বাগেরহাট
বাগেরহাটে হরিণের মাংস ও দু’টি চামড়াসহ ২ শিকারি আটক
সুন্দরবন এবং বনসংলগ্ন লোকালয়ে পৃথক অভিযান চালিয়ে ১৫ কেজি হরিণের মাংস এবং দু’টি হরিণের চামড়াসহ শিকারিচক্রের দুই সদস্যকে আটক করা হয়েছে। সোমবার বিকালে ও রবিবার সন্ধ্যায় বাগেরহাট জেলার শরণখোলা উপজেলাধীন সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের ডিমের চর এবং বনসংলগ্ন পানিরঘাট এলাকায় একটি বসত বাড়িতে অভিযান চালায় সুন্দরবন পূর্ব বিভাগ। এঘটনায় পৃথক দু’টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
আটক দুই শিকারি হলেন- বরগুনা জেলার পাথরঘাটার পদ্মা গ্রামের মো. ইদ্রিস (৪০) এবং একই উপজেলার চরলাঠিমারা গ্রামের মো. নিজাম (৪৫)।
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের সহকারি বন সংরক্ষক (এসিএফ) মো. সামছুল আরেফিন জানান, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে বন বিভাগের সদস্যরা সোমবার বিকালে শরণখোলা উপজেলার পানির ঘাট গ্রামের হরিণ শিকারি তানজের আলীর বাড়ির টিনের চাল থেকে হরিণে দু’টি চামড়া উদ্ধার করে। সুন্দরবন থেকে হরিণ শিকার করার পর ওই দু’টি চামড়া টিনের চালে রোদে শুকানো হচ্ছিল। বন বিভাগের সদস্যদের উপস্থিতি টের পেয়ে বাড়ির লোকজন এসময় পালিয়ে গেছে।
আরও পড়ুন: শরণখোলায় ২ হরিণের চামড়া উদ্ধার
চিংড়িতে ভেজাল অব্যাহত থাকায় বাজার হারানোর শঙ্কায় রপ্তানিকারকরা
বাগেরহাটে কয়েক বছর ধরে চিংড়িতে ভেজাল বন্ধে পুলিশ, র্যাব ও মৎস্য অধিদপ্তরের অভিযান সত্ত্বেও অসাধু ব্যবসায়ীদের কর্মকাণ্ড এখনও অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হয় খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা জেলার চিংড়ি। এছাড়া ওজন বাড়াতে এবং অতিরিক্ত মুনাফা অর্জনের জন্য চিংড়িতে জেলি, পানি, ভাতের মাড় এবং ক্ষতিকারক পদার্থ প্রবেশ করানো হয়। এতে করে রপ্তানিকারক ও ভোক্তাদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়।
এছাড়া চিংড়ি রপ্তানিকারকরা আশঙ্কা করছেন যে, চিংড়িতে ভেজাল অব্যাহত থাকলে বিদেশের বাজার হারাবে।
চিংড়ি একসময় বাংলাদেশ থেকে দ্বিতীয় সর্বাধিক রপ্তানিকৃত পণ্য ছিল। কিন্তু, গত কয়েক বছরে এটি ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার বিরুদ্ধে ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়েছে।
আরও পড়ুন: জলবায়ু পরিবর্তন: খুলনায় চিংড়ি চাষ বিপন্ন
বাগেরহাটে জব ফেয়ারে তরুণ-তরুণীদের ভিড়
উন্নত দেশে চাকরি প্রত্যাশী বেকার তরুণ-তরুণীদের মনে আশার আলো জাগিয়েছে জব ফেয়ার। তাই বৈদেশিক কর্মসংস্থানের জন্য বাগেরহাটে জব ফেয়ারের আয়োজন করা হয়েছে। সোমবার বাগেরহাট স্বাধীনতা উদ্যানে দিনব্যাপী এই জব ফেয়ারের আয়োজন করা হয়।
জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে বিদেশে গমনচ্ছুক তরুণ-তরুণীরা জব ফেয়ারে অংশ নেন। জব ফেয়ার চলাকালে প্রায় ৫০০ জন বেকার তরুণ-তরুণী বিনামূল্যে রেজিস্ট্রেশন করেছেন। যারা রেজিস্ট্রেশন করেছে, তাদের মধ্য থেকে বিভিন্ন দেশের চাহিদা অনুসারে নির্বাচিত করা হবে।
এরপর বাংলাদেশ ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেডের (বোয়েসেল) মাধ্যমে সরকারিভাবে তাদের বিদেশে পাঠানো হবে।
চাহিদা অনুসারে দক্ষিণ কোরিয়া, জর্ডান, কুয়েত, ইতালি, অস্টেলিয়া ও মালয়েশিয়াসহ ৩০ দেশে দক্ষ জনবল পাঠানো যাবে বলে আয়োজকরা জানান।
এছাড়া জব ফেয়ারকে ঘিরে বেকার তরুণ-তরুণীদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ দেখা গেছে।
রেজিস্ট্রেন করতে আসা তরুণ-তরুণীরা জানান, তারা বেকার জীবন যাপন করছেন। তাই তারা বিদেশে কর্মসংস্থানের জন্য জব ফেয়ারে এসে রেজিস্ট্রেশন করেছেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ পুলিশে নিয়োগ: ৬ পদে পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চে চাকরির সুযোগ
বাগেরহাটে জমি নিয়ে বিরোধে কৃষককে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ
বাগেরহাটের কচুয়ায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে কৃষককে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। শনিবার সকালে উপজেলার আলিপুর গ্রামের একটি ধানের জমিতে ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
নিহত মোজাহার মোল্লা (৫৫) বাগেরহাট জেলার কচুয়া উপজেলার আলিপুর গ্রামের জোনাব আলীর মোল্লার ছেলে। তিনি পেশায় একজন কৃষক ছিলেন।
আরও পড়ুন: তিস্তা ব্যারাজ দোয়ানীতে কৃষককে কুপিয়ে হত্যা
বাগেরহাট জেলা পুলিশের মিডিয়া সেলের পরিদর্শক এস এম আশরাফুল আলম জানান, কচুয়া উপজেলার আলিপুর গ্রামের হাফিজুর মোল্লার সঙ্গে একই গ্রামের আফসার শেখের দীর্ঘদিন ধরে জমিজমা নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। শনিবার সকাল ১০টার দিকে আফসার গ্রুপের লোকজন আলিপুর সকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পিছনে একটি ধানের জমিতে বোরো ধানের বীজপাতা রোপণ করছিল। এসময় হাফিজ গ্রুপের লোকজন সেখানে গিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মোজাহার মোল্লাকে এলোপাতাড়ি ভাবে কুপিয়ে জখম করে।
খবর পেয়ে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য বাগেরহাট ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মোজাহারকে মৃত ঘোষণা করেন।
কচুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুল ইসলাম জানান, জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষের লোকজন পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে যায়।
তিনি আরও বলেন, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদেরকে আটক করতে পুলিশের একাধিক টিম অভিযান চালাচ্ছে। তবে এখনো পর্যন্ত কাউকে আটক বা হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
আরও পড়ুন: ভোলায় ধান কাটা নিয়ে কৃষককে কুপিয়ে হত্যা, গ্রেপ্তার ১
বাগেরহাটে মাদরাসাছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে যুবক গ্রেপ্তার
বাগেরহাটের ফকিরহাটে মাদরাসাছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) বিকালে ফরিদপুর জেলার আলমডাঙ্গা থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে র্যাব ওই যুবককে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তার মো. হাবিল শেখ (৩৫) বাগেরহাটের ফকিরহাটের দেয়াপাড়া গ্রামের আদম আলী শেখের ছেলে।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে সাজাপ্রাপ্ত ২ পলাতক আসামি গ্রেপ্তার
বিষয়টি নিশ্চিত করে র্যাব-৬ এর গণমাধ্যম শাখা থেকে জানানো হয়, আসামি হাবিল শেখ ভুক্তভোগীকে বিভিন্ন সময় মাদরাসায় আসা-যাওয়ার পথে উত্ত্যক্ত করতো। ভুক্তভোগী তার প্রস্তাবে রাজি না-হওয়ায় হাবিল তার ওপর ক্ষিপ্ত হয়। ১২ ডিসেম্বর রাত ২টা ১০ মিনিটের দিকে হাবিল শেখ ভুক্তভোগীর বসতঘরের বেড়া ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে এবং হত্যার হুমকি দিয়ে ধর্ষণ করে। এসময় ভুক্তভোগীর চিৎকারে তার বাবা-মা এগিয়ে আসলে হাবিল ভুক্তভোগীর মায়ের হাতে আঘাত করে পালিয়ে যায়।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর মা বাদী হয়ে ফকিরহাট থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। পরে র্যাব-৬ এর একটি আভিযানিক দল এ বিষয়ে তদন্ত শুরু করে এবং অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রাখে।
ফকিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলীমুজ্জামান জানান, ধর্ষণ মামলায় গ্রেপ্তার হাবিল শেখকে র্যাবের পক্ষ থেকে থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে ৮ বছর পলাতক হিজবুত তাহরীর নেতা গ্রেপ্তার
চট্টগ্রামে অস্ত্রসহ ১৮ মামলার আসামি গিট্টু জাহাঙ্গীর গ্রেপ্তার
রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু
বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু করেছে বাগেরহাটের রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র। পরিবেশ সংক্রান্ত বিষয়ে বহুল আলোচিত-সমালোচিত বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানটির উৎপাদিত ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হতে শুরু করেছে।
শনিবার (১৭ ডিসেম্বর) রাত থেকে কেন্দ্রটির প্রথম ইউনিট থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়েছে।
২০২৩ সালের জুনে দ্বিতীয় ইউনিট থেকে আরও ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
দুই দেশের মধ্যে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ চুক্তির এক যুগ পর হলেও, জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ যুক্ত হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন কেন্দ্রের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও স্থানীয়রা।
তবে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পরিবেশগত নীতিবাচক প্রভাব নিয়ে শঙ্কিত পরিবেশকর্মী ও সচেতন মহল।
বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি (প্রাইভেট) লিমিটেড-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাঈদ একরাম উল্লাহ বলেন, ‘আমরা বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করেছি। পরিবেশগত দিক বিবেচনা করে সব ধরনের কারিগরি কাজ করা হয়েছে। এই বিদ্যুৎকেন্দ্র দুই দেশের বন্ধুত্বকে আরও শক্তিশালী করার পাশাপাশি দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে।’
আরও পড়ুন: রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কয়লাবোঝাই জাহাজ নদীর চরে আটকা
২০১০ সালে ভারত ও বাংলাদেশ যৌথ উদ্যোগে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। ২০১২ সালের ২৯ জানুয়ারি বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড এবং ভারতের এনটিপিসি লিমিটেডের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি (প্রাইভেট) লিমিটেড (বিআইএফপিসিএল) নামে কোম্পানি গঠিত হয়।
এই কোম্পানির অধীন ১৩২০ মেগাওয়াট মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্রজেক্ট (রামপাল) নামে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ শুরু হয়। রামপাল উপজেলার রাজনগর ও গৌরম্ভা ইউনিয়নের সাপমারী কৈ-গর্দ্দাশকাঠি মৌজায় এক হাজার ৩৪ একর জমি অধিগ্রহণ শেষে ১৬ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ শুরু হয়।
এছাড়া এ কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য কাঁচামাল হিসেবে আমদানি করা কয়লাও সুন্দরবনের অন্যতম পশুর নদ দিয়ে পরিবহন করা হবে।
দুই দেশের মধ্যে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ চুক্তির একযুগ পরে হলেও, জাতীয় গ্রীডে বিদ্যুৎ যুক্ত হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন কেন্দ্রের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও স্থানীয়রা।
তবে কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের পরিবেশগত নীতিবাচক প্রভাব নিয়ে শঙ্কিত পরিবেশকর্মী ও সচেতন মহল।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সদস্য এমএ সবুর রানা বলেন, পরিবেশ দূষণ ও সুন্দরবন ধ্বংস করে আমরা বিদ্যুৎ চাই না। রামপাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিকল্প রয়েছে, কিন্তু সুন্দরবনের বিকল্প নেই। বিষয়টি সবাইকে বিবেচনা করার দাবি জানান এই পরিবেশকর্মী।
রামপাল উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, রামপাল তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের সুফল রামপাল ও বাগেরহাটবাসী পেতে শুরু করেছে। এই কেন্দ্রের ফলে এলাকার মানুষ নিরবিচ্ছন্ন বিদ্যুৎ পাবে। পাশাপাশি এই প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রীক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সৃষ্টি ও বিপুল পরিমাণ বেকার জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান হবে বলে দাবি করেন তিনি।
রামপাল তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের উপব্যবস্থাপক আনোয়ারুল আজিম বলেন, প্রথম ইউনিট থেকে ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। এর মধ্যে ৪০০ মেগাওয়াট গোপালগঞ্জের আমিন বাজার হয়ে ঢাকার জাতীয় গ্রীডে এবং ২৬০ মেগাওয়াট খুলনা-বাগেরহাটে সরবরাহ করা হচ্ছে।
ইতোমধ্যে দ্বিতীয় ইউনিটের ৭৯ দশমিক ৩৫ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে দ্বিতীয় ইউনিটের ৬৬০ মেগাওয়াটের কাজ সম্পন্ন হবে।
রামপাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রধান কারিগরি কর্মকর্তা রবীন্দ্র কুমার বলেন, ধীরে ধীরে মেশিনের কার্যক্রম বাড়াচ্ছি, আমাদের দ্বিতীয় ইউনিট চালু হলে স্থানীয় বিদ্যুতের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি জাতীয় বিদ্যুতের চাহিদা পূরণে ভূমিকা রাখবে বলে দাবি করেন তিনি।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ৫ অক্টোবর কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা থেকে রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপরই শুরু হয় জমি ভরাট ও সড়ক নির্মাণের কাজ। প্রায় নয় বছর বিশাল কর্মযজ্ঞ শেষে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনে গেল প্রতিষ্ঠানটি।
এর আগে এ বছরের ১১ জুলাই বয়লার স্টিম ব্লোয়িং স্থাপন করা হয়। এক মাস পর ১৪ আগস্ট টারবাইন-এ স্টিম ডাম্পিং এবং এক দিন পর ১৫ আগস্ট জাতীয় গ্রিডের সঙ্গে পরীক্ষামূলক বিদ্যুৎ সরবরাহ (ট্রান্সমিশন) শুরু করা হয়।
আরও পড়ুন: যৌথভাবে রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ইউনিট ১- এর কাজ সম্পন্নের ঘোষণা হাসিনা-মোদির
বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র: এক ইউনিটে আংশিক উৎপাদন শুরু
বাগেরহাটে আ. লীগ নেতা হত্যা মামলায় ১৪ জনের যাবজ্জীবন
বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জের দৈবজ্ঞহাটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনছার আলী দিহিদার (৫৩) ও আওয়ামী লীগ কর্মী শুকুর শেখকে (৪২) হত্যার দায়ে ওই ইউনিয়নের বহিষ্কৃত ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম ফকিরসহ ১৪ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
একইসঙ্গে তাদের পাঁচ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছর করে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
রবিবার দুপুর দেড়টার দিকে খুলনা বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. নজরুল ইসলাম হাওলাদার এ রায় ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় গলা কেটে হত্যা মামলায় ৩ জনের যাবজ্জীবন
সাজাপ্রাপ্ত অন্য আসামিরা হলেন-আবুয়াল ফকির, মো. হুমায়ুন হাওলাদার, মিল্টন খান, মো. মফিজ খান, মো. ফারুক, মো. আবুল হোসেন শেখ, মো. মোদাচ্ছের শেখ, সুনীল দাস, বিশ্বনাথ ওরফে বিশ্ব প্রমাণিক, মো. লিয়ন শিকদার, সুব্রত কুমার সাহা ওরফে পল্টু (পলাতক), মেহেদী ওরফে রুবেল ফকির ও মো. মহি মোল্লা।
আদালতে এ মামলার ৫০ জন আসামী উপস্থিত ছিল।
রায় ঘোষণার পর ক্ষোভ প্রকাশ করেন নিহত আনসার আলী দিহিদারের ছেলে মেহেদী হাসান শাওন।
তিনি বলেন, হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা বহিষ্কৃত চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম ফকিরসহ আমার বাবা-মার হত্যাকারীদের মৃত্যুদণ্ডের দাবিতে আপিল করা হবে।
আমরা এ রায়ে মোটেও সন্তুষ্ট নই।
জানা যায়, আওয়ামী লীগের স্থানীয় রাজনীতিতে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দৈবজ্ঞহাটি ইউনিয়ন পরিষদের বহিষ্কৃত চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলাম ফকির ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনসার আলী দিহিদারের মধ্যে বিরোধের সৃষ্টি হয়। সেই বিরোধের জের ধরে এ ট্রিপল হত্যাকাণ্ড ঘটে।
ওই সময় পুলিশ ইউপি চেয়ারম্যান শহীদুল ফকিরের লাইসেন্স করা একটি বিদেশি শটগান, একটি রিভলবার, একটি দেশীয় তৈরি ওয়ান শুটার গান, একটি কুড়াল ও তিনটি গুলি জব্দ করে।
আদালত ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ১ অক্টোবর মোড়েলগঞ্জ উপজেলার দৈবজ্ঞহাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল ফকিরের নেতৃত্বে তার লোকজন দৈবজ্ঞহাটি বাজার থেকে দুপুর আড়াইটার দিকে যুবলীগ নেতা শুকুর শেখকে সেলিমাবাদ ডিগ্রি কলেজ মাঠে গুলি করে ইউনিয়ন পরিষদের হলরুমে নিয়ে ফেলে রাখে।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় ডাকাতির সময় হত্যার দায়ে ৬ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনসার আলী দিহিদারের বাড়িতে আক্রমণ করা হয়। হত্যাকারীদের অবস্থান বুঝে আনসার আলী তার ঘরের পাটাতনে পালান। আসামিরা ঘরের চালার টিন কেটে পাটাতনে প্রবেশ করেন। ওখান থেকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে, পিটিয়ে টেনে-হিচড়ে তাকে ইউনিয়ন পরিষদের হলরুমে নিয়ে যান। পরে ইউনিয়ন পরিষদের একটি কক্ষে নিয়ে শুকুর শেখ ও আনসার আলী দিহিদারকে বোরকা পরিয়ে নির্যাতন করেন। পরে নৃশংসভাবে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করেন। একাধিক গুলি ও মারধরে ঘটনাস্থলে শুকুর শেখ মারা যান ও বাগেরহাট থেকে খুলনা নেয়ার পথে মারা যান আনসার আলী দিহিদার।
ওইদিন আনসার আলী দিহিদারের স্ত্রী মঞ্জু বেগম ও শ্রমিক নেতা বাবলু শেখকে মারধর করে সন্ত্রাসীরা। মারধরে মঞ্জু বেগমের দুই পা ও বুকের হাড় ভেঙে যায়।
দীর্ঘ ২২ মাস বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার পরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০২০ সালের ৩০ জুলাই মারা যান মঞ্জু বেগম।
২০১৮ সালে আনসার ও শুকুর মৃত্যুর পর ৪ অক্টোবর রাতে মোড়েলগঞ্জ থানায় নিহত শুকুর শেখের ভাই শেখ ফারুক হোসেন বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেন। এ ঘটনায় পুলিশ ও ভুক্তভোগীরা বাদী হয়ে আরও একটি মামলা করেন। ২০১৯ সালের ৪ জুন পুলিশ ৫৮ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
অভিযোগপত্রে আসামিদের মধ্যে রয়েছেন-দৈবজ্ঞহাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলাম ফকির, ইউপি সদস্য আজিম, আল আমিন, সুনীল, শ্যাম ও মোদাচ্ছের, দৈবজ্ঞহাটি ইউপির গ্রাম পুলিশের সদস্য আবুয়াল হোসেন ফকির, আবুল শেখ ও জুলহাস ডাকুয়া।
এরা সবাই আওয়ামী লীগ দলীয় চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলাম ফকিরের অনুসারী, দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী ও সমর্থক।
জানা গেছে, চেয়ারম্যান ফকির শহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে ২৩টি হত্যা মামলাসহ ৭১টি মামলা রয়েছে।
আরও পড়ুন: ছাত্রাবাসে ছাত্রীকে ধর্ষণ, শিক্ষকের যাবজ্জীবন দণ্ড
বাগেরহাট কারাগারের হাজতির মৃত্যু
বাগেরহাট জেলা কারাগারের এক বৃদ্ধ হাজতি মারা গেছেন।
শুক্রবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে বাগেরহাট ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট শেখ রাজিয়া নাসের জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয় বলে কারা কর্তৃপক্ষ জানায়।
মৃত হাজতির নাম মো. সেলিম ফরাজী (৭০)। তার বাড়ি বাগেরহাট শহরের হরিণখানা এলাকায়।
আরও পড়ুন: কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে হাজতির মৃত্যু
বাগেরহাট জেলা কারাগারের তত্ত্বাবধায়ক এসএম কামরুল হুদা জানান, বাগেরহাট সদর থানায় দায়েরকৃত একটি চুরি মামলায় ২১ নভেম্বর সেলিম ফরাজী আদালতের মাধ্যমে কারাগারে আসেন। শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগে তিনি অসুস্থ ছিল।
শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে সে কারাগারে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে দ্রুত তাকে চিকিৎসার জন্য ২৫০ শয্যা শেখ রাজিয়া নাসের জেলা হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়।
সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১২ টা ৪০ মিনিটে তার মৃত্যু হয়।
বাগেরহাট জেলা পুলিশের মিডিয়া সেলের পরিদর্শক এসএম আশরাফুল আলম জানান, আইনানুগ প্রক্রিয়া শেষে ওই হাজাতি আসামির লাশ তার পারিবারের কাছে হস্তান্তরের প্রস্তুতি চলছে।
আরও পড়ুন: চাঁপাইনবাবগঞ্জ কারাগারে হাজতির মৃত্যু
নারায়ণগঞ্জ কারাগারে হাজতির মৃত্যু
বাগেরহাটে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকে গুলি করে হত্যা
বিএনপি স্বেচ্ছাসেবক দলের বাগেরহাট শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক অজ্ঞাত হামলাকারীদের গুলিতে শুক্রবার নিহত হয়েছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।
নিহতের পরিচয়- তানু ভূঁইয়া (২৫) বাগেরহাট শহরের বাসাবাটি এলাকার বাসিন্দা।
বাগেরহাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কেএম আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘রাত সাড়ে ৯টার দিকে নিজ বাড়ির কাছে গুলিবিদ্ধ হন স্বেচ্ছাসেবক দলের এই নেতা। তাকে একাধিকবার গুলি করে পালিয়ে যায় অজ্ঞাতপরিচয়ের ব্যক্তিরা।’
বাগেরহাট শেখ রাজিয়া নাসের জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হলে তানুকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
ওসি আরও বলেন, ‘হত্যার কারণ খুঁজে বের করে হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারে কাজ করছে পুলিশ। ধারনা করা হচ্ছে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে তানুকে গুলি করে হত্যা করা হয়।’
আরও পড়ুন: ময়মনসিংহে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকে হত্যা, ৭ জনের মৃত্যুদণ্ড
নাটোরে স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতাকে যুবদল কর্মীর ছুরিকাঘাতের অভিযোগ
চট্টগ্রামে স্বেচ্ছাসেবক দলের সঙ্গে সংঘর্ষে পুলিশসহ আহত ২৪, আটক ১০
২৮ কেজির ভোল মাছ বিক্রি হলো সাড়ে ৮ লাখ টাকায়!
বঙ্গোপসাগরে এক জেলের জালে একটি ভোল মাছ ধরা পড়েছে। ২৮ কেজি ওজনের ওই ভোল মাছটি আট লাখ ৭৫ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে। মাছের প্রতি কেজির দাম পড়েছে ৩১ হাজার ২৫০ টাকা।
বঙ্গোপসাগরে গভীরে ৪নং বয়া এলাকায় জাল ফেলতেই জেলে সবুর সিকদারের জালে মাছটি ধরা পড়ে। তার বাড়ি বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার শ্রীফলতলা গ্রামে।
সুন্দরবন বিভাগ জানান, ভোল মাছ গভীর সাগরে বিচারণ করে থাকে। চলতি বছরে জেলেদের জালে বিভিন্ন ওজনের ২৫টি ভোল মাছ ধরা পড়েছে। প্রতিটি ভোল মাছ দুই লাখ টাকা থেকে প্রায় নয় লাখ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
দুবলারচরে রামপালের মাছ ব্যবসায়ী গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মো. আবু তাহের শুক্রবার সন্ধ্যায় জানান, দুবলারচর থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার গভীরে ৪নং বয়া এলাকায় সাগরে জেলের জালে সামুদ্রিক একটি ভোল মাছ ধরা পড়েছে। সোমবার ওই মাছটি ধরার পরার পর জেলে মাছটি বিক্রি করার জন্য দুবলায় নিয়ে আসে। ৮ লাখ ৭৫ হাজার টাকায় মাছটি বিক্রি হয়েছে।
আরও পড়ুন: আজ মধ্যরাত থেকে কাপ্তাই হ্রদে মাছ আহরণ শুরু
তিনি আরও জানান, খুলনার মাছ ব্যবসায়ী মাসুম আলী ওই ভোল মাছটি কিনেছে।
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের দুবলা ফরেস্ট ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. হারুন অর রশিদ জানান, সামুদ্রিক ভোল মাছ অনেক মূল্যবান। মাঝে মধ্যে জেলেদের জালে ভোল মাছ ধরা পড়ে। পোয় প্রজাতির এই মাছটি কৈয়া ভোল নামে বেশি পরিচিত।
ক্রেতাদের কাছে এই মাছের অনেক চাহিদা রয়েছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ল্যাবরেটরি মেডিসিন বিভাগের সহকারি অধ্যাপক ডা. শেখ বদিউজ্জামান রাসেল জানান, সামুদ্রিক ভোল মাছের ফুসফুস দিয়ে অপারেশনের কাজে ব্যবহৃত সুতাসহ চিকিৎসা বিজ্ঞানের বিভিন্ন সরঞ্জাম তৈরি করা হয়।
তিনি আরও জানান, এছাড়া ওই মাছ ক্রয় করার পর নানা প্রক্রিয়ার মাধ্যমে চিকিৎসা বিজ্ঞানের কাজে ব্যবহার উপযোগী বিভিন্ন সঞ্জাম তৈরি করা হয়।একারণে ভোল মাছের মূল্য বেশি।
আরও পড়ুন: কাঙ্খিত মাছ পেয়ে খুশি সুন্দরবনের জেলে ও ব্যবসায়ীরা
এক ভোল মাছের দাম প্রায় লাখ টাকা!