কৃষক
নাটোরে কৃষকের বুদ্ধিমত্তায় দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে বাংলাবান্ধা এক্সপ্রেস
নাটোরের নলডাঙ্গায় সাইদুল ইসলাম নামে এক কৃষকের বুদ্ধিমত্তায় বড় ধরনের দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে বাংলাবান্ধা এক্সপ্রেস ট্রেন।
এলাকাবাসী জানায়, বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে পঞ্চগড় থেকে রাজশাহীগামী বাংলাবান্ধা এক্সপ্রেস ট্রেনটি নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার মাধনগর স্টেশন অভিমুখে আসতে থাকে।
এ সময় স্টেশনের উত্তর প্রান্তে একটি অননুমোদিত রেল ক্রসিংয়ের সময় ধানবাহী একটি ট্রলি রেললাইনের ওপর আটকে যায়।
ঘটনাটি দেখতে পেয়ে স্থানীয় কৃষক সাইদুল ইসলাম তার গলার লাল গামছা খুলে ট্রেনটিকে থামার সংকেত দেয়। পরে এলাকার আরও কিছু লোক তার সঙ্গে যোগ দেয়।
আরও পড়ুন: নাটোরে প্রতিপক্ষের হামলায় ৭ আ.লীগ নেতাকর্মী আহত
বিষয়টি বুঝতে পেরে চালক ট্রেনটি থামিয়ে দেন। পরে স্থানীয় লোকজন ট্রলিটি অপসারণ করলে ট্রেনটি স্টেশনে প্রবেশ করে।
মাধনগর স্টেশন মাস্টার আব্দুল হামিদ জানান, উভয়পক্ষের সচেতনতার কারণে বড় ধরনের দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে ট্রেন ও ট্রলিটি।
আরও পড়ুন: নাটোরে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় কলেজছাত্রের মৃত্যু
‘শাম্মাম’ চাষে সফল ঠাকুরগাঁওয়ের কৃষক মণ্ডল
দেশের উত্তরের কৃষিতে স্বনির্ভর জেলা ঠাকুরগাঁও। এ জেলার আবহাওয়া অন্য জেলার তুলনায় আলাদা বলে প্রায় সব ধরনের শস্য, সবজি ও ফলের আবাদ হয় এখানে।
এছাড়া এখানকার উৎপাদিত খাদ্য শস্য ও সবজিসহ নানা রকম ফলের গুণগত মানও যথেষ্ট ভালো।
এবার মধ্যপ্রাচ্যের ফল শাম্মাম চাষে নতুন করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন ঠাকুরগাঁওয়ের কৃষক মণ্ডল ইসলাম।
কৃষক মণ্ডল ইসলাম জানান, ইউটিউবে ভিডিও দেখে শাম্মাম চাষ শুরু করেন তিনি। এটির চাহিদা ও বাজার মূল্য ভালো। মূলত লাভের আশায় তিনি এই ফলটি চাষ শুরু করেন। তিন বিঘা জমিতে এক লাখ ২০ হাজার টাকা খরচ করে পাঁচ লাখ টাকা আয়ের আশা করেছেন।
তিনি আরও জানান, আগে ঢাকার কারওয়ান বাজারে নিয়ে ‘শাম্মাম’ বিক্রি করতেন, এখন খেত থেকেই পাইকার এসে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।
মণ্ডল ইসলামের খেত থেকে ‘শাম্মাম’ কিনতে আসা পাইকার মইদুল বলেন, এ বছর প্রথমবার আমি শাম্মাম ফলের ব্যবসায় যুক্ত হয়েছি। এখনও স্থানীয়ভাবে এই ফলের বাজার তৈরি হয়নি। তবে নতুন এই ফলটি ঢাকার বাজারে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। শাম্মাম বা রকমেলন ফলটি সর্বনিম্ন ৫০০ গ্রাম থেকে চার কেজি পর্যন্ত ওজন হয়। ফলটি প্রতি কেজি ১২০ থেকে ১৫০ টাকা দরে বিক্রি হয় বাজারে। আমি ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজিতে খেত থেকে এই ফলটি কিনেছি।
ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক কৃষিবিদ সিরাজুল ইসলাম জানান, কৃষকরা এই ফলটির চাষ সম্প্রসারণ করলে তারা যেমন অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবেন, অন্যদিকে পুষ্টির চাহিদাও পুরণ হবে। বাজারেও যুক্ত হবে এই নতুন ফলটির। আমাদের দেশে এটি নতুন হলেও সুপারশপ গুলোতে এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। সদর উপজেলার এক কৃষক এর আগেও ‘শাম্মাম’ চাষ করে ভালো মূল্য ও সাড়া পেয়েছেন। ঠাকুরগাঁওয়ের আবহাওয়া ‘শাম্মাম’ চাষে উপযোগী।
এছাড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে কৃষকদের এই বিষয়ে যথাযথ সহায়তা প্রদান করা হবে বলেও জানান এই কৃষিবিদ।
আরও পড়ুন: পঞ্চগড়ে বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে চিয়া সিড
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে জনপ্রিয় একটি ফলের নাম ‘শাম্মাম।’ অনেকেই এই ফলটিকে ‘রকমেলন’ নামেও চেনেন।
ইউটিউবে দেখে এই শাম্মাম ফলটি বাংলাদেশের মাটিতে চাষ করে সফল হয়েছেন ঠাকুরগাঁওয়ের মণ্ডল ইসলাম।
ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার শিমুলবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা এই মণ্ডল ইসলাম।
পীরগঞ্জের তেঁতুলতলা এলাকায় ভাতারমারি ফার্মের পশ্চিম পাশে ঠাকুরগাঁও সুগার মিলের ৩ বিঘা জমি লিজ নিয়ে ‘শাম্মাম’ ফলটির চাষ শুরু করেন তিনি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সূত্রমতে, ঠাকুরগাঁও জেলায় এবার দ্বিতীয় বারের মতো ‘শাম্মাম’ চাষ করা হচ্ছে। এর আগে গতবছর সদর উপজেলার রাহুল রায় নামে এক কৃষক প্রথম শাম্মাম চাষ শুরু করেন।
এছাড়া এবার জেলায় মোট দুই একর জমিতে ‘শাম্মাম’ চাষ করা হচ্ছে।
‘শাম্মাম’ নামের এই ফলটির চাষ সচরাচর ঠাকুরগাঁও জেলায় করতে দেখা যায় না। এই ফলটি চাষ করতে খরচ একটু বেশি হয়। মাটির উপরে মালচিং বিছিয়ে ‘শাম্মাম’ ফলের চারা রোপণ করা হয়।
আর ছিদ্রকরা মালচিং এর ফাঁকা দিয়ে গজিয়ে উঠে ‘শাম্মাম’ ফলের গাছ। চারা রোপণের মাত্র ৬০-৭০ দিনের মধ্যে ‘রকমেলন বা শাম্মাম’ ফল কর্তন (হারভেস্ট) করে বাজারে নেওয়া যায়।
আরও পড়ুন: প্রথমবার বোরো চাষের আওতায় ২০০ বিঘা জমি
শেরপুরে বন্য হাতির আক্রমণে কৃষকের মৃত্যু
খেতের ফসল রক্ষা করতে গিয়ে শেরপুরের শ্রীবরদীতে বন্য হাতির আক্রমণে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (১ মে) সন্ধ্যায় উপজেলার হাতিবর টিলাপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত আব্দুল হামিদ (৫০) ওই এলাকার ছামেদ আলীর ছেলে।
এ নিয়ে গত ১৫ দিনের ব্যবধানে শেরপুরের পাহাড়ি জনপদে বন্য হাতির আক্রমণে তিন কৃষক নিহত হলেন।
এর আগে হাতির আক্রমনে গত ১৪ এপ্রিল শ্রীবরদীর জুলগাঁও এলাকায় আব্দুল করিম (৩৫) এবং ২৬ এপ্রিল নালিতাবাড়ি উপজেলার পুর্ব সমশ্চুড়া গ্রামের বিজয় সাংমা (৫২) নামে আরও দুই কৃষক প্রাণ হারান।
আরও পড়ুন: শেরপুরে বন্য হাতির আক্রমণে যুবক নিহত
এই কৃষকরা সবাই বন্য হাতির কবল থেকে আধপাকা বোরো ধানখেত পাহারা দেওয়ার সময় উন্মত্ত হাতির কবলে পড়ে নিহত হন।
বন বিভাগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার সন্ধ্যায় শ্রীবরদী সীমান্তে বন্যহাতির ৪০/৫০ টির একটি দল শ্রীবরদী উপজেলার বালিজুড়ী রেঞ্জ এলাকার হালুয়াহাটি গ্রামের বোরো ধানখেতে নেমে আসে এবং পাকা ধান বিনষ্ট করে।
এ সময় ধানখেত বাঁচাতে এলাকাবাসী হাতি তাড়াতে লাঠি-মশাল নিয়ে হাতির দলকে ধাওয়া করে। এতে ক্ষুব্ধ হাতির পায়ে পিষ্ট হয়ে হাতিবর টিলাপাড়া গ্রামের কৃষক আবদুল হামিদ গুরুতর আহত হন।
এলাকাবাসী আশঙ্কাজনক অবস্থায় হামিদকে উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাকে মৃত ঘোষণা করেন জরুরি বিভাগের চিকিৎসা কর্মকর্তা মো. নোমান।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য নুর হক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, ধানখেতে বন্যহাতির দল নেমে এলে হাতি তাড়াতে গিয়ে হাতির আক্রমণে কৃষক আব্দুল হামিদের মৃত্যু ঘটেছে।
বন বিভাগের বালিজুড়ীর রেঞ্জ কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় নিহত ব্যক্তির পরিবারকে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী বন বিভাগের পক্ষ থেকে ক্ষতিপূরণ প্রদান করা হবে।
তিনি আরও বলেন, কিন্তু হাতির দলকে তাড়াতে গিয়ে মানুষ মৃত্যুর মতো দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা ঘটছে। এ বিষয়ে পাহাড়ি জনপদে বনবিভাগের পক্ষ থেকে সচেতনতামূলক প্রচারণা চালানো হচ্ছে। যাতে হাতির দলকে উত্যক্ত করা না হয়। এজন্য এলাকায় এলাকায় এলিফেন্ট রেসপন্স টিম গঠন করা হয়েছে।
এ ঘটনায় বনবিভাগের পক্ষ থেকে নিহত ব্যক্তির পরিবারকে সরকারি নিয়মানুযায়ী আবেদনের মাধ্যমে তিন লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: শেরপুরে বন্যহাতির আক্রমণে আহত কৃষকের মৃত্যু
শেরপুর সীমান্তে বন্যহাতির আক্রমণে কৃষক নিহত, আহত ১
চৌগাছায় বজ্রপাতে কৃষকের মৃত্যু
যশোরের চৌগাছায় ধানখেতের কাজ শেষ করে বাড়ি ফেরার পথে বজ্রপাতে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (২৯ এপ্রিল) সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে উপজেলার তেঘরী গ্রামের দুয়ালের মাঠে এই ঘটনা ঘটে।
নিহত বছির উদ্দীন (৫২) উপজেলার পাতিবিলা ইউনিয়নের তেঘরী গ্রামের মৃত মোহাম্মদ আলীর ছেলে।
আরও পড়ুন: চৌগাছায় মাঠে বজ্রপাতে যুবকের মৃত্যু
জানা যায়, বিকালে বসির উদ্দীন ধানখেতে কাজ করতে যান। সন্ধ্যার দিকে আকাশে মেঘ দেখে বাড়ি ফিরে আসছিলেন। তিনি গ্রামের মোড়ে পৌঁছালে বজ্রাঘাতের শিকার হন। এতে তার শরীরের বিভিন্ন স্থান ঝলসে যায়।
স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে চৌগাছা উপজেলা সরকারি মডেল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. লুৎফুন্নেছা লতা জানান, হাসপাতালে আনার আগেই বছির উদ্দীন মারা গেছেন।
চৌগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম সবুজ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: পাবনায় পৃথক বজ্রপাতে কলেজ ছাত্রসহ ৩ জনের মৃত্যু
চাঁপাইনবাবগঞ্জে বজ্রপাতে নিহত ২, আহত ২
শেরপুরে বন্যহাতির আক্রমণে আহত কৃষকের মৃত্যু
শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে বন্যহাতির লাথির আঘাতে আহত এক গারো কৃষকের মৃত্যু ঘটেছে। বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে শেরপুর জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু ঘটে।
নিহত বিজয় সাংমা (৫২) নালিতাবাড়ী উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নের পুর্ব সমশ্চুড়া গ্রামের স্টীপেন মারাকের ছেলে।
জানা যায়, শুক্রবার দুপুরের পর পরিবারের সদস্যদের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়। এসময় নিহত কৃষক বিজয় সাংমার বাড়িতে হাজির হয়ে নালিতাবাড়ীর ইউএনও খ্রস্টফার হিমেল রিছিল উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে ২৫ হাজার টাকা নগদ আর্থিক সহায়তা পরিবারের সদস্যদের হাতে তুলে দেন। এসময় গারো নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, এলাকার কৃষকেরা ফসল রক্ষা করতে রাত জেগে ধানখেত পাহারা দিয়ে থাকেন। মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) গভীর রাতে বন্যহাতির দলটি পোড়াগাঁও ইউনিয়নের পুর্ব সমশ্চুড়া গ্রামের কৃষক বিজয় সাংমার আবাদকৃত বোরো ধানখেতে হানা দেয়।
আরও পড়ুন: শেরপুর সীমান্তে বন্যহাতির আক্রমণে কৃষক নিহত, আহত ১
এসময় বিজয় সাংমা ফসল রক্ষা করতে হাতির দলটিকে তাড়া করেন। তাড়া খেয়ে এক পর্যায়ে বন্যহাতির দলটি উন্মত্ত হয়ে বিজয় সাংমার ওপর পাল্টা আক্রমণ করে। এসময় হাতির দলের একটি হাতি বিজয় সাংমার বুকে ও পেটে পা দিয়ে লাথি মারে এবং তলপেটে চাপা দেয়।
নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমদাদুল হক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, গত মঙ্গলবার রাতে নালিতাবাড়ীর মধুটিলা ইকোপার্ক সংলগ্ন কালাপানি এলাকার সীমান্ত সড়কের পাশে নিজ আবাদি বোরো ধানখেত পাহারা দেওয়ার সময় বিজয় সাংমা বন্যহাতির আক্রমণে গুরুতর আহত হন।
ওসি আরও বলেন, স্বজনেরা হাতির দলটিকে তাড়িয়ে দিয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় বিজয় সাংমাকে উদ্ধার করে নালিতাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকরা বিজয়কে উন্নত চিকিৎসার জন্য শেরপুর জেলা হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে এগারোটার দিকে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কৃষক বিজয় সাংমার মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুন: শেরপুরে বন্য হাতির আক্রমণে যুবক নিহত
শেরপুরে বন্য হাতির আক্রমণে কৃষক নিহত
সিরাজগঞ্জে কাঁচা মরিচের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি
সিরাজগঞ্জের যমুনার চরাঞ্চলসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে এবার কাঁচা মরিচ চাষাবাদে বাম্পার ফলন হয়েছে। সেইসঙ্গে বাজার মূল্য ভালো থাকায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে।
বিশেষ করে যমুনার চরাঞ্চলে উৎপাদিত মরিচ স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, জেলার ৯টি উপজেলার বিভিন্ন স্থানে চলতি মৌসুমে ১ হাজার ৪৫৬ হেক্টর জমিতে মরিচের চাষাবাদ করা হয়েছে। বিশেষ করে চরাঞ্চলে এ লাভজনক মরিচের চাষ বেশি হয়েছে। এতে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ হাজার ২০৫ মেট্রিক টন। ফলন ভাল হওয়ায় ও দাম ভালো পাওয়ায় এ মরিচ চাষাবাদে ঝুঁকে পড়েছে কৃষকেরা।
যমুনা নদীর তীরবর্তী কাজিপুর, বেলকুচি, চৌহালী, শাহজাদপুর ও সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার চরাঞ্চলে এ মরিচ চাষাবাদ বেশি হয়েছে।
চরাঞ্চলের কৃষকেরা বলছেন, বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পরবর্তীতে চরাঞ্চলগুলোতে মরিচের চাষ শুরু করা হয়। পলিমাটির উর্বরতার কারণে কম খরচে মরিচ চাষাবাদে প্রতিবছরের ন্যায় এবারও ফলন ভালো হয়েছে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে ধরলার বুকে নতুন স্বপ্ন জাগিয়েছে পটল চাষ
তারা জানান, ঈদকে সামনে রেখে এ মরিচ উত্তোলনে নারী-পুরুষেরা ব্যস্ত সময় পার করছে এবং খেত থেকেই ব্যবসায়ীরা ট্রাকে করে ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি এ মরিচ কিনে নিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করছে। আর বর্তমানে স্থানীয় হাট-বাজারে এ মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১০০ টাকায় এবং এ কাঁচা মরিচের দাম ওঠা-নামা করলেও লোকসান নেই কৃষকের। চরাঞ্চলের হাটবারের দিনগুলোতে কৃষক ও ব্যবসায়ীর অবস্থান জমজমাট। দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকের মুখে হাসিও ফুটেছে।
বিভিন্ন স্থান থেকে আসা মরিচ ব্যবসায়ীরা জানান, প্রতিবছরের মতো এবারও মরিচের ব্যবসা করতে চরাঞ্চলে এসেছেন তারা। মরিচের বাজার মূল্য এখন ভালো থাকায় কৃষকের পাশাপাশি তারাও লাভবান হচ্ছেন বলে জানান।
এ বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক বাবলু কুমার সুত্রধর বলেন, সংশ্লিষ্ট কৃষি বিভাগের পরামর্শে জেলার ৯টি উপজেলার বিভিন্ন স্থানে এবার ১ হাজার ৪৫৬ হেক্টর জমিতে মরিচ চাষাবাদ করা হয়েছে। এ চাষাবাদ চরাঞ্চলে বেশি হয়েছে। এতে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ হাজার ২০৫ মেট্রিক টন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় মরিচ চাষাবাদে বাম্পার ফলন হয়েছে। মরিচের বাজার মূল্য ভালো থাকায় কৃষকের মুখেও হাসি ফুটেছে।
আগামীতে এ লাভজনক চাষাবাদে কৃষকেরা ঝুঁকে পড়বে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে দুর্গম চরাঞ্চলে তরমুজ চাষ, ভাগ্য পরিবর্তনের আশা
চাঁপাইনবাবগঞ্জে বোরো আবাদ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে
পাবনায় কৃষককে গলা কেটে হত্যা
পাবনার আটঘরিয়ায় এক ব্যক্তিকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) সকালে নিজ বাড়ির উঠান থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের স্ত্রী ও স্ত্রীর কথিত প্রেমিক প্রতিবেশি এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: মানিকগঞ্জে ঘুমন্ত বড়ভাইকে গলা কেটে হত্যার অভিযোগ ছোটভাইয়ের বিরুদ্ধে
নিহত আলহাজ্ব হোসেন (৪০) আটঘরিয়া উপজেলার দেবোত্তর ইউনিয়নের জুমাইখিরি গ্রামের মৃত নাগর প্রামাণিকের ছেলে। তিনি কৃষি কাজ করতেন।
পুলিশ জানায়, শুক্রবার সকালে আলহাজ্ব হোসেনকে তার বাড়ির উঠানে গলা কাটা অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নতদন্তের জন্য পাবনা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
আটঘরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন জানান, বৃহস্পতিবার রাতের কোনো একসময় ওই ব্যক্তি ঘরের বাইরে বের হলে তাকে গলা কেটে হত্যা করা হয়।
ধারণা করা হচ্ছে, নিহতের স্ত্রীর পরকীয়া সম্পর্কের জেরে এ হত্যার ঘটনা ঘটেছে।
তিনি আরও বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে নিহতের স্ত্রী সুরাইয়া ও তার প্রেমিক প্রতিবেশি যুবক ইসমাইলকে আটক করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: গত ৩ মাসে ১২৮ শিশু হত্যার শিকার হয়েছে: আসক
চাঁপাইনবাবগঞ্জে ইউপি সদস্যকে কুপিয়ে হত্যা
চাঁপাইনবাবগঞ্জে বোরো আবাদ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে
চলতি মৌসুমে চাঁপাইনবাবগঞ্জে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ৫১ হাজার ৫৫৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। গেলো আমন মৌসুমে ধানের দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকেরা বোরো ধান আবাদে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।
চাষীরা উফশী ও হাইব্রিড জাতের বোরোর আবাদ করেছেন। এখন জেলা জুড়ে ফসলের মাঠে মাঠে শুধু সবুজের সমারোহ। বাতাসে দোল খাচ্ছে ধান গাছের সবুজ পাতা। ইতোমধ্যে কিছু কিছু জমিতে ধানের শীষ আসতে শুরু করেছে। চলতি মৌসুমে অনুকূল আবহাওয়া, সেচ, সার সংকট না থাকাও পোকামাকড়ের তেমন উপদ্রব না হওয়ায় এবং শেষ পর্যন্ত সবকিছু অনুকূলে থাকলে এবার বোরোর ভালো ফলন আশা করছেন কৃষকরা।
সদর উপজেলার আতাহার এলাকার চাষী মুঞ্জুর আলী বলেন, এবার তিনি আট বিঘা জমিতে বোরো আবাদ করেছেন। এ বছর বীজ ও সারের কোনো সংকট হয়নি। তবে কীটনাশকের দাম বেড়েছে। জমিতে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার এখন পর্যন্ত রোগবালাই অনেক কম। আবহাওয়া ভালো আছে, তাপমাত্রা ভালো আছে। শেষ পর্যন্ত বড় ধরনের প্রাকৃতিক বিপর্যয় না ঘটলে আশা করা যায় ভলো ফলন হবে।
আরও পড়ুন: আমনে আবাদ লক্ষ্যমাত্রার শতভাগ অর্জিত: কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর
আতাহার এলাকার আরেক বেরো চাষী আকবর আলী বলেন, গেলো আমনে দর মোটামুটি ভালো পেয়েছিলাম। এ কারণে এবার সাত বিঘা জমিতে বোরা চাষ করেছি। এবার বিদ্যুতের সমস্যা না থাকায় সেচের কোনো সমস্যা হয়নি। পোকামাকড়ের আক্রমণ তেমনভাবে নাই। কীটনাশক ও বালাইনাশক স্প্রে করেছি। তবে কীটনাশক ও বালাইনাশকের দাম প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে। এতে খরচ বেড়েছে। এখন ধানের অবস্থা খুব ভালো। কিছু কিছু জমিতে ধান গাছে শীষ আসতে শুরু করেছে। আশা করা যায় এক সপ্তাহের মধ্যে এ এলাকার সব জমিতে পুরোপুরি শীষ ফুটে যাবে।
দক্ষিণশহর এলাকার চাষী আবেদ আলী বলেন, এবার তিনি দুই বিঘা জমিতে বোরো চাষ করেছেন। এখন পর্যন্ত ধান গাছের অবস্থা ভালো আছে। জমিতে এসে ধান গাছ দেখে মন জুড়িয়ে যাচ্ছে। পোকামাকড় তুলনামূলকভাবে এবার অনেক কম। দুই বার কীটনাশক ও বালাইনাশক স্প্রে করেছি। এখন পর্যন্ত আবহাওয়া ভালো আছে। বর্তমানে জমিতে শীষ ফুটতে শুরু করেছে। শেষ পর্যন্ত এরকম আবহাওয়া ভালো থাকলে আশা করা যায় ভালো ফলন পাব।
নাচোল উপজেলার নেজমপুর এলাকার চাষী সেরাজুল ইসলাম জানান, তিনি তার তিন বিঘা জমিতে বোরা চাষ করেছেন। বর্তমানে শীষ আসতে শুরু করেছে। ধান গাছের চেহারা বেশ ভালো আছে। এখন পর্যন্ত কোনো সমস্যা নেই। এমনটি শেষ পর্যন্ত থাকলে ভালো ফলন আশা করছেন তিনি।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর চাঁপাইনবাবগঞ্জের উপ-পরিচালক ড. পলাশ সরকারজানান, এ বছর চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় ৫১ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। তবে শেষ পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে আবাদ হয়েছে ৫১ হাজার ৫৫৫ হেক্টর জমিতে। যা লক্ষ্যমাত্রা থেকে ৪০৫ হেক্টর বেশি। বর্তমানে আবহাওয়া অনুকূলে রয়েছে। শেষ পর্যন্ত বড় ধরনের কোনো প্রাকৃতিক বিপর্যয় না ঘটলে এবার জেলায় দুই লাখ ৩৫ হাজার ৬০৬ মেট্রিক টন বোরো চাল উৎপাদিত হবে বলে আশা কৃষি বিভাগের।
আরও পড়ুন: খরা: খুলনায় আমনের আবাদ নিয়ে শঙ্কা
মাগুরায় প্রতিপক্ষের হামলায় কৃষক খুন
মাগুরা সদরে প্রতিপক্ষের হামলায় এক কৃষক নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার বিকালে উপজেলার মনিরামপুর গ্রামে এ হামলা হয় বলে পুলিশ জানিয়েছে।
নিহত আতর মোল্লা (৪৫) মনিরামপুর গ্রামের সালাম মোল্লার ছেলে।
আরও পড়ুন: মাগুরায় ছেলের মামলায় মৃত্যুর একমাস পর কবর থেকে বাবার লাশ তুলে ময়নাতদন্ত!
নিহতের স্বজনরা জানান, এলাকার একটি বিরোধপূর্ণ জমি নিয়ে সালিশ বৈঠকে স্থানীয় গ্রাম্য মাতবর আব্দুল মান্নান ও অপর গ্রাম্য মাতবর মুরাদ মোল্লার সমর্থকদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। তা নিয়ে সন্ধ্যায় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
এ সময় উভয় পক্ষের ২০ জন আহত হয়।
ওই ঘটনার জের ধরে বৃহস্পতিবার বিকালে ইফতারের আগে আতর মোল্লাকে তার বাড়ির কাছে একা পেয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে প্রতিপক্ষের লোকজন।
আশঙ্কাজনক অবস্থায় সন্ধ্যার পর মাগুরা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তবরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত আতর মোল্লা গ্রাম্য মাতবর আব্দুল মান্নানের সমর্থক ছিলেন বলে স্থানীয়রা জানান।
মাগুরা জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক কৃষ্ণ বিশ্বাস বলেন, হাসপাতালে আসার আগেই আতর মোল্লার মৃত্যু হয়েছে।
মাগুরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জব্বারুল ইসলাম বলেন, সামাজিক বিরোধের সঙ্গে নতুন করে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষের হামলায় খুন হয়েছেন আতর মোল্লা।
তিনি আরও বলেন, এলাকায় পরবর্তী সহিংসতা এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: মাগুরায় ট্রাক-কাভার্ডভ্যানের সঙ্গে মোটরসাইকেলের সংঘর্ষ, নিহত ২
মাগুরায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১, আহত ১১
মাগুরায় কৃষককে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ
মাগুরার মহম্মদপুরে এক কৃষককে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে উপজেলার পলাশবাড়ীয়া ইউনিয়নের চর কালিশংকরপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত আরিফুল ইসলাম মোল্যা (৩০) একই গ্রামের হাসান মোল্যার ছেলে।
মহম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অসিত কুমার এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন।
নিহতের স্ত্রী রাশেদা বেগম জানান, জমিজমা নিয়ে ওসমান মাতুব্বরের সঙ্গে তার স্বামীর বিরোধ চলছিল। এর মধ্যে তিনদিন আগে প্রতিবেশি ওসমান মাতুব্বরের গোয়াল থেকে একটি গরু চুরি হয়। এই ঘটনায় আরিফুলের বিরুদ্ধে গরু চুরির অভিযোগ আনা হয়। বুধবার সন্ধ্যায় এ ঘটনায় সালিশ হয়। তখন দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে ইউপি সদস্যকে কুপিয়ে হত্যা
তিনি আরও বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে আরিফুল মাছ ধরে বাড়ি ফিরছিলেন। এ সময় ওসমান মাতুব্বরসহ চার থেকে পাঁচজন ব্যক্তি ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করেন। এতে ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে আরিফের তিন ভাইসহ কয়েকজন এগিয়ে এলে তাদের ওপরও হামলা চালানো হয়।
নিহত আরিফুলের স্ত্রীর দাবি করেন, তিনি গরু চুরির সঙ্গে জড়িত নন, জমিজমা নিয়ে পূর্ব বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষরা তাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে।
ওসি জানান, হত্যার কারণ অনুসন্ধান ও হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। নিহতের শরীরে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মাগুরা মর্গে পাঠানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় মহম্মদপুর থানায় মামলা হয়েছে। এখনও কেউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।
আরও পড়ুন: নারায়ণগঞ্জে দুই ভাইকে কুপিয়ে হত্যা: যুবক গ্রেপ্তার