ঈদুল আজহা
চাঁপাইনবাবগঞ্জে দেড় লাখের বেশি কোরবানি পশু প্রস্তুত: জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর
পবিত্র ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে এবার চাঁপাইনবাবগঞ্জে এক লাখ ৬৫ হাজারের বেশি পশু প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর।
জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর জানিয়েছে, জেলায় চাহিদার অতিরিক্ত ৫২ হাজার ২২২টি পশু রয়েছে। খামার ও পারিবারিকভাবে এসব পশুকে প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে লালন পালন করা হয়েছে। এবার করোনা মহামারি না থাকার কারণে পশু হাট জমে উঠার আশা করা যাচ্ছে। একই সঙ্গে খামারিরা ভালো দাম পাবেন বলে আশা প্রাণিসম্পদ বিভাগের।
তবে পশুর ভালো দাম পাওয়া নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন খামারিরা। তারা বলছেন, বাজারে গো-খাদ্যের দাম চড়া। বাধ্য হয়ে তাই বেশি দামে খাবার কিনে গবাদি পশুকে খাওয়ানো হচ্ছে। এতে ব্যয় বেড়েছে দ্বিগুণ। তবে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় হাটে কোরবানির পশুর বেচা কেনা ভালো হবে বলে আশা খামারিদের।
আরও পড়ুন: এবার ১.২১ কোটির বেশি কোরবানির পশু প্রস্তুত: মন্ত্রী
জেলা প্রণিসম্পদ দপ্তরের তথ্য মতে, এবার জেলায় কোরবানির পশুর সম্ভাব্য চাহিদা ধরা হয়েছে ১ লাখ ১৩ হাজার ৩৯৩ টি পশু। আর কোরবানির জন্য মোট পশু প্রস্তুত রয়েছে ১ লাখ ৬৫ হাজার ৬১৫টি। অর্থাৎ ৫২ হাজার ২২২টি পশু অতিরিক্ত রয়েছে। জেলার পাঁচ উপজেলায় খামারি রয়েছেন ১১ হাজার ৫৪৯ জন। খামারে ও পারিবারিকভাবে এসব পশু লালন পালন করা হয়েছে। এর মধ্যে গরু ৮৮ হাজার ৩০০টি, ছাগল ৬৮ হাজার ৭২টি, ভেড়া ৯ হাজার ৬৭টি ও মহিষ রয়েছে ১৭৬টি। যা চাহিদার তুলনায় বেশি।
সদর উপজেলার নামোনিমগাছি এলাকার খামারি ইকবাল হোসেন জানান, তার খামারে এবার কেরবানির জন্য ২৩টি গরু ও ৭টি মহিষ প্রস্তুত করা হয়েছে। এক লাখ ১০ হাজার টাকা থেকে তিন লাখ পর্যন্ত দামের গরু রয়েছে।
তিনি জানান, গরু লালনপালনে বা মোটাতাজাকরণে ক্ষতিকর স্টেরয়েড জাতীয় ট্যাবলেট বা ইনজেকসান ব্যবহার না করেন সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে পুষ্টিকর খাবার দিয়েছেন। তবে এই বছর পশু খাদ্যের দাম দ্বিগুন। আগে ভুট্টা ছিল ১৮ টাকা কেজি সেটা এখন ৩৫ টাকা, গম ছিল ২২ টাকা কেজি সে গম এখন ৪০ টাকা। গমের ভুষি ৪৮ টাকা কেজি।
আরও পড়ুন: কোরবানির পশুর বর্জ্য সুষ্ঠুভাবে অপসারণে পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের আহ্বান
উপররাজারামপুর এলাকার আরেক খামারি এসএম কামাল জানান, তার খামারে বর্তমানে কোরবানির জন্য ২০টি গরু আছে। এবার করোনার সমস্যা না থাকলেও পশু খাদ্যের দাম অনেক বেশি হওয়ায় লালনপালন খরচ অনেক বেশি। তাই গরুর দাম এবার কম হবে না। তাছাড়া চাহিদার ওপর দাম পাওয়া যাবে, চাহিদা ভালো থাকলে দাম ভালো পাওয়া যাবে।
তিনি বলেন, কোরবানির পশুর কোনো ঘাটতি হবে না। ভারত বা মিয়ানমার থেকে গরু আনার দরকার নেই। সরকার এদিকে নজর দিলে দেশীয় খামারিরা লাভবান হবেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার বটতলা হাটের ইজারাদার রফিকুল ইসলাম জানান, সপ্তাহের মঙ্গলবার ও শুক্রবার এ দুই দিন হাটবার। করোনার কারণে বিগত বছরে গরুর বেচাকেনা ভালো না হওয়ায় লোকসান গুনতে হয়েছে। এবার করোনার সমস্যা নেই আশা করা যায় জুলাই মাসের প্রথম দিক থেকে কোরবানির পশু বেচাকেনা জমে উঠবে।
আরও পড়ুন: কোরবানির পশু নিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ছেড়েছে ‘ক্যাটল স্পেশাল’ ট্রেন
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মুস্তাফিজুর রহমান জানান, জেলায় এবার চাহিদার অতিরিক্ত কোরবানিযোগ্য পশু রয়েছে। স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে বাড়তি পশু অন্যান্য জেলার চাহিদা পূরন করতে পারবে। প্রাণিসম্পদ বিভাগের পক্ষ থেকে খামারিদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। বর্তমানে ভারত থেকে গরু আসা একেবারেই বন্ধ। এছাড়া এই বছর করোনা পরিস্থিতিও ভালো থাকায় পশু হাটগুলোতে বেচা কেনা জমে উঠবে এবং খামারিরা লাভবান হবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
ঈদুল আজহা উপলক্ষে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু ১ জুলাই
পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে আগামী ১ জুলাই থেকে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু করবে বাংলাদেশ রেলওয়ে।
বুধবার রেলভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন এ তথ্য জানান।
এছাড়া ৭ জুলাই থেকে ফিরতি টিকিট বিক্রি শুরু হবে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: ঈদুল আজহার প্রধান জামাত জাতীয় ঈদগাহে সকাল ৮টায়
মন্ত্রী বলেন, ঈদ উপলক্ষে ছয় জোড়া বিশেষ ট্রেন চলাচল করবে।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১০ জুলাই পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এবার কুষ্টিয়ায় হাট কাঁপাবে ‘শের খান’
‘শের খান’ নাম শুনে এলাকার কোনো প্রভাবশালী ব্যক্তি মনে হলেও প্রকৃত অর্থে এটি বিশাল আকৃতির একটি গরু। প্রায় এক হাজার ৬০০ কেজি ওজনের গরুটি এবার কুষ্টিয়ার কোবরানির হাট কাঁপাবে বলে মনে করা হচ্ছে। আর এর মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫ লাখ টাকা।
কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার ধুবইল ইউনিয়নের হাজীপাড়া গ্রামের প্রান্তিক খামারি আকমাল ইসলাম। দীর্ঘ চার বছর ধরে ফ্রিজিয়ান জাতের গরুটি নিজের সন্তানের মত লালন পালন করে বড় করেছেন। আদর করে গরুটি’র নাম দিয়েছেন ‘শের খান’।
সুঠাম দেহের অধিকারী সুউচ্চ এই গরুটিকে কোরবানির হাটে তোলার জন্য অনেক কষ্টে গোয়ালঘর থেকে বের করতে হয়েছে তাকে। গরুটির জন্য উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস থেকে পুরস্কারও পেয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে উপজেলার সেরা খামারি হিসেবেও প্রশংসিত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: কোরবানির গরু ‘সম্রাটের’ দাম ৬ লাখ টাকা!
গরুটির মালিক আকমাল ইসলাম জানান, চার বছর ধরে গরুটিকে ঘাস, খোল, ভূষি, কলা, মাল্টাসহ বিভিন্ন ফল-ফলাদি খাইয়ে নজের সন্তানের মত অতিকষ্টে লালন-পালন করে বড় করে তুলেছি। আদরের পশু সেরখানকে লালন-পালন করতে তার অনেক অর্থ ব্যয় হয়েছে।
তিনি বলেন, সেরখানকে বড় করতে অনেক টাকা ঋণী হয়ে পড়েছি। ঋণের টাকা পরিশোধ করতেই তাকে এবারের কোরবানির হাটে বিক্রি করতে হচ্ছে। কোরবানির হাটে যে সমস্ত গরু উঠছে তার মধ্যে ‘শের খান’ এখনও সবচেয়ে বড় কোরবানির পশু।
আরও পড়ুন: কোরবানির গরুর নাম যখন বিন লাদেন, সাদ্দাম, গাদ্দাফি!
মিরপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সোহাগ রানা বলেন, এই উপজেলায় পশু স্বাস্থ্য সম্মতভাবে কোরবানির জন্য প্রস্তুত করেছেন কৃষকরা। উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস তাদের নানাভাবে বুদ্ধি-পরামর্শ দিয়েছেন। প্রতিদিন শত শত মানুষ উপজেলার ধুবইল ইউনিয়নের হাজীপাড়া এলাকায় কৃষক আকমালের বাড়িতে গরুটিকে দেখতে তার বাড়িতে ভিড় করছেন। গরুটি দেখতে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস থেকে আমরাও গিয়েছিলাম। গরুটির মালিক স্বাস্থ্য সম্মতভাবে লালন-পালন করে গরুটিকে বড় করে তুলেছেন।
ঈদুল আজহার প্রধান জামাত জাতীয় ঈদগাহে সকাল ৮টায়
ঈদুল আজহার প্রধান জামাত রাজধানীর হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে জাতীয় ঈদগাহে সকাল ৮টায় অনুষ্ঠিত হবে। তবে আবহাওয়া প্রতিকূল থাকলে বা অন্য কোন কারণে জাতীয় ঈদগাহে জামাত না হলে ঈদের প্রধান জামাত সকাল সাড়ে ৮টায় বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে অনুষ্ঠিত হবে।রবিবার সচিবালয়ে ঈদুল আজহা উদযাপন উপলক্ষে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। ধর্ম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান সভায় সভাপতিত্ব করেন। সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১০ জুলাই বাংলাদেশে মুসলমানদের দ্বিতীয় বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হতে পারে।সভায় সিদ্ধান্ত হয়, সারাদেশে বিভাগ, জেলা, উপজেলা, সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, বেসরকারি সংস্থাগুলোর প্রধানরা জাতীয় কর্মসূচির আলোকে নিজ নিজ কর্মসূচি প্রনয়ণ করে ঈদুল আজহা উদযাপন করবে।সভায় ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কাজী হাসান আহমেদ ও ড. মোয়াজ্জেম হোসেন উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া এ সভায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ, তথ্য মন্ত্রণালয়, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়, ঢাকা সিটি করপোরেশন, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট সকল মন্ত্রণালয়, বিভাগ, দপ্তর ও সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: শোলাকিয়ায় এশিয়ার বৃহত্তম ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত
ঈদে বায়তুল মোকাররমে ৫ জামাত
২৯ জুন বাজারে নতুন নোট ছাড়বে বাংলাদেশ ব্যাংক
আসন্ন ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে আগামী ২৯ জুন থেকে পুরাতন নোটের বিনিময়ে টাকার নতুন নোট বাজারে ছাড়বে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই নোট বিনিময় চলবে আগামী ৭ জুলাই পর্যন্ত।
কর্মদিবসে ব্যাংকিং চলাকালীন যে কেউ একবার সমপরিমাণ টাকা বিনিময় করে ১০, ২০ ও ১০০ টাকার নতুন নোটের বান্ডিল সংগ্রহ করতে পারবেন। বাংলাদেশ ব্যাংক নোটে সিরিয়াল নম্বর দেবে, যাতে একই মানুষ একাধিকবার নতুন নোট সংগ্রহ করতে না পারে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম ইউএনবিকে বলেন, জুলাইয়ের দ্বিতীয় সপ্তাহে হতে যাওয়া পবিত্র ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে প্রায় ২৯ হাজার কোটি টাকা বিনিময়ের জন্য রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকের চাহিদা অনুযায়ী নতুন নোটের পরিমাণ বাড়ানো যেতে পারে।
ঢাকার মতিঝিলের বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় থেকে মানুষ প্রয়োজন অনুযায়ী বিভিন্ন মূল্যের ধাতব মুদ্রাও সংগ্রহ করতে পারবেন।
আরও পড়ুন: টাকার মান আরও ১ টাকা ৬০ পয়সা কমাল বাংলাদেশ ব্যাংক
এছাড়া নতুন নোটগুলো ব্যাংকগুলোর নিম্নোক্ত শাখাসমূহে পাওয়া যাবে-এনসিসি ব্যাংকের যাত্রাবাড়ী শাখা, জনতা ব্যাংকের আবদুল গণি রোড কর্পোরেট শাখা, অগ্রণী ব্যাংকের জাতীয় প্রেসক্লাব কর্পোরেট শাখা, এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের মিরপুর শাখা, সাউথইস্ট ব্যাংকের কারওয়ান বাজার শাখা, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের বসুন্ধরা সিটি শাখা (পান্থপথ), উত্তরা ব্যাংকের চক বাজার শাখা, সোনালী ব্যাংকের রমনা কর্পোরেট শাখা, ঢাকা ব্যাংকের উত্তরা শাখা, আইএফআইসি ব্যাংকের গুলশান শাখা, ন্যাশনাল ব্যাংকের মহাখালী শাখা, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের মোহাম্মদপুর শাখা, জনতা ব্যাংকের রাজারবাগ শাখা, পূবালী ব্যাংকের সদরঘাট শাখা, সাউথইস্ট ব্যাংকের কাকরাইল শাখা, ওয়ান ব্যাংকের বাসাবো শাখা, ব্র্যাক ব্যাংকের শ্যামলী শাখা, ডাচ-বাংলা ব্যাংকের এসএমই অ্যান্ড এগ্রিকালচার শাখা, দক্ষিণখান, দ্য প্রিমিয়ার ব্যাংকের বনানী শাখা, ব্যাংক এশিয়ার ধানমন্ডি শাখা, সিটি ব্যাংকের বেগম সারণী রোকেয়া শাখা, আল-আরাফা ইসলামী ব্যাংকের নন্দীপাড়া শাখা, প্রাইম ব্যাংকের এলিফ্যান্ট রোড শাখা, মার্কেন্টাইল ব্যাংকের নারায়ণগঞ্জ শাখা, এক্সিম ব্যাংকের শিমরাইল শাখা, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের গাজীপুর চৌরাস্তা শাখা, ইউসিবিএলের গাজীপুর চৌরাস্তা শাখা, উত্তরা ব্যাংকের সাভার শাখা, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের সাভার শাখা এবং ট্রাস্ট ব্যাংকের কেরানীগঞ্জ শাখা।
আরও পড়ুন: ডলারের বিপরীতে টাকার মান আরও ৯০ পয়সা কমাল বাংলাদেশ ব্যাংক
মুদ্রাস্ফীতি ও অস্থিতিশীল বৈদেশিক মুদ্রার হার প্রধান চ্যালেঞ্জ: বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর
ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে বাজার স্থিতিশীল রাখার আহ্বান
ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে বাজার স্থিতিশীল রাখতে ব্যবসায়ীদের সরকার নির্ধারিত মূল্যে পণ্য বিক্রির আহ্বান জানিয়েছে ফেডারেশন অফ বাংলাদেশ চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)।
শনিবার রাজধানীর মোহাম্মদপুর টাউন হলে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের কাঁচাবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও বাজার মনিটরিং কমিটির আহ্বায়ক মোস্তফা আজাদ চৌধুরী এ আহ্বান জানান।
বৈঠকে মোস্তফা আজাদ দেশীয় বাজার স্থিতিশীল রাখতে এবং বৈশ্বিক বাজার সংকটকে পুঁজি না করার আহ্বান জানান।
এসময় তিনি সরকার নির্ধারিত মূল্যে পণ্য বিক্রি হচ্ছে কিনা তা নিশ্চিত করতে বাজার মনিটরিং করার জন্য বাজার কমিটিকে নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুন: নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য মূল্যায়নের আহ্বান মন্ত্রিসভার
সভা শেষে মোস্তফা আজাদ সাংবাদিকদের বলেন, ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে এখন পর্যন্ত মসলার কোনো সংকট নেই।
তিনি বলেন, পণ্য মজুদ করে কৃত্রিম সংকট তৈরির জন্য দায়ী কাউকে খুঁজে পেলে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এছাড়া চিনি, লবণ, ময়দা ইত্যাদির ডিলার তালিকা এফবিসিসিআইতে পাঠানোর জন্য মিল মালিকদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
মোহাম্মদপুর টাউনহল ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন কাঁচাবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. লুৎফর রহমান (বাবুল) জানান, যেসব দোকানে বেশি দামে পণ্য মজুদ ও বিক্রির অভিযোগ উঠেছে, সমিতি সেগুলো বন্ধ করে দিয়েছে এবং ভবিষ্যতেও এমন ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আরও পড়ুন: শুধু ভোজ্যতেল নয়, বেড়েছে অন্যান্য নিত্যপণ্যের দামও
ঈদুল আজহার শীর্ষ ১০ জনপ্রিয় বাংলা নাটক
বরাবরের মত এবারের ঈদুল আজহাতেও সম্প্রচার মাধ্যমগুলোর পাশাপাশি অনলাইন মাধ্যম ইউটিউবে বাংলা নাটকের বিশাল সম্ভার দিয়ে ঈদ আয়োজনকে পরিপূর্ণ করে তুলেছে। বাংলা নাটকের স্বকীয়তা বজায় রেখে এবারো নির্মাতাদের প্রচেষ্টা থেকেছে কিছু নতুন মাত্রা যোগ করার। সেই সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে নাটকগুলোর জনপ্রিয়তা। সেগুলোর মধ্যেই শীর্ষস্থানীয় ১০টি জনপ্রিয় নাটক দিয়ে সাজানো হয়েছে এই ফিচারটি।
ঈদুল আজহার জনপ্রিয় ১০টি বাংলা নাটক
এক মুঠো প্রেম | নাটক
জাকারিয়া সৌখিনের পরিচালনায় এই রোমান্টিক-কমেডি নাটকটি খুব স্বল্প সময়ের মধ্যে অগণিত দর্শকের নজর কেড়েছে। বর্তমান সময়ের সবচেয়ে আলোচিত জুটিগুলোর একটি; আফরান নিশো ও তানজিন তিশা অভিনয় করেছেন নাটকটিতে।
এখানে একজন কবির গতানুগতিক দুর্দশাগ্রস্ত জীবনকে কিছুটা হাস্যরস মিশিয়ে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে কবির স্বগোতক্তিতে। কবিতাপ্রিয় এক প্রেমিকা দুঃখবিলাসে জর্জরিত কবির ভেতর নতুন আবেগের পরিস্ফুটন ঘটায় যা সে আগে কখনো পায়নি।
এসকে শাহেদ আলীর প্রযোজনায় নাটকটি ঈদের ৩য় দিন এনটিভিতে সম্প্রচারিত হয়। পরবর্তীতে নাটকটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান সেন্ট্রাল মিউজিক এ্যান্ড ভিডিওর (সিএমভি) অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেল থেকেও প্রচার করা হয়।
আরও পড়ুন: পরীমণি চারদিনের রিমান্ডে
হ্যালো শুনছেন? | নাটক
একদা বৃষ্টির ভেতর যাত্রী ছাউনীতে এক মেয়ের সাথে দেখা হয় শোভনের। মেয়েটি বুঝতে শুরু করে যে হন্যে হয়ে চাকরী খোঁজা এই ছেলেটি খুব প্রাণবন্ত। ফুটপাতের চায়ের দোকান থেকে শুরু করে শপিং মল কোথাও তার মনখোলা আলাপে কোন বাধ পড়ে না।
বৃষ্টির সময়কে পটভূমিতে রেখে এই গল্পটি লিখেছেন রাশাত রহমান জিকো। আর সে অনুসারে লেখাটিকে নাট্যরূপ দিয়েছেন বর্তমান নাট্যজগতের সফল পরিচালক- মিজানুর রহমান আরিয়ান। নাটকটির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বৃষ্টি নিয়ে আশঙ্কা ও সম্ভাবনার দোলাচলে ভুক্তে থাকা ছেলেটির ভুমিকায় অভিনয় করেছেন আফরান নিশো। তার বিপরীতে আছেন তানজিন তিশা।
এসকে শাহেদ আলীর প্রযোজনায় নাটকটি নির্মিত হয় সিএমভির ব্যানারে। ঈদের প্রথম দিন চ্যানেল আইতে এবং পরে সিএমভির ইউটিউব চ্যানেলে নাটকটি দেখানো হয়।
মি. এ্যান্ড মিসেস চাপাবাজ আনলিমিটেড | টেলিছবি
রুবেল হাসান পরিচালিত এই হাসির টেলিছবিটি গত ঈদুল আযহার জনপ্রিয় নাটক মি. এ্যান্ড মিসেস চাপাবাজ-এর ২য় সংস্করণ। অপূর্ব ও মেহেজাবীন এখানে এক দম্পতির ভুমিকায় অভিনয় করেন, যারা সমাজে নিজেদের স্ট্যাটাস তুলে ধরার জন্য অবিরাম মিথ্যার আশ্রয় নিতে থাকে। স্বভাবতই একটা মিথ্যাকে যুক্তিযুক্ত করতে যেয়ে তাদেরকে আরো বেশি মিথ্যা বলতে হয়।
এরকম মজার কাহিনী নিয়ে নির্মিত এই নাটকটিও সিএমভি প্রোডাকশনের। ঈদের ২য় দিন চ্যানেল আইতে দেখানোর পর সিএমভির অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে নাটকটি দেখার জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়।
আরও পড়ুন: হলি আর্টিজান হামলা: বলিউডের পর্দায় আসছে ‘ফারাজ’
আপন | টেলিছবি
গত এক দশক জুড়ে জনপ্রিয় নাট্য নির্মাতা কাজল আরেফীন অমি’র বন্ধন এই ঈদের সেরা টেলিছবিগুলোর একটি। পারিবারিক সম্পর্ক এবং তথাকথিত সামাজিক ধ্যাণ-ধারণার এক অনবদ্য সমন্বয় এই চিত্রনাট্য। এই গভীর বিষয়গুলোর আবহতে মজার মজার সব সংলাপ এবং কর্মকান্ড সম্পূর্ণ কাহিনীকে আরো বেশি উপভোগ্য করে তুলেছে।
স্বল্পদৈর্ঘ্য এই ছবিটির শ্রেষ্ঠাংশে রয়েছেন আফরান নিশো, তারিক আনাম খান, তাসনিয়া ফারিন, জিয়াউল হক পলাশ, ও মনিরা মিঠু।
মোশন রক ইন্টারটেইনমেন্ট এর ব্যানারে টেলিছবিটি সম্প্রচারিত হয় ঈদের ২য় দিন বাংলা ভিশনে। তাছাড়া ঈদ মৌসুম জুড়ে এটি ইউটিউবে বেশ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে দর্শক সাড়া পায়।
আরও পড়ুন: দুই মামলায় কারাগারে নায়িকা একা
আগডুম বাগডুম | টেলিফিল্ম
সম্পূর্ণ কমেডি নির্ভর এই টেলিফিল্মটির গল্প এগিয়েছে একটি বেকার যুবকের চাকরী পাওয়াকে কেন্দ্র করে, যেখানে অপ্রত্যাশিত ভাবে সবকিছু যুবকটির অনূকুলে আসতে শুরু করে। গল্পের একদম শুরু থেকে ছোট ছোট হাস্যরসগুলো সুনিপুণভাবে গেঁথে দেয়া হয়েছে।
বেকার যুবকের চরিত্রে অভিনয় করেছেন অপূর্ব। এছাড়া টেলিফিল্মটির গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন সাবিলা নূর, শহীদুল আলম সাচ্চু, এবং সাবেরী আলম।
সিএমভি প্রোডাকশন টেলিফিল্মটির প্রযোজনায় ছিলেন শাহেদ আলী। আর রুবেল হাসানের নির্দেশনায় স্ক্রিপ্টে ছিলেন রাজিব আহমেদ। টেলিফিল্মটি ঈদের ৩য় দিন চ্যানেল আইতে সম্প্রচারিত হয়।
প্লাস ফোর পয়েন্ট ফাইভ | নাটক
বর্তমান সময়ের সর্বাপেক্ষা প্রতিভাবান নাট্য নির্মাতা শিহাব শাহীন পরিচালিত এই রোমান্টিক কমেডি নাটকটির স্ক্রিপ্ট লিখেছেন জান্নাতুল ফেরদৌস লাবণ্য।
খুব সুন্দরী হওয়া সত্ত্বেও চোখে দেখতে না পাওয়ার কারণে বিয়ে ভেঙে যাবার ভয়ে চশমা ছাড়াই জোর করে ছেলে পক্ষের কাছে তনিমাকে নিয়ে যায় তনিমার ভাবী। তনিমার চোখের ব্যাপারটা সম্পূর্ণ আড়ালে থেকে ছেলে পক্ষের তনিমাকে পছন্দও হয়ে যায়। কিন্তু এরপর থেকে বিয়ের আগ মুহুর্ত পর্যন্ত ঘটতে থাকে মজার সব ঘটনা।
অসাধারণ অভিনয় দিয়ে যথারীতি হাস্যরসাত্মক নাটকটিকে সার্থক করে তোলেন মেহেজাবিন। তার সাথে যুগপৎ স্বতঃস্ফূর্ত নৈপুণ্য দেখিয়ে যান আফরান নিশো।
নাটকটি সম্প্রচারিত হয় এনটিভিতে ঈদের ২য় দিন।
আরও পড়ুন: পরিচালক চয়নিকা চৌধুরী আটক
অদ-ভূত | নাটক
ক্লাব ১১ ইন্টারটেইনমেন্ট এই প্রথমবারের মত ঈদ আয়োজনে একটি হরর নাটক নিয়ে আসে। নির্মাতা কাজল আরেফীন অমি এতে হাস্যরসের মোড়কে উপস্থাপন করেছেন ভৌতিক ব্যাপারগুলো। গল্পটি যথেষ্ট সুবিচারের দাবী রাখলেও এই হরর ও কমেডির ফিউশানটি দর্শকদের ভিন্ন স্বাদ দিয়েছে। ইউটিউবে মুক্তি পাওয়ার পর থেকে সাবিলা নুর, জিয়াউল হক পলাশ, ও চাষী আলম অভিনীত নাটকটি বেশ সাড়া ফেলেছে।
এখানে সাবিলা নূরকে দেখা যায় অতিপ্রাকৃত চরিত্রে, যাকে বিয়ের জন্য কোন পাত্র দেখতে এলেই তাকে কামড়ে দেয়। গ্রামের যুবকদের মধ্যে তাকে নিয়ে জল্পনা-কল্পনার কোন শেষ নেই।
নাটকটি ঈদের ৪র্থ দিন বাংলা ভিশনে দেখানো হয়।
আরও পড়ুন: রাজনীতি ছাড়ছেন বলিউড গায়ক বাবুল সুপ্রিয়
আমার বাপের অনেক টাকা | নাটক
এক বিরাট আড়তের মালিকের একমাত্র ছেলে সারাদিন বন্ধুদের নিয়ে ঘুরে বেড়ায় আর উড়নচন্ডী হয়ে মানুষকে টাকা দিয়ে বেড়ায়। দুর্ঘটনাবশত একদিন হঠাৎ সারা আড়তে আগুন ধরে পুরো পরিবার নিঃস্ব হয়ে পড়ে।
এমনি গল্প নিয়ে তৈরি এম আই জুয়েল পরিচালিত এই নাটকটি। স্ক্রিপ্টে ছিলেন গোলাম সারোয়ার অনিক। কাহিনী হালকা কমেডি আবহ নিয়ে অগ্রসর হলেও চূড়ান্ত পর্যায়ে সম্পদের সঠিক ব্যবহারের এক মহান বার্তা দিয়ে শেষ হয়।
নাটকটিতে অভিনয় করেছেন জোভান, তাসনিয়া ফারিন, মনিরা মিঠু, আব্দুল্লাহ রানা, এবং তানজিম হাসান অনিক। ঈদের দিন মাছরাঙা চ্যানেলে নাটকটি প্রচার করা হয়।
মায়ের ডাক | নাটক
প্রতি ঈদেই ভালো কিছু কাজ নিয়ে দর্শকদের সামনে হাজির হন তরুণ নির্মাতা মাবরুর রশিদ বান্নাহ। এবার তিনি তারকাদের বহর নিয়ে মুলধারার বহির্ভুত একটি নাটক নির্মাণ করে চমকে দেন সবাইকে। বিভিন্ন কারণে পারস্পরিক মনমালিন্যের ফলে তিন ভাইয়ের মধ্যে দূরত্ব বাড়তে থাকে। এক পর্যায়ে সবাই ভুলে যায় তাদের মায়ের কথা।
এমনি একটি গল্পের মাধ্যমে সমসাময়িক একটি সামাজিক সমস্যাকে তুলে ধরে তার সমাধানের চেষ্টা করেন এই প্রতিশ্রুতিশীল নাট্য নির্দেশক।
নাটকটির শ্রেষ্ঠাংশে আছেন দিলারা জামান, তাহসান, মম, তওসিফ, তাসনিয়া ফারিন, জোভান, এবং কেয়া পায়েল।
ঈদের ২য় দিন বাংলা ভিশনে সম্প্রচারিত হয় আন্ডারগ্রাউন্ড ক্রিয়েটিভ ফ্যাক্টরী (ইউসিএফ) নির্মিত এই নাটকটি।
শনির দশা | নাটক
নাটকের নামের মতই এর গল্পের প্রধান দুটি চরিত্রকে দেখানো হয়েছে একে অপরের শনির দশা হিসেবে। যেখানেই বা যখনি তাদের দেখা হোক না কেন, একটা না একটা দুর্ঘটনা ঘটবেই।
অপূর্ব ও মেহেজাবীন তাদের দারুণ অভিনয় দিয়ে প্রথমার্ধেই জমিয়ে তোলেন এই কমেডি নাটকটি।
রাজিব আহমেদের রচনা ও মহিদুল মহিমের পরিচালনায় নাটকটি ঈদ মৌসুমের প্রথম দিকেই দর্শকদের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়। এমনকি পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের ইউটিউব ট্রেন্ডিং-এও শীর্ষ দশে স্থান করে নেয়।
সিভিএম নির্মিত ও এসকে শাহেদ আলী প্রযোজিত এই নাটকটি সম্প্রচারিত হয় ঈদের আগের দিন আরটিভিতে।
পরিশিষ্ট
ঈদুল আযহার এই জনপ্রিয় নাটকগুলো নাট্যজগতের নতুন দিগন্তের প্রতিনিধিত্ব করছে। ক্যামেরার পেছনের কলাকুশলীদের প্রচেষ্টার পাশাপাশি দর্শকদের চাহিদার পরিবর্তন বাংলা নাটকের উন্নয়নের এক বিস্তৃত মাইলফলক রচনা করেছে। কাজেই সুস্থধারা বজায় রেখে এই কিঞ্চিত ভিন্ন স্বাদ তৈরির প্রয়াস নতুন মাত্রা সংযোজনের দৌলতে বাংলা নাটকের স্বর্ণযুগ ফিরিয়ে আনতে পারে।
আঙ্কারায় বাংলাদেশ দূতাবাসে ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত
তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে গত মঙ্গলবার দূতাবাস প্রাঙ্গনে ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশিদের মিলন মেলায় রূপ নেয়।
দূতাবাসের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অনুষ্ঠানের শুরুতে রাষ্ট্রদূত মসয়ূদ মান্নান (এনডিসি) করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মেনে আমন্ত্রিত অতিথিদের সাথে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
আরও পড়ুন: অটিজম সচেতনতায় সৌদি আরবে বাংলাদেশ দূতাবাস নীল আলোয় সজ্জিত
এরপর একে একে নারী ও শিশুদের জন্য বিভিন্ন বিনোদনমূলক খেলা ও প্রতিযোগীতা অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিযোগীতার অনুষ্ঠানের পর দূতাবাসের ‘বিজয়-৭১ মিলনায়তনে’ সাংস্কৃতিাক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পর্বে ঢাকা থেকে জুমে মুশফিক ইহসান ও সৌরভি ইসলাম সুনাই দ্বৈতভাবে গান পরিবেশন করেন।
শিশু-কিশোরদের কবিতা আবৃত্তি ছাড়াও সুদূর মিশর থেকে সৈয়দ আব্দুল আজিজ জুমের মাধ্যমে রাষ্ট্রদূত মসয়ূদ মান্নান (এনডিসি) ও মিশনের উপ-প্রধান মো. রইচ হাসান সরোয়ারের সাথে কবিতা আবৃত্তি করে শোনান।
সবশেষে মধ্যাহ্নভোজেও ছিল সম্পূর্ণ ঈদের আমেজ। অতিথিদের ঐতিহ্যবাহী খাবার দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়। সবশেষে কেক কেটে আমন্ত্রিত অতিথিদের মাঝে পরিবেশন করা হয়।
আরও পড়ুন: লকডাউনে বন্ধ থাকবে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস সেবা
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের নেতাসহ প্রায় শতাধিক প্রবাসী বাংলাদেশি উপস্থিত ছিলেন।
হিলি বন্দরে পণ্য আমদানি-রপ্তানি শুরু
ছয়দিন বন্ধ থাকার পর আজ রবিবার (২৫ জুলাই) থেকে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে পণ্য আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম ফের শুরু হয়েছে। সকাল ১১টায় ভারত থেকে বিভিন্ন পণ্যবাহী ট্রাক দেশে প্রবেশের মাধ্যমে এই কার্যক্রম শুরু হয়।
পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে ২৪ জুলাই পর্যন্ত এই বন্দর দিয়ে সকল ধরণের পণ্য আমদানি-রপ্তানি বন্ধ ছিল।
পড়ুন: ভারতে চামড়া পাচাররোধে হিলি সীমান্তে সতর্কতা
বন্দরের বাংলাহিলি কাস্টমস সিএন্ডএফ এজেন্টস এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান লিটন জানান, ঈদুল আজহা উপলক্ষে গত ১৯-২৪ জুলাই পর্যন্ত এই বন্দর দিয়ে সব ধরণের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল। ফলে এ কয়দিন বন্দর দিয়ে আমদানিকৃত কোন পণ্যবাহী ট্রাক বাংলাদেশ ও ভারতে আসা-যাওয়া করেনি। আজ ২৫ জুলাই সকাল ১১টা থেকে যথারীতি বন্দর দিয়ে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
পড়ুন: ঈদুল আজহা: হিলি স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানি ৬ দিন বন্ধ
হিলি দিয়ে সপ্তাহে ৩ দিন ভারতে যাতায়াতের সিদ্ধান্ত
দাম না পেয়ে যশোরের হাটেই রেখে গেছেন চামড়া
খুলনা বিভাগের সর্ববৃহৎ চামড়ার মোকাম যশোরের রাজারহাট। ঈদের পর শনিবার প্রথম হাটের দিন চামড়ার দাম ছিল কম। আর হাটে চামড়াও উঠেছিল অল্প পরিমাণে।
ঢাকার ট্যানারি মালিকরা বকেয়া টাকা না দেয়ায় কাঙ্খিত পরিমাণ চামড়া কিনতে পারেনি ব্যবসায়ীরা।
সংশ্লিষ্টরা জানান, খুচরা ব্যবসায়ীরা যারা মোকামে চামড়া তুলেছিলেন, তাদের অনেকেরই পুঁজি বাঁচেনি। এ ছাড়া ব্যবসায়ী কম হওয়ায় চামড়ার দাম পাচ্ছেন না ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। দূর-দূরান্ত থেকে চামড়া নিয়ে এসে হতাশা নিয়ে ফিরেছেন ব্যবসায়ীরা।
আরও পড়ুন: চামড়া পাচার রোধে বেনাপোল সীমান্তে বিজিবির সতর্কতা
তেমনি এক জন সাতক্ষীরার সোহেল হোসেন। তিনি ২৫০ পিস চামড়া নিয়ে এসেছিলেন এ হাটে। এর মধ্যে ছিল ১৫০ পিস গরুর চামড়া ও ১০০ পিস ছাগলের চামড়া।
তিনি জানান, ৫০ পিস ছাগলের চামড়া সাত টাকা করে বিক্রি করেছেন। যেখানে তার ক্রয় মূল্য ২৫ টাকা করে। তাছাড়া গরুর চামড়ার দিকে কোনও ব্যাপারীর নজরই পড়েনি। এমনকি হাটে বড় ব্যবসায়ীরা আসেনি। স্থানীয়রা কিছু কিনছেন। তাও খুবই কম দামে।
খুলনার পাইকগাছার চামড়া বিক্রেতা স্বপন বৈরাগী জানান, এক হাজার পিস চামড়া নিয়ে এসেছেন। দাম না পেয়ে হাটে রেখে গেছেন কিছু চামড়া।
তিনি বলেন, ‘এভাবে চামড়ার দাম চলতে থাকলে আমাদের পরিবার নিয়ে পথে নামতে হবে। সরকার যদি এই চামড়া ব্যবসায়ীদের দিকে সুনজর না দেয় চামড়া শিল্প হারিয়ে যাবে।’
একই উপজেলার ব্যবসায়ী নির্মল সরকার জানান, দুই হাজার পিস চামড়া ক্রয় করেছেন। যশোরের রাজারহাট বাজারে এক হাজার পিস নিয়ে এসেছিলেন।
তিনি বলেন, ‘আমারা বাড়ি বাড়ি থেকে পিস প্রতি ২০-৩০ টাকা করে ছাগলের চামড়া ক্রয় করেছি। লবণ ও যাতায়াত খরচসহ প্রায় ৪০ টাকা করে পড়েছে। এখন দাম পাচ্ছি পাঁচ টাকা করে। গরুর চামড়া ৩০০-৪০০ ও কিছু চামড়া ৫০০ করেও কেনা হয়েছে। তবে এই চামড়া ২০০-৩০০ টাকার বেশি দাম উঠছে না।’
জেলা চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সহ-সভাপতি শেখ হাসানুজ্জামান হাসু জানান, যশোরের রাজারহাট চামড়া বাজারে দীর্ঘদিন ধরে প্রায় পাঁচ শতাধিক ব্যবসায়ী চামড়া কেনাবেঁচা করছে। তবে এবছর হারিয়ে গেছে অনেকে। সবাই ট্যানারি মালিকদের কাছে লাখ লাখ টাকা পাবে। তাদের পাওনা টাকা না পেয়ে চামড়া কিনতে চাচ্ছে না তারা। প্রায় তিন বছর যাবত টাকা নিয়ে ঘুরাচ্ছেন ট্যানারি মালিকরা। আজ-কাল বলে এতো দিনেও টাকা পরিশোধ করেনি তারা।
আরও পড়ুন: যেখানে সেখানে চামড়া ফেললে ব্যবস্থা
তিনি বলেন, ‘লকডাউনের কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে বাইরের ব্যবসায়ীরা বাজারে আসতে চাচ্ছে না। এ কারণে চামড়ার দাম কম। বড় ব্যবসায়ী না থাকায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা চামড়া বিক্রি করতে পারছেন না। দামও পাচ্ছেন না।’
কৃষি বিপনণ অধিদপ্তরের জেলা বাজার কর্মকর্তা সুজাত হোসেন খান জানান, যশোরের রাজারহাট বাজারে গরু-ছাগল মিলে প্রায় ২৫ হাজার পিস চামড়া শনিবারের হাটে উঠেছিল। এর মধ্যে ছোট গরুর চামড়া ২৫০-৩০০ টাকা, মাঝারি ৪০০-৪৫০, বড় ৮০০-৯০০ ও ছাগলের চামড়া ২০-৫০ টাক করে বিক্রি হয়েছে।