হত্যাকাণ্ড
রোহিঙ্গা নেতার মৃত্যুতে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রদূতের গভীর শোক
মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল আর মিলার এবং ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের শীর্ষ নেতা মুহিবুল্লাহর কথিত হত্যায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
বুধবার ২৯ সেপ্টেম্বর অজ্ঞাত বন্দুকধারীরা বাংলাদেশের একটি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মহিবকে (৫০)গুলি করে হত্যা করে।
মিলার টুইটে বলেছেন, ‘রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মানবাধিকারের একজন সাহসী চ্যাম্পিয়ন মোহাম্মদ মুহিবুল্লাহকে হত্যায় দুঃখিত ও বিচলিত।’
আরও পড়ুন: উখিয়ায় শীর্ষ রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহকে গুলি করে হত্যা
তিনি মুহিবুল্লাহর পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন এবং আশা করেন যে এই হত্যাকাণ্ডের অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা হবে।
হাই কমিশনার ডিকসন বলেন, আরাকান রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর শান্তি এবং মানবাধিকার রক্ষার নেতা মুহিবুল্লাহর হত্যায় তিনি মর্মাহত ও শোকাহত।
তিনি টুইটে বলেন, ‘তার পরিবার, বন্ধু এবং রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের জন্য এটি একটি মর্মান্তিক ক্ষতি। আমার আন্তরিক সমবেদনা।’
ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) দূতাবাসও টুইট করে বলেছে যে, ‘রোহিঙ্গা নেতা ও মানবাধিকার কর্মীর ‘হত্যা’ একটি দুঃখজনক ঘটনা।’
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন: আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ চায় ঢাকা
দূতাবাস বলেছে, ‘আমরা তার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। আমরা আশা করি যারা হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তাদের বিচারের আওতায় আনতে কর্তৃপক্ষ সফল হবে।’
বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় জিয়াকে আসামি করতে চেয়েছিলাম: শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তিনি জিয়াউর রহমানকে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার আসামি করতে চেয়েছিলেন। কারণ এতে কোনো সন্দেহ নেই যে জিয়াউর রহমান এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত ছিলেন।
বৃহস্পতিবার সংসদে প্রধানমন্ত্রী বলেন,এতে কোন সন্দেহ নেই যে তিনি ১৯৭৫ সালের হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিলেন। আমি তাকে আসামি করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তৎকালীন স্বরাষ্ট্র সচিব রেজাউল হায়াত একবার বলেছিলেন যে মৃত ব্যক্তিদের আসামি করা যাবে না। কিন্তু তার (জিয়া) নাম অভিযুক্ত হিসেবে (মামলায়)রাখা উচিত ছিল।’
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতুর সড়ক ও রেলপথ একসাথে উদ্বোধনে ‘সংশয়’ রেলমন্ত্রীর
একাদশ সংসদের ১৪তম অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী তার শেষ বক্তব্য দেয়ার সময় এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন,‘বঙ্গবন্ধুর খুনি ফারুক ও রশিদ বিবিসিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন যে জিয়া ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এছাড়াও,এটি অ্যান্থনি মাসকারেনহাস এবং লরেন্স লিফসচল্টজের বইগুলোতে বলা হয়েছিল। তাহলে,তারা (বিএনপি) এটা কিভাবে অস্বীকার করবে?’
মানতের মাংস নিয়ে সংঘর্ষে যুবক নিহত, আটক ৩
কুষ্টিয়ায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার ঐতিহ্যবাহী ঝাউদিয়া শাহী মসজিদে মানতের মাংস ভাগাভাগিকে কেন্দ্র করে স্থানীয় মুরাদ চৌধুরী ও আসাদ চৌধুরী গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে চলাকালে কবির (৩৫) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন।
শনিবার বিকেল ৪ টার দিকে ঝাউদিয়া শাহী মসজিদ এলাকায় এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। পুলিশ এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বিবাদমান দুই গ্রুপের প্রধান মুরাদ চৌধুরী, আসাদ চৌধুরীসহ তিন জনকে আটক করেছে।
আরও পড়ুন: মাগুরায় আ’লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ৫
কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান রতন হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, গত কয়েক দিন ধরে মসজিদের মানতের মাংস ভাগাভাগিকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা চলে আসছিল। শনিবার চুয়াডাঙ্গার দর্শনা এলাকা থেকে কয়েকজন ঝাউদিয়া শাহী মসজিদে আসেন। তারা মানত হিসেবে মসজিদে একটি খাসি দেন। এই খাসির মাংস ভাগাভাগিকে কেন্দ্র করে স্থানীয় আসাদ চৌধুরী ও মুরাদ চৌধুরী গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ ঠেকাতে গিয়ে লাঠির আঘাতে সংঘর্ষে কবির খান নামে এক যুবক নিহত হন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে এবং লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়।
ঝাউদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কেরামত আলী বিশ্বাস জানান, নিহত কবির হোসেন দীর্ঘদিন বিদেশে ছিলেন। সম্প্রতি তিনি বিদেশ থেকে এলাকায় এসেছিলেন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে পুলিশের সাথে বিএনপির সংঘর্ষ, আটক ৭
প্রসঙ্গত মুঘল আমলে নির্মিত ঝাউদিয়া শাহী মসজিদ দেশের অন্যতম একটি প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন। কুষ্টিয়া জেলা সদরের ঝাউদিয়া এলাকায় মসজিদটি অবস্থিত। এখানে এসে খাস দিলে কোন কিছু চাইলে তা পূরণ হয় এ রকম প্রচারণা থেকে দর্শনার্থীদের অনেকেই নগদ টাকা-পয়সা, স্বর্ণালংকার, হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগলসহ অনেক কিছুই মানত করে থাকেন। এই মানতের টাকা পয়সার ভাগ-বাটোয়ারাকে কেন্দ্র করে এর আগেও অনেক বার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।
সিনহা হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু, বিলম্বিত করার অভিযোগ রাষ্ট্রপক্ষের
সেনাবাহিনীর মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে। তবে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা মামলার বিচার কাজ বিলম্বিত করার চেষ্টা করছেন বলে রাষ্ট্র ও বাদীপক্ষ অভিযোগ করেছেন।
সোমবার বিকালে সিনহা হত্যা মামলার স্বাক্ষ্যগ্রহণের প্রথম দিন সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর এই অভিযোগ করেন।
আরও পড়ুনঃ সিনহা হত্যা: ৩ আসামির জামিন আবেদন খারিজ
তিনি জানান, মামলার শুরু থেকেই আসামিপক্ষের আইনজীবীরা আদালতে দরখাস্ত দিয়ে বিলম্বিত করার চেষ্টা করছেন। সোমবার সাক্ষ্যগ্রহণের প্রথম দিন আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রানা দাশ গুপ্ত ১১টি দরখাস্ত দিয়ে মামলা স্থগিত চেয়ে আবেদন করেন। আদালত এসব দরখাস্ত গ্রহণ করেননি।
একই অভিযোগ করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম। তিনি জানান, আসামিপক্ষের আইনজীবী নানা অজুহাতে মামলা বিলম্বিত করার চেষ্টা করছে।
আরও পড়ুনঃ সিনহা হত্যা মামলার অভিযোগ গঠন, ওসি প্রদীপসহ ৬ জনের জামিন নামঞ্জুর
অপরদিকে মামলার বাদী মেজর অব. সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়া সাক্ষ্যগ্রহণের প্রথম দিন আদালতের কাছে সিনহা মামলার সকল আসামির সর্বোচ্চ শাস্তির জন্য প্রার্থনা করেছেন।
আগামী ২৪ ও ২৫ আগস্ট অন্য সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ চলবে।
সোমবার বিকাল ৫টায় আদালতের কার্যক্রম মূলতবি ঘোষণা করেন। এর আগে সকাল ১০টায় এই মামলার সকল আসামিদের আদালতে নিয়ে আসা হয়। মামলায় মোট ৮৩ জন সাক্ষীর মধ্যে বাদীসহ ১ থেকে ১৫ নম্বর সাক্ষী এই তিন দিন সাক্ষ্য দেবেন। এ মামলায় অভিযুক্ত ১৫ জন আসামিরা সকলেই কক্সবাজার জেলা কারাগারে রয়েছেন।
কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম জানান, গত ২৭ জুন কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল আসামিদের উপস্থিতিতে মামলাটির চার্জ গঠন করে ২৬, ২৭ ও ২৮ জুলাই একটানা তিন দিন বাদীসহ ১০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করে আদেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু করোনার কারণে লকডাউনে আদালতের কার্যক্রম বন্ধ থাকায় সাক্ষ্যগ্রহণ হয়নি। সরকার গত ১১ আগস্ট থেকে লকডাউন তুলে নিলে আদালতের কার্যক্রম শুরু হওয়ায় জেলা ও দায়রা জজ নতুন করে এই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ ধার্য্য করেন। যথাসময়ে বাদীসহ সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু করবেন আদালত।
আরও পড়ুনঃ মেজর সিনহা হত্যা মামলায় ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ৩১ জুলাই ঈদুল আজহার আগের রাত সাড়ে ৯টার দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিনড্রাইভ সড়কের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর এপিবিএন চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান। হত্যাকাণ্ডের পর চার মাসের বেশি সময় তদন্ত শেষে ২০২০ সালের ১৩ ডিসেম্বর ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে এবং ৮৩ জনকে সাক্ষী করে আলোচিত মামলাটির চার্জশিট দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা র্যাব-১৫ এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ খায়রুল ইসলাম। চার্জশিটভুক্ত ১৫ জন আসামি কারাগারে রয়েছে। এর মধ্যে বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাস, কনস্টেবল সাগর দেব ও রুবেল শর্মা ছাড়া ১২ জন আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
বঙ্গবন্ধু হত্যার ষড়যন্ত্রকারীদের খুঁজে বের করার সংকল্প প্রধানমন্ত্রীর
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের মূল ষড়যন্ত্রকারীদের খুঁজে বের করে অদূর ভবিষ্যতে বিচারের সম্মুখীন করার সংকল্প ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘প্রথমে হত্যাকারীদের বিচার করা খুবই জরুরি ছিল, আমরা সেটা করেছি। এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে কারা জড়িত ছিল সেটাও একদিন বেরিয়ে আসবে। সেই দিনও বেশি দূরে নয়।’
সোমবার (১৬ আগস্ট) জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত স্মরণ সভায় সভাপতির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মূল অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন।
তিনি বলেন, যারা নৃশংস হত্যাকাণ্ডে অংশ নিয়েছিল এবং যারা খুনিদের পাশে ছিল বা যারা এর জন্য ক্ষেত্র প্রস্তুত করেছিল তারা সবাই সমানভাবে দোষী।
নিষ্ঠুরতম হত্যাকাণ্ডের মূল ষড়যন্ত্রকারীদের খুঁজে বের করার জন্য একটি কমিশনের দাবির বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, সেদিনের সংবাদপত্রগুলো পড়লেই বিষয়গুলো সবার কাছে খুব স্পষ্ট হবে।
বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ কন্যা বলেন, জাতির পিতা ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি দেশে ফেরেন এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনে তাকে সময় না দিয়ে একই বছর তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু হয়।
তিনি বলেন, ‘একটি যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশকে পুনর্গঠনে করতে অনেক বছর লেগে যায়, কিন্তু মাত্র এক বছরেই তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু হয়।’
আরও পড়ুন: গ্রামে ৫জি সম্প্রসারণসহ একনেকে ১০ প্রকল্পের অনুমোদন
বাবা-মা এবং ভাইদের কী অপরাধ ছিল: প্রধানমন্ত্রী
রাষ্ট্রপতির ছেলে হয়েও কামাল সাদাসিধে জীবন-যাপন করত: হাসিনা
বাবা-মা এবং ভাইদের কী অপরাধ ছিল: প্রধানমন্ত্রী
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ড নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রবিবার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু, বঙ্গমাতা এবং তার ভাইদের নির্মম হত্যাকাণ্ড নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘একটাই প্রশ্ন সব সময়-আসলে কেন এই হত্যাকাণ্ড, আমার বাবা, মা এবং ভাইদের অপরাধ কি ছিল?’
প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে অনুষ্ঠানে যুক্ত হন।
আবেগাপ্লুত কণ্ঠে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব এবং আমার ভাইয়েরা নিজের জীবন উৎসর্গ করলেন, জীবনের সুখ, শান্তি একটা জাতির স্বাধীনতা ও অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য বিলিয়ে দিলেন, কিন্তু সেই বাঙালিই তাদের হত্যা করলো?
বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতার বড় কন্যা হাসিনা বলেন, ‘ধৈর্য, সাহস এবং সঠিক ও সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত এবং সেগুলো বাস্তবায়নের মাধ্যমে স্বাধীনতার সংগ্রামকে এগিয়ে নিতে বঙ্গমাতা অনেক অবদান রেখেছেনন। আমার মা প্রতিটি আন্দোলনে অনেক অবদান রেখেছেন।’
তিনি বলেন, বঙ্গমাতা বঙ্গবন্ধুকে সারাজীবন উৎসাহ দিয়েছেন যাতে তিনি দেশ ও জাতির জন্য কাজ করতে নিজেকে উৎসর্গ করতে পারেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গমাতা সবসময় বিশ্বাস করতেন যে প্রত্যেক নারীর শিক্ষা গ্রহণ করা উচিত এবং আর্থিক স্বচ্ছলতা অর্জন করা উচিত। তার উপলব্ধি ছিল যে শুধু অধিকারের জন্য চিৎকার করলে নারীদের জন্য কিছু আসবে না। অধিকার অর্জনের জন্য সকল নারীর উচিত শিক্ষা গ্রহণ করা এবং নিজেদের পায়ে দাঁড়ানোর জন্য আর্থিক স্বচ্ছলতা অর্জন করা।
শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্য নিষ্ঠার সঙ্গে দেশের জন্য কাজ করার সুযোগ তৈরি করার জন্য তার ব্যক্তিগত ইচ্ছা এবং চাহিদা উপেক্ষা করেছেন। বঙ্গমাতার কোনো ব্যক্তিগত চাহিদা ছিল না এবং পারিবারিক বিষয়ে বঙ্গবন্ধুকে কখনো বিরক্ত করেনি।
দেশের স্বাধীনতায় বঙ্গমাতার ভূমিকার কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, বঙ্গমাতা রাজনীতিতে বিভিন্ন সংকটময় সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসন অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। জাতীয় মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান চেমন আরা তৈয়ব মূল প্রবন্ধের ওপর আলোচনা করেন।
মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা এমপি অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে বঙ্গমাতার জীবন ও কর্মের ওপর একটি ভিডিও চিত্র পরিবেশিত হয়।
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রপতির ছেলে হয়েও কামাল সাদাসিধে জীবন-যাপন করত: হাসিনা
বস্তিবাসীর মধ্যে ফ্ল্যাট হস্তান্তর করলেন প্রধানমন্ত্রী
বঙ্গবন্ধু হত্যায় ষড়যন্ত্রকারীদের নাম একদিন বের হবে: প্রধানমন্ত্রী
পাবনায় বাড়িতে ঢুকে গৃহবধূকে গলা কেটে হত্যা
পাবনার ঈশ্বরদী পৌরসভার মশুড়িয়া পাড়া এলাকায় বৃহস্পতিবার এক গৃহবধূকে গলা কেটে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।
নিহত মুক্তি খাতুন রিতা (২৭) ওই এলাকার বাসিন্দা ও রূপপুর প্রকল্পের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত বায়োজিদ সারোয়ারের স্ত্রী। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: মানিকগঞ্জে বাবাকে পিটিয়ে হত্যা
হত্যাকাণ্ডের সময় রিতার শাশুড়ি নিলিমা খাতুন বেনুকেও (৫৫) গলা টিপে ও শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করা হয়। সে সময় তার আর্ত চিৎকারে খুনিরা পালিয়ে যায়। তারা সংখ্যায় পাঁচজন ছিল বলে শাশুড়ি নিলিমা খাতুন বেনু উপস্থিত পুলিশ ও সাংবাদিকদের জানান।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী নিলিমা খাতুন বেনু জানান, তার ছেলে বায়োজিদ সারোয়ার রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে চাকরি করেন। সেই সুবাদে বায়োজিদ সারোয়ার বেশ কিছু মানুষকে রূপপুর প্রকল্পে চাকরিও দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার সময় পাঁচজন যুবক চাকরির জন্য তার বাড়িতে আসে। বায়োজিদ সেই সময় বাজারে থাকায় ড্রইংরুমে বসিয়ে তাদের আপ্যায়ন করান তার স্ত্রী মুক্তি খাতুন রিতা। বেনু খাতুন সে সময় তার ঘরে কোরআন শরীফ পড়ছিলেন।
তিনি জানান, হঠাৎ হত্যাকারীরা তার ঘরে ঢুকে গলা টিপে ও শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করে। তিনি চিৎকার শুরু করলে হত্যাকারীরা পালিয়ে যায়। পরে তিনি পুত্রবধূর ঘরে গিয়ে তার গলাকাটা লাশ পড়ে থাকতে দেখেন।
আরও পড়ুন: যশোরে গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগে স্বামী ও শাশুড়ি আটক
তিনি বলেন, হত্যাকারীদের মধ্যে একজনকে তিনি চিনতে পেরেছেন। তার নাম সাব্বির হাসান, বাড়ি নাটোর জেলার বড়াই গ্রাম উপজেলার জোনাইল চর গোবিন্দপুর গ্রামে। বাকিদের মুখে মাস্ক থাকায় তিনি চিনতে পারেননি বলে জানান।
রিতার স্বামী বায়োজিদ সারোয়ার জানান, রূপপুর প্রকল্পে চাকরির জন্য তার মামা বাড়ির এলাকা থেকে কিছু মানুষ বাড়িতে আসবে তাই বাজারে গিয়েছিলেন বাজার করতে। এসে দেখেন তার স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যা করে পালিয়ে গেছে তারা। তিনি কাউকে দেখেননি। তবে তার মায়ের কাছ থেকে সব শুনেছেন বলে জানান।
এলাকাবাসী জানান, হয়তো চাকরির জন্য টাকা-পয়সা লেনদেনের বিষয়ে এই হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে।
আরও পড়ুন: সাভারে বাসচালককে গলাকেটে হত্যা, ভ্যানচালক আটক
পাবনার ঈশ্বরদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফিরোজ কবির, ওসি আসাদুজ্জামান, পৌরসভার মেয়র ইছাহক আলী মালিথা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তবে ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আসাদুজ্জামান জানান, অনেকগুলো বিষয় নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। সিআইডি র বিশেষ টিম এসে আলামত সংগ্রহ করার পর লাশ ময়নাতদন্ত করা হবে।
ইতালি প্রবাসীকে হত্যার ঘটনায় আওয়ামী লীগ নেতার নামে মামলা
ফরিদপুরের ভাঙ্গায় ইতালি প্রবাসী মাসুদ রানাকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করার ঘটনায় এক আওয়ামী লীগ নেতাকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে নিহতের মা হালিমা বেগম বাদী হয়ে ভাঙ্গা থানায় হত্যা মামলাটি করেন।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে আইসিইউতে চিকিৎসক ও যন্ত্রাংশের অভাবে স্বাস্থ্যসেবা ব্যহত
এ মামলায় ভাঙ্গা পৌর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ও ২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর এমদাদুল হক বাচ্চু সহ ৩৫ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা পাঁচ-সাতজনকে আসামি করা হয়েছে। এদিকে ঘটনার পর থেকেই আওয়ামী লীগ নেতা এমদাদুল হক পলাতক রয়েছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ভাঙ্গা থানার উপ পরিদর্শক (এস আই) আবুল কালাম আজাদ জানান, সাবেক কাউন্সিলর এমদাদুল হক বাচ্চুকে প্রধান আসামি করে হত্যা মামলা হয়েছে। এ মামলার এজাহারভুক্ত আসামি গজারিয়া গ্রামের জয়নাল শেখকে (৩৫) বুধবার দুপুরে গ্রেফতার করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগ নেতা এমদাদুল হকের বক্তব্য জানতে তার মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
এদিকে, বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) বিকালে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পৌর সদরের নওপাড়া গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে মাসুদের কবর জিয়ারত করতে আসেন ফরিদপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন।
মাসুদের কবর জিয়ারত শেষে নিক্সন চৌধুরী বলেন, যারাই নির্মমভাবে ইতালি প্রবাসী মাসুদকে মেরেছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার হবে। হত্যাকারী যতই প্রভাবশালী হোক না কেন, সরকার এই হত্যাকাণ্ডের বিচারে কোন আপোষ করবে না।
পরে নিহত মাসুদের বাড়িতে গিয়ে শোকার্ত পরিবারকে সান্ত্বনা দেন সাংসদ। এসময় শত শত গ্রামবাসী এমপি নিক্সন চৌধুরীর কাছে মাসুদকে হত্যাকারী সাবেক পৌর কাউন্সিলর বাচ্চু মেম্বার ও তার সহযোগীদের ফাঁসির দাবিতে মিছিল দিতে থাকে।
সেসময় এমপি নিক্সন চৌধুরী সকলের উদ্দেশে আরও বলেন, 'আপনারা আইন হাতে তুলে নিবেন না। একটি হত্যাকাণ্ডের পর ঐ এলাকায় সুযোগ সন্ধানী অনেকেই নানা ধরনের অপরাধে জড়িয়ে পড়ে। আপনারা শান্ত থাকুন, এই হত্যাকাণ্ডের বিচারের জন্য সর্বদা আপনাদের পাশে আমি থাকব। নিহত মাসুদের দুটি সন্তান ও স্ত্রী ইতালিতে অবস্থান করছে। আপনারা সবাই এই পরিবারটির জন্য আল্লাহর নিকট দোয়া করবেন।'
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে তরুণীকে ‘সংঘবদ্ধ ধর্ষণের’ অভিযোগে গ্রেপ্তার ৩
কবর জিয়ারতের সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এস.এম হাবিবুর রহমান, সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহাদাৎ হোসেন, সরকারি কেএম কলেজের সাবেক জিএস লাবলূ মুন্সি, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রাজ্জাক ফকির প্রমুখ।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার রাত আটটার দিকে ভাঙ্গা পৌরসভার নওপাড়া বাসস্ট্যান্ডে এ হত্যার ঘটনা ঘটে। নিহত ইতালী প্রবাসী মাসুদ রানা ভাঙ্গা পৌরসভার গজারিয়া মহল্লার হারুন অর রশিদের ছেলে।
পৌরসভা নির্বাচনে মাসুদ রানা ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী ও ভাঙ্গা সহকারী জজ আদালত আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জহুরুল হক মিঠুনের পক্ষে কাজ করছিলেন। এতে প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থী এমদাদুল হক বাচ্চুসহ তার লোকজন প্রবাসী মাসুদ রানার ওপর ক্ষিপ্ত ছিলেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মাসুদ রানা দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে সপরিবার ইতালিতে বসবাস করেন। ভাঙ্গা পৌর নির্বাচন উপলক্ষে প্রায় তিন মাস আগে তিনি গ্রামের বাড়িতে আসেন। ১১ এপ্রিল এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। তবে করোনার কারণে এ নির্বাচন স্থগিত করা হয়। ২০ এপ্রিল ইতালি ফিরে যাওয়ার কথা ছিল মাসুদ রানার।
এলাকার একাধিক ব্যক্তি জানান, ভাঙ্গা পৌর এলাকার ২ নম্বর ওয়ার্ডের অধীন গজারিয়া গ্রামের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। এর এক পক্ষকে নেতৃত্ব দেন ভাঙ্গা পৌর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ও ২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর এমদাদুল হক বাচ্চু এবং অপর পক্ষের নেতৃত্ব দেন ভাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. রাজ্জাক ফকির। দুই পক্ষের বিরোধের কারণে গত বছর বেশ কয়েকবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে জখম, বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার, স্বামী পলাতক
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার রাত আটটার দিকে মাসুদ রানা ভাঙ্গা পৌরসভার নওপাড়া বাসস্ট্যান্ডে নান্নু শেখের চায়ের দোকানে বেঞ্চে বসে গল্প করছিলেন। এ সময় ২০-২৫ জন লোক এসে তাঁকে লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি পেটাতে শুরু করেন। একপর্যায়ে মাসুদ রানা দৌড়ে পাশে আনোয়ার মাতুব্বরের মুদি দোকানে প্রবেশ করলে হামলাকারীরা ওই দোকানের ভেতরে গিয়ে পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করেন তাকে। পরে এলাকাবাসী রক্তাক্ত অবস্থায় মাসুদ রানাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে রাত সাড়ে আটটার দিকে চিকিৎসক তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
এদিকে, মাসুদ রানার মৃত্যুর খবর জানাজানি হওয়ার পর গজারিয়া গ্রামে পাঁচ-ছয়টি বাড়িতে হামলা করে ১৪টি গবাদিপশু লুট করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরে গজারিয়া গ্রামে পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
সাতক্ষীরায় দিনেদুপুরে ঘরে ঢুকে বন্ধুকে জবাই করে হত্যা!
সাতক্ষীরায় ঘরে ঢুকে নিজের বন্ধুকে ধারাল ছুরি দিয়ে জবাই করে হত্যা করেছে এক দুর্বৃত্ত।
শনিবার জেলার শহরতলির কাশেমপুর জামতলা এলাকায় বেলা দেড়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ইজিবাইক চালক সালাউদ্দিন হোসেন (১৫) শহরতলীর কাশেমপুর জামতলা মালিবাড়ীর শাহজাহান আলী ওরফে বাবুর ছেলে।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জে বৃদ্ধ মাতব্বরকে কুপিয়ে ‘হত্যা’
আত্মস্বীকৃত হত্যাকারী সাতক্ষীরা সিটি কলেজ এলাকার সাগর হোসেন তার বাবা শহিদুল ইসলামকে যেয়ে এ খবর জানায় এবং নিহত বন্ধু সালাউদ্দিনের লাশ বের করে আনতে বলে।
সালাউদ্দিনের বাবা শাহজাহান আলীর বরাত দিয়ে সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. বোরহান উদ্দিন জানান, বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে বন্ধু সাগর হোসেন তার বন্ধু ইজিবাইক চালক সালাউদ্দিন আহমেদের ঘরে প্রবেশ করে। এক পর্যায়ে সে তাকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে জবাই করে হত্যা করে পালিয়ে যায়। বাড়িতে গিয়ে সাগর হোসেন তার বাবা শহিদুল ইসলামকে এ খবর জানায়। নিহত সালাউদ্দিন বাড়ির একটি কক্ষে একাই থাকতো।
আরও পড়ুন: সাতক্ষীরা সদর থানার ওসি আসাদুজ্জামান স্ট্যান্ড রিলিজ
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানিয়েছে, নিহত সালাউদ্দিন ও তার ঘাতক বন্ধু সাগর হোসেন দুজনেই ছিল মাদকাসক্ত। তারা মাদক কারবারের সাথেও জড়িত ছিল বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অপরদিকে একটি ইজিবাইক বেচাকেনা নিয়ে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছিল। এর কোনো একটি কারণে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে থাকতে পারে বলে পুলিশের ধারণা।
নিহতের পিতা শাহজাহান আলী ওরফে বাবু বলেন, 'আমি ইজিবাইক চালাতে শহরে ছিলাম। সালাউদ্দিনের মা বাড়িতে ছিল না। একাই আমার ছেলে বাড়িতে ছিল। সাগর হোসেন আমার ছেলে সালাউদ্দিনের খুব কাছের বন্ধু ছিল। আমার ছেলেকে জবাই করে হত্যার পর সে কৌশলে পালিয়ে যায়। একটা ইজিবাইক কেনাবেচা নিয়ে তাদের দুই বন্ধুর মধ্যে ঝামেলা হচ্ছিল শুনেছি। কিন্তু এভাবে আমার ছেলেকে জবাই করে হত্যা করবে তা কখনো ভাবিনি।'
আরও পড়ুন: সাতক্ষীরার ২ শিশু সন্তানকে হত্যার পর মায়ের আত্মহত্যা!
ঘটনার পর সাগর ও তার বাবা পলাতক রয়েছে। পুলিশ রসুলপুর গ্রামের রফিক নামের এক যুবককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে। ময়নাতদন্তের জন্য নিহত সালাউদ্দিনের লাশ সাতক্ষীরা হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান জানান, হত্যাকাণ্ডের আসল কারণ উদঘাটনে পুলিশ মাঠে নেমেছে। বেশ কিছু ক্লু পাওয়া গেছে। সেসব ক্লু নিয়ে পুলিশ এগোচ্ছে। পুলিশ হত্যাকারীকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে।
পঞ্চগড়ে ছেলের হাতে মা খুন
পঞ্চগড়ে নেশার টাকা না পেয়ে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মাকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে ছেলের বিরুদ্ধে।
শনিবার দুপুরে জেলা শহরের পশ্চিম মিঠাপুকুর এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে। নিহত জয়তুন বেগম (৫০) ওই এলাকার আব্দুল মজিদের স্ত্রী।
আরও পড়ুন: আধিপত্য বিস্তার নিয়ে রাজশাহীতে যুবককে কুপিয়ে হত্যা
ঘটনার পর অভিযুক্ত ছেলে শহিদুল ইসলাম (৩৫) পালিয়েছেন বলে জানিয়েছে এলাকাবাসী।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, দুপুরে বাড়ির পাশে কাজ করছিলেন জয়তুন বেগম। মাদক সেবনের জন্য শহিদুল তার মায়ের কাছে টাকা চায়। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে শহিদুল ধারাল অস্ত্র দিয়ে তার মাকে আঘাত করে। এসময় জয়তুনের চিৎকারে এলাকাবাসী সেখানে গিয়ে দেখেন জয়তুন রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে আর ছেলে শহিদুল দৌড়ে পালাচ্ছে।
আরও পড়ুন: মানিকগঞ্জে ছাত্রলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা
এলাকাবাসী তাকে উদ্ধার করে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জয়তুনকে মৃত ঘোষণা করেন।
পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. রাকিব হোসেন জানান, হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। গলায় ধারাল অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: রাজশাহীতে মাদক বিক্রিতে বাধা দেয়ায় বৃদ্ধকে কুপিয়ে হত্যা
পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এস এম শফিকুল ইসলাম জানান, গলায় ধারাল অস্ত্রের আঘাতে জয়তুনের মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। ওই নারীর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় পঞ্চগড় সদর থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। শহিদুলকে ধরতে অভিযান চলছে।