মৃত্যুদণ্ড
কুমিল্লায় হত্যা মামলায় ১ জনের মৃত্যুদণ্ড
কুমিল্লার বরুড়ায় পল্লী বিদ্যুৎ কর্মকর্তা শরিফ উদ্দিনকে হত্যার দায়ে তার স্ত্রীর যাবজ্জীবন ও স্ত্রীর প্রেমিকের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন কুমিল্লার আদালত। এছাড়া প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়।
মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) দুপুরে কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ চতুর্থ আদালতের বিচারক জাহাঙ্গীর হোসেন এ রায় দেন। মামলার সহকারী পিপি মো. আবু ইউসুফ মুন্সী বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
পিপি মো. আবু ইউসুফ মুন্সী বলেন, নিহত শরিফের স্ত্রী হিমু তার পরকিয়া প্রেমিকের সহযোগিতায় স্বামীকে হাতুড়ি দিয়ে মাথায় আঘাত করেন। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত্যুবরণ করেন।
আরও পড়ুন: সিলেটে স্ত্রী ও ২ সন্তানকে কুপিয়ে হত্যার দায়ে যুবকের মৃত্যুদণ্ড
তিনি আরও বলেন, এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ ১৭ জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য শেষে দোষী প্রমাণিত হওয়ায় হিমুর তিনটি নাবালক সন্তান থাকায় আদালত তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও অপর আসামি আশিকুজ্জামাকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেন। এছাড়া প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- বরুড়ায় পল্লী বিদ্যুৎ কর্মকর্তা শরিফ উদ্দিনের স্ত্রী মোনালিসা হিমু (২৮)। তিনি সিরাজগঞ্জ সদরের হোসেনপুর এলাকার আব্দুল মান্নান এর মেয়ে। মোনালিসা হিমুর প্রেমিক মো. আশিকুজ্জামান (২৭)। সে কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার ঝলমের চেঙ্গাছাল এলাকার নাসিরুল আলমের ছেলে। নিহত শরিফ উদ্দিন সিরাজগঞ্জ জেলার কামারখন্দ উপজেলার ভদ্রঘাট এলাকার বাসিন্দা।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০২০ সালে ১৫ জানুয়ারি রাতে কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শরিফ উদ্দিনকে তার ভাড়া বাসায় হত্যা করেন তারই স্ত্রী হিমু ও প্রেমিক মো. আশিকুজ্জামান।
পরদিন ডাকাতির ঘটনা সাজিয়ে থানায় ডাকাতি ও হত্যা মামলা করেন স্ত্রী হিমু। পরে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের তদন্তে প্রকৃত ঘটনা উদ্ধার করা হয়। মামলার চার্জশিটে আসামি করা হয় হিমু ও আশিকুজ্জামানকে।
আরও পড়ুন: শরীয়তপুরে ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে ৫ আসামির মৃত্যুদণ্ড
২০২৩ সালে জাপানে কোনো মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়নি
শরীয়তপুরে ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে ৫ আসামির মৃত্যুদণ্ড
শরীয়তপুরে ফিরোজা বেগম নামে এক নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে পাঁচ আসামির মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে শরীয়তপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. সোহেল আহমেদ এ রায় ঘোষণা করেন।
এ ছাড়া প্রত্যেক আসামিকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ২৬ বছর পর হত্যা মামলায় ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড, একজনের যাবজ্জীবন
মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামিরা হলেন, নিজাম বালী (৪৫), মোহাম্মদ আলী (৩৫), ওমর ফারুক বেপারী (২৪), আল আমীন বেপারী (২০) ও ইব্রাহীম মোল্লা (২১)।
আসামিরা ডামুড্যা উপজেলার দক্ষিণ সুতলকাঠীর বাসিন্দা। রায় ঘোষণার সময় দুই আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। আদালতের নির্দেশে তাদের জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আর তিন আসামি পলাতক।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ১৮ এপ্রিল বিকালে বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয় ডামুড্যা উপজেলার ধানকাঠি ইউনিয়নের ভূঁইয়া বাজার এলাকার ৫৫ বছর বয়সী ফিরোজা বেগম।
আরও পড়ুন: মৃত্যুদণ্ডাদেশ চূড়ান্ত হওয়ার আগে আসামিকে কনডেমড সেলে রাখার বিষয়ে রায় যেকোনো দিন
২১ এপ্রিল বাড়ি থেকে ১০ কিলোমিটার দূরের একটি ডোবা থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরদিন ওই নারীর ছোট ভাই লাল মিয়া সরদার বাদী হয়ে ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে ২/৩ জনকে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করে শরীয়তপুর আদালতে একটি হত্যা মামলা করেন।
আসামিদের মধ্যে পাঁচজন জড়িত থাকায় তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র গ্রহণ করে পুলিশ। বাকি আসামি চার্জশিট থেকে অব্যাহতি পায়।
পরে ২৮ এপ্রিল ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে নিজাম বালীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরের দিন ওমর ফারুক ও মোহাম্মদ আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা ওই নারীকে পালাক্রমে ধর্ষণের পর হত্যা করার কথা আদালতের কাছে স্বীকার করেন। ওই তিনজন আদালতে হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেন।
আরও পড়ুন: মৃত্যুদণ্ডের শাস্তির বিধান চ্যালেঞ্জ করে রিট
আর অন্য দুই আসামি ইব্রাহিম, আল-আমীন পলাতক। পরে ওমর ফারুক জামিনে গিয়ে পলাতক। এ ঘটনায় পরবর্তীকালে পুলিশ ওই পাঁচজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।
দীর্ঘ ৫ বছর যুক্তিতর্ক ও ২২ জনের স্বাক্ষগ্রহণ শেষে মঙ্গলবার দুপুরে শরীয়তপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে এ হত্যা ও ধর্ষণ মামলার রায় ঘোষণা করা হয়।
নিহত ফিরোজা বেগমের ছেলে শাহ্ জালাল হাওলাদার বলেন, অভিযুক্তদের পাঁচজনকে ফাঁসির রায় দিয়েছেন আদালত। সরকারের কাছে আমাদের চাওয়া উচ্চ আদালতে যেন এই রায় বহাল রেখে দ্রুত সময়ের মধ্যে কার্যকর করা হয়।
আরও পড়ুন: কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগারে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কয়েদির মৃত্যু
শরীয়তপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি সানাল মিয়া বলেন, এক নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে হত্যা করা হয়েছে। এই মামলায় পাঁচ আসামিকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। আমরা রাষ্ট্রপক্ষ এই রায়ে সন্তুষ্ট।
২০২৩ সালে জাপানে কোনো মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়নি
জাপান সরকার ৩ বছরে প্রথমবারের মতো ২০২৩ সালে কোনো মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেনি।
জাপানের সংবাদপত্র আসাহি শিম্বুন বিচার মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে উল্লেখ করেছে, ৩ জনের অসুস্থতা ও অন্যান্য কারণে মৃত্যু এবং আরও ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড এ বছর চূড়ান্ত হওয়াসহ বর্তমানে জাপানে ১০৬ জন বন্দি মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত।
বন্দিদের চিকিৎসা সংক্রান্ত আইনে বলা হয়েছে, ২৯ ডিসেম্বর থেকে ৩ জানুয়ারি পর্যন্ত কোনো মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হবে না।
সর্বশেষ ২০২২ সালের ২৬ জুলাই তোমোহিরো কাতোকে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়। যিনি ২০০৮ সালে টোকিওর আকিহাবারা জেলায় হামলায় ৭ জনকে হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হন।
আরও পড়ুন: মধ্য নাইজেরিয়ায় সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলায় ১৬০ জন নিহত
চেক প্রজাতন্ত্রের প্রাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে বন্দুকধারীর গুলিতে ১৪ জন নিহত
মৃত্যুদণ্ডের শাস্তির বিধান চ্যালেঞ্জ করে রিট
দেশে মৃত্যুদণ্ডের শাস্তির বিধান চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে। রিটে মৃত্যুদণ্ডের বিধান কেন অবৈধ ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারির নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইশরাত হাসান বাদী হয়ে এ রিট করেন।
রিট আবেদনে আইন মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সচিব, লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগের সচিব এবং সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে বিবাদী করা হয়েছে।
আগামী রবিবার (৯ ডিসেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে রিট আবেদনটি শুনানির জন্য উপস্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছেন রিটকারী আইনজীবী।
রিট আবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। কিন্তু এই মৃত্যুদণ্ডের বিধান সংবিধানের ৩২ ও ৩৫ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
আরও পড়ুন: স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে ১ শতাংশ ভোটারের সই করা তালিকা দাখিলের বিধান চ্যালেঞ্জ করে রিট
এছাড়া, জাতিসংঘ ঘোষিত ১৯৪৮ সালের মানবাধিকার সনদ, ১৯৬৬ সালের নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকারবিষয়ক আন্তর্জাতিক চুক্তি এবং ১৯৮৪ সালের নির্যাতন বিরোধী কনভেনশনে মৃত্যুদণ্ডকে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। বাংলাদেশ এসব দলিলে সইকারী দেশ হিসেবে মৃত্যুদণ্ড নিষিদ্ধ করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ইতোমধ্যে বিশ্বের ১১২টি দেশ মৃত্যুদণ্ড নিষিদ্ধ করেছে। রিট আবেদনে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডকে অসাংবিধানিক ঘোষণার আবেদন জানানো হয়েছে।
আইনজীবী ইশরাত হাসান বলেন, আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভুটান ও নেপালসহ বিশ্বের অনেক দেশে মৃত্যুদণ্ড নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক দলিলে মৃত্যুদণ্ডের বিধান নিষিদ্ধ করার পক্ষে বাংলাদেশ সইকারী দেশ। সে হিসেবে সেসব দলিল অনুসরণ করাই আন্তর্জাতিক আইনের রীতি। বাংলাদেশের সংবিধানের ২৫ নম্বর অনুচ্ছেদেও আন্তর্জাতিক আইন অনুসরণের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এছাড়া মৃত্যুদণ্ডের বিধান আমাদের সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এসব কারণে রিটটি দায়ের করেছি।
আরও পড়ুন: নির্বাচনের তফসিল স্থগিত চেয়ে রিটের আদেশ ১০ ডিসেম্বর
তফসিলের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট
২৬ বছর পর হত্যা মামলায় ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড, একজনের যাবজ্জীবন
১৯৯৮ সালে কুমিল্লা বরুড়ায় ফার্নিচার ব্যবসায়ী শহিদুল্লাহ হত্যা মামলায় চারজনের মৃত্যুদণ্ড ও একজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
এই ঘটনায় একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: গোসলের ভিডিও ছড়ানোর ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ, যুবকের যাবজ্জীবন
সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ তৃতীয় আদালতের বিচারক রোজিনা খান এ রায়ে দেন।
মো. শহিদুল্লাহ বরুড়া উপজেলার ভাউকসার ইউনিয়নের পরানপুর গ্রামের মৃত মাওলানা আব্দুল মজিদের ছেলে।
তিনি পেশায় একজন ফার্নিচার ব্যবসায়ী ছিলেন।
মামলার এজাহারে জানা যায়, ১৯৯৮ সালে ২৫ মে দুপুরে শহিদুল্লাহ তার জমিতে ধানের চারা রোপণ করতে যায়। তখন শহিদুল্লাহর সঙ্গে আসামিদের বাকবিতণ্ডা হয়।
পরে রাতের বেলায় শহিদুল্লাহকে তার দোকান থেকে ডেকে নিয়ে আসামিরা কুপিয়ে জখম করে। এইসময় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যায়।
এই ঘটনায় ২২ মে নিহত আসামির ভাই আমানুল্লাহ বাদী হয়ে মামলা করলে পুলিশ ১৫ জনের নামে অভিযোগ পত্র দেন। ২০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে দীর্ঘ ২৬ বছর পর মামলার রায় দিয়েছেন আদালত।
আরও পড়ুন: স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের মামলায় যুবকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
চুয়াডাঙ্গায় মাকে হত্যার দায়ে ছেলের যাবজ্জীবন
যশোরে সোনা চোরাচালান মামলায় ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড
যশোরের শার্শা সীমান্ত থেকে বহুল আলোচিত ৭২ কেজি সোনা উদ্ধারের মামলায় তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে ভারতীয় দুই নাগরিকের যাবজ্জীবন এবং চারজনকে ২০ বছর সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) দুপুর ২টায় যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ তৃতীয় আদালতের বিচারক মো. তাজুল ইসলাম এ রায় দেন।
মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্তরা হলেন- যশোরের শার্শার শিকারপুর গ্রামের পশ্চিমপাড়ার তোফাজ্জেল হোসেন তরফদারের ছেলে মহিউদ্দিন তরফদার, জাহাঙ্গীর হোসেনের ছেলে জাহিদুল ইসলাম এবং নারিকেলবাড়িয়া গ্রামের আব্দুস সাত্তারের ছেলে মুজিবুর রহমান।
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তরা হলেন- ভারতীয় নাগরিক ভারতের গোকর্ন গ্রামের মাঝের পাড়ার আলী হোসেন সরদারের ছেলে মাসুদ রানা এবং ২৪ পরগনা জেলার বাগদা থানার গাংগুলিয়া গ্রামের নুর জালাল মণ্ডল।
২০ বছর সাজাপ্রাপ্তরা হলেন- শার্শার আব্দুল মোমিনের ছেলে ইমরান হোসেন, আব্দুল কাদেরের ছেলে রুবেল হোসেন, রামচন্দ্রপুর গ্রামের নওসাদ আলীর ছেলে কবির হোসেন ও ওরফে মেছের আলীর ছেলে এবং যশোরের শার্শার কৃষ্ণপুর গ্রামের বাসিন্দা শফিকুল মণ্ডল ওরফে মোল্যা ওরফে লিদু।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মো. আসাদুজ্জামান রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন: যশোরে ছুরিকাঘাতে দোকান কর্মচারীকে খুন, ২ যুবক আটক
মামলার বিবরণে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ২০১৮ সালের ৯ আগস্ট রাতে নারিকেলবাড়িয়া গ্রামের সীমান্ত পিলারের পাশে অবস্থান নেয় বিজিবি। রাত ১০টার দিকে কয়েকজন লোক নারিকেলবাড়িয়া মাঠের মধ্য দিয়ে ভারতের দিকে যাওয়ার সময় তাদের চ্যালেঞ্জ করে। এ সময় মহিউদ্দিন নামে একজনকে আটক এবং দুইজন ব্যাগ ফেলে পালিয়ে যায়। মহিউদ্দিনের কাছে থাকা ব্যাগ থেকে ২২৪টি সোনার বার এবং ফেলে যাওয়া দুইটি ব্যাগ থেকে ৪০০টি সোনার বার উদ্ধার করা হয়। যার ওজন ৭২ কেজি সাড়ে চারশ’ গ্রাম।
পরদিন শিকারপুর বিওপির বিজিবির হাবিলদার মুকুল হোসেন বাদী হয়ে তিনজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতদের আসামি করে চোরাচালান দমন আইনে শার্শা থানায় মামলা করেন।
মামলাটি প্রথমে থানা পুলিশ পরে সিআইডি পুলিশ তদন্তের দায়িত্ব পায়। মামলার তদন্তকালে গ্রেপ্তারদের দেওয়া তথ্য ও সাক্ষীদের বক্তব্যে সোনা চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত থাকায় ৯ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।
দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়া শেষে বৃহস্পতিবার আদালত তার রায়ে মহিউদ্দিন তরফদার শান্তি, জাহিদুল ইসলাম ও মুজিবুর রহমানকে মৃত্যুদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা; ভারতীয় নাগরিক মাসুদ রানা ও শফিকুল মণ্ডলকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড এবং সাফি, ইমরান হোসেন, কবির হোসেন ও রুবেল হোসেনকে ২০ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
জেলা ও দায়রা জজ তৃতীয় আদালতের এপিপি মো. আসাদুজ্জামান বলেন, যশোর অঞ্চলের এই যাবৎ সবচেয়ে বড় সোনা চালানের মামলায় দৃষ্টান্তমূলক রায় হয়েছে। এই রায়ে রাষ্ট্রপক্ষ সন্তুষ্ট।
অন্যদিকে, রায়ের খবরে সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের স্বজনেরা রায়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
তারা বলেন, এই রায়ে তারা অসন্তুষ্ট। তারা উচ্চ আদালতে যাবেন।
আসামি পক্ষের আইনজীবী আরিফুল ইসলাম শান্তি বলেন, সরকার যে দ্রুত বিচার ব্যবস্থা কার্যকর করেছে, এতে বিচারকরা সঠিকভাবে মামলা তদন্ত করতে পারছে না। ফলে আসামিপক্ষ প্রকৃত রায় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আমরা এই রায়ের বিপক্ষে আপিল করব।
আরও পড়ুন: যশোরে ১৬৫ রাউন্ড গুলি-অস্ত্র-মাদক জব্দ, গ্রেপ্তার ২
যশোরে ট্রাকচাপায় এনজিও কর্মকর্তা নিহত
কিশোরগঞ্জে ছোট ভাইকে হত্যায় দায়ে বড় ভাইয়ের মৃত্যুদণ্ড
কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে ছোট ভাইকে হত্যার দায়ে বড় ভাই নজরুল ইসলাম বিপ্লব নামে একজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়।
সোমবার (৬ নভেম্বর) সাড়ে ১২টার দিকে মামলার একমাত্র আসামির উপস্থিতিতে কিশোরগঞ্জের দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক শাম্মী হাসিনা পারভীন এ রায় দেন।
আরও পড়ুন: জয়পুরহাটে ছেলেকে হত্যার দায়ে বাবার মৃত্যুদণ্ড
মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত নজরুল কাটিয়াদী উপজেলার চান্দপুর ইউনিয়নের কোনাপাড়া গ্রামের সাবেক পুলিশ সদস্য নূরুজ্জামানের ছেলে।
আদালত সূত্র ও মামলার এজাহার থেকে জানা গেছে, পারিবারিক বিরোধীদের জেরে ২০১৮ সালের ২০ এপ্রিল বিকালে নিজের ঘরে ঘুমন্ত অবস্থায় ছোট ভাই মাসুদ উজ জামানকে কুপিয়ে হত্যা করেন বড় ভাই নজরুল। এসময় হামলায় মাসুদের স্ত্রী ও বাবাও আহত হন।
এ ঘটনায় এ ঘটনার দুদিন পর ২২ এপ্রিল নিহতের স্ত্রী নিপা বেগম বাদী হয়ে কটিয়াদী মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার পর পুলিশ নজরুলকে গ্রেপ্তার করে। পরে তিনি ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।
তদন্ত শেষে ২০১৮ সালের ৮ আগস্ট একমাত্র আসামি নজরুলের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা কটিয়াদী মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. নূরুল ইসলাম। দীর্ঘ শুনানি পর সোমবার আদালতের বিচারক রায়ে নজরুলকে মৃত্যুদণ্ড দেন।
আরও পড়ুন: নাটোরে স্ত্রী হত্যা মামলায় স্বামীর মৃত্যুদণ্ড
হবিগঞ্জে অন্তঃসত্ত্বাকে হত্যার দায়ে ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড
নাটোরে স্ত্রী হত্যা মামলায় স্বামীর মৃত্যুদণ্ড
নাটোরে স্ত্রী হত্যার পৃথক দু’টি মামলার রায়ে স্বামীকে মৃত্যুদণ্ড ও আরেকজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৩০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (৩০ অক্টোবর) দুপুরে নাটোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক জেলা জজ মুহাম্মদ আব্দুর রহিম এই রায় দেন।
সরকারি কৌসুলী আনিসুর রহমান জানান,২০১৭ সালের ৩১ আগস্ট বড়াইগ্রাম উপজেলার কেচুয়াকোড়া গ্রামে যৌতুকের জন্য গৃহবধূ হাসনা হেনাকে(২২) পিটিয়ে ও স্বাসরোধ করে হত্যা করে তার স্বামী শরিফুল ইসলাম। এ ঘটনায় হাসনা হেনার মা বাদি হয়ে মামলা দায়ের করলে আইন ও বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে আদালত এই রায় দেন।
আরও পড়ুন: হবিগঞ্জে অন্তঃসত্ত্বাকে হত্যার দায়ে ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড
তবে মামলা থেকে খালাস পেয়েছেন দণ্ডপ্রাপ্ত শরিফুলের মা সহ ৩ জন। একই সাথে আসামি ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
এদিকে গুরুদাসপুর উপজেলার বেড়গঙ্গারামপুর গ্রামে অপর একটি স্ত্রী হত্যা মামলার রায়ে স্বামী শফিকুল ইসলাম শফিককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. শরীফ উদ্দীন।
২০১৭ সালের ২৭ মে পারিবারিক বিরোধে স্ত্রী রোকেয়া বেগমকে উপর্যুপরি কুপিয়ে হত্যার পর মসজিদে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলো স্বামী শফিক। পরে এলাকাবাসীর সহায়তায় সেখান থেকে তাকে আটক করে পুলিশ। যাবজ্জীবন সাজা ছাড়াও শফিককে ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড প্রদান করা হয় বলে জানান আদালতের পিপি সিরাজুল ইসলাম।
আরও পড়ুন: জয়পুরহাটে ছেলেকে হত্যার দায়ে বাবার মৃত্যুদণ্ড
হবিগঞ্জে অন্তঃসত্ত্বাকে হত্যার দায়ে ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড
যৌতুকের দাবি করে ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বাকে হত্যার দায়ে একই পরিবারের ৫ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) হবিগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. জাহিদুল ইসলাম এ রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- চুনারুঘাট উপজেলার সাদেকপুর গ্রামের রাসেল মিয়া (২৫) তার বড় ভাই কাওছার মিয়া (৩২) মাতা তাহেরা বেগম (৫০), ছোট বোন হোছনা বেগম (২০) বড় রোজী বেগম (২৭)। রায় ঘোষণাকালে কাওছার মিয়া পলাতক ছিলেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, ২০১৬ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর রাত ১২টা থেকে ৩টার মধ্যে রাসেল মিয়া তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী তাহেরা খাতুন ওরফে আয়েশার নিকট এক লাখ টাকা যৌতুক চেয়ে মারপিট করে গুরুতর আহত করে। এক পর্যায়ে সংকটাপন্ন অবস্থায় তাকে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তিনি মারা যান।
আরও পড়ুন: জয়পুরহাটে ছেলেকে হত্যার দায়ে বাবার মৃত্যুদণ্ড
উল্লেখ্য, ঘটনার ৮ মাস পূর্বে ভুক্তভোগীর বিয়ে হয়।
পরদিন ভুক্তভোগীর বাবা একই উপজেলার পঞ্চাশ গ্রামের আব্দুস ছত্তার দণ্ডপ্রাপ্তদের বিরুদ্ধে চুনারুঘাট থানায় এজাহার দায়ের করেন। এ মামলায় রাষ্ট্র পক্ষে ১২ সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।
বিশেষ পিপি (২) আইনজীবী আবুল মনসুর চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে মেয়েকে ধর্ষণের দায়ে বাবার মৃত্যুদণ্ড
জয়পুরহাটে ছেলেকে হত্যার দায়ে বাবার মৃত্যুদণ্ড
জয়পুরহাটে ৮ বছরের ছেলেকে হত্যার ঘটনায় বাবা নজরুল ইসলাম লিটনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়া তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
সোমবার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে অতিরিক্ত দায়রা জজ-২ আদালতের বিচারক আব্বাস উদ্দীন এ রায় দেন।
আরও পড়ুন: বনফুলের দুই কর্মী হত্যায় ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড, ২ জনের যাবজ্জীবন
দণ্ডপ্রাপ্ত নজরুল ইসলাম জয়পুরহাট সদর উপজেলার রাজনগর আদর্শগ্রামের নিজাম উদ্দীনের ছেলে। তিনি পলাতক রয়েছেন।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২০১০ সালের ১১ নভেম্বর সকালে নজরুল ইসলাম লিটন তার ৮ বছরের ছেলে রানাকে কাজ করতে বললে সে অপারগতা স্বীকার করে। এসময় লিটন ক্ষিপ্ত হয়ে তার ছেলেকে এলোপাতাড়ি মারপিট করে। এরপর রানাকে স্থানীয় ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা করালে তার অবস্থা আরও অবনতি হয়। এরপর ১৩ নভেম্বর তাকে জয়পুরহাট সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যায়।
এ ঘটনায় শিশুটির মা বুলি আরা বাদী হয়ে সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
এ মামলার দীর্ঘ শুনানি শেষে আদালত আজ এ রায় দেন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে মেয়েকে ধর্ষণের দায়ে বাবার মৃত্যুদণ্ড
চট্টগ্রামে মা-মেয়ে হত্যা মামলায় যুবকের মৃত্যুদণ্ড