যুক্তরাজ্য
১৫ দিনের বিদেশ সফর শেষ করে দেশের উদ্দেশে লন্ডন ত্যাগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী
জাপান, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে ১৫ দিনের বিদেশ সফর শেষ করে সোমবার দেশের উদ্দেশে লন্ডন ত্যাগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা ২৫ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় ১১টা ২৫ মিনিটে) লন্ডনের হিথ্রো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে।
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টায় ফ্লাইটটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের কথা রয়েছে।
গত ২৫ এপ্রিল শেখ হাসিনা তার তিন দেশ সফরের প্রথম ধাপে জাপানে চার দিনের সরকারি সফরে টোকিওর উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন। তিনি তার জাপানি সমকক্ষ কিশিদা ফুমিওর আমন্ত্রণে জাপানে যান।
টোকিওতে অবস্থানকালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জাপানের সম্রাট নারুহিতোর সঙ্গে দেখা করেন এবং জাপানের প্রধানমন্ত্রী কিশিদা ফুমিওর সঙ্গে শীর্ষ বৈঠক করেন।
তিনি এবং তার জাপানি সমকক্ষ আটটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই করেছে, যা কৃষি, মেট্রোরেল, শিল্প-উন্নয়ন, জাহাজ-রিসাইক্লিং, শুল্কবিষয়ক, বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পত্তি, আইসিটি ও সাইবার নিরাপত্তা এবং প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত।
তিনি একটি বিনিয়োগ শীর্ষ সম্মেলন এবং একটি কমিউনিটি রিসেপশনে যোগদানের পাশাপাশি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্য দুই জাপানি নাগরিককে ‘ফ্রেন্ডস অব লিবারেশন ওয়ার অনার’ প্রদান করেন।
আরও পড়ুন: যুক্তরাজ্যের রাজা তৃতীয় চার্লসের অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে লন্ডনে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী
এছাড়া শেখ হাসিনা জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়োশিমাসা হায়াশি, জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) প্রেসিডেন্ট ড. তানাকা আকিহিকো, জাপান-বাংলাদেশ কমিটি ফর কমার্শিয়াল এন্ড ইকোনোমিক কো-অপারেশন (জেবিসিসিইসি) চেয়ারম্যান ফুমিয়া কোকুবু, জাপান এক্সটারনাল ট্রেড অর্গানাইজেশন (জেট্রো) এর চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইশিগুরো নোরিহিকো এবং জাপান-বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফ্রেন্ডশিপ লিগের (জেবিপিএফএল) সভাপতি তারো অ্যাসোর সঙ্গে পৃথকভাবে বৈঠক করেন।
২৮ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী বিশ্বব্যাংক ও বাংলাদেশের মধ্যে অংশীদারিত্বের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপনে যোগ দিতে তার তিন দেশ সফরের দ্বিতীয় ধাপে যুক্তরাষ্ট্রে ছয় দিনের সরকারি সফরে ওয়াশিংটন ডিসির উদ্দেশে টোকিও ত্যাগ করেন।
তিনি ১ মে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে বিশ্বব্যাংকের সদর দপ্তরে আয়োজিত ‘বাংলাদেশ-বিশ্বব্যাংক অংশীদারিত্বের ৫০ বছরের প্রতিফলন’- শীর্ষক সেমিনারে অংশ নেন।
ওয়াশিংটন ডিসিতে শেখ হাসিনা আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিভা এবং ইউএস চেম্বার অব কমার্সের প্রেসিডেন্ট ও সিইও সুজান পি. ক্লার্কের সঙ্গেও আলাদাভাবে বৈঠক করেন।
এছাড়াও, তিনি মার্কিন ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলের সঙ্গে একটি উচ্চ-পর্যায়ের কার্যনির্বাহী গোলটেবিল বৈঠক এবং একটি কমিউনিটি সংবর্ধনায় অংশ নেন।
৪ মে প্রধানমন্ত্রী ৬ মে বাকিংহাম প্যালেসে আয়োজিত যুক্তরাজ্যের রাজা তৃতীয় চার্লসের রাজ্যাভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যুক্তরাজ্যে পাঁচ দিনের সরকারি সফরে লন্ডনের উদ্দেশ্যে ওয়াশিংটন ডিসি ত্যাগ করেন।
লন্ডনে শেখ হাসিনা রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে মতবিনিময় করেন এবং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন।
তিনি কমনওয়েলথ লিডারস ইভেন্ট, বাকিংহাম প্যালেসে রাজা ও রাণী কনসোর্টের রাজ্যাভিষেক পূর্ব অনুষ্ঠান, রাজার সংবর্ধনা এবং একটি কমিউনিটি রিসিপশনে যোগ দিয়েছিলেন।
তিনি সেখানে ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগেল ওয়াংচুক এবং রানী জেটসুন পেমার সঙ্গে বৈঠক করেন।
এছাড়া রাজা তৃতীয় চার্লসের রাজ্যাভিষেক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মিশর ও রুয়ান্ডার প্রেসিডেন্ট, সিয়েরা লিওন, সিঙ্গাপুর, শ্রীলঙ্কা, গাম্বিয়া, নামিবিয়া ও উগান্ডার প্রধানমন্ত্রীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
আরও পড়ুন: ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী সুনাকের সঙ্গে শুক্রবার দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের সম্ভাবনা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার
ওয়াশিংটনের উদ্দেশে টোকিও ছেড়েছেন প্রধানমন্ত্রী
বিনিয়োগ আকর্ষণে বাংলাদেশকে সহায়তা করার প্রস্তাব টনি ব্লেয়ারের
যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক অগ্রগতির ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।
রবিবার ক্লারিজের হোটেলে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি বিভিন্ন খাতে বাংলাদেশকে আরও উন্নয়নে সহায়তা করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
পরে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন এবং বাংলাদেশকে আরও উন্নয়নে সহায়তা করতে চেয়েছেন।
মোমেন জানান, প্রধানমন্ত্রী ব্লেয়ারকে বলেছিলেন যে বাংলাদেশে আরও বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য আরও বিদেশি বিনিয়োগ প্রয়োজন।
টনি ব্লেয়ার বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে তার সুসম্পর্ক রয়েছে, বিশেষ করে জিসিসি (গাল্ফ কো-অপারেশন কাউন্সিল) এর সঙ্গে এবং তিনি বাংলাদেশকে ব্যবসায়িক যোগাযোগ বাড়াতে সাহায্য করতে পারেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির একটি: আইএমএফ দল
টনি ব্লেয়ার ইনস্টিটিউশন ফর গ্লোবাল চেঞ্জের প্রধান ব্লেয়ারকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে: ‘বাংলাদেশের বর্তমান অর্থনীতি খুবই আকর্ষণীয় এবং বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে খুব ভালো করছে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে আনন্দ প্রকাশ করে বলেন, যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের সম্পর্ক অত্যন্ত চমৎকার।
রাজা তৃতীয় চার্লসের রাজ্যাভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসায় তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানান।
টনি ব্লেয়ার ইনস্টিটিউশন ফর গ্লোবাল চেঞ্জের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ পরিদর্শন করবেন এবং বাংলাদেশের উন্নয়নে সহায়তা প্রয়োজন এমন খাতগুলো চিহ্নিত করতে বিআইডিএর সঙ্গে বসবেন।
এসময় প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতা লেখক এম নজরুল ইসলাম এবং যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিমসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে আগামী নির্বাচনের জন্য কমনওয়েলথের পর্যবেক্ষক চান প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু হবে: যুক্তরাজ্যকে প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবারও বলেছেন, তার দেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে।
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লেভারলি শনিবার তার সঙ্গে এক বৈঠকে বলেন, ব্রিটেন আগামী দিনগুলোতে বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু জাতীয় নির্বাচন দেখতে চায়।
বাংলাদেশে এ বছরের শেষ দিকে অথবা আগামী বছরের শুরুতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে।
সফররত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সরকারি যুক্তরাজ্য সফরের সময় ক্লারিজ হোটেলে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
ক্লারিজ হোটেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ক্লেভারলি সাক্ষাৎ করেন, যেখানে সফররত প্রধানমন্ত্রী তার আনুষ্ঠানিক যুক্তরাজ্য সফরে অবস্থান করছেন।
আরও পড়ুন: ভুটানকে বাংলাদেশে অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার আমন্ত্রণ প্রধানমন্ত্রীর
বৈঠক শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন সাংবাদিকদের জানান, শেখ হাসিনা আগামী নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করতে সকলের সহযোগিতার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘আমরা চাই সুষ্ঠু নির্বাচন হোক। আমার দল সবসময় দেশে গণতন্ত্র বজায় রেখেছে। আমরা দেশের গণতন্ত্রকে একটি শক্তিশালী ভিত দিয়েছি।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমার সরকার একটি সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যার জন্য সবার অংশগ্রহণ প্রয়োজন। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সবার সহযোগিতা চাই।’
তিনি বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আওয়ামী লীগ সরকার প্রয়োজনীয় সবকিছু করেছে। তিনি ভোটারদের ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রবর্তন এবং ব্যালট বাক্সকে স্বচ্ছ করার কথা উল্লেখ করেন, যাতে কেউ ভোট কারচুপি করতে না পারে।
তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশে গণতন্ত্রের একটি শক্তিশালী রাষ্ট্র তৈরি করেছি। বিপরীতে বিএনপি তাদের শাসনামলে ভোট কারচুপির জন্য এক কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার নিয়ে ভোটার তালিকা তৈরি করেছিল।’
তিনি বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো আনার পাশাপাশি আমরা নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) যথেষ্ট স্বাধীন ও শক্তিশালী করে তুলেছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন যে তারা ওয়েস্টমিনস্টারের মতো গণতন্ত্রে বিশ্বাসী, যার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সংসদে প্রশ্নোত্তর অধিবেশন চালু হয়েছে।
মোমেন বলেন, বৈঠকে রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তন, ব্যবসা-বাণিজ্যের মতো বেশ কয়েকটি দ্বিপক্ষীয় বিষয় গুরুত্বের সঙ্গে উঠে আসে।
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে আশ্রয় দেওয়ায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর মানবিক ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেন।
ক্লেভারলি বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের দ্রুত প্রত্যাবাসনে যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের পাশে থাকবে।’
ড. মোমেন বলেন, ব্রিটিশ সরকার রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে একটি রেজ্যুলেশন উত্থাপন করেছে এবং তা গ্রহণে কার্যকর ভূমিকা পালন করেছে।
রাজা তৃতীয় চার্লসের রাজ্যাভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন ক্লেভারলি।
আরও পড়ুন: রাজা তৃতীয় চার্লসের রাজ্যাভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী
দণ্ডিত তারেক রহমানকে ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়টি যুক্তরাজ্য সরকারের ওপর নির্ভর করছে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার সরকার আদালতের রায় বাস্তবায়নের জন্য বিএনপির দণ্ডপ্রাপ্ত ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে, তবে সবকিছু নির্ভর করছে যুক্তরাজ্য সরকারের ওপর।
তিনি বলেন, ‘তিনি সেখানে (ইউকে) আছেন। অপরাধী যেই হোক, তাদের ফিরিয়ে এনে সাজা কার্যকর করতে হবে। এ ব্যাপারে আমরা আমাদের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এখন এটা সম্পূর্ণ ব্রিটিশ সরকারের ওপর নির্ভর করছে। তারা কি তাকে সেখানে রাখবে নাকি শাস্তি কার্যকর হতে দেবে? এটা সম্পূর্ণভাবে তাদের ওপর নির্ভর করছে।’
মঙ্গলবার তিনি ওয়াশিংটনে ভয়েস অব আমেরিকা বাংলা সার্ভিসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে সর্বদা উদ্যোগ রয়েছে। তিনি মানিলন্ডারিং, অস্ত্র চোরাচালান, দুর্নীতি এবং ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলাসহ বেশ কয়েকটি মামলার উল্লেখ করেন। তাদের বিরুদ্ধে এরকম আরও অনেক মামলা বিচারাধীন রয়েছে।
হাসিনা বলেন, তারেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে বন্ডে সই করে দেশ ত্যাগ করেন। তাই আমরা চাই এই মামলার রায় কার্যকর করতে যত দ্রুত সম্ভব তাকে দেশে ফিরিয়ে আনা হোক।
এর আগে ভিওএ সাংবাদিক তারেককে বাংলাদেশে ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে যুক্তরাজ্য সরকারের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর কোনো আলোচনা হয়েছে কিনা জানতে চেয়েছিলেন।
জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অবশ্যই। এক পর্যায়ে আমরা বারবার যুক্তরাজ্য সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি।’
আরও পড়ুন: ‘সভ্য দেশে কেউ যদি মন্ত্রণালয় থেকে ফাইল চুরি করার চেষ্টা করে, তারা কী করবে?’
আ. লীগ একাই গণতন্ত্র চর্চা করে ও বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন করে: প্রধানমন্ত্রী
বহিরাগত চাপে পদ্মা সেতু থেকে সরে গেছে বিশ্বব্যাংক: ভবিষ্যতের দিকে নজর দেওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
জাপান, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে দুই সপ্তাহের সরকারি সফরের প্রথম ধাপে টোকিওর উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাপান, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে দুই সপ্তাহের সরকারি সফরের প্রথম ধাপে মঙ্গলবার সকালে টোকিওর উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেছেন।
শেখ হাসিনা জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার আমন্ত্রণে ২৫ থেকে ২৮ এপ্রিল জাপান সফর করবেন।
প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ভিভিআইপি চার্টার্ড ফ্লাইট সকাল ৭টা ৫৬ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে।
টোকিওর হানেদা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিকাল ৫টায় (জাপান সময়) এই ফ্লাইট অবতরণের কথা রয়েছে।
জাপানের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তাকেই শুনসুকে বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানাবেন। বিমানবন্দরে তাকে গার্ড অব অনার দেওয়া হবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, তার সফরকালে বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে ক্রয় ছাড়াই প্রতিরক্ষা সহযোগিতাসহ আটটি সমঝোতা স্মারক (এমওসি) বা চুক্তি স্বাক্ষরিত হতে পারে।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর টোকিও সফর: প্রতিরক্ষা সহযোগিতাসহ ৮টি চুক্তি সইয়ের সম্ভাবনা
আগামী ২৬ এপ্রিল দুই প্রধানমন্ত্রী (শেখ হাসিনা ও ফুমিও কিশিদা) বন্ধুত্বপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে বৈঠকে এসব সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হবে।
জাপানের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে দুই দেশের সরকার প্রধানদের মধ্যে আনুষ্ঠানিক দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শেষে দুই নেতার উপস্থিতিতে কৃষি, মেট্রোরেল, শিল্প উন্নয়ন, জাহাজ পুনর্ব্যবহার, কাস্টমস বিষয়, মেধাস্বত্ব, প্রতিরক্ষা সহযোগিতা, আইসিটি ও সাইবার নিরাপত্তা সহযোগিতা ইত্যাদি খাতে দু'দেশের মধ্যে আটটি সমঝোতা স্মারক বা চুক্তি স্বাক্ষরিত হতে পারে।
শেখ হাসিনা ২৬ এপ্রিল জাপানের সম্রাট নারুহিতোর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন এবং সেখানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হবে।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর জাপান সফর: ঢাকা ও টোকিওর মধ্যে ৮-১০টি চুক্তি, সমঝোতা স্মারক সইয়ের সম্ভাবনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্মানে জাপানের প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে আয়োজিত নৈশভোজের মধ্য দিয়ে বৈঠকের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হবে।
এটি হবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ষষ্ঠ জাপান সফর। এর আগে প্রধানমন্ত্রী ১৯৯৭, ২০১০, ২০১৪, ২০১৬ ও ২০১৯ সালে জাপান সফর করেন।
সফরকালে প্রধানমন্ত্রী একটি বিনিয়োগ সম্মেলন ও একটি কমিউনিটি সংবর্ধনা এবং কয়েকটি দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে যোগ দেবেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তিনি কয়েকজন জাপানি নাগরিকের হাতে 'ফ্রেন্ডস অব লিবারেশন ওয়ার অনার' তুলে দেবেন।
আরও পড়ুন: সজাগ থাকুন, যাতে যুদ্ধাপরাধী, গ্রেনেড হামলাকারী, দুর্নীতিবাজরা আবার ক্ষমতায় আসতে না পারে: প্রধানমন্ত্রী
যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের স্বাগত জানাবে ঢাকা: ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূতকে প্রধানমন্ত্রী
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও যুক্তরাজ্যের পর্যবেক্ষকদের স্বাগত জানাবে বাংলাদেশ।
বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা আগামী জাতীয় নির্বাচনে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাজ্যের পর্যবেক্ষকদের স্বাগত জানাব।’
যুক্তরাজ্যের বিদায়ী হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে বিদায়ী সাক্ষাৎকালে তিনি এ কথা বলেন।
বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
কিছু স্থানীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষকের ভিন্ন এজেন্ডা রয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা বাংলাদেশে জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করেছেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে অব্যাহত গণতন্ত্রের কারণে চরম দারিদ্র্যের হার ৫ দশমিক ৬ শতাংশে নেমে এসেছে এবং দারিদ্র্যের হার ১৮ দশমিক ৭ শতাংশে নেমে এসেছে।
আরও পড়ুন: আগামী নির্বাচন হবে অবাধ, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য: নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপতি
সাক্ষাৎকালে তারা বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করেন।
যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রদূত বলেন, তার দেশ বাংলাদেশের সঙ্গে এভিয়েশন খাতে অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব ও সহযোগিতা জোরদার করতে চায়।
তিনি বলেন, গত মার্চে দুই দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতা বাড়াতে চায়।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে শেখ হাসিনা টেকসই উপায়ে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা কামনা করেন।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ৪০ হাজার শিশুর জন্ম হওয়ায় রোহিঙ্গার সংখ্যা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, যা বাংলাদেশের ওপর বিশাল বোঝা বাড়িয়েছে। রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের নাগরিক এবং তাদের অবশ্যই নিজ দেশে ফিরে যেতে হবে।
রবার্ট চ্যাটার্টন ডিকসন বলেন, তার দেশ রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশকে সমর্থন করে।
শেখ হাসিনা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ অবিলম্বে বন্ধ করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, যুদ্ধের কারণে সমগ্র বিশ্ব ভুগছে। আমরা সবসময় যে কোনো যুদ্ধের বিপক্ষে।
রাশিয়া ও ইউক্রেন দ্বিপক্ষীয় আলোচনার মাধ্যমে তাদের সমস্যার সমাধান করতে পারে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ তার সব দ্বিপক্ষীয় সমস্যা এভাবেই সমাধান করেছে।
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করতে সংবিধান সংশোধন করতে হবে: মঈন
বাংলাদেশের সঙ্গে শক্তিশালী, ঘনিষ্ঠ অংশীদারিত্ব চান রাজা চার্লস
যুক্তরাজ্যের(ইউকে) রাজা চার্লস-৩ বলেছিলেন যে তিনি কমনওয়েলথ সনদের দশম বার্ষিকীর এই বিশেষ বছরে কমনওয়েলথের সদস্য হিসেবে দুই দেশের মধ্যে অব্যাহত উষ্ণ বন্ধুত্ব এবং শক্তিশালী ও ঘনিষ্ঠ অংশীদারিত্ব চায়।
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদকে পাঠানো অভিনন্দন বার্তায় যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রপ্রধান বলেছেন, ‘যেহেতু আপনি এবং সর্বত্র বাংলাদেশিরা, স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করছেন, আমার সঙ্গে আমার স্ত্রী আগামী বছরের জন্য আপনাকে আমাদের উষ্ণ শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।’
রাজা চার্লস স্বাধীনতা দিবসে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদকে আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য,বিনিয়োগ ও ডিজিটাল অর্থনীতির সম্পর্ক জোরদার করবে যুক্তরাজ্য: ইন্দো-প্যাসিফিক মন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘যেহেতু আমরা এই চ্যালেঞ্জিং সময়ের মুখোমুখি, সমৃদ্ধি, গণতন্ত্র এবং শান্তির জন্য এবং সর্বোপরি জলবায়ু পরিবর্তন এবং জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি মোকাবিলায় আমাদের একসঙ্গে কাজ করা আরও গুরুত্বপূর্ণ।’
বার্তাটিতে লেখা হয়েছে,‘লন্ডনের ব্রিক লেনে আমাদের সাম্প্রতিক সফরের সময় অনেক ব্রিটিশ বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের অভ্যর্থনা পেয়ে আমার স্ত্রী এবং আমি আনন্দিত এবং খুশি হয়েছি, যা আমাদের জনগণ এবং সম্প্রদায়ের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক প্রদর্শন করে।’
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যুক্তরাজ্যের ক্রস-পার্টি প্রতিনিধিদলের সাক্ষাৎ, রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে আলোচনা
রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবর্তন নিশ্চিতে বিশ্ব সম্প্রদায়কে আওয়াজ তোলার আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বৃটিশ-বাংলাদেশি প্রবাসীসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বাংলাদেশে অস্থায়ীভাবে আশ্রয় দেয়া জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায়, নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করার জন্য তাদের আওয়াজ তুলতে আহ্বান জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার বিকালে যুক্তরাজ্যের ক্যামডেনের মেয়র নাসিম আলী ওবিই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার সময় তিনি এ আহ্বান জানান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য আর্থ-সামাজিক অগ্রগতি সম্পর্কে মেয়রকে অবহিত করেন।
যুক্তরাজ্যে ব্রিটিশ-বাংলাদেশি প্রবাসীদের প্রশংসা করে উভয়েই ব্রিটিশ সমাজ ও অর্থনীতিতে এবং গত পাঁচ দশকে এই দুই দেশের মধ্যে যোগাযোগের সেতু হওয়ার জন্য তাদের অবদানের কথা স্মরণ করেন।
ক্যামডেনের মেয়র ব্রিটিশ-বাংলাদেশি প্রবাসীদের, বিশেষ করে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের স্বীকৃতি দেয়ার জন্য একটি অনুষ্ঠানের পরামর্শ দেন।
তারা জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্যের সহযোগিতা নিয়েও আলোচনা করেন।
আরও পড়ুন: দিল্লিতে জি২০ পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠক: পার্শ্ব বৈঠক করবেন মোমেন
দূতাবাস চালু ও সম্পর্ক গভীর করতে আর্জেন্টিনার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঢাকায়
ঢাকায় মোমেনের সঙ্গে আর্জেন্টিনার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দ্বিপক্ষীয় বৈঠক সোমবার
অনেক দেশের চেয়ে বাংলাদেশে বিদ্যুতের মূল্য কম: তথ্যমন্ত্রী
তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, মূল্যবৃদ্ধির পরও অনেক দেশের চেয়ে বাংলাদেশে বিদ্যুতের মূল্য কম।
বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোর তুলনা করে ড. হাছান বলেন, যুক্তরাজ্যে অনেক আগেই বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি ১০০ শতাংশ ছাড়িয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতেও এই মূল্যবৃদ্ধি ২০ থেকে ১০০ শতাংশ।
যেমন জার্মানিতে ২১ শতাংশ আবার বেলজিয়ামে ৯৫ শতাংশ। সেই তুলনায় আমাদের দেশে বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি অনেক কম।
আরও পড়ুন: ভাষা ও সংস্কৃতি বিকৃতিকারীদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকুন: তথ্যমন্ত্রী
এছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে পাঁচ শতাংশ হারে দু’বার বাড়ানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের সাম্প্রতিক সংবাদ সম্মেলনের প্রেক্ষিতে এসব কথা বলেন তিনি।
সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, বিদ্যুতের ইউনিট মূল্য বাংলাদেশে সাত টাকা ৩২ পয়সা, ভারতের দিল্লীতে ১১ টাকা ১৫ পয়সা, মহারাষ্ট্রে ১১ টাকা ৩৩ পয়সা, পাঞ্জাবে আট টাকা ৬৩ পয়সা। যুক্তরাষ্ট্রে ১৮ টাকা ৩১ পয়সা, জার্মানিতে ৪১ টাকা ৯৩ পয়সা, বেলজিয়ামে ৪৬ টাকা ৪৬ পয়সা, জাপানে ২৫ টাকা ৭৪ পয়সা।
এছাড়া জাপানসহ অন্য দেশের কথা বাদ দিলাম, ভারতের তুলনায়ও আমাদের বিদ্যুতের মূল্য কম।
হাছান মাহমুদ বলেন, আজকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সমগ্র পৃথিবীতে মূল্যস্ফীতি ঘটেছে। ২৭টি দেশের জোট ইউরোপীয় ইউনিয়নে মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের বেশি কোনো কোনো দেশে সেটি ২০-২২ শতাংশ ছাড়িয়েছে। যুক্তরাজ্যে সার্বিক মূল্যস্ফীতি অনেক আগেই ১০ শতাংশ ছাড়িয়েছে। রাশিয়াতে ১১ দশমকি আট শতাংশ, তুরস্কে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত গিয়েছিল বর্তমানে সেটি প্রায় ৬০ শতাংশ। পাকিস্তানে ৩২ শতাংশ আর আমাদের দেশে মূল্যস্ফীতি হচ্ছে সাড়ে আট শতাংশ।
অর্থাৎ বিশ্বের অনেক উন্নত দেশ এবং আশেপাশের দেশের তুলনায়ও আমাদের দেশে মূল্যস্ফীতি কম।
ড. হাছান বলেন, দুর্নীতিতে পরপর পাঁচবার তারা(বিএনপি) বাংলাদেশকে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন বানিয়েছিল, দুর্নীতির দায়ে বেগম খালেদা জিয়া শাস্তিপ্রাপ্ত বন্দি হয়েছিলেন এখন প্রধানমন্ত্রীর কৃপায় জেলখানার পরিবর্তে ঘরে অবস্থান করছেন। আর দুর্নীতির কারণেই বাংলাদেশ থেকে টাকা পাচারের কারণে তাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শাস্তিপ্রাপ্ত।
তিনি আরও বলেন, বেগম জিয়ার আরেক পুত্র আরাফাত রহমান কোকোর বিদেশে পাচার করা টাকা সিঙ্গাপুর থেকে বাংলাদেশে ফেরত আনা হয়েছে। এভাবে যাদের সারা গায়ে দুর্নীতির গন্ধ, তারা যখন দুর্নীতির কথা বলে তখন তাদের গায়ের দুর্নীতির দুর্গন্ধই শুধু ছড়ায় অন্য কোনো কিছু নয়।
আরও পড়ুন: চীন উন্নয়ন সহযোগী, রাজনীতিতে মাথা ঘামায় না: তথ্যমন্ত্রী
নির্বাচনে সকল দলের অংশগ্রহণ চায় আ.লীগ: পর্যবেক্ষকদেরকে তথ্যমন্ত্রী
২১শে ফেব্রুয়ারিকে ‘লন্ডন মাল্টিলিংগুয়াল ডে’ পালনের আহ্বান
যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাঈদা মুনা তাসনীম অমর একুশে ফেব্রুয়ারিকে ‘লন্ডন মাল্টিলিংগুয়াল ডে’ হিসেবে পালনের আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে একটি আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব হাইকমিশন খুব শিগগিরই লন্ডনের মেয়রের কাছে পাঠাবে।’
গত মঙ্গলবার (২১শে ফেব্রুয়িারি) সন্ধ্যায় লন্ডনের কেন্জিংটনের একটি হোটেলে ‘সেফগার্ডিং ইন্ডিজেনাস ল্যাঙ্গুয়েজেস থ্রু ট্রান্সফর্মিং এডুকেশন’-শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে হাইকমিশনার সাঈদা মুনা এ আহ্বান জানান।
এসময় তিনি যুক্তরাজ্যে প্রায় ৩০০টি এবং লন্ডনে প্রায় ২০০টি মাতৃভাষার প্রচলন রয়েছে উল্লেখ করে বলেন, ‘একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসটিকে ‘লন্ডন মাল্টিলিংগুয়াল ডে’ হিসেবে ঘোষণা করা খুবই যৌক্তিক এবং এবিষয়ে আজকের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারি সকল দেশের রাষ্ট্রদূতগণ অভিন্ন মত ব্যক্ত করেছেন।’
হাইকমিশনার ব্রিটিশ-বাংলাদেশি কমিউনিটিসহ বিভিন্ন কমিউনিটির সদস্যদের তাদের নিজ নিজ এলাকার কাউন্সিলরদের মাধ্যমে লন্ডন মেয়রের নিকট এবিষয়ে প্রস্তাব পাঠানোর পরামর্শ দেন।
আরও পড়ুন: ক্যানবেরায় বহু ভাষা ও সংস্কৃতির ব্যক্তিদের অংশগ্রহণে অমর একুশে উদযাপন
তাছাড়া তিনি বাংলা ভাষা শিক্ষা এবং চর্চার জন্য যুক্তরাজ্যে কমিউনিটি সংগঠনসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান উদ্যোগ গ্রহণ করলে হাইকমিশন বিনামূল্যে বাংলা বই সরবরাহ করতে সহায়তা করবে বলেও জানান।
তিনি তার বক্তব্যে সর্বদলীয় ছাত্রসংগ্রাম পরিষদ-এর প্রধান সমন্বয়ক হিসেবে ৫২-র ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের কথা স্মরণ করেন এবং একুশে ফেব্রুয়ারির আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মর্যাদা পাওয়া, বাংলা ভাষাকে জাতিসংঘের অন্যতম দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে অন্তর্ভুক্তির উদ্যোগসহ বাংলা ভাষার সমৃদ্ধি ও উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন পদক্ষপে গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করনে।
অনুষ্ঠানে কমনওয়েলথের সেক্রেটারি জেনারেল পেট্রিসিয়া স্কটল্যান্ড অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।
পেট্রিসিয়া তার বক্তব্যে এবছরের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রতিপাদ্যের উল্লেখ করে প্রতিটি দেশে শিক্ষা, সংস্কৃতি ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে মাতৃভাষার সংরক্ষণ ও চর্চার ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করে বাংলাদেশে বায়ান্নোর ভাষা আন্দোলনকে মাতৃভাষার সংরক্ষণ ও চর্চার ক্ষেত্রে এক অনন্য নজীর বলে উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে ভাষা ও সংস্কৃতি সুরক্ষায় যারা প্রাণ দিয়েছিলো, তাদের সেই আত্মদান থেকে আজও আমরা অনুপ্রেরণা নিতে পারি।’
ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সদস্য পল ব্রিস্টো অনুষ্ঠানে গেস্ট অব অনার হিসেবে বক্তব্য রাখেন।
আরও পড়ুন: ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে নয়া দিল্লির বাংলাদেশ মিশন
তিনি বলেন, ‘যুক্তরাজ্যে ব্রিটিশ-বাংলাদেশি কমিউনিটি অমর একুশের মহান আদর্শ ধারণ করে আছে, যা আগামী দিনগুলোতেও এদেশে নিজ নিজ মাতৃভাষা ও সংস্কৃতি সংরক্ষণ ও উন্নয়নে অন্য ভাষার মানুষকেও উৎসাহ যোগাবে।’
যুক্তরাজ্যে ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মর্যাদা অর্জনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
এ অনুষ্ঠানে লন্ডনে অবস্থিত বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধি, ১৭টি দূতাবাসের কূটনীতিক ও প্রতিনিধি এবং ব্রিটিশ-বাংলাদেশি কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিরা অংশ নেন।
এছাড়া হাইকমিশনের স্মারক অনুষ্ঠানের সহ-আয়োজক যুক্তরাজ্যে ইউনেস্কোর জাতীয় কমিশনের প্রতিনিধি ম্যাথিউ রাবাগলিয়াতি, ব্রিটিশ কাউন্সিল প্রতিনিধি ও'বায়ার্ন মুলিগান ও যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক সুলতান মাহমুদ শরীফ বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের হাইকমিশনার ও রাষ্ট্রদূতগণ এবং দূতাবাসগুলোর প্রতিনিধিত্বকারী শিল্পীরা ভাষা শহীদদের উৎসর্গ করে নিজ নিজ ভাষায় মনোজ্ঞ সঙ্গীত, আবৃত্তি ও নৃত্য পরিবেশন করেন।
এছাড়াও, উদীচী স্কুল অব পারফরমিং আর্টসের শিশু-কিশোর শিল্পীরা সমবেত কন্ঠে ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’- অমর সঙ্গীতটি পরিবেশন করে।
অনুষ্ঠানের শুরুতে হাইকমিশনার অতিথি ও মিশনের কর্মকর্তাদের নিয়ে প্রতীকী শহিদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে ভাষা শহিদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর ভাষা শহিদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
আরও পড়ুন: আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস: জাতিসংঘের পক্ষ থেকে বিভিন্ন ভাষায় শ্রদ্ধাঞ্জলি