মৃত্যুদণ্ড
ময়মনসিংহে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকে হত্যা, ৭ জনের মৃত্যুদণ্ড
২০২০ সালে ময়মনসিংহের গৌরীপুরে উপজেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমান শুভ্রকে হত্যার দায়ে এক ইউনিয়নের চেয়ারম্যানসহ সাত জনকে মৃত্যুদণ্ড ও তিন জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
মামরায় গৌরীপুর পৌরসভার বর্তমান মেয়র সৈয়দ রফিকুল ইসলাম, তার দুই ভাইসহ নয় জনকে খালাস দেয়া হয়েছে।
সোমবার (১০ অক্টোবর) ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক মনির কামাল এ রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাত আসামি হলেন, মইলাকান্দা ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান রিয়াদ উজ্জামান রিয়াদ, গৌরীপুর পৌর ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাকিব আহমেদ রেজা, উত্তর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য খাইরুল ইসলাম, মোজাম্মেল হক, ছাত্রদলকর্মী মাঈন উদ্দিন, শরীফুল ইসলাম, রুহুল আমিন। পাশাপাশি প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: গাইবান্ধায় শিশু হত্যা: এক আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল, ২ জন খালাস
যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত তিন আসামি হলেন, মাসুদ পারভেজ ওরফে কার্জন, শরীয়ত উল্লাহ ওরফে সুমন ও রাসেল মিয়া। তাদেরও প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দেয়া হয়েছে। অনাদায়ে আরও ৬ মাস কারাভোগ করতে হবে।
যাদের খালাস দেয়া হয়েছে তারা হলেন, পৌর মেয়রের দুই ভাই সৈয়দ তৌফিকুল ইসলাম, সৈয়দ মাজহারুল ইসলাম জুয়েল, শাহজাহান মিয়া, কামাল মিয়া, রিফাত, হানিফ ওরফে আবু হানিফা, জাহাঙ্গীর আলম ও মজিবুর রহমান। রায় ঘোষণার আগে ১৯ জনকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়।
৬ অক্টোবর রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আদালত রায়ের এ দিন ধার্য করেন।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ১৭ অক্টোবর গৌরীপুর মধ্যবাজার পান মহালে রাত ১০টার দিকে দুর্বৃত্তরা শুভ্রকে কুপিয়ে হত্যা করে। নিহতের ছোট ভাই আবিদুর রহমান বাদী হয়ে গৌরীপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক শাহ কামাল আকন্দ ১৯ জনকে অভিযুক্ত করে ২০২১ সালের ২৭ এপ্রিল অভিযোগপত্র দাখিল করে।
গত ২৬ জানুয়ারি আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরু করেন আদালত।
মামলার বিচার চলাকালে আদালত ৩০ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৭ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন। আসামিদের পক্ষে নয় জন সাফাই সাক্ষ্য দেন।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় অটোচালককে হত্যার দায়ে ১ জনের মৃত্যুদণ্ড, ২ জনের যাবজ্জীবন
যৌতুকের টাকা না পেয়ে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড
মৃত্যুদণ্ড গভীরভাবে ত্রুটিপূর্ণ ও অন্যায্য
অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, নরওয়ে, সুইজারল্যান্ড এবং যুক্তরাজ্যের আবাসিক কূটনৈতিক মিশন মৃত্যুদণ্ড কার্যকর বন্ধ করতে এবং এর ব্যবহারে স্থগিতাদেশ জারি করার আহ্বান জানিয়েছে।
সোমবার এক যৌথ বিবৃতিতে যেসকল দেশে মৃত্যুদণ্ডের আইন রয়েছে তাদের প্রতি এই আহ্বান জানান তারা।
২০তম বিশ্ব মৃত্যুদণ্ড বিরোধী দিবস উপলক্ষে যৌথ বিবৃতিটি দেয়া হয়।
বিবৃতিতে পাঁচটি দেশের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে যে কোনো পরিস্থিতিতে সব দেশে সকল মানুষের জন্য মৃত্যুদণ্ডের বিরোধিতা করা।
আরও পড়ুন: গাইবান্ধায় শিশু হত্যা: এক আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল, ২ জন খালাস
এতে আরও বলা হয়েছে, ‘মৃত্যুদণ্ড গভীরভাবে ত্রুটিপূর্ণ। এটি অপরাধকে প্রতিরোধ করে এমন কোনো চূড়ান্ত প্রমাণ নেই। এটি অপরিবর্তনীয়-মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার ক্ষেত্রে কোনো গর্ভপাত বা ন্যায়বিচারের ব্যর্থতা অপরিবর্তনীয় এবং অপূরণীয়।’
এতে বলা হয়, মৃত্যুদণ্ড গভীরভাবে অন্যায্য, সংখ্যালঘু, নারী এবং বুদ্ধিবৃত্তিক প্রতিবন্ধী বা অর্থনৈতিক দুর্বলতার সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণভাবে প্রভাব ফেলে।
যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিশ্বের দুই-তৃতীয়াংশেরও বেশি দেশ ইতোমধ্যে আইন বা অনুশীলনে মৃত্যুদণ্ড বাতিল করেছে।
আরও পড়ুন: মানবতাবিরোধী অপরাধ: সাভারে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি গ্রেপ্তার
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে নেত্রকোণার খলিলুরের মৃত্যুদণ্ড
কুষ্টিয়ায় অটোচালককে হত্যার দায়ে ১ জনের মৃত্যুদণ্ড, ২ জনের যাবজ্জীবন
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় অটোরিকশা চালক সুজন শিকদারকে (৩৪) হত্যার দায়ে এক আসামির মৃত্যুদণ্ড এবং দুই আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে তাদের প্রত্যককে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। মঙ্গলবার বেলা ১২ টার দিকে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-১ এর বিচারক মো. তাজুল ইসলাম এ রায় দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রফিকুল ইসলাম আসাদ (৩৪) কুষ্টিয়া সদর উপজেলার আলামপুর দত্তপাড়া গ্রামের ইউনুচ আলীর ছেলে।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত শরিফুল ইসলাম (৩১) ঝিনাইদহ জেলার কয়াগাছি মুক্তাঙ্গন আবাসন প্রকল্প এলাকার আমজাদ দফাদারের ছেলে এবং রাজু মোল্লা (২৬) ঝিনাইদহ জেলার বড় খরিখালি গ্রামের গনি মোল্লার ছেলে।
রায় ঘোষণার সময় যাবজ্জীবন দণ্ডাদেশ আসামি রাজু এবং শরিফুল আদালতে উপস্থিত ছিলেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রফিকুল ইসলাম আসাদ এখনো পলাতক রয়েছেন। তাকে গ্রেপ্তারের জন্য পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট অনুপ কুমার নন্দী রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, ২০১৬ সালের ২৮ মার্চ কুষ্টিয়া সদর উপজেলার জগতির বাসিন্দা সুজন তার ভাড়ায় চালিত অটোরিকশা নিয়ে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হন। অনেক খোঁজাখুঁজির পরও তার কোন সন্ধান না পাওয়ায় তার ভাই আলমগীর শিকদার কুষ্টিয়া মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। পরে ২৯ মার্চ সকালে ভেড়ামারা থানা পুলিশ ভেড়ামারার সাতবাড়ীয়া এলাকার একটি লিচু বাগান থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় এক যুবকের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে। খবর পেয়ে সুজনের ভাই আলমগীর ঘটনাস্থলে গিয়ে সুজনের লাশ শনাক্ত করেন। এ ঘটনায় ওইদিনই নিহতের ভাই আলমগীর বাদী হয়ে ভেড়ামারা থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন।
মামলার দীর্ঘ তদন্ত শেষে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডি পুলিশের পরিদর্শক মহানন্দ সিং ওই তিনজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চুড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। মামলায় ১০ জনের সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে মঙ্গলবার মামলার রায় ঘোষণা করেন আদালত।
রায়ে আদালত উল্লেখ করেন, মূলত অটোরিকশা ছিনতাইয়ের জন্য পরিকল্পিতভাবে সুজন শিকদারের অটোরিকশা ভাড়া করে ওই আসামিরা। কিন্তু ছিনতাইকারীদের চিনে ফেলায় কৌশলে ভেড়ামারার ওই নির্জন এলাকায় নিয়ে গিয়ে তাকে হত্যা করে অটোরিকশা নিয়ে পালিয়ে যায় ছিনাতাইকারীরা।
মানবতাবিরোধী অপরাধ: সাভারে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি গ্রেপ্তার
নেত্রকোণায় মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামিকে রাজধানীর সাভার থেকে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
গ্রেপ্তার খলিলুর রহমান (৬৮) নেত্রকোণা জেলার দুর্গাপুরের নবী হোসেনের ছেলে।
বুধবার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব সদর দপ্তরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের এএসপি ইমরান খান বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-১৪ এর একটি দল সাভারে অভিযান চালিয়ে মঙ্গলবার রাতে খলিলুরকে আটক করে।
এএসপি ইমরান জানান, খলিলুর ২০১৫ সাল থেকে পলাতক এবং গ্রেপ্তার এড়াতে তিনি দক্ষিণখান, তুরাগ ও উত্তরাসহ শহরের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করছিল।
তিনি বলেন, গ্রেপ্তার এড়াতে সে মোবাইল ফোন ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকলেও তার পরিবারের সদস্যরা প্রায়ই তার সাথে যোগাযোগ করে টাকা ও অন্যান্য জিনিস সরবরাহ করত।
আরও পড়ুন: একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে নেত্রকোণার খলিলুরের মৃত্যুদণ্ড
২০১৭ সালের ৩০ জানুয়ারি প্রসিকিউশন মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে খলিলুর রহমানসহ নেত্রকোণার পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
২০২২ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর একটি ট্রাইব্যুনাল মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য পাঁচ অভিযুক্তকে মৃত্যুদণ্ড দেন।
তাদের বিরুদ্ধে ২২ জনকে হত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতন, অপহরণ ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ আনা হয়েছে।
অন্য চার আসামি বিচার চলাকালীন মারা যান।
আরও পড়ুন: মানবতাবিরোধী অপরাধ: গফরগাঁওয়ের ৩ জনের আমৃত্যু, ৫ জনের ২০ বছর করে দণ্ড
মানবতাবিরোধী অপরাধ: রাজধানী থেকে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি গ্রেপ্তার
গাইবান্ধায় শিশু হত্যা: এক আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল, ২ জন খালাস
গাইবান্ধায় এক শিশুকে হত্যার ঘটনায় বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এক আসামির দণ্ড বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অপর দুই আসামিকে খালাস দেয়া হয়েছে।
মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের সংক্রান্ত ডেথ রেফারেন্স এবং আসামিদের আপিল শুনানি শেষে মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি এএনএম বশির উল্লাহ ও বিচারপতি মুহম্মদ মাহবুব-উল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চ রায় দেন।
আদালতে আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী এস এম শাহজাহান ও এ কে খান উজ্জল।
রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী।
আরও পড়ুন: একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে নেত্রকোণার খলিলুরের মৃত্যুদণ্ড
তিনি জানান, তিন আসামির মধ্যে জাহিদের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে পাভেল ও রুবেলকে খালাস দিয়েছেন।
২০১০ সালের ২৭ জুলাই সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামের আমিনুল ইসলাম রোমেলের ছেলে পাঁচ বছর বয়সী তাছিন মিয়া ওরফে অর্ণব পাশের পীরগাছা গ্রামের নানা নজরুল ইসলাম মধু মিয়ার বাড়ি বেড়াতে যায়।
তাছিনের নানার সঙ্গে পূর্ব বিরোধের জেরে জাহিদ, পাভেল ও রুবেল ওই দিন তাছিনকে অপহরণ করে। ওই রাতেই তাছিনের মাকে ফোন করে জহিদ ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। মুক্তিপণ না পেয়ে তারা তাছিনকে শ্বাসরোধে হত্যা করে ওই গ্রামের এক ব্যক্তির পুকুরের কচুরি পানার নিচে তাছিনের লাশ লুকিয়ে রাখেন তারা।
ঘটনার পরদিন ২৮ জুলাই তাছিনের বাবা সদর থানায় ১০ জনের নামে মামলা করেন। এ মামলায় ২০১৭ সালের ২৬ জানুয়ারি তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড দেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক রত্নেশ্বর ভট্টাচার্য। বাকি ৭ জনকে খালাস দেন।
বিচারিক আদালতে দণ্ডিতরা হলেন, গাইবন্ধা সদর উপজেলার সাহাপাড়া ইউনিয়নের খামার পীরগাছা গ্রামের সিদ্দিক মিয়ার ছেলে জাহিদ, একই গ্রামের মজিবর রহমানের ছেলে পাভেল ও একই উপজেলার বল্লমঝাড় ইউনিয়নের সোনাইডাঙ্গা গ্রামের বিল্টু মিয়ার ছেলে রুবেল।
পরে মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে পাঠানো হয়। পাশাপাশি আসামিরা বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল ও জেল আপিল করেন।
আরও পড়ুন: সাতক্ষীরায় স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড
ফরিদপুরে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে হত্যা, স্বামীর মৃত্যুদণ্ড
সাতক্ষীরায় স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড
সাতক্ষীরায় যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগে স্বামীকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। রবিবার দুপুরে সাতক্ষীরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এমজি আযম এ আদেশ দেন।
সাজাপ্রাপ্ত আসামি আজগার আলী (৫০) সাতক্ষীরা শহরের সুলতানপুরের এন্তাজ সরদারের ছেলে।
নিহত রেহেনা পারভিন উপজেলার গোবরদাড়ি গ্রামের আব্দুল মান্নানের মেয়ে।
আরও পড়ুন: একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে নেত্রকোণার খলিলুরের মৃত্যুদণ্ড
মামলার বিবরণে জানা যায়,১৯৯৪ সালে আজগার আলীর সঙ্গে রেহেনা পারভিনের বিয়ে হয়। বিয়ের ছয় মাস যেতে না যেতেই যৌতুকের দাবিতে রেহেনাকে প্রতিনিয়ত নির্যাতন করত আজগার আলী ও তার পরিবারের সদস্যরা। এক পর্যায়ে বাপের বাড়ি থেকে যৌতুকের ৮০ হাজার টাকা আনতে অপারগতা প্রকাশ করায় ১৯৯৭ সালের ২০ এপ্রিল বিকাল তিনটা থেকে চারটার মধ্যে বাড়িতে রেহেনাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।
এ ঘটনায় নিহতের চাচা শওকত আলী সরদার পরদিন বাদি হয়ে আজগার আলী, তার ভাই রুহুল কুদ্দুসসহ পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেন। আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে সমন জারির নির্দেশ দেন।
১৯৯৮ সালে আসামি আজগার আলী ও তার ভাই রুহুল কুদ্দুসের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে অভিযোগ গঠন করা হয়। পরবর্তীতে আসামি রুহুল কুদ্দুস মারা যান। আসামি আজগার আলী পলাতক আছেন।
মামলার নথি,১২ জন সাক্ষীর জেরা ও জবানবন্দি নেয়ার পরে পলাতক আসামি আজগার আলীর বিরুদ্ধে স্ত্রীকে নির্যাতন চালিয়ে হত্যার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়।
আসামি পলাতক থাকায় তার পক্ষে রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালন করেন অ্যাডভোকেট বসির। রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন বিশেষ পিপি অ্যাডভোকেট জহরুল হায়দার বাবু।
আরও পড়ুন: ফেনীতে ১৯ বছর পর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি গ্রেপ্তার
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হত্যা মামলায় ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড,১ জনের যাবজ্জীবন
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে নেত্রকোণার খলিলুরের মৃত্যুদণ্ড
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে নেত্রকোণার খলিলুর রহমানকে (পলাতক) মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ রায় দেন। এর আগে ১৮ জুলাই ট্রাইব্যুনাল শুনানি শেষে রায় ঘোষণার জন্য অপেক্ষমান (সিএভি) রাখার আদেশ দিয়েছিলেন।
ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউটর ছিলেন রানা দাশগুপ্ত ও রেজিয়া সুলতানা চমন। আসামিপক্ষে ছিলেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী গাজী এমএইচ তামিম।
প্রসিকিউটর রেজিয়া সুলতানা চমন বলেন, এ মামলার চার আসামির মধ্যে বিচার চলাকালেই তিনজনের মৃত্যু হয়। একজন আসামি বেঁচে আছেন। তিনিও পলাতক। আজ তাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রায় দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।
আরও পড়ুন: মানবতাবিরোধী অপরাধ: গফরগাঁওয়ের ৩ জনের আমৃত্যু, ৫ জনের ২০ বছর করে দণ্ড
২০১৭ সালের ৩০ জানুয়ারি রাজধানীর ধানমন্ডিতে তদন্ত সংস্থার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ মামলার আসামির বিরুদ্ধে চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
শুরুর দিকে এ মামলায় পাঁচ আসামি ছিল। এর মধ্যে এক আসামি রমজান আলী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
বাকি চারজন হলেন-নেত্রকোণার দুর্গাপূর থানার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের মৃত নবী হোসেনের ছেলে মো. খলিলুর রহমান, তার ভাই মো. আজিজুর রহমান, একই থানার আলমপুর ইউনিয়নের মৃত তোরাব আলীর ছেলে আশক আলী ও জানিরগাঁও ইউনিয়নের মৃত কদর আলীর ছেলে মো. শাহনেওয়াজ। তবে বিচার চলাকালে বাকি তিন আসামিও বিভিন্ন সময়ে মারা যান।
আরও পড়ুন: একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধ: মোহাম্মদপুরে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি গ্রেপ্তার
এ মামলার অভিযোগপত্রে আসামিদের বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালে দুর্গাপূর ও কলমাকান্দা থানা এলাকায় অবৈধ আটক, নির্যাতন, অপহরণ, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগে ধ্বংস করা, ধর্ষণের চেষ্টা, ধর্ষণ, হত্যা ও গণহত্যার অভিযোগ আনা হয়।
অভিযোগপত্রে ২২ জনকে হত্যা, একজনকে ধর্ষণ, একজনকে ধর্ষণের চেষ্টা, অপহৃত চারজনের মধ্যে দু’জনকে ক্যাম্পে নির্যাতন, ১৪/১৫টি বাড়িতে লুটপাট ও সাতটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
অভিযোগপত্র থেকে আরও জানা যায়, আসামিদের মধ্যে খলিলুর রহমান ইসলামী ছাত্র সংঘের সদস্য ছিলেন। যুদ্ধের সময় রাজাকার বাহিনীতে যোগ দেন। পরে চন্ডিগড় ইউনিয়নে আল বদর বাহিনীর কমান্ডার হন। পরবর্তীতে তিনি জামায়াতে ইসলামীর সমর্থক হন।
আরও পড়ুন: মানবতাবিরোধী অপরাধ: রাজধানী থেকে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি গ্রেপ্তার
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হত্যা মামলায় ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড,১ জনের যাবজ্জীবন
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যবসায়ী শরীফ খাঁ (৫০) হত্যা মামলায় তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড ও একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সোমবার দুপুরে জেলা ও দায়রা জজের আদালতের বিচারক শারমিন নিগার এই রায় প্রদান করেন।
মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত আসামিরা হলেন- আখাউড়া উপজেলার চানপুর উত্তর পাড়া গ্রামের জাকির খাঁ (৪০), মাহবুব খাঁ (৩০) ও গাজী খাঁ (৬৫)।
অপর আসামি আমানত খাঁকে (৬৫) যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন:দামুড়হুদায় মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে বাবা আটক
পাঁচজন আসামির মধ্যে আসামি আমির খাঁ মারা গেছে। মৃত্যদণ্ড প্রাপ্ত তিন আসামি পলাতক রয়েছেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৫ সালের ৬ আগস্ট আসামিরা সীমানা বিরোধের জের ধরে শরীফ খাঁকে আখাউড়া চানপুর উত্তর পাড়া নিজ বাড়ির পাশের রাস্তার ওপরে নির্মম ভাবে কুপিয়ে হত্যা করে।
এ ঘটনায় শরীফ খাঁর স্ত্রী মাজেদা বেগম পাঁচজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৫/৬ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন।
দীর্ঘ যুক্তি তর্ক শেষে রবিবার এই রায় ঘোষণা করেন আদালত।
আরও পড়ুন:পাবনায় ছুরিকাঘাতে যুবক নিহত,অভিযুক্ত আটক
মানববন্ধনে যোগ দিতে ঢাকায় আসার পথে সলিমপুরের ৬৩ বাসিন্দা আটক
খুলনায় কিশোরী সংঘবদ্ধ ধর্ষণ মামলায় ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড
খুলনার খালিশপুরে কিশোরী সংঘবদ্ধ ধর্ষণ মামলায় আদালত পাঁচ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। একই সঙ্গে তাদের ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।
বুধবার খুলনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ৩ এর বিচারক আব্দুস ছালাম খান এ রায় ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: কুমিল্লায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি গ্রেপ্তার
এ সময় দুই আসামি উপস্থিত থাকলেও তিনজন পলাতক রয়েছে।
সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- আলী আকবর ওরফে হৃদয়, মেহেদী হাসান ওরফে ইবু, সোহেল (পলতক), আব্দুল্লাহ (পলাতক), মোহন (পলাতক)।
রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ওই আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী স্পেশাল পিপি ফরিদ আহমেদ।
আদালত সূত্র জানায়, ২০১১ সালের ২৩ মার্চ সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ভিকটিম ১ নং ক্ষ্যামা বিহারী ক্যাম্পের একটি টিউবওয়েলে হাত মুখ ধুচ্ছিল। এ সময় একই ক্যাম্পের মো. মোহন খাবার কিনে দেয়ার কথা বলে শিয়া মসজিদের কাছে নিয়ে যায়। সেখানে আগে থেকে অপেক্ষারত মো. আলী আকবর তাকে জোর করে মোটরসাইকেলে তুলে নিয়ে চরেরহাট বাবুল কাউন্সিলরের ভেড়িবাধ কলা বাগানে নিয়ে যায়।
আরও পড়ুন: গোপালগঞ্জে হত্যা মামলায় ২ জনের মৃত্যুদণ্ড
এ সময় উপস্থিত অন্য আসামিরা ওই কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে। কিশোরী অসুস্থ হয়ে পড়লে সাড়ে ৯টায় আসামি আলী আকবর ১ নং ক্ষ্যামা বিহারী কলোনীর পাশে আরাবিয়া মসজিদের সামনে রাস্তার ওপর ফেলে যায়। এ সময় আসামি আলী আকবর কিশোরীকে ঘটনাটি কাউকে না জানানো জন্য হুমকি দেয়। কিশোরী বাড়ি এসে মায়ের কাছে ঘটনাটি খুলে বলে। পরবর্তীতে কিশোরীর মা বাদী হয়ে খালিশপুর থানায় মামলা করেন।
একই বছরের ২০ জুন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই কাজী রেজাউল করিম পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলা চলাকালীন আদালতে ১২ জন সাক্ষ্য দেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ফরিদ আহমেদ বলেন, কিশোরী বাংলাদেশে আটকে থাকা পাকিস্তানি বিহারীর ক্যাম্পের একজন সদস্যের মেয়ে। একটি ঐতিহাসিক রায় হয়েছে। উচ্চ আদালত যেন নিম্ন আদালতের সাজা বহাল রাখে সেই প্রত্যাশা করি।
বহাল থাকলে দেশে অপরাধ প্রবনতা কমে আসবে বলে তিনি মনে করেন।
আরও পড়ুন: মানিকগঞ্জে হত্যা মামলায় একজনের মৃত্যুদণ্ড
গোপালগঞ্জে হত্যা মামলায় ২ জনের মৃত্যুদণ্ড
গোপালগঞ্জে আলী আকবর হত্যা মামলায় দুজনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাদের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড দেয়া হয়েছে।
রবিবার বেলা সাড়ে ১২ টায় গোপালগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. আব্বাস উদ্দীন এ রায় দেন।
আরও পড়ুন: পাবনায় হত্যা মামলায় একজনের মৃত্যুদণ্ড
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- মাদারীপুরের রাজৈরের মজুমদারকান্দি গ্রামের জালাল মোল্লার ছেলে সুমন মোল্লা (৩৬) ও একই গ্রামের মান্নান ফরাজির ছেলে নুরু ফরাজি (৩৮)। তারা দুজনেই বর্তমানে পলাতক রয়েছেন।
নিহত আলী আকবর কোটালীপাড়ার বাগান উত্তরপাড় গ্রামের কাদের শেখের ছেলে। তিনি ভাড়ায় মোটরসাইকেলে যাত্রী বহন করতেন।
রায় ঘোষণার সময় আসামিরা পলাতক ছিলেন।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ২০০৮ সালের ২৩ মে সন্ধ্যা ৭টার সময় মামলার দুই আসামি কোটালীপাড়ার মহুয়া সিনেমা হলের সামনে থেকে মাদারীপুরের টেকেরহাট যাওয়ার উদ্দ্যেশে নিহত আকবরের মোটরসাইকেল ভাড়া করে।
আলী আকবর ভাড়া নিয়ে গেলে ছোট ভাই আলী আহম্মদ তার জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন। রাত সাড়ে ৮টার দিকে আলী আহম্মেদের মোবাইল ফোনে কল করলে বন্ধ পাওয়া যায়। পরে তারা বিভিন্ন জায়গা খোঁজাখুজি করেও তার সন্ধান পাওয়া যায়না।
আরও পড়ুন: মানিকগঞ্জে হত্যা মামলায় একজনের মৃত্যুদণ্ড
পরের দিন সকালে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার কাজুলিয়া ইউনিয়নের বাজুনিয়া–গান্দিয়াসুর সড়কের পাশে তার লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। পরে নিহতের পরিবারের লোক এসে আলী আকবরকে শনাক্ত করেন। ওই দিনেই নিহতের ছোট ভাই আলী আহম্মেদ বাদি হয়ে অজ্ঞাত আসামি করে কোটালিপাড়া থানায় মামলা করেন।
কোটালীপাড়া থানা পুলিশ মামলা তদন্ত করে ২০০৯ সালের ১৪ জানুয়ারি ওই দুই আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে।
দীর্ঘ শুনানির পর রবিবার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক অভিযঙুক্ত দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড ও এক লাখ টাকা অর্থদণ্ডের আদেশ দেন।
মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের সহকারি কৌসুঁলী অ্যাডভোকেট মো. শহিদুজ্জামান খান পিটু জানান, এই হত্যাকাণ্ডের রায়ে আমরা সন্তুষ্ট।
আরও পড়ুন: কুমিল্লায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি গ্রেপ্তার