আসামি
হাতি হত্যা: ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা
শেরপুরের শ্রীবরদীতে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে একটি বিপন্ন এশিয়ান হাতি হত্যার ঘটনায় জেলায় প্রথমবারের মতো চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে বন বিভাগ।
মামলার আসামিরা হলেন, জেলার মালাকোচা এলাকার কৃষক আমেজ উদ্দিন, তার ভাই সোমেজ উদ্দিন, মো. আশরাফুল ও মো. শাহজালাল।
বৃহস্পতিবার বালিজুরী রেঞ্জের ভারপ্রাপ্ত রেঞ্জ কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছেন, তিনি বাদী হয়ে শ্রীবরদী আদালতে বন্যপ্রাণী আইনে মামলা দায়েরের পর শ্রীবরদী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন, ২০১২ এর ৩৬ ধারায় তফসিল-১ লঙ্ঘনের জন্য মামলাটি দায়ের করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
আদালত চার আসামিকে তলব করে মামলার শুনানির জন্য ১২ ডিসেম্বর দিন ধার্য করেছেন বলে জানান রেঞ্জ কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম।
আরও পড়ুন: শেরপুর সীমান্তে বিদ্যুতায়িত করে হাতি হত্যার অভিযোগ
৯ নভেম্বর, উপজেলার সোনাঝুরী টিলায় স্থানীয় কৃষকদের সবজি চাষের জমির আশেপাশে বসানো বিদ্যুতায়িত জিআই তারে আটকে খাবার খুঁজতে আসা একটি হাতি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যায়।
বন কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম বলেন, জমিগুলো আসলে বন বিভাগের মালিকানাধীন এবং কৃষকরা সেখানে অবৈধভাবে চাষাবাদ করছেন। তিনি বলেন, বনের জমি দখল করে কৃষিকাজ বৃদ্ধির কারণে এলাকায় বন্য হাতি আসতে শুরু করেছে।
জেলার হাতি প্রশিক্ষক দলের আদনান আসিফ জানান, গত ২০ থেকে ৩০ বছরে শেরপুরের গারো পার্বত্য অঞ্চলের বিশাল এলাকা ছোট হয়ে গেছে।পাহাড়ি এলাকায় মানব হানাদারদের কারণে বন্যপ্রাণীর সংখ্যা কমে গেছে এবং অবশিষ্ট কয়েকটি হাতির খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে।
বন কর্মকর্তাদের মতে, গত দুই দশকে শেরপুর জেলার পাহাড়ি এলাকায় প্রায় ৩০টি বন্য এশিয়ান হাতি মারা গেছে।
তাদের মধ্যে অনেকে গুলি, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট, কিংবা বিষক্রিয়ায় মারা গেছে এবং কেউ কেউ বার্ধক্য ও অসুস্থতার কারণে মারা গেছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: হাতি হত্যা: কক্সবাজারে ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা
গাইবান্ধায় ইউপি সদস্য হত্যাকারীর দায় স্বীকার
গাইবান্ধায় নবনির্বাচিত ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য আবদুর রউফ হত্যার দায় স্বীকার করেছে প্রধান আসামি আরিফ মিয়া। সোমবার বিকেলে অতিরিক্ত প্রধান বিচারিক হাকিম নজরুল ইসলামের আদালতে তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
রবিবার তাকে পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলার পাঁচপীর গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। এরপর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে তাকে গাইবান্ধা থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
গাইবান্ধা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) আব্দুর রউফ জানান, সে হত্যার দায় স্বীকার করেছে। এই হত্যাকান্ডের পরে গত শনিবার রাতে গাইবান্ধা সদর থানায় নিহতের বড়বোন মমতাজ বেগম বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেন। মামলায় আরিফ মিয়াকে প্রধান আসামি করা হয়। এ ছাড়া অজ্ঞাত আরও ছয়-সাতজনকে আসামি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ঘুম থেকে ডেকে তোলায় বাবাকে পিটিয়ে হত্যা!
নিহত আবদুর রউফ গত বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত গাইবান্ধা সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডে সাধারণ সদস্য পদে নির্বাচিত হন। পরদিন শুক্রবার রাত ১১টার দিকে প্রতিবেশি ও বন্ধু রুহুল আমিনের মোটরসাইকেলে লক্ষ্মীপুর বাজার থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। এসময় লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের মাগুড়াকুটি গ্রামের আরিফ মিয়া পিছন থেকে ইউপি সদস্যের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। পরে স্থানীয় লোকজন গুরুতর আহত অবস্থায় আবদুর রউফ মাস্টারকে উদ্ধার করে। তাকে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে নেয়ার পথে তিনি মারা যান।
আরও পড়ুন: ছেলের বিরুদ্ধে মাকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ
গাইবান্ধায় নবনির্বাচিত ইউপি সদস্যকে পিটিয়ে হত্যা !
চট্টগ্রামে হানিফ হত্যা মামলার প্রধান আসামিসহ ৪ জন গ্রেপ্তার
চট্টগ্রাম মহানগরীর খুলশী থানাধীন আমবাগান এলাকার আলোচিত মো. হানিফ (২০) হত্যা মামলার প্রধান ও এক নম্বর আসামিসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৭। শনিবার ঢাকা ও শরীয়তপুরের বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাব-৭ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-৭ জানতে পারে উক্ত হত্যা মামলার এজহারনামীয় অন্যতম প্রধান পলাতক আসামিরা শরীয়তপুর ও ঢাকা জেলায় অবস্থান করছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে গত শনিবার (১৩ নভেম্বর) চট্টগ্রামের একটি আভিযানিক দল উক্ত হত্যা মামলার আসামি মো. সোহেল ভান্ডারী (২১) ও মো. হাসান (১৯) কে শরীয়তপুর জেলার নরিয়া থেকে গ্রেপ্তার করে। এছাড়াও অপর দুই আসামি আমির হোসেন (৪৮) ও মো. সোহাগ (২৩) কে ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আরও পড়ুন: মেয়েকে দেহ ব্যবসায় বাধ্য করায় বাবা মা গ্রেপ্তার
গত ৮ নভেম্বর চট্টগ্রাম মহানগরীর খুলশী থানাধীন আমবাগান রেলওয়ে কলোনী মাঠ থেকে ডেকে নিয়ে মো. হানিফকে ধারালো ছোরা দিয়ে আঘাত করে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। উক্ত ঘটনায় নিহতের ভাই জয়নাল আবেদিন (৩২) বাদী হয়ে খুলশী থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। উক্ত হত্যাকান্ডের ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার হওয়া আসামিরা হত্যাকাণ্ডের সাথে সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করেছে। উল্লেখ্য, আসামি মো. আমির হোসেন (৪৮) এর বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম মহানগরীর পাহাড়তলী থানায় ও ডবলমুরিং থানায় তিনটি মামলা রয়েছে।
গ্রেপ্তার আসামিদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে চট্টগ্রাম মহানগরীর খুলশী থানায় হস্তান্তর কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানিয়েছে র্যাব-৭।
আরও পড়ুন: বাস থেকে পড়ে শিশুর মৃত্যু: চালক ও হেলপার গ্রেপ্তার
একরাম হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি গ্রেপ্তার
ফেনীতে বহুল আলোচিত ফুলগাজী উপজেলা চেয়ারম্যান একরামুল হক একরাম হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি জিয়াউর রহমান বাপ্পিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় ফেনী মডেল থানা পুলিশের একটি টিম বালিগাঁও ইউনিয়নের ধুমসাদ্দা গ্রামে তার শ্বশুর বাড়ি থেকে ‘গ্রেপ্তার’ করে।
তবে আটক আসামির বাবার নামের সাথে গরমিল রয়েছে বলে জানান ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিজাম উদ্দিন।
আরও পড়ুন: ফেনীর একরাম হত্যা: ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত ১৭ আসামি এখনো পলাতক
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের ২০ মে বহুল আলোচিত ফেনীর ফুলগাজী উপজেলা চেয়ারম্যান একরামুল হক একরামকে গুলি করে, কুপিয়ে ও গাড়িসহ পুড়িয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। শহরের ব্যস্ত সড়কে চারদিক থেকে ব্যারিকেড দিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি করে, বোমা মেরে ও পুড়িয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছিল একরামকে। আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের পর ২০১৮ সালের ১৩ মার্চ ৩৯ জন আসামিকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন ফেনীর আদালত। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ৩৯ জনের মধ্যে ১৭ জনই পলাতক। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে ২২ জন রয়েছে কারাগারে, আটজন জামিনে মুক্ত হয়ে পলাতক এবং চার্জশিটভুক্ত নয়জন শুরু থেকে পলাতক।
আরও পড়ুন: হত্যা মামলার ২৪ ঘন্টার মধ্যে রাজধানীতে গ্রেপ্তার ৪
২ হত্যা মামলার প্রধান আসামি যুক্তরাজ্য প্রবাসী ঢাকায় গ্রেপ্তার
ধর্ষণের দুই মামলা: সাফাতসহ ৫ আসামি খালাস
রাজধানীর বনানীর একটি হোটেলে দুই তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগ থেকে সাফাত আহমেদসহ পাঁচ আসামিকে খালাস দিয়েছে ঢাকার একটি আদালত।
আসামিদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় বৃহস্পতিবার ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক বেগম কামরুন্নাহার আসামিদের খালাসের আদেশ দেন।
সাফাত আহমেদ আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদ সেলিমের ছেলে। অন্য আসামিরা হলেন নাঈম আশরাফ,সাফাতের বন্ধু সাদমান সাকিফ,শাফাতের গাড়িচালক বিল্লাল হোসেন ও দেহরক্ষী রহমত আলী।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ৬ মে নির্যাতিত দুই তরুণীর একজন শাফাত ও সাদমান সাকিফসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে বনানী থানায় একটি মামলা করেন।
ওই বছরের ৭ জুন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক ইসমত আরা পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। গত ১৯ জুন ট্রাইব্যুনাল অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়,সাফাত ও নাঈম গত ২৮ মার্চ রাজধানীর বনানী এলাকার রেইনট্রি হোটেলে বাদী ও তার এক বন্ধুকে ধর্ষণ করে। এসময় মামলার অন্য তিন আসামি তাদের সহযোগিতা করে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ঘটনার দুই সপ্তাহ আগে ভুক্তভোগীরা অন্যতম অভিযুক্ত সাদমানের মাধ্যমে সাফাতের সাথে পরিচিত হয়। ওই দিন হোটেলে একটি অনুষ্ঠানে দাওয়াতের কথা বলে এনে ভুক্তভোগীদের সাথে প্রতারণা করা হয়।
আরও পড়ুন: কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে বৃদ্ধ গ্রেপ্তার
ধর্ষণ মামলা: সাংবাদিক শাকিলের আগাম জামিন
চাঁপাইনবাবগঞ্জে ভাতিজিকে ধর্ষণ চেষ্টা মামলায় ১০ বছর কারাদণ্ড
নিয়ম অনুযায়ী হত্যা মামলার দুই আসামির ফাঁসি হয়েছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
চুয়াডাঙ্গার একটি হত্যা মামলায় দুই আসামির আপিল শুনানির আগে মৃত্যুদণ্ডাদেশ কার্যকরের অভিযোগের বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, যথাযথ নিয়ম অনুযায়ী তাদের ফাঁসি হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মন্ত্রী এ কথা বলেন।তিনি বলেন, 'যথাযথ নিয়ম মেনে তাদের ফাঁসি দেয়া হয়েছে। কোনো আপিল পেন্ডিং ছিল বলে আমাদের জানা নেই। ফাঁসি দেয়ার ক্ষেত্রে আমাদের সিস্টেমের কোনো ব্যত্যয় হয়নি।’
আরও পড়ুন: আপিল শুনানির আগে মৃত্যুদণ্ডের সংবাদ সঠিক নয়: আইনমন্ত্রী
আপিল শুনানির আগে মৃত্যুদণ্ডাদেশ কার্যকরের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের জানা মতে এই রকম ঘটনা ঘটেনি। প্রথম কথা হলো এই। ফাঁসির ক্ষেত্রে একটা প্রসিডিউর আছে। যিনি ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত হন, প্রথমে তিনি আপিল করতে পারেন। তিনি হাইকোর্টে আপিল করেছেন। আপিল না মঞ্জুর হওয়াতে তিনি আবার আপিল বিভাগে আপিল করেছেন। জেল থেকে তিনি আপিল করেছেন, যেটাকে জেল আপিল বলে। জেল আপিল নিষ্পন্ন হওয়ার পরে, না মঞ্জুর হওয়ার পরে তিনি সর্বশেষ রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চেয়েছেন। রাষ্ট্রপতি প্রাণভিক্ষার আবেদন না মঞ্জুর করেছেন। এরপর সিস্টেম অনুযায়ী তাকে ফাঁসি দেয়া হয়েছে।’
আরও পড়ুন: ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের প্রশিক্ষণের জন্য একাডেমি প্রতিষ্ঠা করা হবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীতিনি বলেন, ‘আমরা যেটুকু দেখেছি, যথাযোগ্য নিয়ম অনুযায়ী হয়েছে, প্রত্যেকটি স্টেপের পর যে স্টেপ সেই স্টেপই আসছে। কোন আপিল পেন্ডিং ছিল বলে আমাদের কিংবা কারা কর্তৃপক্ষের জানা নেই।’স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমাদের যে সিস্টেম সেই সিস্টেমে কোন ব্যত্যয় হয়নি।
আপিল শুনানির আগে মৃত্যুদণ্ডের সংবাদ সঠিক নয়: আইনমন্ত্রী
আপিল শুনানির আগে চুয়াডাঙ্গায় দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের যে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে, সে বিষয়ে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, তাঁর কাছে যে তথ্যাদি আছে সেটার সাথে প্রকাশিত খবরের মিল নেই। তিনি ব্যাখ্যা করে বলেন, আপিল শুনানির আগে তাদের মৃত্যুণ্ডাদেশ কার্যকর করা হয়েছে, এ কথাটি কিন্তু সঠিক না।বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ কখনোই সাম্প্রদায়িক রাজনীতিকে প্রশ্রয় দেবে না: আইনমন্ত্রীআইনমন্ত্রী বলেন, যাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে, তাদেরকে বিচারিক আদালতে মৃত্যুণ্ডাদেশ দেয়া হয়েছিল। তারপর সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশনে তাদের মৃত্যুণ্ডাদেশ 'কনফার্ম' করা হয়েছিল। এরপর তারা জেল আপিল করেছিলেন। এই জেল আপিলের শুনানি শেষে আপিল বিভাগ বিচারিক আদালত ও হাইকোর্টের রায়কে বহাল রাখেন। সবশেষে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চান। প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ করার পর তাদের ফাঁসি কার্যকর করা হয়। সুতরাং আপিল শুনানির আগে তাদের মৃত্যুণ্ডাদেশ কার্যকর করা হয়েছে, এ কথাটি কিন্তু সঠিক না।ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে মন্ত্রী বলেন, এ আইনের অপব্যবহারের ব্যাপারে আমরা বড় কঠোর হবো। যেই এ আইনের 'মিসইউজ ও অ্যাবিউজ’ করবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার ব্যবস্থা আমরা করছি। তার কারণ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি আইন। বাক-স্বাধীনতা বা সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ করার জন্য এ আইন করা হয়নি- আমি বারবার এ কথা বলবো। তিনি বলেন, যারা এ আইনের অপব্যবহার করছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আমি ইতোমধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে কথা বলেছি।
আরও পড়ুন: সার্চ কমিটির মাধ্যমেই গঠিত হবে ইসি: আইনমন্ত্রীআইনমন্ত্রী বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে আরও দুটি বিষয়ে কথা হয়েছে। এর প্রথমটি হলো ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করলেই যে মামলা নিয়ে নিবে সেটা হবে না। আইসিটি আইনের একটি ধারা আছে, সে ধারায় একটি সেল আছে, সেখানে সন্তুষ্ট হতে হবে, তারপর মামলা হবে। আর দ্বিতীয়টি হলো ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা করা হলে তাৎক্ষণিকভাবে যেন তাদেরকে গ্রেপ্তার না করা হয়।
সাংবাদিক মুজাক্কির হত্যা: আসামির জামিন স্থগিত
নোয়াখালীর কোম্পানিগঞ্জ উপজেলার সাংবাদিক বুরহান উদ্দিন মুজাক্কির হত্যা মামলার আসামি আব্দুল মালেককে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগ।
সোমবার রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের শুনানি নিয়ে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে আসামিপক্ষে আইনজীবী ছিলেন মো. খুরশিদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ।
আরও পড়ুন: সাংবাদিক মুজাক্কির হত্যা: চেম্বার আদালতে ৩ আসামির জামিন স্থগিত
উল্লেখ্য,বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার বিভিন্ন বক্তব্যের প্রতিবাদে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি কোম্পানিগঞ্জ উপজেলার চাপরাশিরহাট বাজারে বিক্ষোভ মিছিল বের করে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান (বাদল)। ওই সময় কাদের মির্জা ও বাদল গ্রুপের সংঘর্ষ-গুলি বিনিময়ের সময় দৈনিক বাংলাদেশ সমাচার পত্রিকার কোম্পানীগঞ্জ প্রতিনিধি বুরহান উদ্দিন মুজাক্কির গুলিবিদ্ধ হন। ঘটনার একদিন পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
এ ঘটনায় নিহত সাংবাদিক মুজাক্কিরের বাবা নুরুল হুদা মাস্টার বাদী হয়ে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা করেন। পরে মামলাটি এখন পিবিআই তদন্ত করছে।
আরও পড়ুন: সাংবাদিক মুজাক্কির হত্যা মামলায় যুবলীগ কর্মী বেলাল রিমান্ডে
হিলি থেকে গ্রেপ্তার জেল পালানো আসামি
দিনাজপুরের পার্বতীপুর মডেল থানার হাজতখানা থেকে পালিয়ে যাওয়া ওয়ারেন্টভূক্ত এক আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পুলিশ জেলার হিলি সীমান্ত এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তার পলাতক আসামি মোকারুল ইসলাম (৩০) পার্বতীপুর উপজেলার দক্ষিণ পলাশবাড়ী গ্রামের মৃত সাত্তার আলীর ছেলে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে হাকিমপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খায়রুল বাশার শামীম জানান, গত মঙ্গলবার পার্বতীপুর মডেল থানায় দুটি চুরি মামলার ওরেন্টভুক্ত আসামি মোকারুল ইসলামকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। পরে ওইদিন রাতে থানার হাজতের জানালার গ্রীল কেটে পালিয়ে যায় সে। গতকাল বৃহস্পতিবার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ফুলবাড়ীর সার্কেলের নেতৃত্বে ও হাকিমপুর থানা পুলিশের সহযোগিতায় সন্ধ্যায় হিলি সীমান্তের চুড়িপট্টি এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জে হত্যা মামলার ৩ আসামি গ্রেপ্তার
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের অভিযোগে রাজধানীতে যুবক গ্রেপ্তার
প্রায় ১০ মাস ধরে মুখে ক্ষতচিহ্ন নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন বিপ্লবী বীর বাঘা যতীন!
দুর্বৃত্তদের ভেঙে দেয়ার দীর্ঘ ১০ মাস অতিবাহিত হলেও কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের অগ্রনায়ক বিপ্লবী বীর বাঘা যতীনের সেই ভাস্কর্যটি সংস্কার করা হয়নি। চিঠি চালাচালির মাঝেই আটকে রয়েছে ভাস্কর্যটির সংস্কার কাজ। মুখে ক্ষতচিহ্ন নিয়েই এখন দাঁড়িয়ে আছেন ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের অগ্রনায়ক বিপ্লবী বীর বাঘা যতীনের সেই ভাস্কর্যটি।
গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে দুর্বৃত্তরা কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নে কয়া মহাবিদ্যালয়ের সামনে নির্মিত বাঘা যতীনের ভাস্কর্যটি ভেঙে রেখে যায়। হামলায় বাঘা যতীনের ভাস্কর্যটির মুখ ও নাকের একাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ঘটনার পরদিন কলেজের অধ্যক্ষ হারুন অর রশীদ বাদী হয়ে কুমারখালী থানায় অজ্ঞাত পরিচয় আসামিদের নামে মামলা করেন। মামলা দায়েরের পর গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর কয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আনিসুর রহমানকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। পরবর্তীতে তার দেয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী আনিসুরের সহযোগী দুই যুবলীগ কর্মী সবুজ হোসেন ও হৃদয় আহমেদকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে।
আরও পড়ুন: বাঘা যতীন: যার বীরত্বে কেঁপে উঠেছিল ব্রিটিশ সাম্রাজ্য
পুলিশ জানায়, যুবলীগ সভাপতি আনিসুর রহমানই ভাস্কর্যটি ভাংচুর করার মূল পরিকল্পনাকারী।
কুমারখালী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রাকিবুল ইসলাম জানান, গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর আসামিদের আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন জানানো হয়। আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডে তারা পুলিশকে জানায়, কয়া কলেজের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিরোধের জের ধরে অন্য নেতাদের ফাঁসাতে তারা চারজন মিলে পরিকল্পিতভাবে বাঘা যতীনের ভাস্কর্যটি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটিয়েছেন। এ ঘটনার পর আনিসুরকে দল থেকে বহিষ্কার করে কুমারখালী উপজেলা যুবলীগ।
এ ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী যুবলীগ নেতা আনিসুর রহমান ও তাঁর দুই সহযোগী বর্তমানে জামিনে রয়েছেন। ঘটনার পর থেকে এই মামলার অপর আসামি কয়া গ্রামের বাচ্চু শেখ পলাতক রয়েছেন।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় বাঘা যতীনের ভাস্কর্য ভাঙচুর: যুবলীগ নেতাসহ গ্রেপ্তার ৩
এদিকে ভাস্কর্যটি ভাঙচুরের ঘটনার প্রায় দশ মাসেরও বেশি সময় অতিবাহিত হলেও বিল্পবী বীর বাঘা যতীনের সেই ভাস্কর্যটি সংস্কার বা মেরামত করা সম্ভব হয়নি।
এতদিনেও কেন সংস্কার করা হয়নি বাঘা যতীনের ভাস্কর্যটি জানতে চাওয়া হলে কয়া মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ হারুন অর রশীদ জানান, ভাস্কর্যটি সংস্কার করার জন্য চলতি বছরের ২৬ জানুয়ারি কলেজ অধ্যক্ষ বরাবর জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে সহকারী কমিশনার রিজু তামান্না স্বাক্ষরিত একটি চিঠি দেয়া হয়। ওই চিঠিতে দ্রুত ভাস্কর্যটি সংস্কার করার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়। একই সাথে কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ওই চিঠির অনুলিপি প্রদান করা হয়।
আলোচিত এ ঘটনাটি নিয়ে মামলা আদালতে বিচারাধীন থাকার কারণে আইনি জটিলতা এড়াতে কলেজের পক্ষ থেকে গত ৩ মার্চ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কুমারখালী আদালতের বিচারক সেলিনা খাতুনের আদালতে ভাস্কর্যটি সংস্কারের অনুমতি চেয়ে আবেদন করা হয়। আবেদনের প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট আদালত গত ৭ মার্চ ভাস্কর্য সংস্কারের অনুমতি প্রদান করেন।
অধ্যক্ষ জানান, আদালতের অনুমতি পেয়ে তিনি ওই দিনই ভাস্কর্যটি সংস্কারের জন্য কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে আবেদন করেছেন। কিন্তু পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে মামলার চার্জশীট প্রদান না করা পর্যন্ত ভাস্কর্যটি সংস্কার না করায় জন্য অনুরোধ জানানোর কারণে ভাস্কর্যটি সংস্কার করা সম্ভব হচ্ছে না বলে তিনি দাবি করেন।
তবে অধ্যক্ষের দাবি অস্বীকার করে কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান তালুকদার জানান, পুলিশের পক্ষ থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষকে লিখিত-মৌখিক এ ধরনের কোন নির্দেশনা প্রদান করা হয়নি।
ভাস্কর্য সংস্কারের অগ্রগতি জানতে চাওয়া হলে কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) এসিল্যান্ড তামান্না তাসনিম বলেন, তিনি মাত্র কিছু দিন আগে কুমারখালীতে যোগদান করেছেন। মামলাটি যেহেতু আদালতে বিচারাধীন রয়েছে সে কারণে ভাস্কর্য সংস্কার করা নিয়ে আইনি কোনো জটিলতা আছে কিনা এ বিষয়টি তাঁর জানা নেই।
এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মো.সাইদুল ইসলাম জানান, ভাস্কর্যটি এতদিনেও কেন সংস্কার করা হলো না তা খতিয়ে দেখে যত দ্রুত সম্ভব সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
এদিকে দীর্ঘসময় পার হলেও ভাস্কর্যটি সংস্কার না হওয়ায় জেলার সংস্কৃতিকর্মীরা ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। কুষ্টিয়া জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক আমিরুল ইসলাম বলেন, এটি খুব লজ্জা এবং দুঃখজনক ঘটনা। কুষ্টিয়ার কৃতি সন্তান যে বীরের নাম শুনলে এক সময় ব্রিটিশ শাসক পর্যন্ত ভয়ে কাঁপত সেই বীরের ভাস্কর্যটি দুর্বৃত্তদের হামলার ক্ষত নিয়ে এভাবে দিনের পর দিন দাঁড়িয়ে থাকবে এটি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। তিনি অতি দ্রুত ভাস্কর্যটি সংস্কারের দাবি জানান।
উল্লেখ্য ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের অগ্রনায়ক বিপ্লবী বীর বাঘা যতীনের স্মৃতি ধরে রাখতে কুমারখালী উপজেলা প্রশাসনের অর্থায়নে কয়া মহাবিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ২০১৮ সালে ভাস্কর্যটি নির্মাণ করা হয়।