ফরিদপুর
নগরকান্দায় পানিতে ডুবে ২ শিশুর মৃত্যু
ফরিদপুরের নগরকান্দায় পুকুরের পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) দুপুর ২টার দিকে উপজেলার তালমা ইউনিয়নের দক্ষিণ বিলনালিয়ার নতুন হাটখোলা গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
নিহত দুই শিশু হলো, উপজেলার দক্ষিণ বিলনালিয়া নতুন হাটখোলা গ্রামের আইয়ুব মৃধার ছেলে সাজিদ (৪) ও একই গ্রামের মজিবর মুন্সীর পালকপুত্র তরিকুল (৫)।
তালমা ইউনিয়ন পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান কামাল হোসেন জানান, শিশু সাজিদ ও তরিকুল বাড়ির পাশের একটি পুকুরে পড়ে গিয়ে নিখোঁজ হয়। বেলা দুইটার দিকে দুই শিশুর লাশ ভেসে উঠলে স্থানীয়রা তা দেখতে পান। পরবর্তীতে তাদের উদ্ধার করে নগরকান্দা হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক শিশু দুটিকে মৃত ঘোষণা করেন।
তিনি জানান, দুই শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
আরও পড়ুন: হরিপুরে পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু
শৈলকুপায় পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু
বৃষ্টির পানিতে তলিয়েছে ফরিদপুরে ২০ হাজার হেক্টর ফসলের খেত
ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে ফরিদপুর জেলায় চলতি মৌসুমে ২০ হাজার হেক্টর ফসলের ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ। বিশেষ করে মুড়িকাটা পেঁয়াজের খেত এখন বৃষ্টির পানিতে নিমজ্জিত। পেঁয়াজ উৎপাদনে তৃতীয় সর্বোচ্চ জেলা ফরিদপুরে চাষিরা সরকারের কাছে ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, দুদিনের টানা বৃষ্টিতে ফরিদপুরে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। চলতি মৌসুমের গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ (মুড়িকাটা) আবাদ হয়েছে পাঁচ হাজারের অধিক জমিতে। পেঁয়াজ তোলার প্রস্তুতিকালে হঠাৎ টানা বৃষ্টিতে এখন মাথায় হাত চাষিদের।
সদর উপজেলার চরমাধবদিয়া ও অম্বিকাপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন মাঠে সরেজমিনে দেখা গেছে, মুড়িকাটা পেঁয়াজের খেত এখন বৃষ্টির পানিতে নিমজ্জিত।
আরও পড়ুন: সাতক্ষীরায় ২ দিনের টানা বৃষ্টি, জনজীবন বিপর্যস্ত
চাষিরা বলেছেন, এক বিঘা জমিতে মুড়িকাটা পেঁয়াজের আবাদে খরচ হয়েছে ৪০ হাজার টাকার বেশি। জেলার অধিকাংশ খেত থেকে চাষিরা আগামী সাত দিনের মধ্যে পেঁয়াজ তোলার কাজ শুরু করবে। কিন্তু বৃষ্টির পানি খেতে জমে তারা ফসলের মাঠে নামতে পারছেন না।
শুধু মুড়িকাটা পেঁয়াজ ছাড়াও রসুন,আলু ও সরিষা খেত তলিয়েছে। আকস্মিক বৃষ্টিতে সরিষার ফুল ঝড়ে গেছে। আলু খেত ডুবে যাওয়ায় গাছে পচন শুরু দিকে।
ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপ পরিচালক ড. হযরত আলী বলেন,‘দুযোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে টানা বৃষ্টিতে জেলার ২০ হাজার হেক্টর জমি পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। আমরা চেষ্টা করব কৃষকদের অন্য ফসলের প্রণোদনা দিয়ে এই ক্ষতি পুষিয়ে দেয়ার।’
তিনি বলেন, ‘গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষে তুলনামূলকভাবে ব্যয় বেশি। হঠাৎ এই বৃষ্টিপাতে চাষিদের অনেক আর্থিক ক্ষতি হবে। প্রতিটি মাঠে গিয়ে পরিস্থিতি দেখার জন্য আমাদের কৃষি কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
সদর উপজেলার চরমাধবদিয়া ইউনিয়নের চাষি সুরত খান, সালাউদ্দিন মোল্ল্যাসহ অনেকেই বলেন, ‘খেতে পানি জমে গেছে। চলতি মৌসুমে মাঠে যে ফসল আছে সবই ক্ষতির মধ্যে। কীভাবে চলব, আর পুঁজিও বা কীভাবে উঠবে সেই চিন্তায় আমরা দিশেহারা।’
আরও পড়ুন: বাগেরহাটে ৭৩৯ হেক্টর জমির ফসল পানিতে নিমজ্জিত
নগরকান্দা উপজেলার আশফরদী গ্রামের পেঁয়াজ চাষি রোকন উদ্দীন মাতুব্বর বলেন,‘আমি প্রতি বছর ১২ বিঘা জমিতে পেঁয়াজের চাষ করি। তাই এবছর সেই জমিতে পেঁয়াজের চাষ করতে ১৪ কেজি দানা কিনে বীজতলা তৈরি করেছিলাম। বৃষ্টিতে সব শেষ। যেহেতু প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ক্ষতি হয়েছে তাই সরকারের কাছে আমাদের বীজ কিনে দেয়ার দাবি জানাই।
নগরকান্দা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ বিন ইয়ামিন বলেন, ‘নগরকান্দা উপজেলায় পেঁয়াজের বীজতলার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতির পরিমাণ নিরুপণ করতে আমাদের উপ সহকারীরা মাঠে আছেন। আমরা চাষিদের সঙ্গে কথা বলছি, তাদের খোঁজ খবর নিচ্ছি। আশা করছি সরকার এই চাষিদের বিষয়ে আন্তরিক হবে।
ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার বলেন, ‘ইতোমধ্যে আমাদের জেলা ত্রাণ ও পুর্নবাসন, কৃষি বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আমরা চুড়ান্ত ক্ষতির পরিমাণ জানার পর তাদের আর্থিক সহয়তাসহ সরকারি অন্যান্য সহযোগিতা করব।’
ফরিদপুরে বাস-মাইক্রোবাস সংঘর্ষে নিহত ২
ফরিদপুরে বাস ও মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে দুই জন নিহত হয়েছেন। সোমবার সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে সদর উপজেলার মল্লিকপুর এলাকায় এ দুর্ঘটনায় আরও দুই জন আহত হয়েছেন।
নিহতরা হলেন, বোয়ালমারী উপজেলার হরিহরনগর গ্রামের সুবাস চন্দ্র দাসের ছেলে ডা. সুব্রত কুমার দাস (৩৫) এবং ডা. দিলীপ রায় হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের প্রভাষক ও একই উপজেলার কলিমাঝি গ্রামের আ. সালাম মোল্যার ছেলে মাইক্রোবাসের চালক মনির হোসেন মন্জু (৪০)।
আরও পড়ুন: যশোরে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত ১
আহতরা হলেন,ডা. দিলীপ রায় হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের অধ্যক্ষ ডা. প্রণয় কান্তি লস্কর এবং আলফাডাঙ্গা কাজী সিরাজুল ইসলাম হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের উপাধ্যক্ষ ডা. সমীর কুমার বালা।
নিহতদের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, মাইক্রোবাসের হতাহতরা মাইক্রোবাসে করে ফরিদপুরের বোয়ালমারী থেকে ঢাকা যাচ্ছিলেন। পথের মধ্যে ফরিদপুর-খুলনা মহাসড়কের মল্লিকপুর নামক স্থানে পৌঁছলে বিপরীত দিক থেকে আসা খুলনাগামী দিগন্ত পরিবহনের একটি বাসের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই মাইক্রোবাসে থাকা দু’জন নিহত হন।
আরও পড়ুন: মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় রাজশাহীতে বাবা-ছেলেসহ নিহত ৩
এ ব্যাপারে করিমপহর হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল আল মামুন শাহ জানান, বাসটি রেখে চালক পালিয়ে গেছে। আহতদের ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা: ফরিদপুরে ডিসি অফিসে বিএনপির স্মারকলিপি
বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার কারামুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসাবে ফরিদপুর জেলা প্রশাসকের (ডিসি) কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে দলটির নেতারা।
বুধবার বেলা ১১টার সময় ফরিদপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জেলা প্রশাসক অতুল সরকারের কাছে এই স্মারকলিপি দেয়া হয়।
স্মারকলিপি শেষে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে দলটির নেতা-কর্মীরা সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন। এসময় তারা বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য অবিলম্বে বিদেশে পাঠানো না হলে কোন অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটলে এর দায় সরকারকে নিতে হবে।
বক্তরা বলেন, সরকার নিজেদের সীমাহীন ব্যর্থতা আড়াল করার জন্য দেশকে অরাজক পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিতেই দেশ নেত্রীর প্রতি এমন মনুষ্যত্বহীন আচরণ করছে। মানবিক বিবেচনায় বেগম জিয়াকে মুক্তি এবং উন্নত চিকিৎসার জন্য অবিলম্বে বিদেশে পাঠানোর দাবি জানান তারা।
এসময় জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মোদারেরছ আলী ইছাসহ অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
পড়ুন: খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি: মির্জা ফখরুল
খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার বিষয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে: আইনমন্ত্রী
সন্তানকে বাঁচাতে অসহায় পরিবারের আকুতি
ফরিদপুর সদর উপজেলার শিবরামপুর এলাকায় শুক্রবার রাতে রিকশাচালক শাকিল হাসান ও আমেনা বেগমের ঘরে জন্ম নেয় একটি ফুটফুটে শিশু। কিন্তু জন্মের পর দেখা যায় নবজাতকে দুটি পা বাঁকা এবং প্রসাব পায়খানা রাস্তা নেই।
পরদিন শনিবার শিশুটিকে ফরিদপুর শিশু হাসপাতালে আনা হলে ভর্তি না নিয়ে পাঠানো হয় ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে। সেখানে একদিন রেখে শিশুটির যথাযত চিকিৎসা সেখানে নেই জানিয়ে ঢাকা শিশু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেয় সেখানকার চিকিৎসকরা। অর্থাভাবে ঢাকা নিতে না পেরে শিশুটির চিকিৎসার জন্য দেশবাসীর কাছে আকুতি জানিয়েছে অসহায় পরিবারটি।
সোমবার দুপুরে ফরিদপুর প্রেসক্লাবে উপস্থিত হয়ে কান্নাজড়িত কন্ঠে নিজেদের অসহায়ত্বের কথা তুলে ধরেন তারা।
আরও পড়ুন: পাহাড়ের দুর্গম এলাকায় হেলিকপ্টারের সাহায্যে করোনার টিকা পৌঁছে দিল সেনাবাহিনী
চিকিৎসক শিশুটিকে পরীক্ষা করে দেখেছেন যে, বাচ্চাটির প্রসাব পায়খানার রাস্তা নেই, পিঠে একটা টিউমারের মত আছে। নাভী দিয়ে মাঝে মাঝে রক্ত ঝড়ছে। দুটি পা বাঁকা।
এব্যাপারে ফরিদপুর সদর উপজেলার স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মাহফুজুর রহমান ভুলু বলেন, ‘সব শুনে মনে হচ্ছে শিশুটির অনেকগুলো সমস্যা আছে, সেক্ষেত্রে বিশেষায়িত কোন হাসপাতালে তাকে চিকিৎসা দিতে হবে। এধরনের চিকিৎসা বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (পিজি) ও ঢাকা শিশুতে হয়ে থাকে। শিশু সার্জারি চিকিৎসকরা ভালো বলতে পারবেন, তবে আমার জানা মতে প্রসাব পায়খানার রাস্তা না থাকলে বেশ কয়েকটি সার্জারি করতে হবে, এই চিকিৎসা বেশ ব্যয় বহুলও বটে।’
শিশুটির নানা আবু তালেব বলেন, ‘তার মেয়ের জামাই রিকশা চালায়। এই দিয়ে যা আয় হয় তাতে কোন রকম সংসার চলে। আমিও দরিদ্র মানুষ। ঠিকমত খাওয়া দাওয়াই চলে না এই শিশুর চিকিৎসা করাবো কিভাবে? আমাদের পক্ষে এই শিশুর চিকিৎসা করানো সম্ভব না। দেশের দশ জন যদি সাহায্য করে তাহলে হয়ত আমার নাতিটার চিকিৎসা হবে। আমি দেশের মানুষের কাছে নাতিটাকে বাঁচানোর জন্য আবেদন জানাচ্ছি।
আরও পড়ুন: ৩৩৩-তে সাহায্য চেয়ে রিকশাভ্যান পেলেন হাটহাজারীর প্রদীপ
শিশুটির মা কান্নজাড়িত কন্ঠে বলেন, ‘আপনাদের দুয়ারে আসছি, বাঁচা মরা আল্লাহর হাতে, আমার বাচ্চাটার চিকিৎসা যাতে করাতে পারি সেই ব্যবস্থাটা আপানারা দশ জনে করে দেন।’
বিষয়টি ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকারকে জানান, তিনি তাৎক্ষণিক ৫ হাজার টাকা অর্থ সহায়তা করেছেন। পরবর্তীতে প্রয়োজন হলে জেলা প্রশাসন থেকে আরও সহায়তা করা হবে।
ফরিদপুরে বিএসএমএমসি হাসপাতালে ৮ দালাল গ্রেপ্তার
ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ (বিএসএমএমসি) হাসপাতালে পুলিশের অভিযানে দালাল চক্রের আটজন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও তদন্ত) জামাল পাশা কোতয়ালী থানায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন।
আটককৃতরা হচ্ছে- শাহিন শেখ, রাসেল শেখ, জামাল প্রমানিক ওরফে নাসির, প্লাবন মোল্যা, কামরুজ্জামান ওরফে রাব্বি শেখ, নাহিদ মৃধা, শহিদুল বিশ্বাস ও রোমান হোসেন। তাদের বয়স ২০ থেকে ৩৫ এর মধ্যে। সকলের বাড়ি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আশেপাশেই।
গ্রেপ্তারের পর কোতয়ালী থানার এসআই মাসুদ ফকির বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন। শুক্রবার তাদের আদালতে চালান করা হয়।
আরও পড়ুন: ন্যায্যমূল্য ও সংরক্ষণ ব্যবস্থা নিশ্চিতের দাবি ফরিদপুরের পেঁয়াজ চাষিদের
সংবাদ সম্মেলনে জামাল পাশা বলেন, আটককৃতরা বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিক ও হাসপাতালের দালাল। দূরদূরান্ত থেকে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনদের জিম্মি করে বেশ কিছু দালাল চক্র তাদের হয়রানী করে আসছিল।
তিনি আরও বলেন, এছাড়া সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা মুমূর্ষু রোগী ও স্বজনদের ভুল বুঝিয়ে নানা কৌশলে হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে ভয়ভীতি দেখাতো। তারপর আশেপাশে বেসরকারী ক্লিনিক ও ডায়গানস্টিক সেন্টারে নিয়ে প্রতারণা করে টাকা হাতিয়ে নিতো।
এছাড়া জোর করে রোগীদের প্রেসক্রিপশন নিয়ে পছন্দের ফার্মেসিতে নিয়ে বেশি দাম নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত করতো। আটকদের সাথে কোনও ক্লিনিক মালিক জড়িত থাকলে তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।
আরও পড়ুন: কয়লা সংকটে ফরিদপুরে ইট উৎপাদন বন্ধ
৯৯৯ এ কল: নারায়ণগঞ্জ থেকে অপহৃত কিশোরী ফরিদপুরে উদ্ধার
বোয়ালমারীতে ট্রেন-অটোরিকশা সংঘর্ষে যুবক নিহত
ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলায় ট্রেন-অটোরিকশা সংঘর্ষে এক যুবক নিহত হয়েছেন। সোমবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ববনমালীপুর-নড়াইল রেল স্টেশন এলাকায় অরক্ষিত একটি রেল ক্রসিংয়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত সোহেল খান (২৫) গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানি উপজেলার নড়াইলখান গ্রামের নাজির খানের ছেলে। সোহেল ক্ষতিগ্রস্ত অটোরিকশার চালক ছিলেন।
আরও পড়ুন: পাবনায় সড়ক দুর্ঘটনায় শিশুসহ নিহত ২
বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল আলম জানান, তিন ভাই-বোনের মধ্যে মেজো সোহেল খান অটোরিকশা চালাতেন। সকালে তিনি অটো নিয়ে বের হন। পরে অরক্ষিত ওই রেল ক্রসিং পার হওয়ার সময় সকাল সাড়ে ৮টার দিকে গোপালগঞ্জের গোবড়া থেকে ছেড়ে আসা রাজশাহীগামী 'টুঙ্গীপাড়া এক্সপ্রেস'-র সাথে অটোরিকশার সংঘর্ষ হয়। এ সময় অটোরিকশাটি দুমড়ে-মুচড়ে যায় এবং ঘটনাস্থলেই অটোচালক সোহেল খান নিহত হন। এরপর ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করেছে রেলওয়ে পুলিশ।
আরও পড়ুন: সড়ক দুর্ঘটনা: কুড়িগ্রামে একই পরিবারের ৩ জনসহ নিহত ৪
প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ, ওই রেলক্রসিংয়ের উভয় পাশে দোকান থাকায় এবং গেটম্যান না থাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।
ন্যায্যমূল্য ও সংরক্ষণ ব্যবস্থা নিশ্চিতের দাবি ফরিদপুরের পেঁয়াজ চাষিদের
শেখ মফিজুর রহমান শিপন
দেশে উৎপাদিত পেঁয়াজ দিয়ে সারা বছরের চাহিদা মেটাতে নানা পরামর্শ দিয়েছে পেঁয়াজ উৎপাদনে তৃতীয় সর্বোচ্চ জেলা ফরিদপুরের চাষিরা।
তারা মনে করেন, উন্নত জাতের পেঁয়াজ বীজ সরবরাহের মাধ্যমে উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা এবং উৎপাদিত পেঁয়াজ সংরক্ষণের ব্যবস্থা করলে দেশে পেঁয়াজের ঘাটতি থাকবে না।
তবে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের দাবি, চাষিদের মাঝে আধুনিক চাষাবাদ পদ্ধতি ও উন্নত বীজ সরবরাহের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, গত বছর ফরিদপুরের ৯ উপজেলায় ৪০ হাজার হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের আবাদ করে চার লাখ ৩০ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ উৎপাদন হয়। চলতি মৌসুমে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের (মুড়িকাটা) আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে সাড়ে ৪ হাজার হেক্টর জমিতে। যা থেকে উৎপাদিত হবে প্রায় ৫০ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ।
আরও পড়ুন: হিলিতে বাড়ছে পেঁয়াজের দাম
ফরিদপুরের সদর উপজেলার অম্বিকাপুর ইউনিয়নের রামকান্তপুর মাঠে সরেজমিনে দেখা গেছে, মৌসুমে পেঁয়াজ সংগ্রহের পর পরবর্তী ফসল আবাদের অর্থ যোগান দিতে বাধ্য হয়ে কম মূল্যে পেঁয়াজ বিক্রয় করতে হয় তাদের। এছাড়াও গ্রীষ্মকালীন মুড়িকাটা পেঁয়াজের আবাদের খরচ তুলনামূলকভাবে বেশি হয়। একর প্রতি চাষিদের খচর লাখ টাকার বেশি। এ কারণে এই পেঁয়াজ বাজারের তুলার সময়ে কেজি প্রতি কৃষক পর্যায়ে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা হারে দর না পেলে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বে তারা।
জেলার সালথার মুড়িকাটা পেঁয়াজ চাষি আকবর মাতুব্বর, সিরাজ মোল্লা, হানিফ ব্যাপারীসহ বেশ কয়েক জন চাষি জানান, মৌসুমের শুরুতে ভালো দাম ও পেঁয়াজ সংরক্ষণের আধুনিক সুব্যবস্থা নিশ্চিত করতে পারলে বিদেশ থেকে আমদানি করতে হবে না এই পেঁয়াজ।
আরও পড়ুন: পেঁয়াজের শুল্ক প্রত্যাহারের জন্য এনবিআরকে অনুরোধ
চাষিরা বলেন, ‘পেঁয়াজ পচনশীল পণ্য, বেশি দিন সনাতন পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করা যায় না। এ কারণে ফরিদপুর অঞ্চলের পেঁয়াজ আধুনিক পদ্ধতিতে সংরক্ষণের ব্যবস্থা থাকলে সারা বছর চাষিরা বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ করতে পারবে।’
কয়লা সংকটে ফরিদপুরে ইট উৎপাদন বন্ধ
ফরিদপুরে ইটভাটায় জ্বালানি সংকট ও উচ্চ মূল্যের কারণে চলতি মৌসুমে এখনো উৎপাদন শুরু করতে পারেনি ভাটা মালিকরা। এর ফলে প্রায় ২০ হাজার ইট ভাটা শ্রমিক বেকার (কর্মহীন) অবস্থায় রয়েছে।
জেলা ভাটা মালিক সমিতি জানিয়েছে, ফরিদপুর জেলায় ছোট বড় ১২৮টি ইটভাটা রয়েছে। তার মধ্যে ৮টি দীর্ঘ দিন ধরে বন্ধ রয়েছে। চালু রয়েছে ১২০টি ভাটা, এর মধ্যে অটো ইটভাটা রয়েছে ৭টি বাকি ১১৩টি ইটভাটা চলে কয়লা পুড়িয়ে।
গত মৌসুমে ভাটা মালিকরা ইট পোড়ানোর কাজে ব্যবহৃত জ্বালানি (কয়লা) টন প্রতি সাড়ে ৮ হাজার থেকে ৯ হাজার টাকায় কিনেছিল। কিন্তু চলতি মৌসুমে করোনা মহামারির কারণে কয়লা আমদানি সংকট রয়েছে। এরপরও আবার যা পাওয়া যাচ্ছে তার জন্য টন প্রতি ১৯ হাজার থেকে ২২ হাজার টাকা গুনতে হচ্ছে। আর তাই ভাটা মালিকেরা সময় মতো ভাটায় ইট কাটা শুরু করতে পারছে না।
সরেজমিনে ফরিদপুরে সদর উপজেলার ডিক্রীরচর, নর্থচ্যানেল ও চরমাধবদিয়া ইউনিয়নে বিভিন্ন ইটভাটায় গিয়ে দেখা যায়, গত বছরের উৎপাদিত ইট এরই মধ্যে বিক্রি শেষ পর্যায়ে রয়েছে। কিন্তু নতুন করে উৎপাদনে না যাওয়ায় ফরিদপুরে ইট সংকট দেখা দিয়েছে। ব্যক্তি পর্যায় থেকে শুরু করে সরকারি উন্নয়ন কাজে ঠিকাদাররা ইট কিনে কাজ করতে হিমশিম খাচ্ছে। আর নতুন ইট উৎপাদনের পর যে দামে বিক্রি হবে তা বর্তমান বাজার দরের দ্বিগুণ। তাই মাথায় হাত পড়েছে বাড়ি করতে চাওয়া সাধারন মানুষ ও নতুন করে কাজ পাওয়া ঠিকাদারদের।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামের অবৈধ ইটভাটা উচ্ছেদে বাধা কাটল
স্ত্রীকে পুড়িয়ে মারার দায়ে ফরিদপুরে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড, দেবরের যাবজ্জীবন
ফরিদপুরে স্ত্রীকে পুড়িয়ে মারার দায়ে স্বামীর ফাঁসি ও দেবরকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এর পাশাপাশি দু’জনকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়াও মামলা অপর দুই আসামিকে খালাস দেয়া হয়।
মঙ্গলবার দুপুরে আসামিদের উপস্থিতিতে ফরিদপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) প্রদীপ কুমার রায় এই আদেশ দেন।
সাজাপ্রাপ্তরা হলেন, আলফাডাঙ্গার ধলাইরচর গ্রামের ছেকেন্দার খানের ছেলে শাহাবুদ্দিন খান ও তার ছোট ভাই সুমন খান।
আরও পড়ুন: ২ বান্ধবীকে ধর্ষণের পর হত্যা: যশোরে ২ আসামির ফাঁসি আজ
নিহত মনিরা খানম একই গ্রামের কবির মোল্লার মেয়ে ও দণ্ডপ্রাপ্ত শাহাবুদ্দিন খানের স্ত্রী।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট স্বপন পাল জানান, ২০১১ সালে ২৭ জুন জেলার আলফাডাঙ্গা উপজেলার ধলাইরচর গ্রামে আসামি সাহাবুদ্দিন খান ও সুমন খানসহ পরিবারের অন্য সদস্য আছিয়া বেগম ও ঝুমুর বেগম মিলে মনিরাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেয়।
আরও পড়ুন: শিশুপুত্র হত্যা : বাবার ফাঁসির সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন
পরে মনিরার চিৎকারের আশ-পাশের লোকজন এসে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
এই ঘটনায় নিহত মনিরার বাবা কবির মোল্লার বাদী হয়ে ২০১১ সালের ৩ জুলাই আলফাডাঙ্গা থানায় নারী নির্যাতন ও হত্যা মামলা দায়ের করে। উক্ত মামলায় পুলিশ ২০১১ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর আদালতে র্চাজশিট দাখিল করে। মামলায় দীর্ঘ সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) আদালত রায় ঘোষণা করেন।