কৃষক
গোয়ালন্দে বৃষ্টির পানিতে ডুবছে কৃষকের স্বপ্ন
ঘূর্ণিঝড় ‘জাওয়াদ’ এর প্রভাবে টানা দুই দিনের বৃষ্টিতে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলায় কৃষি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সরিষা, মসুর, খেসারী, গম, পেঁয়াজ, রসুন, টমেটোসহ রোপন করা বিভিন্ন ধরনের কৃষি ফসলের খেতে হাঁটুপানি জমে আছে। একই সাথে ৬০ ভাগ আমন ধান ঘরে তুললেও অনেকে ধান কেটে মাঠে শুকানোর জন্য রাখলে সেগুলো এখন পানির মধ্যে।
প্রাথমিকভাবে প্রায় ২ হাজার ৩৯ হেক্টর জমির কৃষি ফসল ও শাকসবজি পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে বলে জেলা কৃষি বিভাগ বলছে। এ অবস্থায় কৃষকদের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পরবর্তী করণীয় নিয়ে সরকারি নির্দেশনা এলে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
সরেজমিন, গতকাল বুধবার এবং আগের দিন মঙ্গলবার গোয়ালন্দ উপজেলার উজানচর, দৌলতদিয়া ও দেবগ্রাম ইউনিয়নের চরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এসব চিত্র দেখা যায়।
বুধবার উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের নতুন পাড়ায় দেখা যায়, কৃষক সিদ্দিক সরদার, জাহিদ সরদার, আব্দুল বিশ্বাস নিজ নিজ সবজি ও ফসলি খেত থেকে পানি বের করার চেষ্টা করছেন। কিন্তু আশপাশের খেতগুলোতেও পানি থাকায় চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েন এই পানি কোথায় গড়াবেন।
কৃষক জাহিদ সরদার জানান, তিনি এবছর প্রায় দুই বিঘা জমিতে বাঁধাকপির আবাদ করেছেন। এতে তার ব্যয় হয়েছে প্রায় ৬০ হাজার টাকা। সেই সাথে তিনি সরিষা, বেগুনসহ অন্যান্য সবিজর আবাদও করেছেন। কিন্তু পুরো এক বিঘা জমির বাঁধাকপি খেতে পানি জমে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। এই পানি বের করারও কোন উপায় নেই।
কৃষক সিদ্দিক সরদার জানান, তিনি নিজেও কয়েক বিঘা জমিতে বেগুন ও বাঁধাকপির আবাদ করেছেন। মুষলধারে বৃষ্টিতে তারও অনেক ক্ষতি হয়েছে। বৃষ্টির পানি জমে থাকায় বাঁধাকপি খেত ও সরিষার খেত সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: বৃষ্টির পানিতে তলিয়েছে ফরিদপুরে ২০ হাজার হেক্টর ফসলের খেত
ভোলায় ধান কাটা নিয়ে কৃষককে কুপিয়ে হত্যা, গ্রেপ্তার ১
ভোলায় ধানকাটাকে কেন্দ্র করে মো. রুহুল আমিন বেপারী (৫৭) নামে এক কৃষককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে সদর উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডে ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনায় পুলিশ এক নারীকে গ্রেপ্তার করেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানা যায়, নিহত মো. রুহুল আমিন বেপারীর সাথে তার আত্মীয় (বেয়াই ) কাসেমের চৌকিদারের আগে থেকে বিরোধ ছিল। বর্তমানে ওই জমি রুহুল আমিনের ভোগ দখলে। দুপুরের দিকে বাড়ি থেকে ভাত নিয়ে খেতে যাচ্ছিল রুহুল আমিন। পথে ধান খেতের মধ্যেই রুহুল আমিনের ওপর কাশেম, তার স্ত্রী জরিনা বেগম, দুই ছেলে নোমান ও আলামিন হামলা চালায়। তারা রুহুল আমিনকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করে। চিৎকার শুনে পরে স্থানীয় ও স্বজনরা মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ভোলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। কিন্তু সন্ধ্যার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
ভোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনায়েত হোসেন জানান, জমির নিয়ে বিরোধের জেরে কৃষক মো. রুহুল আমিন বেপারী নিহত হয়েছে। তারা খবর পেয়ে ইলিশা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. ফরিদ ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে কাশেমের স্ত্রী জরিনা বেগমকে আটক করেছে। এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
এদিকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ দলের ভোলা জেলা শাখার সম্পাদক মাওলানা তরিকুল ইসলাম জানান, নিহত কৃষক মো. রুহুল আমিন বেপারী রাজাপুর ইউনিয়ন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সভাপতি। এ ঘটনায় দ্রুত আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে বুধবার সকালে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ভোলা শহরে মানববন্ধন কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: মামলার সাক্ষী হওয়ায় চাচাকে কুপিয়ে হত্যা!
ইউপি নির্বাচন: নবীনগরে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থককে কুপিয়ে হত্যা
বিশ্বনাথে যুবককে কুপিয়ে হত্যা
বাগেরহাটে নিখোঁজের ২ দিন পর কৃষকের লাশ উদ্ধার
জেলার কচুয়ায় নিখোঁজের দুদিন পর মৎস্যঘের থেকে এক কৃষকের লাশ উদ্ধার করা হয়ছে। শনিবার দুপুরে জেলার কচুয়া উপজেলার বারুখালী গ্রামের একটি মৎস্যঘের থেকে ওই কৃষকের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত মিঠু শেখ (৪৬) বাগেরহাট জেলার কচুয়া উপজেলার পশ্চিম বারুইখালী গ্রামের মোনতাজ শেখের ছেলে।
কচুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.মনিরুল ইসলাম জানান, স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে মাঠের মধ্যে একটি মৎস্যঘের থেকে মিঠু শেখের লাশ উদ্ধার করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে গলায় মাপলার পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করা হয়। লাশের সুরতহাল শেষ করে ময়নাতদন্তের জন্য বাগেরহাট সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
হত্যাকারীদের ধরতে এবং হত্যার কারণ উদঘাটন করতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে বলে ওসি জানান।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে সেপটিক ট্যাংক থেকে নারীর লাশ উদ্ধার
গাজীপুরে মা-মেয়ের লাশ উদ্ধার
বাংলাদেশি কৃষকের ঘরের পুত্রবধূ হলেন মেক্সিকান তরুণী
প্রেমের টানে পরিবার, সমাজ, নির্বিশেষে দেশ ছেড়ে বাংলাদেশে পাড়ি জমিয়েছেন মেক্সিকান তরুণী গাডিয়াস নায়েলি টরিবিও মুরোলেস। ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে মোছাম্মদ লাইলী আক্তার নাম নিয়ে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন জামালপুর জেলার সরিষাবাড়ীর পোগলদিঘা গ্রামের কৃষক নজরুল ইসলামের ছেলে রবিউল হাসান রুমানের সাথে।
রুমান ময়মনসিংহের রুমডো ইনস্টিটিউট অব মডার্ন টেকনোলজি থেকে মেকানিকালে ডিপ্লোমা শেষ করে বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং করছেন।
তিনি জানান, ২০১৯ সালে মেক্সিকান এই তরুণীর সাথে ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয় হয় তার। প্রথমে তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব, পরে গভীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রেমের টানেই মেক্সিকোর পোত্রবলা শহরের ব্যবসায়ী গ্রেগ্রোরিও টরিবিও’র ৩২ বছর বয়সী মেয়ে গাডিয়াস নায়েলি টরিবিও মুরোলেস রবিউল হাসান রুমানকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। রুমান তার প্রস্তাবে রাজি হয়। প্রেমের শেষ পরিণতি বিয়ে করতে মেক্সিকান এই তরুণী ২১ নভেম্বর সকাল ৮টার দিকে বাংলাদেশে আসেন। রুমান তার পরিবারের লোকজনসহ হযরত শাহ জালাল (র.) বিমান বন্দরে গাডিয়াস নায়েলিকে স্বাগত জানান এবং বিমান বন্দরের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে ওই দিনই ঢাকায় নোটারী পাবলিক অ্যাডভোকেট মো. মজিবর রহমানের কার্যালয়ে এভিডেভিটের মাধ্যমে খ্রিস্টান ধর্ম ত্যাগ করে মোছাম্মদ লাইলী আক্তার নাম ধারণ করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণের পর সেখানে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। ২১ নভেম্বর দিবাগত রাতে স্বপরিবারে সরিষাবাড়ী নিজ বাড়িতে এসে পৌঁছায় তারা।
আরও পড়ুন: ভালোবাসা দিবসে ‘প্রেমিকার’ সাথে অভিমান করে যুবকের আত্মহত্যা
রুমান আরও জানান, নায়েলিকে পেয়ে খুবই আনন্দিত, তিনি বিশ্বাসই করতে পারেনি গাডিয়াস নায়েলি টরিবিও মুরোলেস তার ভালোবাসার টানে বাংলাদেশে আসবে। নায়েলি খুবই সহজ-সরল ও শান্ত প্রকৃতির মেয়ে। এছাড়া বিদেশি মেয়েকে ছেলের বউ হিসেবে পেয়ে রুমানের পরিবারের লোকজন খুবই খুশি।
গানের তালে ধান কেটেছে কুষ্টিয়ার কৃষকরা
কৃষি কাজে কৃষকদের আরও উদ্বুদ্ধ করার পাশাপাশি চিত্ত-বিনোদনের লক্ষ্যে কুষ্টিয়ার মিরপুরে ধান কাটা অবস্থায় গানের প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত উপজেলার আমলা ইউনিয়নের অঞ্জনগাছী গ্রামের মাঠে ‘কৃষিবিডি’ এর উদ্যোগে এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।
আরও পড়ুন: আনন্দে কৃষক, জগন্নাথপুরে আমন ধান কাটা শুরু
এ প্রতিযোগিতায় উক্ত মাঠে আমন ধান কাটারত পাঁচ জন কৃষক অংশ গ্রহণ করেন। এর মধ্যে তিন জন বিজয়ী হন। প্রতিযোগিতায় স্থানীয়, নিজেদের লেখাসহ মাঠে কাজ করার সময় গাওয়া বিভিন্ন ধরনের গান পরিবেশন করেন প্রতিযোগিরা।
অনুষ্ঠানে কৃষিবিডির পরিচালক জাহিদ হাসানের পরিচালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে পুরষ্কার বিতরণ করেন কুষ্টিয়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সচিব কাঞ্চন কুমার।
কৃষক বিনোদনের ব্যতিক্রমধর্মী এ প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করেন কৃষক ইউনুস আলী, কৃষি শ্রমিক লিংকন আলী দ্বিতীয় ও কৃষক মিজানুর রহমান তৃতীয় স্থান অধিকার করেন।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় আমন ধান সংগ্রহ নিয়ে শঙ্কা
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আমলা প্রেসক্লাবের সভাপতি হাবিবুর রহমান, সমাজসেবক কামরুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। পরে বিজয়ীদের মাঝে পুরষ্কার হিসেবে বাঁশের তৈরি মাথাল, ধান কাটার কাস্তে ও গামছা তুলে দেন আমন্ত্রিত অতিথিরা।
ডিজেলের দাম বাড়ানোয় কৃষি ক্ষেত্রে প্রভাব পড়বে: মন্ত্রী
ডিজেলের দাম বাড়ানোয় কৃষি ক্ষেত্রে প্রভাব পড়বে বলে স্বীকার করেছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক।
ডিজেলের দাম বাড়ানোর প্রভাব কৃষি ক্ষেত্রে পড়বে কি না, এক্ষেত্রে সরকার কৃষকদের কীভাবে সহয়তা করবে-সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘প্রভাব তো অবশ্যই পড়বে, এটা অস্বীকার করার কোন উপায় নেই।’
বুধবার (২৪ নভেম্বর) সচিবালয়ে নেদারল্যান্ড ও যুক্তরাজ্য সফর পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী তিনি এ কথা জানান।
আব্দুর রাজ্জাক বলেন, এমনি আমাদের কৃষকরা নানান সমস্যায় জর্জরিত। পিক সিজনে তারা ফসলের দাম পায় না। সেজন্য কৃষিপণ্য প্রসেসিংয়ের কথা আমরা বলছি, বাণিজ্যিকীকরণ কিংবা বিদেশে রপ্তানি বাজারে গিয়ে তারা যাতে ভালো দাম পায়, এগুলোর উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
আরও পড়ুন: ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধির অজুহাতে পণ্যের দাম বাড়ানোর সুযোগ নেই: তথ্যমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী এই বিষয়টার উপরেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। তবে আমরা একটা বিষয়ে নিশ্চয়তা দিতে চাই যে সারের দাম ২৫০/২৩০/২৭০ ডলার ছিল সেটা এখন ৮০০/৯০০ ডলার। চারগুণ বেড়েছে। আমরা সারের ক্ষেত্রে ৯০০ কোটি টাকা সাবসিডি (ভর্তুকি) দেই। এটা এবার মনে হয় ২০ হাজার কোটি টাকা দিতে হবে। তবে প্রধানমন্ত্রী এখন পর্যন্ত আমাদের বলেছেন, উনি সারের দাম বাড়াবেন না।'
৪০ শতাংশ সেচ মেশিন বিদ্যুতে চলে জানিয়ে তিনি বলেন,‘তাদের খুব অসুবিধা হবে না। কিন্তু ডিজেলের ক্ষেত্রে সমস্যা হবে। দেখা যাক দামের ট্রেন্ডটা তো কমের দিকে আছে, যদি কমে সরকারও ডিজেলের দাম কমাবে।
এসময় কৃষিমন্ত্রী জানান, পেঁয়াজের উন্নত জাত উৎপাদনে ইউরোপের দেশ নেদারল্যান্ডস সহায়তা দেবে।
আরও পড়ুন: সকলের জন্য পুষ্টিজাতীয় খাবার নিশ্চিত করাই বড় চ্যালেঞ্জ: কৃষিমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে পেঁয়াজ সংরক্ষণের সমস্যা রয়েছে। সংরক্ষণের অভাবে অনেক পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এজন্য পেঁয়াজের উন্নত জাত উৎপাদন ও সংরক্ষণকাল বৃদ্ধির প্রযুক্তিগত সহায়তা দেবে নেদারল্যান্ডস।’
মন্ত্রী বলেন, 'তাদের সহায়তা পেলে আশা করছি ইনশাল্লাহ গ্রীষ্মকালেও বাংলাদেশে পেঁয়াজ উৎপাদন হবে।
বিশ্বনাথে মাঠে মাঠে শীতকালীন সবজি
সিলেটের বিশ্বনাথে মাঠে মাঠে এখন শীতকালীন সবজির ঘ্রাণ। এই মৌসুমের সবজি চাষে ব্যস্ত হয়ে উঠছেন স্থানীয় কৃষকরা। উপজেলায় এবার শীতের আগাম সবজি চাষের ধুম পড়েছিল। কেউ কেউ আরও আগেই সবজি চাষে নেমেছিলেন।
এরই মধ্যে মুলা, শিম, বাঁধাকপি, আলু, লাল শাক, ফুলকপি, টমেটো, শসা, গাজরসহ নানা ধরনের সবজি বাজারে উঠতে শুরু করেছে।দাম একটু চড়া তারপরও লোকজন নতুন সবজি ক্রয় করছেন। আগাম সবজি বাজারে তুলতে পারলে বেশি টাকা আয় করা সম্ভব সেই চিন্তা মাথায় রেখে চারা তৈরি ও সবজি চাষে ব্যস্ত চাষিরা।
আরও পড়ুন: পুষ্টিগুণ অটুট রেখে শীতকালীন সবজি খাওয়ার সঠিক উপায়উপজেলার খাজাঞ্চি ও অলঙ্কারী ইউনিয়নে শীতকালিন সবজি বেশি চাষাবাদ হয়। ফলে এসব ইউনিয়নে সবজি চাষিরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। উপজেলার চাহিদা মিটিয়ে সিলেটের বাজারেও বিশ্বনাথের সবজি বিক্রি হয়। কিন্তু দাম বেড়েছে দিগুণ -তিনগুণ।বেশি দামের আশায় প্রতিবছরের মত এবারও অনেক চাষি বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে আগাম জাতের টমেটো, বেগুন, বাধাঁকপি, ফুলকপির বীজ বপন করেছিলেন। তবে বৃষ্টিপাত কম হওয়ার কারণে বীজতলা নষ্ট হয়নি।উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, বিশ্বনাথে এ বছর ১৭০০ হেক্টর জমিতে সবজি চাষ করার লক্ষমাত্রা থাকলেও এ পর্যন্ত মাত্র ৬৩০ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। তবে আবাদ চলমান রয়েছে। যেটা গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি।
আরও পড়ুন: ধোঁয়া-ওঠা গরম গরম পিঠা খাওয়ার ধুম পড়েছে খুলনায়
উপজেলার কর্মকলাপতি, মাধবপুর, রহিমপুর, হরিপুর গ্রামের কয়েকজন কৃষক জানান, শীতকালীন সবজি চাষ শুরু হয়েছে কয়েকদিন আগেই। যারা পিছিয়ে পড়েছেন তারা এখন চাষে তোড়জোড় শুরু করেছেন।
চাষিরা জানান, সবজি চাষে এখন খরচ বাড়ছে। কীটনাশক, সার, শ্রমিক, সেচ খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষকরা চাষাবাদে কিছুটা হিমশিম খাচ্ছেন।উপজেলার হরিপুর গ্রামের সবজি চাষি উস্তার আলী জানান, শীতের আমেজ শুরু হয়েছে সে কারণে শীতকালীন শাকসবজি চাষাবাদ করছি।তেলিকোনা গ্রামের সবজি চাষি নুরুল হক বলেন, ‘বৃষ্টির কারণে আমাদের সবজি চারা কিছুটা নষ্ট হলেও ফলন ভালো হয়েছে। লাল শাকঁ, আগাম জাতের চিচিঙ্গা, ঝিঁঙ্গার আবাদ করেছি। আশা করি লাভবান হবো।’খাজাঞ্চি ইউপি চেয়ারম্যান তালুকদার গিয়াস উদ্দিন বলেন, আমাদের ইউনিয়নে সব চেয়ে বেশি সবজি চাষাবাদ হয়। এখানে আগাম জাতের সবজি চাষ হয়েছে। বর্তমানে এলাকার সবজি চাষিরা ব্যস্ত সময় পার করছেন।
আরও পড়ুন: খুলনায় ৮০০ কোটি টাকার তরমুজ বাণিজ্যের সম্ভাবনাউপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কনক চন্দ্র রায় বলেন, সিলেটের অন্যান্য উপজেলার তুলনায় বিশ্বনাথে টমেটোর চাষ বেশি হয়। প্রতি হেক্টরে ২০ টনেরও বেশি ফলন হয়েছে এ অঞ্চলে।
তিনি বলেন, অতি বৃষ্টির কারণে আগাম চাষ হয়নি। তবে শীতকালীন সবজি চাষে কোন প্রভাব পড়বে না। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মাধ্যমে চাষিদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ অব্যাহত আছে।
কৃষি কর্মকর্তা বলেন, ‘সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় ইতোমধ্যে চাষিদের মাঝে প্রশিক্ষণ, প্রদর্শনী ক্ষেত, বিনামূল্যে সবজির বীজ ও সার দেয়া হয়েছে এবং পর্যায়ক্রমে দেয়া হবে।’
ঝিনাইদহে প্রতিপক্ষের লাঠির আঘাতে কৃষক নিহত
ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলায় রাজহাঁস মারাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের লাঠির আঘাতে এক কৃষক নিহত হয়েছে। শুক্রবার নাটিমা ইউনিয়নের নস্তিপুর গ্রামে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত মফিজ মোল্লা (৪৫) ওই গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক মোল্লার ছেলে।
নস্তিপুর গ্রামের ইউপি সদস্য বশির উদ্দিন জানান, নিহত মফিজ মোল্লার প্রতিবেশী কামালের রাজহাঁস মারাকে কেন্দ্র করে শুক্রবার সন্ধ্যায় মফিজ ও কামালের পরিবারের মাঝে ঝগড়া হয়। এসময় মফিজ সেখানে গিয়ে বিষয়টি সমাধান করতে গেলে কামাল ও তার পরিবারের লোকজন তাকে লাঠি দিয়ে মারপিট করে। ঠেকাতে গেলে মফিজের ভাই লাবুকেও মারধর করে তারা। ঘটনাস্থল থেকে তাদের উদ্ধার করে মহেশপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে মফিজের শারিরীক অবস্থার অবনতি হলে যশোরে রেফার্ড করা হয়।যশোর থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
মহেশপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। নিহতের লাশ এখনও এলাকায় পৌঁছায়নি। পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করা হলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আরও পড়ুন: শ্রীবরদীতে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে কৃষক নিহত
ঝিনাইদহে দু’পক্ষের সংঘর্ষে কৃষক নিহত
ভারতের তিন বিতর্কিত কৃষি আইন বাতিল ঘোষণা মোদির
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিতর্কিত তিন কৃষি আইন বাতিলের ঘোষণা দিয়েছেন। শুক্রবার সকালে জাতির উদ্দেশে এক ভাষণে মোদি বলেছেন, ‘আজ আমি আপনাদের ও সমগ্র দেশকে বলতে এসেছি যে, আমরা তিন কৃষি আইন বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
এই আইনগুলো বাতিলের দাবিতে গত একবছরেরও বেশি সময় ধরে দেশটির হাজার হাজার কৃষক রাজধানী দিল্লির উপকণ্ঠে অবস্থান করছে।
এসময় তিনি বিক্ষোভকারী কৃষকদের নিজেদের বাড়ি ও মাঠে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘এই মাসের শেষের দিকে শুরু হওয়া সংসদ অধিবেশনে, আমরা এই তিন কৃষি আইন বাতিল করার জন্য যাবতীয় সাংবিধানিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করব।’
মোদি বলেন, তার সরকার এই দেশের কৃষকদের তিন কৃষি আইনের সুবিধা বোঝানোর যথাসাধ্য চেষ্টা করেছে, কিন্তু কাঙ্খিত ফলাফল অর্জন করতে ব্যর্থ হয়েছে।
আরও পড়ুন: টিকা নেয়া পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত হলো ভারত
গুরু নানক জয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে মোদি এ ঘোষণা দিলেন। গুরু নানক জয়ন্তী শিখ ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা গুরু নানকের স্মরণে আয়োজিত শিখ সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় উৎসব।
মোদির এই ঘোষণার পর ভারতীয় কিষান ইউনিয়নের একটি অংশের নেতা জোগিন্দর সিং উগ্রাহান গণমাধ্যমকে বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি একটি ভাল পদক্ষেপ নিলেন।
এছাড়া ভারতের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের নেতা রাহুল গান্ধী এক টুইটে লিখেছেন, ‘দেশের কৃষকরা তাদের সত্যাগ্রহের মাধ্যমে অহংকারকে পরাজিত করেছে। জয় হিন্দ, জয় হিন্দ’র কৃষক’।
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালও এক টুইটে লিখেছেন, ‘প্রকাশ দিবসে দুর্দান্ত খবর। ৭০০ জনেরও বেশি কৃষক প্রাণ হারিয়েছেন। তাদের আত্মত্যাগ বেঁচে থাকবে। ভবিষ্যত প্রজন্ম মনে রাখবে কীভাবে কৃষকরা অধিকার আদায়ের জন্য তাদের সব দিয়েছিলেন। ভারতের কৃষকদের স্যালুট।’
২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে তিন কৃষি আইনের কথা ঘোষণা দেয় ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। এরপরই সারা দেশে, বিশেষ করে উত্তর ভারতের তিনটি রাজ্য পাঞ্জাব, হরিয়ানা ও উত্তর প্রদেশে তীব্র প্রতিবাদের সূত্রপাত হয়।
যদিও ভারত সরকার বলেছিল, এই কৃষি আইনগুলোর মাধ্যমে কৃষকরা তাদের পণ্য আরও বেশি দামে বিক্রি করার সুযোগ পাবে। অন্যদিকে বিক্ষোভকারী কৃষকেরা আশঙ্কা করেছিল, এই আইনগুলি বেসরকারী মুনাফাভোগীদের স্বার্থ প্রতিষ্ঠিত হবে,তারা ক্ষতির মুখে পড়বে।
আরও পড়ুন: মোদির সাবেক মন্ত্রী বাবুল এখন মমতার দলে!
মোদির জন্য আম পাঠালেন প্রধানমন্ত্রী
হাওরে পানি কমার সাথে সাথে বীজতলা তৈরির কাজে ব্যস্ত কৃষকরা
হাওরের পানি কমার সাথে সাথে বোরো ধানের বীজতলা তৈরি ও চারা উৎপাদনের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন সুনামগঞ্জের কৃষকরা। তবে গত বছরের চেয়ে এবার বীজ ধানের মূল্য বেশি হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন কৃষকরা।
এ বছর জেলায় হাইব্রিড, স্থানীয় উফশী মিলে ১০ হাজার ৬১২ হেক্টর বীজতলা তৈরির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি বিভাগ। আর বোরো চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ২২ হাজার ৬৯৫ হেক্টর জমি।
কৃষি বিপণন কার্যালয় জানায়, এবার হাইব্রিড, স্থানীয় উফশী মিলে ৪ হাজার ৩৭৯ মেট্রিক টন বীজ ধান বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে। বোরো মৌসুমের শুরুতে দিনাজপুর, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, যশোর, কুমিল্লা, পাবনা ঠাকুরগাঁও, কিশোরগঞ্জ ও সিলেটের সরকারি বীজ প্রক্রিয়াজাত কেন্দ্র থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার বস্তা বীজ নিয়ে সুনামগঞ্জ শহরের মল্লিকপুর এলাকায় আসছেন ট্রাকচালকরা। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে সংগৃহীত বীজ ধান বড় ট্রাক থেকে ছোট ট্রাকের মাধ্যমে ২০২ জন বীজ ডিলারের মাধ্যমে জেলার বিভিন্ন এলাকায় পৌঁছে দেয়া হবে।
আরও পড়ুন: বজ্রপাত ঠেকাতে হাওরে হবে এক হাজার ছাউনি
সদর উপজেলার হাছনবসত গ্রামের কৃষক আনফর আলী বলেন, ‘গেলবার ব্রি ২৮ জাতের বীজ ধানের চাষি পর্যায়ে মূল্য ছিল ৩৯০ টাকা, আর এবার ৫০০ থেকে ৫৩০ টাকা। ব্রি ২৯ জাতের দাম ছিল ৩৮০ টাকা এবার ৪৯০ থেকে ৫২০ টাকা।’
একই গ্রামের কৃষক মনির উদ্দিন বলেন, ‘ইবার (এবার) হালি ধানের দাম বেশি। সরকার ডিজেলের দামও বাড়াইছে (বাড়িয়েছে)। গেলবার থাকি (থেকে) এবার গিরস্থির (চাষের) খরচ বেশি হইবো। বৈশাখ মাসে ধানের দাম পাওয়া যায় না। কার্তিক মাসে গিরস্থির লাইগ্গা (জন্য) ভারাল (গোলা) খালি কইরা ধান বিক্রি করছি। এভাবে চললে আগামীতে কেউ ক্ষেতকিষি (চাষ) করতো না।’
বীজ ডিলার সাহেদ আলী জানান, বোরো মৌসুম শুরু হওয়ায় বীজ ধানের চাহিদা বেশি।
সুনামগঞ্জ বীজ বিপনণ কেন্দ্রের উপসহকারী পরিচালক আমিনুর রহমান বলেন, এখন বোরো মৌসুম শুরু হয়েছে। সারা জেলার ডিলারদের সুনামগঞ্জ থেকে বীজ সরবরাহ করা হচ্ছে। আজ পর্যন্ত ১০১ জন ডিলার বীজ উত্তোলন করেছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. ফরিদুল হাসান বলেন, এতো আগে বীজ ধান ফেললে কোল্ড ইনজুরির শিকার হতে পারে। তাই আমরা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদের এখন বীজ তলায় বীজ ফেলতে নিষেধ করছি। আরও ১৫ দিন পর বীজ ফেলার আহ্বান জানিয়েছি।
জেলায় ৩ লাখ ৫০ হাজার ছোট, বড়, মাঝারি ও প্রান্তিক কৃষক রয়েছেন বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: নিকলী হাওরে নিখোঁজ পর্যটকের লাশ উদ্ধার
হাওর অঞ্চলের মৎস্যসম্পদ উন্নয়নে পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে: মন্ত্রী