আবহাওয়া অধিদপ্তর
সারাদেশে বৃষ্টির পূর্বাভাস
মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের ওপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরের অন্যত্র দুর্বল থেকে মাঝারি অবস্থায় থাকায় বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টা সারাদেশে বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে।
এতে বলা হয়, রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসাথে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে ভারি বর্ষণ হতে পারে।
সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় কক্সবাজারে সর্বোচ্চ ১০৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অফিস।
সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে রাজশাহী বিভাগের ঈশ্বরদীতে ৩৫.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগের সীতাকুণ্ডে ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
মৌসুমী বায়ুর অক্ষ রাজস্থান, হরিয়ানা, মধ্যপ্রদেশ, বিহার, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তরপূর্ব বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।
পড়ুন: বিশ্বের তৃতীয় দূষিত শহর ঢাকা
দেশের বিভিন্ন জায়গায় বৃষ্টির পূর্বাভাস
পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টির পূর্বাভাস
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের (বিএমডি) পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সোমবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টা মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের ওপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরের অন্যত্র মাঝারি সক্রিয় রয়েছে।
সোমবার সকালে আবহাওয়া অফিসের বুলেটিনে বলা হয়েছে, রংপুর, ময়মনসিংহ, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং ঢাকা, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
আরও পড়ুন: পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টির পূর্বাভাস!
এতে বলা হয়,দেশের পশ্চিমাঞ্চলে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে এবং তা অন্যত্র প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় বরিশাল বিভাগের পটুয়াখালীতে সর্বোচ্চ ৮১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অফিস।
দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রাজশাহীতে ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা সীতাকুণ্ডে ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আরও পড়ুন: ২৪ ঘণ্টায় দেশে বৃষ্টির পূর্বাভাস
মৌসুমী বায়ুর অক্ষ রাজস্থান, মধ্য প্রদেশ, উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।
বুলেটিন অনুসারে এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।
দেশের কয়েক জেলায় মৃদু তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে
দেশের কয়েকটি জেলায় মৃদু তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর।
তবে ‘রংপুর, ময়মনসিংহ, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং ঢাকা, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। একইসঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে মাঝারি ধরনের ভারি থেকে ভারি বর্ষণ হতে পারে।’
শুক্রবার সকালে আবহাওয়া অধিদপ্তর এক বুলেটিনে এসব তথ্য জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: কিছু এলাকায় তাপপ্রবাহ কমতে পারে
এছাড়া রাজশাহী ও পাবনা জেলার ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।
সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
শুক্রবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় রাজশাহীতে সর্বোচ্চ ৩৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি এবং রাঙামাটি ও ফেনীতে সর্বনিম্ন ২৫ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
তাপপ্রবাহ আরও দুদিন থাকতে পারে: আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ
বর্ষা মানেই একসঙ্গে কয়েকদিন ধরে প্রবল বর্ষণের মৌসুম। তবে এবারের বর্ষা অনেকটাই শুষ্ক এবং সারাদেশে বয়ে যাচ্ছে তাপপ্রবাহ।
সাধারণত বাংলাদেশে বর্ষা জুনের শুরু থেকে অক্টোবরের মাঝামাঝি পর্যন্ত বিরাজ করলেও চলতি বছরের জুলাইয়ের মাঝামাঝি পর্যন্ত গত দুই সপ্তাহ ধরে প্রচণ্ড গরমে নাকাল জনজীবন।
বর্ষাকালে এই অস্বাভাবিক তাপপ্রবাহ আরও দুদিন বিরাজ করবে এবং এরপর বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে বলে ইউএনবিকে জানিয়েছেন বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মোহাম্মদ ওমর ফারুক।
তিনি বলেন, ‘প্রতি বছর জুলাই মাসে বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ তৈরি হয় যার কারণে বর্ষাকালে বৃষ্টিপাত হয়। তবে এ বছর এটি কম সক্রিয়।’
আরও পড়ুন: আগামী ২৪ ঘণ্টায় তাপপ্রবাহ থেকে স্বস্তি মিলছে না
১৫ জুলাই নীলফামারী জেলার সৈয়দপুরে চলতি মাসের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।
২০১৮ সালের ১৯ ও ২০ জুলাই বাংলাদেশে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ দেখা যায় এবং এবার ২০২২ সালে তাপপ্রবাহ এসেছে।
রবিবার সকাল ৯টা থেকে আগামী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়া পূর্বাভাসে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, রাজশাহী, রংপুর ও সিলেট বিভাগ এবং টাঙ্গাইল, যশোর ও চুয়াডাঙ্গা জেলার ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।
তবে খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম, রংপুর ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং ঢাকা, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। একইসঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে মাঝারি ধরনের ভারী বর্ষণ হতে পারে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আরও পড়ুন: তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে
সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন উড়িষ্যা-পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে লঘুচাপটি অবস্থান করছে।
মৌসুমী বায়ুর অক্ষ মধ্য প্রদেশ, উত্তর প্রদেশ, বিহার, লঘুচাপের কেন্দ্রস্থল ও উত্তরপূর্ব দিকে বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।
মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের ওপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরের অন্যত্র মাঝারি ধরনের সক্রিয় রয়েছে।
সৈয়দপুরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সিলেটে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৫ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত মাসে গড় বৃষ্টিপাত স্বাভাবিক ছিল।
এছাড়া জুলাই মাসে স্বাভাবিকের চেয়ে সামান্য বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস সূত্র।
৩ জুলাই ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে আবহাওয়া অফিস জানায়, চলতি মাসে বঙ্গোপসাগরের ওপর একটি বা দুটি লঘুচাপ থাকবে এবং এর মধ্যে একটি নিম্নচাপে পরিণত হবে।
দেশে আগামী ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টি হতে পারে: আবহাওয়া অধিদপ্তর
বাংলাদেশের ওপর মৌসুমী বায়ু মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি অবস্থায় থাকায় আগামী ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে বৃষ্টিপাত হতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর।
অধিদপ্তরের নিয়মিত বুলেটিন অনুযায়ী, ‘রংপুর, সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগের অধিকাংশ জায়গায়; রাজশাহী, ঢাকা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় এবং খুলনা বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা ব্জ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। একইসঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে।’
আরও পড়ুন: দেশে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির পূর্বাভাস
এছাড়া সারাদেশে দিনের ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় (সকাল ৯টা পর্যন্ত) তেতুলিয়ায় সর্বোচ্চ ১৫৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
সারাদেশে বৃষ্টি হতে পারে: আবহাওয়া অধিদপ্তর
আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সারাদেশে বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর (বিএমডি)।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, ময়মনসিংহ, ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসাথে কোথাও কোথাও মাঝারি বা ভারী বর্ষণ হতে পারে।
আজ সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে রাজশাহী জেলায় ৩৬ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল রংপুরের তেতুলিয়ায় ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামের কক্সবাজারে ৫৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে বিএমডি।
আরও পড়ুন: দূষিত শহরের তালিকায় দ্বিতীয় ঢাকা
বন্যার সময় খাবার পানি পরিশোধিত করার উপায়
সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর সতর্কতা সংকেত বহাল
উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় গভীর সঞ্চারণশীল মেঘমালা অব্যাহত থাকায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরগুলোকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
মঙ্গলবার বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের এক বুলেটিনে বলা হয়েছে, সমুদ্রবন্দর,উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশ উপকূলীয় এলাকায় ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
এতে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব ধরনের মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় দেশে বৃষ্টির পূর্বাভাস
বন্যার সময় খাবার পানি পরিশোধিত করার উপায়
সিলেটে বন্যার ৮ দিন
সিলেটে বন্যার আট দিন পেরিয়ে গেলেও সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির কোন উন্নতি হয়নি। বরং ভারী বৃষ্টি ও উজানের ঢলে পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে।
টানা ৮ দিন ধরে সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সিলেট নগরসহ জেলার ১৩টি উপজেলায় প্লাবিত হওয়া হাজার হাজার গ্রাম পানিতে থৈ থৈ করছে। এতে হাজার হাজার মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছেন, অন্যদিকে ঘরে মজুত করা খাবারও শেষ হয়ে গেছে। এমন হাহাকারের মাঝে বন্যাদুর্গত মানুষ পর্যাপ্ত ত্রাণ পাচ্ছেন না বলেও অনেকে অভিযোগ করেছেন।
বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, বুধবার ও বৃহস্পতিবার রাতে ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ায় নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় শুক্রবার ভোর থেকে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, সিলেটে কমপক্ষে ২০ লাখ মানুষ পানিবন্দি আছেন।
দেখা গেছে জেলার অনেকে নিজের বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদে আশ্রয় নিয়েছেন। কেউ কেউ ঘরের ভেতরে মাচা বানিয়ে থাকছেন।
আরও পড়ুন: সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, ভোগান্তিতে বানভাসিরা
সিলেট নগরের বন্যাক্রান্তরাও খাবার ও বিশুদ্ধ পানি সংকটে পড়েছেন বলে অনেকে অভিযোগ করেছেন। নগরের আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়া অনেকে বলছেন, তারা প্রয়োজনীয় খাবার সহায়তা পাচ্ছেননা। খাবার সংকটে তাদের অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। প্রয়োজনের তুলনায় ত্রাণ বরাদ্দ একেবারেই কম। এ অবস্থায় মানবেতর দিন কাটাচ্ছেন তারা। একইসাথে বিশুদ্ধ পানিও পাচ্ছেননা তারা। বৃষ্টির পানি জমিয়ে খাবার চাহিদা মেটাচ্ছেন। তাদের প্রশ্ন এভাবে আর কতদিন চলবে?
সিলেট আবহাওয়া অধিদপ্তরের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী জানান, রবিবার পর্যন্ত সিলেটে ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস আছে। রবিবার দিবাগত রাত থেকে বৃষ্টিপাত কমে পরের দিন সোম ও মঙ্গলবার আকাশ পরিষ্কার হবে। এরপর ফের বৃষ্টিপাত হতে পারে।
সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, সিলেটের সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত বুধবার কানাইঘাট পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। ওই দিন সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বিপদসীমার এক দশমিক ৪১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা তিনটায় ওই পয়েন্টে পানি ছিল ১৩ দশমিক ৮৫ সেন্টিমিটার। ওই পয়েন্টে বিপদসীমা ছিল ১২ দশমিক ৭৫ সেন্টিমিটার।
আরও পড়ুন: সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, সারাদেশের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন
কুশিয়ারা নদীর পানি বুধবার বেলা তিনটা পর্যন্ত বিপদসীমার এক দশমিক ৭৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। ওই পয়েন্টে বেলা তিনটা পর্যন্ত পানি ছিল ১৭ দশমিক ১৭ সেন্টিমিটার। শেওলা পয়েন্টে ছিল ১৩ দশমিক ৬২ সেন্টিমিটার। সেখানে বিপদসীমা ১৩ দশমিক শূন্য ৫ সেন্টিমিটার।
সারি নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম না করলেও বিপদসীমার কাছাকাছি অবস্থান করছে। বৃহস্পতিবার বেল তিনটা পর্যন্ত নদীতে পানি ছিল ১১ দশমিক ৪৮ সেন্টিমিটার। ওই নদীর বিপদসীমা ১২ দশমিক ৩৫ সেন্টিমিটার।
জানা গেছে, ভারতের মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে গত ৮ দিনে ২ হাজার ২০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। সেখান থেকে নেমে আসা ঢলেই বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার বিকালে সরেজমিনে নগরের কালীঘাট, মহাজনপট্টি এলাকায় দেখা গেছে, সুরমা নদীসংলগ্ন কালীঘাটের খেয়াঘাট এলাকার অন্তত তিন শতাধিক দোকানপাটে পানি ঢুকেছে।
আরও পড়ুন: বন্যায় দুর্ভোগ কমাতে ক্লাস-পরীক্ষায় সহনশীল শাবিপ্রবি প্রশাসন
ব্যবসায়ী মো. শাহজাহান বলেন, ‘পানি ঠেকাতে দিনরাত কষ্ট করছি। কিন্তু এরপরও ঠেকাতে পারছি না। বেচা-কেনার কথা বাদ দিলাম। এখন দোকানে থাকা মালগুলো রক্ষা করাই বড় দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ক্ষয়ক্ষতি হলে পথে বসা ছাড়া উপায় নেই।’
সিলেটে ঢলের পানিতে তলিয়ে গেছে বোরো ধান। বোরোর পর এবার আউশেও আঘাত হানলো বন্যা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের হিসেবে, চলমান বন্যায় বৃহস্পতিবার পর্যন্ত আউশ ধানের বীজতলা এক হাজার ৩০১ হেক্টর, বোরো ধান এক হাজার ৭০৪ হেক্টর এবং গ্রীষ্মকালীন সবজির এক হাজার ৪ হেক্টর পানিতে তলিয়ে গেছে।
শুক্রবার সকাল ১১টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সিলেট নগরীতে বৃস্টিপাত অব্যাহত ছিল। এরআগে বৃহস্পতিবার রাতেও ভারি বৃস্টিপাত হয়েছে।
বজ্রসহ বৃষ্টির পূর্বাভাস
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর (বিএমডি) সোমবার সকাল ৯টা থেকে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দেশে বজ্রসহ বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে।
পূর্বাভাসে বলা হয়েছে রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক, চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রাজশাহী ও ঢাকা বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ী দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে দেশের উত্তরাঞ্চলের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে।
দেশের অন্যত্র আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
আরও পড়ুন: ঢাকার বাতাসের মানের উল্লেখযোগ্য উন্নতি
সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
বুলেটিনে বলা হয়েছে, রংপুর বিভাগের তেতুলিয়ায় সর্বোচ্চ ৯২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
এদিকে, লঘুচাপটি বিহার থেকে উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের দক্ষিণ অংশ জুড়ে বিস্তৃত রয়েছে।
আরও পড়ুন: ঢাকার বায়ুমান ‘মধ্যম’
খুলনা, চট্টগ্রাম ও বরিশালে ভারী বর্ষণের পূর্বাভাস
পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’ উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হওয়ায় মঙ্গলবার বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর (বিএমডি) দেশের তিনটি বিভাগে ভারী বর্ষণের পূর্বাভাস দিয়েছে।
আবহাওয়া অফিসের বুলেটিনে বলা হয়েছে, ‘মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় খুলনা, চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরণের ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে।’
এছাড়া সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে বলে আবহাওয়া অফিসের বুলেটিনে বলা হয়েছে।
পড়ুন: ‘অশনি’র প্রভাবে উপকূলজুড়ে বৃষ্টিপাত