ফরিদপুর
মৌসুম শেষ হলেও প্রণোদনা পায়নি ফরিদপুরে পাট চাষিরা
দেশের অন্যতম প্রধান অর্থকারী ফসল সোনালী আশ খ্যাত পাট চাষে চাষিদের উদ্বুদ্ধ করতে সরকার চাষিদের প্রণোদনা প্রদান করেছে। কিন্তু ফরিদপুর অঞ্চলের চাষিরা সরকারি দেয়া প্রণোদনা এখনো ঠিকঠাক মতো পায়নি।
তাদের অভিযোগ, প্রতিটি ইউনিয়নে গুটি কয়েক চাষিদের মাঝেই এই প্রণোদনা দেয়া হয়েছে। আর সিংহভাগই বঞ্চিত রয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরে পাট উৎপাদনের শীর্ষ অবস্থান ধরে রেখেছে ফরিদপুর জেলা। প্রতি বছরই দেশের সেরা মানের পাট উৎপাদন হয় এ জেলায়। চলতি মৌসুমে জেলায় পাট চাষের লক্ষ্য মাত্রা ধরা হয়েছে ৮৬ হাজার হেক্টর জমিতে।
আরও পড়ুন: তীব্র তাপদাহে যশোরে শুকিয়ে যাচ্ছে পাটগাছ: বিপাকে কৃষক
কৃষি বিভাগ বলছে, এ পর্যন্ত জেলার লক্ষ্যমাত্রার ৯০ শতাংশ পাট চাষ সম্পন্ন হয়েছে। আর অল্প কিছুদিনের মধ্যে পাট চাষের মৌসুম শেষ হবে।
জেলার পাট অধিদপ্তর সূত্র জানায়, ‘উন্নত প্রযুক্তি নির্ভর পাট ও পাট বীজ উৎপাদন এবং সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায়‘ জেলা প্রতিটি উপজেলায় ২৫শ চাষিদের মধ্যে প্রণোদনা হিসাবে (পাট বীজ ও সার) বিতরণ করা হচ্ছে।
পাট চাষে চাষিদের আগ্রহী করতে সরকার পাট অধিদপ্তর জেলা পাট উন্নয়ন কর্মকতাদের মাধ্যমে চাষিদের বিঘা প্রতি ১ কেজি উন্নত মানের বীজ ও তিন প্রকারের (টিএসপি,ইউরিয়া ও এমওপি) ১২ কেজি সার বিনা মূল্যে প্রণোদনা হিসেবে দিচ্ছে। কিন্তু পাট চাষের মৌসুম শেষ হওয়ার প্রাক্কালেও জেলা ৯ উপজেলার মধ্যে চারটিতে এখনো ওই প্রণোদনা দেয়া শেষ হয়নি।
কৃষকের ফসল ঘরে তুলতে ধান কাটলেন ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক
চলমান কঠোর বিধিনিষেধের কারণে যান চলাচল বন্ধ থাকায় ধান কাটার শ্রমিক সংকটে পড়েছেন কৃষকরা। যদিও কিছু সংখ্যক শ্রমিক পাওয়া গেলেও তাদেরকে দ্বিগুন পরিমাণ মজুরি দিতে হচ্ছে। এতে করে দরিদ্র কৃষকরা বেশ সমস্যায় পড়ছেন।
এই সংকটের সময়ে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) অতুল সরকার স্বশরীরে কৃষকের পাশে দাঁড়িয়েছেন।
মঙ্গলবার দুপুরে শহরের বাইপাস সড়কের পাশে কৃষক রফিকুল ইসলামের ১০ কাঠা জমির ধান কেটে দেন জেলা প্রশাসক অতুল সরকারসহ কর্মকর্তারা।
আরও পড়ুন: সাড়ে ১১ লাখ টন চাল ও সাড়ে ৬ লাখ টন ধান কিনবে সরকার
অতুল সরকার বলেন, করোনাকালীন সময়ে দরিদ্র কৃষকেরা শ্রমিক সংকটে তাদের জমির ফসল ঘরে তুলতে পারছে না। এই সংকটকালীন সময়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দরিদ্র কৃষকের জমির ধান কেটে দেয়া শুরু হয়েছে।
তিনি বলেন, কৃষি উৎপাদনে ফরিদপুর পিছিয়ে নেই। আমরা কৃষকদের উৎসাহিত করার জন্য কৃষকদের ভালোবাসার অংশ হিসেবে আমরা যে তাদের সুখ-দুঃখে সব সময় তাদের সাথে রয়েছি সেটাকে তুলে ধরার জন্য তাদের সাথে মিলিত হয়েছি এবং কিছু পরিমাণ প্রতীকী ধান কাটা হয়েছে।
আরও পড়ুন: কৃষকের ধান কেটে দিল নওগাঁর যুবলীগ নেতা-কর্মীরা
জেলা প্রশাসক বলেন, শহরের বাইপাস সড়কের পাশে দরিদ্র কৃষক রফিকুল ইসলামের ১০ কাঠা জমির ধান কেটে দেয়া হয়েছে। দরিদ্র কৃষকদের ধান কেটে দেয়া কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
এ সময় জেলা প্রশাসকের সাথে ধান কাটায় অংশ নেন সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রাজ্জাক মোল্লা, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাসুম রেজা, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড.হযরত আলী, সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবুল বাশার সহ কর্মকর্তারা।
আরও পড়ুন: হাওরে ৯৯ ও সারা দেশে ৩৯ শতাংশ বোরো ধান কাটা শেষ
আরও পড়ুন: হাওরে ধান কাটার পর্যাপ্ত সক্ষমতা রয়েছে: কৃষিমন্ত্রী
দুই মাথাওয়ালা শিশু জন্মের তিন ঘণ্টা পর মৃত্যু
ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে দুই মাথাওয়ালা একটি শিশু জন্মের তিন ঘণ্টা পর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
সোমবার সকালে পৌরসদরের দি ইস্টার্ন সার্জিক্যাল ক্লিনিকে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ওই শিশুটির জন্ম হয়। তিন ঘণ্টা পরেই শিশুটি মারা যায়।
আরও পড়ুন: কালীগঞ্জে নদীতে ডুবে শিশুর মৃত্যু
জানা যায়, জেলার বোয়ালমারী উপজেলার শেখর ইউনিয়নের বারাংকুলা গ্রামের মো. সুমন মোল্যার স্ত্রী মোসা. সাথী আক্তার (১৯) অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সন্তান প্রসবের জন্য সকালে বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সংলগ্ন দি ইস্টার্ন সার্জিক্যাল ক্লিনিকে ভর্তি হন। এরপর গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানি উপজেলা ১০০ শয্যা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তত্ত্বাবধায়ক ডা. তাপস কুমার বিশ্বাস ওই ক্লিনিকে মহিলার অস্ত্রোপচার করলে দুই মাথাওয়ালা এক শিশু জন্মগ্রহণ করে। শিশুটির অবস্থা সংকটজনক হওয়ায় তাকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: ভাড়াটিয়াকে তালাবদ্ধ করে রাখার অভিযোগ, শিশুর মৃত্যু
শিশুটির বাবা মো. সুমন মোল্যা জানান, ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে সাড়ে ১১টার দিকে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: খাগড়াছড়িতে নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ার প্রকোপ বাড়ছে, দুই সপ্তাহে ৩ শিশুর মৃত্যু
এ ব্যাপারে ডা. তাপস কুমার বিশ্বাস বলেন, আলট্রাসনোগ্রাম রিপোর্টে উল্লেখ ছিল জমজ সন্তানের কথা। কিন্তু অপারেশনের পর দেখতে পাই কনজয়েন বেবি (সংযুক্ত)। মা সুস্থ থাকলেও শিশুটির অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় শিশুটিকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসকরা শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন।
মানবিক সহায়তা পেল ফরিদপুরের ৫ শতাধিক অসহায় মানুষ
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী প্রদত্ত মানবিক সহায়তা পেয়েছে ফরিদপুরের ৫ শতাধিক অসহায় মানুষ।
জেলা প্রশাসনের আয়োজনে ও জেলা প্রশাসক অতুল সরকারের নির্দেশনায় সোমবার বেলা ১১টার দিকে ফরিদপুর জেলা প্রশাসন স্কুল অ্যান্ড কলেজ চত্বরে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়।
এ সময় সহায়তা হিসেবে প্রত্যেকের হাতে ১০ কেজি চাল, ২ কেজি আলু ও এক কেজি করে ডাল ও লবন তুলে দেয়া হয়।
আরও পড়ুন: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অসহায়দের বাড়ি বাড়ি খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দিলেন ইউএনও
এ সময় ফরিদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) দীপক কুমার রায়, ফরিদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মাসুম রেজা, সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুহাম্মদ আল আমিন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ বায়েজিদুর রহমান সহ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রথম দিনে সদর উপজেলার ৫ শত দরিদ্র মানুষের মাঝে মানবিক সহায়তা প্রদান করা হয়। ইতোপূর্বে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার উদ্ভাবিত ‘মানবিক সহায়তা কার্ডের’ মাধ্যমে বিগত বছরের ন্যায় এ বছরও এ সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে করোনায় ক্ষতিগ্রস্তদের খাদ্য সহায়তা দিল মালয়েশিয়া কমিউনিটি
ফরিদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাসুম রেজা জানান, করোনাকালীন সময়ে দরিদ্র মানুষের মাঝে প্রধানমন্ত্রী প্রদত্ত মানবিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। চন্ডিপুরে অবস্থিত আশ্রায়ন কেন্দ্রের অসহায় মানুষের মাঝে পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার বিতরণ করা হয়েছে। মাচ্চর, কানাইপুর সহ আশ পাশের কয়েকটি আশ্রায়ন কেন্দ্রের ১১০ জন অসহায় মানুষকে চন্ডিপুর আশ্রায়ন কেন্দ্রে আনা হয়। সেখানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সকলের হাতে চাল, ডাল, তেল, লবন সহ পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবারের একটি প্যাকেট তুলে দেয়া হয়েছে।
ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার বলেন, করোনাকালীন সময়ে প্রধানমন্ত্রীর মানবিক সহায়তা জেলার সকল দরিদ্র মানুষের হাতে পর্যায়ক্রমে তুলে দেয়া হবে। সোমবার সদর উপজেলার পাঁচ শতাধিক অসহায় মানুষের হাতে সহায়তা হিসেবে খাদ্য সামগ্রী দেয়া হয়েছে। এছাড়া আশ্রায়ন কেন্দ্রে থাকা অসহায় মানুষের মাঝে পুষ্টিসমৃদ্ধ খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।
তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ হতে প্রদত্ত মানবিক সহায়তাকে একটি সুন্দর পরিকল্পনার মাধ্যমে সুষম বণ্টন নিশ্চিত করার জন্য মানবিক সহায়তা কার্ড প্রস্তুত করে প্রকৃত দুঃস্থদের মাঝে বিতরণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক বলেন, করোনাকালীন সময়ে অসহায় মানুষের মাঝে মানবিক সহায়তা কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
সহায়তা পেয়ে খুব খুশি রাবেয়া পারভীন। তিনি বলেন, এখন আর পরের দিকে চেয়ে থাকতে হবে না। যা পেয়েছি তা দিয়েই আমার ১৫-২০ দিন চলে যাবে। মানুষের বাড়িতে কাজ করে কোনরকমে চলতাম। করোনাকালীন সময়ে কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। খুব কষ্ট করে চলতে হচ্ছিল। শেখ হাসিনার কাছে আমি কৃতজ্ঞ। করোনাকালীন সময়ে তিনি আমাদের গরীবের কথা মনে রেখেছেন।
তথ্য গোপন করে বারবার করোনা পরীক্ষা করায় দম্পতিকে জরিমানা
ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে তথ্য গোপন করে একাধিকবার করোনা পরীক্ষা করায় বেসরকারি ব্যাংকের এক কর্মকর্তা ও তার স্ত্রীকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ঝোটন চন্দ।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে প্রতিবন্ধী তরুণীকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ
শুক্রবার দুপুরে বোয়ালমারী পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের আঁধারকোঠা নিবাসী অভিযুক্ত ওই ব্যাংক কর্মকর্তা ও তার স্ত্রীকে এই জরিমানা করা হয়। ওই ব্যক্তির নাম হাফিজুর রহমান (৩৬)। তিনি প্রাইম ব্যাংকের বোয়ালমারী শাখায় কর্মরত জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা। তার স্ত্রীর নাম তাইয়েবা আক্তার মিলা (২৬)।
ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্র জানায়, প্রাইম ব্যাংক লিমিটেড ফরিদপুরের বোয়ালমারী শাখার জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মো. হাফিজুর রহমান (৩৬) ও তার স্ত্রী তাইয়েবা আক্তার মিলা (২৬) গত ৫ এপ্রিল বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনা পরীক্ষা করান। একদিন পর রিপোর্টে স্ত্রী মিলা করোনা শনাক্ত হন। কিন্তু হাফিজুর রহমানের করোনা পরীক্ষার ফলাফল নেগেটিভ আসে।
আরও পড়ুন: করোনা: ২৪ ঘণ্টায় ফরিদপুরে আরও ৪ জনের মৃত্যু
এরপর গত ৮ এপ্রিল হাফিজুর রহমান ও তার স্ত্রী তাদের নাম পাল্টে যথাক্রমে রিপন খান ও নিলা বেগম নামে পুনরায় করোনা পরীক্ষা করান। ওই টেস্টে উভয়েরই করোনা শনাক্ত হয়। এরপর আবার ওই দম্পতি ২১ এপ্রিল নিজেদের প্রকৃত নামে অর্থাৎ মো. হাফিজুর রহমান ও তার স্ত্রী তাইয়েবা আক্তার মিলা নামে করোনা টেস্ট করান।
এবারও তাদের করোনা পজিটিভ আসে। এরপর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. খালেদুর রহমান গত কয়েক দিনে মো. হাফিজুর রহমান ও রিপন খানের মোবাইলে ৮-১০ বার ফোন দিয়ে তাদের শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেন। এক পর্যায়ে বিষয়টি তিনি নিশ্চিত হন যে হাফিজুর রহমান ও রিপন খান একই ব্যক্তি।
তথ্য গোপনের বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে তিনি বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঝোটন চন্দকে বিষয়টি জানান।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২, আহত ৩
শুক্রবার দুপুর আড়াইটার দিকে পৌরসভার আঁধারকোঠায় হাফিজুর রহমানের নিজ বাসায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চালিয়ে রোগ সংক্রমণ (প্রতিরোধ নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইনের ২০১৮ এর ২৬ এর ২ ধারায় ওই দম্পতিকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ঝোটন চন্দ বলেন, তথ্য গোপন করে বারবার করোনা পরীক্ষা করান মো. হাফিজুর রহমান ও তার স্ত্রী। তারা দু’জনেই স্বাস্থ্য বিভাগের লোকজনকে হয়রানি করেছেন।
ফরিদপুরে প্রতিবন্ধী তরুণীকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ
ফরিদপুরের নগরকান্দায় এক বাক-প্রতিবন্ধী তরুণীকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় তরুণীর বাবা বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার নগরকান্দা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
আরও পড়ুন: সাভারে শিশু ধর্ষণ ও বলাৎকারের ঘটনায় গ্রেপ্তার ২
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বুধবার দুপুরে প্রতিবন্ধী তরুণী বাড়ীতে একা ছিলেন। এই সুযোগে প্রতিবেশী সিদ্দিক গোয়াইজারের ছেলে শামীম গোয়াইজা (২৬) ওই তরুণীকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। এ সময় বাক-প্রতিবন্ধী তরুণীর শব্দ পেয়ে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এলে শামীম দৌড়ে পালিয়ে যায়।
প্রতিবন্ধী তরুণীর বাবা অভিযোগ করে বলেন, 'আমি অটো ভ্যান চালাই। আমার স্ত্রী জুট মিলে কাজ করে। প্রতিবন্ধী মেয়েটা একা বাড়িতে থাকে। এই সুযোগে প্রতিবেশীর ছেলে শামীম এসে আমার মেয়ের কাছে সিগারেট ধরানোর জন্য গ্যাস লাইট চায়। আমার মেয়ে গ্যাসলাইট আনার জন্য রান্না ঘরে যায়। এ সময় শামীম রান্না ঘরে ঢুকে আমার মেয়েকে জোড়পূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা করে। আমি এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ করেছি।'
আরও পড়ুন: আপত্তিকর ছবি ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ
অভিযোগ অস্বীকার করে শামীম গোয়াইজা বলেন, 'আমি শুধু সিগারেট ধরানোর জন্য গ্যাসলাইট আনতে ওই বাড়িতে গিয়েছিলাম। ওদের সাথে আমাদের গ্রাম্য দলাদলি রয়েছে। সেই কারণেই আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করছে।'
নগরকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিম রেজা বিপ্লব বলেন, 'অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।'
সালথায় সহিংসতা: উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান রিমান্ডে
ফরিদপুরের সালথায় ৫ এপ্রিল রাতে সহিংসতার ঘটনায় সালথা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. ওয়াহিদুজ্জামানের (৪০) পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।
বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জেলার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক ফারুক হোসাইন শুনানি শেষে তার রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
সহকারী পুলিশ সুপার সমিনুর রহমান (নগরকান্দা-সালথা সার্কেল) ওয়াহিদুজ্জামানের রিমান্ড মঞ্জুর হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হলে পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে পূর্ব শত্রুতার জেরে বৃদ্ধকে কুপিয়ে হত্যা
গত সোমবার রাত ৮টার দিকে গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের একটি দল ফরিদপুর শহরের ঝিলটুলি এলাকা থেকে ওয়াহিদুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করে। গত মঙ্গলবার তার ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ। তবে ওই দিন রিমান্ডের শুনানি হয়নি।
ওয়াহিদুজ্জামান সালথা উপজেলার ভাওয়াল ইউনিয়নের ইউসুফদিয়া গ্রামের মৃত আবদুল হাই মোল্লার ছেলে। তিনি ২০১৪ সালে বিএনপির সমর্থন নিয়ে সালথা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ২০১৫ সালের ১৯ আগস্ট তিনি (ওয়াহিদুজ্জামান) ফরিদপুর-২ (নগরকান্দা, সালথা) আসনের সাংসদ ও জাতীয় সংসদের উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর হাতে ফুল দিয়ে আওয়ামী লীগে যোগ দেন।
ফরিদপুর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুনিল কর্মকার বলেন, সালথায় সরকারি অফিসে তাণ্ডবের ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া সাত আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। ওই জবানবন্দিতে ওয়াহিদুজ্জামানের নাম উঠে আসায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এছাড়া মামলার অন্যান্য আসামিদের আটকে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
সহিংসতার ঘটনায় সালথা থানায় এ পর্যন্ত সাতটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এতে মোট ৩৬৪ জনকে এজাহারভুক্ত আসামি করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা আসামি দেখানো হয়েছে আরও চার হাজার ব্যক্তিকে।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২, আহত ৩
এসব মামলায় বুধবার (২১ এপ্রিল) পর্যন্ত ১০১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে ৯৭ জনকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। দুজন আসামি গুলিবিদ্ধ হয়ে পুলিশ প্রহরায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন। অন্য দুই আসামি গুলিতে নিহত হয়েছেন।
প্রসঙ্গত, গুজব ছড়িয়ে ৫ এপ্রিল রাতে সালথা উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন সরকারি কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুর চালান কয়েক হাজার উত্তেজিত জনতা। এ সময় দুটি সরকারি গাড়িসহ কয়েকটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয়া হয়। এ ঘটনায় প্রায় তিন কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে প্রতিবেদন দাখিল করে তদন্ত কমিটি।
ফরিদপুরে পূর্ব শত্রুতার জেরে বৃদ্ধকে কুপিয়ে হত্যা
ফরিদপুরের সালথায় জমি-জমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে এক বৃদ্ধকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে নিহত ওই বৃদ্ধের নিজ বাড়ির পাশে একটি বাগানে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত মো. ওলিয়ার শেখ (৬০) উপজেলার যদুনন্দী ইউনিয়নের সাধুহাটি গ্রামের মৃত আদম শেখের ছেলে।
আরও পড়ুন: বিয়ানীবাজারে তরুণীকে কুপিয়ে হত্যা
বুধবার সকালে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।
আরও পড়ুন: মানিকগঞ্জে ছাত্রলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা
নিহত ওলিয়ার শেখের স্ত্রীর আলেয়া বেগম অভিযোগ করে বলেন, আমরা গরীব, আমাদের বাড়ির জমি ছাড়া কোনো জমি নেই। আমার স্বামী বাড়ির পাশে ৩ শতক জমি লিজ নিয়ে বেগুনের আবাদ করেছে। আমাদের বেগুন খেতের পাশে প্রতিবেশি ইসহাক শেখের পানের বরজ রয়েছে। ওই পানের বরজে যাওয়া-আসার জন্য ইসহাক আমার স্বামীর কাছে বেগুন খেতের ভিতর দিয়ে একটি পথ বের করে দিতে বলেন। এতে আমার স্বামী রাজি না হলে তার উপর তিনি ক্ষিপ্ত হন।
আরও পড়ুন:কুমিল্লায় যুবলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা
তিনি বলেন, এ নিয়ে স্থানীয়ভাবে কয়েক দফা সালিশ হয়েছে। কয়েকবার আমার স্বামীর উপর হামলাও করেছে ইসহাক ও তার ছেলেরা। সর্বশেষ মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে সাধুহাটি গ্রামের একটি চায়ের দোকান থেকে চা খেয়ে বাড়ি ফেরার পথে ইসহাক শেখ ও তার সহযোগীরা আমার স্বামীকে নির্মমভাবে কুপিয়ে জখম করে। খবর পেয়ে দ্রুত তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়ার সময় পথিমধ্যে সে মারা যায়। তবে মৃত্যুর আগে আমার স্বামী ওদের নাম বলে গেছে।
এদিকে ঘটনার পর থেকে ইসহাক শেখ ও তার পরিবারের সকল সদস্য পলাতক রয়েছে। এ কারণে তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
ওই এলাকার বাসিন্দা সোহেল সরদার বলেন, ওলিয়ার এলাকায় এক জন ভালো মানুষ হিসেবে পরিচিত। তিনি নিতান্তই গরীব। নিজের জমির উপর একটি ছাপড়া ঘর ছাড়া আর কিছুই নেই। তাকে কেন এমন নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হলো তা বুঝতে পারছি না।
সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আশিকুজ্জামান বলেন, ওলিয়ার ১৫ হাজার টাকা দিয়ে ৩ শতক জমি লিজ নিয়ে সবজির চাষ করেছিল। ওই সবজি খেতের ভিতর দিয়ে পথ বের করাকে কেন্দ্র করে ওলিয়ারের সাথে ও পার্শ্ববর্তী জমির মালিক ইসহাকের বিরোধ সৃষ্টি হয়। এই বিরোধের জের ধরে ওলিয়ারকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে তার পরিবারের অভিযোগ। ওলিয়ারের শরীরে একাধিক কোপের দাগ রয়েছে। আমরা তার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছি। এ ঘটনায় মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।
ছাপড়া ঘরে বীরাঙ্গনা চারুবালার বসবাস, দেখতে গেলেন ওসি
ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার গাজীরটেক ইউনিয়নের পদ্মা পাড়ের দুর্গম চরাঞ্চলের রমেশ বালার ডাঙ্গী গ্রামে অসুস্থ বীরাঙ্গনা চারুবালাকে (৬৭) দেখতে গেলেন থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। এ সময় তিনি অসুস্থ চারুবালার হাতে বিভিন্ন রকমের ফল তুলে দেন।
করোনা: ২৪ ঘণ্টায় ফরিদপুরে আরও ৪ জনের মৃত্যু
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ফরিদপুর আরও চার জনের মৃত্যু হয়েছে
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তারা মারা যান বলে নিশ্চিত করেছেন ফরিদপুরের সিভিল সার্জন ডা. ছিদ্দীকুর রহমান।
মৃতরা হলেন- মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা খবিরুদ্দিন (৭০), রাজবাড়ী জেলা সদরের লক্ষ্মীপুর এলাকার আব্দুল মান্নান (৮০), ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ইসরাইল আলী জোয়াদ্দার (৬৫) ও ফরিদপুর সদর উপজেলার ভাটিলক্ষ্মীপুরের আব্দুর রহমান (৬৬)।
আরও পড়ুন: করোনা: খুলনায় একদিনে মৃত্যু ৩, শনাক্ত ৮১
ফরিদপুর সিভিল সার্জন অফিস সূত্র জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৬৫ জন। এনিয়ে জেলায় কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়েছেন ৯ হাজার ৭৩০ জন। সুস্থ হয়েছে ৮ হাজার ৯৮৭ জন।
আরও পড়ুন: করোনা বিষয়ে সচেতনতা ও টিকাদানে সহায়তা করবে ফেসবুক
মঙ্গলবার পর্যন্ত সরকারি হিসাব অনুযায়ী করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রাণ গেছে ১৪৮ জনের। বর্তমানে জেলার বিভিন্ন হাসপাতাল ও বাসাবাড়িতে চিকিৎসাধীন রয়েছে ৪৮৬ জন। ফরিদপুরে আক্রান্তের হার শতকরা ২১.৩৭ এবং মৃত্যুর হার ১.৫২ শতাংশ।
আরও পড়ুন: করোনায় দেশে একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর নতুন রেকর্ড