মৃত্যুদণ্ড
মানিকগঞ্জে হত্যা মামলায় একজনের মৃত্যুদণ্ড
মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় আরিফ শিকদার হত্যা মামলায় একমাত্র আসামি হৃদয় হোসেনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়েছে।
সোমবার দুপুরে জনাকীর্ণ আদালতে মানিকগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ জয়শ্রী সমাদ্দার আসামি হৃদয়ের উপস্থিতিতে এ আদেশ দেন।
আরও পড়ুন: পাবনায় স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড
দণ্ডপ্রাপ্ত হৃদয় মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার ব্রাহ্মন্দী গ্রামের বাসিন্দা।
মামলার বিবরণে জানা যায়, চলতি বছরের ১২ মে সকালে জেলার সাটুরিয়া উপজেলার বেলতলা গ্রামের শ্যালো মেশিন ঘরে আরিফকে একা পেয়ে পূর্ব শত্রুতার জেরে ধান কাটার কাঁচি দিয়ে গলায় পোচ দেয়। এ সময় আরিফের চিৎকারে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে এসে হৃদয়কে ধরে ফেলে পুলিশে সোপর্দ করে। ঘটনাস্থলেই আরিফের মৃত্যু হয়।
পরে তদন্ত শেষে সাটুরিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জিয়াউল হাসান আদালতে হৃদয়কে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করে। সাক্ষী প্রমাণে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় আদালত আজ মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন।
আরও পড়ুন: পাবনায় হত্যা মামলায় একজনের মৃত্যুদণ্ড
চট্টগ্রামে নৌ ঘাঁটিতে বোমা হামলা: ৫ জেএমবি সদস্যের মৃত্যুদণ্ড
পাবনায় হত্যা মামলায় একজনের মৃত্যুদণ্ড
পাবনায় হত্যা মামলার এক আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রবিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পাবনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মিজানুর রহমান এই রায় ঘোষণা করেন।
একই সঙ্গে আসামিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়া ধর্ষণচেষ্টার দায়ে পাঁচ বছর কারাদণ্ড অনাদায়ে ১০ হাজার টাকা জরিমানা এবং লাশ গুমের দায়ে দুই বছর অনাদায়ে আরও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ডবল মার্ডার : বিশ্বনাথে একজনের মৃত্যুদণ্ড, ১১ জনের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত টুটুল সাঁথিয়া উপজেলার চর পাইকারহাটি গ্রামের আতাহার মুল্লিকের ছেলে। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
নিহত আলেয়া খাতুন একই গ্রামের আরদোশ মুল্লিকের স্ত্রী।
মামলার এজাহার থেকে জানা গেছে, আলেয়া খাতুন বাড়ির পাশে লাকড়ি কুড়াতে যান। এসময় টুটুল তাকে একা পেয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। পরে তাকে শাড়ি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে এবং ধান খেতে লুকিয়ে রাখে। এই ঘটনার ছয় দিন পর সন্দেহজনকভাবে টুটুলকে আটক করলে তিনি হত্যার কথা স্বীকার করে এবং লুকানো লাশ বের করে দেন।
আরও পড়ুন: নারায়ণগঞ্জে ধর্ষণের পর হত্যা, ৬ আসামির মৃত্যুদণ্ড
এ ঘটনায় আলেয়া খাতুনের মেয়ে সাবানা আক্তার বাদী হয়ে সাঁথিয়া থানায় টুটুলের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করেন। দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০১৮ সালের ৩১ জানুয়ারি আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়া শেষে এই রায় ঘোষণা করা হলো।
চট্টগ্রামে নৌ ঘাঁটিতে বোমা হামলা: ৫ জেএমবি সদস্যের মৃত্যুদণ্ড
চট্টগ্রামে নৌবাহিনীর ঈশা খাঁ ঘাঁটির ভেতরে বোমা হামলার ঘটনায় করা মামলায় ৫ জেএমবি সদস্যকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বুধবার সকালে চট্টগ্রামের সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনাল এই আদেশ দেন।
রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি পিপি মো. ফখরুদ্দিন চৌধুরী এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলো- জেএমবির সদস্য আবদুল মান্নান, রমজান আলী, বাবলু রহমান, আবদুল গাফফার ও নৌবাহিনীর সাবেক সদস্য এম সাখাওয়াত হোসেন।
আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০১৫ সালের ১৮ ডিসেম্বর ঈশা খাঁ ঘাঁটির ভেতরে জুমার নামাজের সময় পতেঙ্গা মসজিদে মুসল্লিদের ওপর দুটি বোমা (গ্রেনেড) নিক্ষেপ করেন আবদুল মান্নান। এ সময় ভীতসন্ত্রস্ত মুসল্লিরা ছোটাছুটি শুরু করলে হামলাকারী মান্নান ভিড়ের সঙ্গে মিশে যান। কিন্তু তার বাঁ হাতের কবজিতে ইলেকট্রিক সুইচ দেখে মুসল্লিরা তাকে হাতেনাতে ধরে ফেলেন। তখন আবদুল মান্নান আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণ ঘটানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
আরও পড়ুন: খুলনায় স্ত্রী ও কন্যা হত্যায় একজনের মৃত্যুদণ্ড
পতেঙ্গা মসজিদে হামলার ১০ মিনিট পর ঈশা খাঁ ঘাঁটির আরেকটি মসজিদে বোমা হামলার ঘটনা ঘটে। ওই মসজিদে জুমার নামাজ শুরু হলে রমজান আলী মসজিদের মাঝবরাবর দুটি বোমা (গ্রেনেড) নিক্ষেপ করে মুসল্লিদের সঙ্গে মিশে যান। পরে তাকেও ধরে ফেলা হয়। ওই দিন দুটি মসজিদে বোমা হামলায় নৌবাহিনীর কর্মকর্তাসহ ২৪ জন মুসল্লি আহত হন।
হামলার ৯ মাস পর ২০১৬ সালের ৩ সেপ্টেম্বর নৌবাহিনীর নেভাল প্রভোস্ট মার্শাল কমান্ডার এম আবু সাঈদ বাদী হয়ে সন্ত্রাসবিরোধী ও বিস্ফোরক আইনে চট্টগ্রাম নগরীর ইপিজেড থানায় মামলা করেন। ২২ মাস পর পুলিশ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
আরও পড়ুন: খুলনায় মাহেন্দ্রচালক হত্যায় ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড
গত বছরের নভেম্বরে এ মামলায় জেএমবির পাঁচ সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করার পর বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছিলেন আদালত।
উক্ত মামলার আসামি বাবলু রহমানকে ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর ঝিনাইদহ থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। অন্য মামলায় কারাগারে থাকা আবদুল গাফফারকে পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখান। অপর আসামি নৌবাহিনীর সাবেক সদস্য এম সাখাওয়াত হোসেন ঘটনার পরপরই পালিয়ে যান।
পাবনায় স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড
পাবনার সদর উপজেলার ভাঁড়ারায় যৌতুকের দাবিতে রুমানা পারভিন নামে এক নারীকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় তার স্বামী আব্দুল্লাহ ওরফে অকাতকে ফাঁসির আদেশ এবং এক লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে মামলার তিন আসামিকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার পাবনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মিজানুর রহমান এই রায় দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আব্দুল্লাহ ওরফে অকাত ভাঁড়ারা ইউনিয়নের পশ্চিম দামুয়া গ্রামের আব্দুল লতিফ প্রামাণিকের ছেলে। এবং নিহত রুমানা পারভিন একই গ্রামের রফিকুল ইসলামের মেয়ে।
রায়ের সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে মৃত্যুদণ্ড আসামিকে কারাগারে পাঠানো হয় এবং খালাসপ্রাপ্তদের মুক্তির আদেশ দেয়া হয়।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ২০১৩ সালে ভালোবেসে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই যৌতুক দাবি করে আসছিলেন স্বামী আব্দুল্লাহ। একাধিকবার টাকা দিলেও ঘটনার কয়েকদিন আগে আবারও যৌতুকের টাকা দাবি করেন। টাকা দিতে অস্বীকার করলে ২০১৪ সালের ৩০ অক্টোবর গভীর রাতে ঘরে থাকা বন্দুক দিয়ে রুমানাকে গুলি করে হত্যা করেন স্বামী।
এ ঘটনায় নিহতের বাবা রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে চারজনের বিরুদ্ধে পাবনা সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০১৫ সালের ১০ মার্চ চারজনের বিরুদ্ধেই অভিযোগপত্র দাখিল করেন পুলিশ। দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়া শেষে এই রায় ঘোষণা করা হলো।
আসামিপক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট এস এম ফরিদ উদ্দিন এবং রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন ট্রাইব্রুনালের বিশেষ পিপি অ্যাডভোকেট খন্দকার আব্দুর রকিব।
চট্টগ্রামে ব্যবসায়ী হত্যা মামলায় ২ জনের মৃত্যুদণ্ড
চট্টগ্রাম মহানগরীর ডবলমুরিং এলাকায় জালাল উদ্দীন সুলতান নামে এক ব্যবসায়ী হত্যা মামলায় দুই জনের মৃত্যুদণ্ড ও দুই জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রবিবার চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ শরীফুল ভূঁঞা এ রায় দেন।মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্তরা হলেন- আসামি কামাল হোসেন ও রাসেল।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- সুরমা আক্তার ও নীলু আক্তার রিয়া।বিষয়টি নিশ্চিত করে অতিরিক্ত পিপি মোহাম্মদ নোমান চৌধুরী বলেন, আদালত কামাল হোসেন ও রাসেল নামে দুজনকে মৃত্যুদণ্ড এবং লিলু আক্তার ও মোছা. সুরমা আক্তার নামের দুজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন। চারজনের মধ্যে আসামি নীলু জামিন নিয়ে পলাতক রয়েছেন। আর বাকিরা কারাগারে রয়েছেন।আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ২০ অক্টোবর ডবলমুরিং থানার সিডিএ আবাসিক এলাকার ব্যাংক কলোনীর উত্তর গেট থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় ব্যবসায়ী হাজী জালাল উদ্দীন সাগরের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ডবলমুরিং থানায় নিহতের ছেলে ইমাজ উদ্দিন বাদী হয়ে মামলা করেন। এরপর ২০১৭ সালের ২৮ মে আদালতে অভিযোগ পত্র জমা দেয় পুলিশ। ২০১৭ সালের ৯ সেপ্টেম্বর চার্জগঠন করা হয়। আদালতে ২২ জনের সাক্ষী শেষে আজ এ রায় দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: চৌগাছায় শিশু ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে ১ জনের মৃত্যুদণ্ড
সিরাজগঞ্জে মেয়ে হত্যার দায়ে বাবার মৃত্যুদণ্ড
সিরাজগঞ্জে মেয়ে হত্যার দায়ে বাবার মৃত্যুদণ্ড
সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলায় নয় মাসের মেয়ে শিশুকে পায়ের তলায় পিষে হত্যার দায়ে বাবা বদিউজ্জামানকে (২৮) মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সাথে তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ৭ বছর এবং আরও ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ডাদেশ দেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) দুপুরে সিরাজগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-১ আদালতের বিচারক বেগম সালমা খাতুন এ আদেশ দিয়েছেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত বদিউজ্জামান উপজেলার মুকন্দগাঁতী গ্রামের আব্দুল জলিলের ছেলে।
আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) অ্যাডভোকেট ওয়াজ করণী লকেট এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, বদিউজ্জামানের স্ত্রী সুন্দরী খাতুন প্রথমে একটি মেয়ে সন্তানের পর দ্বিতীয়বার আরও একটি মেয়ে সন্তান জন্ম দেয়। যার নাম রাখা হয় সুমাইয়া। সুমাইয়ার জন্মের পর থেকেই বদিউজ্জামান অসন্তুষ্ট ছিল। সে তার স্ত্রীকে মাঝে মধ্যেই ওই মেয়েকে মেরে ফেলবে বলে হুমকি দিয়ে আসছিল। একপর্যায়ে ২০১৯ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর স্ত্রীর অগোচরে নয় মাসের ঘুমন্ত শিশু সুমাইয়াকে পায়ের তলায় পিষে হত্যার পর বাড়ির পাশের ডোবায় ফেলে পালিয়ে যায় বদিউজ্জামান।
এ ঘটনায় শিশু সুমাইয়ার মা সুন্দরী খাতুন বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে আসামি বদিউজ্জামানকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। মামলার দীর্ঘ শুনানি শেষে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আসামির উপস্থিতিতে বৃহস্পতিবার দুপুরে বিচারক এই রায় দিয়েছেন।
পড়ুন: যুদ্ধাপরাধের দায়ে খুলনার ৬ জনের মৃত্যুদণ্ড
খুলনায় স্ত্রীর করা মামলায় স্বামীর ৭ বছর কারাদণ্ড
মিয়ানমারে রাজনৈতিক বন্দির মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে বিশ্বব্যাপী নিন্দার ঝড়
জান্তা সরকার চারজন রাজনৈতিক বন্দির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করায় মঙ্গলবার মিয়ানমারে তীব্র প্রতিবাদ বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকারও এর নিন্দা জানাচ্ছে। সেইসঙ্গে আশংকা করা হচ্ছে, সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখলের পর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটিকে যে সহিংসতা ও অস্থিরতা ঘিরে রেখেছে তা অবসানের প্রাথমিক প্রচেষ্টা বিফলে যাবে।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচিত নেত্রী অং সাং সুচির কাছ থেকে ক্ষমতা কেড়ে নেয়ার পর থেকে মিয়ানমারের সামরিক সরকারে বিরুদ্ধে হাজার হাজার বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ উঠেছে। কিন্ত সোমবারের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর বিগত এক দশকে প্রথমবারের মতো রাষ্ট্রীয় ফরমানে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
মিয়ানমারে নিযুক্ত জাতিসংঘের বিশেষ দূত নোয়েলিন হেজারের সঙ্গে মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফু্দ্দিন আব্দুল্লাহ কুয়ালামপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমরা মনে করি, এটি মানবতা বিরোধী অপরাধ।’
তিনি বলেন, চলতি সপ্তাহে কম্বোডিয়ায় শুরু হতে যাওয়া অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথইস্ট এশিয়ান নেশনস (আসিয়ান) ভুক্ত দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে এই মৃত্যুদণ্ডাদেশ কার্যকরের ওপর আলোকপাত করা হবে।
আরও পড়ুন: মিয়ানমারে ৪ গণতন্ত্রপন্থীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর
মিয়ানমার প্রভাবশালী গ্রুপ আশিয়ানের সদস্য। যে গ্রুপ গত বছর সকল পক্ষের সঙ্গে সংলাপে মিয়ানমারের ব্যাপারে পাঁচটি বিষয়ে ঐক্যমতে পৌঁছেছে। এগুলো হলো- মানবিক সহায়তার ব্যবস্থা করা, দ্রুত সহিংসতা বন্ধ এবং একজন বিশেষ দূতকে সকল পক্ষের সঙ্গে সাক্ষাৎ করানো।
এই মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের কথা উল্লেখ করে সাইফু্দ্দিন আব্দুল্লাহ বলেন, ‘আমরা দেখছি, এই পাঁচটি বিষয়কে সামনে রেখে যে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে জান্তা সরকার সেগুলোর সঙ্গে তামাশা করছে।’
হেজার বলেন, ‘জাতিসংঘ এই মৃত্যুদণ্ড কার্যকরকে একজন ব্যক্তির বেঁচে থাকার অধিকার, স্বাধীনতা ও নিরাপত্তাকে ক্ষুন্ন করেছে।’
ব্যাংককে মিয়ানমারের দূতাবাসের সামনে প্রবল বর্ষণের মধ্যে শত শত গণতন্ত্রপন্থী পতাকা উড়িয়ে শ্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ করছে।
আরও পড়ুন: মিয়ানমার বিষয়ক আসিয়ানের বিশেষ দূতকে সু চির সঙ্গে দেখা করার আহ্বান
জনাকীর্ণ বিক্ষোভ মিছিলে এক তরুণ একটি নীল মাইকে চিৎকার করে বলছে, জান্তা তার নৃশংস ক্ষমতা ব্যবহার করছে, বিক্ষোভকারীদের অনেকে অং সান সুচি ও মৃত্যুদণ্ড দেয়া চারজনের ছবি প্রদর্শন করছেন।’
দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে ফিয়ো জেয়া থো(৪১) সুচির দলের সাবেক একজন আইন প্রণেতা, কিয়ে মিন ইউ(৫৩)প্রবীণ গণতন্ত্রীপন্থী কর্মী যিনি কো জিমি নামে বেশ পরিচিত। তাদেরকে অভিযুক্ত করতে ও মৃত্যুদণ্ড দিতে সামরিক আদালত সব চেষ্টাই করেছে, এমনকি আপিলের কোনো সুযোগও রাখেনি।
মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে রায় কার্যকর করা হয়েছে, যা তাদের পরিবারের সদস্যদেরকেও বিস্মিত করেছে।
ফিয়ো জেয়া থো-এর মা কিন উইন মে সংবাদ সংস্থা এপিকে বলেন, তিনি শুক্রবার তার সন্তানের সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলেছেন এবং তিনি পড়ার জন্য চশমা, বই ও খরচের জন্য কিছু টাকা দিতে বলেছেন।
তিনি বলেন, ‘আমি খুবই মর্মাহত হই যখন দণ্ড কার্যকরের খবর শুনতে পেয়েছিলাম, আমি মনে করেছিলাম আরও কিছু সময় পাবো।’
কিন উইন বলেন, তিনি আশা করছেন তার সন্তান ও অন্যদের মৃত্যুকে বীরত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হবে।
তিনি বলেন, ‘আমি তাদের জন্য গর্বিত, তারা দেশের জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন।’
এই চার রাজনৈতিক নেতার দণ্ড কার্যকর তাৎক্ষণিকভাবে সারাবিশ্বে ভবিষ্যৎ মৃত্যুদণ্ড বন্ধের দাবি ওঠে এবং রাজনৈতিকভাবে বড় পরিসরে এর নিন্দা জানানো হয়।
আরও পড়ুন: মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ানো প্রয়োজন: জাতিসংঘ
খুলনায় স্ত্রী ও কন্যা হত্যায় একজনের মৃত্যুদণ্ড
খুলনার ডুমুরিয়ায় স্ত্রী ও কন্যাকে হত্যার দায়ে একজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার খুলনা সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মীর শফিকুল আলম এ রায় ঘোষণা করেন।
আসামি মাহবুবুর মোড়ল ডুমুরিয়া উপজেলার মঠবাড়িয়া এলাকার সিরাজ মোড়লের ছেলে। রায় ঘোষণার সময় তিনি পলাতক ছিলেন।
ওই আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি (পিপি) মো. এনামুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন: খুলনায় মাহেন্দ্রচালক হত্যায় ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড
আদালত সূত্র জানায়, হত্যাকাণ্ডের তিন বছর পূর্বে পারিবারিকভাবে মাহবুবুর মোড়লের সঙ্গে রেশমা বেগমের বিয়ে হয়। এর এক বছর পর থেকে তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহ দেখা দেয়। প্রায়ই মাহবুবুর স্ত্রীকে মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করত।
২০১৫ সালের ৩১ আগস্ট পারিবারিক বিষয় নিয়ে উভয়ের মধ্যে ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে আসামি মাহবুবুর সকাল সাড়ে ৯টার দিকে স্ত্রী রেশমাকে বাবার বাড়িতে যাওয়ার কথা বললে তিনি যেতে অস্বীকৃতি জানায়। এরপর ক্ষিপ্ত হয়ে রেশমা বেগম ও তাদের এক বছর বয়সী কন্যাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। তাদের দু’জনের মৃত্যু নিশ্চিত করে মাহবুব পালিয়ে যায়। আসামি মাহবুবুরের বাবা সিরাজ মোড়ল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রেশমার বাবাকে হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি জানান। তিনি তৎক্ষণিক পুলিশকে খবর দিলে তাদের লাশের সুরাতহাল রির্পোট তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য খুমেক হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
আরও পড়ুন: ফেনীতে স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড
২০১৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর নিহতের বাবা আবুল কালাম বাদী হয়ে ডুমুরিয়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মানবতাবিরোধী অপরাধ: রাজধানী থেকে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি গ্রেপ্তার
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এক পলাতক আসামিকে রাজধানীর কলাবাগান এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রবিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি এ কে আমিনুল হক ওরফে রজব আলীর বাড়ি (৬৯) কিশোরগঞ্জে।
র্যাব সদর দপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শনিবার রাতে রাজধানীর কলাবাগান এলাকায় অভিযান চালিয়ে র্যাবের গোয়েন্দা বাহিনী ও র্যাব-২ এর একটি দল রজব আলীকে আটক করে।
২০১৮ সালের ৫ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার জন্য রজব আলীকে মৃত্যুদণ্ড দেয়।
এ সময় ১৯৭১ সালে কিশোরগঞ্জ, ভৈরব, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও হবিগঞ্জে হত্যা, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, নির্যাতন ও অপহরণে দোষী সাব্যস্ত হন তিনি।
আরও পড়ুন: আড়াইহাজারে মা-ছেলেকে গলা কেটে হত্যা
তিনি ভৈরবে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে সহায়তা করার জন্য এলাকায় ‘আল-বদর’ বাহিনী গঠন করেন এবং কিশোরগঞ্জ জেলার কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৭১ সালের ১৮ ডিসেম্বর রজব আলী যৌথ বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেন।
১৯৭২ সালে তার বিরুদ্ধে অষ্টগ্রাম থানায় পাঁচটি মামলা হয়। এসব মামলায় তাকে ৪০ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। কিন্তু ১৯৮২ সালে তিনি ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান, কারণ তিনি মাত্র ১০ বছর কারাবাসের পর রাষ্ট্রপতির বিশেষ ক্ষমা পেয়েছিলেন।
পরে তিনি মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশে পালিয়ে গিয়ে কয়েকবার পাকিস্তানে যান। ১৯৯৭ সালে রজব আবার ঢাকায় আসেন।
২০১৫ সালের ২৭ ডিসেম্বর তদন্তকারী সংস্থা রজব আলীর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগপত্র জমা দেয়, তারপর থেকে তিনি পলাতক ছিলেন।
আরও পড়ুন: ভাইয়ের মৃত্যু, সাড়ে ৫ ঘণ্টার প্যারোলে মুক্ত হাজী সেলিম
চট্টগ্রামে স্বামীকে ফাঁসাতে ইয়াবা ক্রয়, নারী আটক
আহসান উল্লাহ’র শিক্ষার্থী সুবীর হত্যা দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড হাইকোর্টে বহাল
আহসান উল্লাহ ইউনিভার্সিটির ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী সুবীর চন্দ্র দাস হত্যা মামলায় পলাতক আসামি ফরহাদ হোসেন সিজু ও মো. হাসানের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে অপর দুই আসামি সফিক আহসান ওরফে রবিন ও শাওন ওরফে কামরুল হাসানের যাবজ্জীবন দণ্ড বহাল রাখা হয়েছে।
এ মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিলের শুনানি নিয়ে সোমবার বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তী ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
আদালতে আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মনসুরুল হক চৌধুরী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হারুন অর রশিদ ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল জাহিদ আহমদ হিরো।
২০১৩ সালের ১২ জানুয়ারি আহসান উল্লাহ ইউনিভার্সিটির ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সপ্তম সেমিস্টারের শিক্ষার্থী সুবীর চন্দ্র দাসকে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ডেকে নিয়ে যায় আসামিরা। পরে তাকে হত্যা করে লাশ গুম করার জন্য বুড়িগঙ্গা নদীতে ফেলে দেয়া হয়। এরপর ২১ জানুয়ারি সাভারের ভাকুর্তা ইউনিয়নের কোটালিয়াপাড়া এলাকার বুড়িগঙ্গা নদী থেকে সুবীরের লাশ উদ্ধার করা হয়।এ মামলার বিচার শেষে ২০১৬ সালের ২৬ অক্টোবর দুই জনের ফাঁসি ও দুই জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন বিচারিক আদালত। পরে নিয়ম অনুযায়ী এ মামলার ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে আসে। একই সঙ্গে কারাবন্দী যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি আপিল করেন।
আরও পড়ুন: ডবল মার্ডার : বিশ্বনাথে একজনের মৃত্যুদণ্ড, ১১ জনের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা
নারায়ণগঞ্জে ধর্ষণের পর হত্যা, ৬ আসামির মৃত্যুদণ্ড