হেফাজত
হাটহাজারীতে তাণ্ডব: হেফাজত নেতা নাসির উদ্দিন মুনির গ্রেপ্তার
চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে তাণ্ডবের ঘটনায় উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও হেফাজতে ইসলামের বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম মহাসচিব নাসির উদ্দিন মুনিরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সোমবার চট্টগ্রামের হাটহাজারী সদর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আরও পড়ুন: হেফাজতের কমিটি প্রত্যাখ্যান করে যা বললেন শফীপুত্র ইউসুফ মাদানী
চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার এসএম রশিদুল ইসলাম বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করে বলেন, বিকাল সোয়া ৩টার দিকে হাটহাজারী থেকে নাসির উদ্দিন মুনিরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গত মার্চে হাটহাজারীতে তাণ্ডবের ঘটনাসহ নাসির উদ্দিন মুনিরের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। ঘটনার পর থেকে এতদিন পলাতক ছিলেন তিনি।
আরও পড়ুন: হেফাজতের নতুন কমিটি ঘোষণা, বিতর্কিত নেতাদের বিদায়
জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক কেশব কুমার বড়ুয়া বলেন, 'হেফাজতের সহিংসতার ঘটনায় নাসির উদ্দীন মুনীরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে আগামীকাল আদালতে পাঠিয়ে রিমান্ড আবেদন করা হবে।'
পুলিশ জানিয়েছে, হাটহাজারীতে সহিংসতার ঘটনায় ইন্ধনদাতা হিসেবে নাসির উদ্দিন মুনিরের নাম রয়েছে। এ ছাড়া হেফাজতের সাবেক আমির আহমদ শফীকে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় পিবিআইর তদন্তেও তার নাম রয়েছে।
আরও পড়ুন: হেফাজত আমীর বাবুনগরীর ব্যক্তিগত সহকারী গ্রেপ্তার
উল্লেখ্য, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমণকে কেন্দ্র করে গত ২৫ মার্চ শুক্রবার জুমার নামাজের পর চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে পুলিশের সঙ্গে হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় থানা ও উপজেলা ডাকবাংলোতে ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়ে ভাঙচুর করা হয়। পুলিশের গুলিতে ৪ হেফাজত কর্মী নিহত ও শতাধিক আহত হয়। এ সংঘর্ষের চার দিন পর ৩০ মার্চ রাতে হাটহাজারী থানায় পুলিশ বাদী হয়ে চারটি ও ভূমি অফিসে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় দুটিসহ মোট ছয়টি মামলা করে। এসব মামলায় কারও নাম উল্লেখ না করে কয়েক হাজার অজ্ঞাত আসামি করা হয়।
হেফাজতের নতুন কমিটি ঘোষণা, বিতর্কিত নেতাদের বিদায়
হেফাজতে ইসলাম জুনায়েদ বাবুনগরীকে আমির হিসেবে বহাল রেখে ও বিতর্কিত নেতা মামুনুল হককে বাদ দিয়ে ৩৩ সদস্যের একটি নতুন পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করেছে।
সোমবার ৩৩ সদস্য বিশিষ্ট নতুন এ কমিটি ঘোষণা করে ‘অরাজনৈতিক’ এই দলটি।
হেফাজত নেতা নুরুল ইসলামকে কমিটির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা নুরুল ইসলাম জিহাদী রাজধানীর খিলগাঁও মোড়ে জামিয়া ইসলামিয়া মাখজানুল মাদ্রাসায় এক সংবাদ সম্মেলনে নতুন কমিটির ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: রিমান্ড শেষে কারাগারে মামুনুল
দলটি সাবেক কমিটির যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক এবং সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামাবাদী সহ অন্যান্য বিতর্কিত নেতাদের এবার কমিটি থেকে বাদ দিয়েছে ধর্মীয় এই সংগঠনটি।
বর্তমান কমিটিতে হযরত মাওলানা আতাউল্লাহকে নায়েবে আমির এবং হযরত মাওলানা সাজেদুর রহমানকে যুগ্ম মহাসচিব করা হয়েছে। এর পাশাপাশি, হযরত মাওলানা মীর ইদ্রিসকে সাংগঠনিক সম্পাদক এবং হযরত মাওলানা মুহিউদ্দিন রাব্বানিকে প্রচার সম্পাদক করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বিশ্বনাথে হেফাজত নেতা মুফতি ফারুক গ্রেপ্তার
এছাড়া হেফাজত আমির জুনায়েদ বাবুনগরীকে প্রধান করে ১৬ সদস্যের একটি উপদেষ্টা কমিটিও ঘোষণা করেছে দলটি। একই সাথে ৯ সদস্যের খাস কমিটি বা মজলিসে সুরা গঠন করা হয়।
২৬ শে মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে হেফাজতের তাণ্ডব এবং পরবর্তী অন্যান্য ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত ২৫ এপ্রিল হেফাজত প্রধান বাবুনগরী তখনকার কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: হেফাজতের মামুনুল হককে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ
সারাদেশে হেফাজতের তাণ্ডবকে কেন্দ্র করে অন্তত ৬৯ হাজারে অধিক ব্যক্তিকে আসামি করে অন্তত ৭৭টি মামলা করা হয়। ওই সকল মামলার পর থেকেই প্রতিদিনই হেফাজতের প্রভাবশালী নেতা থেকে শুরু করে কর্মী পর্যায়ের সদস্যদের গ্রেপ্তার করতে থাকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী।
গত ৫ জুন নারায়ণগঞ্জের একটি আদালত পৃথক ছয় মামলায় ১৮ দিনের রিমান্ড শেষে হেফাজতে ইসলামের সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হককে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়।
আরও পড়ুন: হেফাজত নেতা ইসলামাবাদী গ্রেপ্তার, ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর
এর আগে গত ১৮ এপ্রিল মামুনুলকে ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকার একটি মাদরাসা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
হেফাজতের ২৬ শে মার্চের তাণ্ডব ও নারী কেলেঙ্কারি সহ বিভিন্ন কারণে আলোচনায় উঠে এসেছিলেন হেফাজতের এই সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা।
রিমান্ড শেষে কারাগারে মামুনুল
পৃথক ছয় মামলায় ১৮ দিনের রিমান্ড শেষে হেফাজতে ইসলামের সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হককে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
শনিবার নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাওছার আলমের আদালত শুনানি শেষে তাকে কাশিমপুর কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুন: মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ‘দ্বিতীয় স্ত্রীর’ ধর্ষণ মামলা
১৮ এপ্রিল মামুনুলকে ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকার একটি মাদরাসা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
মামুনুল হকের বিরুদ্ধে করা ছয় মামলার মধ্যে তিনটি করেছে জেলা পুলিশ, দুটি করেছে সিআইডি এবং একটি করেছে পিবিআই।
আরও পড়ুন: হেফাজতের মামুনুল হককে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ
এর আগে ৩ এপ্রিল সোনারগাঁও এর একটি রিসোর্টে এক নারীসহ মামুনুল হককে অবরুদ্ধ করে এলাকাবাসী। তখন ওই নারীকে নিজের দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে দাবি করেন সাবেক হেফাজত নেতা মামুনুল।
পরবর্তীতে মামুনুল ও তার স্ত্রীর মধ্যকার ফোনকল হিসেবে ফাঁস হওয়া এক অডিও ক্লিপে ওই নারীকে নিজের স্ত্রী বলে দাবি করেন মামুনুল।
গ্রেপ্তারের পর আরও দুই নারীর সাথে মামুনুল হক চুক্তিভিত্তিক সম্পর্কের কথা স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
হেফাজতের মামুনুল হককে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ
নারায়ণগঞ্জের ছয়টি মামলায় আঠারো দিনের রিমান্ডে থাকা হেফাজতে ইসলামের বিলুপ্ত কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হককে নিজ হেফাজতে এনে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ।
মঙ্গলবার সকালে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের উদ্দেশে কাসিমপুর কারাগার থেকে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আনা হয়। এ কারণে সকাল থেকেই জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয় ঘিরে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করে পুলিশ।
আরও পড়ুন: মামুনুল ৭ দিনের রিমান্ডে
বিষয়টি নিশ্চিত করে নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম ইউএনবিকে জানান, মামুনুল হকের বিরুদ্ধে দায়ের করা ছয়টি মামলায় আলাদাভাবে ছয়জন তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত পরিচালনা করছেন।
আরও পড়ুন: মামুনুল হকের দ্বিতীয় স্ত্রী নিখোঁজ; পল্টন থানায় জিডি
তিনি আরও বলেন, প্রত্যেক মামলায় আদালত তিনদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করায় তদন্তকারী কর্মকর্তারা পৃথকভাবে তিনদিন করে মামুনুল হককে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবেন। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে যেসব তথ্য পাওয়া যাবে সেগুলো নথিভুক্ত করে আদালতে উপস্থাপন করা হবে বলে জানান জেলা পুলিশ সুপার।
আরও পড়ুন: এক পুলিশ কর্মকর্তার অনুরোধে বায়তুল মোকাররমে গিয়েছিলাম: আদালতকে মামুনুল
গত ২৮ মার্চ হেফাজতে ইসলামের ডাকা হরতাল কর্মসূচিতে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ড ও সানারপাড়সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে ব্যাপক সহিংসতা সৃষ্টির ঘটনায় মামুনুল হককে প্রধান আসামি করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছিল।
এরপর ৩ এপ্রিল সোনারগাঁয়ে রয়েল রিসোর্টে নারী কেলেংকারি ইস্যুতে হেফাজতের নেতা-কর্মীদের হামলা ভাঙচুর ও নাশকতার ঘটনায় সোনারগাঁ থানায় দায়েরকৃত আরও দু’টি মামলায় মামুনুল হককে প্রধান আসামি করা হয়।
সর্বশেষ গত ৩০ এপ্রিল বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণা ও একাধিকবার ধর্ষণের অভিযোগে মামুনুলের বিরুদ্ধে সোনারগাঁ থানায় ধর্ষণ মামলা করেন তার কথিত দ্বিতীয় স্ত্রী।
এই ছয় মামলায় পুলিশের রিমান্ড আবেদনের প্রেক্ষিতে ভার্চুয়াল শুনানিতে আদালত তিনদিন করে ১৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
হেফাজতের তাণ্ডব: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আরও ৭ জন গ্রেপ্তার
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজতের বিক্ষোভ চলাকালে শহরজুড়ে ব্যাপক ভাঙচুর ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সর্বশেষ গত ১২ মে থেকে ১৫ মে পর্যন্ত আরও সাত জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ওই ঘটনা সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে এ পর্যন্ত ৪৭৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
পুলিশের দাবি, গ্রেপ্তারকৃতরা অধিকাংশই হেফাজতের নেতা ও কর্মী-সমর্থক। এছাড়া এদের মধ্যে বিএনপি ও জাময়াতের নেতা-কর্মীও রয়েছেন।
আরও পড়ুন: জামায়াতের সাবেক এমপি শাহজাহান চৌধুরী গ্রেপ্তার
রবিবার দুপুরে জেলা পুলিশের বিশেষ শাখা থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তাণ্ডবের ঘটনার সময়ে ধারনকৃত স্থিরচিত্র ও ভিডিও ফটেজ দেখে তাদেরকে শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, হেফাজতের তাণ্ডবের ঘটনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন থানায় এ পর্যন্ত ৫৬টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর মধ্যে সদর মডেল থানায় ৪৯টি, আশুগঞ্জ থানায় চার, সরাইল থানায় দুই ও আখাউড়া রেলওয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। এ সকল মামলায় ৪১৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ৩০-৩৫ হাজার লোককে আসামি করা হয়। পুলিশ এ পর্যন্ত ৪৭৩ জনকে গ্রেপ্তার করে।
আরও পড়ুন: হেফাজতের অর্থাদাতাদের শনাক্তে তৎপর গোয়েন্দা সংস্থা: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
মহান স্বাধীনতার সূবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশে আগমনের প্রতিবাদে হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীরা গত ২৬ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যাপক ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ চালায়। এ সময় হামলাকারীরা সরকারি, বেসরকারি প্রায় অর্ধশতাধিক স্থাপনায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নি সংযোগ করে।
দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরিতে ব্যস্ত বিএনপি: কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দেশে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে সকল প্রকার অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরিতে যুক্ত বিএনপি।
বৃহস্পতিবার নিজ বাসভবনে নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার অবস্থা এখনও আশঙ্কাজনক: বিএনপি
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘২৬ শে মার্চ সারাদেশে হেফাজতের তাণ্ডব এবং জঙ্গী কার্যক্রমের সাথে বিএনপির প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ সম্পৃক্ততা আছে। তারা দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করতে চেয়েছিল।’
তিনি দাবী করেন, এর আগেও বিভিন্ন সময়ে হেফাজতকে পরোক্ষ সহায়তার মাধ্যমে দেশে অস্থিতিশীলতা তৈরির চেষ্টা করে দলটি।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানালো বিএনপি
এসময় আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক অভিযোগ করে বলেন, বিএনপি মহাসচিব খালেদা জিয়ার জন্ম তারিখ নিয়ে কোনও স্পষ্ট জবাব দেননি। অথচ এই নিয়ে তারা আওয়ামী লীগের সমালোচনা করছে প্রতিদিনি।
মিতু হত্যা: বাবুল আক্তারকে হেফাজতে নিয়েছে পিবিআই
চট্টগ্রামের আলোচিত মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় তার স্বামী সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারকে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
বুধবার বাবুল আক্তারকে মিতু হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হতে পারে বলে পুলিশের একটি সূত্রে জানা গেছে।
মঙ্গলবার রাতে বাবুল আক্তারকে হেফাজতে নেয়ার কথা জানায় পিবিআই। এর আগে দুপুরে চট্টগ্রামের মনসুরাবাদ পিবিআই চট্টগ্রাম মহানগর কার্যালয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
আরও পড়ুন: মেহেরপুরে গৃহবধূকে হত্যার দায়ে স্বামী ও সতীনের মৃত্যুদণ্ড
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমাসহ পিবিআইয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তবে এ বিষয়ে কঠোর গোপনীয়তা অবলম্বন করছে পিবিআই।
পিবিআই প্রধান ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার বলেন, ‘তিনি (বাবুল) আগেও পিবিআইতে এসেছিলেন। মঙ্গলবার চট্টগ্রাম পিবিআইতে গেছেন। মামলার বাদী হিসেবে উনাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। হাইকোর্টের রুলিং আছে, এর চেয়ে বেশি কিছু বলা যাবে না।’
তবে পিবিআইয়ের নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চট্টগ্রামে হাজির হয়েছেন বলে জানা গেছে।
আরও পড়ুন: পরকীয়ার জেরে শিশু হত্যা: মা ও তার প্রেমিকের মৃত্যুদণ্ড
জানতে চাইলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমা বলেন, ‘উনি মামলার বাদী। আমরা যেহেতু মামলা তদন্ত করছি, উনি অগ্রগতি জানতে আমাদের কাছে এসেছিলেন।’
বাবুলকে আটক কিংবা গ্রেপ্তার করা হয়েছে কিনা, জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘সুযোগ নেই।’
তদন্তে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে বাবুল আক্তারের জড়িত থাকার কোনও তথ্যপ্রমাণ বা ইঙ্গিত পাওয়া গেছে কিনা, এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এটা বলতে পারছি না। হাইকোর্টের রুলিং আছে।’
২০১৬ সালের ৫ জুন ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দিতে গিয়ে চট্টগ্রাম নগরের জিইসি মোড়ের কাছে ওআর নিজাম রোডে নির্মমভাবে খুন হন মাহমুদা খানম মিতু। ছুরিকাঘাত ও গুলি করে তাকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় বাবুল আক্তার বাদী হয়ে নগরীর পাচঁলাইশ থানায় অজ্ঞাতপরিচয় ৩ ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করেন।
আরও পড়ুন: কিশোরগঞ্জ কারাগারে বন্দিকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ
মিতু হত্যাকাণ্ডের পর প্রথমে ধারণা করা হয়েছিল, জঙ্গিরা এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। কারণ তার স্বামী বাবুল আক্তার চট্টগ্রামে এএসপি থাকাকালে জঙ্গি বিরোধী অপারেশনে পুলিশের প্রথম সারির কর্মকর্তাদের একজন ছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে বাবুল আক্তার ও মিতুর পরকীয়ার বিষয়টিও আলোচিত হয় গণমাধ্যমে। এ ব্যাপারে বিভিন্ন পক্ষের বক্তব্যও নিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা।
হত্যাকাণ্ডের বছরখানেক পর থেকেই মিতুর বাবা সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন দাবি করে আসছিলেন, বাবুল আক্তারের পরিকল্পনায় ও নির্দেশে তার মেয়ে মিতুকে খুন করা হয়েছে।
মিতু হত্যাকাণ্ডের পর একটি মাজারের খাদেম আবু নছর ওরফে গুন্নু ও শাহজামান ওরফে রবিন নামের আরও এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। পরে তারা জামিনে মুক্তি পান। হত্যকাণ্ডের ২০ দিন পর তদন্ত ভিন্নখাতে মোড় নেয়।
২০১৬ সালের ২৪ জুন মধ্যরাতে ঢাকার বনশ্রী এলাকার শ্বশুরবাড়ি থেকে বাবুল আক্তারকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। প্রায় ১৫ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় তাকে। পরে তাকে বাসায় পৌঁছে দেওয়া হয়। এরপর নানা গুঞ্জন ডালপালা ছড়ায়।
এসময় পুলিশ জানায়, বাহিনী থেকে পদত্যাগ করেছেন বাবুল আক্তার।
তবে বাবুল আক্তারের দাবি ছিল, তিনি স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেননি। ২০১৬ সালের ৯ আগস্ট পদত্যাগপত্র প্রত্যাহারের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন তিনি। নানা নাটকীয়তা শেষে ৬ সেপ্টেম্বর বাবুলকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
মিতু হত্যার ২১ দিন পর ২৬ জুন গ্রেপ্তার করা হয় ওয়াসিম ও আনোয়ারকে। আদালতে জবানবন্দি দেন তারা। এরপর বেরিয়ে আসে হত্যায় জড়িতদের তথ্য। জবানবন্দিতে তারা জানান মুছার নেতৃত্বে ওয়াসিম, আনোয়ার, মো: রাশেদ, নবী, মো: শাহজাহান ও মো: কালু হত্যাকাণ্ডে অংশ নেন।
হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত মোটরসাইকেলে ছিলেন ওয়াসিম, মুছা ও নবী। মাহমুদাকে ছুরিকাঘাত করেন নবী। অস্ত্র সরবরাহ করেন এহতেশামুল হক ওরফে ভোলা।
তবে কী কারণে, কার নির্দেশে তারা হত্যায় অংশ নিয়েছেন তা নিয়ে কোনও তথ্য দেয়নি। একই বছরের ৪ জুলাই হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের মধ্যে রাঙ্গুনিয়ায় পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন নবী ও রাশেদ। মুছা ও কালুকে এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এক পর্যায়ে মুছাকে ধরিয়ে দিতে পাঁচ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করে পুলিশ।
২০১৬ সালের ২২ জুন চট্টগ্রাম নগরীর বন্দর এলাকায় এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে পুলিশ মুছাকে ধরে নিয়ে গেছে বলে দাবি করে আসছেন তার স্ত্রী পান্না আক্তার। এ অভিযোগ শুরু থেকেই অস্বীকার করে আসছে পুলিশ।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আরও ৯ হেফাজত কর্মী গ্রেপ্তার
হেফাজত তাণ্ডবে জড়িত থাকার অভিযোগে গত ২৪ ঘণ্টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া আরও ৯ জন হেফাজত কর্মী ও সমর্থককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
জেলা পুলিশের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উক্ত সহিংস ঘটনাসমূহের প্রাপ্ত স্থির চিত্র ও ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করে অভিযুক্তদের শনাক্ত করা হয়।
আরও পড়ুন: সিলেটে হেফাজত নেতা সাবেক এমপি শাহীনুর গ্রেপ্তার
হেফাজতের তাণ্ডবে সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় ৪৯টি, আশুগঞ্জ থানায় চার ও সরাইল থানায় দুটিসহ সর্বমোট ৫৫ মামলা রুজু হয়েছে। এ সকল মামলায় ৪১৪ জন এজাহারনামীয় আসামিসহ অজ্ঞাতনামা ৩০-৩৫ হাজার লোকের নামে মামলা হয়েছে। এসকল মামলায় সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী সর্বমোট ৪৪৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জেলা কওমী ছাত্র ঐক্য পরিষদের সাবেক সেক্রেটারিসহ গ্রেপ্তার ৬
আরও পড়ুন: হেফাজত নেতা ইসলামাবাদী গ্রেপ্তার, ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর
জকিগঞ্জে হেফাজত নেতা জয়নুল ইসলাম গ্রেপ্তার
সিলেটের জকিগঞ্জে হেফাজত নেতা জয়নুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার বিকেলের দিকে জকিগঞ্জ শহরের একটি লাইব্রেরি থেকে তাকে আটক করে থানা পুলিশের একটি দল। পরে নাশকতার একটি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে বলে পুলিশ সূত্র নিশ্চিত করেছে।
মাওলানা জয়নুল ইসলাম জকিগঞ্জ উপজেলা খেলাফত মজলিশের (মামুনুল হক) সাধারণ সম্পাদক ও হেফাজতে ইসলামের নেতা।
জকিগঞ্জ থানার ওসি মো. আবুল কাসেম জানান, গত ২০ এপ্রিল জকিগঞ্জ থানায় করা পুলিশের একটি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এর আগে ওই মামলায় আরও ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: সিলেটে হেফাজত নেতা সাবেক এমপি শাহীনুর গ্রেপ্তার
তিনি আরও জানান, গত ১৯ এপ্রিল রাতে উপজেলার বারহাল ইউনিয়নের মাইজগ্রাম জামে মসজিদ থেকে হেফাজতে ইসলামের গ্রেপ্তার নেতা-কর্মীদের মুক্তির দাবিতে ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক মসিউজ্জামান চৌধুরী শাহীনের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল করেন কিছু সংখ্যক মুসল্লি।
পরদিন ২০ এপ্রিল জকিগঞ্জ থানায় ১৯ জনের নাম উল্লেখসহ বিএনপি, জামায়াত, শিবির ও হেফাজতে ইসলামের প্রায় ৩০/৩৫ জন অজ্ঞাত নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করে পুলিশ।
সিলেটে হেফাজত নেতা সাবেক এমপি শাহীনুর গ্রেপ্তার
সাবেক এমপি ও হেফাজতে ইসলামের বিলুপ্ত কমিটির আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাওলানা শাহীনুর পাশা চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: হেফাজত নেতা ইসলামাবাদী গ্রেপ্তার, ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর
সিলেট নগরীর সুবিদবাজার বনকলাপাড়ার আব্বাসিয়া মসজিদ থেকে বৃহস্পতিবার রাত ১২টার পর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি ওই মসজিদে িইতিকাফে ছিলেন।
আরও পড়ুন: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জেলা কওমী ছাত্র ঐক্য পরিষদের সাবেক সেক্রেটারিসহ গ্রেপ্তার ৬
গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খান মো. মঈনুল জাকির জানান, ঢাকা থেকে সিআইডির বিশেষ টিম তাকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে গেছে। এর বাইরে তিনি আর কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।
আরও পড়ুন: হেফাজতের তাণ্ডব: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ২৪ ঘণ্টায় আরও ৭ জন গ্রেপ্তার
আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুস সামাদ আজাদের মৃত্যুর পর তার আসনে উপ-নির্বাচনে চারদলীয় জোট সরকারের আমলে জোটের প্রার্থী হিসেবে এমপি হন শাহীনুর পাশা। এরপর ২০০৮ ও ২০১৮ সালে তিনি সুনামগঞ্জ-৩ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বর্তমান পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানের সাথে হেরে যান।
আরও পড়ুন: হেফাজত নেতা মামুনুল হক গ্রেপ্তার