নেত্রকোণা
নেত্রকোণায় পুকুর থেকে নারীর লাশ উদ্ধার
জেলার আটপাড়ায় পুকুর থেকে আনুমানিক ৪৫ বছর বয়সের অজ্ঞাত এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
শনিবার (৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উপজেলার তেলিগাতী ইউনিয়নের রামসিদ্ধ বাজারের পাশে কামরুল মিয়ার পুকুর থেকে এই মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
আটপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাফর ইকবাল জানান, পুকুরে একটি মরদেহ ভাসতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে। এখন পর্যন্ত নিহতের পরিচয় পাওয়া যায়নি।
পানিতে পড়ে ওই নারী মারা যেতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে পুলিশ ধারণা করছে।
আরও পড়ুন: গুলিতে নিহত দুই যুবকের লাশ ৪ দিনেও ফেরত দেয়নি বিএসএফ
নিখোঁজের ৩দিন পর শিশুর বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার
নেত্রকোণায় বন্যার্তদের সহায়তায় হুয়াওয়ে
নেত্রকোণায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য এগিয়ে এসেছে হুয়াওয়ে টেকনোলজিস (বাংলাদেশ) লিমিটেড। আজ শনিবার (২৮ আগস্ট) একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাদের মধ্যে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়।
শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সাম্প্রতিক সময়ে বন্যার ফলে হাজার হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দেশজুড়ে বন্যার কারণে অনেক জেলা প্রতিকূল সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। বন্যা দেশজুড়ে মানুষকে অসহায় পরিস্থিতিতে ফেলেছে এবং তাদের জীবন ও জীবিকাকে করে তুলেছে বিপন্ন। দায়িত্বশীল ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান হিসেবে এমন অসহায় মানুষের সহায়তায় এগিয়ে এসেছে হুয়াওয়ে।
এতে বলা হয়, হুয়াওয়ের উদ্যোগ ‘ইন বাংলাদেশ, ফর বাংলাদেশ-হিয়ার ফর ইউ’র অংশ হিসেবে, আজ হুয়াওয়ে নেত্রকোণা জেলার দুঃস্থ ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মাঝে এই ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেছে। অসহায় এ মানুষদের পাশে দাঁড়াতে হুয়াওয়ে প্রায় দুই হাজার পরিবারের মাঝে জরুরি খাদ্যদ্রব্য, যেমন: চাল, মসুর ডাল, আলু, ওরাল স্যালাইন, চিনি, ময়দা ও অন্যান্য জিনিস বিতরণ করেছে।
অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগেরমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘প্রথমেই, আমি হুয়াওয়ে কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানাই এবং দেশের টেলিযোগাযোগ খাতের বিকাশে অবদান রাখার জন্য তাদের প্রচেষ্টাকে সাধুবাদ জানাই। আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশে বিনির্মাণের পথে রয়েছি এবং ডিজিটাল কানেক্টিভিটিই ডিজিটাল বাংলাদেশের মেরুদণ্ড। হুয়াওয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশ ও ডিজিটাল হাইওয়ে গড়ে তুলতে সহায়তা করছে, এজন্য আমরা হুয়াওয়ের প্রতি কৃতজ্ঞ।’
আরও পড়ুন: স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমে ১০ কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করবে হুয়াওয়ে
মেধা বিকাশে ১৫ কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করবে হুয়াওয়ে
হুয়াওয়ে বাংলাদেশে প্রধান নির্বাহী ঝ্যাং ঝেংজুন বলেন, ‘এ ত্রাণ সহায়তা কর্মসূচি বন্যাদুর্গত অঞ্চলে মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে আমাদের ‘ইন বাংলাদেশ, ফর বাংলাদেশ-হিয়ার ফর ইউ’ শীর্ষক একটি সামগ্রিক উদ্যোগেরই প্রচেষ্টা। এ উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা মানুষের জীবনযাত্রা উন্নত করতে কাজ করে যাবো। বাংলাদেশে স্থানীয়ভাবে বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে, যেখানে আমরা আমাদের কার্যক্রম পরিচালনা করি সেসব কমিউনিটিতে নিজেদের দায়িত্ব পালন করতে পেরে গর্বিত। ভবিষ্যতে আমরা এক্ষেত্রে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার মাধ্যমে ধারাবাহিকভাবে অবদান রাখতে চাই।’
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে নেত্রকোণার ডেপুটি কমিশনার কাজী মো. আবদুর রহমান, খালিয়াজুরীর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ এইচ এম আরিফুল ইসলাম এবং খালিয়াজুরীর চেয়ারম্যান সুমন চক্রবর্তী উপস্থিত ছিলেন।
নেত্রকোণায় ট্রাক মোটরসাইকেল সংঘর্ষে নিহত ২
নেত্রকোণা জেলার বারহাট্টা উপজেলার মোহনগঞ্জ সড়কে বড়ি নামক স্থানে ট্রাক ও মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে দুই মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হবার ঘটনা ঘটেছে।
রবিবার সন্ধ্যায় এ দুর্ঘটনায় নিহতরা হলেন- জেলার বারহাট্টা সদর ইউনিয়নের মোহনপুর গ্রামের জয়নাল আবেদীনের ছেলে মোটরসাইকেল আরোহী তানভীর (২৬) ও তার চাচা মুর্তুজ আলী (৫৮)।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে,বারহাট্টা উপজেলার মোহনপুর গ্রামের তানভীর তার চাচা মুর্তুজ আলীকে নিয়ে রবিবার সন্ধ্যায় মোটরসাকেলে করে মোহনগঞ্জ থেকে বাড়ি ফিরছিলেন।
আরও পড়ুন: সিলেটে সড়ক দুর্ঘটনায় যুবকের মৃত্যু
নেত্রকোণা-মোহনগঞ্জ সড়কের বড়ি নামক স্থানে পৌছলে বিপরীত দিক থেকে দ্রুতগামী ট্রাকের সাথে সংঘর্ষ হয়। এতে উভয়েই ঘটনাস্থলে মারা যান। পুলিশ নিহতদের লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। পুলিশ ঘাতক ট্রাকটিকে জব্দ করেছে।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় ২ সেনা সদস্য নিহত
বারহাট্টা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিজানুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, নিহতদের লাশ থানায় আনা হয়েছে। তাদের স্বজনদেরকে খবর দেওয়া হয়েছে। ট্রাকটিকে মোহনগঞ্জ থানায় জব্দ করে আনা হয়েছে।
নেত্রকোণায় মাদকসহ আটক ২: বিজিবি
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ নেত্রকোণা ব্যাটালিয়ন (৩১ বিজিবি) এর অভিযানে মাদকসহ ২ জনকে আটক করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
রবিবার গণমাধ্যমের কাছে পাঠানো এক বিবৃতিতে এতথ্য নিশ্চিত করেছেন নেত্রকোণা ব্যাটালিয়ন (৩১ বিজিবির) অধিনায়ক লেঃ কর্নেল এ.এস.এম জাকারিয়া।
আরও পড়ুন: নেত্রকোণায় জলাশয় ইজারা নিয়ে দুই গ্রামের সংঘর্ষ, পুলিশের গুলি
বিজ্ঞপ্তিতে জানা যায়, নেত্রকোণা ব্যাটালিয়ন (৩১ বিজিবি) এর দূর্গাপুর উপজেলার কুল্লাগড়া ইউনিয়নের বিজয়পুর বিওপিতে কর্মরত সুবেদার মোঃ সিরাজুল ইসলাম এর নেতৃত্বে ৫ সদস্যের একটি টহল দল ১১৫০/৬-এস নম্বর সীমান্ত পিলার এর কাছে ত্রিনালী মোড় নামক এলাকায় গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে মাদকসহ দুইজনকে আটক করে।
আটককৃতরা হলেন, জেলার দুর্গাপুর উপজেলার জারিয়া জাঞ্জাইল গ্রামের মো. মতিউর রহমান এর ছেলে মো. ওলিউর রহমান (৩০) ও রুকু মিয়ার ছেলে মো. ইলিয়াস হোসেন (৩৫)।
আরও পড়ুন: নেত্রকোণায় ১০ জুয়াড়ি আটক
এসময় তাদের নিকট থেকে তল্লাশী করে ভারতীয় দুই বোতল মদ ও মোটরসাইকেলসহ তাদের আটক করে বিজিবি।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, জব্দকৃত মোটরসাইকেল, মাদক ও আটককৃত আসামীদেরকে নেত্রকোণা জেলার দূর্গাপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
নেত্রকোণায় ১০ জুয়াড়ি আটক
জেলার কলমাকান্দায় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতাসহ ১০ জুয়ারিকে আটক করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। সোমবার সন্ধ্যায় উপজেলার কৈলাটী ইউনিয়নের ক্ষুদ্র সিধলী এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সন্ধ্যার দিকে ডিবি পুলিশ অভিযান চালিয়ে জুয়া খেলার সরঞ্জাম ও জুয়া খেলায় ব্যবহৃত নগদ টাকাসহ ১০ জনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
আটকরা হলেন উপজেলার কৈলাটী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হায়দার আলী খান (৪৮), মো. অসিম মিয়া (৩৮), আনু ফকির (৩৮), মো. জিয়াউর রহমান (৩৮), রুবেল তালুকদার (৩২), জনি রায় (২৯), আবুল কালাম (৪০), হানিফ মিয়া (৪০), হাবিবুর রহমান (৪১) ও মো. আব্দুল করিম (২৯)।
পড়ুন: চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৬ জুয়াড়ি আটক
নেত্রকোণা ডিবির ওসি এ.টি.এম. মাহমুদুল হক জুয়ার আসর থেকে ১০ জনকে আটকের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, খেলার সরঞ্জামাদিসহ নগদ ১৭ হাজার ১০০ টাকা জব্দ করা হয়েছে।
আটকদের বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন। মঙ্গলবার তাদেরকে আদালতে প্রেরণ করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
পড়ুন: চাঁপাইনবাবগঞ্জে ১৩ জুয়াড়ি আটক
ধারের টাকা শোধ করতে না পারায় ‘জুয়াড়ির’ স্ত্রীকে তিন মাস ধরে ‘ধর্ষণ’
নেত্রকোণায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে কলেজ ছাত্র নিহত
নেত্রকোণায় টিনের চালে উঠে পেয়ারা পাড়তে গিয়ে বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে এক কলেজ ছাত্রের মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
নিহত আকাশ চক্রবর্তী (১৮) জেলার বারহাট্টা উপজেলার ফকিরের বাজার সংলগ্ন পাঁচকাহনিয়া এলাকার গোবিন্দ চক্রবর্তীর ছেলে। সে নেত্রকোণাস্থ আবু আব্বাছ ডিগ্রি কলেজের এইচএসসি ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিল।
এসময় তার মামা গুরুতর আহত হয়। মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
আরও পড়ুন: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে বাবা-ছেলের মৃত্যু
নেত্রকোণা পৌর শহরের জয়নগর এলাকায় আজ রবিবার দুপুরের দিকে এই দুর্ঘটনাটি ঘটে।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ জানান, রবিবার দুপুরে পৌর শহরের জয়নগর এলাকায় মামা-ভাগিনা দু’জনেই তাদের ঘরের টিনের চালে পেয়ারা পাড়তে যায়।
আরও পড়ুন: শেরপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে নিহত ১
এসময় টিনের চালে দু’জনই বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায়। এতে গুরুতর আহত অবস্থায় দু’জনকে নেত্রকোণা আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক আকাশ চক্রবর্তীকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে মামা প্রশান্ত চক্রবর্তীর অবস্থার অবনতি হলে দ্রুত ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা কয়।
নেত্রকোণা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার শাকের আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, প্রাথমিক তদন্তের পর কলেজ ছাত্র আকাশের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
বন্যার পানিতে পড়ে দেড় বছরের শিশুর মৃত্যু
নেত্রকোণা জেলার কলমাকান্দা উপজেলায় বন্যার পানিতে পড়ে আঠারো মাস বয়সী এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। শনিবার দুপুরে উপজেলার সদর ইউনিয়নের কালিহালা গ্রামের রবিউল আওয়াল নামক ওই শিশুর মৃত্যু হয়।
স্থানীয় এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, কালিহালা গ্রামের মোঃ হৃদয় মিয়ার আঠারো মাসের শিশু পুত্র রবিউল শনিবার দুপুরে বাড়ির আঙ্গিনায় খেলা করছিল। কিছুক্ষণ পর পরিবারের লোকজন শিশু রবিউলকে বাড়ির আঙ্গিনায় দেখতে না পেয়ে চারপাশে খোঁজাখুঁজি শুরু করে।
আরও পড়ুন: খুলনায় চিকিৎসকের অবহেলায় শিশু মৃত্যুর অভিযোগ
অনেক খুঁজাখুঁজির পর বাড়ির পূর্ব দিকের জমিতে বন্যায় প্লাবিত পানিতে নিখোঁজ শিশু রবিউলেকে ভাসমান অবস্থায় দেখতে পায়। পবিবারের লোকজন রবিউলকে উদ্ধার করে দ্রুত কলমাকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন।
এ ব্যাপারে কলমাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল আহাদ খানের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বন্যার পানিতে পড়ে শিশুর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
আরও পড়ুন: পরিবহন ধর্মঘটে শিশু মৃত্যুর ঘটনায় মামলা
তিনি বলেন, ‘মৃতের পরিবারের সদস্যদের কোন অভিযোগ না থাকায় ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। থানায় একটি ইউডি মামলা দায়ের করা হয়েছে।’
নেত্রকোণায় জলাশয় ইজারা নিয়ে দুই গ্রামের সংঘর্ষ, পুলিশের গুলি
পূর্ব শত্রুতা, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও সরকারি খাস জমির জলাশয় (ফিসারী) দখলকে কেন্দ্র করে নেত্রকোণা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার দুই গ্রামবাসীর মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়েছে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশকে ৭৩ রাউন্ড র্শটগানের ফাঁকা গুলি এবং ৬ রাউন্ড টিয়ার সেল নিক্ষেপ করেছে।
জানা যায়, মঙ্গলার সন্ধ্যায় উপজেলার চিরাং ইউনিয়নের বাট্টা ভাটিপাড়া ও চংনওগাঁও গ্রামবাসীর মাঝে এই ঘটনা ঘটে। দুই গ্রামের সংঘর্ষে কমপক্ষে অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হয়।
আরও পড়ুন: নেত্রকোণায় ভারত ফেরত ২ জনের করোনা শনাক্ত
স্থানীয় এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বাট্টা ভাটিপাড়া গ্রামের প্রভাবশালী আতাউল হক মিন্টু গংদের সাথে চংনওগাঁও গ্রামের শাহীন গংদের পূর্ব শত্রুতা ও বিরোধ চলে আসছিল। সম্প্রতি সরকারি খাস জমির জলাশয় (ফিসারী) ইজারা নিয়ে তাদের বিরোধ তুঙ্গে উঠে। এরই জের ধরে মঙ্গলবার বিকালে বাট্টা ভাটিপাড়া এবং চংনওগাঁও গ্রামের শত শত লোক দেশীয় অস্ত্রেশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে মাঠে নামে। তাদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়।
প্রায় ঘন্টাব্যাপী চলা সংঘর্ষে চংনওগাঁও ও বাট্টা ভাটিপাড়ার কয়েকটি দোকানপাট ও বাড়িঘরে হামলা ভাংচুরের ঘটনাও ঘটে।
খবর পেয়ে নেত্রকোণার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) একেএম. মনিরুল ইসলাম, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (কেন্দুয়া সার্কেল) জোনাঈদ আফ্রাদ ও কেন্দুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ কাজী শাহ্ নেওয়াজ অতিরিক্ত পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে ৬ রাউন্ড টিয়ার সেল ও ৭৩ রাউন্ড ফাকা গুলি বর্ষণ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
সংঘর্ষে উভয় পক্ষের আহতদেরকে কেন্দুয়া উপজেলা হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
আরও পড়ুন: নেত্রকোণায় স্ত্রীর কুড়ালের কোপে স্বামী নিহত
কেন্দুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ এবাদুর রহমান জানায়, কেন্দুয়া হাসপাতালে ২২ জনকে ভর্তি করা হয়েছে এবং ১২ জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
কেন্দুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাজী শাহ্ নেওয়াজ বলেন, ‘পূর্বশত্রুতা, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও জলাশয় ইজারা নিয়ে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষের ঘটনায় ৩০/৩৫ জন আহত হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ৬ রাউন্ড টিয়ার সেল ও ৭৩ রাউন্ড শর্টগানের ফাঁকা গুলি ছোড়ে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্তিতি শান্ত রয়েছে।’
নেত্রকোণায় ভারত ফেরত ২ জনের করোনা শনাক্ত
নেত্রকোণায় ভারত ফেরত দুজনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। তারা বর্তমানে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টেইনে রয়েছেন।
সতকর্তা হিসেবে শনাক্তদের আশেপাশের ছয়টি বাড়ি লকডাউন করে দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
তারা হলেন-নেত্রকোণার পূর্বধলা উপজেলার নারান্দিয়া ইউনিয়নের বৌলাম গ্রামের মো. আবুল কালাম (৫৫) ও তার পুত্রবধূ বিলকিছ বেগম (২২)।
রবিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জেলা সিভিল সার্জন মো. সেলিম মিয়া তাদের নমুনা পরীক্ষায় পজিটিভ প্রতিবেদন আসার কথা নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে তাদের জেলা যুব উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়। তাদের সংস্পর্শে আসায় আবুল কালামের স্ত্রীকেও কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে। তবে তার নাম জানায় নি প্রশাসন।
সিভিল সার্জন বলেন, আবুল কালাম ও বিলকিসকে জেলা যুব উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তাদের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে।
আরও পড়ুন: করোনা: ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু কমলেও শনাক্ত বেড়েছে
আবুল কালাম তার ক্যান্সারে আক্রান্ত ছেলে মো. সেলিমকে নিয়ে গত ১৪ মার্চ ভারতে গিয়েছিলেন চিকিৎসার জন্য। সঙ্গে গিয়েছিলেন তার পুত্রবধূ। সেখানেই সেলিমের মৃত্যু হলে তার লাশ নিয়ে গত ২০ মে দেশে ফেরেন তারা।
১৮ বছর পর মাকে ফিরে পেলেন সন্তানরা
গতকাল পর্যন্ত যাকে পাগলী নামে ডাকা হতো আজ তিনি ময়ফুল বিবি! দীর্ঘ ১৮ বছর পর কন্যা ও নাতি-নাতনির সংসারে ফিরে গেছেন তিনি। সিনেমার চিত্রনাট্যকেও হার মানানোর মতো ঘটনাটি ঘটেছে নেত্রকোণার পূর্বধলা উপজেলার জারিয়া রেল স্টেশন এলাকায়।
স্থানীয় বাসিন্দা ও আওয়ামীলীগ নেতা মো: এমদাদুল হক এমদাদ গত ১৪ মে ‘পূর্বধলা হেল্পলাইন’ ফেসবুক গ্রুপে ময়ফুল বিবিকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিতে একটি ফেসবুক পোস্ট দেন। পোস্টে যোগাযোগের জন্য নিজের মোবাইল নাম্বারটি দিয়ে দেন।
অবিশ্বাস্যভাবে এক দিনের মধ্যেই তার মোবাইলে যোগাযোগ করে ময়ফুল বিবির মেয়ে ও নাতি-নাতনীরা।
ময়ফুল বিবির বাড়ি বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার জিউধরা গ্রামে। স্বামীর নাম কাশেম ব্যাপারী। তিনি অনেক আগেই মারা গেছেন। তাদের ছয় মেয়ে। পূর্বধলা হেল্পলাইন ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে তার মায়ের সন্ধান পেয়ে রবিবার একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে ফেনী থেকে ছুটে আসেন তিন বোন। দীর্ঘদিন পর তাদের মাকে ফিরে পেয়ে তারা আবেগ আপ্লুত।
আরও পড়ুন: ২০ বছর পর মা-বাবাকে ফিরে পেলো আসমা
তাকে নিতে আসা মেয়ে হোসনেআরা বেগম জানান, ২০০২ সালে তার মা মানসিকভাবে বিকারগ্রস্ত হয়ে পড়েন। এ অবস্থায় কিছু দিন তাকে নজরে রাখতে পারলেও এক পর্যায়ে নিরুদ্দেশ হয়ে যান তিনি। তারপর থেকে তারা বিভিন্ন জায়গায় অনেক খোঁজাখুজি করেছেন। পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন। কিন্তু না পেয়ে তারা ধরে নিয়েছিলেন এতদিনে হয়তো মা আর বেঁচে নেই।
আরেক মেয়ে বিবি মরিয়ম জানান, তারা বিশ্বাসই করতে পারছেন না দীর্ঘদিন পরে মাকে ফিরে পেয়েছেন।
২০০৩ সালের দিকে জারিয়া বাজারে আশ্রয় নেন ময়ফুল বিবি (৭০)। বসবাস করতে শুরু করেন এখানেই। নাম না জানায় সবাই তাকে পাগলী নামেই ডাকা শুরু করে।
উপজেলার জারিয়া ইউনিয়নের নাটেরকোণা গ্রামের বাসিন্দা ও আওয়ামী লীগ নেতা মো: এমদাদুল হক এমদাদ জানান, ২০০৩ সালের দিকে একদিন ওই নারীকে জারিয়া বাজারে দেখা যায়। এরপর থেকে এখানেই বসবাস করতে থাকেন। কখনও ডাকবাংলোর বারান্দায়, কখনও বাজারে দোকানের বারান্দায়, আবার কখনও রেল স্টেশনের প্লাটফরমে দেখা যেত তাকে। একসময় ছেঁড়া কাপড়, পলিথিন আর চট দিয়ে নিজেই তৈরি করে নেন মাথা গোঁজার ঠাঁই। তার স্বভাব ও ব্যবহারে স্থানীয় মানুষ তাকে আপন করে নেন। তারাই খাবার-দাবার দিতেন। কখনও কখনও তিনি চেয়েও নিতেন। নাম-ঠিকানা জানতে চাইলে কখনও তিনি বলতেন না। অবশেষে স্থানীয়রা অনেক চেষ্টা করে তার কাছ থেকে নাম ঠিকানা জানতে পারেন।
পরে তার স্বজনদের খোঁজে গত ১৪ মে এমদাদুল হক “পূর্বধলা হেল্পলাইন” ফেসবুক গ্রুপে ময়ফুল বিবির থেকে পাওয়া সব তথ্য দিয়ে একটি পোস্ট দেই। এতে খোঁজ মেলে ময়ফুলের স্বজনদের। রবিবার সকালে তার স্বজনদের কাছে তুলে দেওয়া হয়।
এলাকার মানুষকে তিনি এতটাই আপন করে নিয়েছিলেন যে, প্রথমে তিনি যেতেই চাননি। তিনি বার বার বলছিলেন, বাড়ি আর এলাকার মানুষদের ছেড়ে তিনি কোথাও যাবেন না। পরে কৌশলে তাকে রাজি করানো হয়। এসময় তার থাকার খুপড়ি জায়গায় খুঁজে বিভিন্ন অঙ্কের নোট ও কয়েনসহ অর্ধবস্তা টাকা পাওয়া যায়। যেগুলো তিনি মানুষের কাছ পেয়ে দীর্ঘদিন ধরে সঞ্চিত করেছেন। পরে ওই টাকাসহ হাঁড়ি-পাতিল, কাপড়, সাজসজ্জার জিনিসপত্র সহ তার মেয়েদের হাতে তুলে দেয়া হয়।
আরও পড়ুন: ফেসবুকের কল্যাণে হারিয়ে যাওয়া ছেলেকে ফিরে পেলেন মা
এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নাটেরকোণা গ্রামের বাসিন্দা ও আওয়ামী লীগ নেতা মো: এমদাদুল হক এমদাদ, উপজেলা যুবলীগের নেতা ও নাটেরকোণা গ্রামের বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন রোমেল, পূর্বধলা হেল্পলাইন প্রতিনিধি মো: অলি উল্লাহ তালুকদার ও বি.কে.এম. জাহিদ হাসান প্রহর, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো: তুহিন মিয়া, নূরুল আমিন সহ অনেকেই।