লালমনিরহাট
লালমনিরহাট সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি যুবক নিহত
লালমনিরহাটের আদিতমারী সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে সুভল চন্দ্র (৩৪) নামের এক বাংলাদেশি যুবক নিহত হয়েছেন। বুধবার ভোরে উপজেলার ভেলাবাড়ী ইউনিয়নের মহিসতলী সীমান্তের মেইন পিলার ৯২০ এর সাব পিলার ৮ এর কাছে এ ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় লাশ আটকে রেখে টাকা দাবি, মর্গের সামনে বাবার আহাজারি
বিজিবি সুত্রে জানা যায়, সুভল চন্দ্র ভেলাবাড়ী দুলালী সীমান্ত দিয়ে ১০ থেকে ১২ জনের একটি দলের সঙ্গে ভারতের হিজলতলা গ্রাম দিয়ে গরু আনতে যান। ভোরে সবাই মিলে গরু নিয়ে সীমান্ত অতিক্রম করলে বিএসএফ ৭৫ ব্যাটালিয়নের রানীনগর ক্যাম্পের সদস্যরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে। এ সময় সবাই পালিয়ে আসে। তবে ঘটনাস্থলে সুভল গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। এছাড়া আরও দুজন গুলিবিদ্ধ হন। তাদের গোপনে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন: অভিমানে বাড়ি ছেড়ে ‘সংঘবদ্ধ ধর্ষণের’ শিকার কিশোরী
ভেলাবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের ৫নং ওয়ার্ডের মেম্বার রজব আলী বলেন, ঘটনার পর থেকে বিএসএফ বাংলাদেশ থেকে চার গজ দূরে ভারতের ভেতরে লাশটি ঘিরে রেখেছে।
এ বিষয়ে লালমনিরহাট ১৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তৌহিদুল আলম বলেন, সীমান্তের তিনশ’ গজ ভারতের অভ্যন্তরে একটি লাশ পড়ে রয়েছে বলে জেনেছি।বিজিবির পক্ষ থেকে প্রতিবাদসহ পতাকা বৈঠকের আহবান জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: রাজশাহীতে পাটখেতে নারীর গলাকাটা লাশ, ধর্ষণের অভিযোগ
লালমনিরহাট সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি যুবক নিহত
লালমনিরহাটের পাটগ্রাম সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে রিফাত হোসেন (৩০) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৯ জুন) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পাটগ্রাম উপজেলার জগতবেড় ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের শমসেরনগর কানিরবাড়ী সীমান্তের ৮৬২ নম্বর মেইন পিলারে এ ঘটনা ঘটে।
রিফাত হোসেন উপজেলার জগতবেড় ইউনিয়নের মুন্সিরহাট নাজিরগোমানী এলাকার ইসলাম হোসেনের ছেলে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত বন্ধ থাকবে আরও ১৪ দিন
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, পাটগ্রাম উপজেলার জগতবেড় ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের শমসেরনগর কানিরবাড়ী সীমান্তের ৮৬২ নম্বর মেইন পিলারে সীমান্ত রেখা এলাকায় ৭-৮ জন গরু চোরাকারবারি অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের চেষ্টা করছিলেন। এ সময় বিএসএফের সদস্যরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন। এতে রিফাত হোসেন নিহত হন। রিফাতের মরদেহ বিএসএফ ও মাথাভাঙা থানা পুলিশ উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
জগতবেড় ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড ইউপি সদস্য শাহ আলম রিফাত হোসেনের পরিচয় নিশ্চিত করে বলেন, নিহত রিফাতের গলায় ও মাথার পেছনে গুলির চিহ্ন রয়েছে।
আরও পড়ুন: ফুলবাড়ী সীমান্তে বিএসএফ'র বাধায় সড়ক নির্মাণ কাজ বন্ধ
এ বিষয়ে রংপুর ৬১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের শমসেরনগর কোম্পানি কমান্ডার বেলাল হোসেন বলেন, ‘মরদেহ ফেরত নিয়ে আসার জন্য কোচ বিহার ১৪০ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের কোম্পানি কমান্ডারের সঙ্গে পতাকা বৈঠক করা হবে। সেখানে প্রতিবাদ জানানো হবে।’
লালমনিরহাটে ড্রাগন ফল চাষে ‘আবু তালেবের’ সাফল্য
লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার কমলাবাড়ি বটতলা এলাকার আবু তালেব ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে বাণিজ্যিকভাবে আমেরিকার জনপ্রিয় ও পুষ্টিকর ড্রাগন ফলের চাষ শুরু করেন। শখের বাগানে ফুল ও ফল আসায় উৎসুক জনতা ভিড়ছেন ড্রাগন বাগান দেখতে।
জানা গেছে, আবু তালেব ফরিদপুরের একটি বেসরকারি ফার্মে চাকরি করেন। ফার্মটি পরিদর্শনে আসা বিদেশি মেহমানদের জন্য ফার্মের মালিক ড্রাগন ফল দিয়ে আপ্যায়ন করেন। সেখানে ড্রাগনের স্বাদ নেওয়ার সুযোগ হয় তার। সেই থেকে এ পুষ্টিকর ফলের বাগান করার আগ্রহ দেখা দেয় তার মধ্যে। ব্যয়বহুল হলেও নিজের পরিবার ও প্রতিবেশিদের জন্য ড্রাগন কিনে নিয়ে খাওয়ানোর ব্যবস্থা করেন আবু তালেব।
আরও পড়ুন: মাশরুমের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে: কৃষিমন্ত্রী
এরপর পরিবারের দুই ভাইয়ের সহযোগিতায় ড্রাগন বাগান করার উদ্যোগ নেন। পুষ্টিগুণের কারণে আমেরিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন উন্নত দেশে জনপ্রিয়তার শীর্ষে ড্রাগন ফল। কাণ্ড থেকে পাতাহীন ড্রাগন গাছ জন্মায়।
কমলাবাড়ি বটতলা এলাকায় গত বছর নিজেদের ৬৫ শতাংশ জমিতে পাঁচ শতাধিক পিলারে ২০ হাজার চারা রোপণ করে তৈরি করেন ড্রাগন বাগান। নাটোর জেলা থেকে ড্রাগন ফলের চারা ক্রয় করেন। দেড় বছর বয়সে ফল দেওয়ার কথা থাকলেও তা ১০ থেকে ১১ মাসেই ফল দেওয়া শুরু করেছে। বিদেশি এ ফল ও বাগান দেখতে প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষজন ভিড় জমায় আবু তালেবের ড্রাগন বাগানে। আবু তালেব তার ড্রাগন বাগানে ফলের পাশাপাশি চারাও উৎপাদন করছেন। ইতোমধ্যে দুই হাজার চারা উৎপাদন করেছেন এবং প্রতিটি চার ৫০ টাকা দরে বিক্রিও করেছেন। আরও ১০ হাজার ড্রাগনের চারা উৎপাদনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন।
আরও পড়ুন: অপ্রচলিত ফসল চাষে পাহাড়ের অর্থনৈতিক চেহারা পাল্টে যাবে: কৃষিমন্ত্রী
আবু তালেব বলেন, ‘আমি আশা করছি এ বছর আমার বাগানে ৮-১০ লাখ টাকার ড্রাগন ফল বিক্রি করতে পারব। বাগান থেকেই প্রতি কেজি ২০০-২৫০ টাকা দরে বিক্রি করছি। তবে বাগানে প্রতি কেজি ড্রাগন ফল ৫০ টাকা দরে বিক্রি করেও লাভবান হওয়া যায়। একটি গাছ থেকে ১২-১৫ কেজি ড্রাগন ফল পাওয়া যায়।’
স্থানীয় কৃষক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ (৪৫) জানান, জানুয়ারিতে আবু তালেবের কাছ থেকে ড্রাগনের ১০০টি চারা কিনে রোপণ করেছি। তার কাছ থেকেই ড্রাগনের চাষ পদ্ধতি জেনেছেন। আবু তালেবের মতো সফল হলে বড় পরিসরে ড্রাগনের চাষ শুরু করবেন।
আরও পড়ুন: নতুন করে কৃষি বিপ্লব ঘটবে: মন্ত্রী
তিনি আরও বলেন, ‘ড্রাগন ফল চাষে দীর্ঘমেয়াদী মোটা অঙ্কের পুঁজি বিনিয়োগ করতে হয়। এটাই আমাদের প্রধান সমস্যা।’
কমলাবাড়ি এলাকার রেজাউল করিম রাজ্জাক বলেন, সুস্বাদু, পুষ্টিকর ও ঔষধি গুণ থাকায় এ ফলের চাহিদা দেশে অনেক বেড়েছে। তাই জেলার সৌখিন কৃষকেরা এ বাগান দেখতে আসছেন এবং নিজেরাও ড্রাগন বাগান করার কৌশল জেনে নিচ্ছেন। আগুন্তুকদের অনেকেই বাগান করার আগ্রহ দেখাচ্ছেন। সে অনুযায়ী আগামীতে জেলায় ড্রাগন চাষ বাড়তে পারে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
কমলাবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আলাল উদ্দিন আলাল বলেন, শখের করা ড্রাগন বাগানটি এখন ওই পরিবারের একটি আয়ের মাধ্যম হতে চলেছে। এখন অনেক আগ্রহী কৃষক ড্রাগন চাষ করার কৌশল জানতে ওই বাগানে আসেন।
লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক শামীম আশরাফ বলেন, ‘এখন অনেক কৃষক ড্রাগন ফল চাষে আগ্রহ প্রকাশ করছেন। ইতোমধ্যেই অনেকে এ ফলের চাষ শুরু করেছেন। কৃষি বিভাগ থেকেও তাদের অনুপ্রেরণা ও চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে অবগত করা হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ড্রাগন ফল চাষে শুধু দরকার উঁচু জমি যেখানে কখনোই পানি জমাট বাঁধে না। আর দরকার সময় মতো সঠিক পরিচর্যা। ড্রাগন ফল চাষে বেশি বেশি পুঁজি বিনিয়োগ করতে হয়। এ কারণে অনেক কৃষকের আগ্রহ থাকলেও চাষ করতে পারছেন না।’
সড়কের অপেক্ষায় ৬ বছর ধরে দাঁড়িয়ে এক সেতু!
লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে জনদুর্ভোগ লাঘবে তিস্তার শাখা নদীর উপরে একটি সেতু নির্মাণ করেছে স্থানীয় সরকার। কিন্তু সেতুর একপাশের সংযোগ সড়ক না থাকায় ৬ বছরেও দুই গ্রামের মানুষের ভোগান্তির অবসান হয়নি। এতে রাস্তার অভাবে দুর্ভোগে পড়েছে স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসাগামী শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সাধারন মানুষ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার তুষভান্ডার ইউনিয়নের চর বৈরাতী এলাকায় সেতুটির পূর্বের অংশের নিচ থেকে সংযোগ সড়ক বিচ্ছিন্ন হয়ে পরিত্যাক্ত অবস্থায় আছে। গত ৬ বছর আগে সেতুটির তিস্তার বন্যায় ভেঙে যায়, সেই থেকে আজও এ অবস্থায় পড়ে আছে। সংস্কারের কোন উদ্যাগ নেয়নি কেউ। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে দুই গ্রামের প্রায় ২০ হাজার পরিবার।
জানা গেছে, এলজিইডি’র আওতায় ১৯৯৭-৯৮ অর্থবছরে উপজেলার তুষভান্ডার ইউনিয়নের চর বৈরাতী এলাকায় তিস্তার শাখা নদীর উপরে ২ লাখ ৯১ হাজার ১৬০ টাকা ব্যায়ে একটি সেতু নির্মাণ করা হয়। কিন্তু গত ৬ বছর পূর্বে ব্রিজটির এক দিকে সংযোগ সড়কের কিছু অংশ তিস্তা নদীর পানির তোরে ভেঙে যায়। ভেঙে যাওয়া সড়ক মেরামত করার জন্য এলাকার অনেকেই জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে উপজেলা প্রশাসনের কাছে একাধিকবার আবেদন করেও কোন লাভ হয়নি। বর্ষাকালে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার হাজার হাজার মানুষ একটি সংযোগ সড়কের অভাবে বছরের পর বছর মারাত্বক দুর্ভোগে জীবন যাপন করছেন। বর্তমানে ওইসব গ্রামের মানুষ আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসহ যোগাযোগ ক্ষেত্রে বঞ্চিত।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতুর বাস্তব কাজের অগ্রগতি ৯৩.৫০ শতাংশ: কাদের
স্থানীয়রা জানান, সেতু থাকলেও রাস্তা না থাকায় তা ব্যবহার করা যাচ্ছে না। ফলে তিন চার কিলোমিটার পথ উল্টো ঘুরে যাতায়াত করতে হয়। সেতুর একপাশে রাস্তা না থাকার কারণে স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের পাশাপাশি অন্যান্য শ্রেণি-পেশার মানুষের চলাচলে চরম অসুবিধা হচ্ছে।
তারা আরও বলেন, এবারও বর্ষা এলো কিন্তু সেতু ঠিক হল না। চরের মানুষকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য প্রতিদিন হাট বাজারে যেতে হয়। ফলে সেতুর সংযোগ সড়কে মাটি ভরাট না করায় দুর্দশার মধ্যে দিয়ে মানুষকে চলাচল করতে হচ্ছে।
চর বৈরাতী এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা আইয়ুব আলী (৬০) নামে এক বৃদ্ধ জানান, হামার এলাকাত চেয়ারম্যান মেম্বাররা খালি আসি আসি ভোট নিয়া যায়। ভোট নেয়ার আগত কত কথা কয় কিন্তু ভোট শ্যাষ হইলে আর ফিরিয়াও দেখে না।
দক্ষিণ ঘনেষ্যাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, এই সংযোগ সড়কটি মেরামত করতে ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বার এগিয়ে আসেননি। ফলে দীর্ঘ দিন ধরে ছেলে মেয়েরা খুব কষ্ট করে স্কুল কলেজে যায়। সংযোগ সড়ক না থাকায় এলাকাবাসী চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।
আরও পড়ুন: চালুর দিনই পদ্মা সেতু দিয়ে ট্রেন চলবে: রেলপথমন্ত্রী
তিনি আরও বলেন, এলাকাবাসীর দুর্ভোগ কমাতে এবং ছাত্র ছাত্রীদের যাতায়াতের সুবিধার্তে দ্রুততম সময়ে সংযোগ সড়কটি সংস্কার করার জন্য কতৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছে সবাই।
কালীগঞ্জে উপজেলা প্রকৌশলী এ টি এম শামসুজ্জামান বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই, তবে অচিরেই সেতুটি পর্যবেক্ষণ করে পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
বই দিয়ে নির্মিত কলেজের প্রধান ‘ফটক’
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় ব্যতিক্রমি ও অসাধারণ একটি কাজ করেছেন দইখাওয়া আদর্শ কলেজ কর্তৃপক্ষ। তারা দেশ-বিদেশের কথাসাহিত্যিক ও লেখকদের ৫০ বই দিয়ে প্রধান ফটক নির্মাণ করেছেন। দৃষ্টিনন্দন এই ফটক দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে দর্শনার্থীরা ভিড় করছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, হাতীবান্ধা-চাপারহাট আঞ্চলিক সড়কের পাশেই চোখে পড়বে বইয়ের আদলে গড়ে তোলা আদর্শ কলেজের প্রধান ফটকটি। দেশ-বিদেশের কথাসাহিত্যিক ও লেখকদের ৫০ বই দিয়ে দুই সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে রয়েছে ফটকটি।
ঠিক ওপরে রয়েছে হাতের মুঠোয় গ্লোব। যে কারণে বইয়ের কারুকাজে মন কাড়ছে দর্শনার্থীদের। এক নজর দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে আসছেন তারা। অনেকেই দাঁড়িয়ে কথাসাহিত্যিকদের নামগুলো পড়ছেন। আবার এসব বইগুলো লাইব্রেরিতে গিয়ে শিক্ষার্থীরা পড়ছেন।
আরও পড়ুন: লালমনিরহাটে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি আহত
এছাড়াও কলেজের ভেতরে রয়েছে দৃষ্টিনন্দন এক শহীদ মিনার। শহীদ মিনারটিকে আগলে ধরে রেখেছে একটি বই। বইয়ের মলাটে রয়েছে বর্ণ। রয়েছে মুক্তিযুদ্ধের গল্প।
কলেজের সৌন্দর্য বাড়াতে দৃষ্টিনন্দন ফটক তৈরি করতে প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা কাজ করছেন বলে জানালেন শিক্ষকরা। চারুকলার শিক্ষার্থীরা ফটক নির্মাণের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন। কলেজের অধ্যক্ষ, কলেজ ফান্ড থেকে কিছু টাকা বরাদ্দ দিয়ে নির্মাণ কাজ শুরু করেন। টানা ১ বছর কাজ করে তৈরি করা হয়েছে ৫০ বই দিয়ে ফটকটি।
মূলত স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে এই দৃষ্টি নন্দন ফটকটি নির্মাণ করা হয়েছে। তাই বাংলা ও ইংরেজি সাহিত্যের ৫০ বই দিয়ে তৈরি করা হয় এটি।
কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী মমতাজ সাথি বলেন, শিক্ষকদের পরিকল্পিত চিন্তাভাবনার কারণে এ ধরনের একটি ফটক তৈরি হয়েছে। বই হচ্ছে জ্ঞানের ভাণ্ডার, ফটকের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বুঝানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: লালমনিরহাটে বিশাল আকৃতির অজগর সাপ উদ্ধার
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আল-আমিন ইসলাম বলেন, মূলত শিক্ষার্থীদের বইয়ের প্রতি আগ্রহ বাড়াতে এই ফটকটি তৈরি করা হয়।
ফটকটির বিষয়ে অধ্যক্ষ মো. মোফাজ্জল হোসেন বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ফটকটি তৈরি করা হয়েছে। সে কারণে দেশ-বিদেশের কথাসাহিত্যিক ও লেখকদের ৫০টি বই দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। এটি নির্মাণ করতে পেরে আমার খুব ভালো লাগছে। এছাড়াও প্রতিষ্ঠানে অনেক কিছু করার পরিকল্পনা রয়েছে।’
তিস্তা-ধরলা পাড়ে ভাঙন, সরকারি ভাতার বদলে বাঁধ চায় এলাকাবাসী
তিস্তা ও ধরলার পানি হঠাৎ বৃদ্ধি পাওয়ায় গত তিন দিনে প্রবল ভাঙনে প্রায় শতাধিক পরিবারের বসতভিটা এবং আবাদি জমি, শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্থাপনা বিলীন হয়ে গেছে।
হুমকির মুখে রয়েছে বাঁধসহ নানান স্থাপনা। বর্ষা মৌসুম শুরু হতে না হতেই তীব্র ভাঙনে দিশেহারা লালমনিরহাটের তিস্তা ও ধরলা পাড়ের মানুষ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, লালমনিরহাট সদর উপজেলায় মোগলহাটের ফলিমারী এলাকায় ধরলা নদীর ডান তীরে গত তিন দিনে নদীর ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। বসতভিটা ও ভুট্টাসহ অর্ধশত বিঘা আবাদি জমি নদীগর্ভে চলে গেছে। গৃহহারা হয়েছেন অনেক পরিবার। অসহায় পরিবারগুলো স্থানীয় বাঁধের রাস্তায় আশ্রয় নিয়ে আছেন।
আরও পড়ুন: যাদুকাটা নদীর ভাঙনে বিলীনের পথে সুনামগঞ্জের ২ গ্রাম
এদিকে তিস্তার ভায়াবহ ভাঙনে লালমনিরহাট আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের কুটিরপাড়, বালাপাড়া, বাদিয়ারটারী ও চৌরাহা গ্রামে গত তিন দিনে তিস্তা নদীর গর্ভে বিলিন হয়েছে ২০টি পরিবারের বসতভিটা। এছাড়া অর্ধশত বসতভিটা ও শতাধিক একর আবাদি জমি ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে। কুটিরপাড় এলাকার এক কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের একটি বালুর বাঁধ হুমকিন মুখে পড়েছে। এই বাঁধটি স্থানীয়রা নিজ অর্থায়রে প্রায় ১৫ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করেন। এই বাঁধ রক্ষায় তিস্তা পাড়ের হাজারও পরিবার আশায় আছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, গত তিন দিনে তিস্তার প্রবল ভাঙনে আদিতমারী উপজেলার মহিষখোঁচা ইউনিয়নের কুটিরপাড় এলাকায় শতাধিক ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এ ছাড়াও ঝুঁকিতে থাকা অর্ধশত বাড়িঘর অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: বালু উত্তোলন: মাগুরায় মধুমতির ভাঙনে দিশেহারা এলাকাবাসী
এলাকাবাসীর দাবি, ‘আমরা চিড়া, গুড়, মুড়ি, বিধবা ও বয়স্ক ভাতা চাই না আমার তিস্তার বাঁধ চাই।’
উপজেলার মহিষখোঁচা ইউনিয়নের বালাপাড়া গ্রামের ষাটোর্ধ্ব বয়সী কৃষক মোহাম্মদ আলী বলেন, গত দুই দিনে ভিটেমাটি গিলেছে তিস্তা। সব হারিয়ে পরিবার নিয়ে আজ তিনি রাস্তায় এসে দাঁড়িয়েছেন।
লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের ফলিমারী গ্রামের বাসিন্দা জহুরুল হক মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন। গত কয়েক দিন আগে চোখের সামনেই বসতভিটা ধরলা নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এখন আশ্রায় নিয়ে আছেন অন্য জায়গায়।
লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান বলেন, এ বছর বর্ষা আসার আগেই ধরলার ভাঙন দেখা দিয়েছে। বর্ষাকালে ভাঙন আরও তীব্র হতে পারে। ঝুঁকিতে থাকা অনেকে ঘর-বাড়ি সরিয়ে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন।
আরও পড়ুন: মাগুরায় মধুমতির ভাঙনে বসতভিটা, ফসলি জমি বিলীন
হঠাৎ তিস্তায় পানিপ্রবাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় সৃষ্ট বন্যায় চরাঞ্চলের সবজি, বাদাম ও ভুট্টাসহ ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সবকিছু পানিতে ডুবে গেছে, আর ভাঙতে শুরু হয়েছে। ভাঙ্গনের কারণে চিন্তিত তিস্তাপাড়ের মানুষরা। পানিবন্দী পরিবারগুলো শিশু, বৃদ্ধ ও গবাদি পশুপাখি নিয়ে পড়েছে বিপাকে। তারা তাদের বাড়িঘর নিয়ে অনেকে ঠাঁই নিচ্ছেন অন্যের বাড়িতে।
তিস্তাপাড়ের ফাতেমা খাতুন আহাজারি করে বলেন, ‘হামাক বাঁচান ব্যাহে, হামার শোগ শ্যাষ। সব নদীত ভাঙ্গিয়া গেইছে ব্যাহে। হামাক বাঁচান। হামরা কৈ যাম কি খামো, শোগ নদী ভাঙি নিয়া যাবার লাগছে। সরকার এগুলা কি কইরবার লাগছে। হামাক বাঁচান ব্যাহে, হামা বাঁচান।’
তিস্তাপাড়ের আবুল হোসেন বলেন, ‘আমরা রিলিপ-টিলিপ কিছু চাই না। বালুর বাঁধ থাকি শুরু করি নদীর পাশে যদি বস্তা দিত তাহল আর নদী ভাঙত না।’
তিস্তাপাড়ের মহিষখোচা বালাপাড়ার রজব পাড়ার শোভা বলেন, ‘আমাদের ভুট্টাবাড়ী ৪ দোন মাটি আবাদ কচ্চি। খুব কষ্ট করি। বাড়ি পাকা করছি তায়ও শোগ ভাঙি যাবার নাগছে। তোমরা বোল্ডার ফেলে দেও। তা হলে ভালো হবে। ৫০০ টাকার জন্য কি ভোট দেই তোমাক। হামার শরম লজ্জা থুইয়া হামরা ভোট দেই। বয়স্ক দেন, বিদুয়া দেন, আরও বাউরা হবে। আর খ্যায় লোব বাড়ি যাইবে। ওগলা বেবাক বন্দ করি দেন। ওই টাকা দেয়া বন্দ করি দেন। ওই টাকা দিয়া তোমরা বস্তা দেও বোল্ডার ফেলান।
তিস্তা নদীর ভাঙন এলাকা পরিদর্শনে এসে আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ মনসুর উদ্দিন বলেন, বালুর বাঁধটির অর্ধেকের বেশি বিলীন হয়েছে। বাকিটুকু রক্ষা করতে জিও ব্যাগ প্রয়োজন। যার চাহিদা পাঠাতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের বলা হয়েছে।
লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমরা বাঁধ নির্মাণের জন্য বাজেটের আবেদন করেছি, কিন্তু এখন পর্যান্ত বাজেট পাইনি। ভাঙ্গন এলাকায় কিছু বস্তা ফেলা হয়েছে যাতে করে ভাঙন রোধ করা যায়।’
এ বিষয়ে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মো. আবু জাফর বলেন, তিস্তার ভাঙ্গন এলাকা আদিতমারী ইউএনও পরিদর্শন করেছেন।
তিনি আরও বলেন, ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য পর্যাপ্ত খাবার মজুত আছে, ভাঙনকবলিত এলাকায় দ্রুত ত্রাণ বিতরণ করা হবে।’
লালমনিরহাটে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি আহত
লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার দুর্গাপুর সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে এক বাংলাদেশি আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার ভোরে উপজেলার দুর্গাপুর সীমান্তের চওড়াটারী বজলার দীঘি এলাকার ৯২৫ নম্বর মেইন পিলারের কাছে এ ঘটনা ঘটে।
আহত মিলন ইসলাম উপজেলার সাপ্টিবাড়ী গ্রামের রাজা মিয়ার ছেলে। তিনি চওড়াটারী সীমান্তে তার নানা মৃত আফজাল মিয়ার বাড়িতে বসবাস করেন।
আরও পড়ুন: রৌমারী সীমান্তে বাংলাদেশি যুবককে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ
এলাকাবাসীর বরাতে বিজিবি জানায়, মঙ্গলবার ভোরে ৪-৫ জনের একটি দল গরু আনার জন্য জেলার আদিতমারী উপজেলার দুর্গাপুর সীমান্তের চওড়াটারী বজলার দীঘি এলাকার ৯২৫নং পিলার অতিক্রম করে ভারতের ১০০ গজ অভ্যন্তরে প্রবেশ করে। এসময় টহলরত ভারতের কোচবিহার জেলার ১০০বিএসএফ ব্যাটালিয়ন পদ্না ক্যাম্পের টহলদল তাদেরকে লক্ষ্য করে রাবার বুলেট ছোড়ে। এতে মিলন ইসলাম কোমরে গুলিবিদ্ধ হয়। এসময় তার সহযোগীরা তাকে উদ্ধার করে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন: বিএসএফ’র গুলিতে আহত ভারতীয় কিশোরকে হস্তান্তর
লালমনিরহাট ১৫ বিজিবি ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক তৌহিদ জানান, এ ব্যাপারে পতাকা বৈঠকের আহ্বান জানিয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
লালমনিরহাটে বিশাল আকৃতির অজগর সাপ উদ্ধার
লালমনিরহাটের পাটগ্রামে বিশাল আকৃতির প্রায় ৮ ফুট লম্বা একটি অজগর সাপ উদ্ধার করা হয়েছে।
রবিবার দুপুরে উপজেলায় শ্রীরামপুর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী বুড়িরবাড়ী এলাকায় ভুট্টা ক্ষেত থেকে অজগরটি উদ্ধার করা হয়।
পরে প্রাণিসম্পদ ও বন বিভাগ কর্মীদের খবর দিলে তারা গিয়ে সাপটি উদ্ধার করেন। প্রায় ৮ ফুট লম্বা অজগরটির ওজন প্রায় ৬ কেজি।
আরও পড়ুন : ভালো নেই খুলনার সাপুড়ে সম্প্রদায়
এলাকাবাসী জানায়, রবিবার সকাল ৭ টায় কৃষক লুতু মিয়ার ভুট্টা ক্ষেতের জালে অজগর সাপটি আটকে পড়া অবস্থায় দেখতে পায় লুতু মিয়া। পরে তিনি ওই অজগর সাপটিকে একটি লোহার খাঁচায় আটকে রেখে উপজেলা থানা পুলিশ ও বন বিভাগ কর্মীদের খবর দেন।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে ৭৫ কোটি টাকার সাপের বিষসহ আটক ৬
পাটগ্রাম প্রাণিসম্পদ সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ডা. মো. আখিরুজ্জামান জানান, ‘ধারনা করা হচ্ছে ভারতের সীমান্তবর্তী জঙ্গল থেকে অজগরটি খাদ্যের সন্ধানে লোকালয়ে এসে ভুট্টা ক্ষেতের জালে আটকে যায়। অজগরটি উদ্ধার করে রংপুর চিড়িয়াখানায় রাখা হবে।’
আরও পড়ুন: পঞ্চগড়ে পাওয়া গেল বিরল প্রজাতির রেড কোরাল কুকরি সাপ
পাটগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সাইফুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘উদ্ধার করা অজগর সাপটি পাটগ্রাম উপজেলায় নিয়ে এলে সামাজিক ও বন বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হবে।’
বুড়িমারী স্থলবন্দরে ভারত ফেরত ৩ শিক্ষার্থীর করোনা পজিটিভ
ভারতে থেকে বুড়িমারী স্থলবন্দ দিয়ে আসা বাংলাদেশি তিন শিক্ষার্থীর করোনা পজিটিভ ফলাফল এসেছে।
ওই তিন শিক্ষার্থী বুড়িমারী স্থলবন্দরে প্রতিষ্ঠানিক আবাসিক হোটেল সাম টাইমে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন। উপজেলা প্রসাশন তাদের নজরদারিতে রেখেছেন।
রবিবার (১৬ মে) সন্ধ্যায় লালমনিরহাটের সিভিল সার্জন ডা. নির্মলেন্দু রায় বলেন, তিন শিক্ষার্থীর করোনা ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট কি না তা পরীক্ষার জন্য নমুনা ঢাকা পাঠানো হবে।
আরও পড়ুন: ঢাকায় ১৪ দিন পর ফেরার অনুরোধ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের
এদিকে রবিবার দুপর ২টায় ভারত থেকে এক বাংলাদেশি বুড়িমারী স্থলবন্দর হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছেন। বাংলাদেশি ৫ সদস্যর একটি পরিবার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি না পাওয়ায় ভারতের চ্যাংরাবান্ধা থেকে ফেরত গেছেন বলে বুড়িমারী ইমিগ্রেশন পুলিশ জানিয়েছে।
জানা গেছে, করোনাভাইরাসের ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট (ধরন) ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় ২৬ এপ্রিল বাংলাদেশ থেকে ভারতের সব সীমান্ত বন্ধ করে দেয়া হয়। এ সময় ভারতের বিভিন্ন স্কুল-কলেজে পড়াশোনা করা শিক্ষার্থী ও চিকিৎসা নিতে যাওয়া বাংলাদেশিরা আটকে যান ভারতে। পরবর্তীতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে কোয়ারেন্টাইনে থাকাসহ নানা শর্তে তারা দেশে প্রবেশের অনুমতি পান।
ভারতের সঙ্গে সীমান্ত বন্ধের পর লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৬ এপ্রিল থেকে ভারতের বাংলাদেশ দূতাবাসের অনুমতি নিয়ে রবিবার বিকাল ৫টা পর্যন্ত দেশটিতে আটকে পড়া শিক্ষার্থীসহ ২০২ জন দেশে ফিরেছেন। বুড়িমারী স্থলবন্দরে বর্তমানে পাচঁটি আবাসিক হোটেলে ৮৩ জন প্রতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন। ১০১ জনকে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে প্রতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। তাদের সবাইকে ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। একই সময়ে ভারতে ফিরে গেছেন ১০৬ জন।
এদিকে দুই ধাপে ৩৫ জনের করোনা নেগেটিভ আসায় উপজেলা প্রসাশন তাদের ছাড়পত্র দিয়ে ছেড়ে দিয়েছে।
আরও পড়ুন: করোনায় ২৪ ঘণ্টায় আরও ২৫ মৃত্যু, শনাক্ত ৬.৬৯ শতাংশ
পাটগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সাইফুর রহমান বলেন, ‘বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে ফেরত আসা তিন শিক্ষার্থীর শরীরে করোনা পজিটিভ ফল এসেছে, তারা বর্তমানে সুস্থ রয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘তাদের শরীরে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট আছে কি না জানার জন্য তাদের নমুনা সংগ্রহ করে আইডিসিআর-এ পাঠাব। বর্তমানে তিন শিক্ষার্থী আমাদের নজরে আছেন।’
লালমনিরহাটের কয়েকটি গ্রামে আজ ঈদ উদযাপন
সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে একদিন আগেই লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে তিন ইউনিয়নের শতাধিক পরিবার ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করলেন বৃহস্পতিবার।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে উপজেলার তুষভান্ডার ইউনিয়নের মুন্সীপাড়া জামে মসজিদে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। জামাতে ইমামতি করেন মাওলানা ইমান আলী।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কালীগঞ্জ উপজেলার তুষভান্ডার, সুন্দ্রহবী, কাকিনা, চাপারহাট, চন্দ্রপুর, আমিনগঞ্জ ও মুন্সীপাড়া গ্রামের প্রায় পাঁচ শতাধিক পরিবারের মুসল্লিরা বৃহস্পতিবার পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেছেন। প্রতি বছর সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে একদিন আগে রোজা ও ঈদ করেন এসব গ্রামের মুসল্লিরা।
আরও পড়ুন: শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা যায়নি, শুক্রবার ঈদুল ফিতর
এদিকে, করোনাভাইরাসের কারণে ঈদের জামাত সরকারি নির্দেশনা মেনে মসজিদে নামাজ আদায় করেছেন মুসল্লিরা।
এ ব্যাপারে মুন্সীপাড়া জামে মসজিদের ইমাম ইমান আলী বলেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি মেনে মসজিদে সকল মুসুল্লিরা জামাত আদায় করেছি।’
কালীগঞ্জ উপজেলার হাড়িশহরের মুন্সীপাড়ার ঈদগাহ মাঠের সভাপতি মাওলানা মাছুম বিল্লাহ্ বলেন, সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে বিগত কয়েক বছর ধরে এই এলাকার মানুষ ঈদুল ফিতর, ঈদুল আজহা, শবে-কদর, শবে মেরাজসহ বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করে আসছেন। সেই হিসেবে আজ ঈদুল ফিতর পালন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: গাইবান্ধায় এক টাকায় ঈদ বাজার
এ বিষয়ে কালীগঞ্জ থানার ওসি আরজু মো. সাজ্জাদ হোসেন জানান, সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে অনেক আগে থেকে কাকিনা-তুষভান্ডার ইউনিয়নের সুন্দ্রাহবি, চন্দ্রপুর ইউনিয়নের বোতলা ও পানি খাওয়ার ঘাট এলাকায় ঈদের নামাজ আদায় করে আসছে কিছু মানুষ।’
আরও পড়ুন: শেষ মুহূর্তের ঈদ কেনাকাটায় ব্যস্ত খুলনা নগরবাসী
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান বলেন, প্রতি বছরের মতো এবারও তুষভান্ডার, সুন্দ্রহবী, কাকিনা, চাপারহাট, চন্দ্রপুর, আমিনগঞ্জ ও মুন্সীপাড়া এলাকায় কিছু মানুষ সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেছেন। বর্তমান করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বাস্থ্যবিধি বজায় রেখে এসব এলাকার মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় করেছেন স্থানীয় মুসল্লিরা। বিষয়টি নজরদারি করার জন্য স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন ব্যবস্থা নিয়েছে।’