শ্রীলঙ্কা
শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট হিসেবে রনিল বিক্রমাসিংহেকে নিয়োগ: স্পিকার
শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতা ও দায়িত্ব পালনের জন্য প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহেকে নিয়োগ দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে। বুধবার লঙ্কান পার্লামেন্টের স্পিকার মাহিন্দা ইয়াপা আবেবর্দেনা এ তথ্য জানিয়েছেন।
এক বিবৃতিতে স্পিকার বলেন, রাজাপাকসে দেশ থেকে দূরে থাকায় সংবিধান অনুযায়ী বিক্রমাসিংহেকে নিয়োগ দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে হামলা, জরুরি অবস্থা ঘোষণা
শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্টকে পালাতে সাহায্য করার কথা অস্বীকার ভারতের
শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসেকে দেশ থেকে মালদ্বীপে পালাতে সাহায্য করার গুজব প্রত্যাহার করেছে ভারত।
বুধবার টুইটারে এক বিবৃতিতে শ্রীলঙ্কায় ভারতীয় হাইকমিশন বলেছে, ‘ভারত সম্প্রতি শ্রীলঙ্কার বাইরে গোটাবায়া রাজাপাকসে ও বাসিল রাজাপাকসেকে পালাতে সহায়তা করেছে বলে মিডিয়াগুলোতে যে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে তা স্পষ্টভাবে ভিত্তিহীন ও অনুমাননির্ভর।
দ্বীপরাষ্ট্রের প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করে, হাইকমিশন টুইট করেছে, ভারত শ্রীলঙ্কার জনগণকে সমর্থন অব্যাহত রাখবে। কারণ তারা গণতান্ত্রিক উপায় ও মূল্যবোধ, প্রতিষ্ঠিত গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান এবং সাংবিধানিক কাঠামোর মাধ্যমে তাদের সমৃদ্ধি এবং অগ্রগতি উপলব্ধি করতে চায়।
পরে, শ্রীলঙ্কার সামরিক বাহিনী একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে ৭৩ বছর বয়সী প্রেসিডেন্ট, তার স্ত্রী এবং দুই দেহরক্ষী বুধবার ভোরে লঙ্কান এয়ার ফোর্সের জেটে প্রধান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করেন।
সশস্ত্র বাহিনী এই সিদ্ধান্তের জন্য শ্রীলঙ্কার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে দায়ী করেছে।
আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে হামলা, জরুরি অবস্থা ঘোষণা
অর্থনৈতিক সংকটের মুখে শ্রীলঙ্কান প্রেসিডেন্টের দেশত্যাগ
শ্রীলঙ্কায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে হামলা, জরুরি অবস্থা ঘোষণা
শ্রীলঙ্কায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে হামলার পর দেশটিতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে।
বুধবার দেশটির প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এ তথ্য জানিয়েছে।
অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসের শ্রীলঙ্কা ছেড়ে যাওয়ার পর এই ঘোষণা দেয়া হলো।
অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে প্রেসিডেন্টের দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পরে বিক্ষোভকারীরা শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে হামলা চালায়।
বিক্ষোভকারীরা অবিলম্বে প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহের পদত্যাগের দাবি করছেন।
প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, নতুন সরকার হলেই তিনি ক্ষমতা থেকে সরে যাবেন।
আরও পড়ুন: অর্থনৈতিক সংকটের মুখে শ্রীলঙ্কান প্রেসিডেন্টের দেশত্যাগ
শ্রীলঙ্কার নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ২০ জুলাই!
অর্থনৈতিক সংকটের মুখে শ্রীলঙ্কান প্রেসিডেন্টের দেশত্যাগ
শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে বুধবার ভোরে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন।
পরিস্থিতির সংবেদনশীলতার কারণে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন অভিবাসন কর্মকর্তা বলেছেন, প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে, তার স্ত্রী এবং দুই দেহরক্ষী মালদ্বীপের রাজধানী মালে শহরের উদ্দেশ্যে শ্রীলঙ্কান বিমান বাহিনীর একটি ফ্লাইটে যাত্রা করেছেন।
দেশটির চরম অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে চলমান চাপের মুখে পদত্যাগ করতে রাজি হয়েছিলেন রাজাপাকসে।
এদিকে প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে বলেছেন, নতুন সরকার গঠন হলেই তিনি পদত্যাগ করবেন।
কয়েক দিন ধরে বিক্ষোভকারীরা প্রেসিডেন্ট ভবন দখলে রেখেছে।
গত ৯৭ দিন ধরে বিক্ষোভে অংশ নেয়া মালিক ডি সিলভা নামে এক বিক্ষোভকারী বলেছেন, ‘আমি খুশি নই যে সে পালিয়ে গেছে। তার কারাগারে থাকা উচিত ছিল।‘
আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কার নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ২০ জুলাই!
ইরানের আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চলচ্চিত্র নির্মাতা জাফর পানাহি গ্রেপ্তার
শ্রীলঙ্কার নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ২০ জুলাই!
শ্রীলঙ্কার নেতারা দেশটির নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য ২০ জুলাই ভোট গ্রহণের ব্যাপারে একমত হয়েছেন।
সোমবার এ ব্যাপারে একটি আংশিক সমাধান এসেছে। এই পদের জন্য ১৯ জুলাই মনোনয়ন জমা দেয়া হবে এবং ২০ জুলাই পার্লামেন্টে একটি গোপন ভোট হবে৷
নতুন প্রেসিডেন্ট রাজাপাকসের মেয়াদের বাকি সময়ের দায়িত্ব পালন করবেন, যা ২০২৪ সালে শেষ হবে৷
তবে কে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেবেন এবং মন্ত্রিসভা পূরণ করবেন সে ব্যাপারে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি।
আরও পড়ুন: নতুন সরকার গঠনে শ্রীলঙ্কায় বিরোধী দলগুলোর বৈঠক
নতুন সরকার গঠনে শ্রীলঙ্কায় বিরোধী দলগুলোর বৈঠক
চরম অর্থনৈতিক সংকটের কারণে তীব্র বিক্ষোভের মুখে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগের ঘোষণা দেয়ার পর রবিবার নতুন সরকার নিয়ে একমত হতে দেশটির বিরোধী দলগুলো বৈঠক করেছে।
এদিকে বিক্ষোভকারীরা প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসের বাসভবন, তার সমুদ্র তীরবর্তী কার্যলয় ও প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে অবস্থান করছেন এবং তারা বলছেন, পদত্যাগ আনুষ্ঠানিক না হওয়া পর্যন্ত তারা সেখানে অবস্থান করবেন।
প্রেসিডেন্টের অবস্থান এখনো অজ্ঞাত। তবে তার কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জনসাধারণের কাছে রান্নার গ্যাসের চালান অবিলম্বে বিতরণের আদেশ দিয়েছেন তিনি। এ থেকে বোঝা যায় তিনি এখনো কর্মরত।
শহরের চারপাশে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। তবে সেনা সদস্যরা কেবল দূর থেকে প্রত্যক্ষ করেছেন। দেশটির চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ শভেন্দ্র সিলভা আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে জনসাধারণের সহযোগিতা চেয়েছেন।
আরও পড়ুন: বিক্ষোভে উত্তাল শ্রীলঙ্কা: প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের ঘোষণা
প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন দখল করা মানুষজন বাইরের রান্নাঘরে রান্না করেছেন; ক্যারাম খেলেছেন এবং সোফায় ঘুমিয়েছেন।
প্রধান বিরোধীদল ইউনাইটেড পিপলস ফোর্সের এক শীর্ষ কর্মকর্তা রঞ্জিত মাদুমা বান্দারা বলেছেন, অন্যান্য দল ও রাজাপাকসের ক্ষমতাসীন জোট থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া আইনপ্রণেতাদের সঙ্গে পৃথক আলোচনা হয়েছে এবং আরও বৈঠকের পরিকল্পনা রয়েছে। তবে কবে একটি চুক্তি হতে পারে তা অস্পষ্ট।
এর আগে এমএ সুমন্থিরন নামে আরেক বিরোধী আইনপ্রণেতা জানান, সব বিরোধীদল একত্রিত হয়ে সহজেই সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজনীয় ১১৩ সদস্য সংগ্রহ করতে পারে। এর মাধ্যমে তারা রাজাপাকসেকে নতুন সরকার গঠন ও পদত্যাগের আহ্বান জানাবেন।
শনিবার প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে বলেছেন, নতুন সরকার গঠিত হলে তিনি অফিস ছাড়বেন এবং এর কয়েক ঘণ্টা পর সংসদের স্পিকার জানান, রাজাপাকসে বুধবার পদত্যাগ করবেন।
আরও পড়ুন: গোতাবায়ার বাসভবনে বিক্ষোভকারীদের হামলা
অর্থনৈতিক মন্দায় প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের ঘাটতিতে শ্রীলঙ্কার মানুষ খাদ্য, জ্বালানি ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পেতে হিমশিম খাচ্ছে। এতে এই দুই নেতার ওপর চাপ বৃদ্ধি পেয়েছে।
প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী উভয়েই পদত্যাগ করলে সংবিধান অনুযায়ী স্পিকার মাহিন্দা ইয়াপা আবেবর্দেনা অস্থায়ী প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণ করবেন।
ঘাটতি মেটাতে ও অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার শুরু করার প্রয়াসে মে মাসে রাজাপাকসে বিক্রমাসিংহেকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলেন।
বিক্ষোভে উত্তাল শ্রীলঙ্কা: প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের ঘোষণা
কয়েক মাস ধরে রাজনৈতিক টালমাটাল অবস্থা ও দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বিক্ষোভের পর অবশেষে শনিবার শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে ও প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে পদত্যাগ করার কথা জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে বলেছেন, নতুন সরকার গঠিত হলেই তিনি পদ ছাড়বেন।
এর কয়েক ঘণ্টা পরে পার্লামেন্টের স্পিকার বলেছেন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে বুধবার পদত্যাগ করবেন।
এর আগে শুক্রবার রাতে পুলিশ কারফিউ জারি করে বিক্ষোভ বন্ধ করতে চেয়েছিল, কিন্তু বিরোধীদল ও আইনজীবীদের তীব্র নিন্দার মুখে এটি তুলে নেয়া হয়।
এরপর কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী রাজধানী কলম্বোতে প্রবেশ করে এবং রাজাপাকসের সুরক্ষিত বাসভবনে ঢুকে পড়ে। এসময় সংঘর্ষে দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ অন্তত ৩৪ জন আহত হয়েছেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওগুলোতে দেখা যায়, উত্তাল জনতা রাজাপাকসের বাগানের পুলে ডুব দিচ্ছে। কিছু লোক বাড়ির বিছানায় শুয়েছিল, অন্যরা চা খাচ্ছে এবং প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে একটি সম্মেলন কক্ষ থেকে বিবৃতি জারি করছে।
রাজাপাকসে সেসময় সেখানে ছিলেন কিনা তা পরিষ্কার জানা যায়নি।
সরকারের মুখপাত্র মোহন সমরানায়েক বলেন, প্রেসিডেন্টের গতিবিধি সম্পর্কে তার কাছে কোনও তথ্য নেই।
এছাড়া বিক্রমাসিংহের অফিস জানিয়েছে, বিক্ষোভকারীরা প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত বাসভবনে ঢুকে আগুন ধরিয়ে দেয়।
তবে হামলার সময় প্রধানমন্ত্রী সেখানে ছিলেন কিনা তা তাৎক্ষণিকভাবে স্পষ্ট নয়।
আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কায় কারফিউ জারি, বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশের টিয়ারশেল
স্পিকার মাহিন্দা ইয়াপা আবেওয়ার্দেনা একটি টেলিভিশন বিবৃতিতে বলেছেন, তিনি রাজাপাকসেকে জানিয়েছিলেন যে সংসদীয় নেতারা দেখা করেছেন এবং তাকে অফিস ছেড়ে দেয়ার অনুরোধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এরপর প্রেসিডেন্ট এ সিদ্ধান্তে (পদত্যাগে) রাজি হয়েছেন।
আবেবর্দেনা আরও বলেন, তবে ক্ষমতার মসৃণ হস্তান্তর নিশ্চিত করতে রাজাপাকসে সাময়িকভাবে (আরও কিছুদিন) থাকবেন।
আবেবর্দেনা বলেন, ‘তিনি আমাকে দেশকে জানাতে বলেছেন যে তিনি ১৩ তারিখ বুধবার পদত্যাগ করবেন। কারণ শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করার প্রয়োজন আছে।’
স্পিকার আরও বলেন, ‘অতএব দেশে আর অশান্তির প্রয়োজন নেই এবং একটি মসৃণ ক্ষমতা পরিবর্তনের জন্য আমি দেশের স্বার্থে সবাইকে শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানাচ্ছি।’
বিরোধী আইনপ্রণেতা রউফ হাকিম বলেছেন, সংসদের স্পিকারকে অস্থায়ী প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেয়ার এবং একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের জন্য তারা ঐকমত্যে পৌঁছেছে।
অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী বিক্রমাসিংহে তার নিজের আসন্ন পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। তবে তিনি বলেন নতুন সরকার গঠিত না হওয়া পর্যন্ত তিনি পদত্যাগ করবেন না।
বিক্রমাসিংহে আরও বলেন, ‘এখন আমাদের দেশে জ্বালানি সংকট ও খাদ্য সংকট। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির প্রধান আমাদের এখানে আসছেন এবং আইএমএফের সাথে আমাদের বেশ কিছু বিষয়ে আলোচনা আছে।’
আরও পড়ুন: গোতাবায়ার বাসভবনে বিক্ষোভকারীদের হামলা
গত মে মাসে রাজাপাকসে বিক্রমাসিংহেকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত করেন; এই আশায় যে অভিজ্ঞ এই রাজনীতিবিদ তার কূটনীতি ও যোগাযোগ দক্ষতা দিয়ে ভেঙে পড়া অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করতে সাহায্য করবেন। কিন্তু জ্বালানি, ওষুধ ও রান্নার গ্যাসের ঘাটতি বেড়ে যাওয়ায় এবং তেলের মজুদ কমে যাওয়ায় জনগণের ধৈর্য্য কমে যায়।
দেশটি ভারত ও অন্যান্য দেশের সাহায্যের ওপর নির্ভর করে টিকে আছে। দেশটির নেতারা এখনও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের সাথে একটি বেলআউট নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করছেন৷
কয়েক মাস ধরে চলা বিক্ষোভ দুই দশকের বেশি সময় ধরে শ্রীলঙ্কাকে শাসন করা রাজাপাকসের রাজনৈতিক রাজবংশকে ভেঙে দিয়েছে। এই পরিবারের বিরুদ্ধে অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে সহিংস বিক্ষোভ শুরু হয়। এরপর গত মে মাসে প্রেসিডেন্টের বড় ভাই প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন। নিরাপত্তার স্বার্থে তখন তাকে একটি নৌ ঘাঁটিতে আশ্রয় নিতে দেখা যায়।
শনিবার অনেক বিক্ষোভকারী বাস ও ট্রেনে করে রাজধানীতে যায় এবং অন্যরা সাইকেল ও পায়ে হেঁটে যায়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কলম্বো ন্যাশনাল হাসপাতালের একজন কর্মকর্তা জানান, আহতদের মধ্যে দুজনের অবস্থা গুরুতর, অন্যরা সামান্য আহত হয়েছে।
বেসরকারী মালিকানাধীন সিরাসা টেলিভিশন জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর বাড়িতে বিক্ষোভ কভার করার সময় পুলিশের হাতে মারধরের শিকার হয়ে চারজন সাংবাদিকসহ চ্যানেলটির অন্তত ছয়জন কর্মী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
দেশটির বিক্ষোভকারী ও ধর্মীয় নেতারা বলছেন রাজাপাকসে তার ম্যান্ডেট হারিয়েছেন এবং তার যাওয়ার সময় এসেছে।
একজন বিশিষ্ট বৌদ্ধ নেতা ওমালপে সোবিথা ভেন বলেছেন, ‘তাকে (গোতাবায়া রাজাপাকসে) সিংহলের বৌদ্ধরা ভোট দিয়েছিল, যা এখন আর বৈধ নয়।
তিনি নির্বাচনের জন্য অবিলম্বে সংসদ আয়োজনের আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কায় তীব্র সংকটের মুখে সরকারের পদত্যাগ দাবি শিক্ষার্থীদের
শ্রীলঙ্কায় কারফিউ জারি, বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশের টিয়ারশেল
অর্থনৈতিক সঙ্কটের কারণে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের তীব্র ঘাটতি এবং মানুষের জীবিকা ব্যাহত হওয়ার কারণে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে করা বিক্ষোভে টিয়ারশেল নিক্ষেপ করেছে পুলিশ। এর আগে শুক্রবার থেকে শ্রীলঙ্কার রাজধানী ও আশেপাশের এলাকায় পুলিশ কারফিউ জারি করে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন ভিডিওতে দেখা যায়, কালো পোশাক পরা, কালো পতাকাধারী, সরকারবিরোধী স্লোগান ও ব্যানার বহনকারী হাজার হাজার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও জলকামান ছুঁড়ছে।
বিক্ষোভকারী এবং অন্যান্য সমালোচকরা বলেছেন, ১৯৪৮ সালে দেশটির স্বাধীনতার পর থেকে সবচেয়ে খারাপ অর্থনৈতিক সংকটের জন্য প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে দায়ী। তারা ঘাটতি দূর করার প্রতিশ্রুতি পূরণ না করতে পারায় দুই মাস আগে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেয়া রনিল বিক্রমাসিংহেকেও দায়ী করে।
সাধারণ নাগরিক ও বিরোধী দলীয় কর্মীরা শনিবার আরও কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী নিয়ে কলম্বোতে জড়ো হওয়ার ঘোষণা দেয়। কিন্তু তার আগেই পুলিশ শুক্রবার রাত ৯টা থেকে কলম্বো ও এর শহরগুলোতে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত কারফিউ ঘোষণা করেছে।
কারফিউ ঘোষণা করায় দেশটির বিরোধী দলসমূহ ও শ্রীলঙ্কার বার অ্যাসোসিয়েশন সরকারের সমালোচনা করেছে। তারা বলছে ‘কারফিউ স্পষ্টতই বেআইনি ও মৌলিক অধিকারের লঙ্ঘন।’
বিরোধী নেতা সজিথ প্রেমাদাসা কারফিউকে ‘এক ধরনের প্রতারণা’ বলে অভিহিত করেছেন।
তিনি এক টুইটে বলেছেন, ‘আগামীকাল রাস্তায় নামুন। স্বৈরাচারকে পরাজিত করে গণতন্ত্রকে বিজয়ী করতে জনগণের সঙ্গে যোগ দিন। হ্যাঁ আমরাও পারি।’
আরও পড়ুন: গোতাবায়ার বাসভবনে বিক্ষোভকারীদের হামলা
শ্রীলঙ্কায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত জুলি চুং, দেশটির জনগণকে শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
এছাড়া ‘শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের বিক্ষোভ করার জন্য স্থান ও নিরাপত্তা দিতে সেনাবাহিনী ও পুলিশের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
তিনি এক টুইটে বলেন, ‘বিশৃঙ্খলা ও বলপ্রয়োগ অর্থনীতিকে ঠিক করবে না কিংবা রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আনতে পারবে না। শ্রীলঙ্কানদের এই মুহূর্তে যা (সবচেয়ে বেশি) প্রয়োজন।’
গত এপ্রিলে শ্রীলঙ্কা বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতির কারণে তারা বিদেশি ঋণ পরিশোধ করতে অপারগতার কথা জানায়। দেশটির বিদেশি ঋণের পরিমাণ প্রায় পাঁচ হাজার ১০০ কোটি ডলার। এর মধ্যে ২০২৭ সালের শেষ নাগাদ দুই হাজার ৮০০ কোটি ডলারে ঋণ পরিশোদের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। দেশটির বৈদেশিক রিজার্ভ প্রায় শূন্যের কোটায় এবং দেশটি নাগরিকদের জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য, জ্বালানি, রান্নার গ্যাস ও ওষুধ আমদানি করতে অক্ষম।
বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো চালানোর জ্বালানির অভাবে প্রতিদিন মানুষ ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকছে। জ্বালানি ও গ্যাস কিনতে মানুষকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়।
জ্বালানি ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনার জন্য প্রতিবেশি ভারতের সাহায্যের ওপর দেশটি টিকে আছে।
অর্থনৈতিক সঙ্কটের কারণে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম আকাশচুম্বি হয়ে পড়েছে। যার ফলে দরিদ্র ও দুর্বল গোষ্ঠী মারাত্মক চাপে পড়েছে।
জ্বালানি ও বিদ্যুতের ঘাটতির কারণে দেশটির স্কুলগুলো অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেয়া হয়েছে এবং সরকার প্রয়োজনীয় পরিষেবাগুললোতে থাকা অন্যান্য রাজ্যের কর্মচারীদের বাড়ি থেকে কাজ করতে বলেছে।
আরও পড়ুন: জ্বালানি সংকটে শ্রীলঙ্কায় আরও এক সপ্তাহ স্কুল বন্ধ
শ্রীলঙ্কায় তীব্র সংকটের মুখে সরকারের পদত্যাগ দাবি শিক্ষার্থীদের
গোতাবায়ার বাসভবনে বিক্ষোভকারীদের হামলা
শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসের পদত্যাগের দাবিতে তার সরকারি বাসভবনে কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী হামলা করেছে। শনিবার দেশটির স্থানীয় গণমাধ্যমে এ খবর জানা গেছে।
বিক্ষোভের সময় গোতাবায়া রাজধানী কলম্বোয় অবস্থিত তার সরকারি বাসভবনে অবস্থান করছিলেন নাকি বাইরে ছিলেন তা নিশ্চিত জানা যায়নি। মুঠোফোনে ধারণ করা একটি ভিডিওতে দেখা যায়, কয়েক হাজার মানুষ সুরক্ষিত বাসভবনটির বাইরে অবস্থান করছেন।
সরকারের মুখপাত্র মোহনা সেনানায়েকে বলেন, রাজাপাকসে বাসভবনের ভেতরে না বাইরে সে বিষয়ে স্পষ্ট তথ্য জানা নেই।
টেলিভিশনের ফুটেজে দেখা যায়, গোতবায়ার বাসভবনের পাশে অবস্থিত তার দপ্তরে কয়েক’শ বিক্ষোভকারী জাতীয় পতাকা হাতে প্রবেশ করে।
আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কায় তীব্র সংকটের মুখে সরকারের পদত্যাগ দাবি শিক্ষার্থীদের
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, শত শত বিক্ষোভকারী ‘গোতা গো হোম’ স্লোগান দিয়ে প্রেসিডেন্টের বাসভবনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এসময় ভবনের বাইরের রাস্তার ব্যারিকেড উল্টে দেয়া হয়।
নিরাপত্তারক্ষীরা বিক্ষোভকারীদের থামানোর চেষ্টা করে। এসময় পুলিশ ও আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষে কমপক্ষে ৩৪ জন আহত হন।
পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক কলম্বোর হাসপাতালের একজন কর্মকর্তা জানান, আহত দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
আগের রাতের কারফিউ তুলে নেয়ার পর আশেপাশের শহরতলী থেকে কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী শনিবার সকালে রাজধানী কলম্বোয় প্রবেশ করে।
গত কয়েক মাস ধরে চলা এই বিক্ষোভে অংশ নেয়া মানুষের অভিযোগ, স্বাধীনতার পর দেশের চলমান সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক সংকটের পেছনে প্রভাবশালী রাজাপাকসে পরিবারের দায় রয়েছে। বিক্ষোভকারীরা তার পদত্যাগের দাবিতে তিন মাস ধরে প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করছে।
আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কায় অনির্দিষ্টকালের জন্য স্কুল বন্ধ ঘোষণা
গত মাসে শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে বলেন, ‘তার দেশের অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে গেছে। সংকট থেকে উত্তরণে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে আলোচনা জটিল স্তরে গিয়ে ঠেকেছে। কারণ দেশটি দেউলিয়া হয়ে গিয়েছে।’
গত এপ্রিলে শ্রীলঙ্কা বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতির কারণে তারা বিদেশি ঋণ পরিশোধ করতে অপারগতার কথা জানায়। দেশটির বিদেশি ঋণের পরিমাণ প্রায় পাঁচ হাজার ১০০ কোটি ডলার। এর মধ্যে ২০২৭ সালের শেষ নাগাদ দুই হাজার ৮০০ কোটি ডলারে ঋণ পরিশোদের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
পুলিশ শুক্রবার রাতে রাজধানী কলম্বো এবং প্রধান প্রধান শহরে কারফিউ জারি করে এবং শনিবার সকালে সেটি তুলে নেয়া হয়। যদিও দেশটির আইনপ্রণেতা ও বিরোধদলীয় রাজনীতিবিদরা কারফিউকে অবৈধ আখ্যা দিয়ে আসছে।
শুক্রবার শ্রীলঙ্কায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত জুলি চুং জনগণকে শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ করতে বলেছেন এবং সেনাবাহিনী ও পুলিশকে ‘শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের বিক্ষোভের জন্য স্থান ও নিরাপত্তা দেয়ার’ আহ্বান জানিয়েছেন।
চুং এক টুইটে বলেন, ‘বিশৃঙ্খলা ও বলপ্রয়োগ অর্থনীতিকে ঠিক করবে না কিংবা রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আনতে পারবে না। শ্রীলঙ্কানদের এই মুহূর্তে যা (সবচেয়ে বেশি) প্রয়োজন।’
আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন রনিল বিক্রমাসিংহে
মূল সুদের হার বাড়াল শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংক
শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংক মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ২০ বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে তাদের মূল সুদের হার সর্বোচ্চ স্তরে উন্নীত করেছে।
সাম্প্রতিক সময়ে দেশটি সবচেয়ে খারাপ অর্থনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। খাদ্য, জ্বালানি, গ্যাস এবং ওষুধের মতো প্রয়োজনীয় জিনিসের তীব্র ঘাটতি দেখা দিয়েছে দেশটিতে।
দেশটির প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে বলেছেন, জ্বালানি আমদানিতে সাহায্য করতে ক্রেডিট সহায়তা দিতে তিনি রাশিয়ার নেতা ভ্লাদিমির পুতিনকে অনুরোধ জানিয়েছেন।
শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, তারা স্থায়ী আমানতের সুবিধার হার ১০০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে ১৪ দশমিক ৫০ শতাংশ করেছে। এই পদক্ষেপটি ব্যাংকিং খাতে আরও তহবিল বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে বলে আশা করা হচ্ছে। এটি স্থায়ী ঋণ সুবিধার হারও বাড়িয়েছে।
ব্যাংকটি বলছে, এটি মুদ্রাস্ফীতিকে সম্পূর্ণরূপে নিয়ন্ত্রণ করতে তাদের মুদ্রানীতি আরও কঠোর করার আশা করছে, যা জুন মাসে প্রায় ৫৫ শতাংশ বেড়েছে, যেখানে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ৮০ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।
আরও পড়ুন: জ্বালানি সংকটে শ্রীলঙ্কায় আরও এক সপ্তাহ স্কুল বন্ধ
গুলিবিদ্ধ শিনজো আবে মারা গেছেন