নরেন্দ্র মোদি
কারাদণ্ডের পর এবার লোকসভার সদস্যপদ হারালেন রাহুল গান্ধী
মানহানির মামলায় দুই বছরের কারাদণ্ডের একদিন পর শুক্রবার ভারতের পার্লামেন্ট সিনিয়র বিরোধী নেতা রাহুল গান্ধীর লোকসভার সাংসদ পদ খারিজ করেছে।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিম্নকক্ষকে ইঙ্গিত করে সংসদের একটি নোটিশে বলা হয়েছে যে রাহুল গান্ধীর ‘লোকসভার সদস্যপদ খারিজ করা হলো’।
২০১৯ সালের নির্বাচনী সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উপাধি সম্পর্কে ‘আপত্তিকর’ মন্তব্যের জন্য আদালত তাকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন।
রাহুল গান্ধী দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য কেরালার ওয়েনাড়ের সাংসদ ছিলেন।
তিনি বর্তমানে ৩০ দিনের জন্য জামিনে রয়েছেন এবং জানিয়েছেন যে তিনি এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন।
রাহুল গান্ধীর দল কংগ্রেস এই রায়কে ‘ভুল এবং পক্ষপাতদুষ্ট’ বলে অভিহিত করেছে।
দলের সিনিয়র নেতা জয়রাম রমেশ বলেছেন, দল ‘আইনগত ও রাজনৈতিক উভয়ভাবেই’ রাহুল গান্ধীর সাংসদ পদ খারিজের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে লড়াই করবে।
শুক্রবার রাজধানী দিল্লিতে বিক্ষোভ মিছিলে বিরোধী নেতাদের নেতৃত্ব দেয় কংগ্রেস।
প্রতিবাদী সাংসদরা রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সরকারি বাসভবন রাষ্ট্রপতি ভবনে মিছিল করার পরিকল্পনা করেছিলেন।
কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খারগে গণমাধ্যমকে বলেছেন, রাহুল গান্ধী শুক্রবার সংসদে কথা বলার অনুমতি চেয়েছিলেন, কিন্তু তা প্রত্যাখান করা হয়।
আরও পড়ুন: মানহানির মামলায় রাহুল গান্ধীর ২ বছরের কারাদণ্ড
তিনি অভিযোগ করেছেন, রাহুলের বিরুদ্ধে এই রায় মূলত আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তের জন্য একটি যৌথ সংসদীয় কমিটির তদন্তের দাবির ফলাফল।
এই বছরের শুরুর দিকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক শর্ট-বিক্রেতা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের প্রকাশিত প্রতিবেদনে আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে কয়েক দশক ধরে স্টক ম্যানিপুলেশন এবং অ্যাকাউন্টিং জালিয়াতির অভিযোগ আনা হয়েছিল। যদিও আদানি গ্রুপ আর্থিক জালিয়াতির অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
কংগ্রেস সভাপতি বলেছেন, ‘যারা সত্য কথা বলছে তারা (সরকার) তাদের রাখতে চায় না, তবে আমরা সত্য কথা বলতে থাকব।’
কংগ্রেস বলছে আগামী দিনে তারা সরকারের বিরুদ্ধে আরও বড় পরিসরে বিক্ষোভের পরিকল্পনা করছে।
২০১৯ সালে একটি নির্বাচনী সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উপাধি সম্পর্কে মন্তব্যের জন্য বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) দুই বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে রাহুল গান্ধীকে।
২০১৩ সালের সুপ্রিম কোর্টের একটি আদেশে বলা হয়েছে যে একজন আইনপ্রণেতা অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে দুই বা তার বেশি বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হলে অবিলম্বে সংসদ থেকে অযোগ্য ঘোষণা করা হবে।
সাজা স্থগিত না হওয়া পর্যন্ত বা মামলায় খালাস না পাওয়া পর্যন্ত নির্বাচনে লড়তে পারবেন না রাহুল গান্ধী।
আগামী বছর ভারতে জাতীয় নির্বাচন হওয়ার কথা।
কংগ্রেস পার্টি বলেছে, সরকারের ‘অন্যায়’ প্রকাশ করার জন্য টার্গেট করা হচ্ছে রাহুলকে।
মি. রমেশ গুজরাটের আদালতের রায়কে ‘খুবই গুরুতর রাজনৈতিক সমস্যা’ বলে অভিহিত করেন এবং বলেন এই রায় ‘আমাদের গণতন্ত্রের ভবিষ্যত’কে প্রভাবিত করতে পারে।
বৃহস্পতিবার একটি দলীয় বৈঠকের পরে তিনি বলেন, ‘এটি মোদী সরকারের প্রতিহিংসার রাজনীতি, হুমকির রাজনীতি, ভয় দেখানোর রাজনীতি এবং হয়রানির রাজনীতির একটি বড় উদাহরণ’।
ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) মন্ত্রীরা অবশ্য রায় নিয়ে প্রশ্ন তোলার জন্য রাহুল গান্ধী ও তার দলের সমালোচনা করেছেন।
কেন্দ্রীয় শ্রমমন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব বলেছেন, রাহুল গান্ধী আদার ব্যাকওয়ার্ড ক্লাসেস (ওবিসি) নামে পরিচিত গোষ্ঠীর সদস্যদের অপমান করেছিলেন, যার অধীনে ‘মোদি’ নামটি পড়ে।
তিনি বলেন, ‘কোনও পদবীকে অপমান করা বাক স্বাধীনতা নয়।’
গত বছর কংগ্রেস দল ছাড়া ভারতের প্রাক্তন আইনমন্ত্রী কপিল সিবাল আদালতের সিদ্ধান্তকে ‘উদ্ভট’ বলেছেন।
তিনি আরও বলেন, রাহুল গান্ধীর মন্তব্য ‘একজন ব্যক্তিকে’ লক্ষ্য করে, কোনও গোষ্ঠীকে নয়।
বৃহস্পতিবারের রায়ের প্রতিক্রিয়ায়, রাহুল গান্ধী মহাত্মা গান্ধীর একটি উদ্ধৃতি টুইট করেছেন, ‘আমার ধর্ম সত্য ও অহিংসার উপর প্রতিষ্ঠিত। সত্য আমার ঈশ্বর, অহিংসা তা পাওয়ার মাধ্যম।’
বেশ কয়েকটি বিরোধী দল রাহুল গান্ধীর সমর্থনে নেমেছে।
শুক্রবার কংগ্রেসসহ ১৪টি দল সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল।
তাদের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় সরকার বিজেপির বিরোধীদের লক্ষ্যবস্তু করার জন্য তদন্তকারী সংস্থাগুলোর অপব্যবহার করছে।
আরও পড়ুন: রাহুল গান্ধীকে আটকের পর ছেড়ে দিল দিল্লি পুলিশ
দিল্লিতে বিক্ষোভ থেকে রাহুল-প্রিয়াঙ্কা আটক
জি২০ অর্থমন্ত্রীদের 'সবচেয়ে নাজুক মানুষদের' দিকে মনোনিবেশ করার আহ্বান মোদির
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, প্রধান প্রধান অর্থনীতির দেশগুলোর কৌশলগত বহুপক্ষীয় সংগঠনের অর্থনৈতিক নীতিনির্ধারকদের উচিত বিশ্বের সবচেয়ে নাজুক মানুষদের সাহায্য করার ব্যাপারে মনোনিবেশ করা।
শুক্রবার বেঙ্গালুরুতে ইন্ডিয়া এনার্জি উইকের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে জি-২০ দেশের অর্থমন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরদের প্রতি এ আহ্বান জানান মোদি।
তিনি বলেন, ‘আপনারা এমন একটি সময়ে বিশ্বব্যাপী অর্থ ও অর্থনীতির নেতৃত্বের প্রতিনিধিত্ব করছেন, যখন বিশ্ব গুরুতর অর্থনৈতিক সমস্যার মুখে।’
মোদি বলেন, ‘বিশ্ব অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা, আস্থা এবং প্রবৃদ্ধি ফিরিয়ে আনাটা অনেকটাই আপনাদের ওপর নির্ভর করে, কারণ আপনারা নেতৃস্থানীয় অর্থনীতি এবং বাজার ব্যবস্থার তত্ত্বাবধায়ক।’
মোদি বলেন, বিশ্বের দেশগুলো মহামারির পরে বেশ কয়েকটি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে। যার মধ্যে রয়েছে- স্বল্পমেয়াদী ঋণ, যুদ্ধ, মুদ্রাস্ফীতি এবং আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রতি আস্থা হ্রাস।
তিনি বলেন, ‘আমি আপনাদের বিশ্বের সবচেয়ে নাজুক মানুষদের প্রতি মনোনিবেশ করার আহ্বান জানাচ্ছি।’
আরও পড়ুন: নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে জি২০ সম্মেলনে অংশ নিতে পারেন প্রধানমন্ত্রী
ডিজিটাল মুদ্রা ও অর্থপ্রদান, বিশ্বব্যাংকের মতো প্রতিষ্ঠানের সংস্কার, জলবায়ু পরিবর্তন এবং আর্থিক অন্তর্ভুক্তিসহ বিস্তৃত বিষয়গুলোতে আলোচনার জন্য বেঙ্গালুরুতে বৈঠকগুলো করা হয়।
মার্কিন ও ব্রিটিশ কর্মকর্তাদের মধ্যে আলোচনা এবং ভারতের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমনের ফ্রান্স ও ব্রাজিলের অর্থমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকসহ বিভিন্ন নেতাদের মধ্যে একাধিক বৈঠকও নির্ধারিত ছিল।
তবে ইউক্রেন যুদ্ধের মতো বিস্তৃত বিষয় সকল আলোচনাকে ছাপিয়ে যাচ্ছে।
বৃহস্পতিবার, ইউএস ট্রেজারি সেক্রেটারি জ্যানেট ইয়েলেন নিশ্চিত করেছেন যে তিনি ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের জন্য এবং মস্কোর যুদ্ধ প্রচেষ্টাকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য আরও শক্তিশালী নিষেধাজ্ঞার জন্য চাপ দেবেন।
জি২০ বৈঠকগুলো নেতাদের তাদের নীতিগুলিকে কীভাবে সমন্বয় করতে হয় তা বিবেচনা করার একটি সুযোগ দেয়।
যুদ্ধ ও অন্যান্য কারণে সৃষ্ট উচ্চ মুদ্রাস্ফীতির লাগাম টানতে কয়েক দশক ধরে মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভসহ অনেক কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদের হার দ্রুত বাড়িয়ে চলেছে।
করোনা মহামারির পর ভ্রমণ, পণ্য ও পরিষেবার চাহিদা বেড়েছে।
অন্যদিকে, খাদ্য, বাসস্থান, জ্বালানি ও সারের জন্য ক্রমবর্ধমান খরচের বিশাল বোঝা চাপিয়ে দেয়া হয়েছে সাধারণ জনগণের ওপর। বিশেষ করে দরিদ্র ও উন্নয়নশীল দেশগুলোতে জাতীয় ও পারিবারিক উভয় স্তরেই ঋণের বোঝা বেড়েছে।
আরও পড়ুন: ভারতের জি২০ এজেন্ডা হবে অন্তর্ভুক্তিমূলক, উচ্চাভিলাষী, কর্মমুখী ও সিদ্ধান্তমূলক: নরেন্দ্র মোদি
উল্লেখ্য, ভারত ২০২২ সালের ১ ডিসেম্বর থেকে ২০২৩ সালের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত জি২০-এর প্রেসিডেন্সি ধরে রেখেছে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মায়ের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর সমবেদনা
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মা হীরাবেন মোদির মৃত্যুতে শুক্রবার গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শুক্রবার নরেন্দ্র মোদির কাছে পাঠানো এক শোক বার্তায় শেখ হাসিনা লেখেন, ‘শোক ভারাক্রান্ত হৃদয়ে আমি বাংলাদেশের জনগণ ও নিজের পক্ষ থেকে, আপনার প্রিয় মা শ্রীমতী হীরাবেন মোদির মর্মান্তিক মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করছি।’
হীরাবেন মোদিকে একজন গর্বিত মা হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা দেখেছি একজন মা, প্রেরণাদাতা ও পরামর্শদাতা হিসেবে আপনার জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে তার ভূমিকা কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আপনার মায়ের সঙ্গে আপনার মধুরতম সম্পর্ক এবং তার প্রতি আপনার গভীর শ্রদ্ধা, প্রজন্মের পর প্রজন্মের জন্য অনুকরণীয় হয়ে থাকবে।’
আরও পড়ুন: পিরোজপুর আ.লীগ নেতার মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক
তিনি বলেন, ‘এটি এমন পারিবারিক মূল্যবোধকে প্রতিফলিত করে, যা আমাদের সমাজ অনাদিকাল থেকে লালন করে আসছে।’
প্রধানমন্ত্রীর সহকারী প্রেস সচিব এবিএম সরওয়ার-ই-আলম সরকার ইউএনবিকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী তার বার্তায় বলেছেন, ‘শোকের এই সময়ে আপনার, আপনার পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনের প্রতি আমাদের সমবেদনা রইলো।’
প্রধানমন্ত্রী মৃতের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।
আরও পড়ুন: আলাউদ্দিন আহমেদের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক
অনিতা চৌধুরী’র মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক
ভারতের জি২০ এজেন্ডা হবে অন্তর্ভুক্তিমূলক, উচ্চাভিলাষী, কর্মমুখী ও সিদ্ধান্তমূলক: নরেন্দ্র মোদি
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, ভারতের জি২০ এজেন্ডা হবে অন্তর্ভুক্তিমূলক, উচ্চাভিলাষী, কর্মমুখী ও সিদ্ধান্তমূলক।
তিনি বলেন, ‘আসুন আমরা ভারতের জি২০ সভাপতিত্বকে নিরাময়, সম্প্রীতি ও আশার সভাপতিত্ব হিসেবে গড়ে তুলি। আসুন মানবকেন্দ্রিক বিশ্বায়নের একটি নতুন দৃষ্টান্ত গঠনের জন্য একসঙ্গে কাজ করি।’
‘ইন্ডিয়া’স জি২০ প্রেসিডেন্সি টু প্রমোট দ্য ইউনিভার্সাল সেন্স অব ওয়ান-নেস’ শিরোনামে একটি নিবন্ধে প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেছেন যে জি২০ এর পূর্ববর্তী ১৭টি সভাপতিত্ব সামষ্টিক-অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার জন্য,
আরও পড়ুন: বিতর্ক এড়াতে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন না পুতিন
আন্তর্জাতিক ট্যাক্সের যৌক্তিককরণ, দেশগুলোর ওপর ঋণের বোঝা থেকে মুক্তি দেয়ার জন্য উল্লেখযোগ্য ফলাফল প্রদান করেছে।
নিবন্ধে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘আমরা এই অর্জনগুলো থেকে উপকৃত হব এবং এর ওপর ভিত্তি করে পরবর্তীতে গড়ে তুলব।’
তিনি বলেন, ‘যাইহোক, যেহেতু ভারত এই গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গটি ধরে নিয়েছে, আমি নিজেকে জিজ্ঞাসা করি যে G20 কি আরও এগিয়ে যেতে পারে? সামগ্রিকভাবে মানবতার উপকার করার জন্য আমরা কি একটি মৌলিক মানসিকতার পরিবর্তনকে অনুঘটক করতে পারি? আমি বিশ্বাস করি আমরা পারব।’
জি২০’র সভাপতিত্ব হিসেবে ভারত বাংলাদেশ, মিশর, মরিশাস, নেদারল্যান্ডস, নাইজেরিয়া, ওমান, সিঙ্গাপুর, স্পেন ও সংযুক্ত আরব আমিরাতকে অতিথি দেশ হিসেবে এর বৈঠক ও শীর্ষ সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানাবে। বিষয়টি ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে ঘোষণা করেছে।
ভারতের সভাপতিত্বে ডিসেম্বর ২০২২ থেকে শুরু করে সারা দেশে ২০০ টিরও বেশি জি২০ বৈঠকের আয়োজন করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: জি-২০ সম্মেলন: পুতিন ও এমবিএসের সঙ্গে সাক্ষাত হতে পারে বাইডেনের
রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র: সেপ্টেম্বরে শেখ হাসিনা-নরেন্দ্র মোদির যৌথভাবে ১ম ইউনিট সম্পন্নের ঘোষণা
ভারতের উত্তরাখণ্ডে বরযাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ২৫
ভারতের পার্বত্য রাজ্য উত্তরাখণ্ডে বরযাত্রীবাহী একটি বাস খাদে পড়ে অন্তত ২৫ জন নিহত ও ২১ জন আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার গভীর রাতে উত্তরাখণ্ডের পাউরি গাড়োয়াল জেলার সিমদি গ্রামের কাছে এ দুর্ঘটনা ঘটে। বাসে প্রায় ৫০ জনের মতো লোক একটি বিয়ে থেকে বাড়ি ফিরছিলেন।
বুধবার সকালে রাজ্যের পুলিশ প্রধান অশোক কুমার স্থানীয় গণমাধ্যম বলেন, ‘পাউরি গাড়োয়ালে বাস দুর্ঘটনায় প্রায় ২৫ জনকে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে। পুলিশ এবং রাজ্য বিপর্যয় ত্রাণ বাহিনী আহত ২১ জনকে উদ্ধার করে কাছাকাছি একটি হাসপাতালে ভর্তি করেছে।’
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি টুইট করে ‘হৃদয়বিদারক’ এই দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় টুইটে বলেন, ‘উত্তরাখণ্ডের পাউরিতে বাস দুর্ঘটনাটি হৃদয়বিদারক। এই মর্মান্তিক ঘটনায় নিহতদের পরিবারের প্রতি শোক জানাচ্ছি। আমি আশা করি যারা আহত হয়েছেন তারা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন। উদ্ধার অভিযান চলছে।’
দুর্ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ প্রধান।
পড়ুন: ভারতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২৭
ভারতে বাস-ট্রাক সংঘর্ষে নিহত ৮, আহত ২৫
ভারতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২৭
ভারতের উত্তর প্রদেশে শনিবার রাতে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বহনকারী একটি ট্রলিকে টেনে নেয়া ট্রাক্টর উল্টে পুকুরে পড়ে ২৭ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের বেশিরভাগই নারী এবং শিশু। এ ঘটনায় আরও ২২ জন আহত হয়েছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, উত্তর প্রদেশের রাজধানী লখনৌ থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরে কানপুর জেলার ঘটামপুর গ্রামের কাছে এ দুর্ঘটনা ঘটে। ৫০ জন তীর্থযাত্রী মন্দির থেকে বাড়ি ফেরার সময় এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।
একজন সিনিয়র পুলিশ অফিসার স্থানীয় গণমাধ্যমকে বলেন, ‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে ট্রাক্টরের চালক গাড়ির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পুকুরে পড়ে যায়। পুকুর থেকে প্রায় ২৭টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।’
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সোশ্যাল মিডিয়ায় নিহতদের পরিবারের পাশাপাশি আহতদের সমবেদনা জানাতে এবং দুর্ঘটনার শিকারদের জন্য ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছেন।
টুইটে মোদি বলেন, ‘কানপুরে ট্র্যাক্টর-ট্রলি দুর্ঘটনায় আমি ব্যথিত। যারা স্বজন হারিয়েছেন তাদের প্রতি আমার শোক এবং যারা আহত হয়েছেন তাদের সুস্থতার জন্য আমার প্রার্থনা রইল। স্থানীয় প্রশাসন ক্ষতিগ্রস্তদের সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তা প্রদান করছে।’
পুলিশ অফিসার বলেছেন, ‘দুর্ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।’
পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় ইয়ান: ফ্লোরিডায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৭
ভারতে বাস-ট্রাক সংঘর্ষে নিহত ৮, আহত ২৫
ভারত থেকে দেশে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী
ভারতে চার দিনের সরকারি সফর শেষে বৃহস্পতিবার রাতে দেশে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইট রাত ৮টা ০৬ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
এর আগে, ফ্লাইটটি রাজস্থানের জয়পুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে স্থানীয় সময় বিকাল ৫টা ৩০ মিনিটে (বাংলাদেশি সময় সন্ধ্যা ৬টা) যাত্রা করে। যেখানে রাজস্থানের শিক্ষামন্ত্রী বুলাকি দাস কাল্লা ও ভারতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মুহাম্মদ ইমরান প্রধানমন্ত্রীকে বিদায় জানান।
এর আগে সকালে, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ভারত সফরের শেষ দিনে সুফি মঈনুদ্দিন চিশতীর মাজার (রওজা) খাজা গরীব নওয়াজ দরগাহ শরীফে নামাজ পড়তে রাজস্থানের আজমির শরীফে পৌঁছান।
আরও পড়ুন: ৪ দিনের ভারত সফর শেষে দেশে ফিরছেন প্রধানমন্ত্রী
গত সোমবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে তিন বছর পর ভারত সফরে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী এসময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বিভিন্ন দ্বিপক্ষীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন এবং মঙ্গলবার পৃথকভাবে ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু ও ভারতের উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।
এসময় দুই নেতার মধ্যে দ্বিপক্ষীয় আলোচনার পর ঢাকা ও দিল্লি কুশিয়ারা নদীর পানি বণ্টনসহ সাতটি সমঝোতা স্মারক সই করে।
অন্যান্য সমঝোতা স্মারকগুলো হলো- মহাকাশ প্রযুক্তি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, রেলওয়ে, বিচার বিভাগ ও সম্প্রচারের ক্ষেত্রে সহযোগিতা।
এছাড়া রামপালে মৈত্রী বিদ্যুৎকেন্দ্রের ইউনিট-১ এবং খুলনায় ৫ দশমিক ১৩ কিলোমিটার দীর্ঘ রূপসা সেতুর উদ্বোধন করেন দুই নেতা।
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতের আমন্ত্রণ না পেয়ে মোদি সরকারের সমালোচনায় মমতা
শেখ হাসিনা ভারতে অবস্থানকালে দেশটির প্রধান বিরোধীদল কংগ্রেসের সাবেক সভাপতি রাহুল গান্ধী, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর, ভারতের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের উন্নয়ন মন্ত্রী জি কিষাণ রেড্ডি, নোবেল বিজয়ী কৈলাশ সত্যার্থী, আদানি গ্রুপের চেয়ারম্যান গৌতম আদানি এবং ভারতের প্রয়াত রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির মেয়ে শর্মিষ্ঠা মুখার্জি তার সঙ্গে সাক্ষাত করেন।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ভারতের জাতির পিতার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে মহাত্মা গান্ধীর সমাধি (স্মৃতিস্থল) পরিদর্শন করেন।
শেখ হাসিনা দিল্লিতে নিজামুদ্দিন আউলিয়া দরগা পরিদর্শন করেন ও ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) এবং কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রি (সিআইআই) যৌথভাবে নয়াদিল্লিতে আয়োজিত একটি ব্যবসায়িক অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
শেখ হাসিনা ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে প্রাণ উৎসর্গকারী ভারতীয় সেনাদের বংশধরদের মধ্যে ২০০ শিক্ষার্থীকে মুজিব বৃত্তি প্রদান করেন।
আরও পড়ুন: আশা করি তিস্তা চুক্তিসহ সব অমীমাংসিত সমস্যার দ্রুত সমাধান হবে: প্রধানমন্ত্রী
বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন সংযোগ নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনা চলছে: মোদি
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, ক্রমবর্ধমান জ্বালানির দাম বর্তমানে সমস্ত উন্নয়নশীল দেশের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে। বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন সংযোগের বিষয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ফলপ্রসূ আলোচনা চলছে।
মঙ্গলবার দ্বিপক্ষীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ‘বিস্তৃত আলোচনা’ শেষে মোদি বলেন, ‘আজ মৈত্রী তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের কাজ সম্পন্নের ঘোষণার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে সাশ্রয়ী বিদ্যুতের প্রাপ্যতা বৃদ্ধি করবে।’
ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার দেশ বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানির জন্য এশিয়ার বৃহত্তম বাজার এবং এই প্রবৃদ্ধি আরও ত্বরান্বিত করতে তারা শিগগিরই দ্বিপক্ষীয় ব্যাপক অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি (সেপা) নিয়ে আলোচনা শুরু করবে।
ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী বলেন, বন্যা প্রশমনের ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার ‘ফলপ্রসু আলোচনা’ হয়েছে।
আরও পড়ুন: যৌথভাবে রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ইউনিট ১- এর কাজ সম্পন্নের ঘোষণা হাসিনা-মোদির
তিনি বলেন, ভারত রিয়েল-টাইমের ভিত্তিতে বন্যা সংক্রান্ত তথ্য বাংলাদেশের সঙ্গে শেয়ার করছে এবং তারা তথ্য আদান-প্রদানের সময়সীমাও বাড়িয়েছে।
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের মধ্য দিয়ে ৫৪টি নদী প্রবাহিত হয়েছে। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে এগুলো দুই দেশের মানুষের জীবন-জীবিকার সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে আছে।
এ বিষয়ে মোদি বলেন, ‘এই নদীগুলো সম্পর্কিত লোককাহিনী ও লোকগীতিও আমাদের যৌথ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সাক্ষী। আজ আমরা কুশিয়ারা নদীর পানি বণ্টন নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি সই করেছি। এটি ভারতের দক্ষিণ আসাম ও বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চলকে উপকৃত করবে।’
বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের স্থিতিশীল, সমৃদ্ধ ও প্রগতিশীল বাংলাদেশের রূপকল্প বাস্তবায়নে মোদি বলেন, ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে ধাপে ধাপে হাঁটবে। ‘আমাদের আজকের আলোচনাটি মূলত এই প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করার একটি দুর্দান্ত সুযোগ ছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘আজ আমরা সন্ত্রাসবাদ ও মৌলবাদের বিরুদ্ধে সহযোগিতার ওপর জোর দিয়েছি। ১৯৭১ সালের চেতনাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য, আমাদের পারস্পরিক বিশ্বাসকে আঘাত হানতে চায় এমন শক্তির বিরুদ্ধে আমাদের একসঙ্গে লড়াই করাও খুব গুরুত্বপূর্ণ।’
মোদি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ অসামান্য উন্নতি করেছে।
তিনি বলেন, গত কয়েক বছরে প্রতিটি ক্ষেত্রে তাদের পারস্পরিক সহযোগিতাও দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে। ‘আজকে, বাংলাদেশ ভারতের বৃহত্তম উন্নয়ন অংশীদার এবং এই অঞ্চলে আমাদের বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার।’
আরও পড়ুন: ঢাকা-দিল্লি ৭ সমঝোতা স্মারক সই
মোদি বলেন, দুই দেশের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সাংস্কৃতিক ও মানুষের সঙ্গে মানুষের সম্পর্কও ক্রমাগত বৃদ্ধি পেয়েছে।
তিনি বলেন, তারা উভয়েই বিশ্বাস করেন যে কোভিড মহামারি ও সাম্প্রতিক বৈশ্বিক পরিস্থিতি থেকে শিক্ষা নিয়ে তাদের অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করতে হবে।
মোদি বলেন, ‘আমরা আইটি, মহাকাশ ও পারমাণবিক শক্তির মতো খাতে সহযোগিতা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি, যা আমাদের তরুণ প্রজন্মের জন্য আগ্রহের বিষয়। আমরা জলবায়ু পরিবর্তন ও সুন্দরবনের মতো ঐতিহ্য রক্ষায়ও সহযোগিতা অব্যাহত রাখব।’
তিনি বলেন, রূপসা নদীর ওপর রেলসেতুর উদ্বোধন পারস্পরিক যোগাযোগ বৃদ্ধির একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ।
এই সেতুটি ভারতের লাইন অব ক্রেডিট-এর অধীনে খুলনা ও মোংলা বন্দরের মধ্যে নির্মিত নতুন রেললাইনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
মোদি বলেন, বাংলাদেশের রেল ব্যবস্থার উন্নয়ন ও সম্প্রসারণে ভারত সব ধরনের সহায়তা অব্যাহত রাখবে।
আরও পড়ুন: হায়দ্রাবাদ হাউসে বৈঠকে হাসিনা-মোদি
যৌথভাবে রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ইউনিট ১- এর কাজ সম্পন্নের ঘোষণা হাসিনা-মোদির
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মঙ্গলবার যৌথভাবে বাগেরহাটের রামপালে মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্রকল্পের ইউনিট ১-এর কাজ সম্পন্নের ঘোষণা দিয়েছেন।
ভারতের রেয়াতি অর্থায়ন প্রকল্পের আওতায় নির্মিত এই প্রকল্পটি বাংলাদেশের জাতীয় গ্রিডে ১৩২০ মেগাওয়াট যুক্ত করবে।
এর আগে, শেখ হাসিনা ও মোদি ভারতের রাজধানী শহরের হায়দরাবাদ হাউজে এক বৈঠকের পর সাতটি দ্বিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষর করেন।
একজন কর্মকর্তা ইউএনবিকে জানিয়েছেন, মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্ল্যান্টের প্রথম ইউনিটটি অক্টোবরের শুরুতে বাণিজ্যিকভাবে চালু হবে। এটি বাংলাদেশ-ভারত বিদ্যুৎ খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধির একটি বড় অগ্রগতি।
১৩২০ (২x৬৬০) মেগাওয়াট কয়লা চালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ইউনিট ১ সফলভাবে ১৫ আগস্ট জাতীয় গ্রিডের সঙ্গে সমন্বয় করা হয়েছে।
বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি (প্রা.) লিমিটেডের প্রকল্প পরিচালক সুভাষ চন্দ্র পান্ডে ইউএনবিকে বলেছেন, মেগা পাওয়ার প্ল্যান্টের দুটি ইউনিট চালু হয়ে গেলে মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্রজেক্টটি হবে বাংলাদেশের বৃহত্তম পাওয়ার প্ল্যান্টগুলোর মধ্যে একটি।
আরও পড়ুন: রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র: সেপ্টেম্বরে শেখ হাসিনা-নরেন্দ্র মোদির যৌথভাবে ১ম ইউনিট সম্পন্নের ঘোষণা
তিনি বলেন, বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ইউনিট-২, যা রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প নামেও পরিচিত; এটি আগামী বছরের শুরুর দিকে চালু হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
একজন কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশের খুলনা বিভাগের বাগেরহাট জেলার রামপালে ১৩২০ (২x৬৬০) মেগাওয়াট কয়লা চালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি প্রায় দুই বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয়ে স্থাপন করা হচ্ছে।
বিপিডিবি’র কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভারত হেভি ইলেকট্রিক্যালস লিমিটেডের (বিএইচইএল) জন্য বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি প্রাইভেট লিমিটেড (বিআইএফপিসিএল) এটি নির্মাণ করছে। বিআইএফপিসিএল হলো ভারতের ন্যাশনাল থার্মাল পাওয়ার কোম্পানি (এনটিপিসি) লিমিটেড ও বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের (বিপিডিবি) মধ্যকার একটি ৫০:৫০ উদ্যোগ।
প্রকল্পের বৈশিষ্ট্যগুলো বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করে প্রকল্প পরিচালক বলেন, পরিবেশগত প্রভাব কার্যকরভাবে প্রশমিত করতে সুপার ক্রিটিক্যাল প্রযুক্তির মাধ্যমে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি স্থাপন করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: আশা করি তিস্তা চুক্তিসহ সব অমীমাংসিত সমস্যার দ্রুত সমাধান হবে: প্রধানমন্ত্রী
পান্ডে বলেন, ফ্লু গ্যাস নির্গমনের বিস্তৃত বিচ্ছুরণের জন্য বিদ্যুৎ কেন্দ্রটিতে বাংলাদেশের সবচেয়ে লম্বা চিমনি (২৭৫ মিটার) রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, কয়লার জন্য একটি অগ্রিম জাহাজ আন-লোডার নির্মাণের পাশাপাশি একটি সম্পূর্ণ আচ্ছাদিত কয়লা স্টক ইয়ার্ড, কম ছাই ও সালফার সামগ্রী সহ উচ্চ গ্রেডের আমদানি করা কয়লা ব্যবহারসহ অন্যান্য ব্যবস্থা রয়েছে।
প্রকল্পের পরিচালক বলেন, গত ৬ এপ্রিল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৪০০ কেভি জিআইএস সুইচইয়ার্ড ও আন্তঃসংযোগকারী ট্রান্সফরমারটি সক্রিয় করা হয়েছিল। তারপর থেকে এটি পায়রা বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে বাংলাদেশের ২৩০ কেভি গ্রিড সিস্টেমে ৪০০ কেভি বিদ্যুতের হুইলিং সুবিধা প্রদান করছে। যাতে বাংলাদেশের পাওয়ার গ্রিড করপোরেশন সর্বোচ্চ চাহিদা মেটাতে খুলনা অঞ্চলে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ পাঠাতে সক্ষম হয়।
আরও পড়ুন: ঢাকা-দিল্লি ৭ সমঝোতা স্মারক সই
ঢাকা-দিল্লি ৭ সমঝোতা স্মারক সই
বাংলাদেশ ও ভারত মঙ্গলবার পানি বণ্টনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা প্রদর্শনে সাতটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে।
স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে রহিমপুর হয়ে সিলেটের উচ্চ সুরমা-কুশিয়ারা প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশের কুশিয়ারা নদীর ১৫৩ কিউসেক পানি প্রত্যাহার।
বৈজ্ঞানিক সহযোগিতায় ভারতের বৈজ্ঞানিক ও শিল্প গবেষণা পরিষদ (সিএসআইআর) এবং বাংলাদেশ বৈজ্ঞানিক ও শিল্প গবেষণা পরিষদের (বিসিএসআইআর) মধ্যে আরেকটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে।
ভারতের ভোপালে ন্যাশনাল জুডিশিয়াল একাডেমি এবং বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে।
ভারতীয় রেলওয়ের ইনস্টিটিউটে বাংলাদেশ রেলওয়ের কর্মীদের প্রশিক্ষণ এবং বাংলাদেশে আইটি সমাধানে সহযোগিতার জন্য বাংলাদেশ ও ভারতের রেলওয়ে মন্ত্রণালয়ের মধ্যে দুটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে।
আরও পড়ুন: ঢাকা-নয়াদিল্লির মধ্যে ৭টি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর প্রক্রিয়া রাতেই চূড়ান্ত হবে: পররাষ্ট্র সচিব
প্রসার ভারতী ও বাংলাদেশ টেলিভিশনের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে।
উভয়পক্ষ মহাকাশ প্রযুক্তির ক্ষেত্রে সহযোগিতার জন্য একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে।
দুই দেশ বর্ধিত সহযোগিতা চাওয়ায় দিল্লির হায়দ্রাবাদ হাউসে আলোচনার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষর প্রত্যক্ষ করেন।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে কুশিয়ারা নদীর পানি বণ্টন সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক সই: প্রতিমন্ত্রী
চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফর: ঢাকা-বেইজিংয়ের মধ্যে ৪ চুক্তি-সমঝোতা সই