রাজস্ব
পর্যটন খাতে রাজস্ব বাড়াতে আইন সংশোধিত হচ্ছে
পর্যটন খাত থেকে রাজস্ব বাড়ানোর লক্ষ্যে বিদ্যমান আইন আরও কার্যকর ও সময়োপযোগী করতে জাতীয় সংসদে ‘বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন (সংশোধন) বিল-২০২২’ উত্থাপন করা হয়েছে।
সোমবার বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী এম মাহবুব আলী বিলটি উত্থাপন করলে তা সংশ্লিষ্ট যাচাই-বাছাই কমিটিতে পাঠানো হয়। কমিটিকে এক মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
বিল অনুযায়ী, কর্পোরেশনের অনুমোদিত মূলধন ১৫ কোটি টাকার পরিবর্তে এক হাজার কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন পাঁচ লাখ টাকার পরিবর্তে ৪০০ কোটি টাকা হবে।
আরও পড়ুন: শীতকালীন সংসদে গণমাধ্যমকর্মী আইন উত্থাপনের আশাবাদ তথ্যমন্ত্রীর
বিদ্যমান আইনে করপোরেশন বোর্ডে সর্বোচ্চ চার জন সদস্য থাকবে বলে বিধান রয়েছে। নতুন খসড়া আইনে এই সংখ্যা বাড়িয়ে ১১ জন করা হয়েছে।
কর্পোরেশনের প্রধান কার্যালয় ঢাকায় থাকবে। তবে এটি বাংলাদেশের বাইরে বা অন্য কোনো স্থানে কার্যালয়, শাখা বা সংস্থা স্থাপন করতে পারবে।
কর্পোরেশনের কাজ হবে পর্যটনের প্রচার ও বিকাশ, সুবিধা প্রদান, ব্যবস্থা গ্রহণ এবং পর্যটনের সঙ্গে যুক্ত বা আনুষঙ্গিক সব ধরনের কাজ পরিচালনা করা।
আরও পড়ুন: জাতীয় সংসদের ষোড়শ অধিবেশন শুরু
সংসদ ভবন এলাকায় অস্ত্র বহন ও সমাবেশ নিষিদ্ধ
১৯ বছরে সর্বোচ্চ রাজস্ব আয় বরিশাল সিটি করপোরেশনের
১৯ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ রাজস্ব আদায় করেছে বরিশাল সিটি করপোরেশন। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এত টাকা রাজস্ব আদায় করা হয়নি।
মঙ্গলবার বিকালে প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণার পর এই তথ্য জানান মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ।
আরও পড়ুনঃ রাজস্ব আদায়ের লক্ষমাত্রা পূরণে হিমশিম খাচ্ছে এনবিআরতিনি বলেন, ২০২০-২১ অর্থ বছরে বরিশাল সিটি করপোরেশনের রাজস্ব আয় হয়েছে ৭৭ কোটি ৩৪ লক্ষ ৩১ হাজার ৫৪৭ টাকা। যা গত ১৯ বছরে মধ্যে সর্বোচ্চ। ২০১৯-২০ অর্থবছরে রাজস্ব আয় ছিল ৫৩ কোটি ৬০ লক্ষ ৩৭ হাজার ৩১৭ টাকা।
তবে ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রস্তাবিত বাজেটে ১১৩ কোটি ৫৬ লক্ষ ৭০ হাজার ২২ টাকা রাজস্ব আয়ের আশা প্রকাশ করেন মেয়র সাদিক।
আরও পড়ুনঃ যশোরে দুদকের মামলায় রাজস্ব কর্মকর্তা কারাগারে
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার বিকালে ২০২১-২২ অর্থবছরে ৪১৫ কোটি ৭২ লক্ষ ৩৭ হাজার ৩৬৬ টাকার প্রস্তবিত বাজেট ঘোষণা করেন মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ। এটি সিটি করপোরেশনের ১৯ তম বাজেট এবং মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর তৃতীয় প্রস্তাবিত বাজেট।
১১ বছর পর লাভের মুখ দেখল মধ্যপাড়া পাথর খনি
এক দশকেরও বেশি সময় পর অবশেষে লাভের মুখ দেখতে চলেছে রাষ্ট্রায়ত্ত পাথর খনি মধ্যপাড়া গ্রানাইট মাইনিং কোম্পানি।
২০০৭ সালে কার্যক্রম শুরুর দিকে এটি প্রথম দু বছরে রেকর্ড পরিমাণ লভ্যাংশ অর্জন করেছিল।
সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদন অনুসারে এটি ১১ বছরের ক্ষতি কাটিয়ে ২০১৮-১৯ বছরে ৭ কোটি এবং ২০১৯-২০ বছরে ২২ কোটি টাকা লাভ করেছে।
আরও পড়ুনঃ বিদ্যুৎ উৎপাদনে স্থানীয় কয়লা উত্তোলন সাশ্রয়ী নয়: নসরুল হামিদ
মধ্যপাড়া গ্রানাইট মাইনিং লিমিটেড আশা করছে চলমান রাজস্ব বছরের শেষ দিকে এটি ৫০ কোটি টাকার ব্যাঞ্চমার্ক অতিক্রম করবে।
লিমিটেডের এক সিনিয়র কর্মকর্তা ইউএনবিকে জানান, 'আমাদের লক্ষ্য ছিল এই রাজস্ব বছরে ১০ কোটি টাকা আয় করা কিন্তু মহামারির কারণে ২৬ মার্চ থেকে ১২ আগস্ট, ২০২০ পর্যন্ত আমাদের কাজ বন্ধ রাখতে হয়েছে। যার কারণে আমাদের আশানুরূপ ফল পাওয়া যায়নি।'
যদিও প্রতিবেদন অনুসারে পরপর ১১ বছর বিভিন্ন বাধার কারণে ক্ষতির মুখে থাকা কোম্পানিটির এখনও ৫৯৩ কোটি টাকা ঘাটতি রয়েছে।
আরও পড়ুনঃ বাসা বাড়িতে নতুন গ্যাস সংযোগ নয়: নসরুল হামিদ
সূত্র মতে স্বার্থান্বেষী মহলের অব্যবস্থাপনার কারণে কোম্পানীটি ১১ বছর ধরে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে বলে জানা যায়।
উল্লেখ্য বাংলাদেশ ভূতাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তর (জিএসবি) ১৯৭৪ সালে দিনাজপুর জেলার প্রভাতীপুরে ১ দশমিক ২ বর্গ কিলোমিটারের এই এলাকার সন্ধান পান।
বিভিন্ন পরীক্ষা নিরিক্ষার পর ১৯৯৪ সালে উত্তর কোরিয়ার একটি সংস্থাকে এর উন্নয়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
বর্তমানে এখানে ১০০ বিদেশি বিশেষজ্ঞ, দেশের ৫০ জন ইঞ্জিনিয়ার এবং ৭৫০ জন শ্রমিক কর্মরত আছেন।
আরও পড়ুনঃ মুজিব বর্ষেই শতভাগ এলাকা বিদ্যুতায়নের আওতায় আসবে: নসরুল হামিদ
যদিও বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে চুক্তি নবায়ণ করার ব্যাপারে দ্বিধাদ্বন্দে রয়েছেন।
তবে বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রী নসরুল হামিদ ইউএনবিকে জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর সাথে আলোচনা করেই এ ব্যাপারে নতুন ট্রেন্ডার ডাকা হবে।
বাজেট উপস্থাপন করছেন অর্থমন্ত্রী
স্বাস্থ্য, কৃষি, সামাজিক সুরক্ষা জাল এবং কর্মসংস্থান তৈরির ওপর প্রাধান্য দিয়ে সংসদে ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন করছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
বৃহস্পতিবার করোনা মহামারির কারণে সৃষ্ট বিপর্যয় এর সাথে খাপ খাওয়াতে মানুষের জীবন রক্ষা এবং নতুন কর্মসংস্থান তৈরির ব্যাপারে পদক্ষেপ তৈরির ওপর গুরত্ব দিয়ে ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা বরাদ্দের বাজেট উপস্থাপন করছেন অর্থমন্ত্রী।
এই বাজেটে করোনা সংক্রান্ত বিষয় ছাড়াও দুযোর্গ ব্যবস্থাপনা এবং খাদ্য নিরাপত্তার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
‘জীবন-জীবিকায় প্রাধান্য দিয়ে সুদৃঢ় আগামীর পথে বাংলাদেশ শিরোনামে এবারের বাজেট প্রস্তুত হয়েছে। আ হ ম মুস্তফা কামালের তৃতীয় বাজেট উপস্থাপন।
এছাড়াও এটি আওয়ামীলীগ সরকারের টানা ১৩তম এবং বাংলাদেশের ৫০তম বাজেট।
আরও পড়ুন: প্রস্তাবিত বাজেট মন্ত্রিসভায় অনুমোদন
২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট পেশ হবে আজ
এর আগে সংশোধিত বাজেট জাতীয় সংসদে পেশ করার আগে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বাজেটে সম্মতি জানিয়ে স্বাক্ষর দেন।
বাজেটে মোট রাজস্ব ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৯২ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা। আয়ের মধ্যে রাজস্ব খাত থেকে আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৩ লাখ ৮৯ হাজার কোটি টাকা এবং বৈদেশিক অনুদান নেওয়া হবে ৩ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা।
বেনাপোল কাস্টম হাউসে রাজস্ব আদায়ে ১৭৩৪.৭৫ কোটি টাকা ঘাটতি
বেনাপোল কাস্টম হাউসে চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১ হাজার ৭৩৪ কোটি ৭৫ লাখ টাকা কম আদায় হয়েছে।
রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫ হাজার ১৮৪ কোটি ৫২ লাখ টাকা। এর বিপরীতে আদায় হয়েছে ৩ হাজার ৪৪৯ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। সেই হিসাবে লক্ষ্যের চেয়ে রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি রয়েছে ১ হাজার ৭৩৪ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।
আরও পড়ুন: বেনাপোল বন্দরে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য সচল
কাস্টমস কর্মকর্তারা বলছেন, গত দেড় বছর করোনার কারণে উচ্চ শুল্কযুক্ত পণ্য আমদানি কম হয়েছে। যে কারণে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী রাজস্ব আদায় সম্ভব হচ্ছে না।
কয়েক বছর ধরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে বেঁধে দেয়া লক্ষ্য অনুযায়ী রাজস্ব আদায় করতে পারছে না বেনাপোল কাস্টম হাউজ। প্রতি অর্থবছরই রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি থাকছে।
আরও পড়ুন: ঈদে ৩ দিন বেনাপোলে আমাদনি-রপ্তানি বন্ধ থাকবে
বেনাপোল কাস্টমস থেকে প্রাপ্ত তথ্য বলছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে কাস্টমসের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫ হাজার ৫৬৩ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। সেখানে আদায় হয়েছিল ২ হাজার ৬৩৫ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। ঘাটতি ছিল ২ হাজার ৯২৭ কোটি ৮২ লাখ টাকা। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে রাজস্ব ঘাটতি ছিল ১ হাজার ১৪৫ কোটি টাকা। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে রাজস্ব ঘাটতি ছিল ১৭৯ কোটি ৬৪ লাখ টাকা।
আরও পড়ুন: বেনাপোল বন্দরকে ঘিরে সক্রিয় শক্তিশালী চোরাচালান সিন্ডিকেট
দেশের সবচেয়ে বড় স্থলবন্দর যশোরের বেনাপোল। সরকারের বেশি রাজস্ব আদায় হয় এখান থেকে। তবে বন্দরটি দিয়ে পণ্য আমদানি হয় বেশি। রপ্তানি হয় তার চার ভাগের এক ভাগ।
কাস্টম হাউজের তথ্যমতে, গত পাঁচ বছরে ভারত থেকে আমদানি হয়েছে ৮৮ লাখ ৮৯ হাজার ৮১১ মেট্রিক টন পণ্য। বিপরীতে রপ্তানি হয়েছে ১৮ লাখ ৭২ হাজার ২১০ মেট্রিক টন পণ্য।
যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় দেশে স্থলপথে যে পণ্য আমদানি হয় তার ৭০ শতাংশ হয়ে থাকে বেনাপোল বন্দর দিয়ে। প্রতি বছর বন্দরটি দিয়ে ভারত থেকে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকার পণ্য আমদানি হয়। এর বিপরীতে রপ্তানি হয় ৮ হাজার কোটি টাকার পণ্য।
বন্দর ব্যবহারকারী ব্যবসায়ীরা বলছেন, করোনাভাইরাস মহামারির প্রভাবের পাশাপাশি অবকাঠামোগত ও নীতিগত কারণেই আমদানির তুলনায় রপ্তানিতে অনেক পিছিয়ে আছে দেশের বৃহত্তম এ স্থলবন্দর।
এ বিষয়ে বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন বলেন, করোনার ছোবল এবং পণ্য ছাড়করণের ক্ষেত্রে বৈধ সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত না হওয়ায় আমদানি কমে যাওয়ার একটি কারণ। এতে রাজস্ব ঘাটতি হচ্ছে। পাশাপাশি চাহিদা অনুপাতে বেনাপোল বন্দরের অবকাঠামো উন্নয়ন না হওয়া এবং উচ্চ শুল্কহারের পণ্য আমদানি কমে যাওয়ায় এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।
যশোর চেম্বার অব কমার্সের সাবেক সভাপতি মিজানুর রহমান খান বলেন, ‘চলতি অর্থবছরের শুরুতে মহামারি করোনায় নাকাল দেশের ব্যবসায়ীরা। এ অবস্থায় উচ্চশুল্কযুক্ত পণ্য আমদানি কমে আসছে। ফলে রাজস্ব কম আসবে এটাই স্বাভাবিক। তবে বেনাপোল বন্দরে বারবার রহস্যজনক অগ্নিকাণ্ডে অনেক ব্যবসায়ী পুঁজি হারিয়ে পথে বসেছেন। বন্দর কোনও ক্ষতিপূরণ না দেয়ায় অনেক আমদানিকারক বন্দর ছেড়েছেন।’
ভারত-বাংলাদেশ ল্যান্ডপোর্ট ইমপোর্ট-এক্সপোর্ট কমিটির চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান জানান, দেশের স্থলপথে আমদানি-রপ্তানির ৭০ শতাংশ হয় বেনাপোল দিয়ে। তবে কাঙ্ক্ষিত অবকাঠামো উন্নয়ন না হওয়ায় অনেকে এ পথে বাণিজ্যে আগ্রহ হারাচ্ছেন। ফলে সরকারের রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হচ্ছে না। বন্দরের সক্ষমতা বাড়লে বেনাপোল দিয়ে সরকারের রাজস্ব দ্বিগুণ আদায় হতো।
তবে এরই মধ্যে বেনাপোল বন্দর সম্প্রসারণে নতুন জায়গা অধিগ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বেনাপোল স্থলবন্দরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক (ট্রাফিক) আব্দুল জলিল।
তিনি বলেন, জায়গা অধিগ্রহণের পাশাপাশি কয়েকটি আধুনিক পণ্যাগার নির্মাণ করা হয়েছে। সিসি ক্যামেরার জন্য বাজেট হয়েছে। এছাড়া নিরাপত্তা বাড়াতে উঁচু প্রাচীরও নির্মাণ করা হয়েছে।
সার্বিক বিষয়ে বেনাপোল কাস্টমসের কমিশনার মো. আজিজুর রহমান বলেন, দেড় বছরের বেশি সময় ধরে করোনার প্রভাব চলছে। ফলে গত বছর তেমন আমদানি হয়নি। চলতি বছরের এপ্রিলে আমদানি বাড়লেও উচ্চ শুল্কযুক্ত পণ্য কম এসেছে। এতে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী রাজস্ব আদায় হচ্ছে না।
বন্দরের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর বিষয়ে কমিশনার বলেন, আমরা ব্যবসায়ীদের বৈধ সুবিধা বাড়ানোর পক্ষে। এরই মধ্যে বন্দর কর্তৃপক্ষকে অবকাঠামো সুবিধা বৃদ্ধির জন্য চিঠি দিয়েছি। বন্দরের সক্ষমতা বাড়লে বেনাপোল দিয়ে পণ্য আমদানি বেড়ে যাবে। সেইসঙ্গে বাড়বে সরকারের রাজস্ব আহরণ। আশা করছি, করোনার পরিস্থিতি উন্নতি হলে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়ে যাবে।
রাজস্ব আদায়ের লক্ষমাত্রা পূরণে হিমশিম খাচ্ছে এনবিআর
বর্তমান অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে মোট লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ৪১ শতাংশ রাজস্ব সংগ্রহ করতে পেরেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। করোনা মহামারির এই চরম প্রতিকূলতার মধ্যেই রাজস্ব আয়ের লক্ষমাত্রা পূরণে আঞ্চলিক কার্যালয় সমূহেকে কঠোর ব্যবস্থা নিতে বলেছে এনবিআর।
বর্তমান পরিস্থিতি কথায় মাথায় রেখে সকলকে লক্ষমাত্রা পূরণে কাজ করতে এবং বড় বড় ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগযোগ করতে আঞ্চলিক অফিসগুলোকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে ভারতকে ছাড়িয়ে যাবে বাংলাদেশ: আইএমএফ
২০২০-২০২১ অর্থবছরে বাজেটে মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট হতে রাজস্ব বোর্ডের মোট আয় ধরা হয়েছিল ১ কোটি ২৭ লাখ ৭৪৭ কোটি টাকা। কিন্তু এ বছরের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত ভ্যাট আদায় হয়েছে মাত্র ৫৩ হাজার ৮১ কোটি টাকা, যা মোট লক্ষমাত্রার মাত্র ৪১.৫৫ শতাংশ।
কাজে ধীরগতি
আমদানি খাত থেকে ৪৫ হাজার ৫৫৪ কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষমাত্র নির্ধারণ করা হলেও এবছরের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত মাত্র ১৯ হাজার ৬৫৯ কোটি টাকা আদায় করা সম্ভব হয়েছে। শুধু জানুয়ারি মাসেই সংগ্রহ করা হয় ২ হাজার ৯৫২ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন: শুল্ক আদায় প্রক্রিয়া আধুনিকায়ন করবে এনবিআর
গত অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে ১৭ হাজার ৮১৪ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় করতে পেরেছিল এনবিআর এবং ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসের সংগ্রহ ছিল ২ হাজার ৬৭৬ কোটি টাকা।
মাসিক হিসেবে বর্তমান অর্থবছরে রাজস্ব আয়ের প্রবৃদ্ধি ১০.৩২ শতাংশ এবং প্রথম সাত মাসের হিসেবে প্রবৃদ্ধি ১০.৩৫ শতাংশ।
অপরদিকে আঞ্চলিক কার্যালয়গুলো থেকে ভ্যাট সংগ্রহের লক্ষমাত্রা ছিল ৮২ হাজার ১৯২ কোটি। কিন্তু এবছরের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত এনবিআর মাত্র ৩৩ হাজার ৪২২ কোটি টাকা সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়। কেবল জানুয়ারি মাসেই ৫ হজার ৫৬৬ কোটি টাকার ভ্যাট আদায় করা হয়।
গত অর্থবছরের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত ৩৪ হাজার ১৪৭ কোটি টাকা এবং শুধু জানুয়ারি মাসেই ৫ হাজার ৭১ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছিল।
আরও পড়ুন: করের আওতা বাড়াতে এনবিআরের সর্বাত্মক চেষ্টা
আঞ্চলিক কার্যালয়গুলো হিসেবে, মাসিক রাজস্ব আদায়ে প্রবৃদ্ধি ৯.৭৬ শতাংশ এবং প্রথম সাত মাসের হিসেবে রাজস্ব আয়ে প্রবৃদ্ধি হ্রাস পেয়েছে ২.১২ শতাংশ।
রাজস্ব আয়ে করোনা আঘাত
এনবিআরের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকতা ইউএনবিকে বলেন, করোনা মহামারির মধ্যে লক্ষমাত্রা ঠিক রেখে রাজস্ব আদায় খুব একট সহজ কাজ না।
তিনি বলেন, ‘আমরা সকলেই বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে অবগত আছি এবং পরিস্থিতি যেকোনো সময় ভালো বা খারাপ হতে পারে। কিন্তু লক্ষমাত্রা অর্জনে আমাদের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে এবং কাজ এগিয়ে নিতে হবে।’
বড় কোম্পানিগুলোর সাথে যোগযোগ বৃদ্ধির মাধ্যমেই রাজস্ব আদায়ের একটা বড় অংশ পূরণ করা সম্ভব হবে। কারণ বড় ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলো থেকেই মোট রাজস্বের একটা বড় অংশ আদায় হয়ে থাকে।
রাজস্ব সংগ্রহের লক্ষমাত্রা
সরকারি দাপ্তরিক নথি অনুযায়ী, ২০১৭-১৮ এবং ২০১৮-১৯ অর্থবছরে রাজস্ব আয়ে প্রবৃদ্ধি ছিল যথাক্রমে ৯.৬ শতাংশ এবং ৯.৯ শতাংশ। রাজস্ব প্রবৃদ্ধির ধারাবাহি উন্নতি দেখে ধারণা করা হয়েছিল ২০১৯-২০ অর্থবছরের রাজস্ব আয়ের প্রবৃদ্ধি হবে ১৬.১ শতাংশ। কিন্তু ২০২০ সালের জুন মাসে সপ্তম পঞ্চবার্ষিকীর পরিকল্পনার শেষে দেখা যায় রাজস্ব প্রবৃদ্ধি হার ছিল ১২.৭ শতাংশ।
২০২০-২১ অর্থবছরে রাজস্ব আয়ের ক্ষেত্রে এনবিআর ভুক্ত আয় ধরা হয় ৩ লাখ ৭৮ হাজার কোটি টাকা এবং এনবিআর বহির্ভূত আয় ধরা হয় ১৫ হাজার কোটি টাকা। এছাড়া শুল্কহীন আয় নির্ধারণ করা হয় ৩৩ হাজার কোটি টাকা।
এনবিআর এর মোট আয়ের মধ্যে, ১ লাখ ৩ হাজার ৯৪৫ কোটি টাকা আদায় হবে আয়কর, মুনাফা এবং মূলধন কর এর মাধ্যমে। এছাড়া ভ্যাট থেকে ১ লাখ ২৭ হাজার ৭৪৭ কোটি টাকা, সম্পূরকশুল্ক থেকে ৫৭ হাজার ৮১৫ কোটি টাকা, আমদানি শুল্ক থেকে ৩৭ হাজার ৮০৭ কোটি টাকা, রপ্তানি শুল্ক থেকে ৫৫ কোটি টাকা এবং আবগারি শুল্ক থেকে ১ হাজার ৫৩০ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করবে রাজস্ব বোর্ড।
সুনামগঞ্জে নদীর পাড়ে জব্দকৃত বালু-পাথর চুরি: রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার যাদুকাটা নদীর পাড়ে অবৈধভাবে উত্তোলন করা জব্দকৃত বালু-পাথর রাতের আঁধারে চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে প্রভাবশালীরা। ফলে সরকার হারাচ্ছে কোটি টাকার রাজস্ব, দাবি স্থানীয় ব্যবসায়ীদের।
জানা যায়, গত ২৪ মার্চ বাদাঘাট ইউনিয়নের বিন্নাকুলি ব্রীজের উত্তর পশ্চিমপাশে ঘাগটিয়া বালুর টেক উত্তর পাশে শিমুলগাছ পর্যন্ত বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের বালু ও পাথর জব্দ করে প্রশাসন, পুলিশ, বিজিবি ও র্যা বের সমন্বয়ে টাস্কফোর্স। জব্দকৃত ৯০ হাজার ফুট বালু-পাথর পৃথকভাবে দুজনের কাছে নিলামে বিক্রি করা হয়েছে প্রায় ৩৬ লাখ টাকায়।
আরও পড়ুন: জমি নিয়ে বিরোধে দক্ষিণ সুনামগঞ্জে চাচা ভাতিজার মৃত্যু
স্থানীয়রা জানায়, প্রশাসনের গাফিলতির কারণে কোটি টাকার বালু-পাথর নিলাম হচ্ছে না। রাতের আঁধারে চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে প্রভাবশালীরা।
এদিকে, শিমুল গাছ থেকে শুরু করে পাকা রাস্তা পর্যন্ত আরও প্রায় ২৫ জন ব্যবসায়ীর ১ লাখ ৩০ হাজার ফুট বালু-পাথর মৌখিকভাবে জব্দ করলেও টাস্কফোর্স নিলাম না দেয়ায় স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলেন, ‘একই অপরাধে দুই আইন তা হতে পারে না। নদীর তীরে থাকা অবৈধ বালু-পাথর কিছু নিলামে দিবেন আর কিছু নিলাম দেবেন না তা মেনে নিতে কষ্ট হয়। আমাদের দাবি অবশিষ্ট বালু-পাথরও যেন নিলাম দেয়া হয়। ফলে সরকারি কোষাগারে জমা হবে প্রায় কোটি টাকা।'
ব্যবসায়ীরা আরও জানান, যাদুকাটা নদীর পাড়ে থাকা অবৈধভাবে উত্তোলন করা বালু-পাথর সবাই রেখেছে। কিন্তু কিছু ব্যবসায়ীর জন্য এক আইন আর অন্যদের জন্য আরেক আইন তা হতে পারে না। প্রশাসন ইতোমধ্যে প্রায় ৯০ হাজার ফুট বালু ও পাথর বিক্রি করেছে এবং সরকারি কোষাগারে জমা হয়েছে। কিন্তু ধরা ছোঁয়ার বাহিরে রয়েছে আরো ২০-২৫ জন ব্যাবসায়ীর লক্ষাধিক ফুট বালু-পাথর। এসব বালু-পাথরও নিলামে বিক্রির দাবি জানাই।'
আরও পড়ুন: কলমা নদীতে গ্যাস উদ্গীরণ, সুনামগঞ্জে আতঙ্কে গ্রামবাসী
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বলেন, 'আমরা জব্দকৃত বালু-পাথর নিলামে বিক্রি করেছি। অন্যদিকে এখনো যারা আইনের বাহিরে রয়েছে তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে।'
সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, 'বিষয়টি আমার জানা আছে। লকডাউনের কারণে দেরি হয়ে গেছে। শিগগরই ব্যবস্থা নেয়া হবে।'
ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায় ৫ হাজার ট্রাক
দেশের সর্ববৃহৎ স্থল বন্দর বেনাপোল বন্দরের ওপারে ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে আমদানি পণ্য নিয়ে ৫ হাজার ট্রাক বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। ফলে দুই দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে বড় ধরনের প্রভাব পড়ছে। ইতিমধ্যে রাজস্ব আদায়ে বড় ধরনের প্রভাব পড়েছে।
তৃতীয় প্রান্তিকে ৩৮ কোটি টাকা মুনাফা করেছে রবি
চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের তুলনায় রাজস্ব ৯ দশমিক ৭ শতাংশ বৃদ্ধির ওপর ভর করে তৃতীয় প্রান্তিকে ৩৮ কোটি ৯ লাখ টাকা মুনাফা করেছে মোবাইল ফোন অপারেটর রবি। তৃতীয় প্রান্তিকে তাদের রাজস্ব বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৯৩৪ কোটি টাকা।
বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে জিপির ৩৫৫৬ কোটি টাকা রাজস্ব অর্জন
চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) তিন হাজার ৫৫৬ কোটি টাকা রাজস্ব অর্জন করেছে গ্রামীণফোন, যা ২০১৯ সালের একই সময়ের তুলনায় ২.৮ শতাংশ কম।