হেফাজত
কিশোরগঞ্জে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা
কিশোরগঞ্জে হেফাজতে ইসলামের হরতালকে কেন্দ্র করে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা করা হয়েছে।
সোমবার সন্ধ্যায় ১ নম্বর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক সোহরাব মিয়া বাদী হয়ে সদর মডেল থানায় মামলাটি করেন। মামলায় ২৭ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আড়াই হাজার মানুষকে আসামি করা হয়েছে।
কিশোরগঞ্জ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আবু বকর সিদ্দিক এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, হেফাজতের হামলা-ভাঙচুর ও তাণ্ডবের ঘটনায় সন্ত্রাস দমন ও নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: হরতাল: সুনামগঞ্জে হেফাজত ও যুবলীগ-ছাত্রলীগের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া
উল্লেখ্য, রবিবার হেফাজতে ইসলামের হরতালকে কেন্দ্র করে কিশোরগঞ্জে ত্রিমুখী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় হেফাজতের নেতা-কর্মীরা কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুর করে। তারা বঙ্গবন্ধুর ছবিতেও অগ্নিসংযোগ করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ বিপুল পরিমাণ রাবার বুলেট ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে। কিশোরগঞ্জ শহরের গৌরাঙ্গ বাজার এলাকা থেকে পুরানথানা ইসলামিয়া মার্কেট পর্যন্ত রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
আরও পড়ুন: সিলেটে হরতালে হেফাজত-ছাত্রলীগ সংঘর্ষ, আটক ৫
সংঘর্ষের ঘটনায় কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম বকুল, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক এনায়েত করিম অমি, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন মোল্লা সুমনসহ অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী ও পথচারী আহত হন।
এছাড়াও কিশোরগঞ্জ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আবু বকর সিদ্দিকসহ ১২ পুলিশ কর্মকর্তা ও কনস্টেবল আহত হন।
৩ দিন পর চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি সড়কে যানবাহন চলাচল শুরু
তিনদিন অবরোধের পর রবিবার রাত ১০টার পর অবশেষে চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি সড়কে যান চলাচল চালু হয়েছে।
এর আগে হেফাজতে ইসলাম সমর্থিত হাটহাজারী মাদরাসার ছাত্ররা অবরোধ তুলে নিয়ে মাদরাসায় ফিরে যায়। পরে হাটহাজারীর নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) নেতৃত্বে প্রশাসন সড়কের ওপর ইট দিয়ে তৈরি করা প্রাচীর ভেঙে সরিয়ে নেয় ও খুঁড়ে ফেলা সড়ক পুন মেরামত করে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করে বলে হাটহাজারীর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
আরও পড়ুন: হাটহাজারীর পরিস্থিতি থমথমে, মাদরাসা শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ
জানা গেছে, হেফাজত নেতাদের সাথে প্রশাসনের দফায় দফায় বৈঠকে ফলপ্রসূ সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে মাদরাসারা ছাত্ররা রাতে অবরোধ তুলে নেয়।
এ ব্যাপারে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আল্লামা আজিজুল হক ইসলামাবাদী বলেন, `গত ৩ দিন ধরে আমাদের সাথে প্রশাসনের কয়েক দফা বৈঠকে প্রশাসন আমাদের দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাস দেয়ার প্রেক্ষিতে হরতাল শেষে রাতে মাদরাসার ছাত্ররা অবরোধ তুলে নিয়েছে। এর পর পরই যানবাহন চলাচল শুরু হয়েছে।
উল্লেখ্য, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদে গত ২৬ মার্চ শুক্রবার জুমার নামাজের পর বাইতুল মোকাররম মসজিদে মুসল্লিদের ওপর আওয়ামী লীগ ও পুলিশের হামলা ও গুলি বর্ষণ করার প্রতিবাদে চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে হেফাজতের মাদরাসা থেকে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী ওই সড়কে নেমে বিক্ষোভ করে এবং পুলিশের সাথে সংঘর্ষে জড়ায়।
আরও পড়ুন: হাটহাজারীতে পুলিশের সাথে সংঘর্ষে নিহত ৪
মোদিবিরোধী বিক্ষোভ: বায়তুল মোকাররম এলাকায় পুলিশের সাথে মুসল্লিদের সংঘর্ষ
একপর্যায়ে তারা হাটহাজারী থানা, উপজেলা ভূমি অফিস এবং উপজেলা ডাক বাংলোয় ভাঙচুর চালায়। এসময় পুলিশের গুলিতে ৪ জন নিহত ও কয়েকজন আহত হন। এরপর থেকে কয়েকশ মাদরাসার শিক্ষার্থী শুক্রবার দুপুর থেকে টানা তিন দিন চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি সড়ক অবরোধ করে রাখে।
সিলেটে হরতালে হেফাজত-ছাত্রলীগ সংঘর্ষ, আটক ৫
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্র ঘোষিত সকাল-সন্ধ্যা হরতাল সিলেটে বড় ধরনের কোনো সহিংসতা ছাড়াই পালিত হয়েছে।
দিনভর মিছিল-পিকেটিং শেষে রবিবার বিকালে নগরীর কোর্ট পয়েন্টে সমাবেশ করে রাস্তা ছেড়েছেন সিলেট জেলা ও মহানগর হেফাজতের নেতা-কর্মীরা।
এর আগে কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালনে ফজরের নামাজের পর থেকেই সিলেটে রাস্তায় নামেন হেফাজতের নেতা-কর্মীরা। ভোর থেকে তারা মহানগরীর বিভিন্ন রাস্তায় পিকেটিং শুরু করেন এবং পথে পথে চলা যানবাহন আটকে দেন। নেতা-কর্মীরা নগরীর গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলোতে ইট বিছিয়ে এবং কাগজ জড়ো করে তাতে আগুন ধরিয়ে পিকেটিং করেন।
আরও পড়ুন: নারায়ণগঞ্জে হেফাজত-পুলিশ সংঘর্ষ: গুলিবিদ্ধসহ আহত ২০
এদিকে, হরতালের কারণে রবিবার সকালে সিলেট থেকে ছেড়ে যায়নি দূরপাল্লার কোনো বাস। সিলেটের আঞ্চলিক সড়কগুলোতেও বাস এবং যাত্রীবাহী গাড়িসহ চলাচল করেনি কোনো ধরনের যানবাহন। নগরীতে কিছু সংখ্যক রিকশা ও শহরতলি এলাকায় সিএনজি অটোরিকশা চলাচল করে। তবে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ১৫-২০টি মোটরসাইকেলযোগে পুরো নগরীতে ঘুরে ঘুরে হেফাজত নেতা-কর্মীদের পিকেটিং করতে দেখা যায়।
দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নগরীর বন্দরবাজারে হেফাজত ও ছাত্রলীগ নেতা-কর্মী এবং শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষ ও তিন দফা ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় পাঁচজন আহত ও পাঁচজন আটক হন। আহতদের মধ্যে দুজন ছাত্রলীগ কর্মী।
জানা যায়, দুপুর ১২টার দিকে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা জেলা পরিষদের সামনে থেকে হরতালবিরোধী মিছিল নিয়ে চৌহাট্টা পয়েন্টে গিয়ে সেখানে অবস্থানরত মহানগর আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের নিয়ে মিছিল নিয়ে আবারও বন্দরবাজারস্থ কামরান চত্বরে এসে জড়ো হন।
এ সময় সিলেট বিভাগীয় ডাকঘরের সামনে হাটতে থাকা কয়েকজন হেফাজত নেতা-কর্মীকে দেখে ছাত্রলীগ ধাওয়া দেয়। তখন হেফাজত নেতা-কর্মীরা দৌঁড়ে কালিঘাটের দিকে পালিয়ে যান। পরে সেখান থেকে হঠাৎ কয়েকজন শ্রমিক ও হেফাজত কর্মী বেরিয়ে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের ধাওয়া করে কামরান চত্বরের দিকে নিয়ে যান। পরে ছাত্রলীগ আবারও সংঘবদ্ধ হয়ে হেফাজত নেতা-কর্মী এবং শ্রমিকদের ধাওয়া করলে সংঘর্ষ বাধে। সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার সময় পাঁচজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে দুজন ছাত্রলীগ কর্মী।
পরে হেফাজত নেতা-কর্মী ও শ্রমিকারা পুলিশের দিকে ইট-পাটকের ছুড়লে পুলিশ পাঁচজনকে আটক করে। আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (গণমাম্যম) বিএম আশরাফ উল্যাহ তাহের। আটকদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন: হাটহাজারীর পরিস্থিতি থমথমে, মাদরাসা শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ
এদিকে, বিকাল ৪টার দিকে নগরীর কোর্ট পয়েন্টে আবারও জড়ো হন হেফাজত নেতা-কর্মীরা। এ সময় তারা সমাবেশ করেন।
সমাবেশে হেফাজতের সিলেট জেলা ও মহানগরের শীর্ষ নেতারা বলেন, কেন্দ্র থেকে যে কোনো নির্দেশনা আসলে ঈমানি চেতনায় তা পালনে আমরা রাস্তায় নেমে পড়বো।
সমাবেশ থেকে সোমবার সারা দেশে দোয়া মাহফিল সফলের আহ্বান জানানো হয়।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনকালে শুক্রবার ঢাকা ও চট্টগ্রামে পুলিশের সাথে হেফাজত নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ হয়। এতে একাধিক প্রাণহানির ঘটে। এর প্রতিবাদে রবিবার সারা দেশে সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত হরতালের ডাক দেয় হেফাজত।
খুলনায় ঢিলেঢালাভাবে হেফাজতের হরতাল পালিত
হেফাজতে ইসলামের ডাকা রবিবার সকাল-সন্ধ্যা হরতালের মধ্য দিয়ে ১৪ মাস পর দেশে আবারও হরতাল ফিরেছে। তবে এ হরতাল খুলনায় শান্তিপূর্ণ ও ঢিলেঢালাভাবে পালিত হয়েছে। হরতাল চলাকালে কোথাও কোনো পিকেটিং বা বিশৃঙ্খলার খবর পাওয়া যায়নি।
এদিকে, হরতাল প্রতিরোধ ও যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা প্রতিরোধে সারা দেশের ন্যায় খুলনাতেও সতর্ক অবস্থানে ছিল পুলিশ। একই সাথে খুলনা মহানগরীর বিভিন্ন সড়কে হরতাল বিরোধী মহড়া দিয়েছে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও শ্রমিক লীগের বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী।
আরও পড়ুন: মোদিবিরোধী বিক্ষোভ: বায়তুল মোকাররম এলাকায় পুলিশের সাথে মুসল্লিদের সংঘর্ষ
রবিবার সকালে খুলনা মহানগরীর ডাংকবাংলো মোড়, ফেরীঘাট মোড়, নিউমার্কেট বায়তুন কমপ্লেক্স, বঙ্গবন্ধু চত্বর (ময়লাপোতা মোড়), শিববাড়ী মোড় ও রূপসা ট্রাফিক মোড় ঘুরে দেখা যায়, হরতালের কারণে অন্যান্য দিনের তুলনায় রাস্তায় গণপরিবহন ও লোক সমাগম তুলনামূলক কম। মোড়ে মোড়ে সতর্ক অবস্থানে ছিল পুলিশ। বড় বাজার ও মার্কেট এলাকাতেও অন্যান্য দিনের চেয়ে জনসমাগম কম ছিল।
দায়িত্বরত একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, যেকোন অপ্রীতিকর পরিস্থিতি প্রতিরোধে সতর্ক অবস্থানে ছিল পুলিশ। নগরীতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বৃদ্ধি করা হয় টহলও। এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক ছিল। কোনো মিছিল মিটিং হয়নি বলে জানিয়েছেন দায়িত্বশীল পুলিশ সদস্যরা।
এদিকে সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস হিসেবে যান চলাচল স্বাভাবিক ছিল। সোনাডাঙ্গা কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালেও সতর্ক অবস্থানে ছিল পুলিশ। সকাল থেকেই স্বাভাবিকভাবেই ছেড়ে যায় দুরপাল্লার যাত্রীবাহী পরিবহন।
একাধিক পথচারী জানান, এখন আর কেউ কি হরতাল মানে? তেমন কোন প্রভাব পড়েনি হরতালের।
অপরদিকে মহানগর যুবলীগ ও ছাত্রলীগ হরতাল, মৌলবাদ ও জঙ্গীবাদ বিরোধী বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে। রবিবার সকাল সাড়ে ১০টায় দলীয় কার্যালয় থেকে এক বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
আরও পড়ুন: হাটহাজারীর পরিস্থিতি থমথমে, মাদরাসা শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মহানগর যুবলীগের আহবায়ক শফিকুর রহমান পলাশ ও পরিচালনা করেন মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান রাসেল।
বক্তারা বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছরেও এ দেশের স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি মৌলবাদের লেবাসে দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। মুজিব আদর্শে বলিয়ান হয়ে স্বাধীনতা বিরোধী এসব অপশক্তিকে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দিতে হবে।
দোয়া ও বিক্ষোভ কর্মসূচি দিল হেফাজত
চট্টগ্রাম ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রাণহানির সাথে জড়িত আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া এবং গ্রেপ্তার হওয়া নেতা-কর্মীদের মুক্তির দাবিতে আগামী সোমবার দোয়া মাহফিল ও ২ এপ্রিল দেশব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ।
রবিবার সকাল-সন্ধ্যা হরতাল কর্মসূচি শেষে সন্ধ্যায় রাজধানীতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন হেফাজতের মহাসচিব নুরুল ইসলাম জিহাদী।
হেফাজত মহাসচিব বলেন, ‘শুক্রবারের মধ্যে দাবি পূরণ না হলে সামনে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।’
এর আগে শুক্রবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে আগমনের প্রতিবাদে ঢাকা-চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন স্থানে পুলিশের সাথে সংঘর্ষ এবং চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে পুলিশের গুলিতে পাঁচ কর্মী নিহত হওয়ার প্রতিবাদে সারা দেশে রবিবার সকাল সন্ধ্যা হরতাল ডাকে দলটি।
হরতাল চলাকালে সকাল থেকে নগরীর বিভিন্ন সড়কে রিকশা, সিএনজি ও ব্যক্তিগত গাড়িসহ হালকা যানবাহন চলাচল করলেও কোনো ধরনের দুরপাল্লার যাত্রীবাহী গাড়ি চট্টগ্রাম ছেড়ে যায়নি।
আরও পড়ুন: হেফাজতের হরতাল: হাটহাজারীতে সড়ক কেটে অবরোধ
হাটহাজারীতে শুক্রবার দুপুরে সংঘর্ষের পর থেকে চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি সড়ক অবরোধ করে রেখেছে হাটহাজারী মাদরাসার ছাত্ররা। সেখানে শুক্রবার ইটের প্রাচীর তৈরি করে অবরোধ করলেও পরে সে দেয়াল তুলে ফেলে। রবিবার ভোর থেকে রাস্তা কেটে দিয়ে খালের মতো বিশাল লম্বা গর্ত করে অবরোধ অব্যাহত রেখেছে ছাত্ররা। এর মধ্যে শনিবার দ্বিতীয়বারের মতো বিক্ষুব্ধ মাদরাসার ছাত্ররা হাটহাজারীর ডাকবাংলোতে আগুন দিয়েছে।
এ ব্যাপারে হাটহাজারী থানার ওসি (তদন্ত) রাজিব শর্মা জানান, বেশ কিছু নেতা-কর্মী বিক্ষুব্ধ হয়ে ডাকবাংলোয় আগুন ধরিয়ে দেন। এ সময় তারা নিচ তলার স্টোর রুমে থাকা দুটি মোটরসাইকেলও পুড়িয়ে দেয়।
এর আগে হেফাজত-পুলিশ সংঘর্ষের সময় হেফাজতের বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা ডাকবাংলো ও স্থানীয় সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কার্যালয়ে হামলা চালায়।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে কড়া নিরাপত্তায় হেফাজতের বিক্ষোভ
হরতাল: সুনামগঞ্জে হেফাজত ও যুবলীগ-ছাত্রলীগের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া
সারাদেশের ন্যায় সুনামগঞ্জে রবিবার সকাল ৬টা থেকে হরতাল কর্মসূচি পালন করছে হেফাজতের নেতা-কর্মীরা। পরে জেলা যুবলীগ ও ছাত্রলীগ মিছিল বের করলে হেফাজতের নেতা-কর্মীদের সাথে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের কিছু সময় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, সকাল থেকে হাতে লাঠি সুটা নিয়ে হেফাজতের নেতা-কর্মীরা হরতাল কর্মসূচি পালন করছে। তবে হরতালবিরোধী রাজপথে উপস্থিত ছিল জেলা যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।
হেফাজতের নেতারা শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে মোটরসাইকেল নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল শেষে স্থানীয় ট্রাফিক পয়েন্টে প্রতিবাদ সমাবেশ করে। দুপুর ১২টার দিকে সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল হুদা মুকুট ও জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান খায়রুল হুদা চপল ও আওয়ামী লীগ নেতা জিয়াউল হকের নেতৃত্বে শহরের রমিজ বিপণীস্থ জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে থেকে জেলা যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীর মিছিল করে ট্রাফিক পয়েন্টে আসলে হেফাজতের নেতা-কর্মীদের সাথে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের কিছু সময় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এরপর পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
আরও পড়ুন: হেফাজতের হরতাল: হাটহাজারীতে সড়ক কেটে অবরোধ
চট্টগ্রামে কড়া নিরাপত্তায় হেফাজতের বিক্ষোভ
এ সময় জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানব সম্পদ বিষয়ক সম্পাদক সীতেশ তালুকদার মঞ্জু, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আজাদুল ইসলাম রতন, জেলা যুবলীগের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আসাদুজ্জামান সেন্টু, সবুজ কান্তি দাস, নুরুল ইসলাম বজলু, সদর যুবলীগের সভাপতি এহসান আহমদ উজ্জল, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি দিপংঙ্কর কান্তি দে প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে সুনামগঞ্জ শহর ঘুরে দেখা গেছে, সুনামগঞ্জের পুরাতন বাসস্ট্যান্ড, আলফাত স্কয়ার পয়েন্ট, বক পয়েন্ট, কাজীর পয়েন্ট, নবী নগর পয়েন্ট, ওয়েজখালী পয়েন্ট, নতুন বাসস্ট্যান্ডসহ সব জায়গায় হেফাজতের নেতা-কর্মীরা হাতে লাঠি নিয়ে রাস্তায় অবস্থান করতে দেখা গেছে। দূর দুরান্ত বা শহরেও কোন ধরনের যানবাহন চলাচল করতে দিচ্ছেন না হেফাজতের নেতা-কর্মীরা। তবে শহরে যাতে কোন ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না হয় সেই জন্য শহরের প্রত্যাকটি পয়েন্টে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: হাটহাজারীর পরিস্থিতি থমথমে, মাদরাসা শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ
নারায়ণগঞ্জে হেফাজত-পুলিশ সংঘর্ষ: গুলিবিদ্ধসহ আহত ২০
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের মৌচাক ও সাইনবোর্ড এলাকায় দফায় দফায় হেফাজত-পুলিশ সংঘর্ষে শাকিল (৩০) নামে একজন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
রবিবার হেফাজতে ইসলামের ডাকা সকাল-সন্ধ্যা হরতালে সকাল থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ৩০টি স্থানে টায়ার পুড়িয়ে, গাছের গুড়ি ফেলে অবরোধ করে হরতাল সমর্থকরা। চলতে দেয়নি কোন যানবাহন। যানবাহনহীন ফাঁকা সড়কে লাঠি হাতে নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দেয় হরতাল সমর্থকরা। এতে মহাসড়কে সকল প্রকার যানচলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। চরম ভোগান্তিতে পড়ে হাজার হাজার যাত্রী সাধরণ।
সকাল থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত কয়েক দফায় পুলিশ-হেফাজত সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সকাল সাড়ে ১০টা ও ১১টার দিকে নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকায় হেফাজত ও পুলিশের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে ফাঁকা গুলি ছুড়ে বিজিবির সদস্যরা। এ সময় হরতাল সমর্থকরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। তারা ৪টি গাড়িতে আগুন দেয়।
পুলিশ পরিস্থিতি সামাল দিতে কাঁদানে গ্যাস ও শটগানের গুলি ছুঁড়ে। এতে পুলিশ, সাংবাদিক ও হরতাল সমর্থকদের অন্তত ২০ জন আহত হয়। সেখানে রয়েছেন র্যাব-পুলিশ-বিজিবিসহ বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পরিস্থিতি থমথমে অবস্থায় রয়েছে।
তবে দুপুর একটার দিকে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোস্তাফিজুর রহমান জানান, পরিস্থিতি তাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
আরও পড়ুন: হাটহাজারীর পরিস্থিতি থমথমে, মাদরাসা শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ
এদিকে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পুলিশ-হেফাজত সংঘর্ষে শাকিল (৩০) নামে একজন ফার্নিচার মিস্ত্রি গুলিবিদ্ধ হয়। তাকে দ্রুত স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। আহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন।
এর আগে সকালে হেফাজতের নেতা-কর্মীরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেন। তারা সড়কের কয়েকটি স্থানে টায়ার, গাছের গুড়ি ফেলে ও বাঁশে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন। এ সময় বন্ধ হয়ে যায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের যান চলাচল। পরে পুলিশ এসে বিক্ষোভকারীদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দেয় ও আগুন নিভিয়ে দেয়। পরে যানবাহন চলাচল শুরু করে।
জেলা পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম বলেন, ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শটগানের গুলি ও কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করা হয়েছে। যানবাহন চালু করার চেষ্টা চলছে। সংঘর্ষে একজন গুলিবিদ্ধ হওয়ার কথা তিনি শুনেছেন।’
হরতালকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জ শহরে হেফাজতের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত ডিআইটির রেলওয়ে জামে মসজিদে ভোর থেকে অবস্থান নেয় কয়েকশ’ হেফাজত কর্মী-সমর্থকরা। মসজিদের বাইরেই প্রহরায় ছিল র্যাব-পুলিশ-বিজিবি সদস্যরা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতায় তারা মসজিদ থেকে বেরোতে পারেনি।
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জেলা হেফাজতের সভাপতি মাওলানা আব্দুল আউয়ালের নির্দেশে তারা কোনো মিছিল বা স্লোগান না দিয়ে মসজিদ ত্যাগ করেন। তবে রেলওয়ে মসজিদ এলাকাসহ শহরের চাষাঢ়া, সাইনবোর্ড, শিমরাইলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। মোতায়েন রয়েছে বিজিবি ও র্যাব।
হরতালের সার্বিক পরিস্থির বিষয়ে জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সকাল থেকে জেলার কিছু কিছু স্থানে অবরোধ-বিক্ষেভ প্রদর্শন করেছে হরতাল সমর্থকরা। তবে তা নিয়ন্ত্রণে এনেছে পুলিশ। সারা জেলায় ৫৮৫ জন পোশাকে এবং আরও ২০০ সাদা পোশাকে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া র্যাব ও বিজিবির সদস্যরাও হরতালের ডিউটিতে রয়েছেন।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান বলেন, ‘ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে হরতাল সমর্থনকারীরা অবরোধ করে চলছে। বর্তমানে এই মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ, হরতাল সমর্থনকারীরা রাস্তায় টায়ারসহ বিভিন্ন গাছের ডালপালা দিয়ে আগুন জালিয়ে রাস্তা অবরোধ করে রাখছে। আমরা চেষ্টা করছি যথাসাধ্য যাতে মানুষ ভোগান্তিতে না পরে। এখন পর্যন্ত কেউ নিহত হয়নি। পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।’
আরও পড়ুন: মোদিবিরোধী বিক্ষোভ: বায়তুল মোকাররম এলাকায় পুলিশের সাথে মুসল্লিদের সংঘর্ষ
হেফাজতের হরতাল: হবিগঞ্জে পুলিশসহ আহত ২০
পুলিশের ওপর হামলা, মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ, গাড়ি ভাঙচুরের মধ্য দিয়ে হবিগঞ্জে হেফাজত ও ইসলামী আন্দোলনের ডাকা হরতাল কর্মসূচি চলছে।
রবিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আজমিরিগঞ্জ উপজেলার নোয়াগড় যাত্রী ছাউনির কাছে পুলিশ ও জনতার সংঘর্ষে সাত পুলিশসহ কমপক্ষে ২০ জন আহত হন।
এ সময় বিক্ষুব্ধ হেফাজত ও ইসলামী আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা টহল পুলিশের পিকআপ ভাঙচুর করে ও দুটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয়।
মোদিবিরোধী বিক্ষোভ: বায়তুল মোকাররম এলাকায় পুলিশের সাথে মুসল্লিদের সংঘর্ষ
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজমিরিগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে টহল দিয়ে পুলিশ আজমিরিগঞ্জ-বানিয়াচঙ্গ সড়কের জলসুখা ইউনিয়নের নোয়াগড় এলাকায় যায়। এ সময় পুলিশের সাথে পিকেটারদের তর্কবিতর্ক হয়। এক পর্যায়ে সংঘর্ষের রূপ নেয়। শত শত নেতা-কর্মী ও গ্রামবাসী পুলিশের উদ্দেশে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। এতে আজমিরিগঞ্জ থানার ওসি নূরুল ইসলামসহ সাত পুলিশ আহত হন। হামলাকারীদের ঠেকাতে পুলিশও জনতার উদ্দেশ্যে ইটপাটকেল ও ৩৩ রাউন্ড রাবার বুলেট ব্যবহার করে। এ সময় জনতার তাণ্ডব দেখে পুলিশ পিছু হটলে পুলিশের পিকআপ ভাঙচুর ও দুটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয় জনতা।
খবর পেয়ে থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করলে গ্রামবাসী মসজিদের মাইকে পুলিশকে মোকাবিলার জন্য ঘটনাস্থলে যাওয়ার আহ্বান করেন। এমতাবস্থায় স্থানীয় চেয়ারম্যান ফয়েজ আহমদ খেলু নেতৃত্বে স্থানীয় লোকজন ও মুরব্বীদের নিয়ে গ্রামবাসীদেরকে পথরোধ করেন। তাদের হস্তক্ষেপে পরবর্তীতে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
আজমিরিগঞ্জ থানার ওসি নূরুল ইসলাম জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। আহত সাত পুলিশের মধ্যে এসআই পলওয়েল ও মুজিবুর রহমানকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: হেফাজতের হরতাল: হাটহাজারীতে সড়ক কেটে অবরোধ
চট্টগ্রামে কড়া নিরাপত্তায় হেফাজতের বিক্ষোভ
এদিকে, সকাল ১০টার দিকে হবিগঞ্জ শায়েস্তাগঞ্জ সড়কের ধুলিয়াখালে রায়ধর, আলাপুর ও দীঘলবাগসহ বিভিন্ন গ্রামের হাজারও মানুষ ব্যারিকেড দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়। বেলা সাড়ে ১১টায় ব্যারিকেড তুলে নেয়া হয়। হবিগঞ্জ শহরে দোকানপাট, অফিস আদালতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। হালকা যানবাহন চলাচল করলেও বাস, ট্রাকসহ ভারী যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এছাড়া জেলার বিভিন্নস্থানে শান্তিপূর্ণ ভাবে হরতাল পালনের খবর পাওয়া গেছে।
হেফাজতের হরতাল: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রেস ক্লাব ও ট্রেনে হামলা
হেফাজতে ইসলামের ডাকা হরতালে রবিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যাপক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে।
হরতাল-সমর্থকরা বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর ও আগুন দিয়েছে।
হামলার পর সকাল থেকেই ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামগামী ‘সোনার বাংলা এক্সপ্রেস’ ট্রেনে হামলা ও ভাঙচুর করেছে হেফাজতে ইসলামের কর্মী সমর্থকরা।
আরও পড়ুন: হাটহাজারীর পরিস্থিতি থমথমে, মাদরাসা শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ
এছাড়াও হরতাল সমর্থকরা সদর উপজেলার জেলা পরিষদ ভবন, পৌরসভা ভবন, পুলিশ লাইন, ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল স্কুল, ভূমি অফিস, আলাউদ্দিন সংগীত একাডেমি, ফুয়ের্তলা বাস স্ট্যান্ডসহ কয়েকটি বেসরকারি ও সরকারি প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর চালায়।
এ সময় তারা আলাউদ্দিন সংগীত একাডেমি ভবন, সদর উপজেলার ভূমি অফিস এবং ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল স্কুল ভবনে আগুন দেয়।
এদিকে হরতাল সমর্থকরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবে হামলা করে এবং কয়েকজন সাংবাদিককে ক্লাব ভবনে আটক করে রাখে।
হরতাল সমর্থকদের হামলায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবের সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন জামি আহত হয়েছেন।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকার বলেন, ‘হরতাল সমর্থকরা বিভিন্ন বেসরকারি ও সরকারি ভবন ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগ করেছে। এগুলো ষড়যন্ত্রের অংশ।’
প্রসঙ্গত, রবিবার হেফাজতে ইসলামের ডাকা দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা হরতাল চলছে।
আরও পড়ুন: মোদিবিরোধী বিক্ষোভ: বায়তুল মোকাররম এলাকায় পুলিশের সাথে মুসল্লিদের সংঘর্ষ
ফেনীতে হরতালের সমর্থনে হেফাজতের লাঠি মিছিল
সারা দেশে হরতালের সমর্থনে হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীরা ফেনী শহরের বিভিন্ন সড়কে কয়েকদফা অবস্থান নিয়ে পিকেটিং করেছে।
রবিবার সকাল থেকে লাঠিসোঁটা নিয়ে শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে মোটরসাইকেলে চড়ে বিক্ষোভ মিছিলও করেন তারা।
সকালে মহিপাল, টাংরোড, একাডেমি রোড, শহীদ শহীদুল্লাহ কায়সার সড়ক, মদিনা বাস স্ট্যান্ডসহ শহরের সব জায়গায় হেফাজতের নেতা-কর্মীরা হাতে লাঠি নিয়ে রাস্তায় অবস্থান করতে দেখা গেছে। এ সময় শহরেও যানবাহন চলাচল করতে বাধা দিতে দেখা যায়। এছাড়া রাস্তার পাশের দোকানপাট বন্ধ করে দেয় তারা।
আরও পড়ুন: হেফাজতের হরতাল: হাটহাজারীতে সড়ক কেটে অবরোধ
চট্টগ্রামে কড়া নিরাপত্তায় হেফাজতের বিক্ষোভ
এদিকে বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে শহরের প্রত্যেকটি পয়েন্টে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
ফেনী সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অনিক মাহমুদ বলেন, ‘শহরে যাতে কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না করতে পারে সেই দিকে আমরা সতর্ক আছি। আমরা শহরের প্রত্যেকটি পয়েন্টে পুলিশ মোতায়েন করেছি। এখন পর্যন্ত কোন হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।’
আরও পড়ুন: হাটহাজারীর পরিস্থিতি থমথমে, মাদরাসা শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ
হাটহাজারীতে পুলিশের সাথে সংঘর্ষে নিহত ৪
মোদিবিরোধী বিক্ষোভ: বায়তুল মোকাররম এলাকায় পুলিশের সাথে মুসল্লিদের সংঘর্ষ