ঢাকা
বনভোজনের জন্য ঢাকার কাছেই ১০টি মনোরম জায়গা
চিরাচরিত যান্ত্রিকতায় পরিবার ও বন্ধুদের নিয়ে শহরের বাইরে বনভোজনে যাওয়ার সময় পাওয়া বেশ দুষ্কর। ব্যস্ততম শহর ঢাকার নিরন্তর বাড়তে থাকা ভিড়ে বেড়ানোর জায়গাগুলো সবসময়ই থাকে কোলাহলপূর্ণ। সেখানে সবুজে ঘেরা ছায়া ঢাকা পরিবেশে বা নদীর ধারে বনভোজন অসম্ভব ব্যাপার। তবে,নগরবাসীর এই চাহিদা পূরণ করতে পারে ঢাকার উপকণ্ঠে গড়ে ওঠা পিকনিক স্পটগুলো। সপ্তাহান্তের ছুটিতে দারুণ ভাবে কাটানো যেতে পারে পুরো একটি দিন। অস্থিরতার সাময়িক অবসানে একটু শান্তির নিমিত্তে পূর্বপ্রস্তুতি নিতে পারেন ঢাকাবাসী। আর সেই পরিকল্পনার সহায়ক হতেই বনভোজনের জন্য ঢাকার কাছেই ১০টি চমৎকার জায়গার খোঁজ নিয়ে আজকের নিবন্ধ।
ঢাকার কাছেই বনভোজনের জন্য ১০টি দর্শনীয় স্থান
জল ও জঙ্গলের কাব্য
বিগত কয়েক বছর ধরে ভ্রমণপিপাসুদের প্রিয় জায়গায় পরিণত হয়েছে গাজীপুরের পুবাইলের এই রিসোর্টটি। ৯০ বিঘা জায়গা জুড়ে গড়ে তোলা রিসোর্টটি স্থানীয়দের কাছে পাইলট বাড়ি নামে পরিচিত। পুকুরে মাছ ধরা, শীতের পিঠা সহ অন্যান্য বাঙালি খাবার; সব মিলিয়ে জায়গাটির সর্বত্র ছড়িয়ে আছে এক গ্রামীণ আমেজ।
আরো পড়ুন: কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে পঞ্চগড় ভ্রমণের উপায়
এখানকার ডে আউট প্যাকেজে বড়দের জন্য খাবারের খরচ ২০০০ টাকা। বাচ্চাদের জন্য অথবা সঙ্গে গাড়ি চালক থাকলে তাদের খরচ মাথাপিছু ১০০০ টাকা। রিসোর্টটিতে যাওয়ার জন্য গ্রুপে নূন্যতম ১০ জন থাকতে হয়। প্রতি সপ্তাহান্তেই জায়গাটি বেশ ব্যস্ত থাকে, তাই যাওয়ার আগে বুকিং দিয়ে নেয়াটা বুদ্ধিমানের কাজ।
উত্তরা দিয়ে টঙ্গীর রাস্তায় পূবাইল কলেজ গেট হয়ে রিসোর্টে পৌঁছানো যায়।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক
গাজীপুরের বাঘের বাজারে অবস্থিত অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি দর্শনীয় স্থান এটি। সাফারি পার্কটিতে রয়েছে ৫টি সেকশন: কোর সাফারি, সাফারি কিংডম, জীববৈচিত্র্য পার্ক, বিস্তৃত এশিয়ান সাফারি পার্ক ও বঙ্গবন্ধু চত্বর।
আরও পড়ুন: শীতকালে বাংলাদেশে ভ্রমণের জনপ্রিয় ১০ স্থান
বন্যপ্রাণীদের মধ্যে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার ও সাদা সিংহ তো আছেই। এছাড়াও দেখা পাওয়া যাবে জেব্রা, হরিণ, বাইসন, ম্যাকাও, হর্নবিল, ময়ূর, হাতি, কুমির, চিত্রা হরিণ, বানর ও হনুমানের। আলাদাভাবে দৃষ্টি কাঁড়ে জাতীয় ইতিহাস জাদুঘর, অ্যাকোয়ারিয়াম, হাঁসের পুকুর এবং ছোট প্রজাপতি ঘের।
বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে বনভোজনের জন্য প্রবেশ মূল্য ৪০০ টাকা। এছাড়া জনপ্রতি ৫০ টাকা করে রাখা হয়। সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত প্রতিদিনি খোলা থাকে সাফারি পার্কটি। ঢাকা-ময়মনসিংহ পথে বাঘের বাজার যেয়ে বাঁ দিকে কিছুদুর গেলেই পৌঁছানো যায় এই পার্কটিতে।
সোনারগাঁও পানাম নগর
ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে নির্মিত হওয়া বাংলাদেশের হিন্দু বণিকদের সম্পূর্ণ পরিত্যক্ত এই শহরটি এখন একটি জনপ্রিয় পর্যটন স্থান। সোনারগাঁও লোক-শিল্প ও কারুশিল্প জাদুঘর, গোয়ালদী মসজিদ এবং সোনারগাঁয়ের অন্যান্য আকর্ষণগুলো দেখতে দেখতে সারাটা দিন কেটে যাবে।
আরও পড়ুন: সুনামগঞ্জের যাদুকাটা নদী ভ্রমণ গাইড: যাওয়ার উপায় ও আনুষঙ্গিক খরচ
বাংলাদেশের প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগ দ্বারা সংরক্ষিত অঞ্চলটি সপ্তাহের ৬ দিন উন্মুক্ত থাকে দর্শনার্থীদের জন্য। শুধুমাত্র রবিবার বন্ধ থাকে পানাম নগর। এছাড়া প্রতিদিন সকাল ৯ টা থেকে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত খোলা থাকে। মাত্র ১৫ টাকা প্রবেশ মূল্যে এই ঐতিহাসিক স্থানটি ঘুরে বেড়াতে পারেন পর্যটকরা।
গুলিস্তান থেকে নারায়ণগঞ্জের পথে মোগরাপাড়া হয়ে হাতের বাঁ দিকে কিছু দূর এগোলেই পৌঁছানো যায় পানাম নগরে।
মৈনট ঘাট
প্রমত্তা নদী পদ্মার সাগরসম রূপের জন্য স্থানীয়দের কাছে এই মৈনট ঘাট মিনি সমুদ্র সৈকত নামে পরিচিত। এখানে আসার পথে নবাবগঞ্জের পথে দেখে নেয়া যেতে পারে নবাবগঞ্জের জজবাড়ি, আনসার ক্যাম্প, কোকিলপ্যারি দালান, উকিলবাড়ি, খেলারাম দাতার বাড়ি বা আন্ধার কোঠার মত ঐতিহাসিক কিছু দর্শনীয় স্থান।
আরো পড়ুন: পাহাড় ভ্রমণে দুর্ঘটনা এড়াতে প্রয়োজনীয় সতর্কতা
লক্ষ্য যখন পদ্মার পাড়, তখন দর্শনার্থীদের সবারই মধ্যে হিড়িক পড়ে যায় ইলিশ ভাজা খাওয়ার। এছাড়া কার্তিকপুর বাজারের ঐতিহ্যবাহী মিষ্টি ও বান্দুরা বাজারের চারা বিস্কুট কিনে নিতে তারা ভোলেন না।
গুলিস্তান থেকে বাবু বাজার সেতু পার হয়ে দোহারের পথে এগোলে রাস্তা গিয়ে শেষ হয় মৈনট ঘাটে। এছাড়া মোহাম্মদপুরের বসিলা সেতু দিয়েও ওঠা যায় দোহারের রাস্তায়।
জিন্দা পার্ক
নৌকা বাইচ, লাইব্রেরি, কৃত্রিমভাবে তৈরি খিলান-সুড়ঙ্গ এবং পদ্ম পুকুর; কোন কিছুরই ঘাটতি নেই ঢাকাবাসীদের প্রিয় জিন্দা পার্কে। পরিবারকে নিয়ে পিকনিক করার জন্য একটি আদর্শ জায়গা এই পার্কটি। ১৯৮০ সালে জিন্দা গ্রামের অগ্রপথিক পল্লী সমিতির ৫০০০ অধিবাসী দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে গড়েছেন এই অপূর্ব পার্কটিকে।
আরও পড়ুন: নারীর একাকী ভ্রমণের জন্য সবচেয়ে নিরাপদ ১০ শহর
পার্কে ঘোরার সময় গাছের ওপর দেখা যাবে টং ঘর, মাটির ঘর, সুন্দর স্থাপত্যশৈলীর লাইব্রেরি ও ছোট্ট একটি চিড়িয়াখানা। পার্কের লেকে নৌবিহারের জন্য সাজানো আছে ৮ টি নৌকা।
কুড়িল হাইওয়ে ধরে কাঞ্চন ব্রিজ পর্যন্ত যেয়ে বাঁয়ে বেশ খানিকটা ভেতরে গেলেই পাওয়া যাবে জিন্দা পার্ক। এখানে প্রবেশ টিকেট জনপ্রতি ১০০ টাকা। লাইব্রেরির প্রবেশ মূল্য ২০ টাকা।
আহসান মঞ্জিল
ব্রিটিশ শাসনামলে ভারতীয় উপমহাদেশে সবচেয়ে প্রভাবশালী জমিদার পরিবারের সাক্ষী হয়ে আছে বুড়িগঙ্গা নদীর তীর ঘেষা এই গোলাপী প্রাসাদটি। প্রবেশদ্বার দিয়ে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গেই পর্যটকরা যেন নিজেদের আবিষ্কার করেন প্রাচীন কোন নগরীতে।
আরও পড়ুন: কাতার ভ্রমণ: বিভিন্ন শহরের শীর্ষস্থানীয় ১০ দর্শনীয় স্থান
একসময়ের পুরনো ঢাকার সবচেয়ে উচু ভিত্তির ওপর স্থাপিত এই দালানটি ১৯৯২ সাল থেকে জাদুঘর হিসেবে উন্মুক্ত করা হয়েছে। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত জাদুঘরটি ঘুরে বেড়াতে ২০ টাকা প্রবেশ মূল্য পরিশোধ করতে হয়। শুধু শুক্রবার দুপুর আড়াইটা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত খোলা থাকে। এছাড়া বৃহস্পতিবারসহ বিভিন্ন সরকারি ছুটির দিনগুলোতে বন্ধ থাকে এই দর্শনীয় জায়গাটি।
লালবাগ কেল্লা
পুরান ঢাকার লালবাগ এলাকায় অবস্থিত বিধায় প্রাচীন ঢাকার এই দুর্গটির নামকরণ করা হয়েছে লালবাগ কেল্লা হিসেবে। মুঘল সাম্রাজ্যের দুর্দান্ত এই শৈল্পিক স্বাক্ষরটি ঔরঙ্গাবাদ দুর্গ নামেও পরিচিত। তিনটি দালানে পরিবেষ্টিত দুর্গের কেন্দ্রীয় এলাকাটি। পূর্বে দিওয়ান-ই-আম ও হাম্মাম, পশ্চিমে মসজিদ। আর এই দুয়ের মাঝখানে পরী বিবির সমাধি।
আরো পড়ুন: চট্টগ্রাম ভ্রমণ গাইড: ঘুরে আসুন বাংলাদেশের ঐতিহাসিক বন্দর নগরী
সুন্দর ফোয়ারার একটি জলধারা তিনটি ভবনকে সংযুক্ত করেছে। পুরো স্থাপনাটি অবস্থিত বুড়িগঙ্গা নদী তীরের সমৃদ্ধ লাল মাটিতে। কেল্লা রবিবার বাদে প্রতিদিনি সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকে। মাঝে দুপুর ১টা থেকে দেড়টা আধঘন্টা বন্ধ থাকে। এছাড়া যে কোন সরকারি ছুটির দিনগুলোতে বন্ধ থাকে লালবাগ কেল্লা।
গোলাপ গ্রাম
সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়নের সাদুল্লাপুরে তুরাগ নদীর তীরে অবস্থিত গোলাপ ফুলের এক বিস্ময়কর রাজ্যের নাম গোলাপ গ্রাম। এখানকার লাল, হলুদ ও সাদাসহ রঙ-বেরঙের গোলাপগুলো যে কোন পর্যটকের চোখ ধাঁধিয়ে দেয়ার জন্য যথেষ্ট। রাজধানীতে গোলাপ ফুল যোগানের একটি বিরাট অংশ পুরণ করে এই গ্রামটি। গোলাপের ক্ষেত্রে মাঝ দিয়ে আঁকাবাঁকা সরু পথ নিমেষেই ভুলিয়ে দেবে শহরের যত কোলাহল।
এখানকার শ্যামপুর গ্রামে প্রতি সন্ধ্যায় বসে গোলাপের জমজমাট হাট। সেখানকার আবুল কাশেম বাজার ছাড়াও মোস্তাপাড়ার সাবু বাজারের সন্ধ্যাগুলো প্রতিদিনি মুখরিত থাকে ফুল ব্যবসায়ীদের আনাগোনায়। ঢাকা থেকে বিরুলিয়ায় সরাসরি বাস সার্ভিস আছে। তবে মিরপুর ১-এর দিয়াবাড়ি বটতলা ঘাট থেকে নৌকা ভ্রমনটি সবচেয়ে রোমাঞ্চকর যাত্রা।
আরো পড়ুন: ভারতের টুরিস্ট ভিসা কীভাবে পাবেন: আবেদনের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, প্রসেসিং ফি
ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান
ঢাকা নগরবাসীর বনভোজনের জন্য সেরা জায়গা হলো গাজীপুর। আর সেই গাজীপুরের প্রধান আকর্ষণ হলো এই ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান। এখানে আছে চিড়িয়াখানা, ভাওয়ালের প্রাচীন গাছ শালের বন এবং একাধিক পিকনিক স্পট। চিড়িয়াখানায় দেখা মিলবে বাঘ, চিতাবাঘ, মেছোবাঘ, হাতি, ময়ূর ও হরিণের। থাকার জন্য আছে ১৩টি কটেজ এবং ৬টি বিশ্রামাগার। যাওয়ার জন্য আগে ভাগেই বুকিং দিয়ে নিতে হবে।
উদ্যানটিতে জনপ্রতি ৫০ টাকা প্রবেশ মূল্যে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা অব্দি ঘুরে বেড়ানো যাবে।
ঢাকা থেকে জয়দেবপুর চৌরাস্তা পেরিয়ে ময়মনসিংহ রুটে একদম ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানের গেটের সামনে নামা যায়।
আরো পড়ুন: বাংলাদেশে ৩০০০ ফুটের অধিক উচ্চতার ১৪ পাহাড়
নক্ষত্রবাড়ি রিসোর্ট
বনভোজনের জন্য রিসোর্ট খুঁজতে গেলে ভ্রমণপিপাসুদের পছন্দের তালিকায় প্রথমেই থাকে গাজীপুর জেলার রাজেন্দ্রপুরের এই রিসোর্টটি। নাট্য দম্পতি তৌকির আহমেদ ও বিপাশা হায়াত ২০১১ সালে প্রায় ২৫ বিঘা জমির ওপর নির্মাণ করেন এই রিসোর্ট।
সবুজে ঘেরা জায়গাটিতে গড়ে তোলা হয়েছে দীঘি, ঝর্ণা, সুইমিংপুল ও কনফারেন্স হল। তাই পরিবার-পরিজন কিংবা অফিসের কলিগদের নিয়ে পিকনিকে যাওয়ার ক্ষেত্রে নক্ষত্রবাড়ি রিসোর্ট সেরা জায়গা।
এই রিসোর্টে যেতে হলে প্রথমে ঢাকা থেকে জয়দেবপুর চৌরাস্তার পর ময়মনসিংহ রোড ধরে পৌঁছাতে হবে রাজেন্দ্রপুরের রাজাবাড়িতে। তারপর রাজাবাড়ি বাজার থেকে ডান দিকে চিনাশুখানিয়া গ্রাম পর্যন্ত গেলেই পাওয়া যাবে নক্ষত্রবাড়ি রিসোর্ট। রিসোর্ট ঘুরে দেখতে ৫০০ টাকা প্রবেশ মূল্য দিতে হবে।
আরো পড়ুন: সমুদ্রে স্নানের সময় সতর্ক থাকতে করণীয়
শেষাংশ
পরিবার ও বন্ধুদের নিয়ে বনভোজনের জন্য ঢাকার নিকটবর্তী ১০টি মনভোলানো স্থান শুধু একটি দিনকে স্মরণীয় করবে না; নতুন উদ্যমে কর্মব্যস্ত সপ্তাহটি শুরু করতেও শক্তি যোগাবে। এগুলোর প্রতিটি স্থানই প্রিয়জনদের নিয়ে একান্তে সময় কাটানোর জন্য একটি নিখুঁত প্রবেশদ্বার। তবে বনভোজনের পূর্বপ্রস্তুতিতে অবশ্যই সতর্কতামূলক কর্মকাণ্ডগুলোকে খেয়াল রাখতে হবে। সুন্দর পরিবেশকে সুন্দর রাখতে যেখানে সেখানে ময়লা ফেলা থেকে বিরত থাকতে হবে। একই সঙ্গে খেয়াল রাখতে হবে, আনন্দের আতিশয্য যেন স্থানীয়দের বিরক্তির কারণ হয়ে না দাঁড়ায়।
ল্যাভরভের আসন্ন সফরে জ্বালানি সহযোগিতা ও রোহিঙ্গা সংকটের ওপর ফোকাস দিবে ঢাকা
বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় এ মাসের শেষের দিকে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের পরিকল্পিত সরকারি সফরের সময় বাংলাদেশ রাশিয়ার সঙ্গে জ্বালানি খাতে সহযোগিতার সম্ভাবনা খতিয়ে দেখবে।
এছাড়াও বাংলাদেশ খাদ্যশস্য সরবরাহ এবং রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ পাইপলাইনে থাকা প্রকল্পগুলোর দ্রুত বাস্তবায়ন নিয়েও আলোচনা করবে।
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন ইঙ্গিত দিয়েছেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে এসব বিষয়ে আলোচনা হতে পারে।
রবিবার বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) এ এক সেমিনার শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা তাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছি এবং তার এখানে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা তাকে স্বাগত জানাব এবং এই সফর রাশিয়ার সঙ্গে আমাদের চ্যালেঞ্জ ও অগ্রাধিকারের বিষয়গুলো তুলে ধরার সুযোগ দেবে।’
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন: বেইজিংয়ের প্রচেষ্টার অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইতে পারে ঢাকা
মাসুদ আরও বলেন, বাংলাদেশ চায় রোহিঙ্গা সংকটের সমাধানে রাশিয়া বাংলাদেশের পাশে থাকুক।
পররাষ্ট্র সচিব আরও বলেন, এখনও অনেক দিন আছে এবং মনে করিয়ে দিয়েছেন যে রাশিয়া একটি অস্থির পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে।
ঢাকায় রাশিয়ান দূতাবাসের একজন কর্মকর্তা ইউএনবিকে বলেছেন, ‘পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের জন্য আইওআরএ বৈঠকে অংশ নেয়ার আমন্ত্রণ পাওয়া গেছে এবং এই সফরের সম্ভাবনার বিষয়ে কাজ চলছে।’
এর আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন তার রুশ প্রতিপক্ষকে ২৪ নভেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠেয় ২২তম আইওআরএ কাউন্সিল অব মিনিস্টারস (সিওএম) বৈঠকে যোগ দেয়ার আমন্ত্রণ জানান।
রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ সম্ভবত ২৩ নভেম্বর এখানে আইওআরএ বৈঠকে তার মূল ফোকাস ছাড়াও পারস্পরিক স্বার্থের দ্বিপক্ষীয়, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে পারেন।
রাশিয়া ইন্ডিয়ান ওশান রিম অ্যাসোসিয়েশন (আইওআরএ) এর একটি সংলাপের অংশীদার।
আইওআরএর বর্তমান চেয়ারম্যান বাংলাদেশ আশা করছে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ এক ডজনেরও বেশি মন্ত্রী বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন বলে একজন সিনিয়র কর্মকর্তা ইউএনবিকে জানিয়েছেন।
রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক ছাড়াও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করার সম্ভাবনা রয়েছে।
মোমেন গত মাসে কাজাখস্তানের আস্তানায় সিআইসিএ শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে রুশ প্রতিপক্ষের সঙ্গে দেখা করেন এবং রোহিঙ্গাদের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করেন।
তিনি রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে আরও শক্তিশালী আন্তর্জাতিক সমর্থনের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
আগস্টে সের্গেই ল্যাভরভ মিয়ানমারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী উনা মং লুইন এবং অন্যান্য শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে নেইপিদোতে সাক্ষাৎ করেন।
সিনিয়র অফিসিয়ালস কমিটির (এসওসি) ২৪ তম বৈঠকের আগে আগামী ২২-২৩ নভেম্বর বাংলাদেশ আইওআরএ কাউন্সিল অব মিনিস্টারস মিটিং আয়োজন করবে।
ইন্ডিয়ান ওশান রিম অ্যাসোসিয়েশন (আইওআরএ) হলো একটি আন্তঃসরকারি সংস্থা, যার লক্ষ্য তার ২৩টি সদস্য রাষ্ট্র এবং ১০টি সংলাপ অংশীদারের মাধ্যমে ভারত মহাসাগর অঞ্চলের মধ্যে আঞ্চলিক সহযোগিতা ও টেকসই উন্নয়ন জোরদার করা।
আইওআরএ সদস্য রাষ্ট্রগুলি হলো- অস্ট্রেলিয়া, বাংলাদেশ, কমোরোস ইউনিয়ন, ফরাসি প্রজাতন্ত্র, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, কেনিয়া, মাদাগাস্কার প্রজাতন্ত্র, মালয়েশিয়া, মালদ্বীপ, মরিশাস, মোজাম্বিক, ওমান, সেশেলস, সিঙ্গাপুর, সোমালিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, শ্রীলঙ্কা, তানজানিয়া, থাইল্যান্ড, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ইয়েমেন।
আইওআর এ এর ২৩টি সদস্য রাষ্ট্র এবং ১০টি সংলাপ অংশীদারও মন্ত্রী পর্যায়ের ও সিনিয়র অফিসিয়াল (এসওসি) এই বৈঠকে যোগ দেবে বলে আশা করা হচ্ছে।
২০২১ সালের ১৭ নভেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠিত ২১তম আইওআরএ সিওএম সভায় বাংলাদেশ আইওআরএ চেয়ারের পদ গ্রহণ করে এবং ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের জন্য টেকসইভাবে ভারত মহাসাগরের সুযোগগুলিকে কাজে লাগানোর’ শপথ গ্রহণ করে।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা গণহত্যার বিচার পরিচালনায় ওআইসি সদস্য রাষ্ট্রের সহযোগিতা চায় বাংলাদেশ
ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের জন্য ইইউ’র ৩ মিলিয়ন ইউরো সহায়তা ঘোষণা
বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রাইজার ঢাকা আসছেন
দেশকে স্থিতিস্থাপক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিতে যে সকল গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার সাহায্য করতে পারে সেসব বিষয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনা করতে বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রাইজার শনিবার ঢাকায় আসছেন।
এ সফরের ব্যাপারে রাইজার বলেছেন, ‘আমি আবারও বাংলাদেশে আসতে পেরে এবং সরকারের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারমূলক কিছু বিসয় আলোচনা করার সুযোগ পেয়ে আনন্দিত। যা দেশটিকে স্থিতিস্থাপক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিতে এবং জনগণের জন্য সুযোগ তৈরিতে সাহায্য করতে পারে।’
শুক্রবার বিশ্বব্যাপী ঋণ দানকারী সংস্থাটি জানিয়েছে, তার সঙ্গে বাংলাদেশ ও ভুটানের কান্ট্রি ডিরেক্টর আব্দুলায়ে সেকও থাকবেন।
আরও পড়ুন: বিশ্বব্যাংককে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রকল্পে অর্থায়ন ত্বরান্বিত করার আহ্বান নসরুল হামিদের
তিন দিনের সফরে রাইজার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। এসময় রাইজার সেকের সঙ্গে তাদের পরিচয় করিয়ে দেবেন, যিনি ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি বাংলাদেশ ও ভুটানের জন্য বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টরের পদে নিযুক্ত হবেন। তারা বিশ্বব্যাংকের-সহায়তায় চলমান একটি প্রকল্পও পরিদর্শন করবেন।
সেক বলেন, ‘দারিদ্র্য হ্রাস, জলবায়ু পরিবর্তনের অভিযোজন ও দুর্যোগ-ঝুঁকির প্রস্তুতি এবং স্কুলে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে লিঙ্গ সমতাসহ উন্নয়নের অনেক ক্ষেত্রেই বাংলাদেশের একটি অভাবনীয় রেকর্ড রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমি বাংলাদেশের সরকার ও জনগণের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে উন্মুখ। কারণ দেশটি ২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চ-মধ্যম আয়ের মর্যাদা অর্জনের লক্ষ্যে কাজ করছে।’
সেনেগালের নাগরিক সেক ১৯৫৫ সালে একজন অর্থনীতিবিদ হিসেবে বিশ্বব্যাংকে যোগ দেন। তারপর থেকে বিভিন্ন দেশে গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন।
এই দায়িত্ব নেয়ার আগে সেক ক্যামেরুন, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র, নিরক্ষীয় গিনি, গ্যাবন ও কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের কান্ট্রি ডিরেক্টর হিসেবে কাজ করেছেন।
তিনি আফগানিস্তান, মিয়ানমার ও মলদোভার জন্য বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ম্যানেজার হিসেবেও কাজ করেছেন।
স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগীদের মধ্যে বিশ্বব্যাংক প্রথম সহায়তাকারী।
সেই তখন থেকে বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে ৩৭ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি অনুদান, সুদ-মুক্ত ও রেয়াতি ঋণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। বাংলাদেশে বর্তমানে সবচেয়ে বড় চলমান ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (আইডিএ) প্রোগ্রাম চালু রয়েছে এবং দেশে বর্তমানে ১৫ দশমিক সাত বিলিয়ন ডলারের মোট ৫৫টি প্রকল্প চলমান।
আরও পড়ুন: মন্দার ‘খুব কাছাকাছি’ বিশ্ব অর্থনীতি: বিশ্বব্যাংক প্রধান
২০৩৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশের জিডিপি ৪% কমতে পারে: বিশ্বব্যাংকের সমীক্ষা
ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করে ববি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
সহপাঠীর অকাল মৃত্যুর প্রতিবাদে ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের এ অবরোধের কারণে এরই মধ্যে মহাসড়কের দুইপ্রান্তে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা জানান, গত ৬ নভেম্বর ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের ফরিদপুরের ভাঙ্গার মাধবপুরে সাকুরা পরিবহনের বেপরোয়া একটি বাস গাছের সঙ্গে ধাক্কা দেয়। এতে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ৫ম বর্ষের শিক্ষার্থী ইসমাইল ইমন গুরুতর আহত হয়। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ফরিদপুর শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার উন্নতি না হলে তাকে বেসরকারি একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে আজ মঙ্গলবার দুপুরের দিকে তার মৃত্যু হয়।
শিক্ষার্থী আবু মাসুম বলেন, কুয়াকাটা-বরিশাল-ঢাকা রুটে চলাচলকারী সাকুরা পরিবহনের বেপরোয়া গতির কারণে প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হয়। কিন্তু আইনগত কার্যকর কোন ব্যবস্থা না নেয়ার কারণে তারা প্রতিবারই পার পেয়ে যায়। এ অবস্থায় আমরা ঘাতক চালকসহ পরিবহন সংশ্লিষ্ট যাদের গাফিলতিতে এ দুর্ঘটনা তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
আরও পড়ুন: বরিশালে অধ্যক্ষের অপসারণ দাবিতে শিক্ষার্থীদের মহাসড়ক অবরোধ
ঢাকার বাতাসের মানে মঙ্গলবার সকালেও উন্নতির দেখা মেলেনি
বায়ু দূষণ এখনও বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে একটি। মঙ্গলবার সকালেও ঢাকার বাতাসের মান ‘অস্বাস্থ্যকর’ অবস্থায় রয়েছে।
এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) অনুযায়ী সকাল ৮টা ৩৫ মিনিটে রাজধানী স্কোর ১৬৭ নিয়ে বিশ্বে দূষিত শহরের তালিকায় পঞ্চম স্থানে আছে। ভারতের দিল্লি, ভিয়েতনামের হ্যানয় ও পাকিস্তানের লাহোর যথাক্রমে একিউআই ৩০৯, ১৮৫ ও ১৮৫ স্কোর নিয়ে তালিকার প্রথম তিনটি স্থানে রয়েছে।
সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য বাতাসের একিউআই স্কোর ১০১ থেকে ২০০ হলে সে বাতাসকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ ধরা হয়। একিউআই স্কোর ২০১ থেকে ৩০০ এর মধ্যে থাকলে ‘খারাপ’ বলা হয় এবং ৩০১ থেকে ৪০০ এর স্কোর ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ বলে বিবেচিত হয়; যা বাসিন্দাদের জন্য গুরুতর স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করে।
বাংলাদেশে একিউআই নির্ধারণ করা হয় দূষণের পাঁচটি ধরনকে ভিত্তি করে- বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), এনও২,সিও,এসও২ ও ওজোন (ও৩)।
আরও পড়ুন: ঢাকার 'অস্বাস্থ্যকর' বাতাসের মানে উন্নতি নেই
ঢাকা দীর্ঘদিন ধরে বায়ু দূষণে ভুগছে। এর বাতাসের গুণমান সাধারণত শীতকালে অস্বাস্থ্যকর হয়ে যায় এবং বর্ষাকালে কিছুটা উন্নত হয়।
২০১৯ সালের মার্চ মাসে পরিবেশ অধিদপ্তর ও বিশ্বব্যাংকের একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ঢাকার বায়ু দূষণের তিনটি প্রধান উৎস হল, ইটভাটা, যানবাহনের ধোঁয়া ও নির্মাণ সাইটের ধুলো।
জাতিসংঘের তথ্যমতে, বিশ্বব্যাপী প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৯ জন দূষিত বাতাসে শ্বাস নেন এবং বায়ু দূষণের কারণে প্রতি বছর প্রধানত নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশে আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের অকাল মৃত্যু ঘটে।
আরও পড়ুন: বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় ঢাকা দ্বিতীয়
আজ সকালে ঢাকার 'অস্বাস্থ্যকর' বাতাসের মানে উন্নতি নেই
বিএনপি’র সমাবেশ শেষ, বরিশাল-ঢাকা রুটে লঞ্চ চলাচল শুরু
বিএনপি’র জনসমাবেশ শেষ হওয়ার পর বরিশাল-ঢাকা রুটে লঞ্চ চলাচল শুরু হয়েছে, সেই সঙ্গে ভোলা-বরিশাল রুটে স্পিডবোট চলাচলও করেছে। তবে অভ্যান্তরীণ রুটে এখনও লঞ্চ চলাচল শুরু হয়নি।
অপরদিকে বরিশাল কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল নথুল্লাবাদ থেকে অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার কোন বাসই রাতে চলবে না বলে জানা গেছে। তাই রবিবার সকাল থেকে অগ্রিম টিকেট বিক্রি করেছে দূরপাল্লার বাস কাউন্টারগুলো। এছাড়া নগরীতে থ্রি হুইলারসহ সকল ধরনের যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
বিআইডব্লিউটিএ বরিশালের নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরিদর্শক কবির হোসেন জানান, শুক্রবার থেকে বন্ধ থাকা অভ্যন্তরীণ রুটের লঞ্চগুলো আজও চলাচল করেনি। তবে আজ বরিশাল নদী বন্দর থেকে ঢাকার উদেশ্যে সুন্দরবন-১১, প্রিনেস আওলাদ ও পারাবত-১৮ লঞ্চ যাত্রী নিয়ে যথাসময় ছেড়ে যাবে।
আরও পড়ুন: বরিশাল-ঢাকা রুটের লঞ্চ চলাচল বন্ধ
লঞ্চ মালিক সমিতির সদস্য সাইফুল ইসলাম পিন্টু বলেন, আজ বরিশাল থেকে তিনটি লঞ্চ ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাবে। তবে তেমন যাত্রী নেই লঞ্চগুলোতে।
এদিকে বরিশাল ডিসি ঘাট থেকে স্পিডবোড পরিচালনার দায়িত্বে থাকা মো. তারেক জানান, বিকাল চারটার পরে ভোলা থেকে স্পিডবোট চলাচল স্বাভাবিক হওয়ায় তারাও নিয়ম অনুযায়ী বরিশাল থেকে বোট চালাচ্ছেন। বিকালে প্রচুর যাত্রী হয়েছে বলেও জানান তিনি।
অপরদিকে বরিশাল কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল নথুল্লাবাদ থেকে রাতে অভ্যান্তরীণ ও দূরপাল্লার কোন বাস ছেড়ে যাবে না বলে জানিয়েছেন বাস মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মাশরেক বাবলু। তিনি বলেন, আমাদের অল্টিমেটাম ছিল আগামীকাল রবিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত। তাই এর আগে বাস চলাচল সম্ভব নয়।
এদিকে বাস কাউন্টারগুলোর দায়িত্বে থাকা স্টাফরা জানান, অনেকেই ঢাকা যাওয়ার জন্য টার্মিনালে এসেছেন। তবে বাস চলাচল না করায় ফিরে যাচ্ছেন অনেকে। আবার অনেকে আগামীকাল সকালের অগ্রিম টিকেট ক্রয় করেছেন।
অপরদিকে বরিশাল-পটুয়াখালী মিনি বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাউছার হোসেন শিপন জানান, আমরা এ বিষয়ে রাতে বৈঠক করবো। আগামীকাল সকাল ৬টা পর্যন্ত বাস চলাচল বন্ধ রাখার আল্টিমেটাম দেয়া আছে। সেটা বাড়ানো হবে কিনা ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
যদিও নগর জুড়ে মাহিন্দ্রা-টেম্পু-সিএনজিসহ যান্ত্রিক থ্রি-হুইলার যানবাহনগুলো সন্ধ্যার পর থেকেই আগের নিয়মে চলাচল শুরু করেছে।
আরও পড়ুন: নৌ চলাচল বন্ধের পর এবার ভোলা-বরিশাল রুটে বাস ধর্মঘট
বরিশালে বিএনপির সমাবেশ: পরিবহন ধর্মঘটে চরম ভোগান্তিতে যাত্রীরা
বরিশাল-ঢাকা রুটের লঞ্চ চলাচল বন্ধ
যাত্রী সংকটের অভিযোগ জানিয়ে লঞ্চ মালিক সমিতি বরিশাল ও ঢাকা রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ করেছে। শুক্রবার বরিশাল ও ঢাকা প্রান্ত থেকে কোনো লঞ্চ ছাড়বে না বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন কীর্তনখোলা লঞ্চের মালিক মঞ্জুরুল আহসান ফেরদৌস।
তিনি জানান, শুক্রবার হওয়ায় যাত্রী নেই। তাই লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। যে যাত্রী পাওয়া যাবে তাতে লঞ্চের ব্যয় উঠবে না। আর্থিক ক্ষতি করে তো চালাবো না। একইভাবে ঢাকা থেকেও কোনো লঞ্চ ছেড়ে আসবে না।
আরও পড়ুন: শিমুলিয়ায় লঞ্চ চলাচল বন্ধ, ফেরি সচল
বিআইডব্লিউটিএর নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের পরিদর্শক কবির হোসেন জানান, বিকাল পর্যন্ত কোনো লঞ্চের কাউন্টার খুলেনি। ঢাকা যাত্রার জন্য যে প্রস্তুতি নেয়ার প্রয়োজন তাও এখন পর্যন্ত নেয়া হয়নি। লঞ্চ কেন যাবে না, কোনো মালিক তাদের জানায়নি। তাই তারাও জানেন না কেন লঞ্চ ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যাবে না।
বরিশাল নৌ-বন্দর কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, কোনো মালিক আমাদের জানায়নি লঞ্চ চলবে না। কিন্তু শুনতে পেয়েছি শুক্রবার বরিশাল ঘাট থেকে ঢাকার উদ্দেশে কোনো লঞ্চ ছেড়ে যাবে না। ঢাকায় খবর নিয়েছি। সেখান থেকেও বরিশালের উদ্দেশে কোনো লঞ্চ ছেড়ে আসবে না।
আরও পড়ুন: খুলনায় বাস-লঞ্চ চলাচল বন্ধের ২য় দিনে ভোগান্তিতে সাধারণ মানুষ
সুবলং চ্যানেলে তীব্র স্রোত: কাপ্তাই হ্রদে লঞ্চ চলাচল বন্ধ
ঢাকার 'অস্বাস্থ্যকর' বাতাসের মানে উন্নতি নেই
ঢাকার বাতাসের মান বুধবার সকালেও 'অস্বাস্থ্যকর' অবস্থায় রয়েছে। সকাল ৮টা ৪৫ মিনিটে এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) স্কোর ১৫৯ নিয়ে দূষিত শহরের তালিকায় ঢাকা ষষ্ট স্থানে আছে।
বিশেষ করে সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য একিউআই স্কোর ১০১ থেকে ২০০ হলে ‘অস্বাস্থ্যকর’ ধরা হয়।
পাকিস্তানের লাহোর, ভারতের দিল্লি ও আরব আমিরাতের দুবাই যথাক্রমে একিউআই ৩২০, ২৮৯ ও ১৮৩ স্কোর নিয়ে তালিকার প্রথম তিনটি স্থানে রয়েছে।
২০১ থেকে ৩০০ এর মধ্যে একিউআই স্কোর ‘খারাপ’ বলা হয়, যেখানে ৩০১ থেকে ৪০০ এর স্কোর ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ বলে বিবেচিত হয়, যা বাসিন্দাদের জন্য গুরুতর স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করে।
বাংলাদেশে একিউআই নির্ধারণ করা হয় দূষণের পাঁচটি ধরনকে ভিত্তি করে- বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), এনও২, সিও, এসও২ এবং ওজোন (ও৩)।
আরও পড়ুন: ঢাকার বাতাস এখনও 'অস্বাস্থ্যকর'
ঢাকা দীর্ঘদিন ধরে বায়ু দূষণে ভুগছে। এর বাতাসের গুণমান সাধারণত শীতকালে অস্বাস্থ্যকর হয়ে যায় এবং বর্ষাকালে কিছুটা উন্নত হয়।
২০১৯ সালের মার্চ মাসে পরিবেশ অধিদপ্তর ও বিশ্বব্যাংকের একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ঢাকার বায়ু দূষণের তিনটি প্রধান উৎস হল, ইটভাটা, যানবাহনের ধোঁয়া ও নির্মাণ সাইটের ধুলো।
জাতিসংঘের তথ্যমতে, বিশ্বব্যাপী প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৯ জন দূষিত বাতাসে শ্বাস নেন এবং বায়ু দূষণের কারণে প্রতি বছর প্রধানত নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশে আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের অকাল মৃত্যু ঘটে।
আরও পড়ুন: ঢাকার বাতাস ‘অস্বাস্থ্যকর’: একিআই
শীত ঘনিয়ে আসায় আজ সকালে ঢাকার বাতাস ‘অস্বাস্থ্যকর’
শীত ঘনিয়ে আসায় আজ সকালে ঢাকার বাতাস ‘অস্বাস্থ্যকর’
ঢাকার বাতাসের মান রবিবার সকালেও 'অস্বাস্থ্যকর' অবস্থায় রয়েছে। সকাল ৮টায় এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) স্কোর ১৬৮ নিয়ে দূষিত শহরের তালিকায় ঢাকা পঞ্চম স্থানে আছে।
বিশেষ করে সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য একিউআই স্কোর ১০১ থেকে ২০০ হলে ‘অস্বাস্থ্যকর’ ধরা হয়।
শীতের আগমনের সঙ্গে সঙ্গে নির্মাণ কাজ, সড়ক, ইটভাটা ও অন্যান্য উৎস থেকে দূষক কণার ব্যাপক নিঃসরণের কারণে শহরের বায়ুর গুণমান তীব্রভাবে খারাপ হতে শুরু করে।
পাকিস্তানের লাহোর, ভারতের দিল্লি ও আরব আমিরাতের দুবাই যথাক্রমে একিউআই ৩৩৭, ২৫৬ ও ১৭২ স্কোর নিয়ে তালিকার প্রথম তিনটি স্থানে রয়েছে।
আরও পড়ুন: ঢাকার বাতাসের মান ‘অস্বাস্থ্যকর’
২০১ থেকে ৩০০ এর মধ্যে একিউআই স্কোর ‘খারাপ’ বলা হয়, যেখানে ৩০১ থেকে ৪০০ এর স্কোর ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ বলে বিবেচিত হয়, যা বাসিন্দাদের জন্য গুরুতর স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করে।
প্রতিদিনের বাতাসের মান নিয়ে তৈরি করা একিউআই সূচক একটি নির্দিষ্ট শহরের বাতাস কতটুকু নির্মল বা দূষিত সে সম্পর্কে মানুষকে তথ্য দেয় এবং তাদের জন্য কোনো ধরনের স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি হতে পারে তা জানায়।
আরও পড়ুন: ঢাকার বাতাসের মান এখনও 'অস্বাস্থ্যকর'
ঢাকার বাতাস ‘সংবেদনশীলদের জন্য অস্বাস্থ্যকর’
ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে বিপুল জনসমাগম
আওয়ামী লীগের ঢাকা জেলা শাখার ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিলে ঢাকা ও আশপাশের কয়েক হাজার দলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থকরা অংশ নিয়েছেন।
শনিবার ঢাকার শেরেবাংলা নগর পুরাতন বাণিজ্য মেলার মাঠে এ কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। এদিন দুপুর ১২টা থেকে অনুষ্ঠানস্থলে নেতাকর্মীরা আসতে শুরু করে। দুপুর ২টার মধ্যে পূর্ণ হয়ে যায় মাঠ।
অনুষ্ঠানে বিপুল কাউন্সিলরের উপস্থিতি দেখা যায় এবং দলটির নেতাকর্মীদের রঙিন শার্ট পরে সভায় অংশ নিতে দেখা যায়। একই সঙ্গে সিনিয়র নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে ঢাকা জেলার পদপ্রত্যাশী নেতাদের বড় বড় মিছিল নিয়ে আসতে দেখা গেছে।
এতে উৎসবমুখর পরিবেশ ও আয়োজন উপভোগ করছেন বলে জানিয়েছেন অনেকে। ঢাকা জেলা ৫টি উপজেলা নিয়ে গঠিত: সাভার, ধামরাই,দোহার,নবাবগঞ্জ ও কেরানীগঞ্জ।
আরও পড়ুন: ২০০১ সালে হত্যাযজ্ঞ চালাতে জঙ্গিদের ভাড়া করেছিল বিএনপি-জামায়াত সরকার: সজীব ওয়াজেদ