মৃত্যুদণ্ড
যশোরে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী হত্যার দায়ে একজনের মৃত্যুদণ্ড
যশোরে যৌতুকের কারণে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে হত্যার দায়ে আকিমুল ইসলাম নামে একজনকে মৃত্যুদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানার রায় দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার দুপুরে যশোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের (জেলা জজ) নীলুফার শিরিন এ রায় ঘোষণা করেন।
রায় ঘোষণা শেষে বিচারক দণ্ডিতকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। আসামি আকিমুল ইসলাম যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার নায়রা গ্রামের মৃত অহেদ আলীর ছেলে।
রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী স্পেশাল পিপি মোস্তাফিজুর রহমান মুকুল জানান, আসামি আকিমুল ইসলাম যৌতুকের কারণে তার স্ত্রী হালিমা খাতুনকে প্রায় শারীরিক নির্যাতন করতো। যে কারণে হালিমা খাতুন বিভিন্ন সময় বাবার কাছ থেকে টাকা এনে স্বামীকে দিতেন। সর্বশেষ আকিমুল ১৫ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে। ২০১৩ সালের ৩১ মে হালিমা খাতুন তার বাবার কাছ থেকে এক লাখ টাকার একটি চেক এনে দেন। আকিমুল দাবিকৃত টাকা না পেয়ে হালিমাকে মারধর করে। এতে অন্তঃসত্ত্বা হালিমা মারা যান। ঘটনায় হালিমার বাবা লিয়াকত আলী বাদী হয়ে আকিমুল ইসলামের নামে যশোরের ঝিকরগাছা থানায় হত্যা মামলা করেন।
মামলা তদন্ত শেষে থানার উপ পরিদর্শক (এস আই) কামাল হোসেন আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আদালত স্বাক্ষীদের স্বাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আসামি আকিমুল ইসলামকে দোষী সাব্যস্ত করে উক্ত রায় ঘোষনা করেন।
আরও পড়ুন: আমিনবাজারে ৬ শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে হত্যা: ১৩ জনের মৃত্যুদণ্ড
বৈদ্যুতিক শক দিয়ে অন্তঃস্বত্ত্বা স্ত্রী হত্যা দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড
আমিনবাজারে ৬ শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে হত্যা: ১৩ জনের মৃত্যুদণ্ড
সাভারের আমিনবাজারে ডাকাত সন্দেহে ছয় শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় ১৩ জনের মৃত্যুদণ্ড ও ১৯ জনকে যাবজ্জীবন সাজা দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক ইসমত জাহান এ রায় ঘোষণা করেন।
মামলায় অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় ২৫ জনকে খালাস দিয়েছেন আদালত।
এর আগে ২২ নভেম্বর ঢাকার একটি আদালত মামলার রায় ঘোষণার জন্য ২ ডিসেম্বর দিন ধার্য করেন।
২০১১ সালের ১৭ জুলাই ভোরে রাজধানীর উপকণ্ঠে সাভারের আমিনবাজারে ছয় শিক্ষার্থীকে ডাকাত আখ্যা দিয়ে বিক্ষুব্ধ জনতা পিটিয়ে হত্যা করে। নিহতদের মধ্যে তিনজন মিরপুর বাংলা কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন। বাকিরা রাজধানীর তেজগাঁও কলেজ, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজি এবং ম্যাপেল লিফ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের শিক্ষার্থী ছিলেন।
হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে সাভার মডেল থানা পুলিশ ৬০ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করে।
এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা র্যাব সদর দপ্তরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরীফ উদ্দিন আহমেদ ২০১৩ সালের ৮ জুলাই ৬০ জন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। এরপর মামলার বিচার শুরু হয়।
আরও পড়ুন: ডাকাত সন্দেহে ৬ শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে হত্যা মামলার রায় ২ ডিসেম্বর
বৈদ্যুতিক শক দিয়ে অন্তঃস্বত্ত্বা স্ত্রী হত্যা দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড
নড়াইলে হত্যা মামলায় ছেলের মৃত্যুদণ্ড, বাবাসহ ২ ভাইয়ের যাবজ্জীবন
বৈদ্যুতিক শক দিয়ে অন্তঃস্বত্ত্বা স্ত্রী হত্যা দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড
ফেনী সদরের ফাজিলপুরের অন্তঃস্বত্ত্বা গৃহবধূ শিরীন আক্তারকে বৈদ্যুতিক শক দিয়ে হত্যার দায়ে স্বামী মো.ইয়াছিনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। রবিবার ফেনী জেলা ও দায়রা জজ ড.বেগম জেবুন্নেছা এ রায় ঘোষণা করেন।
আদালত সূত্র জানায়,পরিবারিক কলহের জের ধরে ২০১৯ সালের ৫ মার্চ রাতে বৈদ্যুতিক শকের মাধ্যমে শিরীনকে হত্যা করা হয়। ঘটনার দু’দিন পর খুনের অভিযোগ এনে শিরিনের মা রেজিয়া বেগম বাদী হয়ে ইয়াছিনকে আসামি করে মামলা করেন। মামলার গ্রেপ্তারের পর ৮ মার্চ অভিযুক্ত ইয়াছিন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
পরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস.আই আবু তাহের চলতি বছরের ১৮ জানুয়ারি ইয়াছিনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। পরে ১০ নভেম্বর মামলার অভিযোগ গঠন হয়। এ মামলায় মোট ২১ জন সাক্ষী এবং ৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: নড়াইলে হত্যা মামলায় ছেলের মৃত্যুদণ্ড, বাবাসহ ২ ভাইয়ের যাবজ্জীবন
সূত্র আরও জানায়, ২০২০ সালের ৬ ডিসেম্বর সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়ে চলতি বছরের ১৬ নভেম্বর শেষ হয়। ২০১৯ সালের ৮ মার্চ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ধ্রুব জ্যোতি পালের আদালতে আসামি ইয়াছিন ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। জবানবন্দিতে স্ত্রীকে হত্যার দায় স্বীকার করেন আসামি।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো.আলতাফ হোসেন জানান, রায় ঘোষণাকালে আসামি মো.ইয়াছিন কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় রায়ে তার মৃত্যুদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
আসামিপক্ষের আইনজীবী আবদুস ছাত্তার জনান, রায়ে আসামির ওপর ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়নি। আমরা রায়ের কপি নিয়ে উচ্চ আদালতে আপিল করব।
অন্যদিকে পাবলিক প্রসিকিউটর হাফেজ আহাম্মদ জানান, আসামি ইয়াছিন নিজেই আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে স্ত্রীকে হত্যার কথা স্বীকার করেন। এছাড়া আসামির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আদালত তাকে সর্বোচ্চ দণ্ডে দণ্ডিত করেছেন।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ২৬ নভেম্বর সদর উপজেলার ফাজিলপুর এলাকার মো.ইয়াছিনের সঙ্গে শিরীন আক্তারের বিয়ে হয়।
আরও পড়ুন: খুলনায় শিশু হত্যা মামলায় সৎ মায়ের মৃত্যুদণ্ড
নড়াইলে বোনকে হত্যার দায়ে ভাইয়ের মৃত্যুদণ্ড
নড়াইলে হত্যা মামলায় ছেলের মৃত্যুদণ্ড, বাবাসহ ২ ভাইয়ের যাবজ্জীবন
নড়াইলের নড়াগাতী থানার কালিনগর গ্রামে ফিরোজ ভূঁইয়া হত্যা মামলায় একজনের ফাঁসি ও তিনজনের যাবজ্জীবন দিয়েছেন আদালত। একই সাথে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়।
রবিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জেলা ও দায়রা জজ মুন্সী মো. মশিয়ার রহমান এই রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আলমগীর ভূঁইয়া (৫০) জেলার কালিনগর গ্রামের ছায়েন উদ্দিনের ছেলে।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- বাবা ছায়েন উদ্দিন ভূঁইয়া ও তার দুই ছেলে হাবিবুর রহমান ভূঁইয়া (৫৫) ও জঙ্গু ভূঁইয়া।
আরও পড়ুন: খুলনায় শিশু হত্যা মামলায় সৎ মায়ের মৃত্যুদণ্ড
রায় ঘোষণার সময় চার আসামির মধ্যে জঙ্গু ভূঁইয়া ছাড়া অন্যরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে নড়াইলের নড়াগাতী থানার কালিনগর গ্রামে বাদী রবিউল ইসলাম ভূঁইয়াদের সাথে আসামিপক্ষের বিরোধ চলে আসছিল। এর জের ধরে ২০১৪ সালের ১৮ জানুয়ারি কালিনগর বাজারে উভয়পক্ষের মধ্যে শালিস বৈঠক হয়। এরপর দিন সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বাদীর ভাই ফিরোজ ভূঁইয়াকে কালিনগর বাজার এলাকায় দেশি অস্ত্র ধারালো গুপ্তি বুকে ঢুকিয়ে হত্যা করে। ১৬ জনের সাক্ষ্যপ্রমাণ শেষে আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: খুলনায় ব্যবসায়ী হত্যায় একজনের মৃত্যুদণ্ড
নড়াইলে বোনকে হত্যার দায়ে ভাইয়ের মৃত্যুদণ্ড
নড়াইলে বোনকে পিটিয়ে ও পানিতে ডুবিয়ে হত্যার দায়ে ভাইকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। সোমবার সকালে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মুন্সী মো. মশিয়ার রহমান এ আদেশ দেন। এসময় আসামিকে ২০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়েছে।
ফাতেমা নামে একজনকে হত্যার দায়ে রিপন মোল্যা নামে একজনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশে দিয়েছেন আদালত। এসময় আরও ২০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দেন বিচারক।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রিপন নড়াইলের নড়াগাতি থানার কালিনগর গ্রামের মোকছেদ ওরফে মকু মোল্যার ছেলে।
আরও পড়ুন: একরাম হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি গ্রেপ্তার
পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এমদাদুল ইসলাম ইমদাদ মামলার রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, মকু মোল্যার মেয়ে ফাতেমা ২০১৯ সালের ২৫ নভেম্বর বেলা ৩টার দিকে কালিনগর গ্রামের নালিয়া নদীর ঘাটে কাপড় পরিষ্কার কতে যায়। তখন তার ভাই রিপন মোল্যা পেছন থেকে ধাক্কা মেরে পানিতে ফেলে চুবিয়ে বাঁশের লাঠি ও টেংগারী দিয়ে জখম করে তাকে হত্যা করে। পরে লাশ পানির নিচে কাদায় পুঁতে রাখে। এ বিষয়টি রিপন মোল্যার ছেলে রাশেদ মোল্যা দেখতে পায়। বিকালে ফাতেমাকে অনেক খোঁজাখুঁজির পর না পেয়ে এক পর্যায়ে রাশেদ মোল্যার বর্ণনা অনুযায়ী নদীর ঘাট থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ আসামি রিপন মোল্যাকে আটক করলে জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার কথা শিকার করে সে। এ ঘটনায় ফাতেমার বাবা বাদী হয়ে নড়াগাতি থানায় মামলা করেন।
আরও পড়ুন: আপিল শুনানির আগে মৃত্যুদণ্ডের সংবাদ সঠিক নয়: আইনমন্ত্রী
আবরার হত্যা মামলার রায় ২৮ নভেম্বর
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার রায় ২৮ নভেম্বর। রবিবার ঢাকার একটি বিশেষ ট্রাইব্যুনাল এই দিন ধার্য করেছেন।
ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১এর বিচারক আবু জাফর মো. কামারুজ্জামান রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে এ দিন ধার্য করেন।
এর আগে ২৪ অক্টোবর প্রসিকিউশন এই হত্যা মামলায় ২৫ আসামির সবার মৃত্যুদণ্ড চেয়েছিল।
২০১৯ সালে বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং-এর দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরারকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শের-ই-বাংলা হলে তৎকালীন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতারা পিটিয়ে হত্যা করে।
৬ অক্টোবর রাত ৮টার দিকে তাকে হলের সিঁড়িতে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। ৭ অক্টোবর আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ ১৯ জনকে আসামি করে চকবাজার থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
আরও পড়ুন: আবরার হত্যা: ২৫ আসামির বিরুদ্ধে ফের অভিযোগ গঠন
২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ওয়াহিদুজ্জামান ২৫ আসামির বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন।
২০২০ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর, আদালত অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। মামলায় ৬০ জন সাক্ষীর মধ্যে ৪৭ জন সাক্ষীর জবানবন্দি রেকর্ড করেন আদালত।
চলতি বছরের ১৪ মার্চ, মামলায় গ্রেপ্তার ২২ আসামি আত্মপক্ষ সমর্থনে নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন।
তিন আসামি জিশান, রাফিদ ও তানিম পলাতক রয়েছে।
আরও পড়ুন: আবরার হত্যা মামলা: বিচারকের প্রতি আসামিপক্ষের অনাস্থা
সুনামগঞ্জে আঞ্জু হত্যা: ৫ আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল
সুনামগঞ্জে আঞ্জু মিয়া হত্যা মামলায় পাঁচ আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিলের শুনানি নিয়ে সোমবার বিচারপতি সহিদুল করিম ও বিচারপতি মো. আক্তারুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় দেন।
মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকা আসামিরা হলেন- আবদুর রহিম, এরশাদ মিয়া, জুলহাস, এমরান মিয়া ও মহরম আলী। আসামিদের সকলের বাড়ি সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার মোদেরগাঁও গ্রামে।
আদালতে আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট এস এম শাহজাহান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বশির আহমেদ। পরে বশির আহমেদ পাঁচ আসামির ফাঁসি বহালের রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
আদালত সূত্র জানায়, তাহিরপুর উপজেলার সুন্দরপাহাড়ী গ্রামের বাসিন্দা আঞ্জু মিয়ার সাথে আসামিদের পূর্ব বিরোধ ছিল। ২০০৬ সালের ১৫ নভেম্বর সকালে আসামিরা ধারালো অস্ত্র নিয়ে আঞ্জু মিয়ার ওপর হামলা করে। এতে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান।
ওইদিনই আঞ্জু মিয়ার ছেলে নজরুল ইসলাম তাহিরপুর থানায় হত্যা মামলা করেন। পরে তদন্ত শেষে পুলিশ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়। মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ ও দীর্ঘ শুনানি শেষে ২০১৬ সালের ৭ এপ্রিল আঞ্জু মিয়া হত্যা মামলায় পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ড দেন নিম্ন আদালত। সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত দায়রা জজ প্রণয় কুমার দাশ এ দণ্ড দেন।
মামলার অন্য ছয় আসামিকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়। পরে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন আসামিরা। একই সঙ্গে মামলাটি ডেথ রেফারেন্স হিসেবে হাইকোর্টে আসে। সোমবার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের ওপর রায় দেন হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন: রংপুরে ‘পুলিশি নির্যাতনে’ মৃত্যু: তদন্ত প্রতিবেদন হাইকোর্টে দাখিলের নির্দেশ
প্রতারণার মামলা: সাহেদকে জামিন দেননি হাইকোর্ট
সাবেক এমপি আউয়ালকে জামিন দেননি হাইকোর্ট
খুলনায় ব্যবসায়ী হত্যায় একজনের মৃত্যুদণ্ড
খুলনার ডুমুরিয়ার মৎস্য ঘের ব্যবসায়ী ও খুলনা সিটি করপোরেশনের (কেসিসি) মাস্টার রোল কর্মচারী মাহবুব হত্যা মামলায় মিন্টু রহমান নামের এক আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসাথে তাকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এ হত্যা মামলার অপর একটি ধারায় (৩৮০) আসামিকে এক বছরের সশ্রম করাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও দুই মাসের সশ্রম করাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার বিকালে (৪ নভেম্বর) খুলনার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক তাসনীম জোহরা এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় আসামি পলাতক ছিল।
আরও পড়ুন: আপিল শুনানির আগে মৃত্যুদণ্ডের সংবাদ সঠিক নয়: আইনমন্ত্রী
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মিন্টু রহমান ঝিকরগাছা উপজেলার গঙ্গানন্দপুর গ্রামের মৃত হাবিবুর রহমানের ছেলে।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী এস এম আবুল কালাম আজাদ মামলার নথির বরাত দিয়ে জানান, মাহবুব তার পৈত্রিক জমিতে ঘেরের ব্যবসা করতেন। ঘেরে থাকা অবস্থায় প্রায় কর্মচারীদের সাথে মাদক সেবন করতেন তিনি। মাদক ক্রয়ের টাকা ফেরত চাওয়া ও একাই মাদক সেবন করার ঘটনা নিয়ে গত ২০১২ সালের ১ ডিসেম্বর রাত ১২টার দিকে মাহবুব ও কর্মচারী মিন্টুর মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। এক পর্যায়ে মাহবুব ওই কর্মচারীকে চড় মারে। এর প্রতিশোধ নিতে ওই দিন রাত ১টার দিকে মিন্টু ঘেরের ভেতরে রাখা বটি দিয়ে ভিকটিমকে কুপিয়ে জখম করে। মৃত্যু নিশ্চিত ভেবে আসামি ঘের থেকে পালিয়ে যায়।
খোঁজ না পেয়ে পরের দিন মাহবুবের স্ত্রী ডুমুরিয়া উপজেলার চক আহসানখালীর ওই ঘেরে গিয়ে তাকে রক্তাক্ত ও মৃত অবস্থায় দেখতে পেয়ে চিৎকার দেন। পরে এলাকাবাসী ছুটে এসে পুলিশে খবর দেয়। লাশের সুরাতহাল রির্পোট তৈরি করে খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ। এ ঘটনার দুই দিন পর নিহতের স্ত্রী অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে ডুমুরিয়া থানায় মামলা করেন।
আরও পড়ুন: খুলনায় স্ত্রী হত্যায় স্বামীর মৃত্যুদণ্ড
মামলার তদন্তে নেমে ঘেরের কর্মচারী আলমগীর কবির খোকন ও জাহাঙ্গীর কবিরকে আটক করে পুলিশ। পরে তাদের মাধ্যমে অপর কর্মচারী মিন্টুকে ঝিকরগাছা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে মিন্টু হত্যাকান্ডের ব্যাপারে মুখ খুলতে থাকে। আদালতের কাছেও ১৬৪ ধারায় খুনের বিষয়টি স্বীকার করে জবানবন্দি প্রদান করে সে। ২০১৩ সালের ২২ জুলাই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডুমুরিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. তাজুল ইসলাম মিন্টুকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২৫ জনের স্বাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন আদালত।
আপিল শুনানির আগে মৃত্যুদণ্ডের সংবাদ সঠিক নয়: আইনমন্ত্রী
আপিল শুনানির আগে চুয়াডাঙ্গায় দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের যে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে, সে বিষয়ে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, তাঁর কাছে যে তথ্যাদি আছে সেটার সাথে প্রকাশিত খবরের মিল নেই। তিনি ব্যাখ্যা করে বলেন, আপিল শুনানির আগে তাদের মৃত্যুণ্ডাদেশ কার্যকর করা হয়েছে, এ কথাটি কিন্তু সঠিক না।বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ কখনোই সাম্প্রদায়িক রাজনীতিকে প্রশ্রয় দেবে না: আইনমন্ত্রীআইনমন্ত্রী বলেন, যাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে, তাদেরকে বিচারিক আদালতে মৃত্যুণ্ডাদেশ দেয়া হয়েছিল। তারপর সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশনে তাদের মৃত্যুণ্ডাদেশ 'কনফার্ম' করা হয়েছিল। এরপর তারা জেল আপিল করেছিলেন। এই জেল আপিলের শুনানি শেষে আপিল বিভাগ বিচারিক আদালত ও হাইকোর্টের রায়কে বহাল রাখেন। সবশেষে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চান। প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ করার পর তাদের ফাঁসি কার্যকর করা হয়। সুতরাং আপিল শুনানির আগে তাদের মৃত্যুণ্ডাদেশ কার্যকর করা হয়েছে, এ কথাটি কিন্তু সঠিক না।ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে মন্ত্রী বলেন, এ আইনের অপব্যবহারের ব্যাপারে আমরা বড় কঠোর হবো। যেই এ আইনের 'মিসইউজ ও অ্যাবিউজ’ করবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার ব্যবস্থা আমরা করছি। তার কারণ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি আইন। বাক-স্বাধীনতা বা সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ করার জন্য এ আইন করা হয়নি- আমি বারবার এ কথা বলবো। তিনি বলেন, যারা এ আইনের অপব্যবহার করছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আমি ইতোমধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে কথা বলেছি।
আরও পড়ুন: সার্চ কমিটির মাধ্যমেই গঠিত হবে ইসি: আইনমন্ত্রীআইনমন্ত্রী বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে আরও দুটি বিষয়ে কথা হয়েছে। এর প্রথমটি হলো ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করলেই যে মামলা নিয়ে নিবে সেটা হবে না। আইসিটি আইনের একটি ধারা আছে, সে ধারায় একটি সেল আছে, সেখানে সন্তুষ্ট হতে হবে, তারপর মামলা হবে। আর দ্বিতীয়টি হলো ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা করা হলে তাৎক্ষণিকভাবে যেন তাদেরকে গ্রেপ্তার না করা হয়।
রমনা বটমূলে হামলা: ডেথ রেফারেন্সের শুনানি কার্যতালিকা থেকে বাদ
রমনা বটমূলে বোমা হামলা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ডেথ রেফারেন্স, আপিল ও জেল আপিল আদালতের দৈনন্দিন কার্যতালিকা থেকে বাদ (আউট অব লিস্ট) দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ ও বিচারপতি এ এস এম আব্দুল মোবিনের বিশেষ বেঞ্চ গতকাল কার্যতালিকা থেকে আউট অফ লিস্ট করেন। এ সময় আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শাহীন আহমেদ খান। আর আসামির পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শিশির মনির।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শাহীন আহমেদ খান বলেন, ‘এই বিষয়টি বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ ও বিচারপতি এ এস এম আব্দুল মোবিনের বেঞ্চে আংশিক শুনানি হয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে এই বেঞ্চ আর নেই। বেঞ্চটি পুনর্গঠন করা হয়েছে। বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথের সাথে বিচারপতি কে এম জাহিদ সারোয়ার কাজলকে দেয়া হয়েছে। এ কারণে আংশিক শুনানি গ্রহণকারী দুই বিচারপতি বসে মামলাটি আউট অব লিস্ট করেন। এখন এটি শুনানির প্রধান বিচারপতি একটা বেঞ্চ ঠিক করে দেবেন।
আরও পড়ুন: ই-কমার্স: গেটওয়েতে আটকা গ্রাহকদের টাকা ফেরত দিতে হাইকোর্টের রুল
২০০১ সালের ১৪ এপ্রিল রমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলা হয়। ন্যাক্কারজনক ওই হামলায় ঘটনাস্থলেই ৯ জন নিহত হন। পরে হাসপাতালে মারা যান আরও একজন। ওই ঘটনায় রমনা থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা করা হয়। বোমা হামলার ঘটনায় হত্যা মামলায় ২০১৪ সালের ২৩ জুন ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত রায় দেন। সে রায়ে হরকাতুল জিহাদের (হুজি) শীর্ষ নেতা মুফতি হান্নানসহ আটজনের মৃত্যুদণ্ড এবং ছয়জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়। তবে সিলেটে গ্রেনেড হামলার মামলায় ইতিমধ্যে মুফতি হান্নানের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে। এদিকে বিচারিক আদালতের রায়ের পর আসামিদের মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্ট আসে। অন্যদিকে বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আসামিরা জেল আপিল ও আপিল করেন। বর্তমানে এসব ডেথ রেফারেন্স ও আপিল হাইকোর্টে শুনানির অপেক্ষায়।
আরও পড়ুন: প্রতারণার মামলা: সাহেদকে জামিন দেননি হাইকোর্ট
বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের বিষয়ে তদন্ত কমিশন চেয়ে হাইকোর্টে রিট