গণপরিবহন
গণপরিবহনে শিক্ষার্থীদের হাফ ভাড়া নিশ্চিতে প্রজ্ঞাপন চায় ক্যাব
গণপরিবহনে শিক্ষার্থীদের হাফ ভাড়ার দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ও আন্দোলনের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে অবিলম্বে এই দাবি মেনে নিয়ে শিক্ষার্থী ও প্রতিবন্ধীদের জন্য অর্ধেক ভাড়ার প্রজ্ঞাপন জারির দাবি জানিয়েছেন দেশের ক্রেতা-ভোক্তাদের স্বার্থ সংরক্ষণকারী সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)।
সোমবার ক্যাব’র কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন সাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে এস এম নাজের হোসাইন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ২০১৫ সালের অক্টোবরে বিআরটিসির কার্যালয়ে বাস ডিপো ব্যবস্থাপকদের সাথে এক বৈঠকে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, ‘আমি এই মুহূর্ত থেকে নির্দেশ দিচ্ছি, বিআরটিসির পাশাপাশি অন্যান্য পরিবহনেও শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে হাফ ভাড়া নেবে। আর না নিলে দায়ী পরিবহনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ মন্ত্রীর ঘোষণার পরও বিষয়টি পুরোপুরি বাস্তায়ন হয়নি।
আরও পড়ুন: কেনাকাটায় সতর্ক না হলে পরিবারের জন্য মৃত্যু কিনে আনার মতো হবে : ক্যাব
অন্যদিকে, ২০১৮ সালে সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে দেশব্যাপী তোলপাড় সৃষ্টিকারী নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ৯ দফা দাবির অন্যতম দাবি ছিল, ঢাকাসহ সারা দেশের শিক্ষার্থীদের জন্য হাফ ভাড়ার ব্যবস্থা করতে হবে। সে সময়ই প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিসভায় একটি খসড়া গণপরিবহন আইন অনুমোদন করলেও, সেখানে হাফ ভাড়ার বিষয়টি উল্লেখ না থাকায় শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রতি চরম অবমাননা করেন।
তিনি আরও বলেন, ২০১৮ সালে গণপরিবহনে শৃঙ্খলা আনার জন্য দেশব্যাপী শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে সরকার গণপরিবহন আইন সংশোধনসহ নানা উদ্যোগ গ্রহণ করলেও ভাড়া নৈরাজ্য বন্ধ হয়নি।
অন্যদিকে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির অজুহাতে সরকার গণপরিবহন ভাড়া পুনঃনির্ধারণ করলেও গণপরিবহনের মালিক-শ্রমিকরা সরকার নির্ধারিত ভাড়া আদায় না করে নিজেদের ইচ্ছামতো দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করে গণপরিবহনে নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে। এছাড়া ভাড়া নির্ধারণের সময় গড় ৭০ শতাংশ যাত্রী পরিবহন দেখিয়ে ভাড়া আদায় দেখালেও কার্যত দ্বিগুণ যাত্রী পরিবহনের ঘটনা যেন স্বাভাবিক। ভাড়া নির্ধারণে অতিরিক্ত অযৌক্তিক ব্যয় ও মাইলেজ এর বিভ্রান্তিকর তথ্য দেখিয়ে একচেটিয়া ভাড়া নির্ধারণ প্রক্রিয়াটিও ত্রুটিপুর্ণ বলে মন্তব্য করে, গণপরিবহন মালিকদের স্বার্থে এই প্রক্রিয়াটি রহিত করা উচিত।
আরও পড়ুন: পেঁয়াজসহ নিত্যপণ্যের ব্যবসা নিয়ন্ত্রণের দাবি ক্যাবের
বিবৃতিতে এস এম নাজের হোসাইন আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের সাথে অধিকাংশ সময় গণপরিবহন শ্রমিকদের হাফ পাস বা হাফ ভাড়া নিয়ে বাকবিতণ্ডা চলছেই। অথচ গণপরিবহন সংশ্লিষ্টরা মুখে মুখে বুলি আওড়ায়, শিক্ষার্থীদের জন্য অর্ধেক ভাড়ার নিয়ম অনুসারেই ভাড়া নিচ্ছেন চালকরা। কিন্তু বাস্তবে সেই চিত্রের কোনো ছিটেফোঁটাও নেই। এছাড়া ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির পর নগরের বিভিন্ন সড়কে চলাচল করা গণপরিবহনগুলো অর্ধেক ভাড়ার পরিবর্তে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায় করে চলেছে পুরো বর্ধিত ভাড়াও। এ যেন রীতিমতো ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’ হিসাবে আর্বিভূত হয়েছে। একই সাথে দরিদ্র, অস্বচ্ছল ও শিক্ষার্থীদের জন্য গণপরিবহনে হাফ ভাড়া নিয়ে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা থাকা উচিত বলে মন্তব্য করেন।
বিবৃতিতে এস এম নাজের হোসাইন বলেন, দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামসহ সকল মুক্তিসংগ্রামে দেশের শিক্ষার্থী ও তরুণদের ভূমিকা অনন্য। দেশে চলমান ভোগ্যপণ্য ও সেবার ক্রমবর্ধমানে ঊর্ধ্বমুখী দামে লাখ লাখ শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবন হুমকিতে। গণপরিবহনে বর্ধিত ভাড়া দিয়েই শিক্ষার্থীরা স্কুল-কলেজে যাতায়াত করতে বাধ্য হচ্ছেন। ফলে অনেক পরিবারের পক্ষে শিক্ষার্থীদের শিক্ষার যাবতীয় ব্যয় নির্বাহ করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
আরও পড়ুন: নিত্যপণ্যের দামে কোনোভাবেই লাগাম টানা যাচ্ছে না: ক্যাব
অর্ধেক ভাড়ার দাবিতে ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
গণপরিবহনে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অর্ধেক ভাড়া নেয়ার দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন রাজধানীর ঢাকা কলেজের শতাধিক শিক্ষার্থী। বৃহস্পতিবার ঢাকা কলেজের সামনের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকেন তারা। এ সময় তারা বেশ কয়েকটি কোম্পানির বাস আটকে রাখেন।
পরবর্তীতে পুলিশের আশ্বাসে আন্দোলন সাময়িক স্থগিত করেন তারা।
এর আগে ১৬ নভেম্বর বিকালে কলেজ থেকে বাসে করে বাসায় ফেরার সময় অর্ধেক ভাড়া দিতে চাইলে ঢাকা কলেজের এক শিক্ষার্থীকে হয়রানি করেন চালক ও সহযোগী। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী জানান, বাসে এ ধরনের ঘটনা প্রায়শই ঘটে থাকে। এ ঘটনার প্রেক্ষিতেই মূলত আন্দোলনে সরব হওয়ার কথা জানান বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।
তামিম নামে ঢাকা কলেজের মাস্টার্সের এক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের এক সহপাঠীকে বাসে হয়রানি করা হয়। বাসের চালকের সহযোগীরা আমাদের কাছ থেকে সরকার নির্ধারিত অর্ধেক ভাড়া নিতে চায় না। বরং তারা আমাদের সাথে দুর্ব্যবহার করে। এ জন্য আমরা অর্ধেক ভাড়ার দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করি।
আরও পড়ুন: জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি: ২ দিনের বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা বিএনপির
পরবর্তীতে নিউ মার্কেট থানার ওসি বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়ান। তবে তাদের দাবি মানা না হলে আগামী শনিবার বা রবিবার আবারও আন্দোলনে নামার কথা জানান ঢাকা কলেজের এ শিক্ষার্থী।
আন্দোলন চলাকালে ঢাকা কলেজ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল কুদ্দুস শিকদার শিক্ষার্থীদের সাথে দেখা করেন।
এ বিষয়ে জানতে নিউমার্কেট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শ ম কাইয়ুমের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তার ফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। আর বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নন বলে জানিয়েছেন ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ আই. কে. সেলিম উল্লাহ খোন্দকার।
এর আগে ১৫ নভেম্বর রাজধানীর ইম্পেরিয়াল কলেজের এক ছাত্রকে গলাধাক্কা দিয়ে বাস থেকে ফেলে দেয়ার প্রতিবাদে রামপুরায় রাইদা পরিবহনের অন্তত ৫০টি বাস আটকে রাখেন কলেজটির শিক্ষার্থীরা। পরে পরিচয়পত্র দেখানো সাপেক্ষে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে হাফ ভাড়া নেয়ার দাবি মেনে নেয় রাইদা বাস কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন: যাত্রীরা ট্রেনে যেতে না পারায় স্টেশনে বিক্ষোভ
চট্টগ্রামে কলেজছাত্রের লাশ উদ্ধার, এলাকাবাসীর বিক্ষোভ
হঠাৎ বৃষ্টিতে ভিজল ঢাকা
ঢাকায় আজ বিষণ্ণ ও বৃষ্টিভেজা সকাল হয়েছে। শনিবার সকালে টানা তিন ঘণ্টার ঝিরঝিরে বৃষ্টির জেরে দুর্ভোগে পড়ে যায় নগরবাসী।
অপ্রত্যাশিত এই শীতের বৃষ্টিতে ব্যস্ত নগরীর যানজটে বসে থাকা কিংবা গণপরিবহনের জন্য অপেক্ষাকারী সাধারণ নগরবাসী বেশ বিপাকে পড়ে যায়। কেউ কেউ বৃষ্টি থেকে বাঁচতে বেশি ভাড়া দিয়ে রিকশায় চড়ে গন্তব্যে পৌঁছান।
শনিবার আবহাওয়া বিভাগ সকাল ৬টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত দশমিক দুই মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে এবং আগামী ৪৮ ঘণ্টায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের রুহুল কুদ্দুস বলেন, নিম্নচাপের কারণে আগামী ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত হালকা বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে।
আবহাওয়া অফিসের বুলেটিনে বলা হয়, রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় হালকা বৃষ্টি হতে পারে। দেশের অন্যত্র আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
এদিকে, উত্তর তামিলনাড়ু ও সংলগ্ন অঞ্চলে অবস্থানকারী সুস্পষ্ট নিম্নচাপটি দুর্বল হয়ে একটি লঘু নিম্নচাপে পরিণত হয়ে একই স্থানে অবস্থান করছে।
অন্যদিকে, উত্তর বঙ্গোপসাগরের ওপর আরেকটি নিম্নচাপ অবস্থান করছে। আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে আন্দামান সাগরের ওপর একটি নিম্নচাপ তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানানো হয়েছে।
এছাড়া, সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা ১-৩ ডিগ্রি কমতে পারে বলে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে উজানের ঢলে বন্যার আশঙ্কা, বৃষ্টি থাকবে আরও দু'দিন
টানা বৃষ্টিতে বাগেরহাটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
৫ বিভাগে বৃষ্টি হতে পারে: আবহাওয়া অধিদপ্তর
গণপরিবহনে ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদ যাত্রী কল্যাণ সমিতির
প্রতি কিলোমিটারে ডিজেলচালিত বাসের ভাড়া ২৭ শতাংশ বৃদ্ধির সরকারি সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ করেছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি (জেকেএস)।
জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে গণপরিবহন মালিকদের ডাকা ধর্মঘটের প্রেক্ষিতে রবিবার ঢাকায় বাস মালিকদের সাথে বৈঠকের পর ভাড়া বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে সরকার। সোমবার থেকে নতুন ধার্য করা এই বাড়া কার্যকর হবে।
সরকার ভাড়া বৃদ্ধির ঘোষণা দেয়ার পর শুক্রবার সকাল থেকে ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নিয়েছে বাস মালিকেরা।
এক বিবৃতিতে জেকেএস’র মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী জানান, নতুন ধার্যকৃত বাড়তি ভাড়ার বিরুদ্ধে নেওয়া প্রতিবাদ কর্মসূচীর বিষয়ে সোমবার সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানানো হবে।
বিবৃতিতে জেকেএস আরও জানায়,সরকার কোনও পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই অবৈধভাবে ডিজেল এবং কেরোসিনের দাম ২৩ শতাংশ বাড়িয়েছে।
আরও পড়ুন:ডিজেল চালিত বাস ও মিনিবাসের ভাড়া বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন
বাস ধর্মঘট প্রত্যাহার, ভাড়া বাড়ছে
দ্বিগুণ ভাড়ায় চট্টগ্রাম মহানগরীতে বাস চলাচল শুরু
চেনা রূপে ফিরেছে রাজধানী
কঠোর বিধিনিষেধ শিথিলের প্রথম দিন বুধবার রাজধানী ঢাকা তার চিরচেনা রূপে ফিরেছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঢাকায় প্রায় সব কল-কারখানা, অফিস এবং শপিংমল খোলা হয়েছে।
সকাল থেকে গণপরিবহনও চলাচল শুরু হয়েছে। বেশ কয়েকটি সিটি বাসকে রাস্তায় চলাচল করতে দেখা গেছে, তবে সরকারের নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী সড়কে অর্ধেক সংখ্যক বাস চলাচল করায় গণপরিবহন সংকটে পড়েছেন যাত্রীরা।
সকালের দিকে রাজধানীর কয়েকটি সড়কে যানজট দেখা গেছে। তবে আন্তজেলা বাসগুলো রাজধানীতে প্রবেশ বা প্রস্থান কিছুটা কম ছিল। এছাড়া ট্রেন এবং লঞ্চও ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে চলাচল শুরু করেছে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (ট্রাফিক উত্তর) আবু রায়হান মোহাম্মদ সালেহ বলেন, ‘রাস্তায় যানবাহনের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় কিছু এলাকায় ট্রাফিক সিগন্যাল ছিল।’
তিনি বলেন, সকাল ৮টা থেকে সাড়ে ১০টার মধ্যে রাজধানীর টেকনিক্যাল মোড়, মিরপুর, শ্যামলী, আসাদগেট, বনানী, আমতলী এবং মহাখালী এলাকায় যানজট লক্ষ করা গেছে।
এর আগে ৮ আগস্ট দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থা, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সচল রাখা এবং সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনা নিয়ে চলমান কঠোর বিধিনিষেধ ১১ আগস্ট থেকে শিথিল করার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিল সরকার।
সেই দিন বিকালে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এ বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে।
আরও পড়ুন: ১১ আগস্ট থেকে বিধিনিষেধ শিথিল, প্রজ্ঞাপন জারি
এতে বলা হয়, গত ৩ আগস্ট অনুষ্ঠিত কোভিড-১৯ সংক্রমণের পরিস্থিতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত আন্ত:মন্ত্রণালয় সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১১ আগস্ট থেকে বিধিনিষেধ শিথিল হবে।
সব সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, বেসরকারি অফিস, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে খোলা থাকবে। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আদালতগুলোর বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারি করবে।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, সড়ক, রেল ও নৌ-পথে আসন সংখ্যার সমপরিমাণ যাত্রী নিয়ে গণপরিবহন-যানবাহন চলাচল করতে পারবে। সড়কপথে গণপরিবহন চলাচলের ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসন (সিটি করপোরেশন এলাকায় বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা পর্যায়ে জেলা প্রশাসক) নিজ নিজ অধিক্ষেত্রের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সংশ্লিষ্ট দফতর-সংস্থা, মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের সাথে আলোচনা করে প্রতিদিন মোট পরিবহন সংখ্যার অর্ধেক চালু করতে পারবে।
১১ আগস্ট থেকে বিধিনিষেধ শিথিল, প্রজ্ঞাপন জারি
দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থা, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সচল রাখা এবং সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনা নিয়ে চলমান কঠোর বিধিনিষেধ ১১ আগস্ট থেকে শিথিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
রবিবার বিকালে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এ বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
এতে বলা হয়, গত ৩ আগস্ট অনুষ্ঠিত কোভিড-১৯ সংক্রমণের পরিস্থিতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত আন্ত:মন্ত্রণালয় সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ১১ আগস্ট থেকে বিধিনিষেধ শিথিল হবে।
আগের ঘোষণা অনুযায়ী চলমান লকডাউন ১০ আগস্ট রাত ১২টা পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছিল এবং ১১ আগস্ট থেকে এটি শিথিল করার কথা ছিল।
আজকের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, সব সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, বেসরকারি অফিস, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে খোলা থাকবে। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আদালতগুলোর বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারি করবে।
সড়ক, রেল ও নৌ-পথে আসন সংখ্যার সমপরিমাণ যাত্রী নিয়ে গণপরিবহন-যানবাহন চলাচল করতে পারবে। সড়কপথে গণপরিবহন চলাচলের ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসন (সিটি করপোরেশন এলাকায় বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা পর্যায়ে জেলা প্রশাসক) নিজ নিজ অধিক্ষেত্রের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সংশ্লিষ্ট দফতর-সংস্থা, মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের সাথে আলোচনা করে প্রতিদিন মোট পরিবহন সংখ্যার অর্ধেক চালু করতে পারবে।
শপিংমল, মার্কেট, দোকানপাট সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে খোলা রাখা যাবে। সব ধরনের শিল্প-কারখানা চালু থাকবে। খাবারের দোকান, হোটেল-রেস্তোরাঁয় অর্ধেক আসন খালি রেখে সকাল ৮টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে।
সবক্ষেত্রে মাস্ক পরিধান নিশ্চিত করতে হবে এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তর প্রণীত স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে।
এতে বলা হয়, গণপরিবহন, বিভিন্ন দপ্তর, মার্কেট ও বাজারসহ যেকোনো প্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে অবহেলা পরিলক্ষিত হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দায়িত্ব বহন করবে এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এর আগে করোনা নিয়ন্ত্রণে প্রথমে ২৩ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট এবং পরে ১০ আগস্ট রাত ১২টা পর্যন্ত বিধিনিষেধের সময়সীমা বৃদ্ধি করা হয়।
আরও পড়ুন: ১০ আগস্ট পর্যন্ত লকডাউন বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি
বাবা-মা এবং ভাইদের কি অপরাধ ছিল? ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ড নিয়ে প্রধানমন্ত্রী
আক্রান্ত ও উপসর্গে বরিশাল বিভাগে ২০ মৃত্যু
বিধিনিষেধ লঙ্ঘন: বাগেরহাটে ৪৬ জনকে জরিমানা
বাগেরহাটে সরকারি বিধিনিষেধ ও স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘন করার অপরাধে ভ্রাম্যমাণ আদালতে ৪৬ জনকে জরিমানা করা হয়েছে। এসময় তাদের কাছ থেকে ২৩ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
মঙ্গলবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলায় ৮টি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। অভিযান চলাকালে ৪৬টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সাথে নিয়ে জেলার ৯টি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন।
আরও পড়ুনঃ ফরিদপুরে করোনায় মৃত্যু ৫, বিধিনিষেধ লঙ্ঘনের দায়ে ৪৩৮ মামলা
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান জানান, বিধিনিষেধ বাস্তবায়ন করতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করছেন। অভিযান চলাকালে বিধিনিষেধ লঙ্ঘন করলে তাদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারকরা জরিমানা ছাড়াও বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিচ্ছেন।
জেলায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চলমান রয়েছে বলে জেলা প্রশাসক জানান।
আরও পড়ুনঃ বিধিনিষেধ লঙ্ঘন: বাগেরহাটে ৭ জনের কারাদন্ড, ৪১ জনকে জরিমানা
এদিকে বাগেরহাট জেলাসদরসহ বিভিন্ন উপজেলার বাজারগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মানার বালাই নেই। লকডাউনে কঠোর বিধিনিষেধ উপক্ষো করে মানুষ অপ্রয়োজনে ঘরের বাইরে বের হচ্ছে। গণপরিবহন বন্ধ থাকলেও মানুষ রিকশা-ভ্যান ও ইজিবাইকসহ বিভিন্ন যানবাহনে চলাচল করেছে।
বাগেরহাটে দ্বিতীয় দফায় লকডাউনের ১৩তম দিনে বুধবার বিভিন্ন এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর সদস্যদের টহল দিতে দেখা গেছে।
যাত্রী নিয়ে নাটোর ছাড়ছে ঢাকাগামী বাস
কারখানা খুলে দেয়ার কারণে সীমিত সময়ের জন্য গণপরিবহন খুলে দেয়া হয়েছে। আর তাই নাটোর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে যাত্রী নিয়ে একে একে ঢাকামুখী বাস ছেড়ে যাচ্ছে।
রবিবার সকাল থেকেই নাটোর শহরের হরিশপুর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে জড়ো হতে থাকে ঢাকামুখী যাত্রীরা।
আরও পড়ুন: ঢাকায় ফিরতে বরিশাল বাস টার্মিনালে যাত্রীদের ভিড়
পরিবহন সংশ্লিষ্টরা জানান, যাত্রী নিয়ে বাসগুলো ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যেতে থাকে। ৬২০ টাকা ভাড়ায় প্রত্যেক আসনে যাত্রী নিয়ে চলাচল করছে বাসগুলো।
এদিকে সকাল সাড়ে ৯টার মধ্যে নাটোর টার্মিনালে থাকা সকল বাস ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় বলে জানান তারা।
ভোগান্তি উপেক্ষা করে ঢাকায় ছুটছে মানুষ
চলমান কঠোর লকডাউনের মাঝেও কলকারখানা খোলার ঘোষণায় মহাসড়কে বেড়েছে মানুষের চলাচল। শনিবার সকাল থেকেই ঝিনাইদহ শহরের কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে ঢাকাগামী যাত্রীদের ভিড় লেগে আছে।
বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে ভিড়। বিভিন্ন স্থান থেকে ইজিবাইক, ভ্যান বিকশা যোগে টার্মিনালে এসে হাজির হচ্ছে তারা। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন কর্মজীবী মানুষেরা। কাজে যোগ দিতে ইজিবাইক, মাহেন্দ্রসহ ছোট ছোট যানে ঢাকায় ফিরতে হচ্ছে তাদের। যাত্রীদের অতিরিক্ত চাপে ইচ্ছেমতো ভাড়া আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তাদের। এসময় যানবাহন না পেয়ে অনেককে বসে থাকতে দেখা গেছে।
আরও পড়ুনঃ ৫ আগস্টের পরও বিধিনিষেধ বহালের সুপারিশ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের
যশোর থেকে ঢাকাগামী রাশেদুল ইসলাম নামের এক যাত্রী বলেন, ‘আমরা যশোর আসছি। আগামীকাল থেকে অফিস খোলা। অফিস তো যেতেই হবে। সেই কারণে বাচ্চাদের নিয়ে অনেক কষ্ট করে সিএনজি, অটোরিকশা করে যেতে হচ্ছে। ফ্যাক্টরি খোলা ঠিক আছে। তবে গাড়িগুলো যদি খুলে দিত তাহলে আমাদের ভোগান্তি কম হতো।‘
একই এলাকা থেকে আসা আব্দুল্লাহ নামের এক যাত্রী বলেন,’ আমি আসছি অভয়নগর যশোর থেকে। এখন যাব ঢাকা। আমার সঙ্গে আমার স্ত্রী আছে। এখন যাব কি করে? ১০ টাকার ভাড়া ১’শ টাকা নিচ্ছে। তাও গাড়ি পাচ্ছি না। খুবই বিপদে আছি।‘
আরও পড়ুনঃ ভোলায় ফেরিঘাটে ঢাকামুখী মানুষের ভিড়
চুয়াডাঙ্গার জীবননগর থেকে আসা নাজমুল হোসেন নামের এক যাত্রী বলেন, ‘সরকার জনগণের কথা কখনো চিন্তাই করে না। আমাদের কথা যদি ভাবতো তাহলে গাড়ি চালু করতো। গাড়ি বন্ধ করে গার্মেন্টস খুলে দেওয়া কোন ভাবেই উচিত হয়নি। মানুষের কথা ভাবেন দয়া করে। এভাবে ভোগান্তি দেওয়া ঠিক না।‘
আরও পড়ুনঃ পাটুরিয়াঘাট দিয়ে ঢাকায় ছুটছে মানুষ
এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ ট্রাফিট ইন্সপেক্টর সালাহউদ্দিন বলেন, সকাল থেকে টার্মিনালে মানুষের উপস্থিতি বেড়েছে। তারা ছোট ছোট যানবাহনে করে গন্তব্যে যাচ্ছেন।
ভোলায় ফেরিঘাটে ঢাকামুখী মানুষের ভিড়
গার্মেন্টসসহ শিল্প কলকারখানা খুলে দেয়ার ঘোষণার পর কঠোর বিধি নিষেধ উপেক্ষা করে হাজার হাজার মানুষ ঢাকা, চট্টগ্রামের দিকে ছুটছে। শনিবার সকাল থেকে কর্মস্থলের উদ্দেশ্যে যাত্রা করার জন্য ভোলা- লক্ষ্মীপুর নৌরুটের ইলিশা ফেরিঘাটে শ্রমজীবী মানুষদের ভিড় করতে দেখা যায়।
এ সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খেতে হয়। ফেরিতে ছিলনা কোন স্বাস্থ্যবিধির বালাই। প্রচণ্ড গরমে অনেক যাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ে।
আরও পড়ুনঃ পাটুরিয়াঘাট দিয়ে ঢাকায় ছুটছে মানুষ
অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই করে ভোলা থেকে লক্ষ্মীপুরের উদ্দেশ্যে প্রথম ফেরি ছেড়ে গেলেও কয়েক হাজার যাত্রী কর্মস্থলে যাওয়ার জন্য ইলিশা ফেরিঘাটে অপেক্ষা করে পরের ফেরির অপেক্ষায়।
কর্মস্থলে ফেরা শ্রমজীবীদের একজন জানান, হঠাৎ করে গার্মেন্টস শিল্প কলকারখানা খুলে দেয়ায় তারা চরম বিপাকে পড়েছেন। তাদের অফিস থেকে আগামীকাল কাজে যোগ দিতে বলা হয়েছে। অথচ লঞ্চ থেকে শুরু করে সকল গণপরিবহন বন্ধ। একদিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকলে তাদের ১০ দিনের বেতন কাটা হয়। তাই বিপাকে পড়ে চরম দুর্ভোগ মাথায় নিয়ে পদে পদে বাধা উপেক্ষা করে নিয়ে তারা কর্মস্থলের উদ্দেশ্যে দ্বীপ জেলা ভোলা থেকে রওনা দিয়েছেন।
আরও পড়ুনঃ লকডাউন: বিনা বাধায় ফেরিতে যাত্রী আসছে পাটুরিয়াঘাটে
তাদের অভিযোগ ৫ আগষ্ট পর্যন্ত লকডাউন ছিল। তারপর গণপরিবহন খুলে দেয়ার পর কল-কারখানা গার্মেন্টস খোলা হলে তাদের এই ভোগান্তি পোহাতে হতো না।
এদিকে ফেরিতে উঠতে না পেরে অনেকে আবার উত্তাল মেঘনা পাড়ি দিয়ে ট্রলারে লক্ষ্মীপুর যাওয়ার চেষ্টা করে। তবে কোস্টগার্ড ও পুলিশের বাধার মুখে পড়ে যাত্রীরা। এ সময় কয়েকটি যাত্রীবাহী ট্রলার আটক করা হয়।