ফরিদপুর
পাবনায় ভাইয়ের হাতে বোন খুন!
পাবনার ফরিদপুরে তুচ্ছ ঘটনার জেরে চাচাতো ভাইয়ের লাঠির আঘাতে চাচাতো বোন পারুল খাতুন (২৫) নিহত হয়েছেন। রবিবার সকালে উপজেলার দিঘুলিয়া দক্ষিণপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনার পর থেকে নিহতের চাচাতো ভাই একই গ্রামের মোকলেছ আলী (৩০) পলাতক রয়েছেন।
ফরিদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদ রানা বলেন, বাড়ির শিশুদের খেলাধূলা ও মারামারি নিয়ে সকাল ৭টার দিকে মোকলেছ ও পারুলের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে ক্ষুব্ধ মোকলেছ কাঠের বাটাম দিয়ে পারুলকে মাথায় আঘাতসহ মারধোর করে। এ ঘটনায় গুরুতর আহত পারুলকে উদ্ধার করে প্রথমে ফরিদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নেয়ার পথে বিকাল ৩টার দিকে মারা যান পারুল।
ওসি আরও জানান, খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাবনা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
আরও পড়ুন: পাবনায় ‘চরমপন্থী’ সদস্যকে গুলি করে হত্যা
পাবনায় ডাকাত সন্দেহে গণপিটুনিতে নিহত ২
ফরিদপুরে জনতা জুট মিলে আগুন
জেলার বোয়ালমারী উপজেলার সাতৈর ইউনিয়নের ডুবরা গ্রামের জনতা জুট মিলে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।
রবিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মিলের তিন নং ইউনিটের এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। জনতা জুট মিল আকিজ গ্রুপের একটি প্রতিষ্ঠান।
মিলের ডিজিএম সাইফুল আলম জানান, তিন নং ইউনিটের গ্যাট্রিজ মেশিন গরম হয়ে হয়তো অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হতে পারে।
তিনি বলেন, এসময় মিলের ওই ইউনিটে শ্রমিকরা কাজ করছিল। আগুন লাগার পরে সকলেই বেরিয়ে আসতে পেরেছে।
আরও পড়ুন: গাজীপুরে ঝুটের গোডাউনে আগুন
কেরানীগঞ্জে গ্যাসের আগুনে একই পরিবারের দগ্ধ ৫
ওই মিলে আনুমানিক ৫০ হাজার মণ পাট ছিল বলে এই কর্মকর্তা জানান।
আগুন লাগার বিষয়ে বোয়ালমারীর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন মাস্টার আব্দুর সাত্তার মোল্লা জানান, আগুনের খবর পাওয়া মাত্র দ্রুত সেখানে দমকল বাহিনীর সদস্যরা ছুটে যায়। পরে আশেপাশের উপজেলা থেকে মোট ছয়টি ইউনিট এক যোগে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার কাজ শুরু করে।
অগ্নিকাণ্ডের ক্ষয়ক্ষতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘পুরাপুরি নিয়ন্ত্রণে আসার আগ পর্যন্ত অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত এবং ক্ষয়ক্ষতি পরিমাণ এ মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না।
দেশের মানুষের বিপদে আ’লীগ পাশে থেকেছে: স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি
আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠন সব সময় দেশের মানুষের বিপদে পাশে থেকেছে বলে মন্তব্য করেছেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি নির্মল রঞ্জন গুহ।
তিনি বলেন, ‘শুধু সরকারে থেকেই নয়, যখন বিরোধীদলে ছিল তখনও আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠন দেশের মানুষের বিপদে পাশে থেকেছে। কিন্তু আজ আমরা কি দেখি, তারা (বিএনপি) দেশের জন্য নয়, নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য রাজনীতি করেন।’
শনিবার ফরিদপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আয়োজনে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পাঁচ শতাধিক পরিবারের মাঝে খাদ্য সহায়তা বিতরণ অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
নির্মল রঞ্জন বলেন, স্বেচ্ছাসেবক লীগের কোনো কর্মীর অন্যায় কাজ করা চলবে না, কেউ যদি তা করে প্রমাণ পেলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ সময় সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক একেএম আফজালুর রহমান বাবু, কেন্দ্রীয় নেতা তারেক সাঈদ, আব্দুল আলিম, আজিজুল হক আজিজ, তানভীর আক্তার শিপার, মেহেদী হাসান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি ফখরুলের
বিএনপি নেতাদের ওপর কর্মীদেরই আস্থা নেই: তথ্যমন্ত্রী
ছাত্রলীগ হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর ভ্যানগার্ড: নাহিয়ান খান
ফরিদপুরে সাড়ে ১০ লাখ বেল পাট উৎপাদন, দাম নিয়ে হতাশ চাষিরা
পাটের রাজধানীখ্যাত ফরিদপুরে এবার পাটের ফলন ভালো হয়েছে। তবে দাম নিয়ে কিছুটা হতাশ পাট চাষিরা। চলতি মৌসুমে জেলায় পাটের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ ছিলো সাড়ে ১০ লাখ বেল ( ১৮০ কেজিতে এক বেল)।
আর চলতি ২০২১-২২ মৌসুমে ফরিদপুরে পাটের আবাদ হয়েছে ৮৫ হাজার ৭৭ হেক্টর জমিতে। এর বিপরীতে কৃষি বিভাগ উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নিধারণ করেছে ১০ লাখ ৫২ হাজার বেল। গত দশ মৌসুমে পাটের আবাদ বেড়েছে ৯ হাজার ১০৯ হেক্টর জমিতে।
আরও পড়ুন: দক্ষিণাঞ্চলে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে পাট চাষ
জেলার পাট উৎপাদনে প্রসিদ্ধ নগরকান্দা, সালথা, বোয়ালমারী উপজেলার পাট চাষিরা জানান, চলতি পাট উৎপাদন মৌসুমে বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে মৌসুমের শুরুতে পাট আবাদে একাধিক সেচ দিয়ে পাট বপণ করায় শুরুতেই চাষিদের বাড়তি খরচ হয়েছে।
আবার পাট কাটায় ও পাট নেয়া-ধোয়ায় ও শুকাতে অন্যান্য বছরের চেয়ে শ্রমিকের মূল্য বেশি হওয়ায় পাটের উৎপাদন খরচ বেড়েছে আগের চেয়ে অনেক বেশি।
বর্তমানে জেলার পাটের বাজার কানাইপুর, সাতৈর, কৃষ্টপুর, নগরকান্দা, সালথা গিয়ে দেখা গেছে, চলতি সপ্তাহে মণ প্রতি পাটের দর কৃষক পাচ্ছে প্রকার ভেদে ২৬০০ থেকে ৩১০০ টাকা।
ফরিদপুর সদর উপজেলার কানাইপুর বাজারের পাট ব্যবসায়ী রথিন্দ্র নাথ সিকদার নিপু জানান, উৎপাদন মৌসুম শুরুতে পাটের দর মণ প্রতি ৪ হাজার পর্যন্ত গিয়ে ছিল। বর্তমানে (চলতি সপ্তাহে) এই বাজারের সব থেকে ভালো পাটের দর মণ প্রতি ৩১০০ টাকা পর্যন্ত রয়েছে। আর একটু নিম্নমানে পাটের দর ২৫০০ থেকে ২৬০০ টাকায় বিক্রয় হচ্ছে।
আরও পড়ুন: মৌসুম শেষ হলেও প্রণোদনা পায়নি ফরিদপুরে পাট চাষিরা
ভরা মৌসুমে বাজারে পাটের আমদানি কম হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, স্বচ্ছল চাষিরা বাড়তি লাভের আশায় পাট বাজারে কম তুলছেন।
বোয়ালমারীর ঘোষপুর এলাকার পাট চাষি আশুতোষ মালো জানান, খেতে পাটের উৎপাদন ভালো হয়েছে। তবে চাষিদের খরচ ও যে কোনও বছরের চেয়ে বেশি হয়েছে।
সালথার চাষি নাছির উদ্দিন জানান, সরকার যেভাবে প্রতিবছর ধান, গমের দাম নির্ধারণ করে দেয় সেভাবে পাটেরও দর নির্ধারণ করা থাকলে চাষিরা ন্যায্য মূল্য পেতো।
এদিকে পাটের দর প্রসঙ্গে ফরিদপুর গোল্ডেন জুট মিলের পরিচালক মহাসিনুল ইসলাম গুড্ডু বলেন, ‘আমরা যারা পাট কলের সাথে যুক্ত তাদের দাবি হলো মিলের উৎপাদিত পাট পণ্য বিক্রয় মূল্যের সাথে যদি পাট ক্রয় মূল্যের পার্থক্য বেশি থাকে তাহলে মিল মালিকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সে কারণে পণ্য উৎপাদন মূল্যের সাথে হিসাব মিলিয়ে কাঁচা পাটের দর নির্ধারণ করা দরকার। এতে সকলের লাভ হবে।’
আরও পড়ুন: শ্রমিক সংকট ও পোকার বিড়ম্বনায় ফরিদপুরের পাট চাষিরা
ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ ড. হযরত আলী জানান, সোনালী আঁশ খ্যাত ফরিদপুরের উৎপাদিক পাটের চাহিদা বিশ্ব জুড়ে। চলতি মৌসুমে পাটের আবাদ হয়েছে ৮৫ হাজার ৭৭ হেক্টর জমিতে। এর বিপরীতে কৃষি বিভাগ উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ১০ লাখ ৫২ হাজার বেল। তবে এবার বেশি উৎপাদন হয়েছে।
পাটের দরের বিষয়ে তিনি বলেন, বর্তমান বাজারের যে দরে পাট বিক্রয় হচ্ছে তাতে কৃষকের লাভের পরিমাণ একটু কম হচ্ছে। কারণ মৌসুমের শুরুতে তাদের আবাদ করতে খরচ হয়েছে বেশি।
তিনি বলেন, মণ প্রতি ৩ হাজার থেকে ৩৫০০ টাকা দর কৃষক পেলে তাদের ভালো লাভ পেতো।
আড়িয়াল খাঁর ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে খাদ্য সহায়তা
ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার আড়িয়াল খাঁ নদীর ভাঙনকবলিত চরনাছিরপুর ও চর মানাইড় দুটি ইউনিয়নে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর খাদ্য সহায়তা বিতরণ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে সদরপুর উপজেলার চন্দ্রপাড়া নামক এলাকায় এই খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হয়।
এ সময় শতাধিক নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত দুস্থ ও অসহায় পরিবারের মাঝে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার তুলে দেন জেলা প্রশাসক অতুল সরকার। খাদ্য সহায়তার মধ্যে ছিল চাল, ডাল, আটা, লবন, তেল।
এসময় সদরপুর উপজেলা চেয়ারম্যান কাজী শফিকুর রহমান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তারেক মাহমুদ, সহকারি কমিশনার (ভূমি) জিয়াউর রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান মিজনুর রহমান শিকদার, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান জিনিয়া নাজনী কল্পনা, চরনাছিরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শেখ আক্কাস আলী, চরমানাইড় ইউনিয়নে চেয়ারম্যান আইয়ূব আলী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
পরে জেলা প্রশাসক উপজেলার বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন।
এ সময় তিনি বলেন, সরকার প্রধানের নির্দেশ স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে চলমান বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে খাদ্য সহায়তা দেয়া হচ্ছে। এ পর্যন্ত একশ মেট্রিক টন চাল ও ১২ লাখ টাকা শিশু খাদ্য এবং গবাদি পশুর খাদ্য ক্রয়ের জন্য দেয়া হয়েছে।
ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী পার্থ প্রতিম সাহা জানিয়েছেন, পদ্মার পানি গত দুদিন কমতে শুরু করেছে। তবে এখনও বিপৎসীমার ৬৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
আরও পড়ুন: নেত্রকোণায় বন্যার্তদের সহায়তায় হুয়াওয়ে
তিন বছর ঘুরেও কৃষি সহায়তা পাচ্ছেন না কব্জি হারানো মুক্তার
শোকের মাসে ফরিদপুর আ’লীগের খাদ্য সহায়তা বিতরণ
ফরিদপুরে পদ্মার পানি বিপৎসীমার ওপরে
ফরিদপুরে পদ্মার পানি বেড়েই চলেছে। বর্তমানে বিদৎসীমার ৬৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে পানিবন্দী মানুষদের জন্য সরকারি খাদ্য সহায়তা অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রশাসন।
ফরিদপুর পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী পার্থ প্রতিম সাহা জানান, পদ্মায় গোয়ালন্দ পয়েন্টে গত ২৪ ঘণ্টায় পদ্মার পানি বেড়েছে ৮ সেন্টিমিটার। বর্তমানে এই নদী পানির উচ্চতা ৯ দশমিক ৩৪ মিটার যা বিপৎসীমার ৬৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
আরও পড়ুন: বন্যায় কুড়িগ্রামে ভোগান্তি চরমে
পানি বৃদ্ধির ফলে চারটি উপজেলা জেলা সদর, চরভদ্রাসন, সদরপুর ও ভাঙ্গা উপজেলার ১৩ টি ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষ এখন পানিবন্দি। এই সকল এলাকার প্রায় দেড়শতাধিক গ্রামে ফসলি খেত, রাস্তা, নিচু এলাকার বসতবাড়ি তলিয়ে গেছে। এছাড়াও নদী ভাঙনের শিকার হচ্ছে মধুখালী, আলফাডাঙ্গা ও সদরপুরের বিভিন্ন অংশে।
ইতোমধ্যে সরকারিভাবে এই সকল এলাকায় ৫০ মেট্রিক টন চাল ও সাড়ে নয় লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
এদিকে, জেলার মধুমতি ও আড়িয়াল খাঁর বিভিন্ন অংশে ভাঙন দেখা দেয়ায় প্রতিদিনই ফসলের জমিসহ বিভিন্ন স্থাপনা বিলীন হচ্ছে। এছাড়াও ফরিদপুর উপজেলার নর্থ চ্যানেল ও ডিক্রীরচর ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে।
আরও পড়ুন: মাগুরায় বন্যার পানিতে রাস্তা ডুবে জনদুর্ভোগ চরমে
ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার জানান, পানিবন্দি মানুষের মাঝে খাদ্য সহায়তা দেয়া হচ্ছে, পর্যাপ্ত খাদ্য মজুদ রয়েছে। এছাড়া বন্যার্তদের জন্য আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
ফরিদপুর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গ্রেপ্তার
ফরিদপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফাহাদ বিন ওয়াজেদ ফাইনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ফরিদপুর জেলা পুলিশ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। তার বিরুদ্ধে মারামারি, প্রভাব বিস্তার ও বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগে মামলা রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জামাল পাশা জানান, বুধবার দুপুর দুইটার দিকে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ফেরিঘাট হতে ফাইনকে আটক করে ডিবি পুলিশের একটি দল। এরপর তাকে ফরিদপুরে নিয়ে আসা হয়। তার বিরুদ্ধে ফরিদপুরের কোতোয়ালি থানায় চারটি মামলা রয়েছে। এছাড়াও ঢাকার কাফরুল থানায় সিআইডির দায়েরকৃত মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে দায়েরকৃত মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি এই ফাহাদ বিন ওয়াজেদ ফাইন।
আরও পড়ুন: কলেজ ছাত্রকে অপহরণ: ছাত্রলীগ নেতাসহ আটক ৩
জানা গেছে, ছাত্রলীগের রাজনীতি থেকে উঠে আসা ফাহাদ বিন ওয়াজেদ ফাইন ফরিদপুরের কৃষি কলেজ ছাত্রছাত্রী সংসদের ভিপি ছিলেন। গত বছরের ২০ এপ্রিল ফরিদপুর জেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন তিনি।
আরও পড়ুন: আ’লীগ নেতার বাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার
২০২০ সালের ৭ জুন রাতে এক বিশেষ অভিযানে ফরিদপুরের তৎকালীন ক্ষমতাশালী এক ডজন নেতা পুলিশের অভিযানে গ্রেপ্তারের পর থেকে তিনি আত্মগোপনে চলে যান। পরে স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটি তাকে সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে বহিষ্কার করে।
আ’লীগ নেতার বাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার
পাবনার ফরিদপুর উপজেলায় আওয়ামী লীগের এক নেতার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ৯৫টি স্টিলের বর্ষা জাতীয় দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার দুপুরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক আইন বিষয়ক সম্পাদক হেলাল তালুকদারের বাড়িতে এই অভিযান চালায় পুলিশের একটি দল।
অভিযানের পর থেকে ওই আওয়ামী লীগ নেতাসহ তার সহযোগীরা পলাতক রয়েছে।
ফরিদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদ রানা বলেন, উপজেলার পুঙ্গলী ইউনিয়নের রতনপুর গ্রামের মৃত আক্কেল তালুকদার ছেলে হেলাল তালুকদার (৪০) বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে নিজ বাড়িতে অবস্থান করছেন-এমন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ ওই বাড়িতে অভিযান চালায়।
পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে হেলাল তালুকদার ও তার সহযোগীরা নৌকাযোগে পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ তার সেমি পাকা টিনশেড বৈঠক ঘরে তল্লাশি চালিয়ে ৯৫টি স্টিলের পাইপ দিয়ে তৈরি বর্ষা জাতীয় দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় মামলা দায়েরের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। সেইসাথে পলাতক হেলাল তালুকদারকে গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান চলছে বলে জানান ওসি মাসুদ রানা।
এ বিষয়ে ফরিদপুরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলী আশরাফুল কবীর বলেন, হেলাল তালুকদার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক আইন বিষয়ক সম্পাদক। তার বাড়ি থেকে দেশী অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনা শুনেছি। তার বিষয়ে দলীয় সভায় আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
আরও পড়ুন: অস্ত্র মামলায় গোল্ডেন মনিরের বিচার শুরু
বোরহানউদ্দিনে দেশীয় অস্ত্রসহ ২ জলদস্যু আটক
রাঙ্গামাটিতে সেনাবাহিনীর পৃথক অভিযানে অস্ত্র উদ্ধার, আটক ৩
ফরিদপুরে পদ্মার পানি বিপৎসীমার ওপরে, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
ভারি বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পানিতে ফরিদপুরে পদ্মার পানি গত চার দিন যাবত বেড়েই চলছে। ফলে দেশের মধ্যাঞ্চলের এই জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়েছে।
গোয়ালন্দ পয়েন্টে গত ২৪ ঘণ্টায় ৭ সেন্টিমিটার পদ্মার পানি বৃদ্ধি পেয়ে তা এখন বিপদসীমার ৪১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফরিদপুর সদর উপজেলার নর্থ চ্যানেল, ডিক্রিরচর ও চরমাধবদিয়া ইউনিয়নের ৫০টি গ্রামের ৫ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
ডিক্রিরচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান মিন্টু বলেন, আমার ১২টি গ্রাম বন্যাকবলিত। আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা আছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে পানিবন্দী মানুষদের আশ্রয় কেন্দ্রে আনা হবে।
নর্থ চ্যানেল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোস্তাকুজ্জামান জানান, তার ইউনিয়নের ১৪টি গ্রামের ১৩ শতাধিক পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। পানিবন্দী মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত আছে।
ফরিদপুর সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মৃকর্তা (ইউএনও) মো. মাসুম রেজা বলেন, পানিবন্দী মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে। প্রশাসনের কাছে পর্যাপ্ত শুকনো খাবার, শিশু খাদ্য ও গবাদি পশুর খাদ্য মজুদ আছে। আশ্রয় কেন্দ্রে বন্যা দুর্গতদের নিরাপদ স্থানে রাখার প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে বিপদসীমার উপরে পদ্মার পানি, তীব্র ভাঙন
তিস্তার ভাঙন: কুড়িগ্রামের ৫ শতাধিক ঘরবাড়ি নদী গর্ভে
ফরিদপুরে বিপদসীমার উপরে পদ্মার পানি, তীব্র ভাঙন
ভারি বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পানিতে ফরিদপুরে পদ্মার পানি এখন বিপদসীমা অতিক্রম করছে। এছাড়া জেলার পাঁচ উপজেলার কয়েকটি স্থানে নদী পাড় তীব্রভাবে ভাঙন শুরু হয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় পদ্মার গোয়ালন্দ পয়েন্টে ১৪ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। যারা ফলে এই পানি জেলার মধুমতি, কুমার নদী ও আড়িয়াল খাঁ নদের পানি বৃদ্ধি পেয়ে নিম্নাঞ্চলে প্রবেশ করছে।
ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বের্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুলতান মাহমুদ জানান, প্রতিদিনই ফরিদপুরের পদ্মা, মধুমতি ও আড়িয়ালখাঁর পানি বাড়ছে। মঙ্গলবার সকালে তা বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফরিদপুরের বিপদসীমার লেভেল ৮ দশমিক ৬৫ সেন্টিমিটার।
আরও পড়ুন: মানিকগঞ্জে নদী থেকে বালু উত্তোলন, দণ্ডিত ৮
তিনি বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় পদ্মার পানি বেড়েছে ১৪ সেন্টিমিটার। বর্তমানে গোয়ালন্দ পয়েন্টে পদ্মা নদীর পানি ৮ দশমিক ৬৫ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধি ফলে পাঁচটি উপজেলার কয়েকটি স্থানে নদী পাড় ভাঙন শুরু হয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেল প্রাথমিক প্রটেকশনের জন্য।
জেলার সদর উপজেলার গোলডাঙ্গী এলাকার গৃহিনী নাছিমা বেগম বলেন, হঠাৎ করে গত ৪-৫ দিন হলো পানি বাড়ছে। বৃদ্ধির হারও বেশি।
আমাদের বাড়ি আশেপাশে পানি চলে এসেছে। মাঠে ধান ও ধুনচে গাছ তলিয়ে যাচ্ছে।
একই উপজেলার ডিগ্রীরচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান মিন্টু বলেন, আমার ইউনিয়নের বেশিরভাগই চরাঞ্চল। স্বাভাবিকভাবেই পানি বাড়ায় চরের মাঠ-ঘাট তুলিয়ে গেছে এবং আউশ ধান ও অন্যানো ফসলের খেত পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে মধুমতি নদীতে ভাঙন
ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার বলেন, পানি বৃদ্ধির বিষয়টি আমরা সতর্কভাবেই দেখছি। জেলার বিভিন্ন উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউপি চেয়ারম্যানদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে খোঁজ খবর রাখতে। কোথাও জনমানুষের দুর্ভোগ সৃষ্টি হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তিনি বলেন, যে সব এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে সে সব স্থানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বলা হয়েছে।