ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস: গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে সারাদেশে পালিত হলো 'অমর একুশে'
জাতি সোমবার 'অমর একুশে', ভাষা শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের শহিদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে।
মহান ভাষা আন্দোলন জাতির ইতিহাসে একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা, যার লক্ষ্য ছিল মাতৃভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি স্ব-সত্তা, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য রক্ষা করা।
আরও পড়ুন: ভাষা শহিদদের আত্মত্যাগেই বিশ্বব্যাপী মাতৃভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে: পররাষ্ট্র সচিব
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘অমর একুশে’-আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও শহিদ দিবস উপলক্ষে ভাষা আন্দোলনের শহিদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন।
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের পক্ষে তার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস এম সালাহউদ্দিন ইসলাম রবিবার রাত ১২টা ১ মিনিটে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে তার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল নকিব আহমেদ চৌধুরী মধ্যরাতের এক মিনিটে ঢাকার কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
অমর একুশের ৭০ বছর এবং স্বাধীন বাংলাদেশে অমর একুশে পালনের সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে একটি বিশেষ স্মারক ডাকটিকিট, উদ্বোধনী খাম ও একটি ডাটা কার্ডও অবমুক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আরও পড়ুন: ভাষা শহীদদের বিনম্র শ্রদ্ধা জানালেন সজীব ওয়াজেদ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান সকালে ঢাবি ক্যাম্পাসে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
'আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি' গান গেয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে খালি পায়ে হেঁটে সর্বস্তরের মানুষ ভাষা আন্দোলনের সেই বীর শহিদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন যারা বাংলা ভাষার স্বীকৃতি অর্জনের জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন।
সোমবার বিকেলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা শহীদ মিনার এলাকা পরিষ্কার করতে গিয়ে ফুল অপসারণ করেন।
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ছাত্রলীগের সংঘর্ষ: আহত ১
ভাষা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে ছাত্রলীগের এক কেন্দ্রীয় নেতার হামলায় আহত হয়েছেন নগর ছাত্রলীগের এক নেতা। সোমবার ভোররাতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা এ তথ্য জানিয়েছেন।
আহত এহসানুল হক ইয়াসির ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ) ছাত্রলীগের সাবেক ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সম্পাদক এবং অভিযুক্ত বেনজির হোসেন নিশি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক। আহত এহসানুল হক ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে শহীদ মিনারে ফুল দেয়া নিয়ে ছাত্রলীগের দু’পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ৮
ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুল দিতে গিয়ে এহসানুলকে আহত করার অভিযোগ উঠেছে বেনজিরের বিরুদ্ধে। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি।
এর আগে সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের হল শাখার পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণের সময় বাঁশের লাঠি হাতে কয়েকজন সদস্যের মধ্যে হাতাহাতি হয় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।
ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বেদির সামনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। এ সময় জগন্নাথ হল ও শহীদুল্লাহ হলের নেতাকর্মীরা সেখানে অবস্থান করছিলেন। তাদের ব্যানার বহনে ব্যবহৃত বাঁশের লাঠি নিয়ে একে অপরের দিকে ছুটতে দেখা যায়।
এছাড়াও শহীদ মিনারের বেদির সামনে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।
আইইউবি লাইব্রেরিতে ‘উইন্ডো অন কোরিয়া’
দক্ষিণ কোরিয়া সরকার তাদের জাতীয় গ্রন্থাগারের মাধ্যমে এ বছর বাংলাদেশের ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটির (আইইউবি) লাইব্রেরিতে ‘উইন্ডো অন কোরিয়া’ স্থাপনে সহায়তা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই প্রোগ্রামটি কোরিয়া সম্পর্কিত বই এবং উপকরণ সরবরাহ করে বাংলাদেশে কোরিয়ান সংস্কৃতি ও ইতিহাস সম্পর্কে বোঝা এবং আগ্রহ বাড়াবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশে নিযুক্ত কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত লি জ্যাং-গুণ আশা প্রকাশ করে বলেছেন, উইন্ডো অন কোরিয়া বাংলাদেশের তরুণদের কোরিয়ান সংস্কৃতি ও ভাষার প্রতি ক্রমবর্ধমান আগ্রহ ও চাহিদাকে আরও ভালোভাবে পূরণ করতে পারবে এবং কোরিয়া ও বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ও জনগণের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
এই প্রোগ্রামের অধীনে, কোরিয়ার ন্যাশনাল লাইব্রেরি প্রথম বছরে ১৫০০ থেকে ৩০০০ ভলিউম পর্যন্ত কম্পিউটার, চেয়ার, ডেস্ক এবং সাইনবোর্ডের মতো সুবিধা সরঞ্জামের খরচ এবং পরবর্তী পাঁচ বছরে কোরিয়া সম্পর্কিত ২০০ ভলিউম বই ও উপকরণ দিবে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ - দ.কোরিয়ার সমঝোতা স্মারক সই
আইইউবি বাংলাদেশের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় যারা উইন্ডো অন কোরিয়া স্থাপন করতে যাচ্ছে এবং দ্বিতীয় যা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরে কোরিয়া ফাউন্ডেশন (কেএফ) এর সহায়তায় কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে কোরিয়া কর্নার স্থাপন করবে।
এই লাইব্রেরিতে একটি কোরিয়া নিবেদিত বিভাগ করা হবে। উইন্ডো অন কোরিয়া ছাড়াও, কোরিয়ার কিং সেজং ইনস্টিটিউট ফাউন্ডেশনেরসহায়তায় আইইউবি এই বছর একটি কিং সেজং ইনস্টিটিউট নামে একটি কোরিয়ান ভাষা শিক্ষা কার্যক্রমের আয়োজন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আইইউবি কোরিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে একাডেমিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে, যা ২০১৪ সাল থেকে মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিভাগে কোরিয়ান সিনেমা অ্যান্ড সোসাইটি কোর্সের মতো বিভিন্ন প্রোগ্রাম প্রদান করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইইউবি কে-ক্লাব, একটি স্বেচ্ছাসেবী গোষ্ঠী যার ২০০ জনের বেশি সদস্য নিয়মিত বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান যেমন কোরিয়ান ফিল্ম নাইট এবং কে-পপ উৎসবের আয়োজন করে আসছে।
কোরিয়া দূতাবাসের সহযোগিতায় বিশ্ববিদ্যালয়টি কোরিয়ান ভাষায় দক্ষতার পরীক্ষা, কোরিয়ান বক্তৃতা প্রতিযোগিতা এবং অন্যান্য কোরিয়ান সংস্কৃতি সম্পর্কিত প্রোগ্রামগুলোর জন্য নিয়মিত ভ্যেনু প্রদান করে আসছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদারে আগ্রহী অস্ট্রেলিয়া
শাবিপ্রবির ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের প্রতীকী অনশন
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক প্রতীকী অনশন করেছে।
দুপুর ১২টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত অপরাজেয় বাংলার সামনে শিক্ষকরা এই অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
প্রতীকী অনশনে অংশ নেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক অধ্যাপক রেহনুমা আহমেদ ও সাঈদ ফেরদৌস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের কামরুল হাসান।
আরও পড়ুন: শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে ভার্চুয়ালি বসতে চান শাবিপ্রবির আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা
এছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ তানজিম উদ্দিন খান, ঢাবির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক গীতি আরা নাসরীন, হিসাববিজ্ঞান বিভাগ থেকে অধ্যাপক মোশাহিদা সুলতানা, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের কাজী মারুফুল ইসলাম, ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সিরাজ মাহবুব, সমাজবিজ্ঞান বিভাগ থেকে সহযোগী অধ্যাপক সামিনা লুৎফা, ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কাজলি শেহরীন ইসলামসহ অন্যান্য শিক্ষকরাও ধর্মঘটে যোগ দেন।
ধর্মঘটে ঢাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরও যোগ দেন।
আরও পড়ুন: ঢাকায় নয়, আলোচনা হবে সিলেটে: শাবিপ্রবির আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা
পরীক্ষা স্থগিতের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের নীলক্ষেত অবরোধ
বিনা নোটিশে সরকারের পরীক্ষা স্থগিতের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে রাজধানীর ব্যস্ততম সড়ক অবরোধ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অধিভুক্ত সাত সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা। শনিবার সকালে তারা নীলক্ষেত মোড় অবরোধ করে এই প্রতিবাদ জানায়।
সকাল ৯ টার দিকে শতাধিক শিক্ষার্থী রাস্তায় নেমে আসে এবং প্রায় দুই ঘন্টা ধরে বিক্ষোভ দেখায়। রাজধানীর ব্যস্ত এলাকায় শিক্ষার্থীদের এই সড়ক অবরোধে যান চলাচল বন্ধ থাকায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় যাত্রীদের।
আরও পড়ুন: যুবলীগ নেতা অপহৃত: খাগড়াছড়িতে সড়ক অবরোধ
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী ইউএনবিকে বলেন, তাদের পরীক্ষা স্থগিতের বিষয়ে আগে জানানো হয়নি। পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছানোর পরই তারা বিষয়টি জানতে পেরেছেন।
সকাল ১১টা পর্যন্ত বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন শেষে শিক্ষার্থীরা ঢাবি ক্যাম্পাসে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের সঙ্গে দেখা করতে যান। পরে তারা নিয়ন্ত্রকের অনুরোধে ইডেন কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দেখা করতে যান।
আরও পড়ুন: চাঁদাবাজির প্রতিবাদে সাভারে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ
সরকারি বাংলা কলেজের ছাত্রী রাবেয়া বলেন, হঠাৎ করে পরীক্ষা স্থগিত করার প্রতিবাদে ব্যস্ত নীলক্ষেত মোড় অবরোধ করেছিলাম।
এর আগে শুক্রবার দেশে করোনার বিস্তার রোধে ২১ জানুয়ারি থেকে ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দেশের সব স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে সরকার।
ঢাবিতে সশরীরে ক্লাস বন্ধ
করোনা সংক্রমণ রোধে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শুক্রবার থেকে ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সশরীরে ক্লাস বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) কর্তৃপক্ষ।
শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
তবে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: ২১ জানুয়ারি থেকে ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ
এতে বলা হয়, সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত সীমিত আকারে বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিস খোলা থাকবে। ক্যাম্পাসের সকল জরুরি সেবা (বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস, ইন্টারনেট, স্বাস্থ্যসেবা) ও নিরবচ্ছিন্ন থাকবে।
এছাড়া ঢাবি কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিজ নিজ হলে থাকার এবং সব ধরনের জনসমাগম এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছে। কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট সকলকে ক্যাম্পাসে সভা, সেমিনার বা কোনো ধরনের জন সমাবেশের আয়োজন না করার জন্য অনুরোধ করেছে।
ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, যদি আমরা হলগুলো বন্ধ করি, তাহলে শিক্ষার্থীরা ছড়িয়ে পড়বে এবং ভাইরাস ছড়ানোর ঝুঁকি বাড়বে৷ তাই, আমরা হল বন্ধ করার পরিকল্পনা করছি না।
আরও পড়ুন: ঢাকার এক-তৃতীয়াংশ হাসপাতালে করোনা রোগী ভর্তি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
বিএনপি আসলে নির্বাচন বানচাল করতে চায়: তথ্যমন্ত্রী
রাষ্ট্রপতির সংলাপে অংশ না নিয়ে বিএনপি আসলে নির্বাচন বানচাল করতে চায় বলে অভিযোগ করেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেছেন, ‘রাষ্ট্রপতি একটি স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সবার মতামতের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন গঠন করার লক্ষ্যে সংলাপের আয়োজন করেছেন যা বিএনপি কখনো করেনি। বিএনপি সেই সংলাপে যাবে না এবং সংলাপের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অপপ্রচার চালাচ্ছে। কারণ আসলে বিএনপির উদ্দেশ্য হচ্ছে আগামী নির্বাচনটাকে বানচাল করা। তারা যেভাবে ২০১৪ সালে নির্বাচন বানচাল করতে চেয়েছিল, ২০১৮ সালে নির্বাচনে ষড়যন্ত্র করেছিল একইভাবে তারা আগামী নির্বাচনটাকে বানচাল করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। কিন্তু দেশের মানুষ তাদেরকে সেই সুযোগ দেবে না।’রবিবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র টিএসসি সড়কদ্বীপে পোস্টার সাংস্কৃতিক সংসদ ও বজ্রকণ্ঠ সংগঠনদ্বয় আয়োজিত দিন বদলের মেলা’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী একথা বলেন।
আরও পড়ুন: পার্বত্য অঞ্চলের পর্যটন সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে অর্থনৈতিক উন্নয়নের আহ্বান তথ্যমন্ত্রীরপোস্টার সাংস্কৃতিক সংসদ সভাপতি এস এম জামাল উদ্দিন ইউসুফের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রব্বানী বাবলুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে ঢাবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান উদ্বোধক হিসেবে, আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী বিশেষ অতিথি এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. শাহে আলম মুরাদ সম্মানিত আলোচক হিসেবে বক্তব্য দেন।তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে দিন বদল হয়েছে। কিন্তু এই দিন বদল অনেকের পছন্দ নয়। দেশের মানুষ ভালো আছে এটি অনেকের পছন্দ নয়। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমরা যখন পদ্মা সেতু নির্মাণ শুরু করলাম, তখন বেগম খালেদা জিয়া এবং বিএনপি নেতারা বললেন, আওয়ামী লীগ করতে পারবে না, তারা ক্ষমতায় গেলে একসঙ্গে দু’টা পদ্মা সেতু করবে। এখন তো পদ্মা সেতু হয়েই গেছে। পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী ক’দিন আগে গাড়ি চালিয়ে এই প্রান্ত থেকে ওই প্রান্তে গেছেন। আবার ওই প্রান্ত থেকে গাড়ি চালিয়ে এ প্রান্তে ফেরত এসেছেন। এখন আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের অপেক্ষায়। আর আমরা অপেক্ষায় আছি, যারা পদ্মা সেতু হবে না বলেছিল, তারা গাড়ি চালিয়ে পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে যায়, না কি আওয়ামী লীগের মার্কা নৌকায় এপার থেকে ওপার যায় সেটা দেখার জন্য।’ড. হাছান মাহমুদ বলেন, তারা (বিএনপি) ফ্লাইওভার দিয়ে বিমানবন্দরে যায় আর গিয়ে বলে দেশে কোনো উন্নয়ন হয়নি। এই হঠকারি রাজনীতি বন্ধ হওয়া আবশ্যক। গত ১৩ বছরে দেশ আরও অনেক এগিয়ে যেতে পারতো যদি বিএনপি-জামাত এবং তাদের দোসরদের ধ্বংসাত্মক রাজনীতি, পেট্রোলবোমা নিক্ষেপ করে মানুষ হত্যার রাজনীতি, দিনের পর দিন মানুষকে অবরোধ করার রাজনীতি না থাকতো এবং দেশের বিরুদ্ধে দেশে-বিদেশে অপপ্রচার চালানোর অপরাজনীতি যদি তারা না করতো। আজ থেকে ১০ বছর পর বাংলাদেশ ২০৩১ সাল নাগাদ বাংলাদেশকে উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশে এবং ২০৪১ সাল নাগাদ উন্নত সমৃদ্ধ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা রচনা করতে চাই, সেই স্বপ্নের ঠিকানায় পৌঁছুতে হলে এই অপরাজনীতির অবসান হতে হবে।’
আরও পড়ুন: বেগম জিয়ার কিছু হলে বিএনপি নেতারাই আসামি হবেন: তথ্যমন্ত্রীদেশকে এগিয়ে নিতে রাজনীতি স্থিতিশীলতা প্রয়োজন উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘স্বাধীনতার চেতনাকে যদি সমুন্নত রাখতে হয় একইসাথে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি যদি রাষ্ট্র ক্ষমতায় না থাকে এই কবিতা পাঠের আসর, সংস্কৃতির চর্চা ভবিষ্যতে হবে কি না সন্দেহ আছে। মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা যদি দেশ পরিচালনার দায়িত্বে না থাকেন তাহলে দেশের সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর গলা চেপে ধরা হবে। কারণ বিএনপি-জামাত তাদের সঙ্গে জোট করেছে, যারা এই দেশটাকে তালেবানী রাষ্ট্র বানাতে চায়। এই অপশক্তির যাতে বিনাশ হয় ও চিরতরে দূরীভূত হয় সেই চেতনা মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে সারাদেশে একটি সাংস্কৃতিক গণজোয়ার তৈরির জন্য আমি সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোকে অনুরোধ জানাবো। তাহলে নতুন প্রজন্মকে আমাদের আবহমান সংস্কৃতির সঙ্গে সংযুক্ত করতে পারবো, একইসঙ্গে মাদকাসক্তি এবং মৌলবাদ-আসক্তি থেকে তাদেরকে মুক্ত রাখা সম্ভব হবে।আলোচক হিসেবে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা কামাল চৌধুরী, ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এবিএম আশরাফুল ইসলাম মারুফ, স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট মো. ফোরকান মিঞা, আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা উপপরিষদ সদস্য সুজন হালদার, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক অরুণ সরকার রানা এবং মেলা উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা সরকার আলী আসগর স্বাগত বক্তা হিসেবে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। কবি ও সাহিত্যিকদের মধ্যে কবিতা আবৃত্তি করেন ড. শাহাদৎ হোসেন নিপু, অসীম সাহা, আসলাম সানি, অঞ্জনা সাহা, তপন বাগচী, রহিম শাহ, বাপ্পি রহমান, ইউসুফ রেজা প্রমুখ।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের অবনতি হলে দায় বিএনপিরই: তথ্যমন্ত্রী
আতশবাজির ঝলকানিতে শেষ হলো ঢাবির শতবর্ষ উদযাপন
আতশবাজির ঝলকানির মধ্য দিয়ে বৃহস্পতিবার শেষ প্রহরে দেশের উচ্চশিক্ষার প্রধান প্রতিষ্ঠান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তার শতবর্ষ উদযাপন ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী সম্পন্ন করেছে।
দেশের মহান বিজয় দিবসের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ১৬ ডিসেম্বরকে বেছে নেয়।
দিনটি উপলক্ষ্যে ঢাবি শিক্ষার্থীরা বিজয় র্যালি, স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ, টিএসসিতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন।
ঢাকা ইউনিভার্সিটি ফিল্ম সোসাইটি (ডিইউএফএস) সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে সন্ধ্যা থেকে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক চলচ্চিত্র প্রদর্শনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্রে(টিএসসি) একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
আরও পড়ুন: ঢাবি ছাত্রীকে নির্যাতন করে হত্যা: স্বামী গ্রেপ্তার
রাত ৮টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে শিক্ষার্থীদের জন্য বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও উন্নয়নের ওপর একটি লেজার শো ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়।
আতশবাজি ও গান পরিবেশনের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হলো ১৬ দিনব্যাপী এই শতবর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠান।
১৯২১ সালে যাত্রা শুরু করা ঢাবি এ বছরের ১ জুলাই শতবর্ষ পূর্ণ করে। কিন্তু মহামারির কারণে শতবর্ষ উদযাপন পিছিয়ে যায়।
তবে পরিস্থিতির পরিবর্তনের সাথে সাথে বিশ্ববিদ্যালয়টি ১ ডিসেম্বর থেকে উদযাপন শুরু করে। রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ভার্চুয়ালি বঙ্গভবন থেকে অনুষ্ঠানটির উদ্বোধন করেন।
আরও পড়ুন: ঢাবি কর্তৃপক্ষকে একাডেমিক মহাপরিকল্পনা প্রণয়নের আহ্বান শিক্ষামন্ত্রীর
ঢাবি ছাত্রীকে নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগ, স্বামী আটক
স্বামীর নির্যাতনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) নৃত্যকলা বিভাগের এক ছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিহত ইলমা চৌধুরী মেঘলা ২০১৫-১৬ সেশনের শিক্ষার্থী।
মেঘলার মামা ইকবাল হোসেন বলেন, ‘আজ বিকালে (মঙ্গলবার) মেঘলার স্বামী ফোন করে জানায় সে অসুস্থ এবং তাকে ইউনাইটেড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কিন্তু আমরা হাসপাতালে গিয়ে দেখি মেঘলা মারা গেছে।
মেঘলাকে হাসপাতালে দেখে তার বন্ধু মোমো বলেন, ‘আমরা তার শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন দেখেছি, আমাদের ধারণা এটি একটি হত্যাকাণ্ড।’
মেঘলার স্বামী ইফতেখার আবেদীন (৩৬) কানাডাপ্রবাসী। তিনি দুই দিন আগে দেশে ফিরেছেন।
মোমো বলেন, ‘আমরা যতদূর জানি, মেঘলাকে মানসিকভাবে নির্যাতন করা হয়েছে এবং তার স্বামী তাকে খুব নজরদারি করতো।
বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরে আজম মিয়া বলেন, ‘মেঘলার স্বামী বনানী থানা পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। তার বিরুদ্ধে মেঘলার পরিবার মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
আরও পড়ুন: ঢাবির সূর্যসেন হলে শিক্ষার্থীকে নির্যাতন, অভিযুক্ত সেই সিফাতই
মুরাদের বিরুদ্ধে থানায় ঢাবির সাবেক শিক্ষার্থীর অভিযোগ
ক্যাম্পাসের পোস্টারে সূর্য সেন হলের ‘প্রভোস্ট নিখোঁজ’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সূর্যসেন হলের শিক্ষার্থীরা তাদের সমস্যা এবং কর্তৃপক্ষের গাফিলতির অভিযোগ তুলে ধরতে একটি অনন্য উপায় অবলম্বন করেছে। ‘প্রভোস্ট নিখোঁজ’ লেখা পোস্টার লাগিয়ে তারা এই অভিনব প্রতিবাদ জানায়।
হলটির প্রভোস্ট মোহাম্মদ মকবুল হোসেন ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে ছাত্ররা হলের টয়লেট থেকে মধুর ক্যান্টিনে ‘প্রভোস্ট নিখোঁজ’ লেখা পোস্টার লাগিয়েছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে হলের এক আবাসিক ছাত্র ইউএনবিকে জানিয়েছেন ডাইনিং হলে সরবরাহ করা খাবারের নিম্নমান, মশা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতা, ভাঙা পানি পরিশোধক দীর্ঘদিন ধরে মেরামত না করা, অপরিষ্কার টয়লেট এবং খেলাধুলার সামগ্রীর অভাব ইত্যাদি কারণে ছাত্ররা এই প্রতিবাদ করছেন।
আরও পড়ুন: ঢাবির আবাসিক হলের ক্যান্টিনের দেয়াল ধসে আহত ২
সম্প্রতি ছাত্রাবাসে ছাত্রলীগের কর্মীরা দুই ছাত্রকে মারধর করার পরও প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ নেন নি বলে জানিয়েছেন আরেক ছাত্র।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক শিক্ষার্থী বলেন, অমরা যখন কোন সমস্যার সম্মুখীন হই তখন প্রভোস্টকে পাওয়া যায় না। তাই নিখোঁজ নোটিশ লাগিয়েছি।
আবার অনেকের মতে, এই প্রতিবাদটি হয়তো তারাই করেছে যাদের হলে অনুষ্ঠিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের একটি অনুষ্ঠানে ছাত্রলীগের হল ইউনিট আমন্ত্রণ জানায়নি।
আরও পড়ুন: ঢাবির এফ রহমান হলে ৫ শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ
প্রতিবেদকের মাধ্যমে হলটির প্রভোস্ট ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ মকবুল হোসেনের সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে ‘আমি পরে কথা বলব’ বলে কলটি বিচ্ছিন্ন করে দেন। এরপর থেকে তাকে কলে পাওয়া যাচ্ছিল না।
তবে প্রভোস্ট নিখোঁজ নন বলে নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী।
তিনি বলেন, এই কাজটি আমাদের কিছু ছাত্র করেছে। তিনি এই প্রতিবাদকে ‘বিরক্তিকর’ বলে অভিহিত করেন।