মাগুরা
মাগুরায় স্কুলছাত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
মাগুরায় দশম শ্রেণির এক স্কুল ছাত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।শুক্রবার বিকালে জেলা শহরের তাঁতিপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।
মৃত অংকিতা পোদ্দার (১৬) ওই এলাকার অরূপ কুমার পোদ্দারের মেয়ে এবং স্থানীয় সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী।
স্থানীয়রা জানায়, অংকিতার বাবা ব্যাংক কর্মকর্তা অরূপ কুমার পোদ্দার যশোর রুপালী ব্যাংকের অঞ্চলিক শাখার সিনিয়র প্রিন্সিপল অফিসার হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। মা শ্যামলী সাহা মাগুরা শিবরামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। মা সকালে কর্মস্থলে চলে যাওয়ার পর অংকিতা নিজ ঘরের দরজা বন্ধ করে রাখে। দীর্ঘক্ষণ সাড়া শব্দ না পেয়ে স্থানীয়রা বিকালে দরজা ভেঙে তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
আরও পড়ুন: বরিশালে নারীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
মাগুরা ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মো. রফিকুল এহসান বলেন, ‘গলায় ওড়না দিয়ে ফাঁস লাগিয়ে স্কুল ছাত্রীটি আত্মহত্যা করেছে।’
মাগুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুস্তাফিজুর রহমান জানান, নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে কোন অভিযোগ না থাকায় ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশটি পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে মাগুরা সদর থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জে গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
মাগুরায় পূর্ব শত্রুতার জেরে বৃদ্ধকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ
মাগুরা সদর উপজেলায় পূর্ব শত্রুতার জেরে এক বৃদ্ধকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। শনিবার বিকালে উপজেলার শ্রীরামপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত জায়েদ জোয়াদ্দার (৫০) ওই গ্রামের মসিয়ার জোয়াদ্দারের ছেলে।
জানা যায়, শনিবার বিকালে জমিতে কাজ করার সময় প্রতিপক্ষের লোকজন তাকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে এবং পায়ের রগ কেটে দেয়। পরে ভোররাতের দিকে তার মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুন: রিকশাচালকের বিরুদ্ধে ‘স্ত্রী-ছেলেকে কুপিয়ে হত্যা’র অভিযোগ
হাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজাহারুল হক আখরোট জানান, হাজীপুর ইউনিয়ন বিএনপির সহসভাপতি আরজু মোল্লা ও হাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৩নং ওয়ার্ডের মেম্বার তাহাজ্জত হোসেনের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে একই ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য জায়েদ জোয়াদ্দারের বিরোধ চলছিল। শনিবার বিকালে নিজ জমিতে কাজ করার সময় প্রতিপক্ষ আরজু মোল্লা ও তাহাজ্জত মেম্বারের লোকজন জায়েদ জোয়াদ্দারের ওপর হামলা চালায়। এ সময় হামলাকারীরা তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে ও পায়ের রগ কেটে দেয়।
গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয়রা জায়েদ জোয়াদ্দারকে উদ্ধার করে মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ভোররাতে ঢাকায় নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
মাগুরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান জানান, সামাজিক বিরোধের জের ধরে সদর উপজেলার শ্রীরামপুর গ্রামে প্রতিপক্ষের হামলায় জায়েদ জোয়াদ্দার নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, লাশের ময়নাতদন্ত চলছে। এ ব্যাপারে সদর থানায় মামলা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সাবেক ইউপি সদস্যকে কুপিয়ে হত্যা, গ্রেপ্তার ২
প্রবাসীকে কুপিয়ে হত্যা, ১১ আসামি গ্রেপ্তার
মাগুরায় ভারতীয় নাসিক এন-৫৩ জাতের পেঁয়াজ চাষে সফলতা
মাগুরার শ্রীপুর উপজেলায় পরীক্ষামূলক ভারতীয় নাসিক এন-৫৩ জাতের পেঁয়াজ চাষে সফলতা এসেছে। জাতটি মূলত গ্রীষ্মকালীন। ফলে দেশে শীতকালীন পেঁয়াজ শেষ হলে বাজারে যে সংকট দেখা দেয় তা মোকাবিলায় নতুন সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
শ্রীপুর উপজেলার কৃষি অফিসের প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় মূলত পরীক্ষামূলক জাতটির চাষ করা হয়েছে।
পেঁয়াজের বাজারদরে যে কতোটা আগুন লাগতে পারে তা এর আগে মোটামুটি সবাই দেখেছে। ভারতসহ একাধিক দেশ থেকে তখন পেঁয়াজ আমদানি করতে হয়। এ কারণেই দেশে পেঁয়াজের উৎপাদন বাড়াতে এই পদক্ষেপ নিয়েছে কৃষি বিভাগ।
এবার বর্ষা মৌসুমে উপজেলার ৩০ হেক্টর জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে জাতটির চাষ শুরু করা হয়। এই পেঁয়াজের বীজ, সার ও বীজতলা করার পলিথিনসহ বীজতলা তৈরির সকল উপকরণ চাষিদের বিনামূল্যে দিয়েছে কৃষি বিভাগ।
আরও পড়ুন: দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের ৬ জেলায় পেঁয়াজ চারা সঙ্কটের আশঙ্কা
গত সেপ্টেম্বরে চাষিরা বীজতলা করেন। এরপর বীজতলা থেকে চারা তুলে জমিতে রোপণ করেছেন। এখন পেঁয়াজ উঠতে শুরু করেছে।
উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে উপজেলাতে ৩০ হেক্টর জমিতে এ পেঁয়াজের চাষ হয়েছে। এই পেঁয়াজ চাষে উপজেলার ২২৫ জন চাষিকে এক কেজি বীজ ও সারসহ বিভিন্ন উপকরণ প্রণোদনা দেয়া হয়েছিল।
চলতি মৌসুমে ৫৪০ মেট্রিক টন পেঁয়াজের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। যার বাজার মূল্য প্রায় পাঁচ লাখেরও বেশি টাকা। হেক্টর প্রতি ১৮ মেট্রিক টন ফলনের আশা কৃষি বিভাগের।
ডিসেম্বরে প্রথম সপ্তাহ থেকে নাসিক এন-৫৩ জাতের গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ উঠতে শুরু করেছে। বিঘা প্রতি ফলন হয়েছে ৬০ থেকে ৬৫ মণ। লাল রঙের প্রায় প্রতিটি পেঁয়াজের ওজন হয়েছে ২৫০ থেকে ৩৫০ গ্রাম। বাজারে পেঁয়াজের দাম এখন কম হলেও ফলন ভালো হওয়ায় লাভের আশা করছেন তারা। অসময়ে চাষ ও ফলন ভালো হওয়ায় অনেক এই পেঁয়াজ চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছে। আগামী বছর এ পেঁয়াজ চাষ আরও বৃদ্ধির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
আরও পড়ুন: পেঁয়াজ সংরক্ষণে আলোর মুখ দেখাচ্ছে ‘এয়ার ফ্লো মেশিন’
উপজেলার আমলসার ইউনিয়নের কুদলা গ্রামের কৃষক মিজানুর রহমান বলেন, আমি এই পেঁয়াজের চাষ করে অনেক লাভবান হয়েছি। এক একটি পেঁয়াজের ওজন ৩০০ থেকে ৪০০ গ্রাম হয়েছে। এই পেঁয়াজ তোলার পর এই জমিতে আবারও পেঁয়াজ লাগাবো। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে বীজ, সারসহ সব জিনিস বিনামূল্যে দিয়েছে। বিভিন্ন সময় কৃষি উপ-সহকারী অফিসাররা খোঁজ-খবর নিয়েছেন এবং পরামর্শ দিয়েছেন। আগামী বছর এ পেঁয়াজ আরও বেশি লাগাবো।
উপজেলার গয়েশপুর ইউনিয়নের কৃষক মোকাদ্দেশ হোসেন বলেন, আশেপাশের কৃষকেরা পেঁয়াজ দেখে অবাক হচ্ছেন এবং এ পেঁয়াজ চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছে। ফলন ভালো হয়েছে। পাট কিংবা আউশ ধান তোলার পরে জমিটা আগে পতিত পড়ে থাকতো। কৃষি বিভাগের পরামর্শে এবার নাসিক এন-৫৩ জাতের গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষ করে বাড়তি আয় হলো। আগামী বছরও এই পেঁয়াজ চাষ করবো।’
শ্রীপুর উপজেলা কৃষি উপ-সহকারী মেহেদি হাসান জানান, শীতকালে তাদের এলাকায় স্থানীয় ‘মুড়িকাটা’ নামের একটি জাতের পেঁয়াজ চাষ হয়। বর্ষাকালে দেশে বারি পেঁয়াজ-৫ চাষ হয়। কিন্তু এই পেঁয়াজের বীজের খুব সংকট। এ জন্য বর্ষাকালে কোনো পেঁয়াজই চাষ হতো না। এবার নাসিক এন-৫৩ জাতের (গ্রীষ্মকালীন) চাষ হয়েছে। পতিত পড়ে থাকা জমিতে এই পেঁয়াজ চাষ করে কৃষকেরা বাড়তি টাকা আয় করছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সালমা জাহান নিপা বলেন, দেশে পেঁয়াজের উৎপাদন বাড়ানো ও আমদানি নির্ভরতা কমানোর উদ্দেশ্যে নাসিক এন-৫৩ জাতের গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এতে প্রত্যাশার চেয়েও ভালো ফলাফল পাওয়া গেছে। আগামীতে চাষ আরও বাড়বে বলেই আশা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: হিলির আড়তগুলোতে ভারতীয় পেঁয়াজের দাম বাড়ছে
মাগুরায় নিজের বাসা থেকে কলেজ শিক্ষকের লাশ উদ্ধার
মাগুরায় নিজের ফ্ল্যাট বাসা থেকে এক কলেজ শিক্ষকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। বুধবার সকালে পৌর শহরের নতুন বাজার পাঠশালা স্কুলে অবস্থিত নির্মলা ভবন থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত তরুণ সাহা (৬০) ওই এলাকার মৃত অমুল্ল্য সাহার ছেলে এবং জেলা সদরের শিবরামপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক ছিলেন।
মাগুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন: পাবনায় নিখোঁজ যুবকের লাশ উদ্ধার
তিনি জানান, ব্যক্তি জীবনে অবিবাহিত তরুণ সাহা দীর্ঘদিন যাবত ওই ফ্লাটে বসবাস করছিলেন।
তরুণ সাহার গৃহ পরিচালিকা বিজলী সাহা জানান, অন্যান্য দিনের মতো বুধবার সকালে কাজের উদ্দেশ্যে ওই বাড়িতে যান তিনি। ভেতর থেকে দরজা বন্ধ থাকায় ডাকাডাকি করে কোনো সাড়াশব্দ না পাওয়ায় আশপাশের লোকজনকে ডাকেন তিনি। এ সময় লোকজন তাকে ঘরের বাথরুমে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে মাগুরা সদর হাসপাতালে পাঠায়।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন পুলিশ সুপার মো. মশিউদ্দৌলা রেজা ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. কালিমুল্লাহ।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. কালিমুল্লাহ বলেন, সংবাদ শোনার পর পুলিশ সুপারসহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। লাশ উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হয়েছিল। এ ব্যাপারে মাগুরা থানায় মামলা হয়েছে।
ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মর্গে পাঠানো হয়েছে বলেও তিনি জানান।
আরও পড়ুন: উল্লাপাড়ায় পুকুর থেকে অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ উদ্ধার
নাটোরে বিল থেকে হ্যান্ডকাপ লাগানো যুবকের লাশ উদ্ধার
মাগুরায় পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২
মাগুরায় পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় দুই যুবক নিহত হয়েছেন। শুক্রবার রাত ৯ টার সময় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতদের নাম-রেফাতুল হক অভি (৩৬) ও নাহিদ আলী (৩০)।
মাগুরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. কলিমুল্লাহ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন: পাবনায় পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় শিশুসহ নিহত ২
তিনি জানান, মাগুরায় দু’টি সড়কে পৃথক দুর্ঘটনায় দুই জন নিহত হয়েছেন।
এদের মধ্যে মাগুরা-যশোর সড়কে আড়পাড়া ব্রাক অফিসের সামনে শুক্রবার রাত ৯ টার সময় রেফাতুল হক অভি (৩৬) নামের এক ব্যাবসায়ী মোটরসাইকেলে যশোর যাওয়ার সময় বাসের সঙ্গে সংঘর্ষে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
ফলে দুই মোটরসাইকেল আরোহী গুরুতর আহত হন। গুরুতর আহত অবস্থায় তাদেরকে মাগুরা হাসপাতালে ভর্তি করলে চিকিৎসক রেফাতুল হক অভিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার্ড করলে সে ঢাকা যাওয়ার পথে মারা যান।
অপর দিকে শালিখা উপজেলার বাকলবাড়িয়া নামক স্থানে শুক্রবার দুপুরে গরুবাহী ট্রলির চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে গাছের সঙ্গে ধাক্কা লাগলে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
ফলে ট্রলি চালক ঘটনাস্থলে নাহিদ আলী (৩০) নিহত ও অপর একজন আহত হয়েছেন।
নিহতের বাড়ী মাগুরা সদর উপজেলার মঘি গ্রামে। এ ব্যাপারে শালিখা থানায় পৃথক মামলা হয়েছে।
ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মর্গে পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: দিনাজপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত ৮
দিনাজপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল চালক নিহত
মাগুরায় গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা
মাগুরা সদর উপজেলার কুচিয়ামোড়া ইউনিয়নের আমুড়িয়া গ্রামে ঐতিহ্যবাহী ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা ও গ্রামীণ মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার বিকালে এ প্রতিযোগিতার ও গ্রামীণ মেলার আয়োজন করা হয়।
আরও পড়ুন: চাঁপাইনবাবগঞ্জে ঐতিহ্যবাহী ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা
শত বছরের ঐতিহ্য ধরে রাখতে আমুড়িয়া যুব সংঘ এই ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতার আয়োজন করে।
মাগুরা, নড়াইল ও রাজবাড়ী জেলার মোট ১৫টি ঘোড়া এই ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করে।
ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতায় মাগুরা জেলার গাংনী গ্রামের ঘোড়া প্রথম স্থান, মাগুরা জেলার কাটাখালী গ্রামের ঘোড়া দ্বিতীয় ও মাগুরা জেলার শালিখা উপজেলার রামপুর গ্রামের ঘোড়া তৃতীয় স্থান লাভ করে।
ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন আমুড়িয়া যুব সংঘের সভাপতি শিমুল হোসেন।
গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী ঘোড়দৌড় প্রতিযোগীতা উপলক্ষে আয়োজিত গ্রামীণ মেলায় নানা রকমের মিষ্টি, বাচ্চাদের খেলার সামগ্রী, আসবাবপত্রের দোকান বসে।
এলাকার হাজার হাজার দর্শক গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী এই ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা ও গ্রামীণ মেলা উপভোগ করেন।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় ২ দিনব্যাপী নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা শুরু
গাইবান্ধায় ৫ দিনব্যাপী ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা
মাগুরায় বৃদ্ধকে কুপিয়ে হত্যা!
মাগুরা সদর উপজেলায় এক বৃদ্ধকে সোমবার রাতে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। মঙ্গলবার সকালে মহম্মদপুরের বালিদিয়া গ্রাম থেকে তার রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
আরও পড়ুন: ধাক্কা লাগায় তরুণকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ
নিহত বৃদ্ধার নাম মুশা মৃধা (৫৫)। তিনি ওই গ্রামের মৃত নুরুল মৃধার ছেলে।
মহম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকরাম হোসেন জানান, এ ব্যাপারে মহম্মদপুর থানায় মামলা হয়েছে। খবর লেখা পর্যন্ত কেউ গ্রেপ্তার হয়নি।
এছাড়া ময়না তদন্তের জন্য লাশ মর্গে পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: মাদকের টাকা ভাগাভাগি নিয়ে কুপিয়ে হত্যা
ভাঙ্গায় বাবাকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগে ছেলে গ্রেপ্তার
মাগুরায় ২ মোটরসাইকেল সংঘর্ষে কলেজ ছাত্র নিহত
মাগুরার শ্রীপুরে দুই মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংষর্ষে মঙ্গলবার সকালে এক কলেজ ছাত্র নিহত হয়েছে।
নিহত মো.পাপ্পু (১৯) উপজেলার চৌগাছী মধ্য পাড়া গ্রামের মো. করিম মীরের ছেলে।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শুকদেব রায় জানান, তারাউজিয়াল এলাকায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হলে পাপ্পুকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর ইন্তেকাল করেন।
এ ব্যাপারে শ্রীপুর থানায় মামলা হয়েছে বলেও তিনি জানান।
আরও পড়ুর: দিনাজপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত ৮
দিনাজপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল চালক নিহত
ফরিদপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় মা-মেয়েসহ নিহত ৩
মাগুরায় খাদ্য গুদামের ১২০ টন চাল আত্মসাৎ, গুদাম কর্মকর্তা গ্রেপ্তার
মাগুরার শালিখার আড়পাড়া খাদ্য গুদাম থেকে ১২০ মেট্রিক টন চাল আত্মসাতের অভিযোগে গত বৃহস্পতিবার গুদাম কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এসময় আড়পাড়া খাদ্য গুদাম শালিখা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের উপস্থিতিতে সিলগালা করা হয়েছে।
অভিযুক্তের নাম-মো. শফিকুল ইসলাম।
আরও পড়ুন: ভিজিডি চাল আত্মসাৎ: বরিশালে ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার
মাগুরা জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সনোতোষ কুমার মজুমদার জানান, আগের গোডাউন কর্মকর্তা শফিকুল ইসলামকে ৮ ডিসেম্বর অন্যত্র বদলী করা হয় এবং মাগুরা সদর গুদাম কর্মকর্তা নূরে আলমকে আড়পাড়া খাদ্য গুদামের দায়িত্ব দেয়া হয়। এরপর নূরে আলমকে দায়িত্ব বুঝে দেয়ার সময় গোডাউনের মালামালের ঘাটতি পরিলক্ষিত হয়। এরপর শালিখা উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা সালমা চৌধুরী লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশ গত বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) রাতেই তাকে গ্রেপ্তার করে।
এ বিষয়ে শালিখা উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক নিয়ন্ত্রক সালমা চৌধুরী বলেন, আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মনোতোষ কুমার মজুমদার এর নির্দেশে বাদী হয়ে শফিকুল ইসলামের নামে থানায় মামলা দায়ের করি।
এ ব্যাপারে মাগুরা জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মনোতোষ কুমার মজুমদার বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ মহাপরিচালকের নির্দেশে মামলার এজাহারে দস্তখাত করেন।
গুদাম কর্মকর্তা শফিকুল ইসলামের স্ত্রী রুলি খাতুন অভিযোগ করে বলেন, উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সালমা চৌধুরী, দারোয়ান সুভাষ চন্দ্র সরকার ও লেভার বিপুলের যোগসাজশে এমন ঘটনা ঘটেছে।
শালিখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিশারুল ইসলাম জানান, গুদাম কর্মকর্তা শফিকুল ইসলামকে ৫৪ ধারায় মামলা দিয়ে আদালতে পাঠানো এবং সেই সঙ্গে দুদকের মামলা রুজু প্রক্রিয়াধীন।
এছাড়া শালিখা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইয়াসমিন মনিরা বৃহস্পতিবার রাতে শফিকুলকে গ্রেপ্তারের পর চারটি গোডাউনে সীলগালা করে দেন বলেও জানান ওসি।
আরও পড়ুন: ভিজিএফের চাল আত্মসাৎ: মাগুরায় ইউপি চেয়ারম্যান বরখাস্ত
মাগুরায় ভিজিডি’র ৪৫০ কেজি চাল আত্মসাৎ করলেন ইউপি সদস্য!
রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে নিশ্চিহ্নের পথে ৭১ এর আট গণকবর
মাগুরার শালিখা উপজেলার হাজরাহাটি এলাকায় চিত্রা নদীর পাড়ে অবস্থিত আটজন শহীদের গণ কবর। সংরক্ষণের উদ্যোগ না নেয়ায় যে কোন সময় বিলীন হয়ে যেতে পারে এটি।
হাজরাহাটি গ্রামে অধির অধিকারীর বাড়ির দক্ষিণ পাশে চিত্রা নদীর তীরে এ গণ কবরটি অবস্থিত।
১৯৭১ সালে ৬ ডিসেম্বর রাতে স্থানীয় রাজাকাররা পাশের জুনারী গ্রাম থেকে আটজন মুক্তিযোদ্ধাকে ধরে নিয়ে আসে। এ সমস্ত মুক্তিকামী মানুষ দেশের বিভিন্ন অংশ পাকিস্তান হানাদার মুক্ত হওয়ার পাশাপাশি মহান বিজয় অর্জিত হচ্ছে এমন খবরে নিজেদের বাড়ি ফরিদপুরের বিভিন্ন গ্রামে ফিরে যাচ্ছিলেন।
রাজাকাররা তাদেরকে ধরে এনে পরদিন ৭ ডিসেম্বর চিত্রা নদীর পাড়ে প্রথমে বর্বর নির্যাতন করে। পরে নদীর পাড়ে হাত বেঁধে তাদের গুলি করে হত্যা করে। এরপর গ্রামবাসীকে দিয়ে নদীর পাড়ে তাদের গণ কবর দেয়া হয়।
এখানে শায়িত মুক্তিযোদ্ধারা হলেন-যদুনাথ গুহ, পঞ্চানন পাল, হরিপদ দাস, নিত্যান্দন ভদ্র, মনোরঞ্জন দত্ত, নারুগোপাল রায়, সুরেশ কর ও অজ্ঞাত একজন।
এদের সবার বাড়ি ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী গ্রামে।
আরও পড়ুন: চলন্ত লঞ্চে আগুন: বরগুনায় গণকবরে অজ্ঞাত ২৩ লাশ দাফন
শালিখা উপজেলার হাজরাহাটি গ্রামের ছবি রাণী অধিকারী কান্না বিজড়িত কন্ঠে বলেন, আজও আমি চিত্রা নদীর পাড়ে বসে আমার ভাই যদুনাথ গুহকে খুঁজে ফিরি। তার ছবিখানা হাতে নিয়ে নদীর পাড়ে গিয়ে সেই গণকবরের কাছে যাই আর বলি- ফিরে আয় আমার ভাই, ফিরে আয় আমার ভাই।
ছবি রাণী বলেন, ১৯৭১ সালের ৭ ডিসেম্বর রাজাকাররা আমার ভাইসহ আরও সাতজন মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করে। তারা শুধু তাদের হত্যাই করেনি বরং চোখ বেঁধে তাদের ওপর নির্মম অত্যাচার করে। তারপর একে একে হত্যা করে আটজন মুক্তিযোদ্ধাকে।
তিনি আরও বলেন, স্বাধীনতার ৫১ বছর পরও তাদের এ গণকবর যথাযথভাবে সংরক্ষণ করা হয়নি। বৃষ্টির ভরা মৌসুমে নদীতে যখন পানি ভরে যায় তখন গণকবরের সীমানায় পানি প্রবেশ করে। হয়তো আগামী দিনে এ গণকবর নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।
একই গ্রামের স্থানীয় রতন কুমার দাস বলেন, স্বাধীনতার সময় আমার বয়স ১৩ বছর। মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের গ্রামের রাজাকাররা মানুষের ওপর নানা ধরনের অত্যাচার করে। নিরীহ মানুষকে ধরে তারা অত্যাচার করে মুক্তিযোদ্ধাদের খবর জানতে চায়।
তিনি বলেন, যুদ্ধের শেষ সময়ে ভারত থেকে কিছু মুক্তিযোদ্ধা আমাদের গ্রাম দিয়ে তাদের নিজ জেলা ফরিদপুর জেলায় যাচ্ছিল। এ খবর রাজাকাররা পেয়ে তাদের লোকজন দিয়ে আটজন মুক্তিযোদ্ধাকে ধরে আনে। তারপর চিত্রা নদীর পাড়ে তাদের চোখ বেঁধে নির্মমভাবে হত্যা করে চলে যায়। তখন গ্রামবাসীরা একটি কবর খুঁড়ে সেই কবরে আটজনকে মাটি চাপা দেয়।
আরও পড়ুন: কানাডার আরেকটি আদিবাসী স্কুলে গণকবরের সন্ধান
এছাড়া গণকবরটি নদীর পাড়ে হওয়ায় সেটি বিলীনের সম্মুখীন অবস্থায় রয়েছে বলে জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, আমরা উপজেলা প্রশাসনকে বার বার তাগিদ দেয়ার পরও তারা কোন উদ্যাগ নেয়নি। শুধু কয়েকবার পরিদর্শন করে যায়। কিন্তু কোন সংরক্ষণের কাজ করে না। বিশেষ করে ভারী বর্ষা মৌসুমে নদীতে পানি ভরে গেলে গণকবরের কাছাকাছি উঠে যায়।
মাগুরা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের জেলা ইউনিটের যুগ্ম-আহ্বায়ক ও সাবেক যুদ্ধকালীন ডেপুটি কমান্ডার এস এম আব্দুর রহমান বলেন, ১৯৭১ সালের ৭ ডিসেম্বর স্থানীয় রাজাকাররা ভারত থেকে ট্রেনিং করে ফিরে আসা আট মুক্তিযোদ্ধাকে ধরে এনে চিত্রা নদীর পাড়ে চোখ বেঁধে নির্মমভাবে হত্যা করে। পরে এলাকার স্থানীয়রা তাদের গণকবর দেয়।
তিনি বলেন, আমরা কয়েকবার ওই স্থান পরিদর্শন করেছি এবং উপজেলার প্রশাসনকে বারবার তাগিদ দিয়েছে তা সংরক্ষণ করার জন্য। তাছাড়া আমরা মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়কে এ বিষয়গুলো দেখবাল করার জন্য অনুরোধ করেছি।
তিনি আরও বলেন, এ আট মুক্তিযোদ্ধার সবার বাড়ি ফরিদপুর জেলায়। প্রতিবছর ৭ ডিসেম্বর ফরিদপুর বোয়ালমারী থেকে এ আট মুক্তিযোদ্ধার স্বজনরা ওই স্থানে এসে মিলিত হয় এবং অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
কিন্তু এবার কোন কারণবশত হয়নি।
মুক্তিযোদ্ধারা দেশের প্রাণ তাদের প্রাণের বিনিময়ে এদেশ স্বাধীন করেছে। তাই তাদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা আমাদের প্রতিটি নাগরিকের নৈতিক দায়িত্ব।
আরও পড়ুন: স্যাটেলাইট ছবিতে মারিউপোলের কাছে সম্ভাব্য গণকবরের সন্ধান