সর্বাত্মক লকডাউন
করোনায় দাফন: কঠোর লকডাউনেও সক্রিয় কোয়ান্টামের স্বেচ্ছাসেবীরা
সারাদেশে সর্বাত্মক লকডাউনের মধ্যেও করোনায় মৃতদেহ দাফন বা সৎকারে স্বতঃস্ফূর্তভাবে সক্রিয় রয়েছে দেশের অন্যতম স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের দাফন কার্যক্রম।
ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে শেষ বিদায় জানাতে দিনে বা রাতে ২৪ ঘণ্টা কাজ করে যাচ্ছেন কোয়ান্টামের হাজারো স্বেচ্ছাসেবী। লকডাউনের মধ্যেও রাজধানীসহ সারাদেশেই চলছে নিরলস মানবিক এ সেবা কার্যক্রম।
রাজধানীর কাকরাইলে কোয়ান্টাম দাফন কার্যক্রমের দায়িত্বশীল খন্দকার সজিবুল ইসলাম বলেন, গতকাল ১ জুলাই সারাদেশে সর্বাত্মক লকডাউনের প্রথমদিনে রাত পর্যন্ত ঢাকাতে আমরা ২০ জন মরদেহের শেষ বিদায়ে পাশে থাকতে পেরেছি।’
তিনি বলেন, ২০২০ সাল থেকে এ পর্যন্ত প্রায় চার হাজার মরদেহের শেষকৃত্য সম্পন্ন করেছে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের কর্মীরা। এর মধ্যে মুসলিম ৩৪২৮ জন, সনাতন ৪৮৭জন, অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া ২২ জন এবং সমাধি করা হয়েছে ৩৪ জনের।
আরও পড়ুন: করোনায় একদিনে আরও ১৩২ প্রাণহানি, শনাক্ত ২৮.২৭ শতাংশ
কোয়ান্টামের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০২০ সালের এপ্রিলে করোনার শুরু থেকেই করোনা বা করোনা উপসর্গে মৃত ব্যক্তিদের শেষকৃত্যে অংশ নিচ্ছে কোয়ান্টাম। স্বপরিকল্পনা, স্বঅর্থায়ন আর স্বেচ্ছাসেবকদের স্বেচ্ছাশ্রমে চলছে এ দাফন সেবা। কোয়ান্টাম দাফন সেবা কার্যক্রমে ঢাকার দাফন ক্যাম্পে অংশ নিয়ে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন দাফনকর্মীরা। বাসা থেকে এসেও অংশ নিচ্ছেন অনেকেই। সব মিলিয়ে ঢাকাতে দাফন সেবায় জড়িত রয়েছেন দুই শতাধিক স্বেচ্ছাসেবক। এসব স্বেচ্ছাকর্মীদের কেউ শিক্ষার্থী, কেউ শিক্ষক, কেউ সাংবাদিক, কেউ ব্যবসায়ী কেউ আবার আইনজীবী। নানান পেশার নানান বয়সী স্বেচ্ছাসেবকদের তালিকায় রয়েছেন আলাদা নারী স্বেচ্ছাসেবক দল। মুসলিম ছাড়াও অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের জন্যে রয়েছে আলাদা ব্যবস্থা। মানবিক মূল্যবোধ নিয়ে এগিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটির এই স্বেচ্ছাসেবক দল।
এতে আরও বলা হয়, স্বাস্থ্যবিধি মেনে যথাযথ ধর্মীয় রীতি মেনে চলছে কোয়ান্টামের এ সেবা। হাসপাতাল ছাড়াও কাকরাইলে নিজস্ব গোসলখানায় ভাইরাসমুক্ত করে যথাযথভাবে শেষ সজ্জায় সাজিয়ে প্রয়োজনে কবরস্থান বা সমাধি পর্যন্ত চলছে কোয়ান্টামের এ সেবা।
আরও পড়ুন: প্রায় ফাঁকা ঢাকার রাস্তাঘাট, মানুষের চলাচলও কম
প্রসঙ্গত, কোয়ান্টামের বহুমুখী সেবার মধ্যে ২০০৪ সালে রাজশাহীতে দাফন সেবা কার্যক্রম চালু হয়। ২০২০ সাল থেকে এপর্যন্ত করোনাকালে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন করোনায় মৃতদের শেষকৃত্যে মানবিকতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পেরেছে। এখনো কঠোর এই লকডাউনের মধ্যেও ফোন পাওয়া মাত্রই কর্মীরা ছুটে যাচ্ছেন হাসপাতাল, বাসা, গোরস্থান কিংবা শশ্মানে। মানবিক মূল্যবোধ থেকেই দেশের যেকোনো দুর্যোগে সাধ্যমতো সেবা দিতে প্রস্তুত কোয়ান্টাম কর্মীরা।
৩ বছর আগে
ফরিদপুরে ফোন করলেই বাড়িতে পৌঁছাচ্ছে মাছ
কোভিড-১৯ এর প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় প্রাণিজ আমিষের চাহিদা নিশ্চিতকরণে ফরিদপুরে ভ্রাম্যমাণ নিরাপদ মাছ বিক্রির কার্যক্রম শুরু করেছে জেলা মৎস্য অধিদপ্তর।
সারাদেশে সর্বাত্মক লকডাউন ঘোষণার পর থেকে ফরিদপুর মৎস্য অধিদপ্তরের সহযোগিতায় সুপরিকল্পিত সামাজিক সংস্থা ও চোকদার ফিশারিজ এ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে আসছে। শহরের বিভিন্ন স্থানে ভ্রাম্যমাণভাবে মাছ বিক্রি করা হচ্ছে। এমনকি মোবাইলের মাধ্যমে যোগাযোগ করা হলে বাড়িতেও মাছ পৌঁছে দেয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই সাগরে মাছ ধরা নিষিদ্ধ
চোকদার ফিশারিজের স্বত্তাধিকারী এ এস এম জুনায়েদ জুয়েল জানান, করোনার প্রাদুর্ভাব থেকে রক্ষা পেতে সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক জনসমাগম এড়াতে এবং ঘরে বসে সাধারণ মানুষের আমিষের চাহিদা মেটাতে মৎস্য অধিদপ্তরের ও সুপরিকল্পিত সামাজিক সংস্থার সহযোগিতায় এই কার্যক্রম বাস্তবায়ন করেছেন তারা।
তিনি জানান, ভ্যান ও ইজিবাইকের মাধ্যমে প্রতিটি মহল্লায় গিয়ে মাছ বিক্রি করা হচ্ছে। এছাড়াও কেউ মাছ ক্রয় করতে চাইলে আমাদের মোবাইল নম্বর - ০১৭২৯-০৩৫৮৮৩ এ যোগাযোগ করলেই আমরা তার ঠিকানায় মাছ পৌঁছে দিচ্ছি।
আরও পড়ুন: যশোরের অভয়নগরে দুর্বৃত্তদের দেয়া বিষে প্রায় ১০ লাখ টাকার মাছ মারা গেছে
জুয়েল জানান, এ উদ্যোগে শহরের মানুষের মাঝে ভালো সারা পাওয়া গেছে। দেশি শিং মাছ, রুই, কাতলা, পাঙ্গাশ, পাবদা, চিংড়ী, বাটা, টেংড়া সহ বিভিন্ন মাছ বিক্রি করা হচ্ছে।
ফরিদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘জেলা মৎস্য অফিসের উদ্যোগে ভ্রাম্যমাণভাবে মাছ বিক্রয় কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। মাছ চাষিদের উৎসাহিত করে তাদের মাধ্যমেই মাছ বিক্রি করা হচ্ছে।’
৩ বছর আগে
১৪ এপ্রিল থেকে সর্বাত্মক লকডাউনের চিন্তা করছে সরকার: কাদের
সরকার কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ রোধে ১৪ এপ্রিল থেকে এক সপ্তাহের জন্য সর্বাত্মক লকডাউন আরোপের কথা বিবেচনা করছে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
শুক্রবার সকালে সরকারি বাসভবনে এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা জানান।
আরও পড়ুন: লকডাউনের তৃতীয় দিন: আন্তনগর বাস চলছে
তিনি বলেন, 'চলমান এক সপ্তাহের লকডাউনে জনগণের উদাসীন মানসিকতার কোনো পরিবর্তন হয়েছে বলে মনে হয় না। দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার বৃদ্ধির পাশাপাশি জনগণের অবহেলা ও উদাসীনতাও বৃদ্ধি পাচ্ছে।'
কাদের বলেন, সরকার জনস্বার্থে ১৪ এপ্রিল থেকে এক সপ্তাহের জন্য সর্বাত্মক লকডাউনের বিষয়ে সক্রিয় চিন্তা-ভাবনা করছে।
এর আগে, দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ভয়াবহ রূপ নেয়ায় গত সোমবার (৫ এপ্রিল) থেকে দেশে এক সপ্তাহের জন্য লকডাউন দেয়া হয় যা ১১ এপ্রিল রাতে শেষ হবে।
আরও পড়ুন: লকডাউনে সিটি এলাকায় সকাল-সন্ধা গণপরিবহন চলবে
তবে, লকডাউনে বিক্ষোভের মুখে সরকার বুধবার থেকে সিটি করপোরেশন এলাকায় গণপরিবহন সার্ভিস পুনরায় চালু করার অনুমতি দেয়। পাশাপাশি, শুক্রবার থেকে পাঁচ দিনের জন্য দোকান ও শপিংমল পুনরায় চালু করারও অনুমতি দিয়েছে।
এদিকে, দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ও মৃত্যু দুটোই দ্রুত গতিতে বাড়ছে। গত বৃহস্পতিবার করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৭৪ জন মৃত্যুর কথা জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে দেশে একদিনে এটাই সর্বোচ্চ মৃত্যু।
এছাড়া একই সময়ে ৬ হাজার ৮৫৪ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে।
আরও পড়ুন: করোনায় বিশ্বে মৃত্যু ২৯ লাখ ছাড়াল
নতুন করে ৭৪ জনের মৃত্যুতে কোভিড-১৯ এ প্রাণহানির পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ৫২১ জনে এবং মৃত্যুর হার ১.৪৪ শতাংশ।
এর আগে, বুধবার (৭ এপ্রিল) সর্বোচ্চ ৭ হাজার ৬২৬ জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয় এবং মৃত্যু হয় ৬৩ জনের। এছাড়া সংক্রমণের হার ২২.০২ শতাংশ থেকে ২০.৬৫ শতাংশে নেমে আসে।
৩ বছর আগে