পানি
লালমনিরহাটে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপরে
টানা কয়েক দিনের বৃষ্টি ও উজানের পাহাড়ি ঢলে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে তিস্তা নদীর বাম তীরে লালমনিরহাটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
সোমবার (১৪ আগস্ট) সকাল ৬টায় তিস্তা ব্যারেজের ডালিয়া পয়েন্টে পানিপ্রবাহের উচ্চতা রেকর্ড করা হয়েছে ৫২ মিটার ৩৫ সেন্টিমিটার।
অর্থাৎ বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার (বিপৎসীমা ৫২ মিটার ১৫ সেন্টিমিটার) ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
আরও পড়ুন: তিস্তার পানি কমলেও দেখা দিয়েছে ভাঙন
ব্যারেজ ও নদী তীরবর্তী মানুষেরা জানান, কয়েকদিন থেমে থেমে ভারী বর্ষণ আর উজানের পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ বেড়ে যায়। পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করতে তিস্তা ব্যারাজের সব জলকপাট খুলে দেওয়া হয়েছে।
রবিবার সকাল থেকে পানি বাড়তে থাকে। সোমবার সকাল ৬টায় ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।
ভারতের গজলডোবায় তিস্তার পানি প্রবাহ বেড়ে যাওয়ায় উজানের ঢেউ বেড়ে ডালিয়া পয়েন্টে পানি প্রবাহ বেড়েছে বলে জানিয়েছে ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ।
নদীপাড়ের মানুষজন জানায়, পানি বেড়ে যাওয়ায় তিস্তা নদীর বাম তীরে লালমনিরহাট জেলার নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়েছে।
নিম্নাঞ্চলের আবাদকৃত ফসলের খেতে পানি উঠেছে। শত শত পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। যার সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। ইতোমধ্যেই চরাঞ্চলের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
মহিষখোঁচা ইউনিয়নের চর গোবর্ধন এলাকার মমিনুর রহমান বলেন, রাত থেকে পানি বাড়ছে তিস্তায়। নদীপাড়ের নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়েছে। ডুবে গেছে ফসলের খেত রাস্তাঘাট ও পুকুর। নিম্নাঞ্চলের কয়েক হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
হলদি বাড়ি তিস্তা পাড়ের আমছার আলী বলেন, নদীতে পানি বাড়লেই চরাঞ্চলের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। বর্ষাকালে বন্যা নিয়ে আতঙ্কে থাকতে হয়। রাত থেকে পানিবন্দি হয়ে পড়েছি। ক্রমেই বাড়ছে পানি। চারদিকে শুধু পানি আর পানি। পরিবার পরিজন নিয়ে মাচাংয়ের ওপর বসে নির্ঘুম রাত কাটাতে হচ্ছে নদীপাড়ের মানুষদের। এসব এলাকায় শিশু বৃদ্ধ আর গবাদি পশুপাখি নিয়ে চরম বিপদে রয়েছেন তারা।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) তিস্তা ব্যারেজ ডালিয়া শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী আসফা-উদ-দৌলা বলেন, বৃষ্টি আর উজানের ঢলে তিস্তার পানি প্রবাহ বেড়েছে। সবগুলো জলকপাট খুলে পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। সোমবার সকাল ৬টা বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে। ফলে তিস্তার তীরবর্তী এলাকায় বন্যা দেখা দিয়েছে।
আরও পড়ুন: তিস্তা পাড়ে কৃষকের নির্ঘুম রাত কাটছে
তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৪০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত
সিরাজগঞ্জে বিপৎসীমার কাছাকাছি যমুনার পানি
কয়েকদিন ধরে প্রবল বর্ষণ ও পাহাড় থেকে নেমে আসা ঢলে বাড়ছে যমুনা নদীর পানি। এতে সিরাজগঞ্জের নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হতে শুরু করেছে। তলিয়ে গেছে ফসলি জমি। সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে যমুনার পানি বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই।
সেইসঙ্গে যমুনা তীরবর্তী ৫টি উপজেলা কাজিপুর, চৌহালী, শাহজাদপুর, বেলকুচি ও সদর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ভয়াবহ ভাঙনও শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে শতাধিক ঘরবাড়ি, খেয়াঘাট, গাছপালা ও ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জে যমুনায় ভেসে গেছে স্পার বাঁধের ৪০ মিটার
এ ভাঙন নিয়ন্ত্রনে কাজ করছে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড।
স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী (হেডকোয়ার্টার) রনজিৎ কুমার সরকার জানান, রবিবার (১৩ আগস্ট) সিরাজগঞ্জ হার্ড পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক ৪৫ মিটার। অপরদিকে কাজিপুরের মেঘাই পয়েন্টে পানি রেকর্ড করা হয়েছে ১৪ দশমিক ১৫ মিটার।
তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় সিরাজগঞ্জ হার্ড পয়েন্টে ১১ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৪৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে ও মেঘাই পয়েন্টে ১১ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৬৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, উজানে ভারী বর্ষণের ফলে যমুনার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। তবে আগামী ৭২ ঘণ্টায় যমুনা পানি বৃদ্ধি পেয়ে এ দফায় বিপৎসীমা অতিক্রম করার আশঙ্কা রয়েছে। তবে এতে সিরাজগঞ্জ বন্যার তেমন কোনো আশংকা নেই।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জে যমুনা তীর ভাঙনে ৫০টি স্থাপনা ভেসে গেছে
সিরাজগঞ্জে ট্রাক-পিকআপ ভ্যানের সংঘর্ষে নিহত ৪
কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রে ২০০ মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন
রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
রবিবার (১৩ আগস্ট) সকাল ১০টা পর্যন্ত কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন হয়েছে ২০৫ মেগাওয়াট। যেটি চলতি বছরে কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সর্বাধিক বিদ্যুৎ উৎপাদন।
কর্ণফুলি পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবস্থাপক এটিএম আব্দুজ্জাহের
তিনি বলেন, দিন দিন কাপ্তাই হ্রদের পানি বাড়ছে। এ ছাড়া কাপ্তাই হ্রদে পানির পরিমাণ যদি বাড়তে থাকে তবে বিদ্যুৎ উৎপাদন আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ উৎপাদন আরও বাড়লেও দেশে তীব্র লোডশেডিং
এদিকে কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের দায়িত্বরত প্রকৌশলীরা জানান, বছরের এই সময় কাপ্তাই হ্রদে পানির পরিমাণ রুল কার্ভ অনুযায়ী ৯৩ দশমিক ৬৫ ফুট সিন সি লেভেল (এমএসএল) থাকার কথা থাকলেও রবিবার কাপ্তাই হ্রদে পানি পরিমাণ রয়েছে রুলকার্ভ অনুযায়ী ১০১ দশমিক ৮১ ফুট এমএসএল। যা গত কয়েক দিনের মধ্যে সর্বোচ্চ পানির লেভেল। তবে কাপ্তাই হ্রদের পানির ধারণ ক্ষমতা ১০৯ এমএসএল।
উল্লেখ্য, কাপ্তাইয়ে অবস্থিত দেশের একমাত্র পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রের পাঁচটি ইউনিট থেকে সর্বমোট ২৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব।
আরও পড়ুন: কাপ্তাই হ্রদে পানি বাড়ায় বিদ্যুৎ উৎপাদন বেড়েছে, একসঙ্গে চালু হলো ৫ ইউনিট
চলতি বছর দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন ৩০ হাজার মেগাওয়াট অতিক্রম করবে
মাগুরায় পুকুরের পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু
মাগুরায় পুকুরের পানিতে ডুবে ৮ বছরের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
শনিবার (১২ আগস্ট) দুপুর ১টার দিকে জেলার মহম্মদপুর উপজেলার তেলিপুকুর গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: ভোলায় একদিনে পানিতে ডুবে ৩ শিশুর মৃত্যু
মৃত শিশু মাসুরা তেলিপুকুর গ্রামের রকিব মোল্লার মেয়ে।
মহম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বোরহানুল ইসলাম জানান, শনিবার দুপুরে শিশু মাসুরাকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। একপর্যায়ে তাকে পুকুরের পানিতে ভাসতে দেখা যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে মহম্মদপুর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক শিশু মাসুরাকে মৃত ঘোষণা করেন।
তিনি আরও বলেন, এ ব্যাপারে মহম্মদপুর থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে বন্যার পানিতে ডুবে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রের মৃত্যু
চট্টগ্রামে বন্যার পানিতে ডুবে কলেজছাত্রীর মৃত্যু
চট্টগ্রামে বন্যার পানিতে ডুবে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রের মৃত্যু
চট্টগ্রাম জেলার লোহাগাড়া উপজেলায় বন্যার পানিতে ডুবে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছেন। মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) দুপুরে তার লাশ উদ্ধার করেছে স্থানীয়রা।
নিহত জুনায়েদুল ইসলাম জারিফ (১৮) চন্দনাইশস্থ বিজিসি ট্রাস্ট ইউনিভার্সিটির কম্পিউটার প্রকৌশল বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন। তিনি আমিরাবাদ ইউনিয়নের জনকল্যাণ এলাকার জুলফিকার আলী ভুট্টোর ছেলে।
আরও পড়ুন: উলিপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় স্কুলছাত্রের মৃত্যু
স্থানীয়রা জানায়, গতকাল সোমবার দিবাগত রাত ২টার সময় অতিবৃষ্টির কারণে নিজ বাড়ি থেকে বাবা-মাসহ পরিবারের সদস্যদের আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাবার সময় আমিরাবাদ ইউনিয়নের জনকল্যাণ এলাকায় বন্যার পানির স্রোতে ভেসে যায়। রাতে অনেক খোঁজাখুঁজির পর তাকে পাওয়া যায়নি। পরে মঙ্গলবার তার লাশ পাওয়া যায়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে লোহাগাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) (তদন্ত) সাইফুল ইসলাম বলেন, পানিতে ডুবে নিখোঁজ এক যুবকের লাশ উদ্ধারের খবর পেয়েছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: ফুলবাড়ীতে আম পাড়ার সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে স্কুলছাত্রের মৃত্যু
সিরাজগঞ্জে বজ্রপাতে কলেজ ছাত্রের মৃত্যু
চট্টগ্রামে বন্যার পানিতে নৌকাডুবি, ব্যবসায়ী নিখোঁজ
চট্টগ্রামের রাউজানে নিজের খামার থেকে বাড়ি ফেরার পথে বন্যার পানিতে নৌকা ডুবে নিখোঁজ হয়েছেন এক ব্যবসায়ী।
সোমবার (৭ আগস্ট) রাতে উপজেলার উরকিরচর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের হালদা নদীর একটি শাখা খালে এ ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: বান্দরবানে বন্যায় ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দি
নিখোঁজ চট্টগ্রামের তরুণ ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তা সাহেদ(৩৫) রাউজানের এস এম ইউসুফের ছেলে।
নৌকাডুবির সময় সঙ্গে থাকা ৪জন সাঁতার কেটে পাড়ে উঠতে পারলেও বাবু উঠতে পারেনি। তীব্র স্রোত তাকে টেনে নিয়ে যায়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. কাউসার-উল-আলম বলেন, নিজ বসতঘর থেকে প্রায় ১ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত নিজস্ব প্রজেক্ট খামার বাড়িতে (মাছের খামার, গরুর খামার) যান সাহেদ।
রাত ৮টার দিকে সেখান থেকে ফেরার পথে রাউজান হাটহাজারী মধ্যবর্তী বাড়িঘোনা ব্রিজ এলাকায় নৌকা উল্টে যায়। নৌকায় থাকা আরও ৪জনসহ সাঁতার কেটে উঠতে পারলেও সাহেদ পানির স্রোতে ভেসে যান।
খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস, নৌ পুলিশ, রাউজান থানা ও হাটহাজারী থানা পুলিশসহ স্থানীয় লোকজন বাবুর খোঁজ পেতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছেন।
তিনি আরও বলেন, কয়েক দিনের ভারী বৃষ্টি, পাহাড়ি ঢল, জোয়ারের পানিতে উরকিরচরসহ আশপাশের গ্রামে বন্যা দেখা দিয়েছে।
সদরঘাট নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একরাম উল্লাহ জানান, উরকিরচরে সাহেদের গরু ও মুরগীর খামার আছে। যেখানে হালদা নদীর একটি শাখা খাল পেড়িয়ে যেতে হয়।
তিনি আরও বলেন, অতি বৃষ্টির কারণে সোমবার খামারে পানি উঠে যায়। তাই সাহেদ সহ আরও ৩ জন খামার দেখে ফেরার পথে নৌকা উল্টে পানিতে পড়ে যায়।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ আবদুল জব্বার সোহেল জানান, রাত ১২টা পর্যন্ত সাহেদের সন্ধান পাওয়া যায়নি। বন্যায় পানি বেশি থাকায় হালদা নদীতে ভেসে যেতে পারে। তার সন্ধানে হালদা নদী ও শাখা খালে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম ও বান্দরবানে বন্যা-ভূমিধস মোকাবিলায় সেনা মোতায়েন
চট্টগ্রামে বন্যার পানিতে ডুবে কলেজছাত্রীর মৃত্যু
চট্টগ্রামে বন্যার পানিতে ডুবে কলেজছাত্রীর মৃত্যু
চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে বন্যার পানিতে ডুবে নিপা পালিত (১৮) নামে এক কলেজছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে।
সোমবার (৭ আগষ্ট) সকাল ৯টার দিকে উপজেলা চট্টগ্রাম সিটি করপেরেশন (চসিক) এক নম্বর ওয়ার্ড ইসলামিয়াহাট বাদামতল এলাকায় বন্যার পানিতে ডুবে তার মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ঢামেকে কলেজছাত্রীর মৃত্যু
নিপা পালিত একই এলাকার উত্তম পালিতের মেয়ে এবং হাটহাজারী সরকারি কলেজের ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।
তার পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, নিপা পালিত পূর্ব থেকে মৃগী রোগে আক্রান্ত ছিলেন।
জানা গেছে, সোমবার সকালে কলেজে পরীক্ষা দিতে যাওয়ার সময় বাসার কাছে একটি ড্রেনে পড়ে যান নিপা।
নিপা পালিতের বড় ভাই বাদল পালিতের বরাত দিয়ে হাটহাজারী সরকারি কলেজের প্রভাষক আবু তালেব জানান, নিহত শিক্ষার্থী নিপা পালিত সকালে পরীক্ষা দিতে যাওয়ার সময় বাসার কাছে একটি ড্রেনে পড়ে যান।
তিনি আরও জানান, তিনি মৃগী রোগী ছিলেন। ড্রেনে পড়ে আর উঠতে পারেনি। সেখানেই মৃত্যুবরণ করেন।
আরও পড়ুন: আবাসিক হোটেল কক্ষে কলেজছাত্রীর মৃত্যু
রাজশাহীতে প্রকাশ্যে গায়ে আগুন দেয়া কলেজছাত্রীর মৃত্যু
কাপ্তাই হ্রদে পানি বাড়ায় বিদ্যুৎ উৎপাদন বেড়েছে, একসঙ্গে চালু হলো ৫ ইউনিট
৪ দিন ধরে টানা বর্ষণ এবং উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে কাপ্তাই হ্রদের পানি বাড়ছে। এতে পানির উপর নির্ভরশীল কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন কিছুটা বেড়েছে।
একসঙ্গে চালু হয়েছে ৫টি ইউনিট। এই ৫ ইউনিট থেকে সর্বমোট ১৩৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। আর উৎপাদিত বিদ্যুতের পুরোটাই জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: রাঙ্গামাটিতে পাহাড় ধসের আশঙ্কায় সতর্কতা জারি
কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী এ টি এম আব্দুজ্জাহের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, গত কয়েক দিনের ভারী বৃষ্টিপাত এবং পাহাড়ি ঢলের কারণে কাপ্তাই হ্রদে পানির বাড়ছে।
রুলকার্ভ (পানির পরিমাপ) অনুযায়ী কাপ্তাই হ্রদে এই মুহূর্তে রবিবার (৬ আগস্ট) ৯০ দশমিক ৬০ ফুট মিনস সি লেভেল (এমএসএল) পানি থাকার কথা। কিন্তু হ্রদে এখন পানি রয়েছে ৮২ দশমিক ৯০ ফুট এম এস এল।
কাপ্তাই হ্রদে পানির ধারণ ক্ষমতা ১০৯ ফুট এমএসএল। তবে পানি বৃদ্ধির ফলে বর্তমানে এই কেন্দ্রের ৫টি ইউনিটের মধ্যে ৫টি ইউনিট সচল রয়েছে।
এই ৫টির ইউনিট থেকে বর্তমানে ১৩৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপন্ন হচ্ছে।
আরও পড়ুন: রাঙ্গামাটিতে প্রতিপক্ষের গুলিতে ইউপিডিএফের কালেক্টর নিহত
কুমিল্লায় পানিতে ডুবে যমজ ভাইয়ের মৃত্যু
কুমিল্লার সদর দক্ষিণে পানিতে ডুবে দুই ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (৫ আগস্ট) দুপুরে উপজেলার বিজয়পুর ইউনিয়নের ঘোষগাঁও গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতেরা হলো- মুরাদনগর উপজেলার কবির হোসেনের ছেলে মো. হাসান (৮) ও মো. হোসেন (৮)। তারা জমজ ভাই।
আরও পড়ুন: লালমনিরহাটে পানিতে ডুবে প্রাণ গেলো ৩ জনের
বিজয়পুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. তানভীর হোসেন পারভেজ বলেন, ওই শিশুদের বাবার বাড়ি মুরাদনগরে। গত এক বছর আগে তাদের বাবা ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।
মারা যাওয়ার আগে কবির হোসেন বাচ্চাদের নানার বাড়ি সদর দক্ষিণের বিজয়পুর ইউনিয়নের ঘোষগাঁও গ্রামে তাদের জন্য বাড়ি করার ব্যবস্থা করেন।
বাড়ি করার সময় জমির এক কোণ থেকে গর্ত করে মাটি তুলে ঘরের ভিটা বানান। এই গর্ত অনেক গভীর।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, তারা খেলা করার একপর্যায়ে এক ভাই সেই গর্তে পড়ে গেলে আরেক ভাই তাকে দেখে বাঁচাতে যায়। এ সময় দুজনে ডুবে মারা যায়। পরে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়।
সদর দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেবাশীষ চৌধুরী বলেন, লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
আরও পড়ুন: ভোলায় একদিনে পানিতে ডুবে ৩ শিশুর মৃত্যু
কুড়িগ্রামে খালের পানিতে ডুবে ২ শিশুর মৃত্যু
পানির জন্য হাহাকার, গাইবান্ধায় পাটচাষিরা বিপাকে
গাইবান্ধার পাটচাষিদের অবস্থা এখন অনেকটাই তৃষ্ণার্ত চাতকের মতো। আকাশের দিকে তাকিয়ে আছেন পানির জন্য।
পানির অভাবে জাগ (পানিতে ডুবিয়ে পচানো) দিতে পারছেন না কেটে রাখা পাট। বাধ্য হয়ে জমিতে স্তূপ করে রেখে অপেক্ষা করছেন পানির জন্য। আবার কেউ কেউ পানি নেই বলে না পাট কাটছেন না।
পাটচাষি ও মোল্লার চরের ইউপি চেয়ারম্যান সাইদুজ্জামান সরকার জানান, তোষা পাটের ব্যাপক চাষ হয় গাইবান্ধার ১৬৫টি চরাঞ্চলে। কিন্তু এবছর অনাবৃষ্টি, খরা ও তাপপ্রবাহের কারণে বিপাকে পড়েছে পাটচাষিরা।
গাইবান্ধার ফুলছড়ি, সাঘাটা, পলাশবাড়ি, গোবিন্দগঞ্জ, সাদুল্লাপুর, গাইবান্ধা সদর এবং সুন্দরগঞ্জ উপজেলার নালা, খাল-বিল, পুকুর-ডোবা এবং নিচু জলাশয় শুকিয়ে গেছে। তাই কারণে এই ভরা মৌসুমে পাট পচানো নিয়ে বিপাকে পড়েছেন চাষিরা।
গুনভরি এলাকার পাটচাষি মহিউদ্দিন বলেন, ‘বৃষ্টির আশায় পাট কেটে জমিতে স্তূপ করে রেখেছি অনেকদিন ধরে। দিনের পর দিন অপেক্ষা করছি; কিন্তু বন্যা বা বৃষ্টির দেখা নেই। বৃষ্টি না হওয়ায় জমিতে স্তুপ করে রাখা পাট শুকিয়ে যাচ্ছে। মূল্যবান এই পাট পচানোর ব্যবস্থা করতে পারছি না।’
তিনি আরও বলেন, ‘অনেকে এলাকার নিচু জলাশয়ে ও পুকুরে সেচ দিয়ে পাট পচানোর ব্যবস্থা করছেন। কিন্তু জলাশয় ও পুকুরে সেচ দেওয়া পানিও থাকছে না। দু-তিন দিনের মধ্যেই সেই পানিও শুকিয়ে যাচ্ছে।’
গাইবান্ধা জেলা কৃষি অফিস জানায়, চলতি মৌসুমে সাঘাটা উপজেলায় ৩ হাজার ২ হেক্টর, গাইবান্ধা সদরে ৯৪৫, সাদুল্লাপুরে ৪৮০, গোবিন্দগঞ্জে ৬৪১, ফুলছড়ি উপজেলায় ৪ হাজার ৩৯০, পলাশবাড়িতে ২৯০ এবং সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় ৪ হাজার ৫৬৫ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে। ভরা মৌসুম হওয়ায় ইতোমধ্যে পাট কাটা শুরু হয়েছে।
পাট পচানোর জন্য ১০ থেকে ১২ দিন সময় লাগে। প্রতি বিঘা জমিতে ৮ থেকে ৯ মণ পাট উৎপাদন হয়। বর্তমান বাজারে প্রতি মণ পাট বিক্রি হচ্ছে আড়াই থেকে তিন হাজার টাকায়।
চর কাপাসিয়া ইউনিয়নের পোড়ার চরের বাসিন্দা রেজা মেম্বার জানান, তিনি ২০ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছিলেন। বাধ্য হয়ে কিছু পাট তিস্তা নদীতে পচাতে দিয়েছেন।
গাইবান্ধা সদর উপজেলার গিদারী ইউনিয়নের শাহিন মিয়া জানান, তার বাড়ির আশেপাশের পুকুরে পানি নেই। ১০দিন হল পাট কেটে জমিতে স্তুপ করে রেখেছেন। পানি না থাকায় পচানোর জন্য জাগ দিতে পারছেন না। ইতোমধ্যে জমিতে তার পাট শুকিয়ে গেছে। সেচ দিয়ে পানি ভর্তি করে পচানোর ব্যবস্থা করা হলেও পানি দিতে হচ্ছে প্রতিদিন। এতে করে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাচ্ছে, তারপরও পাটের রং নিয়ে শঙ্কা রয়েছে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামের নদীর পানিতে ডুবে বর্গাচাষির মৃত্যু