আসামি
ভরণপোষণ না দেয়ায় সন্তানদের বিরুদ্ধে ৭৫ বছর বয়সী বৃদ্ধার মামলা
চিকিৎসার অভাবে শয্যাশায়ী ৭৫ বছর বয়সী এক বৃদ্ধা দুই সন্তানের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। ওই বৃদ্ধা নিজে আদালতে উপস্থিত হয়ে মামলা করতে না পারায় বিচারক নিজে বৃদ্ধার বাসায় গিয়ে মামলাটি গ্রহণ করেছেন।
বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৪টায় বরিশাল অতিরিক্ত চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাসুম বিল্লাহ মামলাটি গ্রহণ করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সমন জারি করেছেন।
মামলায় বরিশাল নগরীর বৈদ্যপাড়ার জোড়াপুকুর এলাকার জাহানুর বেগম তার ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান ও মেয়ে সাবিনা আক্তারকে বিবাদী করেছেন।
আরও পড়ুন: মিথ্যা মামলা করতে এসে জেল হাজতে বাদী
মামলায় বাদী উল্লেখ করেন, খুলনায় তিনি স্বামীর ঘরে থাকতেন। তার চিকিৎসার খরচের জন্য খুলনার সম্পত্তি বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন তিনি। ক্রেতা বরিশালে আসলে তাদের সাথে কথাও বলেন। তবে ২২ অক্টোবর আসামিরা বরিশালে এসে সম্পত্তি বিক্রি করতে দেবে না বলে জানায় এবং তার ভরণ পোষণ এর জন্য কোনো টাকা পয়সাও দিতে পারবে না বলে জানায়।
তিনি বলেন, ‘আমার স্বামী ২০১৪ সালের ১৪ নভেম্বর মৃত্যুবরণ করেন। পরবর্তীতে আমি বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হই। সর্বশেষ ব্রেইন স্ট্রোক, মেরুদন্ড অচল এবং পিঠে ক্ষত ও প্যারালাইসিস রোগে আক্রান্ত হই’।
মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি ও ভরণ পোষনের আবেদন করা হয়।
বরিশাল সমাজসেবা অধিদপ্তরের প্রবেশন অফিসার সাজ্জাদ পারভেজ বলেন, জাহানুর বেগম পিতা মাতার ভরণপোষণ আইন ২০১৩ এর ৫ ধারা মোতাবেক মোস্তাফিজুর রহমান ও সাবিনা আক্তারের বিরুদ্ধে ওকালতনামা সহ নালিশী দরখাস্ত আদালতে পাঠিয়েছেন।
আরও পড়ুন: হত্যা মামলা: আসল আসামির বদলে নকল আসামির আত্মসমর্পণ!
বাদী পক্ষের আইনজীবী ও নালিশী দরখাস্তের বাহককে জিজ্ঞাসাবাদ করে বিচারক জানতে পারেন বাদী শয্যাশায়ী, যার কারণে তিনি আদালতে আসতে পারেন নি।
সাজ্জাদ পারভেজ আরও জানান, বিচারক নালিশী দরখাস্তের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য বাদীর বাসায় যান। বাদী বৃদ্ধার আইনজীবী ও তার উপস্থিতিতে বাদীর জবানবন্দি রেকর্ড করেন বিচারক। বাদীর অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা প্রমাণ হওয়ায় বিবাদীদের বিরুদ্ধে মামলা গ্রহণ করা হয়।
প্রতারণার অভিযোগে কর্ণফুলী মাল্টিপারপাসের প্রকল্প পরিচালকসহ গ্রেপ্তার ১০
অধিক মুনাফার লোভ দেখিয়ে প্রতারণার অভিযোগে সমবায় ভিত্তিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান কর্ণফুলী মাল্টিপারপাস কো অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডের প্রকল্প পরিচালক (পিডি) শাকিল আহাম্মেদ (৩০) সহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
সোমবার (২৫ অক্টোবর) দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত রাজধানীর পল্লবী এলাকায় কর্ণফুলীর অফিসে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার অন্য ৯ জন হলেন- মো. চাঁন মিয়া (৩৮), এ কে আজাদ (৩৫), মো. রেজাউল (২২), মো. তাজুল ইসলাম (৩১), মো. শাহাবুদ্দিন খাঁন (২৮), আব্দুস ছাত্তার (৩৭), মো. মাসুম বিল্লা (২৯), মো. টিটু মিয়া (২৮) ও মো. আতিকুর রহমান (২৮)।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর ঘর দেয়ার কথা বলে প্রতারণা, একজনের কারাদণ্ড
মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-৪ এর অধিনায়ক (সিও) পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. মোজাম্মেল হক।
তিনি বলেন, মিরপুর এলাকার বেশকিছু ক্ষতিগ্রস্ত ভুক্তভোগীদের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে র্যাব-৪ রাজধানীর মিরপুর মডেল থানাধীন ১১/এ, রোড নং-৬, প্লট-৪, নান্নু সুপার মাকের্টে অভিযান চালিয়ে ‘কর্ণফুলী মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডের অফিস থেকে প্রতারণায় ব্যবহৃত ১৭ টি মুদারাবা সঞ্চয়ী হিসাব বই, ২৬ টি চেক বই, দুটি ডিপোজিট বই, তিনটি সীল, ১২০ টি ডিপিএস বই, একটি রেজিস্ট্রার বই, একটি নোটবুক, একটি স্যালারি শিট, ৩০ টি জীবন-বৃত্তান্ত, পাঁচটি ক্যালেন্ডার, আট পাতা ডিপিএস এর মাসিক হিসাব বিবরণী, তিনটি পাসপোর্ট, একটি ডিভিআর মেশিন, ভুক্তভোগীদের অভিযোগ কপি ২৮ পাতা, একটি ব্যানার ও নগদ চার লাখ ২২ হাজার টাকা জব্দ করে।
প্রতারক চক্রের মাঠ পর্যায়ের কর্মী ও সদস্য রয়েছে। তারা রাজধানীর মিরপুরস্থ বিভিন্ন বস্তি এলাকার গার্মেন্টসকর্মী, রিকশাচালক, ভ্যানচালক, অটোচালক, সবজি ব্যবসায়ী, ফল ব্যবসায়ী, গৃহকর্মী ও নিম্নআয়ের মানুষদের টার্গেট করে স্বল্প সময়ে মাসিক মেয়াদ শেষে অধিক মুনাফা লাভের প্রলোভন দেখিয়ে তাদের কোম্পানী’তে বিনিয়োগ ও ডিপিএস করতে উদ্বুদ্ধ করত। ভিকটিমদের প্রলুব্ধ করে তাদের বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে নানান কৌশলে প্রতারক চক্রের অফিস কার্যালয়ে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা হতো। এরপর তাদেরকে প্রতি গ্রাহক ও টার্গেট সংগ্রহের জন্য নির্দিষ্ট অংকের টাকা দেয়া হতো।
গ্রেপ্তার শাকিল আহম্মেদ ও চাঁন মিয়া ভুক্তভোগীদের বিভিন্নভাবে প্রলোভন দেখিয়ে স্বল্প সময়ে অধিক মুনাফা দেয়ার নিশ্চয়তা দিয়ে কর্ণফুলী মাল্টিপারপাসে বিনিয়োগ ও ডিপিএস করতে আগ্রহী করত।
আরও পড়ুন: ফেসবুকে চাকরির লোভনীয় বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রতারণা: গ্রেপ্তার ৩
‘কর্ণফুলী মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড’ এর মালিক ও মূল অভিযুক্ত জসিম উদ্দিন পলাতক। তার নিজ জেলা মুন্সিগঞ্জ। সে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স পাশ করে। তার দুইজন স্ত্রী ও দুই পুত্র সন্তান রয়েছে। আগে একটি ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে রিপ্রেজেন্টিটিভ হিসেবে কর্মরত ছিল। পরবর্তীতে ২০০৩ সালে সে অল্প সময়ে অধিক মুনাফা লাভের আশায় এই প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করে। কিন্তু সমবায় অধিদপ্তরের নিবন্ধন লাভ করে ২০০৬ সালে। ২০১৩ সালে সমিতিটির পূনর্নিবন্ধন হয়।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮-২০১৯ সালের তাদের মোট সদস্য সংখ্যা ৫৩৭ জন। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে নিয়ম বহির্ভূতভাবে ২৫-৩০ হাজার সদস্য গ্রাহক সংগ্রহ করেছে। সে কোম্পানিতে নতুন সদস্য আনার লক্ষ্যে পুরাতন সদস্যদের চাপ দিতো ও তাদের মুনাফার লোভ দেখাতো।
র্যাব-৪ এর সিও আরও বলেন, জসিম অত্যন্ত ধূর্ত প্রকৃতির, অধিকাংশ সময়েই সমিতির অফিসে আসত না। সমিতির ব্যাংক হিসাবে টাকা জমা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তা উত্তোলন করে অন্যত্র স্থানান্তর বা জমি ও ফ্ল্যাট কিনে টাকা লেয়ারিং করত।
গ্রেপ্তার আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন।
আরও পড়ুন: ই-অরেঞ্জের মালিকসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামে প্রতারণা মামলা
মূল অভিযুক্ত জসিম উদ্দিনকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে র্যাব-৪ এর অধিনায়ক মোজাম্মেল হক বলেন, অভিযানের পর থেকে জসিম উদ্দিন পলাতক।
মনপুরায় গৃহবধুকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, প্রধান আসামি গ্রেপ্তার
ভোলার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা মনপুরায় গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ মামলার পাঁচ আসামির মধ্যে প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সোমবার দিবাগত রাত ৩টায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তার মো. শিপন ওরফে আলাউদ্দিন উপজেলার উত্তর সাকুচিয়া ইউনিয়নের চরগোয়ালিয়া গ্রামের ৫ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা কাইয়ুম হাওলাদারের ছেলে।
মামলার অন্য চার আসামি হলো- মো. বেল্লাল মেকার, মো. হেলাল, মো. ইউসুফ দালাল, মো. সেলিম মেকার।
আরও পড়ুন: মাগুরায় স্কুলছাত্রীকে আটকে রেখে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ: গ্রেপ্তার ২
মামলার এজাহার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত রবিবার রাতে দুই শিশু সন্তানকে নিয়ে নির্যাতিত ওই গৃহবধূ নিজ বাড়িতে ঘুমাচ্ছিলেন। রাত ১১ টার দিকে নারী কন্ঠে তার নাম ধরে একাধিকবার ডাক দেয়। ঘরের দরজা খুলার সাথে সাথে অভিযুক্ত পাঁচজন তাকে হাত, পা ও মুখ বেঁধে পাশের বাগানে নিয়ে শারীরিক নির্যাতনসহ ধর্ষণ করে চলে যায়। পরে রাত ১ টায় স্থানীয়রা রক্তাক্ত অবস্থায় ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করে মনপুরা হাসপাতালে ভর্তি করে। সোমবার বিকালে তার অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ভোলা জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়। এদিকে ঘটনার দিন তার স্বামী সাগরে মাছ ধরতে যাওয়ায় বাড়িতে ছিলেন না। সোমবার স্বামী বাড়িতে আসলে গৃহবধূ রাতে বাদী হয়ে এই পাঁচজনকে আসামি করে মনপুরা থানায় মামলা করেন।
আরও পড়ুন: গাজীপুরে পার্লার কর্মীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ: গ্রেপ্তার ২
এ ব্যাপারে মনপুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদ আহমেদ সাংবাদিকদের জানান, এ ঘটনায় করা মামলার প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অপর চার আসামিকে ধরতে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
হত্যা মামলা: আসল আসামির বদলে নকল আসামির আত্মসমর্পণ!
কুষ্টিয়ায় আলোচিত একটি হত্যা মামলায় আসল আসামির বদলে নকল আসামিকে আদালতে আত্মসমর্পণ করানোর অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি ফাঁস হয়ে যাওয়ায় জেলা জুড়ে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে। এ নিয়ে আদালত পাড়ায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। ইতোমধ্যে মামলার স্বাক্ষীরা বিজ্ঞ আদালতে দাঁড়িয়ে আসামিকে ভুয়া বলে শনাক্ত করেছেন।
এদিকে আসল আসামির বদলে নকল আসামির আত্মসমর্পণের বিষয়টি ফাঁস হয়ে যাওয়ায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সোমবার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম দৌলতপুর, কুষ্টিয়ার আমলী আদালতে আসামির পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানালে বিজ্ঞ আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন বলে জানা গেছে।
আদালত সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের গত ৬ জুন সকাল আনুমানিক সাড়ে ৮ টার দিকে দৌলতপুর উপজেলার চরদিয়ার কল্যাণপুর দরবার শরীফে রাশেদুল ইসলাম রাশেদ (২৮) নামের এক ভক্তকে মোবাইল চুরির অপরাধে দরবার শরীফের লোকজন ওই দরবার শরীফের বাগানের মধ্যে নিয়ে গিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে। নিহত রাশেদ দৌলতপুর উপজেলার হরিণগাছী গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে। রাশেদ ওই দরবার শরীফের মুরিদ ছিলেন এবং ঘটনার চার থেকে পাঁচ মাস আগে থেকেই ওই দরবার শরীফে বসবাস করতেন। এ ঘটনায় নিহতের বাবা আব্দুর রাজ্জাক বাদী হয়ে দৌলতপুর থানায় স্থানীয় চরদিয়াড় দরবার শরীফের কথিত পীর সৈয়দ তাছের আহমেদকে প্রধান আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। হত্যাকান্ডের ঘটনায় দৌলতপুর থানা পুলিশ ছয়জন আসামিকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে পাঠিয়েছে। হত্যাকান্ডের পর থেকেই মামলার প্রধান আসামি চরদিয়াড় দরবার শরীফের কথিত পীর সৈয়দ তাছের আহমেদসহ তাঁর ভক্ত অনুসারীরা আত্মগোপন করেন।
আরও পড়ুন: ২ হত্যা মামলার প্রধান আসামি যুক্তরাজ্য প্রবাসী ঢাকায় গ্রেপ্তার
পীর তাছের দৌলতপুর উপজেলার কল্যাণপুর গ্রামের মৃত আজের প্রামাণিকের ছেলে। চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলা দৌলতপুর থানা পুলিশের কাছ থেকে সিআইডি’র হাতে ন্যাস্ত করা হয়। এদিকে পুলিশের গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত থাকায় গত ১৭ অক্টোবর কুষ্টিয়ার আদালতে ওই দরবার শরীফের ভক্ত একজনকে দরবার শরীফের কথিত পীর সৈয়দ তাছের আহমেদ সাজিয়ে আত্মসমর্পণ করানো হয়। সম্প্রতি আসল তাছেরের পরিবর্তে নকল তাছের সাজিয়ে আদালতে আত্মসমর্পণ করানোর বিষয়টি ফাঁস হয়ে যাওয়ায় এ নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। আদালত পাড়ায় ব্যাপক চাঞ্চল্য দেখা দেয়। এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডি’র পরিদর্শক মো. সেলিম জানান, মামলার সাক্ষীরা আদালতে আত্মসমর্পণকারী আসামি চরদিয়াড় দরবার শরীফের কথিত পীর সৈয়দ তাছের আহমেদ নন, তাছেরের বদলে অন্য কাউকে আদালতে আত্মসমর্পণ করানো হয়েছে এমন দাবি করেন। বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য তিনি সোমবার (২৫ অক্টোবর) জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম দৌলতপুর, কুষ্টিয়া আমলী আদালতে আসামির পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানান। তিনি জানান, ওই দিনে কয়েক জন সাক্ষী বিজ্ঞ আদালতের সামনে উক্ত আসামিকে নকল তাছের বলে দাবি করেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে বিজ্ঞ আদালত আসামির তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এই পুলিশ কর্মকর্তা আরও জানান, প্রাথমিকভাবে যে তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেছে তাতে ধারণা করা হচ্ছে আদালতে যিনি তাছের হিসেবে আত্মসমর্পণ করেছেন তিনি প্রকৃত পক্ষে তাছের নন; অন্য কেউ। বুধবার (২৭ অক্টোবর) থেকে আসামির রিমান্ড শুরু হবে। রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে এ ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জে হত্যা মামলায় ভাইসহ ২ ভাতিজার যাবজ্জীবন
মামলার সাক্ষী রেজা জানান, সোমবার তাছের নামের ওই ব্যক্তিকে আদালতে হাজির করা হলে তাঁরা (সাক্ষীরা) মুখ দেখে বিজ্ঞ আদালতকে জানান তিনি প্রকৃত তাছের নন। তিনি দাবি করেন, ওই ব্যক্তি ওই দরবার শরীফেরই একজন ভক্ত।
এদিকে আদালতের একটি সূত্র জানায়, বিজ্ঞ আদালতের কাছে আত্মসমর্পণের সময় তাছেরের একটি জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি জমা দেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে সাক্ষীরা জানান, তাছেরের ছবির জায়গায় কম্পিউটারের সাহায্যে ওই ব্যক্তির ছবি বসিয়ে নকল জাতীয় পরিচয় পত্র তৈরি করে আদালতে জমা দেয়া হয়েছে। জানতে চাওয়া হলে কুষ্টিয়া জজ কোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অনুপ কুমার নন্দী বিষয়টির প্রাথমিক সত্যতা স্বীকার করে জানান, এ ব্যাপারে সম্পূর্ণ নিশ্চিত হওয়ার জন্য বিজ্ঞ আদালতের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনের কাছে আসামি সৈয়দ তাছের আহমেদের আসল জাতীয় পরিচয় পত্র দাখিল করার কথা বলা হয়েছে।
কোরআন অবমাননা: সন্দেহভাজন ইকবাল ৭ দিনের রিমান্ডে
কুমিল্লায় পবিত্র কোরআন অবমাননার ঘটনায় মূল সন্দেহভাজন ইকবাল হোসেনসহ চারজনের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
শনিবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মফিজুল ইসলাম তাদের আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে জ্যৈষ্ঠ বিচারিক হাকিম মিথিলা জাহান নিপা তাদের প্রত্যেকের সাত দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এ মামলার অন্য তিন আসামি হলেন ইকরাম এবং দরগাবাড়ি মাজারের দুই সহকারী খাদেম হাফেজ হুমায়ুন ও ফয়সাল।
আরও পড়ুন: কোরআন অবমাননার ঘটনায় সন্দেহভাজন ইকবাল কক্সবাজারে গ্রেপ্তার
এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত এলাকা থেকে কুমিল্লায় পূজামণ্ডপে কোরআন রেখে অবমাননার ঘটনায় সন্দেহভাজন ইকবাল হোসেনকে গ্রেপ্তার করে কক্সবাজার জেলা পুলিশ। এছাড়া অন্য তিন আসামিকে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
উল্লেখ্য,গত ১৩ অক্টোবর ভোরে নানুয়াদিঘির পাড়ের পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন শরিফ পাওয়া যায়। এরপরই দেশের কয়েক স্থানে সংঘর্ষ ও হামলার ঘটনা ঘটে। ঘটনার জেরে ওই দিন চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে হিন্দুদের ওপর হামলা চালানো হয়। এতে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে পাঁচ জন নিহত হয়।
আরও পড়ুন: কুমিল্লাসহ সব বিচ্ছিন্ন ঘটনা উদ্দেশ্যমূলক: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
পরদিন নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে হিন্দুদের মন্দির,মণ্ডপ ও দোকানপাটে হামলা,ভাঙচুর চালানো হয়। সেখানে হামলায় দুই জন নিহত হন। এরপর রংপুরের পীরগঞ্জে হিন্দু বসতিতে হামলা করে ভাঙচুর,লুটপাট ও ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। এরইমধ্যে শতাধিক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চার্জশিটভুক্ত দুই আসামির মনোনয়ন বাতিল করল আ’লীগ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলা সদরে হিন্দুপল্লি তে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ মামলার চার্জশিটভুক্ত দুই আসামি দেওয়ান আতিকুর রহমান আখি ও আবুল হাসেমকে আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দেয়া আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে।
বুধবার (১৩ অক্টোবর) রাতে তাদের মনোনয়ন বাতিল করা হয় বলে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগকে জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: সিংগাইর পৌর নির্বাচন: ৩ মেয়র প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল
দেওয়ান আতিকুর রহমান আখিকে নাসিরনগর উপজেলার হরিপুর ইউনিয়ন ও আবুল হাসেমকে নাসিরনগর সদর ইউনিয়ন থেকে চেয়ারম্যান পদে লড়ার জন্য মনোনয়ন দিয়েছিল কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ। তবে তারা দুইজন গত ২০১৬ সালের ৩০ অক্টোবর হিন্দুপল্লিতে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি। তাদেরকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেয়ায় সমালোচনার ঝড় উঠে। বিষয়টি নিয়ে অস্বস্তিতে পড়ে জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারাও।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকার বলেন, তাদের দুইজনের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে বলে গতকাল রাতে কেন্দ্র থেকে আমাদের জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: দ্বিতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচনে আ’লীগের প্রার্থী ঘোষণা
নতুন করে নাসিরনগর সদর ইউনিয়নে পুতুল রানী বিশ্বাস ও হরিপুর ইউনিয়নে ওয়াসিম আহমেদকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে।
আইসিটি মামলা: লেখিকা তসলিমা নাসরিনসহ তিন জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) আইনে করা মামলায় লেখিকা তসলিমা নাসরিনসহ তিন জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিটিটিসি ইউনিটের পরিদর্শক নাজমুল নিশাত।
বৃহস্পতিবার (১৪ অক্টোবর) আদালতের সাধারণ নিবন্ধন জিআর শাখা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলার অপর দুই আসামি হলেন, উইমেন চ্যাপ্টারের সম্পাদক সুপ্রীতি ধর লিপা ও ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সুচিষ্মিতা সিমন্তি।
আরও পড়ুন: আইসিটি আইনের মামলায় বিএনপিপন্থি ১১ আইনজীবীর আগাম জামিন
সূত্র জানায়, গত তিন অক্টোবর ঢাকার মূখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে এ অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। তবে এ মামলায় আরেক আসামি উইমেন চ্যাপ্টারের উপদেষ্টা লীনা হকের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে অব্যাহতির আবেদন করেছেন তদন্ত কর্মকর্তা।
এর আগে ২০১৮ সালের ১৯ এপ্রিল ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে মাসিক পত্রিকা আল বাইয়েনাত সম্পাদক আল্লামা মুহম্মদ মাহবুব আলম বাদী হয়ে তসলিমা নাসরিনসহ চার জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে শাহজাহানপুর থানাকে মামলাটি এজাহার হিসেবে নথিভুক্তের নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুন: পরীমণির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র
মামলার এজাহারে বলা আছে, উইমেন চ্যাপ্টার নামক ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সুপ্রীতি ধর, সুচিষ্মিতা সিমন্তি ও লীনা হকরা প্রায়ই পবিত্র ইসলামের বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক লেখা প্রকাশ করেন। তারই ধারাবাহিকতায় ২০১৮ সালের ১৭ এপ্রিল বিকেলে তসলিমা নাসরিনের ‘ধর্ষকের কাছে নারীর কোনও ধর্ম নেই’ শীর্ষক একটি নিবন্ধ প্রকাশিত হয়।
ওই নিবন্ধে লেখা হয়েছিল,‘পয়গম্বরও আরব দেশে ইহুদি পুরুষদের মেরে ওদের মেয়েদের নিজের সঙ্গীদের মধ্যে বিতরণ করেছিলেন।’ লেখিকার এ বক্তব্যে মামলার বাদীর দ্বীনি অনুভূতিতে আঘাত লাগে বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা আছে।
আরও পড়ুন: সাংবাদিক কাজলের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নিয়েছেন আদালত
চট্টগ্রামে মিতু হত্যা: আসামি ভোলার জামিন নামঞ্জুর
চট্টগ্রামে সাবেক এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী মিতু হত্যা মামলার অন্যতম আসামি এহতেশামুল হক ভোলার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার (১৪ অক্টোবর) দুপুরে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ শেখ আশফাকুর রহমানের আদালতে আসামির পক্ষ থেকে জামিনের আবেদন করা হলে, আদালত জামিন নামঞ্জুর করেন।চট্টগ্রাম মহানগর পিপি অ্যাডভোকেট মো. ফখরুদ্দিন চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, হাইকোর্ট বেঞ্চ ভোলাকে চার সপ্তাহের আগাম জামিন দেন। জামিনের মেয়াদ শেষে তাকে বিচারিক (নিম্ন) আদালতে আত্মসমর্পণ করারও নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কিন্তু সে আজকে আত্মসমর্পণ না করে বরং সময়ের আবেদন করে। তার এই আবেদনে আমরা তীব্র বিরোধিতা করি। ভোলা হাইকোর্টের নির্দেশনা পালন না করায় আদালত সময়ের আবেদন নামঞ্জুর করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
আরও পড়ুন: মিতু হত্যা মামলায় জামিন পাননি বাবুল আক্তারএসময় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো এর পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমা উপস্থিত ছিলেন।এর আগে গত ১৫ সেপ্টেম্বর আসামি এহতেশামুল হক ভোলাকে চার সপ্তাহের জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে জামিনের মেয়াদ শেষে তাকে বিচারিক (নিম্ন) আদালতে আত্মসমর্পণ করারও নির্দেশ দেয়া হয়েছে। নিহত মিতুর বাবার দায়ের করা মামলায় জামিন সংক্রান্ত বিষয়ে করা আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজলের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।চাঞ্চল্যকর মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় অস্ত্র সরবরাহকারী এহতেশামুল হক ভোলা। ২০১৬ সালের ২৭ জুন চট্টগ্রাম নগরীর বাকলিয়া থানা এলাকা থেকে ভোলাকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ। পরে ভোলার স্বীকারোক্তি মতে ভোলার সহযোগী মনিরের হেফাজত থেকে মিতু হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। এই ঘটনায় মিতু হত্যা ও অস্ত্রের দুই মামলায় ভোলাকে আসামি করা হয়।
আরও পড়ুন: মিতু হত্যা: পলাতক ৩ আসামির বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞাপ্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ৫ জুন সকাল ৭টা ১৭ মিনিটে চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি মোড়ে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় মোটরসাইকেলে করে তিন দুর্বৃত্ত মিতুকে ঘিরে ধরে। প্রথমে তারা তাকে গুলি করে। এরপর কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে পালিয়ে যায়। ওই সময় মিতুর স্বামী বাবুল আক্তার পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতি পেয়ে পুলিশ সদর দপ্তরে যোগ দিয়ে ঢাকায় অবস্থান করছিলেন।এ ঘটনায় নগরীর পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাতদের আসামি করে হত্যা মামলা করেন বাবুল আক্তার। মামলাটি চট্টগ্রামের নগর গোয়েন্দা পুলিশের কাছে তিন বছর ১১ মাস তদন্তে থাকার পর গত বছরের মে মাসে মামলাটি পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশনে (পিবিআই) হস্তান্তর করা হয়। মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা হলেন পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমা।তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে বাবুল আক্তারকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই। এরপর মিতু হত্যাকাণ্ডে বাবুল আক্তারকে প্রধান আসামি করে মোট আট জনের বিরুদ্ধে গত ১২ মে মিতুর বাবা মোশারফ হোসেন পাঁচলাইশ থানায় এজাহার দায়ের করেন।
আরও পড়ুন: মিতু হত্যা: আদালতে জবানবন্দি দেননি বাবুল আক্তারএজাহারে সাবেক এসপি মিতুর স্বামী বাবুল আক্তার, কিলিং স্কোয়াডের সদস্য মো. কামরুল ইসলাম সিকদার ওরফে মুসা, এহতেশামুল হক ওরফে ভোলাইয়া, মো. মোতালেব মিয়া ওরফে ওয়াসিম, মো. আনোয়ার হোসেন, মো. খায়রুল ইসলাম ওরফে কালু, ওরফে কসাই কালু, মো. সাইদুল ইসলাম সিকদার ওরফে সাকু মাইজ্যা ও শাহজাহান মিয়াকে আসামি করা হয়েছে। যদিও এদের মধ্যে দু’জন পুলিশের সঙ্গে 'বন্দুকযুদ্ধে' ইতোমধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন এবং বর্তমানে জেলে আছে দু’জন। পুলিশের মতে, নিখোঁজ রয়েছেন কিলিং স্কোয়াডের নেতৃত্বদানকারী মুসা।এছাড়া স্ত্রী হত্যা মামলার প্রধান আসামি বাবুল আক্তারকে পাঁচ দিনের রিমান্ড নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পিবিআই। রিমান্ড শেষে প্রথমে আদালতে জবানবন্দি দেয়ার কথা থাকলেও পরে জবানবন্দি দেননি বাবুল। ২৯ মে থেকে বাবুল আক্তার ফেনী কারাগারে আছেন।
শেরপুরে মা-মেয়েকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ: দুই আসামি কারাগারে
শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে মা ও মেয়েকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের মামলায় গ্রেপ্তার দুই আসামিকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। সোমবার দুপুরে তাদের আদালতে সোপর্দ করা হলে অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম মো. সুলতান মাহমুদ তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এ দিন জ্যৈষ্ঠ বিচারিক হাকিম ফারিন ফারজানা ধর্ষণের শিকার কিশোরীর (১৬) জবানবন্দি গ্রহণ করেছেন। পরে বয়স নির্ধারণী পরীক্ষার জন্য তাকে জামালপুর শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। আদালত পরিদর্শক খন্দকার শহীদুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
কারাগারে পাঠানো দুই আসামি হলেন- নালিতাবাড়ী উপজেলার পলাশীকুড়া গ্রামের আব্দুল বাছেদ আলীর ছেলে আসন্ন ইউপি নির্বাচনে মেম্বার পদপ্রার্থী আব্দুস সাত্তার (৪২) এবং আব্দুস সোবহানের ছেলে সাদেক আলী (৩০)।
এদিকে সোমবার শেরপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ধর্ষণের শিকার মা ও মেয়ের ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. খাইরুল কবীর সুমন তাদের মেডিকেল পরীক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, নারী চিকিৎসকদের নিয়ে গঠিত তিন সদস্যের মেডিকেল বোর্ড নালিতাবাড়ীর ধর্ষণ মামলার ভুক্তভোগী মা ও মেয়ের ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন করেছেন।
আরও পড়ুন: শেরপুরে মা-মেয়েকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার ২
থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়,কয়েকদিন আগে ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূ তার কিশোরী কন্যাকে (১৬) নিয়ে নালিতাবাড়ীতে তার বাবার বাড়িতে বেড়াতে যান। বেড়ানো শেষে শনিবার বেলা ১১টার দিকে ইজিবাইকে করে শেরপুর যাওয়ার উদ্দেশে বের হন। কিন্তু স্থানীয় এক দালাল ও ওই গৃহবধূর পাড়া-প্রতিবেশী ভাই তাদের সাথে নিয়ে সারাদিন নালিতাবাড়ীর বিভিন্ন স্থানে ঘুরাফেরা করার পর রাতে পলাশীকুড় গ্রামে নিয়ে যায়। পরে তাদের কৌশলে একটি নির্মাণাধীন জনশুন্য বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে স্থানীয় সাত ব্যক্তি মিলে মা এবং মেয়েকে বাড়ির পৃথকস্থানে রাতভর পালাক্রমে ধর্ষণ করে পালিয়ে যায়। রবিবার সকালে ভুক্তভোগী মা-মেয়ে বাড়ি ফিরে ঘটনা প্রকাশ করলে স্বজনরা ৯৯৯ কল করেন।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী গৃহবধূ বাদী হয়ে নালিতাবাড়ী থানায় জড়িত সাত জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। পরে নালিতাবাড়ী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বছির আহমেদ বাদলের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে আব্দুস সাত্তার ও সাদেক আলী গ্রেপ্তার করা হয়।
এ বিষয়ে নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বছির আহমেদ বাদল জানান, রবিবার সকালে ৯৯৯ থেকে ম্যাসেজ আসার সঙ্গে সঙ্গে আমরা অভিযান চালিয়ে জড়িত দুই জনকে আটক করি। এ ঘটনায় ধর্ষণের শিকার গৃহবধূর করা মামলায় ওই দুই জনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে সোমবার আদালতে সোপর্দ করা হলে তাদের জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। মামলার অন্য আসামিরা পলাতক রয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
আরও পড়ুন: নাটোরে প্রতিবন্ধী শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ
৯৯৯ এ কল: শিশু ধর্ষণের অভিযোগে চাচাতো ভাই আটক
কালিয়ার স্কুলছাত্র তামজিদ হত্যা মামলায় ৫ আসামির খালাশ
নড়াইলের কালিয়ায় ক্রিকেট খেলতে গিয়ে২০১১ সালে সতীর্থ খেলোয়াড়ের ব্যাটের আঘাতে স্কুলছাত্র মো.তামজিদ খন্দকার (১৫) নিহতের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার পাচঁ আসামির সকলকেই বেকসুর খালাশ দিয়েছেন আদালত। দীর্ঘ সাড়ে ১০ বছর পর বৃহস্পতিবার নড়াইলের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মো.কেরামত আলী আসামিদের খালাশের এ আদেশ দেন।
আরও পড়ুন: কুমিল্লায় প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে নিজের মেয়েকে হত্যা
আসামি পক্ষের আইনজীবি অ্যাড.কাজী বদরুল আলম জানান, কালিয়া উপজেলার কলাবাড়িয়া গ্রামের স্থানীয় ছেলেদের ক্রিকেট খেলার সময় বিগত ২০১১ সালের ১২ মার্চ বিকালে ওই গ্রামের তৈয়ব খন্দকারে ছেলে কলাবাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্র তামজিদ তার সহপাঠী সতীর্থ খেলোয়াড় একই গ্রামের তারিকুল ইসলামের ছেলে আমিনুর রহমানের ব্যাটের আঘাতে আহত হয়। পরদিন তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলে ১৫ মার্চ চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
মামলাটি নড়াইলের অতিরিক্ত জেলা জজ আদালতে বিচারের জন্য ন্যস্ত হলে আদালত ১৬ স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য গ্রহন শেষে গত বুহস্পতিবার আসামীদেরকে বেকসুর খালাশ প্রদান করেছেন।
আরও পড়ুন: প্রেমিকাকে বাড়িতে ডেকে হত্যার পর প্রেমিকের ‘আত্মহত্যা’
বাদি পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন, অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাড.নূর মহম্মাদ ও অ্যাড.মো.তোজাম্মেল হক। রায়ের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে অ্যাড.নুর মহম্মাদ মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।