ফেনী
ছাত্রকে মারধরের অভিযোগে ফেনীতে মাদরাসার অধ্যক্ষ আটক
ফেনীতে সাত বছর বয়সী এক ছাত্রকে লোহার শিকল দিয়ে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগে রবিবার মাদরাসার অধ্যক্ষকে আটক করেছে পুলিশ।
আটক ফখরুল ইসলাম দাগনভূঁইয়া উপজেলার পূর্বচন্দ্রপুর ইউনিয়নের দেওয়ালিয়া নুরানিয়া হাফেজিয়া মাদরাসার অধ্যক্ষ।
দাগনভূঁইয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান ইমাম জানান, ভুক্তভোগী জাহিদুল হাসান রাত ৩টার দিকে মাদরাসা থেকে পালিয়ে পুলিশ ভ্যানের সামনে এলে তাকে উদ্ধার করা হয়।
আরও পড়ুন: শিলপাটার আঘাতে স্ত্রীর মৃত্যু, স্বামী আটক
জাহিদুলের বাবা আব্দুলাহ আল মামুন জানান, তার ছেলে জাহিদুল হাসানকে চলতি বছরের শুরুতে মাদরাসায় হেফজ বিভাগে ভর্তি করা হয় এবং মাদরাসার শিক্ষার্থী অভিযোগ করে যে শিক্ষক তাদেরকে মারধর করে।
তিনি বলেন, শনিবার জাহিদ মাদরাসা থেকে পালিয়ে বাড়ি চলে আসে। নির্যাতনের অভিযোগ করে জাহিদ মাদরাসায় আর পড়বে না বলে জানায়। পরে অধ্যক্ষ প্রতিশ্রুতিতে শিশুটিকে বুঝিয়ে পুনরায় মাদরাসায় রেখে আসেন।
আরও পড়ুন: নাটোরে 'কিশোর গ্যাং'য়ের ৫ সদস্য আটক
ভুক্তভোগীর বরাতে পুলিশ জানিয়েছে, ওই দিন রাতে অধ্যক্ষ ক্ষিপ্ত হয়ে শিশুটিকে লোহার শিকল দিয়ে বেঁধে মাদরাসার একটি কক্ষে আটকে রাখেন ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে জখম করে।
ফেনীতে ৮ রোহিঙ্গা গ্রেপ্তার
ফেনী শহরের একটি আবাসিক হোটেল থেকে আট রোহিঙ্গাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার বিকালে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সদর উপজেলার মহিপাল এলাকায় স্টারগোল্ট নামে আবাসিক হোটেল থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার আটজন হলেন- কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার কুতুপালং আশ্রয়শিবিরের নূর আহম্মদের ছেলে আবদুল মন্নান (২০), হামিদ হাসানের ছেলে আবদুস শুক্কুর (১৮), আবুল কালামের ছেলে মো. জামাল হোসেন (২২), বদি আলমের ছেলে সফি আলম (২৫), আবু সৈয়দের ছেলে মোহাম্মদ ইলিয়াছ (৩০), কবির আহম্মেদের ছেলে এনামুল হক (২১), বালুখালী এলাকার আশ্রয়শিবিরের আলী হোসেনের ছেলে নবী হোসেন (১৪) ও ফজল আহম্মদের ছেলে নূর হোসেন (১৮)।
ফেনী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবদুর রহীম জানান, তাঁরা তিন-চার দিন আগে কক্সবাজারের উখিয়া এলাকা থেকে গোপনে ফেনী আসেন। এরপর ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনী শহরের মহিপাল এলাকায় পাশের গোল্ড স্টার নামের একটি আবাসিক হোটেলে ওঠেন। পুলিশ খবর পেয়ে তাদের আটজনকে আটক করে মডেল থানায় নিয়ে যায়। তাদের বিরুদ্ধে অনুপ্রবেশের অভিযোগে মামলা করা হয়েছে।
তাদের আদালতের মাধ্যমে ফেনী জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন ফেনী সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নিজাম উদ্দিন।
তিনি বলেন, গ্রেপ্তার আটজন ফেনীতে আবাসিক হোটেলে অবস্থান করে শহরের বিভিন্ন স্পটে মাদকদ্রব্য কেনাবেচা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের পরিকল্পনা করছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রীকে নিয়ে ‘কটূক্তি’, সিলেটে যুবক গ্রেপ্তার
আরএসআরএম গ্রুপের এমডি গ্রেপ্তার
সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণ: ফেনীর ৩ বাড়িতে শোকের মাতম
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বিএম কন্টেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহত ফেনীর ফায়ার ফাইটার সালাউদ্দিন কাদের সবুজ (৩৭) , বিএম কন্টেইনার ডিপোর শিফট ইনচার্জ শাহাদাত উল্লাহ মজুমদার (৩৮) ও নিখোঁজ কাভার্ডভ্যান চালক মোহাম্মদ ইয়াসিনের (২৮) বাড়িতে চলছে শোকের মাতম।
নিহত সবুজ ফেনী সদর উপজেলার ধলিয়া ইউনিয়নের মাছিম পুর গ্রামের মাস্টার মো. ইউছুফের ছোট ছেলে। শাহাদাত ফুলগাজী উপজেলার আনন্দপুর ইউনিয়নের আমিন উল্লাহ মজুমদারের ছেলে। মুহাম্মদ ইয়াসিনের ফুলগাজী উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের গোসাইপুর গ্রামের মো. খোকা মিয়ার ছেলে।
সরেজমিনে নিহত সবুজের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, পরিবারের কর্মক্ষম ছেলের মৃত্যুতে বাকরুদ্ধ বাবা-মা।
আরও পড়ুন: সীতাকুণ্ডে অগ্নিকাণ্ডে নিখোঁজ সিরাজগঞ্জের শফিউল
পরিবার জানায়, সবশেষ ঈদের ছুটিতে বাড়ি আসেন। রবিবার রাত ৯টায় স্ত্রী মর্জিনা আক্তারের সঙ্গে কথা হয়। অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে ফায়ার বিগ্রেডের ইউনিটের সঙ্গে ডিপোতে উদ্ধারের কাজে যোগদেন। এরপর বিস্ফোরণের পর থেকেই যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। রবিবার দুপুরে স্বজনরা জানতে পারেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার লাশ রয়েছে। পরে সোমবার গ্রামের বাড়িতে তাকে দাফন করা হয়।
ফায়ার ফাইটার সবুজ ২০১১ সালের নভেম্বর মাসে সোনগাজী ফায়ার স্টেশনে যোগদানের মধ্য দিয়ে কর্মজীবন শুরু করেন।
ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার শাহাদাত মজুমদারের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, ছেলের মৃত্যুর খবর পেয়ে শাহাদাতের মা-বাবা ভেঙে পড়েছেন। পরিবারের কর্মক্ষম বড় ছেলেকে হারিয়ে শোকে স্তব্ধ তারা। শনিবার রাতে অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে ডিপোতে আসেন ও পরিবারের সঙ্গে মোবাইলে ভিডিও কলে কথা বলা অবস্থায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়।
রবিবার দুপুরে স্বজনরা জানতে পারেন চট্টগ্রাম মেডিকেলে তার লাশ রয়েছে। রবিবার রাতে গ্রামের বাড়িতে লাশ দাফন সম্পন্ন হয়েছে। নিহত শাহাদাত তিন বছর আগে একই এলাকায় বিয়ে করেন। তার আড়াই মাসের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে।
আরও পড়ুন: সীতাকুণ্ডে বিএম কন্টেইনার ডিপুতে বিস্ফোরণ, নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪৩
এদিকে শনিবার রাত থেকে খোঁজ নেই স্পেক্ট্রা কোম্পানির কভার্ডভ্যান চালক মোহাম্মদ ইয়াসিনের। রবিবার রাতে ইয়াসিনের গ্রামের বাড়িতে মা কোকিলা আক্তার ছেলের নাম করে ডুকরে কাঁদতে দেখা গেছে, এ সময় তিনি বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। কান্নায় ভেঙে পড়েছেন চার বোনও।
চাচাতো ভাই মোহাম্মদ নাহিদ জানান, ডিপোতে আগুন লাগর পর ইয়াসিন বাড়িতে ফোন করে বিষয়টি জানিয়েছিলেন। কথা শেষ করে ফেইসবুক লাইভে অগ্নিকাণ্ডের ভিডিও দেখান সবাইকে। এক পর্যায়ে বিস্ফোরণ ঘটলে তার লাইভ বন্ধ হয়ে যায়। এরপর তার আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।
ফেনীতে সবজির আড়ালে গাঁজা চাষ, গ্রেপ্তার ১
ফেনীর সোনাগাজীতে বাড়ির পাশে সবজির আড়ালে গাঁজা চাষ করার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শনিবার সন্ধ্যায় ওই চাষির বাগান থেকে অন্তত তিনটি বড় গাঁজা গাছসহ তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। রবিবার তাকে আদালতের মাধ্যমে ফেনী কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেপ্তার মো. আবুল কালাম (৪২) সোনাগাজী উপজেলার চরছান্দিয়া ইউনিয়নের মৃত মীর আহম্মদের ছেলে।
সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি ) খালেদ হোসেন জানান, কালাম একজন গাঁজাসেবী। গাঁজা সেবনের পাশাপাশি ব্যবসার সঙ্গেও জড়িয়ে পড়েন তিনি। তাই নিজের বাড়ির পাশে খালপাড়ে সবজি চাষের সঙ্গে গাঁজা গাছের বীজ রোপণ করে চাষ শুরু করেন তিনি। স্থানীয়রা এতদিন গাঁজা গাছটিকে ফুলের গাছ ভাবলেও পরে গাঁজা চাষের বিষয়টি খবর পায় পুলিশ। এরপর শনিবার সন্ধ্যায় পুলিশের একটি দল অভিযান চালিয়ে গাঁজা গাছসহ কালামকে গ্রেপ্তার করে।
ওসি জানান, এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে আবুল কালামকে আসামি করে সোনাগাজী মডেল থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা করে। এর আগেও তাঁর বিরুদ্ধে মাদক বিক্রির অভিযোগে থানায় একাধিক মামলা হয়েছে।
পড়ুন: চাঁপাইনবাবগঞ্জে গাঁজা জব্দ,আটক ২
র্যাবের ওপর হামলা, ফেনীতে ছাত্রলীগ সভাপতি বহিস্কার
ফেনীর বারইয়ারহাটে র্যাবের ওপর হামলার নেতৃত্ব দেয়ায় ঘোপাল ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি তানভীর ভূঁইয়াকে বহিস্কার করা হয়েছে। এছাড়া সংগঠনের শৃংখলা ও নীতি আদর্শ পরিপন্থী কার্যকলাপের জড়িত থাকার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
গত ২৫ মে বারইয়ারহাট বাজারে ডাকাত বলে র্যাবের ওপর হামলার নেতৃত্ব দেয়ার অভিযোগে জোরারগঞ্জ থানায় দায়ের করা তিনটি মামলার দুটি মামলায় তাকে আসামি করা হয়েছে।
রবিবার রাতে জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি তোফায়েল আহম্মদ তপু ও সাধারণ সম্পাদক নূর করিম জাবেদ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই বহিষ্কারাদেশের তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, ফেনী জেলা শাখার এক জরুরি সিদ্ধান্ত মোতাবেক জানানো যাচ্ছে যে, সংগঠনের শৃঙ্খলা ও নীতি আদর্শ পরিপন্থী কার্যকলাপে জড়িত থাকায় মো. তানভীর ভূঞা (সভাপতি, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, ১০নং ঘোপাল ইউনিয়ন শাখা) উক্ত পদ থেকে বহিষ্কার করা হলো।
প্রসঙ্গত; গত ২৫ মে বারইয়ারহাট পৌরসভায় ডাকাত বলে চিৎকার করে র্যাবের ওপর হামলায় র্যাবের দুই সদস্যসহ তিনজন আহত হয়। তানভীরের কাছ থেকে মাদক উদ্ধারে গিয়ে হামলার শিকার হন র্যাবের সদস্যরা। তানভীর ওই এলাকার মাদকসহ নানা অপরাধের নিয়ন্ত্রণকারী হিসেবে পরিচিত বলে জানায় র্যাব। বারইয়ারহাট ও ফেনীর ছাগলনাইয়ার ঘোপাল ইউনিয়ন পাশাপাশি। এ ঘটনায় র্যাব জোরারগঞ্জ থানায় হামলা, অস্ত্র ও মাদক উদ্ধারের ঘটনায় পৃথক তিনটি মামলা করেছে। এই তিন মামলার মধ্যে দুটিতে (হামলা ও মাদক) তানভীরকে আসামি করা হয়। ঘটনার পর থেকে তিনি পলাতক।
আরও পড়ুন: ঢাবি ক্যাম্পাসে আসতে হলে ছাত্রদলকে ক্ষমা চাইতে হবে: ছাত্রলীগ সভাপতি
ছাত্রলীগের ৩৩ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ছাত্রদল নেত্রীর মামলা
বিয়ের আশ্বাসে তরুণীকে ধর্ষণ, পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা
ফেনীর মহিপাল এলাকায় বিয়ের আশ্বাসে তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগে এক পুলিশ কনস্টেবলের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে ফেনী মডেল থানায় মামলাটি করেন ভুক্তভোগী ওই তরুণী।
অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য শরীফ উদ্দিন বাবলু (২৬) ছাগলনাইয়া উপজেলার জামতলা চৌধুরী বাড়ির জামাল উদ্দিনের ছেলে। বর্তমানে তিনি খাগড়াছড়ি পুলিশ লাইন্সে কর্মরত আছেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, বিয়ের আশ্বাসে পুলিশ সদস্য বাবলু চট্টগ্রামের জোরারগঞ্জ উপজেলার ওই তরুণীকে ফেনীর মহিপাল এলাকায় একটি হোটেলে এনে বারবার জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। ওই তরুণী তাকে সম্প্রতি বিয়ের জন্য চাপ দিলে বাবলু অস্বীকৃতি জানায়। এতে ওই তরুণী বাদী হয়ে থানায় মামলা করে।
ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নিজাম উদ্দিন জানান, তরুণীর লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ সদস্য বাবলুর বিরুদ্ধে নারী শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা নেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে শিগগিরই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আরও পড়ুন: ঠাকুরগাঁওয়ে স্কুলছাত্রীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ ও ভিডিও, গ্রেপ্তার ২
জিআরপি থানায় ধর্ষণ: সেই পুলিশ পরিদর্শক কারাগারে
এক মণ ধানের দামেও মিলছে না শ্রমিক
বৈরী আবহাওয়ার শঙ্কায় আগেভাগেই বোরো ধান ঘরে তোলা তোড়জোড় চলছে উপকূলীয় নদী বেষ্টিত ফেনীর সোনাগাজীর কৃষকদের মাঝে। তবে এখনও কাটার উপযোগী ৭০ শতাংশ বোরো ধান জমিতে রয়েছে। বর্তমানে এই অঞ্চলের কৃষকরা ধান কাটা ও মাড়াইয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এর মধ্যেই বৃষ্টি সেই সঙ্গে যুক্ত হয়েছে চরম শ্রমিক সংকট।
শ্রমিক সংকটের কারণে সময় মতো ধান কাটতে পারছেন না অনেক কৃষক। শুধু তাই নয়, এক মণ ধানের দামে মিলছে না একজন শ্রমিকও। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে স্থানীয় কয়েক হাজার কৃষককে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ফেনীতে গত এক সপ্তাহ ধরে এক মণ ধান ৬৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু তার বিপরীতে একজন শ্রমিক ১ হাজার থেকে ১২’শ টাকা চাওয়ায় কৃষকেরা চরম লোকসানের কারণে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
আরও পড়ুন: লাল বাঁধাকপি চাষ: বদলে দিয়েছে কৃষক বেলালের ভাগ্য
পরশুরাম উপজেলার পৌর এলাকার কৃষক নজরুল ইসলাম জানান, বাজারে প্রতি মণ ধান বিক্রি হচ্ছে ৬৮০ থেকে সর্বোচ্চ ৭০০ টাকায়। কিন্তু শ্রমিকদের জনপ্রতি এক হাজার থেকে ১২’শ টাকা মজুরি দিতে হচ্ছে। সঙ্গে দুই বেলা খাবার। অন্যান্য খরচ যেমন জমি চাষ, সেচ, চারা, সার, কীটনাশক ও শ্রমিক খরচতো আছেই। এতে আমার ৪০ শতক জমিতে প্রায় ২-৩ হাজার টাকা করে লোকসান হচ্ছে।
সোনাগাজী উপজেলার উপকূলীয় চর চান্দিয়া এলাকার কৃষক আবুল হোসেন বলেন, এক সময় মঙ্গা প্রবল রংপুর অঞ্চলের ধান কাটার শ্রমিক পাওয়া গেলেও এখন আর নেই। ফলে এলাকার শ্রমিকরা কৃষকদের কাছে অতিরিক্ত মুজুরি হাকাচ্ছে।
ধান কাটা শ্রমিক কবির আহাম্মদ বলেন, ‘আমি আবুল খায়েরের সঙ্গে (মালিক) ধান কাটার জন্য দৈনিক ১ হাজার টাকা করে পাঁচ দিনের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছি। দুপুরে-রাতে ভাত খাওয়া ও সকালের নাশতাও মালিক বহন করবেন।
পরশুরাম ডাকবাংলা মোড় এলাকার ধান ব্যবসায়ী আবদুল কাইয়ুম জানান, তিনি প্রতিমণ ধান ৬৮০ টাকা করে কিনছেন। ধানের চাহিদা না থাকায় দাম হঠাৎ কমে গেছে। এ ছাড়া শ্রমিক খরচও ওই টাকা থেকে বাদ যাবে।
আরও পড়ুন: হলুদে ছেয়ে গেছে মাঠ, সরিষার বাম্পার ফলনের আশায় কৃষক
পরশুরাম উপজেলার মির্জানগর ইউনিয়নের সত্যনগর গ্রামে দেখা গেছে, কৃষক আবুল কাশেম ছয় জন শ্রমিক নিয়ে বোরো ধান কাটছেন। তিনি বলেন, ধান কাটা শ্রমিক পাওয়া খুব কষ্টের। পেলেও তাদের মজুরি উচ্চমূল্যের। তাই আগামী মৌসুমে আর বোরো চাষাবাদ করবো না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
পরশুরাম উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মাসুদ রানা বলেন, পরশুরাম উপজেলায় চলতি বছর ৩ হাজার ৩৭০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এবার বাম্পার ফলনও হয়েছে।
উপজেলার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা দেব রঞ্জন বণিক বলেন, বোরো আবাদের জন্য সবকিছুই অনুকূলে ছিল। বিদ্যুৎ, পানি, সার, বীজ কোনো কিছুরই সমস্যা ছিল না। চলতি মৌসুমে ধানের ফলনও ভালো হয়েছে।
আরও পড়ুন: দেশি প্রকৌশলীদের চেষ্টায় সচল গঙ্গা-কপোতাক্ষ সেচ প্রকল্পের পাম্প
ফেনীর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক তারেক মাহমুদুল ইসলাম বলেন, চলতি বছর ৩০ হাজার ২৭০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ করা হয়েছে। বোরো ধানের দাম কম থাকায় আমরা কৃষকদের ধান ভালোভাবে শুকিয়ে সংরক্ষণ করার পরামর্শ দিচ্ছি। যাতে করে তারা সংরক্ষিত ধান পরে বিক্রি করে দামটা ভালো পান। একই সঙ্গে শ্রমিক সংকট থাকায় কম্বাইন্ড হারভেস্টর মেশিনে কৃষকদের সহজভাবে ধান কাটা, মাড়াই, বস্তা প্যাকেটজাতকরণের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, শ্রমিক সংকট ও বৈরী আবহাওয়ার শঙ্কায় কম্বাইন্ড হারভেস্টর মেশিনে সমতল ভূমিতে ৫০ শতাংশ ও উপকূলীয় এলাকায় ৭০ শতাংশ সরকারিভাবে ভর্তুকি দেয়া হচ্ছে।
ফেনীতে কিশোরকে বলাৎকারের অভিযোগে পুলিশ সদস্য গ্রেপ্তার
ফেনীতে এক কিশোরকে বলাৎকারের অভিযোগে ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) গাড়ি চালককে বৃহস্পতিবার গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার পুলিশ সদস্য হলেন মো. ইউনুস (৩৫)। এ ঘটনার পর তাকে বৃহস্পতিবার রাতে বরখাস্ত করা হয়।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী কিশোরের মা বাদী হয়ে ফেনী মডেল থানায় মামলা করেছেন।
মামলার বিবরণী ও ভুক্তভোগীর মা অভিযোগ করেন, গত ২৩ ডিসেম্বর রাতে বাড়ি ফেরার পথে ওই কিশোরের কাছে অবৈধ মালামাল আছে অজুহাতে তাকে আটক করে মো. ইউনুস। পরে একটি হোটেলে নিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে তাকে বলাৎকার করে।
আরও পড়ুন: ফেনীতে সড়ক ডিভাইডারের কাজের সময় ট্রাকচাপায় ২ শ্রমিক নিহত
এরপর ২৪ ডিসেম্বর নির্জন স্থানে নিয়ে থানার গাড়িতে এবং চলতি বছরের ৫ মার্চ মো. ইউনুস নতুন মোবাইল ফোন উপহার দেয়ার আশ্বাসে তার নিজ গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে নিয়ে গিয়ে একাধিকবার বলাৎকার করে।
পরে এ বিষয়ে জানতে পেরে ওই কিশোরের মা বৃহস্পতিবার সকালে থানায় একটি ধর্ষণের মামলা করেন।
ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিজাম উদ্দিন বলেন, ঘটনায় তদন্ত পূর্বক সত্যতা পেয়ে আসামি মো. ইউনুসকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এছাড়া বৃহস্পতিবার রাতে তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলেও জানান ওসি।
দেশে স্বৈরতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেয়েছে: জিএম কাদের
দেশে স্বৈরতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিকভাবে রূপ পেয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের।
তিনি বলেন, ‘বিএনপি ও আওয়ামী লীগের চরিত্রগত কোন প্রার্থক্য নেই। বর্তমানে দেশে গণতন্ত্র নেই। প্রাতিষ্ঠানিকভাবে স্বৈরতন্ত্রে চলছে।’
মঙ্গলবার দুপুরে ফেনী জেলা জাতীয় পার্টির সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জিএম বলেন, দেশের মানুষ সঠিক কথা বলতে ভয় পায়। দেশের মানুষ চেয়ে আছে তৃতীয় শক্তির দিকে। জাতীয় পার্টি হতে পারে সেই বিকল্প শক্তি। এজন্য দলীয় নেতা কর্মীদের আরও সংগঠিত হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
আরও পড়ুন: ‘বেগমপাড়ার’ যাত্রীদের জন্য বিমানের ফ্লাইট চালু: মির্জা ফখরুল
তিনি বলেন, ৯১ এর পরের সরকারগুলো এরশাদের নাম মুছে দিতে চেয়েছিল। কিন্ত পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যুর পরও তার নাম মুছে দেয়া সম্ভব হয়নি।
জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় উপনেতা বলেন, আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে কোন নৈতিক পার্থক্য নেই। দুর্নীতিতে বিএনপি চারবার, আওয়ামী লীগ একবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। বিএনপি দেশে প্রথম বিচার বহির্ভূত হত্যা শুরু করেছে। বিএনপি গণতন্ত্রের কথা বলে অথচ গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে তারা।
তিনি বলেন, রমজান আসন্ন। দ্রব্যমূল্যে দিশেহারা মানুষ। নিত্যপণ্যের বাজারমূল্য চরমে। উন্নয়নের কথা বলে দেশের মানুষকে গলা টিপে মারছে। সামনে যদি ইউক্রেনে যুদ্ধ আরও বেড়ে যায় তাহলে ভবিষ্যৎ কি হবে?
আরও পড়ুন: পল্টনে বাম জোটের হরতাল সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ
জিএম কাদের আরও বলেন, বাংলাদেশে এখন মাত্র তিনটি দল আছে। আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টি। নির্বাচনের সময় তিনটি জোট হবে। একটি সরকার বিরোধী, আরেকটি সরকারের। বর্তমান সময়ে বিএনপি নেতৃত্ব সংকটে রয়েছে। সুতরাং নেতৃত্ব জাতীয় পার্টির কাছে আসতে পারে। তাই তিনি জাতীয় পার্টির সকল নেতাকর্মীকে সংঘবদ্ধভাবে থাকার আহ্বান জানান।
জেলা আহ্বায়ক মোতাহের হোসেন চৌধুরী রাশেদের সভাপতিত্বে মুজিবুর রহমান ও জহির মজুমদারের সঞ্চালনায় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.)মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও জাতীয় পার্টি মহিলা পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক নাজমা আক্তার এমপি প্রমুখ বক্তব্য দেন।
ফেনীতে সড়ক ডিভাইডারের কাজের সময় ট্রাকচাপায় ২ শ্রমিক নিহত
ফেনীর দাগনভূঁঞায় রবিবার রাতে সড়ক ডিভাইডারের কাজের সময় ট্রাকচাপায় দুই নির্মাণ শ্রমিক নিহত হয়েছেন।
তারা হলেন, দাগনভূঁঞার বারাহীগুনী মোল্লাঘাটা এলাকার আবুল হোসেনের ছেলে আজমীর (২৮) ও কুমিল্লার মিয়ার বাজার রামচন্দ্রপুর এলাকার সাদেক আলীর ছেলে আবুল খায়ের (৩৫)।
আরও পড়ুন: নাটোরে সড়ক দুর্ঘটনায় শিশু নিহত, বাবা-মা আহত
দাগনভূঁঞার থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মুহাম্মদ হাসান ইমাম জানান, রাত সাড়ে ৮টার দিকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এনডিই’র শ্রমিকরা ফেনী-নোয়াখালী সড়কে ডিভাইডারের কাজ করছিলেন। এ সময় দাগনভূঁঞা থেকে ছেড়ে আসা ফেনীগামী একটি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নির্মাণাধীন ডিভাইডারের ওপর উঠে ওই দুই শ্রমিককে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তারা নিহত হন। তবে এ ঘটনায় ট্রাকটি জব্দ করা গেলেও চালক ও তার সহকারী পালিয়ে যায়।
আরও পড়ুন: খুলনায় মোটরসাইকেল-ইজিবাইকের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ৪
ফেনীর মহিপাল হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুস সামাদ জানান, খবর পেয়ে পুলিশ লাশ দুটো উদ্ধার করে ২৫০ শয্যার ফেনী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।