ফরিদপুর
ফরিদপুরে পদ্মার তীর সংরক্ষণ বাঁধ হুমকির মুখে
ফরিদপুরে চরভদ্রাসনে পদ্মার ভাঙনকবলিত তিন কিলোমিটার এলাকায় স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের এক বছর যেতে না যেতেই হাজীগঞ্জ বাজার এলাকায় কয়েকটি অংশ হুমকির মুখে পড়েছে। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা (পাউবো) বলছেন, দ্রুতই এর সমাধান করা হবে।
ফরিদপুর পাউবো সূত্রে জানাযায়, ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড চরভদ্রাসনের পদ্মা নদীর তীব্র ভাঙনকবলিত এমপিডাঙ্গী, চরহাজীগঞ্জ বাজার ও চরহোসেনপুরের সাড়ে তিন কিলোমিটার নদী শাসনের কাজ করে সংশ্লিষ্ট বিভাগ। এ কাজে প্রথম পর্যায়ে বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ডাপিং এবং পরবর্তীতে সিসি ব্লক দিয়ে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা হয়। ১৪৪ কোটি টাকা ব্যয়ে সাত গ্রুপের তিনটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বাঁধের কাজ সম্পন্ন করেছে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে তিস্তার ভাঙনে দিশেহারা মানুষ
চরভদ্রাসনের হাজীগঞ্জ বাজারের গিয়ে দেখা যায়, বাজার সংলগ্ন পদ্মার তীর সংরক্ষণ বাঁধের বেশ কয়েকটি স্থানে বৃষ্টির পানির চাপে ডেবে গেছে, কোথাও কোথাও বাঁধে ফাটল ধরেছে। এই ডেবে যাওয়া আর ফাটল ধরায় স্থানীয় বাসিন্দা এবং বাজারের ব্যবসায়ীদের মধ্যে অতঙ্ক তৈরি করেছে।
চরভদ্রাসন উপজেলা চেয়ারম্যান মোতালেব হোসেন বলেন, ‘উপজেলার সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ বাজার এটি, এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে বর্তমান সরকার বাজার রক্ষার্থে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করে। কিন্তু বাঁধটি নির্মাণের এক বছরে যেতে না যেতেই বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই হুমকির মুখে পড়ল।’
এই বাঁধ নির্মাণের কাজের ত্রুটি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি।
আরও পড়ুন: বন্যার আশঙ্কা: কুড়িগ্রামে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত
লকডাউন লঙ্ঘন: ফরিদপুরে ৫ দিনে ৬৩৬ মামলা
সরকার ঘোষিত কঠোর লকডাউন লঙ্ঘন করায় ফরিদপুরে ১ থেকে ৫ জুলাই রাত ১০টা পর্যন্ত ৬৩৬ মামলা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। মামলার বিপরীতে দণ্ডপ্রাপ্তদের কাছ থেকে ৩ লাখ ৩৯ হাজার ১৬০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।
জেলার ১৫ জন নির্বাহী হাকিম এই মামলাগুলো করেন। এসময় তারা মানুষকে ঘরে রাখতে বিভিন্ন ধরনের প্রচারণা চালান।
আরও পড়ুন : কুষ্টিয়ায় করোনা ও উপসর্গে আরও ১৩ মৃত্যু
ফরিদপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) তাসলিমা আলী জানান, কঠোর লকডাউন চলাকালে সরকারি দেয়া বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে ১৫টি ভ্রাম্যামাণ আদালত জেলার নয় উপজেলাতে পরিচালনা করা হয়। এসময় আদালতকে সহায়তা করে সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিজিবি ও আনসার বাহীর সদস্যরা।
তিনি জানান, ১৫ জন ভ্রাম্যমাণ আদালত ‘সরকারি বিধিনিষেধ অমান্য করা এবং কারণ ছাড়া ঘোরা ফেরা করার’ অভিযোগে দণ্ডাদেশ দেয় ।
সরকারি কঠোর বিধিনিষেধ জারি থাকাকালে নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
এছাড়াও লকডাউন বাস্তবায়নের জন্য জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে জেলায় ১২টি স্থায়ী চেকপোস্ট ও ২৯টি মোবাইল টিম বিভিন্ন জায়গায় কাজ করছে।
এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় নতুন করে ১৬৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।
আরও পড়ুন: করোনা: কুমিল্লায় ২৪ ঘণ্টায় ৪ মৃত্যু, শনাক্ত ২৮২
জেলা সিভিল সার্জন ডা. ছিদ্দীকুর রহমান জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ফরিদপুর পিসিআর ল্যাবে ৩৫৫ নমুনা পরীক্ষার করে ১৬৩ জনের শনাক্ত হয়েছে আর এই সময়ে করোনায় ছয় জনের মৃত্যু হয়েছে এবং শনাক্তের হার ৪৫ দশমিক ৯১ শতাংশ।
ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. সাইফুল ইসলাম জানান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজের আইসিইউয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছে ১৫ জন এবং করোনা সাধারণ ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছে ২৮৬ জন।
আরও পড়ুন: করোনা স্বাভাবিক না হলে গুচ্ছে ভর্তি পরীক্ষা নয়, শিগগিরই নতুন সিদ্ধান্ত
ফরিদপুরে করোনা ও উপসর্গে আরও ১২ জনের মৃত্যু
ফরিদপুরে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা ও উপসর্গে ১২ জন মারা গেছেন। এসময়ে নতুন শনাক্ত হয়েছেন ১৯৪ জন।
জেলা সিভিল সার্জন ডা. সিদ্দীকুর রহমান জানান, ফরিদপুর পিসিআর ল্যাবে গত ২৪ ঘণ্টায় মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৩৭০টি। এর মধ্যে শনাক্ত হয়েছে ১৯৪। আক্রান্তের হার ৫২.৪৩ শতাংশ। জেলায় মোট আক্রান্ত হয়েছে ১৩ হাজার ৬২২ জন, সুস্থ হয়েছে ১১ হাজার ৪৬৭ জন।
আরও পড়ুন: একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু, শনাক্তেও রেকর্ড
এদিকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. সাইফুল ইসলাম জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১২ ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে করোনা শনাক্ত হয়ে দুই এবং উপসর্গ নিয়ে ১০ জন মারা যান।
আরও পড়ুন: টিকা পরীক্ষার বানর ধরতে গিয়ে ‘লাঞ্ছিত’ পাঁচ!
মৃতদের মধ্যে ফরিদপুরের নাজমা (৪০), মনোয়ারা বেগম (৫৫), শাজাহান (৭১), সিদ্দিক (৪৫), শাজাহান (৮০), রওশন আলী (৮৫) ও দেলোয়ার হোসেন (৬০), মাদারীপুরের শামসুন্নাহার (৭০) ও হরবিলাস (৩৮), রাজবাড়ীর রেজাউল হাসান (৪৫) ও মজিবুর রহমান (৫৯) এবং ঝিনাইদাহের হিমলা বিশ্বাস (৭৯)।
আরও পড়ুন: সরকারি নির্দেশনা অমান্য করলে লাইসেন্স বাতিলের হুঁশিয়ারি মেয়র আতিকের
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজের আইসিইউয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছে ১৫ জন এবং করোনা সাধারণ ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছে ২৬৯ জন।
ফরিদপুর রেলস্টেশন মাস্টারের ওপর হামলা, পণ্য আনলোড বন্ধ
ফরিদপুর রেলস্টেশন মাস্টারের ওপর হামলার ঘটনায় ভারত থেকে আসা মালবাহী চারটি ট্রেনের পণ্য আনলোড বন্ধ রয়েছে।
বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১ টার সময় দুর্বৃত্তরা এই হামলা চালায়। পরে পুলিশ আসলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।
স্টেশন মাস্টার মো. তাকদির হোসেন বলেন, দেশ ও বিদেশ থেকে আসা পণ্যবাহী ট্রেনের পণ্য আনলোডকে কেন্দ্র করে সৈয়দ কনস্ট্রকশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টকে শর্ত ভঙের কারণে বাতিল করা হয়। এতে প্রতিষ্ঠানটির লোকজন ক্ষুব্ধ হয়।
আরও পড়ুন: খিলগাঁওয়ে ট্রেনে কাটা পড়ে ব্যবসায়ীর মৃত্যু
তিনি বলেন, ‘বুধবার রাত সাড়ে ১১ টার সময়ে ২০-২৫ জন ব্যক্তি এসে স্টেশনে আমার কক্ষে হামলা চালায়। বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানালে তারা দ্রুত এসে আমাকে রক্ষা করে।’
স্টেশন মাস্টার বলেন, বিষয়টি রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট থানায় আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
আরও পড়ুন: খিলগাঁওয়ে ট্রেনে কাটা পড়ে ব্যবসায়ীর মৃত্যু
এ বিষয়ে ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জামাল পাশা জানান, স্টেশনের পণ্য আনলোড করাকে কেন্দ্র করে বিরোধ ছিল। আমরা খবর পাওয়া মাত্রই পুলিশ পাঠিয়ে ছিলাম। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘এছাড়াও রেলস্টেশন মাস্টার বা কর্তৃপক্ষ কোনে লিখিত অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। পুলিশ বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখছে।’
ফরিদপুরে করোনায় আরও ৬ মৃত্যু, শনাক্ত ৪৪.৮০ শতাংশ
ফরিদপুরের গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে আরও ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। এনিয়ে জেলায় মোট মৃত্যু ২২১ জনে দাঁড়িয়েছে।
এছাড়া একদিনে ২৭৯ নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ১২৫ জন, আক্রান্তের হার ৪৪ দশমিক ৮০ শতাংশ।
আরও পড়ুনঃ রামেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটে একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু
ফরিদপুর সিভিল সার্জন ডা. ছিদ্দিকুর রহমান জানিয়েছেন, গত ২৪ ঘণ্টায় ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ছয়জনের প্রাণহানি ঘটেছে। একই সময় আক্রান্ত হয়েছে ১২৫ জন।
তিনি বলেন, মারা যাওয়া ছয়জনের মধ্যে দুজন করানোর আক্রান্ত হয়ে আইসিইউতে ভর্তি ছিল। এছাড়া অন্য চারজন করোনা উপসর্গ নিয়ে আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
আরও পড়ুনঃ কুষ্টিয়ায় করোনা ও উপসর্গ নিয়ে আরও ৮ জনের মৃত্যু
ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. সাইফুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত ফরিদপুর মেডিকেল কলেজের আইসিইউ ওয়ার্ডে ১৫ রোগী ভর্তি রয়েছেন। এছাড়াও করোনা সাধারণ ওয়ার্ডে ২৩১ জন রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ফরিদপুরে প্রস্তুত ৫০ হাজার পশু
আসন্ন ঈদুল আযহা উপলক্ষে ফরিদপুর জেলার ছোট-বড় পশু খামারিরা ৫০ হাজারেরও বেশি পশু প্রস্তুত করেছে। খামারিরা এখন শেষ মুহূর্তে তাদের পশুকে পরিচর্যার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
ফরিদপুর জেলা প্রাণি সম্পদ অফিস সূত্রে জানা যায়, জেলার নয় উপজেলায় ছোট-বড় ৫ হাজার ১২০ জন খামারি রয়েছে। এর মধ্যে পদ্মার চারঞ্চলের খামারিই বেশি । এই খামারিরা আসন্ন ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে অর্ধলক্ষাধিক পশু প্রস্তুত করেছে। যা নিজ জেলার চাহিদা মিটিয়ে অন্যত্র সরবরাহ করা যাবে।
আরও পড়ুনঃ ৯৯৯ এ কল দিয়ে ছিনতাইকৃত গরুর ট্রাক উদ্ধার, আটক এক
ফরিদপুর সদর উপজেলার গেরদা এলাকার বড় খামারি ‘সৈয়দ শাহ আলী বাগদাদি’ খামারের মালিক সৈয়দ জহুরুল আলম জানান, তার খামারের ৬০টি বড় ও মাঝারি আকারের গরু রয়েছে। তারা উন্নত জাতের অল্প বয়সী গরু কিনে কোরবানির বাজারের জন্য বড় করে তৈরি করেছেন।
এই খামারি জানান, সম্পূর্ণ দেশীয় ভিটামিনযুক্ত খাবার কাঁচা ঘাস, খড় এবং দানাদার খাবার, খইল, ভুসি ও চালের গুড়া খাইয়ে পশু মোটা তাজা করা হয়েছে। আর এসব খামারে কর্মসংস্থানও হয়েছে অনেকের।
আরও পড়ুনঃ সিরাজগঞ্জে দুধ নিয়ে বিপাকে খামারিরা
একই এলাকার ‘তাহেরা এগ্রোর’ মালিক আবরার নওশের বলেন, ‘আমার খামারে ৫০টি বড় আকারের গরু কোরবানির বাজারের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। আমরা সারা বছর সঠিক পরিচর্যার মাধ্যমে পশুগুলোকে উপযুক্ত করেছি, আশা করছি ভালো দামও পাব।’
ফরিদপুর জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. নুরুল্লাহ মো. আহসান বলেন, কোভিড-১৯ এর কারণে এবারে জেলার প্রতিটি উপজেলায় আমরা অনলাইনে ও লাইভ ওয়েটে কোরবানির পশু বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছি। খামারিরা তাদের গরুর ছবি, ওজন ও মূল্য নির্ধারণ করে পেজে পোস্ট দিচ্ছে।
আরও পড়ুনঃ সাতক্ষীরায় গরুর ক্ষুরারোগে দুশ্চিন্তায় খামারিরা, ১৫ দিনে ১৮ গরুর মৃত্যু
তিনি বলেন, ‘জেলায় এ বছর ৪৮ হাজার ৩৪৯টি গরু-ছাগল কোরবানির জন্য প্রস্তুত হয়েছে। তবে এই জেলায় পশুর চাহিদা রয়েছে ৩৬ হাজার। আমরা জেলার চাহিদা পূরণের পরও ১৪ হাজার পশু অন্যত্র পাঠাতে পারব।’
চরভদ্রাসনের চায়না দুয়ারী ও আড়াআড়ি বাঁধ অপসারণ
ফরিদপুরের চরভদ্রাসনের বিভিন্ন নালা ও নদ-নদী থেকে ছয়টি চায়না দুয়ারী (মাছ ধরার ফাদ) ও ১১টি আড়াআড়ি বাঁধ অপসারণ করা হয়েছে।
চরভদ্রাসনে মৎস্য সম্পদ রক্ষায় বুধবার বিকালে স্থানীয় লোহারটেক কোলের বিভিন্ন স্থানে এ অভিযান চালায় উপজেলা মৎস্য দপ্তর।
আরও পড়ুন: বাড়ছে পানি, ফরিদপুরে নদী ভাঙন শুরু
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা এস.এম মাহমুদুল হাসান জানান, মৎস্য সুরক্ষা ও সংরক্ষণ আইন ১৯৫০ এবং মৎস্য সুরক্ষা ও সংরক্ষণ বিধিমালা ১৯৮৫ অনুযায়ী আমরা অভিযান পরিচালনা করি। এসময় ১১টি আড়াআড়ি বাঁধ, ৬টি চায়না দুয়ারী ও একটি ভ্যাসাল জাল অপসারণ ও বিনষ্ট করা হয়।
তিনি বলেন, উপজেলার সদর ইউনিয়নের নজুর দোকান হতে শুরু করে সর্দারবাড়ি পর্যন্ত লোহারটেক কোলের বিভিন্ন স্থানে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে ৩ পৌর এলাকায় ৭ দিনের কঠোর বিধিনিষেধ শুরু
মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘পদ্মা নদীতে জোয়ারের পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে লোহারটেক কোলসহ বিভিন্ন খালে দেশিয় প্রজাতির বিভিন্ন মাছ এসে ডিম ছাড়ে। কিন্তু উপজেলার একশ্রোণির লোভী অসাধু মাছ শিকারিরা কোলের বিভিন্ন স্থানে অবৈধভাবে আড়াআড়ি বাঁধ, ৭০ থেকে ৮০ ফুট দৈর্ঘ্যের চায়না দুয়ারী ও ভ্যাসাল জাল দিয়ে মাছের বংশ বিস্তার রোধ করার পাশাপশি মৎস্য সম্পদ ধ্বংস করে আসছিল।’
বাড়ছে পানি, ফরিদপুরে নদী ভাঙন শুরু
গত কয়েকদিন ধরে ফরিদপুরের বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বেড়েই চলছে। এতে জেলার পাঁচটি উপজেলার কয়েকটি স্থানে নদীর পাড় ভাঙন শুরু হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় পদ্মা নদীর গোয়ালন্দ পয়েন্টে ২৭ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড ।
ফরিদপুর পাউবো’র নির্বাহী প্রকৌশলী সুলতান মাহমুদ জানান, প্রতিদিনই ফরিদপুরের পদ্মা, মধুমতি ও আড়িয়াল খা’র পানি বাড়ছে। তবে এখনও পানি বিপদসীমার নিচে রয়েছে।
আরও পড়ুনঃ ফরিদপুরে ৩ পৌর এলাকায় ৭ দিনের কঠোর বিধিনিষেধ শুরু
তিনি বলেন, গত ২৪ ঘন্টায় পদ্মার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে পয়েন্ট ২৭ সেন্টিমিটার। বর্তমানে গোয়ালন্দ পয়েন্টে পদ্মা নদীতে ৭ দশমিক ০৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে পাঁচটি উপজেলার কয়েকটি স্থানে নদী ভাঙন শুরু হয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি প্রাথমিক প্রটেকশনের জন্য।‘
জেলার নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি ও ভাঙন বিষয়ে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার বলেন, পানি বৃদ্ধির সঙ্গে নদীতে ভাঙন দেখা দেবে এটা স্বাভাবিক। তবে আমরা খোঁজ খবর রাখছি। কোথাও জরুরি কিছু করার প্রয়োজন হলে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে দিয়ে সেটি করা হবে।
আরও পড়ুনঃ বৃষ্টির পানিতে ডুবল ঢাকার রাস্তা, ভোগান্তিতে মানুষ
জেলা প্রশাসক আরও বলেন, ইতিমধ্যে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ফরিদপুরের নদী ভাঙন কবলিত এলাকাগুলো পরিদর্শন করেছেন।
দূর্যোগকালীন স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের পাশাপাশি পানি উন্নয়ন বোর্ডকেও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানান তিনি।
বোয়ালমারীতে ছাত্রলীগের কমিটি বাতিলের দাবিতে পদবঞ্চিতদের বিক্ষোভ
ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলা ও পৌরসভা ছাত্রলীগের নবঘোষিত আংশিক কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার বিকাল ৫টার দিকে বোয়ালমারী থানা রোডে অবস্থিত দলীয় কার্যালয়ে এ বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
জেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মো. রাজিব খান সজিবের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন ছাত্রলীগ নেতা মো. সুজন মোল্যা, মো. শান্ত, মো. লোকমান মিয়া প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ত্যাগীদের বঞ্চিত করে পকেট কমিটি করা হয়েছে। আমরা এ অবৈধ কমিটি মানিনা।
অবিলম্বে বোয়ালমারী উপজেলা ও পৌর ছাত্রলীগের কমিটি বাতিল করে সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠনের জোর দাবি জানান তারা।
আরও পড়ুন: হেফাজতের কমিটি প্রত্যাখ্যান করে যা বললেন শফীপুত্র ইউসুফ মাদানী
বক্তারা বলেন, দীর্ঘ ২৩ বছর পর নেতা-কর্মীরা আশা করেছিলেন সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি গঠন করা হবে। কিন্তু আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রহমান জেলা কমিটিকে চাপ দিয়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে কমিটি ঘোষণা করিয়েছেন। এই কমিটি অগঠনতান্ত্রিক ও অবৈধ।
সমাবেশ শেষে দলীয় কার্যালয় থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়ে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরে আবার দলীয় কার্যালয়ে ফিরে সমাবেশ করে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি করা হয়েছে মোর্তুজা আলী তমাল এবং সাধারন সম্পাদক পদে প্রান্ত সিদ্দিক এবং পৌর কমিটিতে সভাপতি পদে আমিনুল শেখ এবং সাধারণ সম্পাদক পদে সিরাজুল ইসলামের নাম ঘোষণা করা হয়।
আরও পড়ুন: ফরিদপুর জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটি গঠন
প্রসঙ্গত, সর্বশেষ ১৯৯৮ সালে বোয়ালমারী উপজেলা ছাত্রলীগের সম্মেলন হয়। ২৩ বছর পর গত বৃহস্পতিবার (১০ জুন) উপজেলা ও পৌর শাখার আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়।
ফরিদপুরে করোনায় আরো ২ জনের প্রাণহানি
ফরিদপুর, ১১ জুন (ইউএনবি)- ফরিদপুরে গত এক সপ্তাহ ধরে আবারও কোভিড-১৯ রোগীর শনাক্তের হার বাড়ছে।শুক্রবার সকাল পর্যন্ত গত ২৪ ঘন্টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও দুই জনের প্রাণহানি হয়েছে। এছাড়াও জেলায় করোনা পজিটিভ হয়েছে আরও ১৮ জন।ফরিদপুরের সিভিল সার্জন ডা. ছিদ্দীকুর রহমান জানান, হঠাৎ করে কনোনা রোগী বেড়ে যাওয়ায় ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আইসিইউ-এর সব কয়টি বেড পূর্ণ হয়ে গেছে
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে দ্বিতীয় ডোজের টিকার অপেক্ষায় প্রায় ১৯ হাজার মানুষ
১২৮টি করোনা পরীক্ষায় ১৮ জন করোনা শনাক্ত হন। জেলায় এ পর্যন্ত মোট করোনা রোগী সংখ্যা ১০ হাজার ৮৩৩ জন এবং মারা গেছে ১৮৭ ব্যক্তি।তিনি বলেন, শনাক্তের হার পরীক্ষার ২০.৭৫ শতাংশ, মৃত্যের হার আক্রান্তের ১.৭২ শতাংশ এবং সুস্থতার হার ৯৫.৪০ শতাংশ।জেলার এই স্বাস্থ্য কর্মকতা আরও বলেন, করোনার এই দ্বিতীয় ঢেউয়ে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট আসার পর কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। ঈদের আগে তুলনামূলক ভাবে রোগী বৃদ্ধির হার কম ছিল।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে মুজিব কিল্লার ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করলেন প্রধানমন্ত্রী
এই প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক অতুল সরকার বলেন, ‘করোনার দ্বিতীয় পর্যায়ে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট আসার পর থেকে আমরা আরও সতর্ক আছি। সরকারি নিদের্শনা অনুযায়ী জেলার সকল উপজেলা প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নিদের্শনা দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে কিনা সে বিষয়ে নিয়মিত মনিটরিং করা হচ্ছে।’