নেত্রকোণা
খালিয়াজুরীতে বজ্রপাতে স্কুলছাত্রসহ দুই জনের মৃত্যু
নেত্রকোণার খালিয়াজুরীতে বজ্রপাতে স্কুলছাত্রসহ দুই জনের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (১৮ মে) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে উপজেলার সাতগাঁও হাওরে ও রানিচাপুর গ্রামের সামনে বজ্রপাতের এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলো-স্কুলছাত্র মামুন মিয়া (১৪)ও কৃষি শ্রমিক জাকারুল মিয়া (৩৪)। মামুন চাকুয়া ইউনিয়নের রানিচাপুর গ্রামের মাসুদ মিয়ার ছেলে। বজ্রপাতে আহত হওয়ার পর তাকে মোহনগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হলে রাত সাড়ে আটটার দিকে তার মৃত্যু হয়।
অন্যদিকে জাকারুল আটপাড়া উপজেলার ইকরহাটিয়া গ্রামের আক্কেল আলীর ছেলে। তিনি কিছুদিন ধরে মেন্দিপুর ইউনিয়নের খলাপাড়া গ্রামে তার শশুর আব্দুল জলিলের বাড়িতে থেকে ধান কাটার শ্রমিক হিসেবে কাজ করছিলেন।
খালিয়াজুরী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মজিবুর রহমান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন: মাগুরায় বজ্রপাতে কৃষকের মৃত্যু
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে ওসি জানান, জাকারুলসহ কয়েক শ্রমিক সাতগাঁও হাওরে ধান কাটছিলেন। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে তারা মাথায় করে ধানের বোঝা নিচ্ছিলেন। এ সময় হঠাৎ বজ্রপাতে তিনি হাওরেই মারা যান।
অন্যদিকে কিশোর মামুন বিকেলে রানিচাপুর গ্রামের সামনের মাঠে শুকাতে দেয়া ধান তোলার কাজ করছিলেন। এ সময় হঠাৎ বজ্রপাতে গুরুতর আহত হয়। পরে স্বজনরা আশঙ্কাজানক অবস্থায় তাকে নিয়ে মোহনগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত সাড়ে আটটার দিকে তার মৃত্যু হয়।
খালিয়াজুরী উপজেলার ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইয়াসিন খন্দকার বলেন, নিহতের পরিবারকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১৫ হাজার টাকা করে দেয়ার ব্যাবস্থা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: নওগাঁয় বজ্রপাতে ২ ধান কাটা শ্রমিকের মৃত্যু
মেহেরপুরে বজ্রপাতে এক ব্যক্তির মৃত্যু
নেত্রকোণায় জমি নিয়ে বিরোধে দু’পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ১
নেত্রকোণার পূর্বধলায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষের শাবলের আঘাত এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী, ভাই ও বোনসহ চার জন আহত হয়েছে। বুধবার দুপুরে উপজেলার শিমুলকান্দি কুরপার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত বছির উদ্দিন (৪৫) একই গ্রামের পশর আলীর ছেলে।
আহতরা হলেন- নিহতের স্ত্রী হুছনে আরা, দুই ভাই রব্বানী ও আব্দুস সালাম এবং বোন রাহিমা আক্তার।
আরও পড়ুন: সালথায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ফের সংঘর্ষ: নিহত ১
স্থানীয় ইউপি মেম্বার আবুল কালাম জানান, বছির উদ্দিনের সঙ্গে একই গ্রামের চান শেখ ও মৌজা আলীর দীর্ঘদিন ধরে জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এর জের ধরে বুধবার দুপুরে দুই পক্ষের সংঘর্ষ শুরু হয়। এক পর্যায়ে প্রতিপক্ষের লোকজন সংঘবদ্ধ হয়ে শাবল দিয়ে বছির উদ্দিনসহ তার স্বজনদের আঘাত করে। এতে তারা গুরুতর আহত হন।
তিনি জানান, স্থানীয়রা বছির উদ্দিনকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। গুরুতর আহত বছির উদ্দিনের স্ত্রীকে নেত্রকোনা জেলা সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসক দিয়ে পরে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আহত অন্যরা নেত্রকোণা জেলা হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় সংঘর্ষে ৪ জন মৃত্যুর ঘটনায় দুই মামলা
নেত্রকোণা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোর্শেদা খানম জানান, ঘটনাটি শুনেছি। কাউকে আটক করা হয়নি এখনও। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
হাওরে পানি বাড়ছে, আতঙ্কে কাঁচা ধান কাটছে কৃষক
ভারতের মেঘালয় রাজ্যের চেরাপুঞ্জি থেকে নেমে আসা ঢলে নেত্রকোণার হাওরাঞ্চল খালিয়াজুরীর ধনু নদীর পানি বেড়েই চলছে। এই অবস্থায় নিরুপায় হয়ে নিম্নাঞ্চলের হাওরগুলোতে ইতোমধ্যে আধাঁপাকা ও কাঁচা ধান কাটতে শুরু করেছে আতঙ্কিত কৃষকেরা।
সোমবার দুপুরে নেত্রকোণা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী এম এল সৈকত বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতের মেঘালয় প্রদেশের চেরাপুঞ্জিতে ১৫২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এ বৃষ্টির পানি বাংলাদেশের সুনামগঞ্জের যাদুকাটা ও সুরমা নদী দিয়ে নেমে খালিয়াজুরী পয়েন্টে ধনু নদীর পানি বেড়েছে ১০ সেন্টিমিটার বৃদ্ধির পেয়েছে।
সোমবার দুপুর ১২টার দিকে পরিমাপ করে দেখা গেছে যে ধনু নদীর পানি বিপদসীমার মাত্র ৫৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদ-নদীর পানি বৃদ্ধির কারণে হাওরাঞ্চলের বোরো চাষিদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। আর তাই নিম্নাঞ্চলের হাওরগুলোতে কাঁচা ধান কাটার হিড়িক পড়ে গেছে।
সরজমিনে দেখা গেছে, অনেকে পানিতে ডুবে যাওয়া কাঁচা ধান কেটে কিছু পরিমাণ হলেও ঘরে তোলার চেষ্টা করছেন।
আরও পড়ুন: সিলেটে ৪০০ বিঘা বোরো খেত প্লাবিত
খালিয়াজুরী সদরের পুরানহাটি গ্রামের সুজন মিয়া ও লক্ষীপুর গ্রামের কৃষক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘এই জমিগুলোর ধান পাকতে আরও ১০-১৫ দিন দরকার ছিল। তবুও নিরূপায়ে কাটছেন যাতে করে অন্তত গরুর খাবারটা সংগ্রহ করার আশায়।
নেত্রকোণায় রেস্তোরাঁয় শিশু কর্মচারীকে পিটিয়ে হত্যা, আটক ১
নেত্রকোণায় একটি রেস্তোরাঁয় এক শিশু কর্মচারীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে অপর এক শিশু কর্মচারীর বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার রাতে জেলা শহরের বড় বাজার এলাকায় সালতি নামক রেস্তোরাঁয় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত শিশু ইসমাইল (১৪) সদর উপজেলার রৌহা ইউনিয়নের ছোটগাড়া গ্রামের আব্দুল বারেকের ছেলে।
এ ঘটনায় আল মামুন নামে অপর এক কর্মচারীকে আটক করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: সাবেক স্বামীকে পিটিয়ে হত্যা, স্ত্রী ও তার বর্তমান স্বামী আটক
রেস্তোরাঁ কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয়রা জানায়, আবদুল বারেকের স্ত্রী কনা ও ছেলে ইসমাইল সালতি দীর্ঘদিন ধরে রেস্তোরাঁয় কাজ করেন। মঙ্গলবার কাজ শেষে মা বাড়ি চলে যান। ছেলে ইসমাইল কাজ শেষে হোটেলেই থেকে যায়। রাত আনুমানিক পৌনে ৯টার দিকে ওই হোটেলের কর্মচারী আল মামুনের সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে ইসমাইলকে মারপিট করে ও লাথি মেরে সিঁড়ি থেকে ফেলে দেয় আল মামুন। এতে ইসমাইল অজ্ঞান হয়ে যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে নেত্রকোণা আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
নেত্রকোণা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তদন্ত সোহেল রানা জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে একজনকে আটক করা হয়েছে। নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নেত্রকোণা আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে নেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: নরসিংদীতে যুবককে ৪ দফা পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ
দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা তৈলাক্ত বাঁশ আরোহণের মতো: দীপু মনি
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, তৈলাক্ত বাঁশ বেয়ে বানরের উঠা নামার গল্পের মতো চলছে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা।
তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাসনামলে এ দেশের শিক্ষার মান ভালো ছিল। পরবর্তীতে অন্যান্য সরকারের শাসনামলে শিক্ষার মান নিচে নেমে এসেছে। তারপর আবার যখন আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলো তখন শিক্ষার মান আবার বাড়তে শুরু হলো।’
বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ৮টার দিকে নেত্রকোণার মোহনগঞ্জ উপজেলার আদর্শ নগর এলাকায় শহীদ স্মৃতি মহাবিদ্যালয়ে 'বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা দর্শন' শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন ।
আরও পড়ুন: আগামী বছর থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাপ্তাহিক ছুটি দু’দিন: শিক্ষামন্ত্রী
দীপু মনি বলেন, দেশ গড়ার প্রথম হাতিয়ার হলো শিক্ষা। শিক্ষায় বিনিয়োগ শ্রেষ্ঠ বিনিয়োগ।
তিনি বলেন, আগামীর শিক্ষায় নতুন কারিকুলাম আসবে। মুখস্থ বিদ্যা পড়িয়ে কেরানি বানানোর শিক্ষা ব্যবস্থা আর থাকবে না। মুখস্থ শিখে বাংলাদেশে এত বেশি অনার্স, মাস্টার্স হয়েছে যা বিশ্বের অন্য কোথায়ও নেই। এমন শিক্ষা খুব একটা জীবনমুখী শিক্ষা নয়। শিক্ষা কার্যক্রম ঢেলে সাজানো হবে। আগামী দিনে আসবে বিজ্ঞান ও কর্মমূখী উন্নত মানের শিক্ষা ব্যবস্থা।
মন্ত্রী বলেন, নতুন শিক্ষা ব্যবস্থায় পরীক্ষার চাপ কমিয়ে দেয়া হবে। প্রতিদিনের শিক্ষায় প্রতিদিনই সহজ পদ্ধতির মূল্যায়ন থাকবে। শিক্ষা হবে শিক্ষার্থীদের জন্য আনন্দময়।
আরও পড়ুন: ২২ ফেব্রুয়ারি খুলছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান: শিক্ষামন্ত্রী
বাংলাদেশ বিমান পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান ও প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব সাজ্জাদুল হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মাঝে সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আসরাফ আলী খান খসরু এমপি, স্থানীয় সংসদ সদস্য রেবেকা মমিন, সংরক্ষিত আসনের এমপি হাবিবা রহমান খান শেফালী, শেখ হাসিনা বিশ্ব বিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. রফিকউল্লাহ খান, রাজনৈতিক বিশ্লেষক সুভাষ সিংহ রায়, জেলা প্রশাসক কাজি মো. আবদুর রহমান ও কলেজ অধ্যক্ষ জীবন চন্দ্র সরকার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
নেত্রকোণায় ‘চোরের লাঠির আঘাতে’ ব্যবসায়ীর মৃত্যু
নেত্রকোণার দুর্গাপুরে দোকানে চুরি করতে আসা যুবকের লাঠির আঘাতে এক ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়েছে। রবিবার দিবাগত রাতে উপজেলার মধ্যম বাগান গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
নিহত হেকমত আলী উপজেলার সদর ইউনিয়নের মধ্যম বাগান এলাকার মৃত মেহের আলীর ছেলে ও ডিজেল ব্যবসায়ী।
অভিযুক্ত মাসুদ মিয়া (২০) উপজেলার চকলেংগুরা এলাকার জালাল উদ্দিনের ছেলে।
আরও পড়ুন: সিলেটে ছাদ থেকে পড়ে ব্যবসায়ীর মৃত্যু
স্থানীয় ইউপি সদস্য হযরত আলী জানান, নিহত হেকমত আলী সারা দিন ব্যবসা পরিচালনা করে রাতে দোকানেই থাকতেন। রবিবার মধ্যরাতে শাহীন তার ভেকুর জন্য ডিজেল কিনতে আসলে দোকানের দরজায় কড়া নাড়েন। সাড়াশব্দ না পেয়ে শাহীন দরজা ধাক্কা দিয়ে ভেতরে ঢুকতেই মাসুদ তাকেও আঘাত করে পালিয়ে যায়। পরে শাহীনের চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে হেকমত আলীকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের ছেলে মাহবুবের অভিযোগ, মাসুদ নামে এক ছেলে দোকানে ঢুকে তার বাবাকে হত্যা করে। তার ধারণা মাসুদ দোকানে এসে হয়তোবা টাকা-পয়সা লুট করতে চেয়েছিল।
আরও পড়ুন: মহম্মদপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ব্যবসায়ীর মৃত্যু
দুর্গাপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মীর মাহবুবুর রহমান জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে চুরি করতে এসে ব্যবসায়ীকে লাঠি দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। লাশের উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নেত্রকোণা আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হবে। অভিযুক্ত মাসুদকে ধরতে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
সাবেক রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ আর নেই
সাবেক রাষ্ট্রপতি বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ মারা গেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯২ বছর।
সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল অফিসার মোহাম্মদ সাইফুর রহমান জানান, শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
তিনি বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন জটিলতা নিয়ে ফেব্রুয়ারি থেকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
মৃত্যুকালে তিনি দুই ছেলে ও দুই মেয়ে রেখে গেছেন।
১৯৩০ সালে নেত্রকোণায় জন্মগ্রহণ করা সাহাবুদ্দীন আহমদ ১৯৯০ থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৯১ সালের ফেব্রুয়ারিতে অরাজনৈতিক লোকদের নিয়ে একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করেন এবং দেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু সাধারণ নির্বাচনের আয়োজন করেন।
আরও পড়ুন: সিলেটের সাবেক এমপি সৈয়দ মকবুল হোসেন আর নেই
১৯৯৬ সালের ২৩ জুলাই তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের মনোনয়ন নিয়ে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন এবং ২০০১ সালে অবসর গ্রহণ করেন।
বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আরও পড়ুন: ‘ছুটির ঘণ্টা’ সিনেমার পরিচালক আজিজুর রহমান আর নেই
শনিবার এক শোকবার্তায় তিনি মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
এছাড়া তার মৃত্যুতে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীও গভীর শোক প্রকাশ করছেন। তিনি মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন।
নেত্রকোণায় প্রতিপক্ষের লাঠির আঘাতে মাদরাসা ছাত্রের মৃত্যু
নেত্রকোণার খালিয়াজুরীতে প্রতিপক্ষের লাঠির আঘাতে রিয়াদ মিয়া (১৩) নামে এক মাদরাসা ছাত্র মারা গেছে। রবিবার সকালে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়।
রিয়াদ উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের বয়রা গ্রামের ফজুল হকের ছেলে এবং পাঁচহাট গ্রামের একটি মাদরাসার শিক্ষার্থী।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে খালিয়াজুরী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রিয়াজুল হক জানান, শনিবার দুপুরে গ্রামের রাস্তায় বাইসাইকেল চালিয়ে রিয়াদ পাশের একটি ট্রলিকে অতিক্রম করে। এসময় একই গ্রামের মিরাজ আলীর ছেলে ট্রলি চালক রামিম মিয়া (১৮) রিয়াদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়ায়। এক পর্যায়ে রামিম লাঠি দিয়ে রিয়াদের ঘাড়ে আঘাত করলে সে গুরুতর আহত হয়।
তিনি আরও জানান, স্বজনরা রিয়াদকে গুরুতর জখম অবস্থায় প্রথমে খালিয়াজুরী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করলে সেখানকার চিকিৎসকরা আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করে।সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রবিবার সকালে রিয়াদ মারা যায়।
খালিয়াজুরী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মজিবুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এ ঘটনায় এখনও মামলা হয়নি। তবে হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ফেনীতে একজনকে কুপিয়ে হত্যা
মাগুরায় কলেজছাত্র হত্যা: ইউপি চেয়ারম্যানসহ গ্রেপ্তার ৪
টঙ্গীতে এএসআই স্ত্রীকে হত্যাচেষ্টা, পুলিশ কর্মকর্তা কারাগারে
নেত্রকোণায় বিকল ট্রাকে পিকআপের ধাক্কা, নিহত ২
নেত্রকোণায় সিমেন্ট বোঝাই বিকল ট্রাকের সঙ্গে পিকআপের ধাক্কা লেগে দুই জন নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় একজন গুরুতর আহত হন। শনিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে নেত্রকোনা-ময়মনসিংহ আঞ্চলিক সড়কের সাকুয়া বাজারে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত তরিকুল (৩৫) কলমাকান্দা উপজেলার বড়কাপন ইউনিয়নের শুনই আমবাড়ী গ্রামের আজিজ বেপারীর ছেলে। নিহত অপর জনের পরিচয় পাওয়া যায়নি। আহত পিকআপচালক তারিককে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: নাটোরে সড়ক দুর্ঘটনায় শিশু নিহত, বাবা-মা আহত
নেত্রকোণা সদরের চল্লিশা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাহবুবুল মজিদ জানান, নেত্রকোণা-ময়ময়নসিংহ আঞ্চলিক সড়কের সাকুয়া নামক স্থানে সিমেন্টবাহী একটি ট্রাক বিকল হয়ে যাওয়ায় তা মেরামত করছিল। শনিবার সকালে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা নেত্রকোণাগামী একটি পিকআপ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ওই ট্রাকের পেছনে ধাক্কা দেয়। এতে পিকআপে থাকা দু’জন ঘটনাস্থলেই নিহত ও চালক গুরুতর আহত হন।
তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা গিয়ে নিহতদেরকে গাড়ির ভেতর থেকে উদ্ধার করে।
আরও পড়ুন: খুলনায় মোটরসাইকেল-ইজিবাইকের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ৪
এ ব্যাপারে নেত্রকোণা মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মামুন জানান, নিহতদের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। একজনের পরিচয় পাওয়া গেছে আরেকজনের পরিচয় উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। গুরুতর আহত চালক তারিককে নেত্রকোণা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মর্গে পাঠানো হয়েছে।
সাত বছর ধরে বাঁধা জান্নাতুলের শৈশব !
যে বয়সে অন্য শিশুদের মতো প্রতিদিন স্কুলে যাওয়া, দুষ্টুমি আর নানা খেলায় মত্ত থাকার কথা সেই বয়সে শিশু জান্নাতুল বৃষ্টি বন্দি জীবন কাটাচ্ছে। গত সাত বছর ধরে তার শৈশব বাঁধা। পরিবার জানায়, সে মানসিক ভারসাম্যহীন শিশু। তাই তার দুই হাত সব সময় বেঁধে রাখা হয়।
বৃষ্টি নেত্রকোণার দুর্গাপুর পৌরসভার দশাল এলাকার দিনমজুর শাহজাহান মিয়ার মেয়ে। অর্থ ও সু-চিকিৎসা করাতে না পেরে এভাবে হাত বেঁধে রাখেন তার বাবা-মা। দিনে বাড়ির পাশে স্বজনের বারান্দায় আর রাতে নিজ ঘরের বাঁশের সঙ্গে দুই হাত বাঁধা অবস্থায় দিন-রাত কাটছে শিশু বৃষ্টির।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালের ৬ জুন একজন ধাত্রীর মাধ্যমে বৃষ্টির জন্ম হয়। এরপর সাড়াশব্দ না থাকায় তাকে দুর্গাপুর হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসা নেয়ার দুইদিন পর সে সাড়া দেয়। এরপর এক বছর বয়স থেকেই তার অস্বাভাবিক আচরণ শুরু হয়। তাকে ছেড়ে দিলে নিজেই নিজের মাথায় আঘাত করা শুরু করে বা হাত কামড়াতে থাকে। যেদিকে খুশি চলে যেতে চায় কিংবা অন্যকে মারধর করে।
আরও পড়ুন: প্রতিকূলতার মাঝেও শিক্ষা গ্রহণে সাফল্যের পথে উপকূলের নারীরা
পরে প্রতিবেশীদের কথা শুনে বৃষ্টিকে কবিরাজের কাছে নিয়ে যায় তার পরিবার। কিন্ত সেখানে গিয়েও কেনো লাভ হয়নি।
সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে বৃষ্টির নামে প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড হয়েছে। কিন্তু জোটেনি অন্য কোনো সহায়তা।
বৃষ্টির মা আয়েশা খাতুন বলেন, ‘আমি এই মেয়েটাকে নিয়ে অনেক কষ্টে আছি। প্রায় রাতেই মেয়ের জন্য জেগে থাকি। মা হিসেবে নিজের মেয়েকে এভাবে বেঁধে রাখতে কষ্ট হয়। যদি সমাজের বিত্তবানরা আমার মেয়েটার উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দিতেন তাহলে সে সুস্থ হয়ে যেতো।’
বৃষ্টির বাবা দিনমজুর শাহজাহান মিয়া বলেন, ‘আমার দুই মেয়ের মধ্যে বৃষ্টি বড়। ছোট একটি টিনের ঘরে থাকি। সারাদিন রাজমিস্ত্রি কাজ করে যা আয় হয়, তা দিয়ে সংসার চালাতেই হিমশিম খাই। তাকে ঢাকায় নিয়ে উন্নত চিকিৎসা করাতে পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। কিন্তু ঢাকায় নিয়ে উন্নত চিকিৎসা করানো আমার পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। মেয়েটিকে নিয়ে অনেক কষ্টে দিন পার করছি। যদি সমাজের বিত্তবান ব্যক্তিরা আমাদের সহযোগিতা করতেন তাহলে হয়তো মেয়েটি স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতো। ’
দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. তানজিরুল ইসলাম রায়হান বলেন, শিশুটির বাসায় গিয়ে আমি তাকে দেখেছি। তার মস্তিষ্কের কার্যকারিতা ব্যাহত হচ্ছে। আমাদের এখানে যে ধরনের সুযোগ-সুবিধা রয়েছে সেটি দিয়ে এ ধরনের পরীক্ষা করানো সম্ভব না। উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিউরোসায়েন্স ইনস্টিটিউটে নিয়ে গেয়ে মস্তিষ্ক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করালে হয়তো প্রকৃত কারণটা জানা যাবে।
আরও পড়ুন: নেত্রকোণায় মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে এএসআইসহ নিহত ২