ফরিদপুর
ফরিদপুরে প্রতিবন্ধী তরুণীকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ
ফরিদপুরের নগরকান্দায় এক বাক-প্রতিবন্ধী তরুণীকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় তরুণীর বাবা বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার নগরকান্দা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
আরও পড়ুন: সাভারে শিশু ধর্ষণ ও বলাৎকারের ঘটনায় গ্রেপ্তার ২
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বুধবার দুপুরে প্রতিবন্ধী তরুণী বাড়ীতে একা ছিলেন। এই সুযোগে প্রতিবেশী সিদ্দিক গোয়াইজারের ছেলে শামীম গোয়াইজা (২৬) ওই তরুণীকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। এ সময় বাক-প্রতিবন্ধী তরুণীর শব্দ পেয়ে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এলে শামীম দৌড়ে পালিয়ে যায়।
প্রতিবন্ধী তরুণীর বাবা অভিযোগ করে বলেন, 'আমি অটো ভ্যান চালাই। আমার স্ত্রী জুট মিলে কাজ করে। প্রতিবন্ধী মেয়েটা একা বাড়িতে থাকে। এই সুযোগে প্রতিবেশীর ছেলে শামীম এসে আমার মেয়ের কাছে সিগারেট ধরানোর জন্য গ্যাস লাইট চায়। আমার মেয়ে গ্যাসলাইট আনার জন্য রান্না ঘরে যায়। এ সময় শামীম রান্না ঘরে ঢুকে আমার মেয়েকে জোড়পূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা করে। আমি এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ করেছি।'
আরও পড়ুন: আপত্তিকর ছবি ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ
অভিযোগ অস্বীকার করে শামীম গোয়াইজা বলেন, 'আমি শুধু সিগারেট ধরানোর জন্য গ্যাসলাইট আনতে ওই বাড়িতে গিয়েছিলাম। ওদের সাথে আমাদের গ্রাম্য দলাদলি রয়েছে। সেই কারণেই আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করছে।'
নগরকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিম রেজা বিপ্লব বলেন, 'অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।'
সালথায় সহিংসতা: উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান রিমান্ডে
ফরিদপুরের সালথায় ৫ এপ্রিল রাতে সহিংসতার ঘটনায় সালথা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. ওয়াহিদুজ্জামানের (৪০) পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।
বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জেলার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক ফারুক হোসাইন শুনানি শেষে তার রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
সহকারী পুলিশ সুপার সমিনুর রহমান (নগরকান্দা-সালথা সার্কেল) ওয়াহিদুজ্জামানের রিমান্ড মঞ্জুর হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হলে পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে পূর্ব শত্রুতার জেরে বৃদ্ধকে কুপিয়ে হত্যা
গত সোমবার রাত ৮টার দিকে গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের একটি দল ফরিদপুর শহরের ঝিলটুলি এলাকা থেকে ওয়াহিদুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করে। গত মঙ্গলবার তার ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ। তবে ওই দিন রিমান্ডের শুনানি হয়নি।
ওয়াহিদুজ্জামান সালথা উপজেলার ভাওয়াল ইউনিয়নের ইউসুফদিয়া গ্রামের মৃত আবদুল হাই মোল্লার ছেলে। তিনি ২০১৪ সালে বিএনপির সমর্থন নিয়ে সালথা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ২০১৫ সালের ১৯ আগস্ট তিনি (ওয়াহিদুজ্জামান) ফরিদপুর-২ (নগরকান্দা, সালথা) আসনের সাংসদ ও জাতীয় সংসদের উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর হাতে ফুল দিয়ে আওয়ামী লীগে যোগ দেন।
ফরিদপুর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুনিল কর্মকার বলেন, সালথায় সরকারি অফিসে তাণ্ডবের ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া সাত আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। ওই জবানবন্দিতে ওয়াহিদুজ্জামানের নাম উঠে আসায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এছাড়া মামলার অন্যান্য আসামিদের আটকে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
সহিংসতার ঘটনায় সালথা থানায় এ পর্যন্ত সাতটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এতে মোট ৩৬৪ জনকে এজাহারভুক্ত আসামি করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা আসামি দেখানো হয়েছে আরও চার হাজার ব্যক্তিকে।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২, আহত ৩
এসব মামলায় বুধবার (২১ এপ্রিল) পর্যন্ত ১০১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে ৯৭ জনকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। দুজন আসামি গুলিবিদ্ধ হয়ে পুলিশ প্রহরায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন। অন্য দুই আসামি গুলিতে নিহত হয়েছেন।
প্রসঙ্গত, গুজব ছড়িয়ে ৫ এপ্রিল রাতে সালথা উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন সরকারি কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুর চালান কয়েক হাজার উত্তেজিত জনতা। এ সময় দুটি সরকারি গাড়িসহ কয়েকটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয়া হয়। এ ঘটনায় প্রায় তিন কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে প্রতিবেদন দাখিল করে তদন্ত কমিটি।
ফরিদপুরে পূর্ব শত্রুতার জেরে বৃদ্ধকে কুপিয়ে হত্যা
ফরিদপুরের সালথায় জমি-জমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে এক বৃদ্ধকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে নিহত ওই বৃদ্ধের নিজ বাড়ির পাশে একটি বাগানে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত মো. ওলিয়ার শেখ (৬০) উপজেলার যদুনন্দী ইউনিয়নের সাধুহাটি গ্রামের মৃত আদম শেখের ছেলে।
আরও পড়ুন: বিয়ানীবাজারে তরুণীকে কুপিয়ে হত্যা
বুধবার সকালে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।
আরও পড়ুন: মানিকগঞ্জে ছাত্রলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা
নিহত ওলিয়ার শেখের স্ত্রীর আলেয়া বেগম অভিযোগ করে বলেন, আমরা গরীব, আমাদের বাড়ির জমি ছাড়া কোনো জমি নেই। আমার স্বামী বাড়ির পাশে ৩ শতক জমি লিজ নিয়ে বেগুনের আবাদ করেছে। আমাদের বেগুন খেতের পাশে প্রতিবেশি ইসহাক শেখের পানের বরজ রয়েছে। ওই পানের বরজে যাওয়া-আসার জন্য ইসহাক আমার স্বামীর কাছে বেগুন খেতের ভিতর দিয়ে একটি পথ বের করে দিতে বলেন। এতে আমার স্বামী রাজি না হলে তার উপর তিনি ক্ষিপ্ত হন।
আরও পড়ুন:কুমিল্লায় যুবলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা
তিনি বলেন, এ নিয়ে স্থানীয়ভাবে কয়েক দফা সালিশ হয়েছে। কয়েকবার আমার স্বামীর উপর হামলাও করেছে ইসহাক ও তার ছেলেরা। সর্বশেষ মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে সাধুহাটি গ্রামের একটি চায়ের দোকান থেকে চা খেয়ে বাড়ি ফেরার পথে ইসহাক শেখ ও তার সহযোগীরা আমার স্বামীকে নির্মমভাবে কুপিয়ে জখম করে। খবর পেয়ে দ্রুত তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়ার সময় পথিমধ্যে সে মারা যায়। তবে মৃত্যুর আগে আমার স্বামী ওদের নাম বলে গেছে।
এদিকে ঘটনার পর থেকে ইসহাক শেখ ও তার পরিবারের সকল সদস্য পলাতক রয়েছে। এ কারণে তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
ওই এলাকার বাসিন্দা সোহেল সরদার বলেন, ওলিয়ার এলাকায় এক জন ভালো মানুষ হিসেবে পরিচিত। তিনি নিতান্তই গরীব। নিজের জমির উপর একটি ছাপড়া ঘর ছাড়া আর কিছুই নেই। তাকে কেন এমন নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হলো তা বুঝতে পারছি না।
সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আশিকুজ্জামান বলেন, ওলিয়ার ১৫ হাজার টাকা দিয়ে ৩ শতক জমি লিজ নিয়ে সবজির চাষ করেছিল। ওই সবজি খেতের ভিতর দিয়ে পথ বের করাকে কেন্দ্র করে ওলিয়ারের সাথে ও পার্শ্ববর্তী জমির মালিক ইসহাকের বিরোধ সৃষ্টি হয়। এই বিরোধের জের ধরে ওলিয়ারকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে তার পরিবারের অভিযোগ। ওলিয়ারের শরীরে একাধিক কোপের দাগ রয়েছে। আমরা তার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছি। এ ঘটনায় মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।
ছাপড়া ঘরে বীরাঙ্গনা চারুবালার বসবাস, দেখতে গেলেন ওসি
ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার গাজীরটেক ইউনিয়নের পদ্মা পাড়ের দুর্গম চরাঞ্চলের রমেশ বালার ডাঙ্গী গ্রামে অসুস্থ বীরাঙ্গনা চারুবালাকে (৬৭) দেখতে গেলেন থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। এ সময় তিনি অসুস্থ চারুবালার হাতে বিভিন্ন রকমের ফল তুলে দেন।
করোনা: ২৪ ঘণ্টায় ফরিদপুরে আরও ৪ জনের মৃত্যু
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ফরিদপুর আরও চার জনের মৃত্যু হয়েছে
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তারা মারা যান বলে নিশ্চিত করেছেন ফরিদপুরের সিভিল সার্জন ডা. ছিদ্দীকুর রহমান।
মৃতরা হলেন- মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা খবিরুদ্দিন (৭০), রাজবাড়ী জেলা সদরের লক্ষ্মীপুর এলাকার আব্দুল মান্নান (৮০), ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ইসরাইল আলী জোয়াদ্দার (৬৫) ও ফরিদপুর সদর উপজেলার ভাটিলক্ষ্মীপুরের আব্দুর রহমান (৬৬)।
আরও পড়ুন: করোনা: খুলনায় একদিনে মৃত্যু ৩, শনাক্ত ৮১
ফরিদপুর সিভিল সার্জন অফিস সূত্র জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৬৫ জন। এনিয়ে জেলায় কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়েছেন ৯ হাজার ৭৩০ জন। সুস্থ হয়েছে ৮ হাজার ৯৮৭ জন।
আরও পড়ুন: করোনা বিষয়ে সচেতনতা ও টিকাদানে সহায়তা করবে ফেসবুক
মঙ্গলবার পর্যন্ত সরকারি হিসাব অনুযায়ী করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রাণ গেছে ১৪৮ জনের। বর্তমানে জেলার বিভিন্ন হাসপাতাল ও বাসাবাড়িতে চিকিৎসাধীন রয়েছে ৪৮৬ জন। ফরিদপুরে আক্রান্তের হার শতকরা ২১.৩৭ এবং মৃত্যুর হার ১.৫২ শতাংশ।
আরও পড়ুন: করোনায় দেশে একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর নতুন রেকর্ড
করোনায় মারা গেলেন ফরিদপুরের ২ বাসিন্দা
গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার দুই বাসিন্দার মৃত্যু হয়েছে।
ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ওই দুই ব্যক্তি।
ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মহসিন ফকির জানান, পৌর সদরের নওপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মৃত আব্দুল মান্নান মিয়ার ছেলে আব্দুর রহমান মিয়া (৬৫) করোনায় আক্রান্ত হলে তাকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। রবিবার দিবাগত গভীর রাতে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। সোমবার সকালে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ভাঙ্গা ঈদগাহ কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন করা হয়। স্বাস্থ্য বিভাগের করনিক পদে চাকরি শেষে সম্প্রতি অবসরে যান তিনি।
আরও পড়ুন: করোনায় দেশে একদিনে প্রথম শতাধিক মৃত্যু, শনাক্ত ২৩.৩৬ শতাংশ
অপরদিকে, উপজেলার ঘারুয়া ইউনিয়নের চৌকিঘাটা গ্রামের মৃত লুৎফর শরীফের ছেলে মুকুল শরীফ (৪০) করোনায় আক্রান্ত হলে তাকে ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রবিবার গভীর রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। সোমবার সকালে ঘারুয়া ইউনিয়নের চৌকিঘাটা গ্রামে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পারিবারিক কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন করা হয়। তিনি ব্যবসায়ী ছিলেন।
আরও পড়ুন: করোনায় চট্টগ্রামের শিল্পপতি মাহমুদ আলী’র মৃত্যু
ফরিদপুর সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলায় কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়েছেন ৯ হাজার ৬০১ জন। সুস্থ হয়েছে ৮ হাজার ৮৩৭ জন। সোমবার পর্যন্ত সরকারি হিসাব অনুযায়ী করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রাণ গেছে ১৪৫ জনের। বর্তমানে জেলার বিভিন্ন হাসপাতাল ও বাসাবাড়িতে চিকিৎসাধীন রয়েছে ৫২৬ জন। ফরিদপুরে আক্রান্তের হার শতকরা ২১.২৮ এবং মৃত্যুর হার ১.৪৯ শতাংশ।
ফরিদপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২, আহত ৩
ফরিদপুর-বরিশাল মহাসড়কের ফরিদপুরের তালমা এলাকায় মাহেন্দ্র-পিকআপের মুখোমুখি সংঘর্ষে সোমবার দুইজন নিহত হয়েছেন। এসময় আহত হয়েছেন আরও তিনজন।
নিহত দুই জনের মধ্যে একজনের নাম কামরুল। অপরজনের নাম এবং পরিচয় পাওয়া যায়নি। আহতরা হলেন- মেহেদী সালেহীন, নাইম ও সবুজ।
পুলিশের নগরকান্দা সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সমিনুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, জেলার নগরকান্দা উপজেলার তালমা ডেইরী ফার্মের সামনে দুর্ঘটনা ঘটে। এসময় ঘটনাস্থলে দুইজন নিহত হয়েছে।
আরও পড়ুন:তিন জেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় ছাত্রদলের সাবেক নেতাসহ নিহত ৪
তিনি আরও জানান, আহতদেরকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ট্রমা সেন্টারে ভর্তি করা হয়েছে।
নিহতদের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে সড়ক দুর্ঘটনায় নিভে গেল কলেজছাত্রীর জীবন প্রদীপ
ফরিদপুরে আ.লীগ নেতার বিরুদ্ধে সরকারি জায়গা দখলের অভিযোগ
ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে রাতের আঁধারে সরকারি জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে।
অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতার নাম মো. মিজানুর রহমান। তিনি উপজেলার রূপাপাত ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সালথার নবকাম পল্লী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের প্রভাষক।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে ফোন করলেই বাড়িতে পৌঁছাচ্ছে মাছ
এ ঘটনায় শনিবার সকালে উপজেলার কালিনগর গ্রামের বাসিন্দা এমদাদুল হক মিলনসহ ৯ জন স্বাক্ষরিত একটি লিখিত অভিযোগ বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট দেয়া হয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার রাতে বোয়ালমারী উপজেলার রূপাপাত ইউনিয়নের কালিনগর বাজারের কুমার নদীর পাড়ে সরকারি ১ নম্বর খাস খতিয়ান ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের ১০ শতাংশ জমি মো. মিজানুর রহমান ও তার সহযোগিরা রাতের আঁধারে চারপাশ বাঁশ দিয়ে ঘিরে দখল করে। দখলকৃত জমির আনুমানিক বর্তমান বাজার মূল্য ৩০ লাখ টাকা।
অভিযুক্ত রূপাপাত ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মিজানুর রহমান বলেন, 'এই জমির সামনে আমার জমি। পিছনের জমি গর্ত ছিল, নদী কাটার সময় আমি টাকা পয়সা খরচ করে ভরাট করেছি। তাছাড়া জমিটা আমার দখলে রয়েছে এবং জমিটার লিজ নেয়াসহ ডিসিআরও রয়েছে আমার।'
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে 'ফাতেমা’ ধান চাষে যুবকের স্বপ্ন পূরণ
বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঝোটন চন্দ বলেন, 'সরকারি জমি দখলের লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এ বিষয়ে রূপাপাত ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তাকে সরেজমিনে গিয়ে জায়গা পরিদর্শন করে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।'
ফরিদপুরে ফোন করলেই বাড়িতে পৌঁছাচ্ছে মাছ
কোভিড-১৯ এর প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় প্রাণিজ আমিষের চাহিদা নিশ্চিতকরণে ফরিদপুরে ভ্রাম্যমাণ নিরাপদ মাছ বিক্রির কার্যক্রম শুরু করেছে জেলা মৎস্য অধিদপ্তর।
সারাদেশে সর্বাত্মক লকডাউন ঘোষণার পর থেকে ফরিদপুর মৎস্য অধিদপ্তরের সহযোগিতায় সুপরিকল্পিত সামাজিক সংস্থা ও চোকদার ফিশারিজ এ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে আসছে। শহরের বিভিন্ন স্থানে ভ্রাম্যমাণভাবে মাছ বিক্রি করা হচ্ছে। এমনকি মোবাইলের মাধ্যমে যোগাযোগ করা হলে বাড়িতেও মাছ পৌঁছে দেয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই সাগরে মাছ ধরা নিষিদ্ধ
চোকদার ফিশারিজের স্বত্তাধিকারী এ এস এম জুনায়েদ জুয়েল জানান, করোনার প্রাদুর্ভাব থেকে রক্ষা পেতে সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক জনসমাগম এড়াতে এবং ঘরে বসে সাধারণ মানুষের আমিষের চাহিদা মেটাতে মৎস্য অধিদপ্তরের ও সুপরিকল্পিত সামাজিক সংস্থার সহযোগিতায় এই কার্যক্রম বাস্তবায়ন করেছেন তারা।
তিনি জানান, ভ্যান ও ইজিবাইকের মাধ্যমে প্রতিটি মহল্লায় গিয়ে মাছ বিক্রি করা হচ্ছে। এছাড়াও কেউ মাছ ক্রয় করতে চাইলে আমাদের মোবাইল নম্বর - ০১৭২৯-০৩৫৮৮৩ এ যোগাযোগ করলেই আমরা তার ঠিকানায় মাছ পৌঁছে দিচ্ছি।
আরও পড়ুন: যশোরের অভয়নগরে দুর্বৃত্তদের দেয়া বিষে প্রায় ১০ লাখ টাকার মাছ মারা গেছে
জুয়েল জানান, এ উদ্যোগে শহরের মানুষের মাঝে ভালো সারা পাওয়া গেছে। দেশি শিং মাছ, রুই, কাতলা, পাঙ্গাশ, পাবদা, চিংড়ী, বাটা, টেংড়া সহ বিভিন্ন মাছ বিক্রি করা হচ্ছে।
ফরিদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘জেলা মৎস্য অফিসের উদ্যোগে ভ্রাম্যমাণভাবে মাছ বিক্রয় কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। মাছ চাষিদের উৎসাহিত করে তাদের মাধ্যমেই মাছ বিক্রি করা হচ্ছে।’
ফরিদপুরে 'ফাতেমা’ ধান চাষে যুবকের স্বপ্ন পূরণ
ইরি ধানের জাত 'ফাতেমা' ধানের চাষ ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলাতেও শুরু হয়েছে। উপজেলার হেলেঞ্চা পশ্চিমপাড়া গ্রামের তরুণ যুবক রিয়াজুল ইসলাম তার ৭৫ শতাংশ জমিতে ব্যতিক্রম এই ধান চাষ করেছেন। জমিতে বাম্পার ফলন ফলবে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
শনিবার সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, আলফাডাঙ্গা উপজেলার বুড়াইচ ইউনিয়নের হেলেঞ্চা পশ্চিমপাড়া গ্রামের যুবক রিয়াজুল ইসলাম তার ৭৫ শতাংশ জমিতে 'ফাতেমা' জাতের ধান চাষ করেছেন। ইতোমধ্যে ধান পাকতে শুরু করেছে। ১০-১২ দিন পর থেকেই ধান কাটা শুরু হবে।
আরও পড়ুন: খুলনায় মাঠে মাঠে সোনালি ধান কাটার উৎসব
উল্লেখ্য, বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট উপজেলার বেতাগা ইউনিয়নের চাকুলিয়া গ্রামের সেকেন্দার আলীর স্ত্রী ফাতেমা বেগমের কথা মতো ছেলে লেবুয়াত শেখ নিজেদের জমিতে ধান চাষ করে তিনটি শীষ খুঁজে পান। পরে সেই শীষের ধান বুনে পান দুই কেজি বীজ। সেই বীজ এক বিঘা জমিতে চাষাবাদ করে লেবুয়াত ৩৫ মণ ধান ঘরে তোলেন যেখানে অন্যান্য ধানের ফলন বিঘা প্রতি ১৮ মণের বেশি পাওয়া সম্ভব ছিল না। পরবর্তীতে কৃষক লেবুয়াতের মা এই ধানের উদ্ভাবক হওয়ায় তার মায়ের নামানুসারে এই ধান 'ফাতেমা’ ধান হিসেবেই দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক পরিচিতি পায়।
এ ধানের গাছ, ফলন, পাতা, শীষ সবকিছু অন্য যে কোনো জাতের ধানের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। প্রতি গোছে একটি চারা রোপণ করা হয়, যা বেড়ে ৮-১০টিতে রূপান্তরিত হয়। প্রতিটি ধান গাছ ১১৫ থেকে ১৩০ সেন্টিমিটার লম্বা। একেকটি ছড়ার দৈর্ঘ্য ৩৬-৪০ সেন্টিমিটার। প্রতি ছড়ায় দানার সংখ্যা ১ হাজার থেকে ১২০০টি। যার ওজন ৩০-৩৫ গ্রাম।
ধানগাছের পাতা লম্বা ৮৮ সেন্টিমিটার, ফ্লাগলিফ (ছড়ার সঙ্গের পাতা) ৪৪ সেন্টিমিটার। ধানগাছের পাতা চওড়া দেড় ইঞ্চি। এই জাতের গাছের কাণ্ড ও পাতা দেখতে অনেকটা আখ গাছের মতো এবং অনেক বেশি শক্ত। তাই এই ধান ঝড়-বৃষ্টিতে হেলে পড়ার কোনো আশঙ্কা নেই। ফাতেমা ধান একর প্রতি ফলন হয় প্রায় ১৩০ মণ। তাই অন্য যে কোনো জাতের তুলনায় এই জাতের ধান অনেক ব্যতিক্রম।
কৃষক রিয়াজুল ইসলাম বলেন, ইউটিউবের মাধ্যমে ফাতেমা ধানের বিষয়ে উদ্বুদ্ধ হয়ে প্রায় ৬ মাস অপেক্ষা করার পর বাগেরহাটের কৃষক লেবুয়াতের মায়ের নিকট থেকে বীজ সংগ্রহ করি। এরপর প্রাথমিকভাবে আমার ৭৫ শতাংশ জমিতে এ ধানের চাষ করি। এতে সবকিছু মিলে মাত্র ১০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। আমি আশাবাদী এ জমিতে প্রায় ৯৫-১০০ মণ ধান হবে। এই ধান উপজেলাব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করা দরকার বলেও তিনি মনে করেন।
তিনি আরও বলেন, 'এই ধান চাষ করে লাভবান হতে পারবো বলে আশা করছি। নিজেও স্বাবলম্বি হতে পারবো। এবছর আরও জমিতে আবাদ করবো এই ধান।’
আরও পড়ুন: কৃষিপণ্যের আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখতে হবে: কৃষিমন্ত্রী
আলফাডাঙ্গা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রিপন প্রসাদ সাহা জানান, বাগেরহাটের কৃষক কর্তৃক উদ্ভাবিত ফাতেমা জাতের ধানের রয়েছে নানা বৈশিষ্ট্য। এ ধানের ফলন শুধু দেশ নয়, গোটা বিশ্বকে তাক লাগাতে পারে। যা দেশের খাদ্য ঘাটতি পূরণ করে বিদেশেও রপ্তানি করা যেতে পারে।
তিনি আরও জানান, উপজেলাতে এধানের আবাদ বৃদ্ধিতে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।