবর্তী এগিয়ে এলে তাকেও ছুরি মেরে হত্যা করেন জোবায়ের।’
এই পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘জোবায়ের বলেছেন যে পাশের রুমে রামপ্রসাদ চক্রবর্তীর ছেলের বউ শীলাকে বঁটি দিয়ে কোপাতে গেলে তিনি ধাক্কা দেন। এতে জোবায়ের ঘরের মেঝেতে থাকা রক্তে পা পিছলে পড়ে যান। তখন শীলা দৌড়ে বঁটি নিয়ে সিঁড়ি দিয়ে নিচে নেমে আসেন। জোবায়েরও নিচে নেমে আসেন। শীলার হাতে বঁটি ও নিচে অনেক লোক দেখে জোবায়ের আবার ওই ফ্ল্যাটের ভেতরে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেন। পরে পুলিশ তাকে আটক করে। ’
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরও বলেন,এ ঘটনায় অভিযুক্ত জোবায়েরকে আসামি করে হত্যা মামলা করা হয়েছে।
উল্লেখ্য,গত মঙ্গলবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের নিতাইগঞ্জের একটি বহুতল ভবনের ছয়তলার ফ্ল্যাটে ঢুকে মা ও সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা মেয়েকে হত্যার ঘটনা ঘটে। এসময় অভিযুক্ত জোবায়েরের ব্যাগ থেকে দুটি সোনার মালা ও কানের দুল উদ্ধার করা হয়। জোবায়ের ২০১৩ সালে এইচএসসি পাস করে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ভর্তি হন। পরে আর্থিক সমস্যার কারণে পড়াশোনা শেষ করতে পারেননি বলে পুলিশের কাছে দাবি করেছেন তিনি।
আরও পড়ুন: ৬ ভাই নিহতের মামলায় পিকআপ মালিক গ্রেপ্তার
প্রধানমন্ত্রীর ছবি বিকৃত করে ফেসবুকে পোস্ট করায় গ্রেপ্তার ১
ফতুল্লায় অন্তঃসত্ত্বা নারীকে গলা কেটে ‘হত্যা’
নারায়ণগঞ্জে চার সন্তানের জননী ও সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা নারীকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুর ১টায় ফতুল্লার শান্তিনগর এলাকায় এ ঘটনায় নিহতের স্বামীকে আটক করেছে পুলিশ।
নিহত রাবেয়া বেগম (৩৫) ভোলা জেলার দক্ষিণ আইচা থানার তাল্লুক কান্দা গ্রামের তোফাজ্জল সিকদারের মেয়ে ও একই এলাকার বাসিন্দা।
আটক স্বামী সোহেল আহমেদ অপু বরিশাল জেলার কোতোয়ালি থানার চর নিহালগঞ্জ গ্রামের মোস্তফা হাওলাদারের ছেলে।
আরও পড়ুন: নাটোরে আইন কলেজের শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
অপু জানান, তার স্ত্রী রাবেয়া বেগম সুদে টাকা দিতেন লোকজনকে এবং বিভিন্নজনের সঙ্গে ফোনে কথা বলতেন। এ নিয়ে দেড় মাস আগে স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া করে চার পুত্র সন্তানকে বাসায় রেখে বাসা থেকে বের হয়ে যান এবং গার্মেন্টসে কাজ শুরু করেন।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় ভুট্টা খেত থেকে যুবকের লাশ উদ্ধার
তবে স্থানীয়রা জানায়, সোমবার রাতে অপুকে বাসায় আসতে দেখেছে তারা। মঙ্গলবার সকালে তার স্ত্রীর গলা কাটা লাশ ঘরের ভেতর পাওয়া যায়।
ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রকিবুজ্জামান জানান, বিষয়টির তদন্ত চলছে। বিস্তারিত পরে জানানো হবে।
ক্যালিফোর্নিয়ায় গির্জার মধ্যে ৩ সন্তানসহ ৪ জনকে হত্যার পর বাবার আত্মহত্যা
ক্যালিফোর্নিয়ার স্যাক্রামেন্টোর একটি গির্জায় তিন সন্তান ও আরও একজনকে গুলি করে হত্যার পর এক ব্যক্তি আত্মহত্যা করেছেন বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
সোমবার বিকেল ৫টার দিকে ডেপুটিরা এ সংঘর্ষের কথা জানিয়েছেন। স্যাক্রামেন্টো কাউন্টি শেরিফের কার্যালয়ের কর্মকর্তা রড গ্রাসম্যান জানিয়েছেন, পাশ্ববর্তী আর্ডেন-আর্কেড পাড়ার গির্জায় হত্যাকারীসহ পাঁচজনকে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে।
আরও পড়ুন: ‘গুপ্তচরবৃত্তির’ অভিযোগে ১২ রুশ কূটনীতিককে বহিষ্কার করল যুক্তরাষ্ট্র
গ্রাসম্যান বলেন, নিহতদের মধ্যে তিন জনের বয়স ১৫ বছরের কম। তবে তারা ছেলে না মেয়ে তা জানেন না তিনি।
অপর নিহত ব্যক্তির পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
গ্রাসম্যান আরও বলেন, এই পরিবারের সদস্যরা গির্জার মধ্যে থাকতেন কিনা, তিনি এ বিষয়ে কিছু জানেন না। হত্যাকাণ্ডের সময় গির্জায় কতজন লোক ছিল তাও জানা যায়নি।
আরও পড়ুন: নিউইয়র্কে ব্লার্ড ফ্লু শনাক্ত
বাইডেন ‘নিশ্চিত’ পুতিন ইউক্রেনে হামলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন
গাজীপুরে যুবককে পিটিয়ে হত্যা
গাজীপুরের কালীগঞ্জে পরকীয়ার সন্দেহে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। শনিবার সকালে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
নিহত যুবকের নাম সোহেল ভূঁইয়া (৩৬)। তিনি উপজেলার বাহাদুরসাদী গ্রামের মৃত ছালাম ভূঁইয়ার ছেলে।
নিহতের ভাই সোহাগ মিয়া জানান, শুক্রবার রাত ৯টার দিকে কয়েকজন প্রতিবেশি সোহেলকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। পরে জেরিন নামে এক নারীর সঙ্গে পরকীয়ার অভিযোগ এনে সোহেলকে গাছের সঙ্গে বেঁধে, মুখে গামছা পেঁচিয়ে মারধর করে। এ সময় তারা সোহেলের দুই পায়ের রগ কেটে দিয়েছে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: যশোরে স্ত্রীকে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগে স্বামী গ্রেপ্তার
তিনি আরও জানান, স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে রাত ১টার দিকে পুলিশ গিয়ে সোহেলকে উদ্ধার করে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। শনিবার এখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
কালীগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মিন্টু মিয়া জানান, হাসপাতাল থেকে সোহেল ভূঁইয়ার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে থানায় মামলা দেয়া হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও তিনি জানান।
আরও পড়ুন: চুয়াডাঙ্গায় প্রবাসীর স্ত্রীর আত্মহত্যা!
পরকীয়ার জেরে স্বামী হত্যা: স্ত্রীসহ ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড
খাগড়াছড়িতে কৃষককে গুলি করে হত্যা!
খাগড়াছড়ি সদর উপজেলায় দুর্বৃত্তের গুলিতে এক কৃষক নিহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে উপজেলার সাতভাইয়া পাড়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
নিহত বিহারী চাকমা (৫৫) একই এলাকার বাসিন্দা ও পেশায় কৃষক।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় আ’লীগ নেতাকে গুলি করে হত্যার অভিযোগ
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রশিদ জানান, দুর্বৃত্তরা বিহারীকে ঘরের সামনে গুলি করে হত্যা করে চলে যায়। তার শরীরে একাধিক গুলির চিহ্ন রয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
বিডিআর বিদ্রোহে সেনা কর্মকর্তাদের হত্যা ষড়যন্ত্রের ফল: বিএনপি
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করে বলেছেন, বিডিআর বিদ্রোহে সেনা কর্মকর্তাদের হত্যা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্রের ফল।
তিনি বলেন, ‘এটি (বিডিআর বিদ্রোহ) শুধু একটি বিদ্রোহ ছিল না কারণ এর পেছনে একটি গভীর ষড়যন্ত্র ছিল। এর প্রধান কারণ ছিল সেনাবাহিনীর মনোবল ভেঙে দেয়া।’
শুক্রবার পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ১৩তম বার্ষিকী উপলক্ষে নিহত সেনা কর্মকর্তাদের স্মরণে বনানী কবরস্থানে স্থাপিত স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।
তিনি আক্ষেপ করে বলেন, বিডিআর বিদ্রোহের পেছনে কারা ছিল, তার সঠিক তদন্ত প্রতিবেদন জাতি এখনও পায়নি এবং সেনাবাহিনীর তদন্তের কোনো প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়নি।
আরও পড়ুন: টিসিবির ট্রাকের সামনে লম্বা সারি বাস্তবতা প্রকাশ করে: বিএনপি
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের দুর্ভাগ্য যে আমরা এত বছর পরেও তদন্তের মাধ্যমে সত্য উদঘাটন করতে পারিনি। আমরা এখনও জানি না যে এর পেছনে কারা ছিল এবং কেন এই ঘটনাটি ঘটল! আমরা বিশ্বাস করি যে এই ঘটনার পিছনে একটি ষড়যন্ত্র রয়েছে।’
ফখরুল বলেন, ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি সমগ্র জাতির জন্য অত্যন্ত দুঃখজনক ও ভয়ানক দিন, কারণ এই দিনে বিদ্রোহের মধ্য দিয়ে জাতির শ্রেষ্ঠ সম্পদ সেনাবাহিনীর ৫৭ জন কর্মকর্তা নিহত হন।
তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধেও আমরা এত সেনা কর্মকর্তা হারাইনি।
বিএনপির এই নেতা বিডিআর বিদ্রোহে এত প্রাণহানির ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেন এবং বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।
এর আগে মির্জা ফখরুল দলীয় নেতা ও সাবেক সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে কবরস্থানে গিয়ে স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন এবং নিহত সেনা কর্মকর্তাদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করেন।
এ সময় বিএনপির প্রতিনিধি দলে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা ফজলে এলাহী আকবর, হাসান নাসির, কামরুজ্জামান, মিজানুর রহমান, সারোয়ার হোসেন, এম এ হাসান, কোহিনুর আলম নূর ও আজিজ রেজা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে ১১ দিনব্যাপী কর্মসূচি বিএনপির
উল্লেখ্য, ২০০৯ সালে বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) সপ্তাহ চলাকালে ২৫ ফেব্রুয়ারি সশস্ত্র বিদ্রোহ করেন বাহিনীর কয়েক’শ সদস্য। তাদের হাতে পিলখানা সদরদপ্তরে নিহত হন ৫৭ জন সেনাকর্মর্তাসহ ৭৪ জন।
পরে সরকারের সঙ্গে বিদ্রোহীদের আলোচনা শেষে পরদিন ২৬ ফেব্রুয়ারি অস্ত্র, গুলি ও গ্রেনেড জমাদানের মধ্য দিয়ে বিদ্রোহের সমাপ্তি হয়।
ঘটনার জেরে আধা সামরিক বাহিনী বাংলাদেশ রাইফেলসের (বিডিআর) নাম পরিবর্তন করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) রাখা হয়।
হত্যা, লুটপাট ও বিদ্রোহের এ ঘটনায় মোট ৫৮টি মামলা করা হয়। এর মধ্যে হত্যার এক মামলায় দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড, ৪২৩ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড এবং ২৭৭ জনকে দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে ২৬২ জনকে তিন মাস থেকে ১৯ বছর করে কারাদণ্ড এবং বিএনপির প্রয়াত নেতা নাসিরুদ্দিন আহমেদ পিন্টু ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা তোরাব আলীসহ ১৬১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়।
অন্যদিকে বিদ্রোহের জন্য করা ৫৭ মামলায় বিডিআরের মোট পাঁচ হাজার ৯২৬ জন সদস্যের বিভিন্ন মেয়াদে (চার মাস থেকে সাত বছর) কারাদণ্ড দেয়া হয়।
২০২০ সালের ৮ জানুয়ারি বহুল আলোচিত পিলখানা হত্যা মামলায় হাইকোর্টের দেয়া রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়। রায় প্রদানকারী তিন বিচারপতির স্বাক্ষরের পর ২৯ হাজার ৫৯ পৃষ্ঠার এ রায়টি প্রকাশ করা হয়।
রায়ের দৈর্ঘ্য এবং মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির সংখ্যার দিক থেকে এটিই বাংলাদেশের ইতিহাসে বৃহত্তম রায়।
আরও পড়ুন: সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে দুর্নীতিকে পৃষ্ঠপোষকতা দেয়া হচ্ছে: বিএনপি
ফতুল্লায় হত্যার ১০ মাস পর তানজিলার দেহাবশেষ উদ্ধার,‘কথিত’ স্বামী গ্রেপ্তার
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় হত্যার ১০ মাস পর তানজিলার (২৫)নামে এক নারীর দেহাবশেষ উদ্ধার করা হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডে গ্রেপ্তার তানজিলার ‘কথিত’ স্বামী রাসেলের দেয়া তথ্যমতে বৃহস্পতিবার ফতুল্লার দেওভোগ আদর্শ নগর এলাকার একটি ডোবা থেকে তার দেহাবশেষ উদ্ধার করা হয়। এ সময় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত বটিও উদ্ধার করেছে পুলিশ।
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) রাসেলকে গত বুধবার রংপুর থেকে গ্রেপ্তার করে।
নিহত তানজিলা রংপুরের মিঠাপুকুরের চিথলীর আব্দুল জলিলের মেয়ে।
গ্রেপ্তার হওয়া আসামির নাম রাসেল (২৯)। রাসেল রংপুরের মিঠাপুকুরের কুমুরগঞ্জের হাবিবুর রহমানের ছেলে।
আরও পড়ুন: পরকীয়ার জেরে স্বামী হত্যা: স্ত্রীসহ ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড
এর আগে গত বছরের ৫ এপ্রিল একই ডোবা থেকে অজ্ঞাত তরুণীর গলিত মাথার খুলি উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় ফতুল্লা থানার পরিদর্শক সঞ্জয় কুমার বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। মামলার তদন্তভার পিবিআই এর কাছে আসলে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে আসামি রাসেলকে গত বুধবার রংপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পিবিআই এর পুলিশ সুপার (এসপি) মনিরুল ইসলাম জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রাসেল স্বীকার করে যে, গলাকাটা মাথাটি তার কথিত স্ত্রী তানজিলার খণ্ডিত মাথা।
মনিরুল ইসলাম জানান,অভিযুক্ত রাসেলের সঙ্গে নিহত তানজিলার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। কিন্তু তানজিনার পরিবার তাদের সম্পর্ক মেনে না নিলে আসামি ২০১৯ সালে পারিবারিকভাবে অন্য এক নারীকে বিয়ে করে।
ওই বিয়ের কথা শুনে তানজিলা তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কলহ করে বাড়ি থেকে বের হয়ে নারায়ণগঞ্জে চলে আসে এবং গার্মেন্টেসে চাকরি নেয়।
আরও পড়ুন: লক্ষ্মীপুরে মাকে কুপিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগে ছেলে গ্রেপ্তার
এ সময় রাসেলের সঙ্গে তানজিলার পুনরায় প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে এবং তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয় (যদিও এ সংক্রান্ত বস্তুনিষ্ঠ কোনো তথ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে জানায় পিবিআই)। এরপর থেকে ভিকটিম তানজিলা এবং আসামি রাসেল স্বামী-স্ত্রী হিসেবে ফতুল্লার আদর্শ নগরে বসবাস শুরু করে।
পিবিআই আরও জানায়, বিয়ের পর থেকেই তানজিলা ও রাসেলের মধ্যে দাম্পত্য কলহের সৃষ্টি হয়। সবশেষে ২০২১ সালের ২৯ মার্চ রাতে তাদের মধ্যকার কলহের জেরে রাসেল তানজিলাকে মারপিট শুরু করে। এক পর্যায়ে রাসেল ক্ষিপ্ত হয়ে রান্নার কাজে ব্যবহৃত বটি দিয়ে তানজিলাকে হত্যা করে কেটে টুকরো করে পার্শ্ববর্তী ময়লার স্তুপের মধ্যে ফেলে দেয় এবং তার খণ্ডিত মাথা স্থানীয় একটি ডোবার মধ্যে ফেলে দেয়।
কোনো খোঁজ-খবর না পেয়ে তানজিলার ভাগিনা পলাশ ফতুল্লা থানায় একটি নিখোঁজ জিডি করে। ওই জিডির সূত্র ধরে তদন্ত কাজ শুরু করে পিবিআই।
আরও পড়ুন: ‘হিজড়া’ বলে কটুক্তির প্রতিবাদ করায় শিশু শুভকে হত্যা, গ্রেপ্তার ৩
পরকীয়ার জেরে স্বামী হত্যা: স্ত্রীসহ ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড
জয়পুরহাটে পরকীয়ার জেরে স্বামীকে পরিকল্পিতভাবে গলা কেটে হত্যার দায়ে স্ত্রী আকলিমা খাতুনসহ তিনজনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার দুপুরে জয়পুরহাট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. নূর ইসলাম এ আদেশ দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন-দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার দেওগ্রাম ডুগডুগির নিহত রহিম বাদশার স্ত্রী আকলিমা খাতুন, একই উপজেলার শালগ্রামের মৃত শহিদুল ইসলামের ছেলে সেলিম মিয়া ও গোপালপুর গ্রামের গোলাপ রহমানের ছেলে আইনুল ইসলাম।
জামিন নিয়ে পলাতক থাকায় স্ত্রী আকলিমা খাতুনের অনুপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করা হয়।
আরও পড়ুন: যৌতুকের দাবিতে হত্যা: স্বামীসহ ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড
পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট নৃপেন্দ্রনাথ মন্ডল জানান, দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার দেওগ্রাম-ডুগডুগি এলাকার মাইক্রোবাস চালক রহিম বাদশার কাছে মাইক্রোবাস চালানো শিখতেন সেলিম মিয়া। সেই সুবাধে বাড়িতে আসা-যাওয়ার এক পর্যায়ে তার স্ত্রী আকলিমার সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে সেলিম। সেই সম্পর্ককে বিয়েতে গড়াতে আকলিমা ও সেলিম গোপনে মাইক্রোবাস চালক- রহিম বাদশাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী,২০১৬ সালের ১০ জুলাই রাতে সেলিম ও আইনুল রহিমের গাড়িতে উঠে। পরে কৌশলে তাকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে জয়পুরহাটের পাঁচবিবি-বারোকান্দী দো’সীমানা এলাকায় মাইক্রোবাসের মধ্যেই গলা কেটে হত্যা করে তার লাশ ফেলে পালিয়ে যায় আসামিরা।
ওই দিনই নিহতের বাবা শাহাদাত হোসেন সাদা বাদি হয়ে জয়পুরহাটের পাঁচবিবি থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলার তদন্তের পর একই বছরের ১৭ ডিসেম্বর আদালতে চার্জশীট (অভিযোগপত্র) দাখিল করা হয়। এরপর এ মামলার দীর্ঘ শুনানী শেষে বৃহস্পতিবার (আজ) দুপুরে আদালত এ রায় দেন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যা, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ইসহাক গ্রেপ্তার
লক্ষ্মীপুরে মাকে কুপিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগে ছেলে গ্রেপ্তার
লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে আমেনা বেগম (৬০) নামের এক নারীকে কুপিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগে তার ছেলে রেদওয়ান হোসেন মিলনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বুধবার রাতে উপজেলার নোয়াগাঁ ইউনিয়নের আশার কোটা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত আমেনা ওই এলাকার মৃত আকবর আলীর স্ত্রী।
রামগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমদাদুল হক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, বুধবার রাতে পারিবারিক ক্ষোভের (মানসিক বিকারগ্রস্থ, প্রেম সংক্রান্ত ব্যার্থতা, মাদকাসক্ত) বশবর্তী হয়ে অভিযুক্ত মিলন তার মাকে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। পরে কম্বল পেঁচিয়ে আগুন ধরিয়ে দিয়ে পুড়িয়ে তাকে হত্যা করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আমেনার লাশ উদ্ধার করে এবং নিহতের ছেলে মিলনকে গ্রেপ্তার করে।
তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় নিহতের ভাই টিপু সুলতান বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা করেন।
নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান ওসি।
আরও পড়ুন: যৌতুকের দাবিতে হত্যা: স্বামীসহ ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড
ফতুল্লায় ছুরিকাঘাতে যুবককে হত্যা
‘হিজড়া’ বলে কটুক্তির প্রতিবাদ করায় শিশু শুভকে হত্যা, গ্রেপ্তার ৩
যৌতুকের দাবিতে হত্যা: স্বামীসহ ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড
গোপালগঞ্জের বেদগ্রামের জাকিয়া মল্লিক হত্যা মামলায় তার স্বামীসহ চারজনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। বৃহস্পতিবার ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মো. জাকির হোসেন এ রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যদণ্ড প্রাপ্ত আসামিরা হলেন, জাকিয়ার স্বামী মোর্শেদায়ান নিশান, নিশানের বড় ভাই এহসান সুশান, ভগ্নিপতি হাসান শেখ ও তাদের কর্মচারী আনিসুর রহমান।
মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি মোর্শেদায়ানকে পাঁচ লাখ এবং বাকি তিন আসামিকে তিন লাখ টাকা করে জরিমানা করেছেন বিচারক।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যা, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ইসহাক গ্রেপ্তার
এর আগে ১০ ফেব্রুয়ারি ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিচারক মো. জাকির হোসেনের আদালতে মামলাটির রায় ঘোষণার জন্য দিন ধার্য ছিল। এদিন রায় প্রস্তুত না হওয়ায় ২৪ ফেব্রুয়ারি রায় ঘোষণার জন্য দিন ধার্য করেন বিচারক।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, যৌতুকের দাবিতে ২০১৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি রাতে গোপালগঞ্জে জাকিয়াকে নির্যাতন করা হয়। এ সংক্রান্ত অভিযোগ পেয়ে পুলিশ জাকিয়ার স্বামী মোর্শেদায়ান নিশান, তার ভাই এহসান সুশান, বোন-জামাই মোহাম্মদ হাসান শেখ ও ম্যানেজার আনিসুর রহমানকে আটক করে।
এসময় জাকিয়াকে উদ্ধার করে গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনায় জাকিয়ার বাবা জালাল উদ্দিন মল্লিক বাদী হয়ে গোপালগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় মোর্শেদায়ান নিশানসহ চারজনকে আসামি করা হয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ২০১৬ সালের ৯ জুন আদালতে চার আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
এরপর ওই বছরের ৭ সেপ্টেম্বর আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। মামলার বিচার চলাকালীন আদালতে ২০ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দেন।
আরও পড়ুন: আশুলিয়ায় গার্মেন্টস কর্মী হত্যা মামলায় ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড