ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন
বগুড়ায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার সাংবাদিক কারাগারে
বগুড়া সদর পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সামির হোসেন মিশুর বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ার অভিযোগে দৈনিক বাণিজ্য প্রতিদিনের বগুড়া জেলা প্রতিনিধি আকতারুজ্জামানকে গ্রেপ্তারের পর কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
শনিবার দিবাগত রাত ৩ টায় তার নিজ বাড়ি থেকে ডিবি পুলিশ তাকে আটক করে।
আকতারুজ্জামানের বাবা রফিকুল ইসলাম বলেন, রাত ৩ টায় ১২ জন ডিবি পুলিশ এবং ডা. সামির হোসেন মিশু আমার বাড়িতে আসে। এরপর আমার ছেলেকে আটক করে নিয়ে যায়। কেন আটক করা হয়েছে জানতে চাইলে তারা কোন অভিযোগ এর কথা তখন বলেননি। আমি অনেক অনুরোধ করলেও তারা আমার ছেলেকে ছাড়েনি।
পড়ুন: ঠাকুরগাঁওয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সাংবাদিক গ্রেপ্তার
বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সেলিম রেজা জানান, বগুড়া সদর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের ক্লার্ক শামীমা আক্তার বাদী হয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করেছেন। রবিবার বিকালে আদালতের মাধ্যকে আকতারুজ্জামানকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
এদিকে, সাংবাদিক ইউনিয়ন বগুড়া’র সভাপতি মীর্জা সেলিম রেজা ও সাধারণ সম্পাদক গণেশ দাস এক বিবৃতিতে সাংবাদিক আকতারুজ্জামানকে গ্রেপ্তারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে তাকে মুক্তি দেয়ার দাবি জানিয়েছেন।
পড়ুন: খুলনায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় সাংবাদিক সবুর কারাগারে
মেহেরপুরে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সাংবাদিক গ্রেপ্তার
কার্টুনিস্ট কিশোরসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট
বহুল আলোচিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর ও দিদারুল ভূঁইয়াসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট (সম্পূরক অভিযোগপত্র) জমা দিয়েছে পুলিশ।
রবিবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) উপপরিদর্শক (এসআই) আফছর আহমেদ অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
আদালতের রমনা জেনারেল রেকডিং (জিআর) শাখা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) নিজাম উদ্দিন এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন: হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগে আদালতে মামলার আবেদন কার্টুনিস্ট কিশোরের
মামলার অন্যতম আসামি লেখক মুশতাক আহম্মেদ মারা যাওয়ায় চার্জশিট থেকে তার নাম বাদ দেয়া হয়েছে। এছাড়া এজাহারভুক্ত আরও তিনআসামিকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
তারা হলেন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সাংবাদিক সাহেদ আলম, ব্লগার আসিফ মহিউদ্দিন ও ফিলিপ শুমাখার নামে অজ্ঞাত ব্যক্তি (এই নামে ফেসবুক আইডি ছিল, কিন্তু ব্যক্তির সন্ধান পাওয়া যায়নি)।
আরও পড়ুন: ১০ মাস পর কারামুক্ত কার্টুনিস্ট কিশোর
অভিযোগপত্রে নাম আসা অপর আসামিরা হলেন আল জাজিরায় প্রচারিত একটি প্রতিবেদনের অন্যতম প্রধান চরিত্র সামিউল ওরফে জুলকারনাইন সায়ের খান, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সাবেক পরিচালক মিনহাজ মান্নান, নেত্র নিউজের এডিটর ইন চিফ তাসনিম খলিল, আশিক ইমরান ও স্বপন ওয়াহিদুন নবী।
এর আগে গত ১৩ জানুয়ারি ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ মামলায় প্রথমবার চার্জশিট জমা দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মহসীন সর্দার। চার্জশিটে তখন তিন জনকে অভিযুক্ত করা হয়। বাকি ৮ আসামিকে অব্যাহতির আবেদন করা হয়।
আরও পড়ুন: জামিন পেলেন কার্টুনিস্ট কিশোর
এরপর গত ৯ ফেব্রুয়ারি ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর নজরুল ইসলাম শামীম মামলাটি পুনরায় তদন্ত করার আবেদন করেন।
এরপর ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটকে (সিটিটিসি) তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
২০২০ সালের ৫ মে র্যা ব-৩ এর ওয়ারেন্ট অফিসার আবু বকর সিদ্দিক রমনা থানায় কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোরসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে রমনা থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, আসামিরা ‘আই অ্যাম বাংলাদেশি’ নামে ফেসবুক পেজে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি বা সুনাম ক্ষুণ্ণ করতে বা বিভ্রান্তি ছড়ানোর উদ্দেশে অপপ্রচার বা গুজবসহ বিভিন্ন ধরনের পোস্ট দিয়েছেন। যা জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি এবং আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটায়।
মেহেরপুরে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সাংবাদিক গ্রেপ্তার
মেহেরপুরের গাংনীতে আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য মকবুল হোসেনের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশের জেরে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মামলায় সাংবাদিক আল আমিন হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শনিবার সকালে গাংনী পৌর শহরের উপকণ্ঠে বাঁশবাড়িয়া গ্রামে নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আল আমিন হোসেন ওই গ্রামের মৃত আব্বাস আলীর ছেলে ও ঢাকা থেকে প্রকাশিত বিজনেস বাংলাদেশ পত্রিকার মেহেরপুর জেলা প্রতিনিধি। তিনি মেহেরপুর প্রতিদিনের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক।
আরও পড়ুন: রাজনৈতিক-ব্যবসায়িক আঁতাত ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন গণমাধ্যমের বিকাশে অন্তরায়: টিআইবি
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গাংনী থানার এসআই সুমন জানান, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় আদালতের পরোয়ানা থাকায় সাংবাদিক আল আমিন হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ১১ মে স্থানীয় দৈনিক মেহেরপুর প্রতিদিন পত্রিকায় ‘গাংনীর সাবেক এমপি মকবুলের কান্ড, ২৬ বছর দখলে রেখেছে পরের বাড়ি’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর মেহেরপুর-২ গাংনী আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মুক্তিযোদ্ধা মো. মকবুল হোসেনের ভাগ্নে সবুজ হোসেন বাদী হয়ে গাংনী থানায় মেহেরপুর প্রতিদিনের প্রকাশক ও আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় উপকমিটির সদস্য এম এ এস ইমন, সম্পাদক ইয়াদুল মোমিন ও যুগ্ম সম্পাদক আল আমিনের নামে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলাটি দায়ের করেন।
উক্ত মামলায় নিম্ন আদালতের রায়ে তারা জামিনে ছিলেন। সম্প্রতি পুলিশ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করলে আদালত পরিবর্তন হয় এবং বিচারক আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
‘পুলিশ সাইবার সাপোর্ট ফর উইমেন’ এ গৃহবধুর অভিযোগে পুলিশ কনস্টেবল গ্রেপ্তার
ভার্চুয়াল জগতে নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ পুলিশের উদ্যোগে চালু হওয়া ‘পুলিশ সাইবার সাপোর্ট ফর উইমেন’-এর ফেসবুক পেইজে অভিযোগ করে প্রতিকার পেলেন ঢাকার দোহার উপজেলার এক গৃহবধু।
বৃহস্পতিবার গৃহবধুর করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় পুলিশের এক কনস্টেবলকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
দোহার থানার ওসি মোস্তফা কামাল জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে ফরিদপুর থেকে সাইফুল ইসলাম নামে ওই পুলিশ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: গোসল করতে গিয়ে স্কুলছাত্রী ধর্ষণের শিকার, যুবক গ্রেপ্তার
বুধবার ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূ বাদী হয়ে পুলিশ কনস্টেবল সাইফুলকে একমাত্র আসামি করে দোহার থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা করেন বলে জানান দোহার থানার ওসি।
গ্রেপ্তার সাইফুল ইসলাম দোহার উপজেলার নারিশা পশ্চিমচর গ্রামের নাসির উদ্দিনের ছেলে। সে ফরিদপুর জেলার পুলিশ লাইনে কনস্টেবল পদে কর্মরত ছিল।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় প্রতিবন্ধীকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার ২
ভুক্তভোগী গৃহবধু জানান, বিগত তিন বছর আগে স্কুলে পড়াশোনা করা অবস্থায় দোহারের কবি নজরুল উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের বাড়িতে প্রাইভেট পড়তেন। ওই সময় ওই শিক্ষকের ছোট ভাই পুলিশ কনস্টেবল সাইফুল ইসলামের সাথে তার পরিচয় হয়। পরিচয়ের সুযোগে মোবাইল থেকে সাইফুল তার বেশকিছু ব্যক্তিগত ছবি ও খোলামেলা অবস্থার ভিডিও নিয়ে নেয়। এরপর ওই ছবি ও ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে তার সাথে প্রেমের সম্পর্ক করতে বাধ্য করে। সম্পর্কের একপর্যায়ে সে ইমুতে ভিডিও কলে আমার সঙ্গে কথা বলার সময় কৌশলে আমার খোলামেলা অবস্থার ভিডিও চিত্র ধারণ করে সেগুলো দেখিয়ে আমার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করার চেষ্টা করে সাইফুল।
আরও পড়ুন: ধর্ষণের অভিযোগে পৌর মেয়রের বিরুদ্ধে নার্সের মামলা
ভুক্তভোগী গৃহবধু আরও জানান, পরে আমি আমার এক বান্ধবীর সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করলে তার মাধ্যমে জানতে পারি সাইফুল এভাবে একাধিক মেয়ের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। বিষয়টি বুঝতে পেরে আমি কৌশলে তার সঙ্গে সব ধরণের যোগাযোগ বন্ধ করে দিলে প্রায় এক বছর তার সঙ্গে আমার কোনো ধরণের যোগাযোগ হয়নি। আমার স্বামী আমাকে মানসিকভাবে সহযোগিতার করার কারনে আমি তার মাধ্যমে ‘পুলিশ সাইবার সাপোর্ট ফর উইমেন’ এর কথা জানতে পারি। তার পরামর্শে আমি ওই ফেসবুক পেজের ম্যাসেঞ্জারে বিষয়টি জানালে আমার সঙ্গে ফোনে কথা বলেন ‘পুলিশ সাইবার সাপোর্ট ফর উইমেন’-এর টিম। তারা প্রথমে দোহার থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি পরবর্তীতে মামলা করার পরামর্শ দেন এবং দোহার থানা পুলিশকে মামলা গ্রহণের নির্দেশ দেন।
ভুক্তভোগী গৃহবধু বলেন, এরপর বুধবার আমি বাদী হয়ে সাইফুলের বিরুদ্ধে দোহার থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা দায়ের করি। মামলার পর বৃহস্পতিবার ফরিদপুর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে দোহার থানা পুলিশ।
‘পুলিশ সাইবার সাপোর্ট ফর উইমেন’ এর ফেসবুক পেইজে অভিযোগ করে দ্রুত প্রতিকার পেয়ে আত্মবিশ্বাসী ওই গৃহবধু বলেন, কখনো ভাবিনি পুলিশ এত সহজে একজন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে অ্যাকশন নিবে। আমি চাই এমন ঘটনায় ভুক্তভোগী অনেক নারী রয়েছেন তারা নির্ধিধায় ‘পুলিশ সাইবার সাপোর্ট ফর উইমেন’-এর সহযোগিতা গ্রহণ করবেন।
পুলিশের এমন উদ্যোগের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।
রাজনৈতিক-ব্যবসায়িক আঁতাত ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন গণমাধ্যমের বিকাশে অন্তরায়: টিআইবি
গণমাধ্যমের প্রকৃত স্বাধীনতা ও অবাধ তথ্য প্রবাহের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া হেফাজতের বিরুদ্ধে সাংসদ মোকতাদিরের মামলা
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তাণ্ডবের ঘটনায় হেফাজতে ইসলামের জেলা শাখার সভাপতি মাওলানা সাজিদুর রহমান এবং সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মোবারক উল্লাহসহ ১৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও দেড়শ জনকে আসামি করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়েছে।
শনিবার সন্ধ্যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর-৩ আসনের সংসদ সদস্য উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বাদী হয়ে মামলাটি জমা দেন।
আরও পড়ুন: হেফাজতের তাণ্ডব: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ২৪ ঘণ্টায় আরও ৭ জন গ্রেপ্তার
উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর পক্ষে তার আইনজীবী ও শহর আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট মো. মামুন মামলাটি সদর থানায় দাখিল করেন।
মামলার উল্লেখিত প্রধান দুই আসামি ছাড়াও ১২ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তারা হলেন মাওলানা আশরাফুল হোসেন তপু, বোরহান উদ্দিন কাসেমী, মাওলানা আলী আজম, মাওলানা এরশাদ উল্লাহ, মাওলানা জুনায়েদ কাসেমী, মাওলানা নোমান আল হাবিব, মমিনুল হাসান তাজ, সুলেমান মোল্লা, মাওলানা এনামুল হক, মাওলানা আব্দুল হাকিম, মাওলানা মনজুরুল হক ও খালেদ মোশাররফ। এছাড়া আরও অজ্ঞাত এক থেকে দেড়শ জনকে আসামি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: হেফাজতের তাণ্ডব: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ২৪ ঘণ্টায় ১২ জনসহ গ্রেপ্তার ৩১০
মামলার বিবরণীতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশে আগমনকে কেন্দ্র করে গত ২৬ মার্চ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নারকীয় তাণ্ডব চালায় হেফাজতে ইসলামের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার নেতাকর্মীরা। তারা তাণ্ডব চালিয়ে বৈধ সরকারকে উৎখাত করার ষড়যন্ত্র ও পরিকল্পনা করে। এরই অংশ হিসেবে আগ্নেয়াস্ত্রসহ গান পাউডার ও বিভিন্ন দাহ্য পদার্থ ব্যবহার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ভয়াবহ ক্ষতি সাধন করেন। এর আগে হেফাজতে ইসলামের জেলা শাখার সভাপতি মাওলানা সাজিদুর রহমান এবং সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মোবারক উল্লাহ সহ অন্যান্য আসামিদের নির্দেশে বিভিন্ন ফেসবুক পেজ, আইডি ও নিউজ পোর্টালে সাইবার সন্ত্রাস সংগঠিত করে রাষ্ট্রদ্রোহীতামূলক বিদ্বেষ ও ঘৃনামূলক স্ট্যাটাস প্রদান করে জনসাধারনের মাঝে উত্তেজনা সৃষ্টি করে। এর মাধ্যমে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আইন শৃঙ্খলার ব্যাপক অবনতি ঘটে।
আরও পড়ুন: হেফাজতের তাণ্ডব: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ২৪ ঘণ্টায় আরও গ্রেপ্তার ১১
শুধু তাই নয়, মামলার এজাহারনামীয় আসামিসহ অজ্ঞাতনামা আসামিরা উপস্থিত থেকে ইলেকট্রনিক্স বিন্যাসের মাধ্যমে সংবাদ সম্মেলন করে মিথ্যা তথ্য সংগ্রহ করে তাদের বক্তব্য জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়ার নিজস্ব ফেসবুক পেজে প্রচার করে। এরই এক পর্যায়ে গত ৩১ মার্চ আসামিরা তাদের ব্যবহৃত ফেসবুক পেজ জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া এর মাধ্যমে লিখিত বক্তব্য প্রদান করে বাদী উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করে ঘটনাকে ভিন্ন দিকে প্রভাবিত করার পাশাপাশি ঘটনার দায়ভার তার উপর চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন।
আসামিদের এরূপ বক্তব্য তাদের ডিজিটাল বিন্যাসের মাধ্যমে জাতীয় ও স্থানীয় ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়া প্রকাশ ও প্রচার করেন তারা। ফলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মুসলিম জনসাধারণের মধ্যে শত্রুতা, ঘৃণা, বিদ্বেষ সৃষ্টি করে। এতে আইনশৃংখলার চরম অবনতি হয়। পাশাপাশি সমগ্র দেশে ও বহির্বিশ্বে আমার সুনাম ক্ষুন্ন করার উদ্দেশ্যে আমি উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও প্রপাগান্ডা চালায়। যাহা ২০১৮ সালের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন এর ধারায় অপরাধ সংগঠিত করে। বিষয়টি আমাকে সাক্ষিরা অবগত করলে ঘটনার দ্বিতীয় দিন ২৭ মার্চ ঘটনাস্থলে আমি উক্ত বক্তব্য দেখে স্ক্রিনশট নিয়ে হার্ডকপি সংগ্রহ করি। এসব স্ক্রিনশট মামলায় যুক্ত করা হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ শাহজাহান বলেন, ‘মামলাটি জমা নেয়া হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’
ভিপি নুরের বিরুদ্ধে কুমিল্লার দুই থানায় অভিযোগ
ধর্মীয় মূল্যবোধে আঘাত ও আওয়ামী লীগকে কটাক্ষ করে ফেসবুকে উস্কানিমূলক বক্তব্য দেয়ার অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কুমিল্লার মুরাদনগর ও বাঙ্গরা থানায় দুটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:ডাকসু ভিপি নুরসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে ঢাবি ছাত্রীর ধর্ষণ মামলা
সোমবার মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাদেকুর রহমান ও বাঙ্গরা বাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুজ্জামান তালুকদার অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে ভিপি নুরের বিরুদ্ধে মামলা
গত রবিবার রাতে অভিযোগ দুইটি দায়ের করেন মুরাদনগর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদস্য সচিব ও উপজেলার নোয়াকান্দি গ্রামের মনু মিয়া সরকারের ছেলে সেলিম সরকার ও বাঙ্গরা বাজার থানা স্বেচ্ছাসেবকলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ও গাজীপুর উত্তর পাড়ার মনিরুল হকের ছেলে রাসেল মিয়া।
আরও পড়ুন:ধর্ষণ মামলায় নূরদের গ্রেপ্তারের দাবিতে ঢাবির সেই শিক্ষার্থীর অনশন
এ বিষয়ে মুরাদনগর থানার ওসি ও বাঙ্গরা বাজার থানার ওসি বলেন,‘ভিপি নুরুল হক নুরের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। যেহেতু একই অভিযোগে দেশের বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা হয়েছে তাই এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে পরামর্শ মোতাবেক পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।’
জয়পুরহাটে প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে ফেসবুকে কটূক্তি, ডিজিটাল আইনে যুবক গ্রেপ্তার
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে কটূক্তি করার অভিযোগে জয়পুরহাটের কালাইয়ে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে কালাই থানা পুলিশ।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মামলায় বুধবার রাতে কালাই উপজেলার বিয়ালা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আরও পড়ুন: জয়পুরহাটে ৫ম শ্রেণির ছাত্রীকে ‘ধর্ষণ’, যুবক গ্রেপ্তার
গ্রেপ্তারকৃত আমানুল্লাহ আমান (২১) উপজেলার বিয়ালা-মধ্যপাড়া গ্রামের আব্দুল আলিমের ছেলে।
কালাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিম মালিক জানান, জেলার আক্কেলপুর উপজেলার গোপিনাথপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগ নেতা ময়নুল ইসলাম সাজু তার ফেসবুকে শিশু বক্তা রফিকুল ইসলাম মাদানী ও হেফাজতে ইসলামী বাংলাদেশ এর নেতা মামুনুল হককে নিয়ে একটি পোস্ট করেন। তার এই পোস্টে আমানুল্লাহ আমান নামের ফেসবুক আইডি থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে একটি কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করে। এটি পরবর্তীতে অত্র এলাকায় বিভিন্ন জনের নিকটে শেয়ার করলে ভাইরাল হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করাসহ অত্র এলাকায় বিশৃংখলা ও আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি হওয়ার উপক্রম হয়।
আরও পড়ুন: হানিফকে নিয়ে কটূক্তি: ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় কলেজশিক্ষকের জামিন নামঞ্জুর
এ ব্যাপারে কালাই উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক তফিকুল ইসলাম তৌহিদ বাদী হয়ে মামলা দায়ের করলে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
জয়পুরহাটের পুলিশ সুপার মাসুম আহাম্মদ ভূঞা এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, কালাই থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার প্রেক্ষিতে পুলিশ মামলার অভিযুক্ত আসামি আমানুল্লাহ আমানকে গ্রেপ্তার করে বৃহস্পতিবার চিফ জুডিশিয়াল আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় রফিকুল মাদানী রিমান্ডে
রাজধানীর মতিঝিল থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলায় ‘শিশুবক্তা’ রফিকুল ইসলাম মাদানীর সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।
বৃহস্পতিবার ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রট আবু সুফিয়ান মো. নোমান শুনানি শেষে (ভার্চুয়ালি) এ আদেশ দেন। সংশ্লিষ্ট থানার সাধারণ নিবন্ধন শাখা থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
আরও পড়ুন: হেফাজতের তাণ্ডব: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ২৪ ঘণ্টায় আরও ৭ জন গ্রেপ্তার
সূত্র জানায়, মতিঝিল থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা কাজি নাসিরুল ইসলাম (পরিদর্শক) মামলার সুষ্ঠু তদন্তের প্রয়োজনে রফিকুল ইসলাম মাদানীকে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে ভার্চুয়াল আদালতে হাজির করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
গত ২১ এপ্রিল মতিঝিল থানার আরেক মামলায় তার চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।
গত ৭ এপ্রিল রফিকুল ইসলামকে নেত্রকোনা থেকে আটক করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। রাষ্ট্রবিরোধী উসকানিমূলক বক্তব্য দেয়া ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
আরও পড়ুন: হেফাজতের তাণ্ডব: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ২৪ ঘণ্টায় আরও গ্রেপ্তার ১১
এর আগে মাওলানা রফিকুল ইসলাম সর্বশেষ ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘আমাকে গুম করার চেষ্টা চলছে।’
গত ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ এলাকায় রয়েল রিসোর্ট মাওলানা মামুনুল হকসহ এক নারীকে অবরুদ্ধ করে রাখার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফেসবুক লাইভে এসে মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানী মামুনুল হকের সমর্থনে কথা বলেন।
আরও পড়ুন: হেফাজতের তাণ্ডব: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ২৪ ঘণ্টায় ১২ জনসহ গ্রেপ্তার ৩১০
গত ২৫ মার্চ রাজধানীর মতিঝিল শাপলা চত্বরে ছাত্র ও যুব অধিকার পরিষদের মোদিবিরোধী মিছিল থেকে ‘শিশুবক্তা’ রফিকুল ইসলামকে পুলিশি হেফাজতে নিয়েছিল। পরে আবার ছেড়ে দেয়া হয়।
ওই দিন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমন ঘিরে ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের নেতৃত্বে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ছাত্র ও যুব অধিকার পরিষদের একটি মিছিল রাজধানীর বিজয়নগর পানির ট্যাংকি এলাকায় শুরু হয়। এতে পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
মিছিলটি মতিঝিলে যাওয়ার পর পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এসময় রফিকুল ইসলামকে পুলিশ তাদের হেফাজতে নিয়েছিল।
নুরের বিরুদ্ধে রাজশাহীতেও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের বিরুদ্ধে রাজশাহীতে মামলা করা হয়েছে।
বুধবার সকাল ১১টার দিকে নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন মহানগর যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তৌরিদ আল মাসুদ রনি।
বোয়ালিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিবারন চন্দ্র বর্মণ বলেন, মামলার নথিপত্র তারা ঢাকার সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর ব্যবস্থা করছেন।
আসামির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে ভিপি নুরের বিরুদ্ধে মামলা
অভিযোগ দাখিলের পর বাদী তৌরিদ আল মাসুদ রনি বলেন, ‘সাবেক ভিপি নুর তার নিজস্ব ফেসবুক আইডি থেকে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মী-সমর্থকদের ধর্মীয় অনুভূতির প্রতি আঘাত করেছেন। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন সময় তিনি বর্তমান সরকার ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের নামে মিথ্যা ও মানহানিকর মন্তব্যও করছেন।’
‘এছাড়াও তিনি আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের চাঁদাবাজ আখ্যায়িত করাসহ বিভিন্ন অশোভন মন্তব্য করেছেন। তার এ সব মন্তব্যের প্রতিবাদে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়েছে।’