রিট
মালখানার সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার চেয়ে রিট
থানা বা আদালতে জব্দ করা মালামালের জন্য নির্ধারিত স্থান ‘মালখানার’ সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে। রিটে মালখানায় পড়ে থাকা এসব মালামালের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
রবিবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্টের ৫ আইনজীবী।
রিটে আইন সচিব, জন নিরাপত্তা বিভাগের সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক এবং ডিএমপি কমিশনারকে বিবাদী করা হয়েছে।
রিটকারি পাঁচ আইনজীবী হলেন- মোহাম্মদ নোয়াব আলী, মো. মুজাহেদুল ইসলাম, মোস্তাফিজুর রহমান, জি এম মুজাহিদুর রহমান (মুন্না) ও ইমরুল কায়েস।
রিটের পক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির সাংবাদিকদের বলেন, ঢাকাসহ দেশের সব আদালত এবং থানা এলাকায় জব্দ করা মালামাল আমরা দেখি বছরের পর বছর পড়ে থাকে। জব্দ করা মালামাল নিয়ে এমন অব্যবস্থাপনা সারা দুনিয়ার আর কোথাও আমরা দেখিনি। বিষয়টি দেখে আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু নোটিশ পাওয়ার পরও তাদের কোনো জবাব আসেনি। যে কারণে বিষয়টি নিয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেছি।
তিনি বলেন, জব্দ করা মালামাল এভাবে বছরের পর বছর পড়ে থাকায় পরে সেটা রাষ্ট্রেরও কাজে লাগে না আর মালিকেরও কাজে লাগে না।
আমরা দেখেছি, জব্দ করা মালামালের মধ্যে বাস, ট্রাক, মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র আছে। পুরো বিষয়টি নিয়েই একটি ব্যবস্থাপনা চেয়ে রিট দায়ের করেছি।
বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চে রিটটির শুনানি হতে পারে।
আরও পড়ুন: সাধারণ মানুষের জন্য দরজা খোলা রাখুন: ডিসিকে হাইকোর্ট
জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত স্থগিত চেয়ে হাইকোর্টে রিট
জ্বালানি তেল ডিজেল, পেট্রল ও অকটেনের মূল্যবৃদ্ধির প্রজ্ঞাপনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে। রিটে তেলের দাম বৃদ্ধি করে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের জারি করা গেজেটের কার্যকারিতা স্থগিত চাওয়া হয়েছে। জ্বালানি সচিব, জ্বালানি মন্ত্রাণলয়ের উপসচিব ও বিইআরসির (বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের) চেয়ারম্যানকে রিটে বিবাদী করা হয়েছে।
সোমবার (৮ আগস্ট) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইউনুছ আলী আকন্দ এ রিট দায়ের করেন।
হাইকোর্টের বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে আগামীকাল বুধবার রিট আবেদনের ওপর শুনানি হতে পারে।
আইনজীবী ইউনুল আলী আকন্দ জানান, আইন অনুযায়ী জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি করবে বিইআরসি। কিন্তু সেটা না করে একটা গেজেট জারির মাধ্যমে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে। দাম বৃদ্ধির গেজেটে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে এই সিদ্ধান্ত জারি করা হলো। কিন্তু সংবিধানে রাষ্ট্রপতিকে জ্বলানি তেলের দাম বৃদ্ধিও এখতিয়ার দেয়া হয়নি। আইনের লঙ্ঘন করে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি করায় হাইকোর্টে রিট করেছি।
গত শুক্রবার (৫ আগস্ট) রাতে দেশে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর প্রজ্ঞাপন জারি করে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। এর পরই জনমনে দেখা দেয় চরম ক্ষোভ। পেট্রল পাম্পগুলোতে জ্বালানি সংগ্রহের পাশাপাশি সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন সাধারণ মানুষ।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রাত ১২টার পর থেকে ডিপোর ৪০ কিলোমিটারের মধ্যে ভোক্তা পর্যায়ে খুচরা মূল্য (১ লিটার) ডিজেল ও কেরোসিন ১১৪ টাকা, অকটেন ১৩৫ টাকা এবং পেট্রল ১৩০ টাকা হবে। এতদিন কেরোসিন ও ডিজেল প্রতি লিটার ৮০ টাকা, অকটেন ৮৯ টাকা এবং পেট্রল ৮৬ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
পরে গত ৬ আগস্ট জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। শনিবার ৬ আগস্ট এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্যের ঊর্ধ্বগতির সঙ্গে সমন্বয়, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) লোকসান কমানোসহ পাচার হওয়ার শঙ্কা থেকে জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়েছে সরকার। এরপর ৭ আগস্ট যানবাহনের ভাড়া বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত হয়।
জ্বালানি তেলে মূল্যবৃদ্ধির পর ডিজেল চালিত বাস ও মিনিবাসের সর্বোচ্চ ভাড়া পুনঃনির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ। সড়ক পরিবহন আইন- ২০১৮ এর ৩৪ (২) ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে এ প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আন্তঃজেলা ও দূরপাল্লার রুটে চলাচলকারী বাস ও মিনিবাসের ক্ষেত্রে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের প্রতি কিলোমিটারে যাত্রীপ্রতি সর্বোচ্চ ভাড়া ১ টাকা ৮০ পয়সার জায়গায় ২ টাকা ২০ পয়সা; ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে চলাচলকারী বাসের ক্ষেত্রে প্রতি কিলোমিটার যাত্রীপ্রতি ভাড়া ২ টাকা ১৫ পয়সার স্থলে ২ টাকা ৫০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এছাড়া ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে চলাচলকারী মিনিবাস এবং ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) আওতাধীন জেলার (নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, নরসিংদী, গাজীপুর, মানিকগঞ্জ ও ঢাকা) অভ্যন্তরে চলাচলকারী বাস ও মিনিবাসের ক্ষেত্রে প্রতি কিলোমিটারে যাত্রীপ্রতি ভাড়া ২ টাকা ০৫ পয়সার স্থলে ২ টাকা ৪০ পয়সা; ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে চলাচলকারী বাস ও মিনিবাসের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ভাড়া যথাক্রমে ১০ টাকা ও ৮ টাকা নির্ধারিত হলো।
পড়ুন: পশ্চিমারা আমাদের বিপদে ফেলেছে: প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা
জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি: গণপরিবহন বন্ধে দেশজুড়ে যাত্রীদের দুর্ভোগ
জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি: বাড়ছে গণপরিবহন ও লঞ্চের ভাড়া
এনআইডির সঙ্গে থ্যালাসেমিয়ার তথ্য অন্তর্ভুক্ত কেন নয়: হাইকোর্ট
জাতীয় পরিচয়পত্রে (এনআইডি) থ্যালাসেমিয়া রোগীদের তথ্য সংযুক্ত করার বিধান তৈরির পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
রবিবার (৭ আগস্ট) এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন রিটকারী আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অরবিন্দ কুমার রায়।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব, স্বাস্থ্য সচিব, আইন সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, নির্বাচন কমিশন, স্বাস্থ্যসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আইনজীবী ইউনুছ আলনী আকন্দ বলেন, রিটের শুনানি নিয়ে আদালত রুল জারি করেছেন। ব্যক্তির শরীরে প্রাণঘাতি থ্যালাসেমিয়া আছে কি না তা শনাক্ত করে জাতীয় পরিচয়পত্রের মধ্যে এ তথ্য কেন যুক্ত করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
রুলে ব্যক্তির শরীরে প্রাণঘাতি থ্যালাসেমিয়া আছে কি-না তা শনাক্ত করে জাতীয় পরিচয়পত্রের মধ্যে এ তথ্য যুক্ত করার জন্য বিধি প্রণয়ন করতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না তা জাতে চাওয়া হয়েছে।
এর আগে গত ৩১ মে রিট দায়ের করেন আইজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ। এর আগে ২৫ মে লিগ্যাল নোটিশ পাঠান তিনি। লিগ্যাল নোটিশে এই রোগের ভয়াবহ থেকে মানুষকে রক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে। এজন্য প্রত্যেক নাগরিকের জাতীয় পরিচয়পত্রে থ্যালাসেমিয়া রোগ আছে কি না মেডিকেল প্রতিবেদন অনুযায়ী অপশন যুক্ত করতে দাবি করা হয়।
নোটিশে বলা হয়েছে, একজন থ্যালাসেমিয়া বাহক যদি আরেকজন থ্যালাসেমিয়া বাহককে বিয়ে করেন, তাহলে তাদের সন্তানের থ্যালাসেমিয়া হওয়ার ঝুঁকি বেশি। তবে একজন সুস্থ মানুষ আরেকজন থ্যালাসেমিয়া বাহককে বিয়ে করতে পারবে কারণ তাদের সন্তান থ্যালাসেমিয়া রোগী হওয়ার আশঙ্কা ততটা থাকে না।
এই কারণে জাতীয় পরিচয়পত্রে থ্যালাসেমিয়া রোগ আছে কি-না এ ধরনের অপশন যুক্ত থাকলে তা দেখে সহজেই দুইজন থ্যালাসেমিয়া বাহককে বিয়ে থেকে ঠেকানো সম্ভব।
এজন্য বিয়ের আগেই বর এবং কনের রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে প্রত্যেককে জানতে হবে তারা থ্যালাসেমিয়া বাহক কি-না। দুজন থ্যালাসেমিয়া বাহকের মধ্যে বিবাহ বন্ধ করা গেলেই থ্যালাসেমিয়া রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে বলে জানান রিটকারী আইনজীবী।
পড়ুন: জাতীয় পরিচয়পত্র হারিয়ে গেলে কি করবেন?
স্মার্ট আইডি কার্ড: জাতীয় পরিচয়পত্রে ভুল থাকলে যেভাবে সংশোধন করবেন
রেলক্রসিংয়ে দুর্ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত-ক্ষতিপূরণ চেয়ে রিট
সারাদেশের রেলক্রসিংয়ে দুর্ঘটনাগুলোর বিচার বিভাগীয় তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে। রিটে আপিল বিভাগের সাবেক একজন বিচারপতিকে প্রধান করে কমিটি গঠনের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে রিটে চট্টগ্রাম ও গোপালগঞ্জে রেল দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবার ও আহতদের ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রনির পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার তাপস কান্তি বল এ রিট করেন।
রিটে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়েছে। রিটকারী আইনজীবী তাপসকান্তি বল বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন।
আইনজীবী তাপস কান্তি বল বলেন, আজ রিট দায়ের করার পর আবেদনটি হাইকোর্টের একটি বেঞ্চে শুনানির জন্য উপস্থাপন করেছিলাম। বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়ার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ রিট আবেদনটি শুনতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন। এখন হাইকোর্টের আরেকটি বেঞ্চে রিট আবেদনটি শুনানির জন্য উপস্থাপন করব।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে মাইক্রোবাসে ট্রেনের ধাক্কা, নিহত ১১
গত ২৯ জুলাই চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের খৈয়াছড়া ঝরণা এলাকায় ট্রেনের ধাক্কায় মাইক্রোবাসের ১১ যাত্রী নিহত হন। ওই ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় গেটম্যান সাদ্দাম হোসেনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে রেলওয়ে।
এর আগে গত ২১ জুলাই রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা ‘টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেস’ এর ধাক্কায় পাঁচ নির্মাণশ্রমিক নিহত হন। ওইদিন রাত ৯টায় গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার কাগদী রেলক্রসিং এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ দুর্ঘটনায় আহত হন আরও বেশ কয়েকজন।
এরপর ৩১ জুলাই আইনজীবী তাপস কান্তি বল এ দুর্ঘটনায় বিচারবিভাগীয় তদন্ত ও রিটে চট্টগ্রাম ও গোপালগঞ্জে রেল দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবার ও আহতদের ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশনা চেয়ে স্বপ্রণোদিত আদেশ চেয়েছিলেন। পরে আদালত তাকে রিট করার পরামর্শ দেন। এরই ধারাবাহিকতায় আজ রিটটি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: গাজীপুরে শ্রমিকবাহী বাসে ট্রেনের ধাক্কা: নারীসহ নিহত ২
সড়ক দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া সেই শিশুর ক্ষতিপূরণ নিশ্চিতের দাবিতে রিট
ময়মনসিংহে ট্রাকচাপায় মা-বাবা ও বোন হারিয়ে অলৌকিকভাবে বেঁচে যাওযা নবজাতকের যথাযথ ক্ষতিপূরণ এবং কল্যাণ নিশ্চিতের দাবিতে রিট করা হয়েছে। একই সাথে ঘটনা তদন্ত করতে আবেদন করা হয়েছে।
সোমবার সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী কানিজ ফাতেমা হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিট দায়ের করেন।
রিটে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, সমাজ কল্যাণ সচিব, সড়ক পরিবহন সচিব, বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটিকে বিবাদী করা হয়।
রিটকারীর পক্ষের আইনজীবী সৈয়দ মাহসিব হোসেন জানান, সড়ক পরিবহন সচিব, বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি থেকে এ ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। বিচারপতি খিজির আহেমেদ চৌধুরী ও বিচারপতি মো.জাকির হোসেনের অবকাশকালীন বেঞ্চে এ আবেদন শুনানির জন্য উপস্থাপন করা হতে পারে।
আরও পড়ুন: তারেক-জোবায়দার রিট খারিজ; মামলা চলবে
শিশুটির স্বজনরা জানান, শনিবার বিকালে ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার দিনমজুর জাহাঙ্গীর আলম তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী এবং ছয় বছরের শিশুকন্যা সানজিদাকে নিয়ে চিকিৎসকের কাছে গিয়েছিলেন। পরিকল্পনামতো ত্রিশালের একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে আল্টাসনোগ্রাম করে তারা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ধরে বাড়ি ফিরছিলেন। কিন্তু মহাসড়ক পার হওয়ার সময় হঠাৎ বেপরোয়া একটি মালবাহী ট্রাক চাপা দিলে ঘটনাস্থলে তিনজনই নিহত হন।
তবে দুর্ঘটনার সময় মায়ের পেটের ওপর দিয়ে মালবাহী ট্রাকের চাকা চলে গেলেও অলৌকিকভাবে মায়ের পেট ফেটে ফুটফুটে এক নবজাতকের জন্ম হয়। তবে নবজাতকের ডান হাতের দুটি হাড় ভেঙে যায়। ঘটনাস্থলে উপস্থিত জনতা তাৎক্ষণিক ওই নবজাতককে ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। এরপর তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং কমিউনিটি বেজড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসা দেয়া হয়।
এদিকে, শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক চিকিৎসাধীন ওই শিশুকে দেখতে গিয়ে শিশুটির চিকিৎসাসহ সব ধরনের দায়িত্ব নেন।
পরে তিনি সাংবাদিকদের জানান, শিশুটির চিকিৎসা খরচসহ ভবিষ্যতের জন্য তার নামে একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: দুদক কর্মকর্তার চাকরিচ্যুতি: নিরপেক্ষ তদন্তে ১০ আইনজীবীর রিট
নিহতের স্বজনরা জানান, ত্রিশাল উপজেলার মঠবাড়ি ইউনিয়নের রায়মনি গ্রামের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী রত্না বেগমের আরও দুই মেয়ে ও এক ছেলে সন্তান রয়েছে। এর মধ্যে মা-বাবার সঙ্গে ছয় বছর বয়সী সানজিদা আক্তারের মৃত্যু হয়। অন্য দুজন হলো- ১০ বছরের মেয়ে জান্নাত ও সাত বছর বয়সী ছেলে এবাদত।
সীতাকুণ্ডে নিহত প্রত্যেককে ২ কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে রিট
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে ভয়াবহ আগুনে নিহত প্রত্যেককে দুই কোটি টাকা এবং আহতদের প্রত্যেককে ৫০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে।
রিট আবেদনে বিস্ফোরক বিষয়ক বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিদের সমন্বয়ে তদন্ত কমিটি গঠন, দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা ও ক্ষতিপূরণ আদায়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। বুধবার দুটি মানবাধিকার সংস্থা ল' এন্ড লাইফ ফাউন্ডেশন ট্রাস্ট এবং সিসিবি ফাউন্ডেশনের পক্ষে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির পল্লব, ব্যারিস্টার মোহাম্মদ কাওছার, ব্যারিস্টার মোহাম্মদ মাজেদুল কাদের এবং এ কে এম ফয়সাল হক এই রিট পিটিশন দায়ের করেন।
রিট পিটিশনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, দুর্যোগ ব্যাবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব, শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক, স্মার্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যাবস্থাপনা পরিচালক, বিএম কন্টেইনার বিডি লিমিটেডের ব্যাবস্থাপনা পরিচালকসহ ২০ জনকে বিবাদি করা হয়েছে। রিট আবেদনটি হাইকোর্টের বিচারপতি মজিবুর রহমান মিয়ার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে বৃহস্পতিবার শুনানি হতে পারে বলে জানিয়েছেন আইনজীবী মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির পল্লব।
রিটে বলা হয়েছে, গত ৪ জুন শনিবার রাতে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কন্টেইনার ডিপোতে ভয়াবহ আগুনে প্রায় অর্ধশত নিহত এবং শতাধিক আহত হয়েছেন। অনেকেই মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। খবরে প্রকাশ স্মার্ট গ্রুপের বিএম কন্টেইনার নামক কোম্পানীর দাহ্য রাসায়নিক পদার্থ যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে ঘোষণা ছাড়াই মজুদ করার কারণে আগুনে হতাহতের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। ফায়ার সার্ভিসের কাছে মজুদ করা রাসায়নিক পদার্থগুলোর প্রয়োজনীয় তথ্য না থাকায় অনেক উদ্ধারকর্মী নিহত এবং আহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণ: বিএম কন্টেইনার ডিপো থেকে দেহাবশেষ উদ্ধার
বাংলাদেশের আগেও তাজরিন গার্মেন্টস কারখানায় আগুন, রানা প্লাজা ভবন ধসে হাজারও প্রাণ ঝরলে পোশাক কারখানায় বিদেশি ক্রেতার চাপে অগ্নি নির্পাবন ব্যবস্থায় অগ্রগতি হলেও অন্যান্য কারখানায় সঠিক অগ্নি নির্পাবক ব্যাবস্থা গড়ে উঠে নি। ফলে এসব কারখানায় নিয়মিতভাবেই অগ্নি দুর্ঘটনা ঘটে চলছে। সাম্প্রতিক সময়ে সিজাম জুস কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে বহু হতাহত হয়েছেন। বিদেশি ক্রেতাদের কোন চাপ না থাকার কারণে সংশ্লিষ্ট কারো নজর নেই। তাছাড়া অগ্নি নির্বাপক বাহিনীর প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও আধুনিক যন্ত্রপাতির অভাবে রাসায়নিক দাহ্য পদার্থে সৃষ্ট আগুন নিয়ন্ত্রণে অক্ষম। রিটে কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিদের সমন্বয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনী পদক্ষেপ এবং তাদের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় ক্ষতিপূরণ আদায়ের কথা বলা হয়েছে।
বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩২ অনুযায়ী জীবনের অধিকার একটি মৌলিক অধিকার। ফলে, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩২ সরাসরি লংঘন করেছেন। রিট পিটিশনে নিহত প্রত্যেককের পরিবারকে দুই কোটি টাকা এবং আহত প্রত্যেককে ৫০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেয়ার জন্য নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে আহতদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা বিনামূল্যে দেয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
ইতিপূর্বে ল' এন্ড লাইফ ফাউন্ডেশন ট্রাস্ট এবং সিসিবি ফাউন্ডেশন পৃথক পৃথক আইনি নোটিশ দিয়ে হতাহতের ক্ষতিপূরণ দেয়ার অনুরোধ করেছিলেন। প্রতিকার না পেয়ে রিট দায়ের করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যারিস্টার পল্লব।
আরও পড়ুন: সীতাকুণ্ডে বিএম কন্টেইনার বিস্ফোরণে ভয়াবহ পরিবেশ বিপর্যয়
চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে রিট শরীফের
চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে হাইকোর্টে রিট করেছেন বরখাস্ত হওয়া দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আলোচিত উপ-সহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিন। রবিবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় শরীফের পক্ষে অ্যাডভোকেট মিয়া মোহাম্মদ ইশতিয়াক এ রিট করেন। রিট আবেদনে দুদক চেয়ারম্যান, দুদক সচিব, আইন সচিব ও জনপ্রশাসন সচিবকে বিবাদী করা হয়েছে।
রিট আবেদনটি বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে শুনানির জন্য উত্থাপন করা হবে। আাইনজীবী মিয়া মোহাম্মদ শরীফ জানিয়েছেন, দুদক চাকরিবিধি ২০০৮ এর ৫৪(২) ধারা এবং এই ধারা বলে শরীফ উদ্দিনের চাকরিচ্যুতি অবৈধ ও অসাংবিধানিক ঘোষণার দাবি জানানো হয়েছে এই রিটে। রিট আবেদনটি জনগুরুত্বপূর্ণ বিধায় সোমবারও আদালত শুনানি করতে পারেন। অথবা ১০ আইনজীবীর এ বিষয়ে করা রিটের সঙ্গে মঙ্গবারও এ বিষয়ে শুনানি করতে পারেন।
এদিকে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আলোচিত উপ-সহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিনকে অপসারণের বিষয়ে গণমাধ্যমে আসা অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগের নিরপেক্ষ তদন্ত চেয়ে ১০ আইনজীবীর রিটের আদেশের জন্য আগামী ১৫ মার্চ দিন ধার্য রয়েছে। গত ১০ মার্চ বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এদিন ধার্য করেন।
আরও পড়ুন: নিত্যপণ্যের ক্ষেত্রে কোনো সিন্ডিকেটের একচেটিয়া ব্যবসা গ্রহণযোগ্য নয়: হাইকোর্ট
এর আগে ২৩ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আলোচিত উপ-সহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিনকে অপসারণের বিষয়ে নিরপেক্ষ তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। ১০ আইনজীবীর পক্ষে অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির এ রিট করেন।
রিটকারী ১০ আইনজীবী হলেন, মোহাম্মদ শিশির মনির, রেজওয়ানা ফেরদৌস, জামিলুর রহমান খান, উত্তম কুমার বণিক, মোস্তাফিজুর রহমান, মো. তারেকুল ইসলাম, মীর ওসমান বিন নাসিম, সৈয়দ মোহাম্মদ রায়হান, মো. সাইফুল ইসলাম ও মোহাম্মদ নওয়াব আলী।
গত ১৬ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহর সই করা এক প্রজ্ঞাপনে উপ-সহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিনের অপসারণের বিষয়টি জানানো হয়।
আরও পড়ুন: সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না: হাইকোর্ট
হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত, পরীমণির বিরুদ্ধে মামলা চলবে
সয়াবিন তেলের দাম নিয়ন্ত্রণ করতে হাইকোর্টে রিট
দেশের বাজারে খোলা এবং বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম নিয়ন্ত্রণের নির্দেশনা চেয়ে জনস্বার্থে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে। একই সঙ্গে সয়াবিনের দাম বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে সরকারের নিষ্ক্রিয়তাকে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে রিটে। ওই রিটের শুনানির জন্য আগামীকাল সোমবার (৭ মার্চ) দিন ধার্য করেছেন আদালত।
রিট আবেদনটি উপস্থাপনের পর রবিবার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই দিন ঠিক করেন। আদালতে আজ রিটটি উপস্থাপন করেন রিটকারীদের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সৈয়দ মহিদুল কবির।
রিট আবেদনে বাজারে সয়াবিন তেলের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে মনিটরিং সেল গঠন এবং নীতিমালা তৈরির নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
রিটকারী সুপ্রিম কোর্টের তিন আইনজীবী হলেন- অ্যাডভোকেট মনির হোসেন, অ্যাডভোকেট সৈয়দ মহিদুল কবীর ও অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ উল্লাহ।
আরও পড়ুন: দুদক কর্মকর্তার চাকরিচ্যুতি: নিরপেক্ষ তদন্তে ১০ আইনজীবীর রিট
বাণিজ্য সচিব, ভোক্তা অধিকার কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্টদের রিটে বিবাদী করা হয়েছে।
এর আগে গত ৩ মার্চ সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানোর বিষয়টি হাইকোর্টের নজরে আনেন এই তিন আইনজীবী। তারা সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানো নিয়ে একটি ইংরেজি দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সুযোগ নিয়ে বাংলাদেশের এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী সয়াবিন তেলের দাম অস্বাভাবিক হারে বাড়িয়ে দিয়েছেন। ২ মার্চ বাজারে ক্রেতাদের কাছ থেকে এক লিটার খোলা সয়াবিনের দাম রাখা হয়েছে ১৭৫ টাকা। অথচ সরকার এক লিটার খোলা সয়াবিনের দাম ১৪৩ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে।
আদালত আইনজীবীদের যথাযথ প্রক্রিয়ায় রিট করার পরামর্শ দেন। সে অনুযায়ী আজ রিট করেছেন সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা।
আরও পড়ুন: সনদ প্রদানের ক্ষমতা চেয়ে ৩ সংরক্ষিত কাউন্সিলরের রিট
লঞ্চ, জাহাজের ইঞ্জিনের যাবতীয় তথ্য চেয়ে রিট
চলন্ত লঞ্চে আগুন: নিহতদের ৫০ লাখ ও দগ্ধদের ২০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণের দাবিতে রিট
ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে বরগুনাগামী এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহতদের ৫০ লাখ টাকা এবং দগ্ধ হয়ে আহতদের ২০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশনা চেয়ে রিট আবেদন করা হয়েছে।
রবিবার সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এই রিট আবেদন করেন। একইসঙ্গে ঘটনার প্রকৃত কারণ উদঘাটনে বিচারিক অনুসন্ধানের জন্য কমিশন গঠনের নির্দেশনাও চাওয়া হয়েছে এই রিটে।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিআইডব্লিওটিএর চেয়ারম্যান এবং লঞ্চের মালিক হামজালাল শেখকে বিবাদী করা হয়েছে।
রিট আবেদনটি আগামীকাল সোমবার হাইকোর্টের বিচারপতি এম.ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো.মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে শুনানির জন্য উপস্থাপন করা হতে পারে বলে জানান এই রিটকারী আইনজীবী।
আরও পড়ুন: মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর ছবির স্বত্ব ব্যক্তির নয়, রাষ্ট্রের: হাইকোর্ট
আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ জানান, ঢাকা থেকে বরগুনাগামী এমভি অভিযান-১০ নামের লঞ্চটিতে ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে আগুনের ঘটনায় মৃত ব্যক্তিদের জন্য ৫০ লাখ এবং গুরুতর আহত ব্যক্তিদের ২০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে। তাদেরকে কেন না ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে সেই মর্মে রুল জারির আর্জিও জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে অন্তবর্তী আদেশ প্রার্থনাও করা হয়েছে। নিহতদের পরিবারকে তাৎক্ষণিক ১০ লাখ টাকা এবং আহতদের চিকিৎসার জন্যে ৫ লাখ টাকা দিতে নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে ঢাকা থেকে বরগুনাগামী এমভি অভিযান-১০ লঞ্চটিতে স্মরণকালের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় এ পর্যন্ত ৪১ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে, এবং এখনো নিখোঁজ রয়েছেন শতাধিক মানুষ। খবর পেয়ে বরিশাল, পিরোজপুর, বরগুনা ও ঝালকাঠির কোস্টগার্ড ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা উদ্ধারকাজ শুরু করেন। আগুনে দগ্ধ ৮১ জনের মধ্যে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন ৪৬ জন। ২২ জনকে পাঠানো হয়েছে ঢাকায়। বাকি ১৬ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। তবে পুড়ে যাওয়া লঞ্চটিতে কতজন যাত্রী ছিল তার সঠিক তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না।
আরও পড়ুন: মাসুদ রানা সিরিজের ২৬০ বইয়ের স্বত্ব আনোয়ার হোসেনের নয়: হাইকোর্ট
তিতাস নদী দখলদারদের তালিকা চেয়েছেন হাইকোর্ট
ফেসবুকে বিদ্বেষমূলক বক্তব্যে নজরদারি চেয়ে রিট
বাংলাদেশে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ঘৃণা বা বিদ্বেষমূলক পোস্টের (কনটেন্ট) প্রচার-প্রকাশ নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে রিট আবেদন করা হয়েছে। সোমবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আইনজীবী তাপস কান্তি বল এই রিটটি দাখিল করেন।
সাংবাদিক সেলিম সামাদ,ড. মাসুম বিল্লাল,অ্যাডভোকেট জর্জ চৌধুরী ও সমাজ সেবক ভিক্টর রায় বাদী হয়ে এই রিট করেন।
রিটে বিটিআরসির চেয়ারম্যান, ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব ও ডিজিটাল সিকিউরিটি এজেন্সির মহাপরিচালক এবং ফেসবুকের সিইও মার্ক জাকারবার্গসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়েছে। রিটে কোনো ধরনের বিলম্ব ছাড়াই দেশে ফেসবুকের অপব্যবহার ও কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে।
রিট দায়েরের পর আইনজীবী তাপস কান্তি বল জানান, গত নভেম্বর মাসে বিটিআরসি ও ডিজিটাল সিকিউরিটি এজেন্সিকে একটি লিগ্যাল নোটিশ দিয়েছিলাম। তাতে ফেসবুকসহ অন্যান্য যেসব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে উস্কানিমূলক, বিদ্বেষপূর্ণ ও কুরূচিপূর্ণ বক্তব্য ছড়িয়ে পড়ছে তাদেরকে; বিশেষ করে ফেসবুককে জবাবদিহিতার আওতায় আনার দাবি জানানো হয়। সেই নোটিশের প্রেক্ষিতে যে জবাব এসেছে তাতে আমরা সন্তুষ্ট নয়। এ কারণে একটি রিট দায়ের করেছি। রিট আবেদনটি সুপ্রিমকোর্টের অবকাশ শেষে আগামী জানুয়ারিতে শুনানির উদ্যোগ নেয়া হবে।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ চেয়ে রিট
এর আগে গত নভেম্বরে পাঠানো লিগ্যাল নোটিশে বলা হয়, গত ১৩ অক্টোবর হিন্দুদের মন্দিরে কোরআন শরীফ রাখা হয়েছে বলে এক ফেসবুক পোস্টে দাবি করা হয়। সেটি ছড়িয়ে পড়ায় সারা দেশের ২৭ জেলায় সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে।
এর আগেও রামু, নাছিরনগর, শাল্লা, বোরহানউদ্দিন, পাটগ্রাম, দেবহাটায় ফেসবুকের এমন ব্যবহারের এ ধরনের ঘটনা ঘটে। ফেসবুকে এ ধরনের ঘৃণিত পোস্ট বন্ধে বা নিয়ন্ত্রণে বিবাদীরা সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়েছেন।
নোটিশে বলা হয়,‘ডিজিটাল নিরপত্তা আইন অনুযায়ী ভুয়া, অসত্য তথ্য ছড়ানো বন্ধ করা ১ থেকে ৪ নম্বর বিবাদীর দায়িত্ব। কিন্তু এ দায়িত্ব পালনে আপনারা ব্যর্থ হয়েছেন।’
এতে আরও বলা হয়েছে, চলতি বছরের দুর্গাপূজার সময় বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় অসত্য তথ্য ছড়িয়ে দেশের জনগণের জান-মালের যে ক্ষতি হয়েছে সে সময় ফেসবুক কর্তৃপক্ষ জাতিসংঘের গাইড লাইন, আন্তর্জাতিক আইন ও দেশীয় আইন পালনে ব্যর্থ হয়েছে। নীতিমালা অনুযায়ী ফেসবুকে এসব অসত্য তথ্য প্রচার বন্ধে বিবাদীরা ব্যর্থ হয়েছেন।
পরে আইনজীবী তাপস কান্তি বল বলেন,‘ফেসবুক ব্যবহার করে ঘৃণা বা বিদ্বেষমূলক (হেট স্পিচ) পোস্ট ছড়িয়ে দেয়ার মাধ্যমে দেশে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে। হেট স্পিচের মাধ্যমে ছড়ানো সহিংসতা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব সরকার ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর। সেই দায়িত্ব প্রতিপালনে তারা ব্যার্থ হয়েছে। তাই এই লিগ্যাল নোটিশটি পাঠানো হয়েছে। যেখানে সরকারের কাছে ১৪টি সুপারিশ করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন: মুরাদের এমপি পদের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট
চট্টগ্রামে নালায় পড়ে মৃত্যু: ১০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে রিট