কৃষিমন্ত্রী
বন্যায় বড় ক্ষতি হবেনা, মোকাবিলার ব্যাপক প্রস্তুতি রয়েছে: কৃষিমন্ত্রী
কৃষিমন্ত্রী ড . মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, এখন মাঠে বড় ধরনের কোন ফসল নেই। এ বন্যায় যতটুকু ক্ষতি হবে, সেটা পুষিয়ে নেয়া সম্ভব। সেজন্য ইতোমধ্যে ব্যাপক প্রস্তুতিও শুরু করা হয়েছে। ফলে এ বন্যায় বড় ধরনের ক্ষতি হবেনা।রবিবার সকালে ফার্মগেটের কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (কেআইবি) কনভেনশন হলে কৃষি তথ্য সার্ভিসের আয়োজনে ‘বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে খাদ্য নিরাপত্তায় কৃষি ও গণমাধ্যম’ বিষয়ক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।এ সময় কৃষিমন্ত্রী বলেন, বন্যায় আমন ধানের ক্ষতি হবেনা। সারাদেশে খুব বেশি বীজতলা করা হয়নি এখনো। যা হয়েছে সেটাও নষ্ট হলে খুব সমস্যা হবে না। আমাদের কাছে পর্যাপ্ত বীজ সংরক্ষিত আছে, পরবর্তীতে সেগুলো চাষীদের দেয়া হবে।তিনি বলেন, আউশের ক্ষতি একটু বেশি হতে পারে। এখন ১৩ লক্ষ হেক্টর আউশের টার্গেট করেছিলাম, লাগানো হয়েছে ১১ লক্ষ হেক্টর। এর মধ্যে ২২ হাজার হেক্টর এখন পর্যন্ত প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া তিন লাখ ৮৭ হাজার হেক্টরে বিভিন্ন শাকসবজি আছে, সেগুলোর কিছু ক্ষতি হবে।কৃষিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ দুর্যোগপ্রবণ দেশ। এই মৌসুমির ফসলগুলো প্রায় সময় ক্ষতির সম্মুখীন হয়। সেভাবে প্রস্তুতি কৃষকও রাখে। আমরাও প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। সে ক্ষতি পূরণ করব।তারপরও যেভাবে বৃষ্টি হচ্ছে, বন্যা ধেঁয়ে আসছে, আকস্মিক বড় ক্ষতি হবে কিনা সেটা জানিনা।
আরও পড়ুন: বিএনপির ষড়যন্ত্র রুখতে পাড়ায় পাড়ায় পাহারা বসান: কৃষিমন্ত্রীতিনি বলেন, এজন্য আমরা পর্যাপ্ত বরাদ্দ রেখেছি। যদি বড় কোন ক্ষয়ক্ষতি হয়। সেটা পুষিয়ে নেয়ার জন্য কৃষি মন্ত্রণালয় সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবে।এ সময় আব্দুর রাজ্জাক বলেন, নানাবিধ সমস্যার কারণে এ দেশে বহুবার খাদ্য সংকটের নজির রয়েছে। কিন্তু বর্তমান সরকারের ক্ষমতাকালীন সময়ে কখনও খাদ্যের অভাব হয়নি। এমনকি খাদ্যের জন্য হাহাকার ও করতে দেখা যায়নি কখনো।তিনি বলেন, বিশ্ব পরিস্থিতির কারণে সেটা এ দেশেও বিরূপ প্রভাব ফেলছে। তারপরও আমরা পরিকল্পিত কর্মসূচি নেয়ার চেষ্টা করছি। কৃষি উৎপাদনে যেন কোনো ব্যাঘাত না ঘটে সেজন্য এ বছর ২৮ হাজার কোটি টাকা সারে ভর্তুকি দিয়েছি। যেটা অন্যান্য দেশও পারেনি। সেজন্য বিশ্ববাজারে সারের অস্বাভাবিক দাম বাড়লেও এদেশে সারের পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে।সেমিনারে সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।সেমিনারে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অ্যামেরিটাস অধ্যাপক ও বাকৃবির সাবেক উপাচার্য এম. এ. সাত্তার মণ্ডল।
কৃষি সচিব মো. সায়েদুল ইসলামের সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধের উপর আলোচনা করেন চ্যানেল আইয়ের পরিচালক ও বার্তা প্রধান শাইখ সিরাজ, ঢাকা ট্রিবিউনের নির্বাহী সম্পাদক রিয়াজ আহমেদ, দৈনিক জনকণ্ঠের চিফ রিপোর্টার কাওসার রহমান, প্রথম আলোর বিশেষ প্রতিনিধি গোলাম ইফতেখার মাহমুদ।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন কৃষি তথ্য সার্ভিসের পরিচালক ড . সুরজিত সাহা রায়।
আরও পড়ুন: কৃষি পদ্ধতির যান্ত্রিকীকরণে কাজ করছে সরকার: কৃষিমন্ত্রী
ভোজ্যতেলের চাহিদার ৪০ ভাগ স্থানীয়ভাবে উৎপাদন করা হবে: কৃষিমন্ত্রী
ফল উৎপাদনে বিশ্বে সফলতার উদাহরণ বাংলাদেশ: কৃষিমন্ত্রী
বাংলাদেশ ফল উৎপাদনে বিশ্বে সফলতার উদাহরণ হয়ে উঠেছে বলে মন্তব্য করেছেন কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক।
তিনি বলেন, ‘এ মুহূর্তে বিশ্বে ফলের উৎপাদন বৃদ্ধির সর্বোচ্চ হারের রেকর্ড বাংলাদেশের, বছরে সাড়ে ১১ শতাংশ হারে ফল উৎপাদন বাড়ছে। কাঁঠাল উৎপাদনে বিশ্বে দ্বিতীয়, আমে সপ্তম, পেয়ারা উৎপাদনে অষ্টম, পেঁপেতে ১৪তম স্থানে আছে বাংলাদেশ। আর মৌসুমি ফল উৎপাদনে বিশ্বের শীর্ষ ১০টি দেশের তালিকায় নাম লিখিয়েছে বাংলাদেশ।’
সোমবার সচিবালয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে জাতীয় ফল মেলা-২০২২ উপলক্ষে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
এসময় কৃষিসচিব মো. সায়েদুল ইসলাম, মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সংস্থাপ্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।
মন্ত্রী বলেন, ২০০৮-০৯ সালে দেশে ফলের উৎপাদন ছিল প্রায় ১ কোটি টন, আর বর্তমানে ফলের উৎপাদন হচ্ছে প্রায় ১ কোটি ২২ লাখ টন। বিগত ১২ বছরে ফলের উৎপাদনের প্রবৃদ্ধি ২২ শতাংশ। এর ফলে বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু দানাজাতীয় শস্য গ্রহণের পরিমাণ কমেছে এবং মাথাপিছু ফল গ্রহণের পরিমাণ বেড়েছে। ২০০৬ সালে মাথাপিছু ফল গ্রহণের হার ছিল ৫৫ গ্রাম যা বেড়ে এখন হয়েছে ৮৫ গ্রাম।
মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ ও দূরদর্শী নেতৃত্বে বর্তমান কৃষিবান্ধব সরকারের সময়োপযোগী নীতি প্রণয়ন এবং তা যথাযথভাবে বাস্তবায়নের ফলে কৃষি উৎপাদন ও খাদ্য নিরাপত্তায় বাংলাদেশ অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ, আবাদযোগ্য জমির পরিমাণ হ্রাস, জনসংখ্যার আধিক্য, জমিতে লবণাক্ততা ইত্যাদি চ্যালেঞ্জের মধ্যেও বাংলাদেশ আজ দানাদার খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। পাশাপাশি ফল উৎপাদনেও এ সাফল্য অর্জিত হয়েছে।
পড়ুন: ভোজ্যতেলের চাহিদার ৪০ ভাগ স্থানীয়ভাবে উৎপাদন করা হবে: কৃষিমন্ত্রী
ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বর্তমান সরকার এখন সকল মানুষের জন্য নিরাপদ ও পুষ্টিসমৃদ্ধ খাদ্য নিশ্চিত করতে কাজ করছে। এক্ষেত্রে ফল ও ফলদ বৃক্ষের গুরুত্ব অপরিসীম। মানুষের পুষ্টিচাহিদা পূরণে ফলের উৎপাদন যেমন বৃদ্ধি করতে হবে তেমনি নিরাপদ ফল চাষে গুরুত্ব দিতে হবে। একইসাথে, ফলমূলকে পচনের (২৫-৪০ শতাংশ হার) হাত থেকে বাঁচাতে আমাদেরকে সংগ্রহত্তোর ব্যবস্থাপনা ও প্রক্রিয়াজাত সম্পর্কে অবগত থাকতে হবে।
তিনি বলেন, এসব বিষয়ে ফলের উৎপাদনকারী বা চাষি, পরিবহণকারী, প্রক্রিয়াজাতকারী, ভোক্তাসহ সকলের সচেতনতা অত্যন্ত প্রয়োজন। এ লক্ষ্যেই কৃষি মন্ত্রণালয় জাতীয় ফল মেলার আয়োজন করে থাকে।
মন্ত্রী জানান, গত ২ বছর করোনা মহামারির কারণে জাতীয় ফল মেলা করা সম্ভব হয় নি। এ বছর রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ চত্বরে আগামী ১৬ জুন থেকে জাতীয় ফল মেলা শুরু হবে। মেলা চলবে ১৮ তারিখ পর্যন্ত। এবারের প্রতিপাদ্য ‘বছরব্যাপী ফল চাষে, অর্থ পুষ্টি দুই-ই আসে’। মেলা প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। মেলায় আগত দর্শনার্থীরা ফল চাষের বিভিন্ন প্রযুক্তি সম্পর্কে জানতে এবং রাসায়নিকমুক্ত বিভিন্ন জাতের ফল ক্রয় করতে পারবেন। সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান আম,লিচু, কাঁঠালসহ বিভিন্ন দেশি ফলের প্রদর্শনীর মাধ্যমে মেলায় অংশগ্রহণ করবে।
পড়ুন: বিএনপিকে মোকাবিলার শক্তি আ’লীগের আছে: কৃষিমন্ত্রী
ভোজ্যতেলের চাহিদার ৪০ ভাগ স্থানীয়ভাবে উৎপাদন করা হবে: কৃষিমন্ত্রী
ভোজ্যতেলের আমদানি নির্ভরতা কমাতে চাহিদার শতকরা ৪০ ভাগ স্থানীয়ভাবে উৎপাদনের লক্ষ্যে তিন বছর মেয়াদী কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে কৃষি মন্ত্রণালয়।
মঙ্গলবার সচিবালয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ভোজ্যতেলের আমদানি নির্ভরতা কমাতে কর্মপরিকল্পনা বিষয়ক সভায় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ তথ্য জানান কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক।
তিনি বলেন, দেশে ভোজ্যতেলের চাহিদার প্রায় ৯০ ভাগ আমদানি করতে হয়। এ বছর দেশে ভোজ্যতেল নিয়ে সংকট চলছে। অনেক বেশি দাম দিয়ে বিদেশ থেকে তেল আমদানি করতে হচ্ছে। এতে একদিকে ভোক্তাদের কষ্ট হচ্ছে, অন্যদিকে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা বিদেশে চলে যাচ্ছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভেও চাপ পড়ছে। এ অবস্থায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী ভোজ্যতেলের আমদানি নির্ভরতা কমাতে আমরা তিন বছর মেয়াদি এ কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছি।
আরও পড়ুন: দেশে তেলের দাম কমবে: বাণিজ্যমন্ত্রী
মন্ত্রী বলেন, আমরা আগামী তিন বছরের মধ্যে স্থানীয়ভাবে ১০ লাখ টন তেল উৎপাদন করবো, যা চাহিদার শতকরা ৪০ ভাগ। এ পরিকল্পনা সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়ন করা গেলে এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা যাবে।
কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের মধ্যে সরিষা, তিল, বাদাম, সয়াবিন, সূর্যমুখীসহ তেল জাতীয় ফসলের আবাদ তিন গুণ বৃদ্ধি করে বর্তমানের ৮ লাখ ৬০ হেক্টর জমি থেকে ২৩ লাখ ৬০ হাজার হেক্টরে উন্নীত করা হবে। তেল জাতীয় ফসলের উৎপাদন বর্তমানের ১২ লাখ টন থেকে ২৯ লাখ টনে এবং তেলের উৎপাদন বর্তমানের তিন লাখ টন থেকে ১০ লাখ টনে উন্নীত করা হবে।
আরও পড়ুন: রাশিয়ার তেল আমদানি ৯০ শতাংশ কমাতে একমত ইইউ
এছাড়া সভায় জানান হয়, দেশে বছরে ভোজ্যতেলের চাহিদা রয়েছে প্রায় ২৪ লাখ টন। এর মধ্যে সরিষা, তিল ও সূর্যমুখী থেকে স্থানীয়ভাবে উৎপাদন হয় মাত্র তিন লাখ টন, যা চাহিদার শতকরা ১২ ভাগ। বাকি ভোজ্যতেল আমদানি করতে হয়।
২০২০-২১ অর্থবছরে তেল আমদানিতে ব্যয় হয়েছিল প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকা। আর এ বছর প্রথম ১০ মাসে ব্যয় হয়েছে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা।
কৃষি পদ্ধতির যান্ত্রিকীকরণে কাজ করছে সরকার: কৃষিমন্ত্রী
কৃষিমন্ত্রী ড. মুহম্মদ আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, উচ্চ ফলন পেতে এবং কৃষকদের কাজের চাপ কমাতে সরকার ঐতিহ্যবাহী কৃষি পদ্ধতির যান্ত্রিকীকরণে কাজ করছে।
তিনি বলেন, এ খাতের যান্ত্রিকীকরণের জন্য বিশাল ভর্তুকি দেয়া হয়। কৃষি প্রক্রিয়াকরণ, উন্নত ফসলের জাত এবং প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন ও জলবায়ু-সহনশীল কৃষির ওপর জোর দেয়া হচ্ছে।
রাজধানীর একটি হোটেলে বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান ২১০০- এর আন্তর্জাতিক সম্মেলনে ‘কৃষির রূপান্তর’ শীর্ষক সেশনে বক্তৃতায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: পতিত জমি চাষে সব ধরনের সহযোগিতা দেয়া হবে: কৃষিমন্ত্রী
দেশের কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তার চ্যালেঞ্জ তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, সীমিত সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহারের মাধ্যমে টেকসই খাদ্য নিরাপত্তায় আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি।
সরকার পতিত জমি পুনরুদ্ধার, খরা, লবণাক্ততা, ফসলের ঘনত্ব বৃদ্ধি, অধিক ফলনশীল জাত উদ্ভাবন ও চাষাবাদ, ভূ-পৃষ্ঠের পানির ব্যবহার বৃদ্ধি এবং জলবায়ু পরিবর্তন সহনশীল কৃষির মতো প্রতিকূল অবস্থায় ফসল চাষে কাজ করছে বলে জানান মন্ত্রী।
সেশনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নেদারল্যান্ডসের ওয়াজেনিনজেন ইউনিভার্সিটির রিসার্চ প্রেসিডেন্ট লুসি ফ্রেসকো।
আরও পড়ুন: ভোজ্যতেলের ওপর আমদানি নির্ভরতা কমাতে কর্মপরিকল্পনা গ্রহণের নির্দেশ কৃষিমন্ত্রীর
বিএনপির ষড়যন্ত্র রুখতে পাড়ায় পাড়ায় পাহারা বসান: কৃষিমন্ত্রী
বিএনপির অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্র রুখতে ঐক্যবদ্ধ থেকে পাড়ায় পাড়ায় পাহারা বসানোর জন্য তৃণমূলের নেতাকর্মীকে আহ্বান জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক।
তিনি বলেন, দেশের বিরুদ্ধে বিএনপি নানা কুৎসা ও অপপ্রচার চালাচ্ছে। তাদের ভাবটা এই, দেশ শ্রীলঙ্কা হয়ে যাচ্ছে, দুর্ভিক্ষ লেগে যাচ্ছে। তাদের এ অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্র রুখতে তৃণমূলের নেতাকর্মীদেরকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
বুধবার বিকালে কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের পুরাতন স্টেডিয়ামে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, তৃণমূলের নেতাকর্মীরাই দলের খুঁটি ও শক্তি। তারা ঐক্যবদ্ধ থাকলে ২০২৩ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয়কে ঠেকিয়ে রাখার কোন শক্তি নেই।
আরও পড়ুন: ভোজ্যতেলের ওপর আমদানি নির্ভরতা কমাতে কর্মপরিকল্পনা গ্রহণের নির্দেশ কৃষিমন্ত্রীর
কৃষিমন্ত্রী বলেন, বিএনপি আন্দোলনের হুমকি দিচ্ছে। তাদেরকে কোনভাবেই অহেতুক আন্দোলন করতে দেয়া হবে না। আন্দোলন করে অতীতে তারা সফল হয় নি, ভবিষ্যতেও কখনও সফল হবেন না।
সম্মেলনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সংসদ সদস্য মির্জা আজম, স্থানীয় সংসদ সদস্য সৈয়দা জাকিয়া নূর লিপি, আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানব সম্পদ বিষয়ক শামসুন নাহার চাঁপা, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মেহের আফরোজ চুমকি, সদস্য রিয়াজুল কবীর কাওছার, জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল ইসলাম টিটু, সদস্য মসিউর রহমান হুমায়ুন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। জেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. জিল্লুর রহমান উদ্বোধক ও সাধারণ সম্পাদক এম এ আফজল প্রধান বক্তা ছিলেন। সভাপতিত্ব করেন সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মো. আতাউর রহমান।
আরও পড়ুন: পতিত জমি চাষে সব ধরনের সহযোগিতা দেয়া হবে: কৃষিমন্ত্রী
পতিত জমিকে চাষের আওতায় আনা হচ্ছে: কৃষিমন্ত্রী
কম্বাইন হারভেস্টার তৈরির আগ্রহ জানিয়েছে ইয়ানমার ও এসিআই মটর্স
জাপানের কৃষিযন্ত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ইয়ানমার বাংলাদেশে ধান কাটার যন্ত্র বা কম্বাইন হারভেস্টার তৈরির কারখানা স্থাপনের আগ্রহ জানিয়েছে। দেশের এসিআই মটর্সের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে এ কারখানা স্থাপন করবে ইয়ানমার।
মঙ্গলবার সচিবালয়ে কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাকের সঙ্গে ইয়ানমারের আন্তর্জাতিক বিজনেস হেড সোগো ডেটের নেতৃত্বে ইয়ানমার ও এসিআই মটর্সের প্রতিনিধিদলের বৈঠকে এই আগ্রহ প্রকাশ করেন।
প্রতিনিধিদল জানান, দেশে ইয়ানমার ব্র্যান্ডের কম্বাইন হারভেস্টার অনেক জনপ্রিয় ও চাহিদাও বেশি। এটিকে বিবেচনায় নিয়ে স্থানীয়ভাবে কম্বাইন হারভেস্টার তৈরি ও সংযোজন করার উদ্যোগ নিয়েছে ইয়ানমার ও এসিআই মটর্স। ২০২৪ সালের শুরুতে স্থানীয়ভাবে উৎপাদনে যাওয়ার প্রাথমিক পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান আন্তর্জাতিক বিজনেস হেড সোগো ডেট।
আরও পড়ুন: হাওরের ৪১ শতাংশ ধান কাটা শেষ হয়েছে: কৃষি মন্ত্রণালয়
বৈঠকে কৃষিমন্ত্রী বলেন, দেশে কৃষি শ্রমিকের ঘাটতি দিন দিন প্রকট হচ্ছে। এ মুহূর্তে বোরো ধান কাটার শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। এছাড়া সনাতন পদ্ধতির কৃষিতে ফসল উৎপাদনে খরচ অনেক বেশি ও সময় সাপেক্ষ। সেজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কৃষি যান্ত্রিকীকরণে কাজ করছে। সারাদেশে ৫০ শতাংশ ও হাওর-উপকূলীয় এলাকায় ৭০ শতাংশ ভর্তুকিতে কৃষকদেরকে কৃষি যন্ত্রপাতি সরবরাহ করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমরা স্থানীয়ভাবে কৃষিযন্ত্র তৈরি ও সংযোজনে অত্যন্ত গুরুত্ব দিচ্ছি। ইয়ানমারের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। বাংলাদেশে কারখানা স্থাপনে ইয়ানমারকে সব ধরনের সহযোগিতা দেয়া হবে।
আরও পড়ুন: দেশে খাদ্য সংকট নেই, বিএনপি কোরাস গেয়ে চলেছে: কৃষিমন্ত্রী
বৈঠকে ইয়ানমারের আন্তর্জাতিক বিজনেস প্রতিনিধি ইতো সান, আন্তর্জাতিক সার্ভিস প্রতিনিধি মিৎসুমি সান, এসিআই মটর্সের নির্বাহী পরিচালক সুব্রত রঞ্জন দাশ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
পতিত জমি চাষে সব ধরনের সহযোগিতা দেয়া হবে: কৃষিমন্ত্রী
কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, খাদ্য নিরাপত্তাকে টেকসই ও আরও মজবুত করতে হলে চরাঞ্চল, উপকূলীয় লবণাক্ত এলাকা, পাহাড়ি প্রতিকূল এলাকার জমিকে চাষের আওতায় আনতে হবে। কোনো জমি অনাবাদি রাখা যাবে না। পতিত জমিতে যারা চাষ করবে তাদেরকে সকল ধরনের সহযোগিতা দেয়া হবে।
রবিবার নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার চর জব্বারে ও বিএডিসি খামারে সয়াবিন, ভুট্টা ও সূর্যমুখীর মাঠ পরিদর্শন এবং কৃষকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে কৃষিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
বিএডিসি’র চুক্তিবদ্ধ চাষীদের সয়াবিন বীজ ফসলের মাঠ পরিদর্শনকালে মন্ত্রী চরাঞ্চলে অবস্থিত অনাবাদি পতিত জমিতে তেল জাতীয় ফসল সয়াবিন, সুর্যমুখী ও সরিষার আবাদ বাড়ানোর জন্য পরামর্শ দেন।
তিনি বলেন, তেল জাতীয় ফসল আবাদে উৎপাদন খরচ কম এবং লাভ বেশি। এ বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় বীজ, সার, প্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ প্রদানসহ সকল প্রকার সহযোগিতা দেয়া হবে।
আরও পড়ুন: ভোজ্যতেলের ওপর আমদানি নির্ভরতা কমাতে কর্মপরিকল্পনা গ্রহণের নির্দেশ কৃষিমন্ত্রীর
চাষিদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, নোয়াখালীর অনাবাদী পতিত জমিগুলোকে আবাদের আওতায় আনতে আউশ ধানের উচ্চফলনশীল জাত উদ্ভাবন করেছে আমাদের বিজ্ঞানীরা। আপনারা স্বল্প জীবনকাল সম্পন্ন অধিক ফলনশীল এ জাতগুলো রবি ফসল কর্তনের পরপরই আবাদ করবেন। চাষাবাদের প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি ও সহযোগিতা দিতে বিএডিসি বীজ, সার ও সেচ ব্যবস্থার উন্নয়নে কাজ করছে। জাতগুলো কৃষকের কাছে সম্প্রসারণের জন্য কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর প্রতিটি ইউনিয়ন পর্যায়ে কাজ করছে।
মন্ত্রী বলেন, লবণাক্ততা উপকূলীয় এলাকার একটি অন্যতম সমস্যা। লবণাক্ত জমিতে চাষোপযোগী জাত উদ্ভাবিত হয়েছে। লবণাক্ত এলাকায় লাউ, সীম, তরমুজ, সূর্যমুখী, মিষ্টি আলু ও সয়াবিন ফসলের ফলন ভাল হয়। এ ফসলগুলোর ক্রপিং প্যাটার্নে অন্তর্ভুক্ত করে চর এলাকার প্রত্যেকটি জমি আবাদের আওতায় আনতে হবে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বর্তমান সরকার কৃষি যান্ত্রিকীকরণ, আধুনিকীকরণ ও বাণিজ্যিকীকরণ এর ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেছে।
এসময় কৃষিসচিব মো. সায়েদুল ইসলাম, বিএডিসির সদস্য পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান, পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক শাহজাহান কবীর, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বেনজীর আলম, সুগারক্রপ রিসার্চ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক আমজাদ হোসেন, বিএডিসির সুবর্ণচর প্রকল্পের পরিচালক আজিম উদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: পতিত জমিকে চাষের আওতায় আনা হচ্ছে: কৃষিমন্ত্রী
হাওরের ফসলের ঝুঁকি কমাতে কাজ চলছে: কৃষিমন্ত্রী
ভোজ্যতেলের ওপর আমদানি নির্ভরতা কমাতে কর্মপরিকল্পনা গ্রহণের নির্দেশ কৃষিমন্ত্রীর
ভোজ্যতেলের ওপর আমদানি নির্ভরতা কমাতে তেলবীজের উৎপাদন বাড়ানোর জন্য গবেষণা ও উৎপাদন বাড়ানোর কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করতে কৃষি কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক।
তিনি বলেন, ভোজ্যতেলের ৯০ শতাংশই আমদানি করতে হয়। আমরা আমদানির অর্ধেকও উৎপাদন করতে পারি কি না সেটা দেখতে হবে, আমাদের সে সক্ষমতা রয়েছে। কোথায় কোথায় সরিষার উৎপাদন বাড়ানো যায় সেটা নির্ধারণ করতে হবে।
বুধবার বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের (বিএআরসি) মিলনায়তনে কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশন আয়োজিত ‘কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশন এর সাম্প্রতিক অর্জন ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক এ নির্দেশনা দেন।
ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘ভোজ্যতেল আমদানিতে বছরে দুই বিলিয়ন ডলারের বেশি খরচ হচ্ছে। ডাল আমদানি করতে হচ্ছে ছয়-সাত লাখ টন, তাতেও প্রচুর অর্থ বিদেশে চলে যাচ্ছে। আমাদের দেশে পটুয়াখালীসহ বিভিন্ন চরাঞ্চলে ডাল ও তেল জাতীয় ফসলের উৎপাদন হচ্ছে। ধানের উৎপাদনকে ক্ষতিগ্রস্ত না করে অতিরিক্ত ফসল হিসেবে আরও কোথায় কোথায় এসব ফসলের উৎপাদন করা যায় এসব খুঁজে বের করতে হবে এবং একই সঙ্গে গবেষণা বাড়াতে হবে।’
আরও পড়ুন: পতিত জমিকে চাষের আওতায় আনা হচ্ছে: কৃষিমন্ত্রী
মন্ত্রী আরও বলেন, এক্সটেনশন সিস্টেম ডেভেলপ করতে হবে, যাতে দ্রুত এর উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। এটি করতে পারলে আগামী ৩-৪ বছরের মধ্যে ভোজ্যতেলের চাহিদার ৪০ ভাগ স্থানীয়ভাবে উৎপাদন করা সম্ভব হবে।
তবে এসব পণ্যের উৎপাদান বাড়াতে হলে ভালো মানের গবেষণার দরকার বলে জানান ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক।
তিনি বলেন, সরকারের গবেষণার জন্য পর্যাপ্ত বরাদ্দ দিচ্ছে। এ টাকা দিয়ে কি মানের গবেষণা হচ্ছে, কোন কোন জার্নালে প্রকাশিত হচ্ছে, সেগুলো মানসম্পন্ন কিনা এ বিষয়গুলো দেখা হবে। শুধু গবেষণা করলে হবেনা, মাঠ পর্যায়ে তা কি ফলাফল বয়ে আনছে সে বিষয়টি বিবেচনা করতে হবে।
পেঁয়াজের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, কদিন আগেই পেঁয়াজের ভরা মৌসুমে কৃষকরা দাম পাচ্ছিল না। এখন একটু দাম বৃদ্ধির কারণে কৃষকরা একটু মূল্য পাচ্ছে। কৃষককে দাম পাওয়ার জন্যই আমদানি কিছুটা বন্ধ রাখা হয়েছে। কারণ, কৃষকেরা উৎপাদন খরচ তুলতে না পারলে আগামী বছর পেঁয়াজ চাষে আগ্রহী হবে না।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কৃষিসচিব মো. সায়েদুল ইসলাম বলেন, দেশে এখনো গবেষণা সরকারি পর্যায়েই সীমাবদ্ধ। বিদেশে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি খাতেরও ভূমিকা আছে। বেসরকারি খাতেও গবেষণা বাড়াতে হবে।
বিএআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ মো. বখতিয়ারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক জীবন কৃষ্ণ বিশ্বাস।
আরও পড়ুন: হাওরের ফসলের ঝুঁকি কমাতে কাজ চলছে: কৃষিমন্ত্রী
দেশে খাদ্য সংকটের বিএনপির আশা পূরণ হবে না: কৃষিমন্ত্রী
পতিত জমিকে চাষের আওতায় আনা হচ্ছে: কৃষিমন্ত্রী
বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলাসহ উপকূলের পতিত জমিকে চাষের আওতায় আনতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো.আব্দুর রাজ্জাক।তিনি বলেন, এ অঞ্চলের বেশির ভাগ জমিতে বছরে একটি মাত্র ফসল আমন ধান হয়; আর বাকী সময় পতিত থাকে। এ বিপুল পতিত জমিকে চাষের আওতায় আনতে সরকার নিরলস কাজ করছে। ইতোমধ্যে দেশের বিজ্ঞানীরা উন্নত জাতের ধান, মুগ ডাল, তরমুজসহ বিভিন্ন ফসলের জাত উদ্ভাবন করেছে। এর মধ্যে লবণসহিষ্ণু জাতও রয়েছে। এসব জাতের দ্রুত সম্প্রসারণ করা হচ্ছে।সোমবার বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার বাকেরকাঠি ও নন্দপাড়া গ্রামে পতিত জমিতে বোরো ধান আবাদের ফসল কর্তন উৎসব ও মাঠ দিবসে কৃষিমন্ত্রী এসব কথা বলেন। বাকেরকাঠি গ্রামে প্রায় ১০০ বিঘা জমিতে প্রথমবারের মতো পতিত জমিতে বোরো ধান আবাদ হয়েছে। লো-লিফট পাম্পের (এলএলপি) মাধ্যমে সেচের ব্যবস্থা করে কৃষকদেরকে চাষে উদ্বুদ্ধ করেছে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট। অনুষ্ঠানে কৃষকেরা লো-লিফট পাম্পের অভাব, খাল না থাকা ও পাওয়ার টিলার না থাকাকে জমি পতিত থাকার ক্ষেত্রে মূল সমস্যা হিসেবে মন্ত্রীর সামনে তুলে ধরেন।
আরও পড়ুন: আগামী নির্বাচন হবে সুষ্ঠ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য: কৃষিমন্ত্রীএ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, লো-লিফট পাম্প, খাল খনন-পুনঃখনন ও পাওয়ার টিলার সরবারহ করার জন্য দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। স্থানীয় প্রশাসন, কৃষি মন্ত্রণালয় ও পানি উন্নয়ন বোর্ডকে সম্পৃক্ত করে এ সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নেয়া হবে।
তিনি বলেন, এটি করতে পারলে এসব এলাকার কৃষিতে বিরাট পরিবর্তন আসবে। পতিত জমি চাষের আওতায় আসবে। অন্যদিকে এক ফসলি জমি দুই-তিন ফসলি জমিতে রূপান্তরিত হবে। এর মাধ্যমে বরিশাল পুনরায় বাংলাদেশের শস্যভাণ্ডারে পরিণত হবে।পরে দুপুরে কৃষিমন্ত্রী পটুয়াখালীর সদর উপজেলার বদরপুর ও করমজাতলা গ্রামে মুগ ডালের মাঠ পরিদর্শন করেন।
এসময় তিনি বলেন, পটুয়াখালী, ভোলাসহ এ অঞ্চলে মুগ ডালের সম্ভাবনা অনেক। এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে সরকার কৃষকদেরকে উন্নতমানের বীজসহ সব ধরণের সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত উন্নত জাতের বারি মুগ ডাল-৬ এর উৎপাদনশীলতা অনেক ভাল। বিঘাতে ৫-৬ মণ। এ বছর শুধু পটুয়াখালী জেলাতেই প্রায় এক লাখ হেক্টর জমিতে মুগ ডাল চাষ হয়েছে। আর পটুয়াখালী ও ভোলা দুই জেলা মিলে বছরে দুই লাখ টন মুগ ডাল উৎপাদন হয়। এই মুগ ডালের চাষকে আরও ছড়িয়ে দেয়া হবে।মুগ ডালের মাড়াই সমস্যা সমাধানের জন্য যন্ত্র দেয়া হবে বলে জানান মন্ত্রী।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে আমাদের বিজ্ঞানীরা মাড়াইযন্ত্র তৈরি করেছে, যার দাম ৬০-৭০ হাজার টাকা। আগামী বছর ভর্তুকি মূল্যে এ যন্ত্র কৃষকদের দেয়া হবে। এর ফলে দাম পড়বে ২৫-৩০ হাজার টাকা। এতে কৃষকদের উৎপাদন খরচ কম পড়বে ও তারা লাভবান হবেন।
অনুষ্ঠানে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. রুহুল আমিন তালুকদার, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক শাহজাহান কবীর প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: হাওরের ফসলের ঝুঁকি কমাতে কাজ চলছে: কৃষিমন্ত্রী
দেশে খাদ্য সংকটের বিএনপির আশা পূরণ হবে না: কৃষিমন্ত্রী
রাজনৈতিক অঙ্গন ফের উত্তপ্ত হবে: আশঙ্কা কৃষিমন্ত্রীর
রাজনৈতিক অঙ্গন ফের উত্তপ্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মো. আব্দুর রাজ্জাক।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত কানাডার রাষ্ট্রদূত লিলি নিকোলাসের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের কাছে এ আশঙ্কা প্রকাশ করেন মন্ত্রী।
তিনি বলেন, রোজার পর আবার রাজনৈতিক অঙ্গন উত্তপ্ত হবে বলে মনে হচ্ছে। আমরা মনে করি যাই হোক দেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড থেমে থাকবে না। যে সরকারই আসুক রাজনৈতিক পরিস্থিতি যাই হোক, ইনশাআল্লাহ দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা রয়েছে। ২০১৫ সাল থেকে দেশে ইনশাল্লাহ কোনো হরতাল নেই, ধর্মঘট নেই রাজনৈতিক অঙ্গন ওইভাবে উত্তপ্তও হয়নি। ব্যবসা-বাণিজ্য সবকিছুই স্বাভাবিকভাবে চলেছে।'
আরও পড়ুন: হাওরের ফসলের ঝুঁকি কমাতে কাজ চলছে: কৃষিমন্ত্রী
রাজনৈতিক ক্ষেত্রে উত্তপ্তের কথা যেটা বলেছি, তারা (বিএনপি) আন্দোলনের হুমকি দিচ্ছে। তারা ধর্মঘট করবে, বাংলাদেশকে অচল করে দিবে। তারা বলেছে, বাংলাদেশে ঈদ উদযাপনের মতো পরিবেশ নেই। আমি সম্পূর্ণভাবে তাদের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করছি। তারা হয়তো মনে করতে পারে তাদের জন্য সুন্দরভাবেই ঈদ উদযাপনের পরিবেশ নেই।
কৃষিমন্ত্রী আরও বলেন, 'আমি শুনলাম আমার পাশের গ্রামে ১৯টা গরু জবাই করেছে ঈদের আগে। চিন্তা করা যায় না? গ্রামের দোকানগুলোতে এতো ভিড় যে মানুষ লাইন ধরে জিনিসপত্র কিনছে, কেউ দামাদামি করলে বলছে, একটু সরে যান, আর একজন গ্রাহক আছে। এত বিক্রি হয়েছে যে, দামাদামি করার সুযোগ ছিল না।'
করোনা মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পরেও দেশের অর্থনীতি ভাল অবস্থায় রয়েছে জানিয়ে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, 'তারা (বিএনপি) যতই আন্দোলনের ডাক দিক, হরতালের ডাক ডাক দিক, কেউ তাদের হরতালে যোগ দেবে না। ২০১৫ সালের পরে তারা সফল হয়নি, আগামী দিনেও হরতালের ডাক দিয়ে তারা সফল হবে না। কারণ তাদের পায়ের নিচে মাটি নেই। সাধারণ মানুষের সমর্থন নেই। আমার মনে হয় না, আন্দোলন সংগ্রাম করে এই সরকারের পতন ঘটানো যাবে।'
তিনি বলেন, করোনা মহামারির কারণে অনেক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড, ব্যবসা-বাণিজ্য থমকে আছে। আমি বিশ্বাস করি, বাংলাদেশের যে রাজনৈতিক পরিস্থিতি রয়েছে এই পরিস্থিতিতে অতীতে যেভাবে এগোচ্ছিল সেভাবে এগুতে পারবো। আমরা বলি আমরা উন্নয়নের মহাসড়কে। এই মহাসড়কের যাত্রা আরও গতিময় আরও বেগবান হবে, সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি।'
আরও পড়ুন: বিএনপিকে গরীব-দুঃখী মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান কৃষিমন্ত্রীর
আগামী ডিসেম্বরে আওয়ামী লীগের সম্মেলন হচ্ছে- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুর রাজ্জাক বলেন, 'আওয়ামী লীগ এ দেশের প্রাচীনতম বৃহত্তম রাজনৈতিক দল। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাক বা না থাক এটি এমন একটি দল এটি দেশের বিভিন্ন জাতীয় ইস্যু নিয়ে সবসময় তৎপর থাকে। সুতরাং আমাদের কর্মকাণ্ড কখনও বসে থাকে না, এটি একটি ডাইনামিক রাজনৈতিক দল। সবসময় বিভিন্ন বিষয়ে তাদের তৎপরতা অব্যাহত রাখে। সম্মেলন করা আমাদের একটি রুটিন। প্রত্যেক তিন বছর পর পর আমরা সম্মেলন করি। সম্মেলনের জন্য যে সকল প্রস্তুতি দরকার, ঘোষণাপত্র, গঠনতন্ত্র এগুলোকে যুগোপযোগী করি, সেটা আমরা করব। আর কাউন্সিলরা নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করবে।