ইলিশ
শুক্রবার থেকে ইলিশ শিকারে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা
আগামী ৭ অক্টোবর থেকে ২২ দিনের জন্য ইলিশ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করতে যাচ্ছে সরকার।
মাছের সর্বোচ্চ প্রজনন সময়কালে ইলিশ ধরা, বিক্রি ও পরিবহন নিষিদ্ধ থাকবে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা ইফতেখার হোসেন ইউএনবিকে জানান, ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এই নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে বিস্তারিত জানাবেন বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: ভরা মৌসুমেও খুলনায় ইলিশের দাম চড়া
ইলিশ মাছ ধরতে গিয়ে নদীতে পড়ে ফেরির লষ্কর নিখোঁজ
ভারতে ইলিশ রপ্তানি বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট
ভারতে ইলিশ রপ্তানি বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট
ভারতে ইলিশ রপ্তানি স্থায়ীভাবে বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে। হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় মঙ্গলবার রিটটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মাহমুদুল হাসান।
রিটে ভারতে কম দামে ইলিশ রপ্তানি বন্ধে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না মর্মে রুল জারির আরজি জানানো হয়েছে।
এছাড়া রিটে পর্যটন করপোরেশনকে ইলিশ মাছ কেন্দ্রিক পর্যটনের বিকাশে কাজ করতে নির্দেশনার আবেদন জানানো হয়েছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, বেসরকারি বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব, রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান, আমদানি ও রপ্তানি প্রধান নিয়ন্ত্রকের দপ্তর এবং বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যানকে বিবাদী করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: প্রথম চালানে ভারতে গেল ৮ মেট্রিক টন ইলিশ
এর আগে গত ১১ সেপ্টেম্বর ভারতে ইলিশ রপ্তানি বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে সরকারের সংশ্লিষ্টদের প্রতি লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছিল। ওই নোটিশ পাঠানোর সাতদিনের মধ্যে কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় রিটটি করা হয়।
রিটটি শিগগিরই হাইকোর্টে শুনানির চেষ্টা করা হবে বলে জানান আইনজীবী মো. মাহমুদুল হাসান।
ওই আইনজীবী জানান, বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী, জনসাধারণের জন্য খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সরকারের অন্যতম প্রধান কর্তব্য। অপরদিকে জনগণের স্বার্থে সর্বদা নিয়োজিত থাকা বিবাদীদের সাংবিধানিক দায়িত্ব।
তাই রিটে বলা হয়, দেশের বাজারের চেয়ে কম মূল্যে ভারতে ইলিশ রপ্তানি করার মাধ্যমে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টরা দেশের সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন। তারা দেশের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা ধ্বংস করেছেন এবং জনগণের স্বার্থবিরোধী কাজ করেছেন। এছাড়া রপ্তানি নীতি ২০২১-২৪ অনুযায়ী ইলিশ মাছ মুক্তভাবে রপ্তানি যোগ্য পণ্য নয়। তাই রিট মামলায় এই ইলিশ মাছ স্থায়ীভাবে রপ্তানি বন্ধের আবেদন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ভরা মৌসুমেও খুলনায় ইলিশের দাম চড়া
রিটে বলা হয়েছে, দেশের জাতীয় মাছ ইলিশ, অথচ বর্তমানে ইলিশ মাছের অত্যধিক দামের কারণে দরিদ্র জনগোষ্ঠী এই মাছ কেনার চিন্তাও করে না। দেশের মধ্যবিত্ত জনগোষ্ঠী ইলিশ কিনতে হিমশিম খাচ্ছে।
তিনি বলেন, বিভিন্ন গণমাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, দরিদ্র কৃষকরা দুই মণ ধান বিক্রি করেও এক কেজি ইলিশ মাছ কিনতে পারছেন না। এছাড়া ইলিশের মধ্যে সবচেয়ে সুস্বাদু হলো পদ্মা নদীর ইলিশ। ইলিশ মাছের দাম ১৬০০-১৮০০ টাকা পর্যন্ত কেজিতে গিয়ে ঠেকেছে। অপরদিকে বাংলাদেশের এই ইলিশ ভারতে মাত্র ১০ ডলার (প্রায় ৯৫০ টাকা) কেজি দরে রপ্তানি হচ্ছে। অর্থাৎ বাংলাদেশের বাজার মূল্যের চেয়ে প্রায় অর্ধেক দামে ভারতে রপ্তানি হচ্ছে ইলিশ। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় দেশের মানুষের চাহিদার কথা চিন্তা না করে ভারতে ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে।
আরও পড়ুন: বাগেরহাটে ধরা পড়ছে না ইলিশ, হতাশ জেলেরা
৭ অক্টোবর থেকে ২২ দিন ইলিশ আহরণ বন্ধ
প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ রক্ষায় আগামী ৭ থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিন দেশব্যাপী ইলিশ আহরণ বন্ধ থাকবে। এ সময় ইলিশ আহরণ, বিপণন, ক্রয়-বিক্রয়, পরিবহন, মজুত ও বিনিময় নিষিদ্ধ থাকবে।
বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর মৎস্য ভবনে মৎস্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে প্রধান প্রজনন মৌসুমে ইলিশ আহরণ বন্ধের সময় নির্ধারণ এবং মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান ২০২২ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত জাতীয় টাস্কফোর্স কমিটির সভায় এসব সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম এ সভায় সভাপতিত্ব করেন।
সভাপতির বক্তব্যে মন্ত্রী বলেন, নিষিদ্ধ সময়ে যারা মাছ ধরতে নামে তারা সবাই মৎস্যজীবী নয়। তাদের নেপথ্যে অনেক ধনী ব্যক্তি থাকে, ক্ষমতাবান ব্যক্তি থাকে। ইলিশ সম্পদ রক্ষায় অতীতের মত এবারও এসব অসাধু ব্যক্তিদের ছাড় দেয়া হবে না।
তিনি বলেন, ইলিশ সম্পদ ধ্বংসকারী দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। দিনে অভিযানের পাশাপাশি এবার রাতেও অভিযান জোরদার করা হবে। সংশ্লিষ্ট জেলা-উপজেলায় বরফ কল বন্ধে স্থানীয় প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে। গত বছরের ন্যায় এবারও অবৈধ জাল উৎপাদনস্থলে অভিযান পরিচালনা করা হবে। অবৈধ পথে ইলিশ পাচার রোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ইলিশ সম্পৃক্ত জেলা উপজেলায় নদীতে ড্রেজিং বন্ধে স্থানীয় প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে। ইলিশের নিরাপদ প্রজননের মাধ্যমে ইলিশ সম্পদ উন্নয়নে যা যা করা দরকার তা করতে হবে।
এ সময় তিনি আরও বলেন, মাছ ধরা বন্ধকালে যাচাই-বাছাই করে নিবন্ধিত জেলেদের নানাভাবে সুযোগ-সুবিধা দেয়া হয়। তাদের বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হয়। জেলদের জন্য নানাভাবে রাষ্ট্র সহায়তা করছে।
অতীতে এত ইলিশ উৎপাদন হয়নি উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, সরকারের নানাবিধ উদ্যোগে ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধির কারণে গ্রাম-গঞ্জে এখন ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে। দেশের মানুষ ইলিশ খেতে পারছে। ইলিশ রপ্তানিও করা যাচ্ছে।
রেজাউল করিম বলেন, প্রজননস্থলে অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলনের করা হলে ইলিশের প্রজনন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যে ধরণের পরিবেশ ইলিশ ডিম দেয়ার জন্য উপযুক্ত অনেক সময় ভারী যানবাহন চলাচল, যানবাহনের পোড়া মবিল নির্গত হওয়া, ময়লা-আবর্জনা নির্গত হওয়ায় কারনে ইলিশের প্রজনন পরিবেশ নষ্ট হয়। ফলে ইলিশ ওই অঞ্চলে থাকে না। অন্যত্র চলে যায়।
আরও পড়ুন: ভরা মৌসুমেও খুলনায় ইলিশের দাম চড়া
প্রথম চালানে ভারতে গেল ৮ মেট্রিক টন ইলিশ
বাগেরহাটে ধরা পড়ছে না ইলিশ, হতাশ জেলেরা
মাছ ধরা শুরু, ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পেয়ে খুশি বরগুনার জেলেরা
ভরা মৌসুমেও খুলনায় ইলিশের দাম চড়া
ভরা মৌসুমেও দাম বেশি হওয়া খুলনায় ইলিশ মাছ সাধারণ ক্রেতার নাগালের বাইরে। বিভিন্ন বাজারে এক কেজি ওজনের ইলিশ ১২০০ থেকে ১৩০০ টাকা, ৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৯০০ থেকে ১০০০ টাকা, ৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৭০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এ অবস্থায় দাম কমার আশায় আছেন ব্যবসায়ী ও সাধারণ ক্রেতারা।
খুলনার পাইকারি ও খুচরা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ১ জুলাই থেকে ইলিশ ধরা শুরু হলেও চাহিদার তুলনায় মাছের সরবরাহ কম থাকাতে এখন প্রতিটি পাইকারি ও খুচরা বাজারে ইলিশ দাম বেশি বিক্রি হচ্ছে। অনেকেই বাজারে যাচ্ছেন কিন্তু ইলিশ না কিনে ফিরছেন।
খুলনার গল্লামারি বাজার, সন্ধ্যা বাজার, নিউমার্কেট বাজার, রুপসা বাজার, নতুন বাজার, বয়রা বাজার, খালিশপুর বাজারসহ সকল বাজারে ইলিশের দাম চড়া।
আরও পড়ুন: তীব্র খরায় বাগেরহাটে আমন উৎপাদন ব্যাহত
খুলনার পাইকারি মাছ বাজারের দেড় কেজি ইলিশ প্রতি মণ (৫৫ হাজার থেকে ৫৭ হাজার) টাকা, এক কেজি ইলিশ প্রতি মণ (৫০ হাজার থেকে ৫২ হাজার) টাকা, ৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ প্রতি মণ (৪৩ হাজার থেকে ৪৪ হাজার) টাকা এবং ৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ প্রতি মণ (৩২ হাজার থেকে ৩৩ হাজার) টাকা বিক্রি হচ্ছে। ফলে বড় ইলিশ নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তের ভাগ্যে জুটছে না।
খুলনার ৫ নং ঘাটে অবস্থিত বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের আওতাধীন মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং রূপসা মাছ বাজার খুলনায় পাইকারি ইলিশের উল্লেখযোগ্য দুটি ব্যবসা কেন্দ্র।
এই মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে প্রায় ছয় দশক ধরে পাইকারি মৎস্য বিক্রয় করছেন শেখ সাইদুল ইসলাম। ১৯৫৯ সাল থেকে তার বাবা এই ব্যবসা শুরু করেন এবং বাবার হাত ধরে তিনি এই ব্যবসায় আসেন। তিনি ছাড়াও এই কেন্দ্রে ছয় জন মৎস্য ব্যবসায়ী (মহাজন) রয়েছেন।
আরও পড়ুন: স্কুলশিক্ষকের তৈরি ভাসমান সেতুতে দুর্ভোগের অবসান হলো গ্রামবাসীর
শেখ সাইদুল ইউএনবিকে জানান, দক্ষিণ বাংলার বরিশাল, বরগুনা, ভোলা থেকে এখানে ট্রলারে করে ইলিশ মাছ আসে। যা সকাল ১০টার মধ্যে খুচরা বিক্রেতারা ক্রয় করে বিভিন্ন বাজারে নিয়ে যায়। কিন্তু এখন সড়ক ব্যবস্থা ভালো হওয়ায় জেলেরাই ট্রাক ও পিকআপে করে ইলিশ নিয়ে যায়। আগে মহাজনরা মাছ বিক্রি করে পাঁচ শতাংশ কমিশন পেত, এখন সেটি তিন শতাংশে নেমে এসেছে।
তিনি জানান, গত বছর তিনি আট কোটি টাকার মাছ বিক্রি করলেও তেমন মুনাফা অর্জন করতে পারেননি।
এর মধ্যে গত ৪ সেপ্টেম্বর দুর্গাপূজা উপলক্ষে ৪৯টি প্রতিষ্ঠানকে দুই হাজার ৪০০ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানি করার অনুমতি দিয়েছে সরকার। এর ফলে আরেক দফা ইলিশের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।
খুলনা শহরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া বিভিন্ন নদীতে এক কেজি বা তার বেশি ওজনের ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে যা ক্রেতার ক্রয় ক্ষমতার বাইরে।
আরও পড়ুন: খুলনায় ‘অপরিকল্পিত’ শহর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ, মরে যাচ্ছে শত শত গাছ
খুলনা জেলার মৎস্য কর্মকর্তা জয়দেব পাল জানান, এবার ইলিশের দাম বেশি হওয়ার কারণ ডিজেলের (তেল) দাম বৃদ্ধি, আশানুরূপ মাছ না পাওয়া এবং একশ্রেণির ধনী মানুষের নিম্নবিত্তের দিকে না তাকিয়ে ফ্রিজে ইলিশ কিনে ভর্তি করে রাখা।
উল্লেখ, গত ১ নভেম্বর ২০২১ থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত জাটকা ইলিশ ধরা বন্ধ ছিল। ১ জুলাই থেকে মাছ ধরা শুরু হলেও গত বছরের তুলনায় এবারের উৎপাদন কম। আগামী অক্টোবর মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে অক্টোবরের শেষ দিন পর্যন্ত মা ইলিশ মাছ ধরা বন্ধ থাকবে।
প্রথম চালানে ভারতে গেল ৮ মেট্রিক টন ইলিশ
শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে দুই হাজার ৪৫০ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। যার প্রথম চালান আট মেট্রিক টন ইলিশ দুটি ট্রাকে করে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারতে ঢুকেছে।
সোমবার সন্ধ্যায় কাস্টমস ও বন্দরের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে ইলিশের ট্রাক প্রবেশ করেছে।
এর আগে রবিবার ৪৯ প্রতিষ্ঠানকে ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। প্রতিটি প্রতিষ্ঠান ৫০ টন করে ইলিশ রপ্তানি করতে পারবে। রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান হলো বরিশালের মাহিমা এন্টারপ্রাইজ। আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান হলো ভারতের এস, আর ইন্টারন্যাশনাল।
প্রতিকেজি ইলিশ মাছ ১০ মার্কিন ডলারে রপ্তানি হচ্ছে বলে নিশ্চিত করেছেন বেনাপোল মৎস্য পরিদর্শন ও মান নিয়ন্ত্রণ অফিসের পরিদর্শক মাহাবুব রহমান।
তিনি বলেন, ইলিশ মাছ রপ্তানি নিষিদ্ধ হলেও দুর্গাপূজা উপলক্ষে এবার দুই হাজার ৪৫০ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন দেয় বাণিজ্য মন্ত্রনালয়। এসব ইলিশ রপ্তানির অনুমতি পেয়েছে বাংলাদেশের ৪৯টি প্রতিষ্ঠান। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে ৫০ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেয়া হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় সোমবার প্রথম চালান আট মেট্রিক টন ইলিশ দুটি ট্রাকে করে সোমবার ভারতে প্রবেশ করেছে। পর্যায়ক্রমে বাকি ইলিশ রপ্তানি হবে।
আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সব ইলিশ রপ্তানির নির্দেশনা রয়েছে।
আরও পড়ুন: খুলনায় এবার ইলিশের চড়া দাম
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পদ্মার ইলিশ পশ্চিমবঙ্গের বাঙালিদের কাছে প্রিয় হলেও দেশের চাহিদা বিবেচনায় বিভিন্ন সময় তা রপ্তানি বন্ধ রাখে বাংলাদেশ সরকার। ২০১২ সালে বাংলাদেশ থেকে ভারতে ইলিশ রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।
তবে এরপর বাংলাদেশ সরকার একাধিকবার ভারত সরকারকে শুভেচ্ছা উপহার স্বরূপ ইলিশ দিয়েছে। গত বছর দুর্গাপূজায় ১১৫ রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানকে ভারতে চার হাজার ৬০০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। সে সময় ইলিশ সংকট ও রপ্তানি মূল্যের চেয়ে কেনা মূল্য বেশির কারণে এক হাজার ১০৮ টন ২৮০ কেজি ইলিশ রপ্তানি হয়। পদ্মার ইলিশ পেয়ে ওপারের অনেকে খুশি। পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে শুরু হচ্ছে বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের সেরা উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা।
বেনাপোলের সিএন্ডএফ এজেন্ট যুথী এন্টারপ্রাইজের ম্যনেজার মিজানুর রহমান বলেন, এবার প্রতি কেজি ইলিশের রপ্তানি মূল্য ১০ মার্কিন ডলার। যা বাংলাদেশি টাকায় প্রতি কেজি ৯৪৭ টাকা ৩৯ পয়সা। ভারত ও বাংলাদেশ দুই দেশের কাস্টমস থেকে শুল্কমুক্ত সুবিধায় ইলিশের এ চালান ছাড়ানো করা হবে। বরিশালের মাহিমা এন্টারপ্রাইজ নামের একটি রপ্তানিকারকের ইলিশ ভারতে গেছে।
বেনাপোল কাস্টম হাউজের যুগ্ম কমিশনার আব্দুল রশীদ মিয়া জানান, ভারতে ইলিশ দ্রুত রপ্তানির জন্য কাস্টমসের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: বাগেরহাটে ধরা পড়ছে না ইলিশ, হতাশ জেলেরা
মাছ ধরা শুরু, ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পেয়ে খুশি বরগুনার জেলেরা
বাগেরহাটে ধরা পড়ছে না ইলিশ, হতাশ জেলেরা
বঙ্গোপসাগরে পশুর এবং বলেশ্বর নদীর মোহনায় বেহুন্দিসহ নানা ধরনের জাল পেতে রাখার কারণে ইলিশ বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে। ঝাঁক বেঁধে ইলিশ নির্বিগ্নে উপকূলের নদ-নদীতে প্রবেশ করতে পারছে না। এতে করে সাগর এবং নদ ও নদীতে ইলিশের প্রাচুর্য কমে গেছে। সেই সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ইলিশের ওপর পড়েছে।
বিচরণ কমে যাওয়ায় জেলেরা জাল ফেললেও কাঙ্খিত ইলিশ ধরা পড়ছে না। ট্রলারের সক্ষমতা না থাকায় এই অঞ্চলের জেলেরা গভীর সাগরে যেতে পারেনা। ফলে উপক‚লীয় জেলা বাগেরহাটের পাইকারি মাছের আড়তে ইলিশের সরবারহ অনেক কমে গেছে। এ অবস্থায় জেলে, ট্রলার মালিক, আড়তদার এবং ইলিশ ব্যবসায়ীদের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে।
এদিকে, মাছের প্রজননের সময় কেবলমাত্র বাংলাদেশে মাছ ধরা নিষিদ্ধ ঘোষণায় আপত্তি জানিয়ে বাংলাদেশ ও ভারত যৌথভাবে সাগরে অবরোধের দাবি করেছেন সুন্দরবন অধ্যুষিত উপকূলীয় বাগেরহাট জেলার জেলেরা। তবে প্রজনন বাড়াতে নদ ও নদীতে মাছ ধরা বন্ধ রাখার পক্ষে মৎস্য বিভাগ।
অপরদিকে, জেলা মৎস্য বিভাগ এবং সুন্দরবন বিভাগ সাগর মোহনায় ইলিশ বাধাগ্রস্ত হওয়ার কথা স্বীকার করেছে।
বাগেরহাট অঞ্চলের জেলে ও ট্রলার মালিকরা বড় বড় টোলিং জাহাজ বন্ধ এবং ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে সাগরে বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ অবরোধের দাবি জানিয়েছে। জেলেদের অভিযোগ, ভারতীয় জেলেরা বাংলাদেশ জলসীমায় প্রবেশ করে ইলিশ ধরে নিয়ে যায়।
আরও পড়ুন: স্কুলশিক্ষকের তৈরি ভাসমান সেতুতে দুর্ভোগের অবসান হলো গ্রামবাসীর
মৎস্য বিভাগ বলছে, সুন্দরবন মাছের অনেক বড় প্রজনন ক্ষেত্র। এজন্য গোটা সুন্দরবনের নদ-নদীতে সারা বছর জুড়ে মাছ আহরণ নিষিদ্ধ করা গেলে ইলিশসহ সব ধরনের মাছের উৎপাদন কয়েকগুন বেড়ে যাবে।
সুন্দরবন বন বিভাগ জানায়, গোটা সুন্দরবনে সারা বছর মাছ আহরণ বন্ধ রাখতে হলে আগে জেলেদের বিকল্প কর্মস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে।
শনিবার বাগেরহাট কেবি বাজার পাইকারি মৎস্য আড়তে গিয়ে দেখা গেছে, ইলিশ নিয়ে কোনো ট্রলার ঘাটে ভেড়েনি। ট্রলার শূন্য আড়তের ঘাট। আড়তে ইলিশ নেই বললেই চলে। সামান্য পরিমাণ ইলিশ ছিল যা কোল্ডস্টোর থেকে আড়তে তোলা হয়েছে। তবে আড়ত জুড়ে ইলিশের ক্রেতাদের ভিড় দেখা গেছে।
মাছ ধরা শুরু, ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পেয়ে খুশি বরগুনার জেলেরা
সরকারের নিষেধাজ্ঞা পর দীর্ঘদিন ৬৫ দিন পর সমুদ্রে মাছ শিকারে নেমেছে বরগুনার পাথরঘাটা উপকূলের জেলেরা।
সংশ্লিষ্টরা জানান, রবিবার দিবাগত রাত ১২টার পর ট্রলার নিয়ে মাছ শিকারে নেমে প্রথম দিনেই জেলেদের জালে প্রচুর পরিমানে মাছ ধরা পড়েছে। জাল ভর্তি ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পেয়ে হাসি মুখে ফিরেছেন জেলেরা।
এদিকে, দীর্ঘদিন পর ট্রলারভর্তি মাছ নিয়ে বিএফডিসি ঘাটে পৌঁছানোর ট্রলার মালিক, আড়তদার ও জেলেদের উল্লাস দেখা যায়।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনে ২ মাসের নিষেধাজ্ঞার পর মাছ ধরা শুরু
জেলে জব্বার মিয়া বলেন, একটা খেও দিছি যা পাইছি তাড়াতাড়ি করে ভালো দামের জন্য তাই নিয়াই প্রথম বাজার ধরলাম।
সরেজমিনে পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে দেখা গেছে, মৎস্য ঘাটে প্রায় ২৫টি মাছ ধরার ট্রলার নোঙর করে আছে। ওই ট্রলার থেকে ঘাট শ্রমিকরা মাছ উঠাচ্ছেন। অপরদিকে টল সেটে হাঁক ডাকে মাছ বিক্রি হচ্ছে।
জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী জানান, প্রথম দিনে অন্তত ২৫টি মাছ ধরা ট্রলার ঘাটে এসেছে। জেলেরা বলছে ভালোই মাছ পাচ্ছে। দামও ভালো মিলছে।
আরও পড়ুন: তিন মাস বন্ধের পর কাপ্তাই হ্রদে মাছ ধরা শুরু
বিএফডিসির মার্কেটিং অফিসার বিপ্লব কুমার সরকার জানান, প্রথম দিনে বিএফডিসি মৎস্য বাজারে মোট ১১ হাজার ৮৬৯ কেজি মাছ বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে সাত হাজার ৭৮০ কেজি ইলিশই বিক্রি হয়েছে। আর অন্যান্য চার হাজার ৮৯ কেজি মাছ বিক্রি হয়েছে। সব মিলিয়ে ৬৭ লাখ ৫৬ হাজার ৮০০ টাকার মাছ বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে সরকার রাজস্ব পেয়েছে ৮৪ হাজার ৪৬০ টাকা।
খুলনায় এবার ইলিশের চড়া দাম
খুলনার বাজারে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে ইলিশ। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় দাম বেশি বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা।
খুলনার বেশ কয়েকটি মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এবার বাজারে তুলনামূলক ইলিশের সংখ্যা খুবই কম। বাজারে যে ইলিশ আছে তার আকাশ ছোঁয়া দাম হাঁকছেন বিক্রেতারা। আর এসব ইলিশ হচ্ছে নদ নদীর ইলিশ।
শেখ সাদি নামের এক ক্রেতা বলেন, এ বছর ইলিশের দাম আকাশ ছোঁয়া। দামের কারণে মাছটি সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। অথচ এই বর্ষাকালে ইলিশের দাম ছিল ক্রেতাদের নাগালে। মাইকিং করে বাজারে মাছ বিক্রি করা হতো। কিন্তু এ বছর ভরা মওসুমেও ইলিশ জোটেনি অনেকের ভাগ্যে।
আরও পড়ুন: বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে চায় সরকার: প্রাণিসম্পদমন্ত্রী
কেসিসি রূপসা মৎস্য আড়তের মেসার্স মদিনা ফিস ট্রেডার্সের পরিচালক মো. আবু মুছা বলেন, খুলনায় এবার ইলিশের দাম স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। দেড় কেজি ওজনের নদীর ইলিশ ১৭০০-১৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এক কেজি ২০০ গ্রামের ইলিশ ১৫০০ টাকা। এক কেজির ইলিশ ১৩০০-১৪০০ টাকা। যা এখন থাকার কথা ছিল ৭০০-৮০০ টাকা। ৭০০-৮০০ গ্রামের ইলিশের দাম ১১০০-১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
তিনি বলেন, এসময় ইলিশের সরবরার বেশি থাকার কথা হলেও সরবারহ কম।
খুলনা কেন্দ্রীয় মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সহ-সভাপতি বিকাশ চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত সাগরে সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ রয়েছে। যে কারণে বাজারে ইলিশের সংকট। ২৩ জুলাই এর পর সাগরে মাছ ধরা শুরু হলে বাজারে মাছের সরবরাহ বেড়ে যাবে। তখন এ সংকট থাকবে না।
আরও পড়ুন: ইলিশ আহরণ বন্ধের সময় মৎস্যজীবীদের জন্য বিকল্প কর্মসংস্থান
বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে চায় সরকার: প্রাণিসম্পদমন্ত্রী
সরকার ইলিশের উৎপাদন বাড়িয়ে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে চায় বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।
বুধবার সকালে সচিবালয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ ২০২২ উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে তিনি এ কথা জানান।
প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, ইলিশ সম্পদ উন্নয়নের মধ্যে আমরা বাংলাদেশের সকল মানুষের হাতের নাগালে ইলিশ মাছ পৌঁছে দিতে চাই। এ লক্ষ্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এজন্য ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রতিবছরের ন্যায় এবছরও ৩১ মার্চ থেকে ০৬ এপ্রিল পর্যন্ত জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ ২০২২ উদযাপন করবে সরকার।
আরও পড়ুন: ইলিশ আহরণ বন্ধের সময় মৎস্যজীবীদের জন্য বিকল্প কর্মসংস্থান
রেজাউল করিম বলেন, জনসাধারণের পুষ্টি চাহিদা পূরণ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, গ্রামীণ অর্থনীতিকে সচল রাখা এবং দেশের আর্থ সামাজিক উন্নয়নে ইলিশ মাছের গুরুত্ব অপরিসীম। দেশের মোট মৎস্য উৎপাদনের ১২ দশমিক ২২ শতাংশ আসে ইলিশ থেকে। যা একক প্রজাতি হিসেবে সর্বোচ্চ।
তিনি আরও বলেন, জিডিপিতে ইলিশের অবদান এক শতাংশের বেশি। বিশ্বের মোট উৎপাদিত ইলিশের প্রায় ৮০ শতাংশের বেশি আহরিত হয় এদেশের নদ নদী, মোহনা ও সাগর থেকে। ফলে ইলিশ দেশের জি আই পণ্যের মর্যাদা পেয়েছে। প্রায় ছয় লাখ লোক ইলিশ আহরণে সরাসরি নিয়োজিত এবং ২০ থেকে ২৫ লাখ লোক ইলিশ পরিবহণ, বিক্রয়, জাল ও নৌকা তৈরি, বরফ উৎপাদন প্রক্রিয়াজাতকরণ, রপ্তানি ইত্যাদি কাজে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত।
মন্ত্রী বলেন, প্রতি বছরের ন্যায় এবছরও ৩১ মার্চ থেকে ৬ এপ্রিল পর্যন্ত জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ ২০২২ উদযাপন করা হবে। এবছর জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ হয়েছে ‘ইলিশ আমাদের জাতীয় মাছ, জাটকা ধরলে সর্বনাশ’।
আরও পড়ুন: ইলিশ ধরা ও বিক্রির ওপর ২ মাসের নিষেধাজ্ঞা শুরু
তিনি বলেন, এবছর দেশের ইলিশ সম্পৃক্ত ২০টি জেলায় জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ ২০২২ এর কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
মন্ত্রী বলেন, ‘দেশবাসীর কাছে অনুরোধ থাকবে, আপনারা জাটকা ধরা, কেনা-বেচা এবং খাওয়া থেকে বিরত থেকে জাতীয় মাছ ইলিশের উন্নয়নে এগিয়ে আসুন।
তিনি বলেন, ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধির অন্যতম প্রধান অন্তরায় হচ্ছে কারেন্ট জাল, বেহুন্দি জালসহ অন্যান্য অবৈধ জাল নিয়ে নির্বিচারে জাটকা নিধন। এই অবৈধ জাল নির্মূলে গত জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে মোট চার সপ্তাহ দেশের ১৭ টি জেলায় বিশেষ কম্বিং অপারেশন পরিচালনা করা হয়েছে। এসময়ে মোট ৩০ দিনে মোট ৮৮৪ টি মোবাইল কোর্ট ও ৩৫৪৬ টি অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।
শ ম রেজাউল করিম বলেন, বর্তমান সরকার জাটকা আহরণ নিষিদ্ধ সময়ে জেলেদের জন্য ভিজিএফ খাদ্য সহায়তার পরিমাণ ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি করেছে।
বরগুনায় ‘জিপিএস ট্র্যাকার’ সহ কচ্ছপ উদ্ধার
বরগুনা সদর উপজেলার চালিতাতলীর পায়রা নদী থেকে বড় আকৃতির একটি কচ্ছপ স্থানীয় জেলেদের জালে আটকা পড়েছে। কচ্ছপটির পিঠে বসানো রয়েছে ‘জিপিএস ট্র্যাকার’ (অবস্থান নির্ণায়ক যন্ত্র)।
শনিবার বিকালে চালিতাতলী এলাকায় কচ্ছপটি আটকা পড়ে।
জেলে শাহিন বলেন, নদীতে ইলিশ ধরার সময় জালে কচ্ছপটি আটকা পড়ে। পিঠে বসানো যন্ত্রটি দেখে প্রথমে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলাম। পরে খবর পেয়ে শত শত লোক দেখতে আসে। গ্রামের মানুষ দেখেও আতঙ্কিত হয়। পরে বন কর্মকর্তাদের খবর দিয়ে কচ্ছপটি তাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
বরগুনা সদর উপজেলার বন কর্মকর্তা মতিউর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন: নিষিদ্ধ ‘শাপলা পাতা’ মাছ প্রকাশ্যে বিক্রি, বিলুপ্তির আশঙ্কা