কিশোরগঞ্জ
নৌকাবাইচ দেখতে গিয়ে নিখোঁজ: চাচা-ভাতিজাসহ ৩ জনের লাশ উদ্ধার
নৌকাবাইচ দেখতে গিয়ে কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে সাহেবচরে নৌকাডুবিতে চাচা-ভাতিজাসহ নিখোঁজ তিনজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। বুধবার সকাল ৬টার দিকে উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদের সেতুর কাছ থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস।
আরও পড়ুন: গড়াই নদীতে নৌকাডুবি, নিখোঁজ ১
নিহতরা হলেন-কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার সিদলা ইউনিয়নের তারাপাশা গ্রামের কিতাব আলীর ছেলে শামীম মিয়া (৩০), ময়মনসিংহের পাগলা থানার চরশাখচুড়া গ্রামের আব্দুস সামাদের ছেলে মো. সিফাত (১৬) ও একই গ্রামের মনির হোসেনের ছেলে নিহত সিফাতের ভাতিজা মো.ইয়াছিন (৭)।
আরও পড়ুন: বঙ্গোপসাগরে ট্রলারডুবি: ৩৪ জেলে নিখোঁজ
হোসেনপুর থানার পরিদর্শক আসাদুজ্জামান টিটু জানান, বুধবার সকালে ব্রিজের কাছে দু’জনের লাশ ভেসে ওঠলে স্থানীয়রা দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস গিয়ে লাশ উদ্ধার করা হয়।
আরও পড়ুন: সিলেটে বাল্কহেডের ধাক্কায় নৌকাডুবি: স্ত্রীর মৃত্যু, স্বামী নিখোঁজ
গত ১৯ সেপ্টেমর বিকালে হোসেনপুরের সিদলা ইউনিয়নের সাহেবেরচর পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের উদ্যোগে এক নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। সেখানে নৌকাডুবি ঘটনা ঘটলে তারা নিখোঁজ হন।
কিশোরগঞ্জে ছুরিকাঘাতে যুবক নিহত
কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলায় ছুরিকাঘাতে এক যুবক নিহত হয়েছে। বুধবার দুপুরে উপজেলার মহিনন্দ ইউনিয়নের চংশোলাকিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত শফিকুল ইসলাম (৩২) চংশোলাকিয়া এলাকার আব্দুল হাকিমের ছেলে।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় এসএসসি পরীক্ষার্থী নিহত
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শফিকুল ও রাজনের মধ্যে পূর্ব বিরোধ ছিল। বিরোধের জেরে বুধবার বাদে শোলাকিয়া আতকাপাড়া গ্রামের মৃত সাইফুল ইসলামের ছেলে রাজন শফিকুলকে ছুরিকাঘাত করলে ঘটনাস্থলেই সে মারা যায়। ঘটনার পরপরই জনতা ঘাতক রাজনকে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে।
কিশোরগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ দাউদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জে ভটভটি-অটোভ্যান সংঘর্ষে নিহত ১
কুষ্টিয়ায় পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৪
কিশোরগঞ্জে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে নিহত ৩
কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলায় শুক্রবার বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে দুই চাচাতো ভাইসহ তিনজন নিহত ও তিনজন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। শুক্রবার দুপুরে ভৈরব উপজেলার পৌর শহরের ভৈরবপুর উত্তরপাড়ায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- উপজেলার দেব লাল (১৫), তার চাচাতো ভাই মিলন লাল (৩০) ও সুনামগঞ্জের মোবারক হোসেন (২৫)। আহতরা হলেন আব্দুল্লাহ, সানি ও আকাশ।
আরও পড়ুন: কুমিল্লায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে একই পরিবারের ৩ জন নিহত
ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. গোলাম মোস্তফা জানান, দুপুরে উপজেলার পৌরসভার একটি সড়কে বৈদ্যুতিক খুঁটি সরানোর সময় ছয়জন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন।
ওসি বলেন, পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তিনজনকে মৃত ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: গোয়ালন্দে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে শ্রমিকের মৃত্যু
গোলাপগঞ্জে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু
কিশোরগঞ্জে উন্নয়ন প্রকল্প পরিদর্শন করলেন রাষ্ট্রপতি
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ মঙ্গলবার কিশোরগঞ্জের মিঠামইন সেনানিবাসের নির্মাণ কাজের অগ্রগতি প্রত্যক্ষ করেছেন।
জেলার মিঠামইন উপজেলার প্রকল্প এলাকায় রাষ্ট্রপতির আগমনে ইঞ্জিনিয়ার-ইন-চীফ (ই-এন-সি) মেজর জেনারেল মো. জুবায়ের সালেহীনসহ কয়েকজন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা রাষ্ট্রপতিকে স্বাগত জানান।
পরে নির্মাণকাজ নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা হয়। সেখানে বটের চারা রোপণ করেন রাষ্ট্রপতি।
রাষ্ট্রপতি ও সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক হামিদ ২৭৫ একর সেনানিবাস এলাকা এবং এর সংলগ্ন আব্দুল হামিদ পল্লী প্রত্যক্ষ করেন।
আরও পড়ুন:ফজলে রাব্বির মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের শোক
এর আগে রাষ্ট্রপতি তার পৈত্রিক বাসভবনের সামনে ‘রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ফাউন্ডেশন’ নির্মাণের কাজ পরিদর্শন করেন।
স্থানীয় সংসদ সদস্যরা হলেন- আফজাল হোসেন ও রেজওয়ান আহমেদ তৌফিক, জেলা পরিষদের প্রশাসক মো. জিল্লুর রহমান, মিঠামইন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও রাষ্ট্রপতির বোন আছিয়া আলম, রাষ্ট্রপতির সম্পাদক সম্পদ বড়ুয়া, সামরিক সচিব এসএম সালাহ উদ্দিন ইসলাম, প্রেস সেক্রেটারি মো. জয়নাল আবেদীন, সেক্রেটারি (এমপি) মো. ওয়াহিদুল ইসলামসহ ঊর্ধ্বতন বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তারা তার সঙ্গে ছিলেন।
রাষ্ট্রপতি তার নিজ জেলায় চলমান কিছু উন্নয়ন প্রকল্প প্রত্যক্ষ করতে এবং স্থানীয় প্রতিনিধি ও পেশাজীবীদের সঙ্গে মতবিনিময় করতে চারদিনের সফরে গত ২২ আগস্ট কিশোরগঞ্জে যান। বৃহস্পতিবার তার ঢাকায় ফেরার কথা রয়েছে।
আরও পড়ুন:রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের ৭৯তম জন্মদিন উদযাপিত
ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়ার মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক
কিশোরগঞ্জে বিদ্যুস্পৃষ্টে ২ সহোদরের মৃত্যু
কিশোরগঞ্জের হাওরে জাতীয় শোক দিবসে দোকানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করতে গিয়ে বিদ্যুস্পৃষ্টে দুই সহোদরের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার সকাল সাড়ে ৮টায় উপজেলার ইটনা খাদ্য গুদামের সংলগ্ন সড়কে এই ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- ইটনা সদর ইউনিয়নের নগরহাটি গ্রামের মৃত নেপাল কর্ম্মকারের ছেলে বিজয় কর্মকার (২৫) ও দুর্জয় কর্মকার (১৮)।
আরও পড়ুন: বরিশালে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে বাস চালকের সহকারীর মৃত্যু
ইটনা থানা পরিদর্শক (তদন্ত) আহসান হাবিব জানান, ইটনা খাদ্য গুদামের সংলগ্ন সড়কে নিজেদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে স্টিলের পাইপে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করতে গিয়ে বৈদ্যুতিক খুঁটিতে জড়িয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন বড় ভাই বিজয়। এসময় বড় ভাইকে ছাড়াতে গিয়ে বিদ্যুতায়িত হন ছোট ভাই দূর্জয় কর্ম্মকার। পরে স্থানীয়রা দুই সহোদরকে উদ্ধার করে ইটনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
কিশোরগঞ্জে হাওরে গোসল করতে নেমে পর্যটকের মৃত্যু
কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলায় হাওরে গোসল করতে নেমে এক পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আরও দুজনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।
শুক্রবার সকাল ৯টায় উপজেলার কুর্শা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: হাওরে নিখোঁজ পল্লী বিদ্যুৎ কর্মকর্তার লাশ উদ্ধার
নিহত আকাশ (২৬) ঢাকার বাসিন্দা। এছাড়া উদ্ধার হওয়া তুহিন (২৫) কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরের মোহাম্মদ আলীর ছেলে এবং হাসিবের (২৬) গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালী জেলায়। তারা উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
কিশোরগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার মো. আবুজর গিফারী বলেন, হাওরে গোসল করতে নেমে তিন পর্যটক নিখোঁজ হন। পরে ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় একজনকে মৃত ও দুজনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়।
ভৈরবে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে নিহত ১
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে বৈদ্যুতিক পাখার সঙ্গে বিদ্যুতায়িত হয়ে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে উপজেলার পৌর শহরের তাতারকান্দি মহল্লায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত তুহিন (১৮) পৌর শহরের কমলপুর আমলাপাড়া মহল্লার মরম আলীর ছেলে।
ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, মঙ্গলবার সকালে তাতারকান্দি মহল্লায় নানাবাড়ি গিয়ে মেঝেতে শোয়ার জন্য ছোট টেবিল ফ্যান (বৈদ্যুতিক পাখা) চালাতে যান তুহিন। এ সময় ফ্যানের পাখার সঙ্গে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন তিনি। তার নানী হনুফা বেগম তাৎক্ষণিক সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করেন। পরে তুহিনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে যুবক নিহত
কর্ণফুলীতে জাহাজে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ইঞ্জিন মিস্ত্রির মৃত্যু
শোলাকিয়ায় ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত
কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদ্গাহ মাঠে রবিবার পবিত্র ঈদুল আজহার জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এদিন সকাল থেকে মুসল্লিরা ঈদের নামাজ আদায় করতে দলে দলে মাঠে আসতে থাকেন। সকাল ৯টায় ঈদের জামাত শুরু হয়। এবারের ১৯৫তম ঈদ জামাতে ইমামতি করেন মারকাজ মসজিদের ইমাম মাওলানা হিফজুর রহমান খান।
ঈদুল আজহা উপলক্ষে শোলাকিয়া এক্সপ্রেস নামে দুটি বিশেষ ট্রেন চালু করা হয়।
নামাজ শেষে মুসলিম উম্মাহ ও বন্যায় কবলিত মানুষের কল্যাণে বিশেষ দোয়া করা হয়।
আারও পড়ুন: ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে সারাদেশে ঈদুল আজহা উদযাপিত হচ্ছে
জেলা পুলিশ সুপার মো. মাশরুকুর রহমান খালেদ বলেন, ঈদ জামাত ঘিরে মুসল্লিদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তায় চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়। বিপুল সংখ্যক পুলিশ, র্যাব, এপিবিএন ও বিজিবি সদস্য মোতায়েন করা হয়। প্রত্যেক মুসল্লিকে তল্লাশির মাধ্যমে ঈদগাহে প্রবেশ করানো হয়। আর্চওয়ে, মেটাল ডিটেক্টর, ড্রোন ক্যামেরা ও সিসি ক্যামেরা ব্যবহার করা হয়। এছাড়া সাদা পোশাকে নজরদারি করেছেন বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা।
জেলা প্রশাসক ও শোলাকিয়া ঈদগাহ পরিচালনা কমিটি সভাপতি মোহাম্মদ শামীম আলম জানান, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে শোলাকিয়ায় ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ভৈরবে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে একজনের মৃত্যু
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার সন্ধ্যায় উপজেলার শ্রীনগর ইউনিয়নের জাফরনগর এলাকার মাধবপুর গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তি হলেন- আল-আমিন।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎস্পৃষ্টে নারায়ণগঞ্জে ৩ জায়ের মৃত্যু
ভৈরব থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. গোলাম মোস্তফা জানান, বাড়িতে বিদ্যুতের সংযোগ না থাকায় আল-আমিন বাড়ির সামনের বিদ্যুতের খুঁটির তারে বাঁশ দিয়ে সংযোগ দিতে যায়। এ সময় হঠাৎ করে খুঁটির একটি মূল তার ছিঁড়ে তার ওপর পড়লে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে এবং কোনো অভিযোগ পেলে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেয়া হবে বলেও জানান ওসি।
বন্যা: কিশোরগঞ্জে পানিবন্দি লাখো মানুষের দুর্ভোগ চরমে
কিশোরগঞ্জের হাওরাঞ্চলসহ সকল নদনদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার কাছাকাছি দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় লক্ষাধিক মানুষ। মঙ্গলবার জেলার ১৩ উপজেলার মধ্যে ৯টি উপজেলার ৬২ ইউনিয়নের ৪৭৩টি গ্রাম প্লাবিত। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১২ হাজার ৭৪৮ পরিবার।
বন্যার পানি ঢুকছে। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন ইটনা, অষ্টগ্রাম, তাড়াইল, নিকলী, ইটনা, মিঠামইন, অষ্টগ্রাম, করিমগঞ্জ, বাজিতপুর ও ভৈরব উপজেলার মানুষ।
অষ্টগ্রামের আটটি, মিঠামইনের সাতটি, করিমগঞ্জের আটটি, নিকলীর ছয়টি, কটিয়াদীর চারটি, বাজিতপুরের আটটি ও ভৈরবের পাঁচটি ইউনিয়ন বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। স্কুল কলেজ, বসতবাড়ি, উপাসনালয় ও হাট-বাজার প্লাবিত। তিন উপজেলার ২০টি গ্রামে নিরাপত্তার জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে।
বাড়িঘর ছেড়ে অনেক পরিবার নৌকা ও উঁচু স্থানে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। বসতবাড়িতে পানি উঠে যাওয়ায় শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সঙ্কট দেখা দিয়েছে। নদ-নদীতে প্রবল বেগে পানি এখনও বাড়ছে। এ অবস্থায় মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে ছুটে যাচ্ছেন। পানি না কমলে নতুন করে আরও ৫০টি গ্রাম প্লাবিত হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে।
গত কয়েক দিনের ভারি বর্ষণে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। গবাদিপশু খাদ্য ও আশ্রয় সংকটে রয়েছে। দুর্গত এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত রাখার পাশাপাশি দুর্গতদের আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্যা প্লাবিত গ্রামে চাল বরাদ্দ করে ত্রাণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন: লালমনিরহাটে বানভাসি মানুষের ঘরবাড়ি বিলীন, বাড়ছে দুর্ভোগ
পাউবো সুত্র জানায়, ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমার ১১.৫২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, বিশেষ করে মেঘনা নদীর পানি ভৈরবে বিপদ সীমার ৫.৮০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিনি বলেন, হাওরের পানি কালনী ঘোড়াউত্রা হয়ে মেঘনা নদীতে ভৈরব সেতু দিয়ে নেমে যাবার কথা। মেঘনা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং বিপরীতমুখী প্রচন্ড স্রোতের কারণে পানি নামতে না পেরে কিশোরগঞ্জের নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা চলতে থাকলে বন্যার সার্বিক অবস্থা আরও অবনতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, জেলায় বন্যায় এক হাজার ৫০৭ বর্গ কিলোমিটার এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ৬২ ইউনিয়নে মোট ১৫৪ আশ্রয়কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। মোট ১২ হাজার ৭৪৮ জন মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে নেয়া হয়েছে। দুই হাজার ৪৭ গবাদি পশুকে আশ্রয় কেন্দ্রে আনা হয়েছে।
ইটনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাফিসা আক্তার বলেন, উপজেলার সিংহভাগ এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়েছে। ফলে তাদের খাদ্য সংকট ও বিশুদ্ধ খাবার পানির অভাব রয়েছে।
বানভাসি মানুষের জন্য ইতোমধ্যে সরকারিভাবে এখন পর্যন্ত বরাদ্দ দেয়া হয়েছে দুই হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার, ১৪৪ মেট্রিক টন চাল ও নগদ চার লাখ ৮০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
নিকলী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আবু হাসান জানান, ইতোমধ্যে নতুন করে উপজেলার কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ছাতিরচর, সিংপুর, দামপাড়া ইউনিয়ন বেশি ক্ষতিগ্রস্ত।
তিনি আরও বলেন, সিলেট ও সুনামগঞ্জসহ গোটা হাওরে যেভাবে বৃষ্টি হচ্ছে এভাবে বৃষ্টি হলে নিকলী উপজেলার অধিকাংশ এলাকা তলিয়ে যাবে।
কিশোরগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মতিউর রহমান জানান, কিশোরগঞ্জ হাওরের ওপর প্রবাহিত বিভিন্ন নদ-নদীর পানি গত ২৪ ঘণ্টায় এক ফুট বেড়েছে। বিশেষ করে কালনী-কুশিয়ারার পানি অপরিবর্তিত রয়েছে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম বলেন, বন্যা পরিস্থিতি সরেজমিনে পরিদর্শন করতে উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে হাওর অঞ্চল ঘুরে দেখেছি।
তিনি বলেন, অনেক এলাকায় পানি প্রবেশ করেছে। সেখানকার লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়েছে। অবস্থা বুঝে এবং গুরুত্ব বিবেচনা করে এসব ত্রাণ সামগ্রী বিতরণের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: সিলেট বিভাগে বন্যায় ৭ দিনে ২২ জনের মৃত্যু: বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক