ভোলা
ভোলায় সড়ক দুর্ঘটনায় মাদরাসা শিক্ষকের মৃত্যু
ভোলার দৌলতখান উপজেলায় ট্রাক্টর-মোটরসাইকেল মুখোমুখি সংঘর্ষে এক মাদরাসা শিক্ষকের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার দলিল উদ্দিন খায়ের হাট সংলগ্ন এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটনা ঘটে।
নিহত মো. আবুল খায়ের (৪০) দৌলতখান উপজেলার বায়তুল ফালাহ মাদরাসার সহকারী শিক্ষক এবং দৌলতখান উপজেলার খায়ের হাট এলাকার বাসিন্দা।
আরও পড়ুন: খুলনায় সড়ক দুর্ঘটনায় ২ জন নিহত
দৌলতখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাকির হোসেন জানান, সকাল সাড়ে ৯টার দিকে শিক্ষক আবুল খায়ের বাড়ি থেকে মোটরসাইকেল চালিয়ে মাদরাসায় যাচ্ছিলেন। মোটরসাইকেলটি দৌলতখান উপজেলার খায়ের হাট সংলগ্ন এলাকায় এসে পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে দ্রুত গতিতে আসা ট্রাক্টরটির সঙ্গে মোটরসাইকেলটির মুখোমুখি সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
ওসি জানান, এ ঘটনায় ট্রাক্টরটি জব্দ করা হয়েছে। চালক পালিয়ে যাওয়ায় তাকে আটক করা সম্ভব হয়নি। আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আরও পড়ুন: গোপালগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২, আহত ১০
বগুড়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় পুলিশ সদস্য নিহত
ভোলায় সড়ক দুর্ঘটনায় বিজিবি সদস্য নিহত
ভোলায় পণ্যবাহী ট্রাকের সঙ্গে সিএনজির মুখোমুখি সংঘর্ষে ইসমাইল হোসেন টিপু নামে এক বিজিবি সদস্য নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন আরও ৪ জন। মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে ভোলার লক্ষ্মীপুর মহাসড়কের ইলিশার হাট এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতের বড় ভাই মো.মহসিন ও স্থানীয়রা জানান, বিজিবি সদস্য টিপু ছুটিতে খাগড়াছড়ি থেকে গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে রওনা করেন। ইলিশা জংশন থেকে তিনি সহ আরও চারজন সিএনজি করে ভোলা সদরের উদ্দেশে আসছিলেন। ইলিশা বাজার সংলগ্ন এলাকা আসলে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাকের সঙ্গে সিএনজির সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলে ইসমাইল হোসেন টিটুর মৃত্যু হয়। এছাড়াও সিএনজির ড্রাইভারসহ আরো চার যাত্রী আহত হয়। আহতদের ভোলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন:বগুড়ায় ট্রাক-অটোরিকশা সংঘর্ষে সাংবাদিক নিহত
ভোলা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.এনায়েত হোসেন জানান, নিহত ইসমাইল হোসেন টিটু ভোলা সদর উপজেলার বাপ্তা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মুছাকান্দি গ্রামের মো.আনোয়ার হোসেনের ছেলে। তিনি খাগড়াছড়িতে বিজিবিতে কর্মরত ছিলেন।
তিনি আরও জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করে সদর হাসপাতলে নিয়ে আসে। এ ঘটনায় ঘাতক ট্রাকসহ হেলপারকে আটক করা হয়েছে।
এঘটনায় সড়ক পরিবহন আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে বলেও জানান ওসি।
আরও পড়ুন:সীতাকুণ্ডে লরির সঙ্গে পিকআপের সংঘর্ষে নিহত ১
রাজধানীতে সড়ক দুর্ঘটনায় স্কুলছাত্রী নিহত
বঙ্গোপসাগরে ভোলার ৬ ট্রলারডুবি: নিখোঁজ ৫৯ জেলে উদ্ধার
তীব্র ঝড়ো আবহাওয়ায় গভীর সাগরে ডুবে যাওয়া ভোলার ছয়টি ট্রলারের নিখোঁজ ৬০ জেলের মধ্যে রবিবার ৫৯ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে।
লালমোহন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পল্লব কুমার বলেন, লালমোহন উপজেলার চতলা গ্রামের আবুল কালাম নামের এক জেলে এখনো নিখোঁজ রয়েছেন।
তিনি বলেন, শুক্রবার সাগরে মাছ ধরতে গিয়ে ছয়টি ট্রলার ডুবে যায়।
ডুবে যাওয়া ট্রলারগুলো হলো- এফভি লামিয়া, মজিবুল শেখের ট্রলার, সাইফুল মাঝির ট্রলার, জাকির মাঝির ট্রলার, নিজামুদ্দিন মাঝির ট্রলার ও নূরুদ্দিন মাঝির ট্রলার।
ইউএনও আরও বলেন, ডুবে যাওয়া ফারুক মাঝির মালিকানাধীন ট্রলার থেকে চার জেলেকে ভারতীয় নৌবাহিনী উদ্ধার করে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করেছেন।
তিনি বলেন, অন্যান্য নিখোঁজদের সুন্দরবন ও হাতিয়ার বিভিন্ন জায়গা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
ইউএনও বলেন, উদ্ধার হওয়া জেলেরা রবিবার অন্য একটি ট্রলারে করে ভোলায় ফিরছেন।
আরও পড়ুন: বঙ্গোপসাগর থেকে ১৩ জেলে উদ্ধার
বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরার ট্রলারডুবি: ১৭ জেলে উদ্ধার
বঙ্গোপসাগরে আটকা পড়া ৭ জেলে উদ্ধার
বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরার ট্রলারডুবি: ১৭ জেলে উদ্ধার
ঝড়ের কবলে পড়ে ভোলার লালমোহন উপজেলার ৬০ জন জেলেসহ মাছ ধরার চারটি ট্রলারডুবির ঘটনায় আরও ১৭ জেলেকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। শনিবার বিকালে উদ্ধার হওয়া ওই জেলেদের চালনাবয়া এলাকা থেকে অন্য একটি ট্রলার ‘এফবি সাগরকন্যা’ মহিপুরে নিয়ে আসে। তবে এখনও ৩০ জেলে নিখোঁজ রয়েছেন।
জানা যায়, উদ্ধার হওয়া এই ১৭ জেলেই কক্সবাজারের ‘এফবি আমজাদ’ নামক ট্রলারের। বঙ্গোপসাগরের চালনার বয়া এলাকা থেকে ঢেউয়ের তোড়ে তাদের ট্রলারের তলা ফেটে তারা ডুবে যায়।
এর আগে শুক্রবার রাতে বঙ্গোপসাগরে কক্সবাজার ফিশিং গ্রাউন্ড পয়েন্টে ৬০ জন জেলেসহ চারটি মাছ ধরার ট্রলার ডুবে যায়। এসময় ১৩ জেলেকে জীবিত উদ্ধার করা হয়।
আরও পড়ুন: বঙ্গোপসাগর উত্তাল: নিরাপদ আশ্রয়ে ফিরছেন জেলেরা
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, লালমোহন বাতির খাল এলাকার হারুন অর রশিদ ফারুকে এফভি লামিয়া, লর্ডহার্ডিঞ্জ বুড়িরধোন এলাকার নূরুউদ্দিন মাঝির ট্রলার ও গাইট্টা এলাকার নাজিম উদ্দিন মাঝির ট্রলারসহ আরও একটি ট্রলার ঝড়ের কবলে পড়ে ডুবে যায়।
লালমোহনে উপজেলা মেরিন ফিশারিজ কর্মকর্তা তানভির আহমেদ সাংবাদিকদের জানান, ডুবে যাওয়া ট্রলারে ৬০জন মাঝি-মাল্লা ছিলেন। এদের মধ্যে ১৩ জনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। পরে খবর নিয়ে উদ্ধার হওয়া জেলেদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া নিখোঁজ জেলেদের সন্ধান চলছে।
ডুবে যাওয়া বাতির খাল এলাকার এফভি লামিয়া নামের একটি ট্রলারের মালিক হারুন অর রশিদ ফারুক জানান, গত ১৭ আগস্ট দুপুরে বাতিরখাল ঘাট থেকে ১৩ জন মাঝি-মাল্লা নিয়ে গভীর সমুদ্রে যায় তার ট্রলার। শুক্রবার রাত ১০ টার দিকে বোটটি হঠাৎ গভীর সাগরে ঝড়ের কবলে পড়ে ডুবে যায়। জেলেদের সন্ধান না পেলেও শনিবার সকালে সুন্দরবন এলাকা থেকে ফোনে জানতে পারেন, অন্য দুটি বোটে আট জন জেলে উদ্ধার হয়েছে। তারা সুন্দরবন এলাকায় আছে। বাকী পাঁচজনের এখনও কোন সন্ধান পাননি বলে জানান এই ট্রলার মালিক।
তার ট্রলারের নিখোঁজ জেলেরা হলেন- আব্দুল মোতালেব, আবুল কালাম, আরিফ, নিরব ও মাকসুদ।
অপর দিকে লালমোহনের লর্ডহার্ডিঞ্জ এলাকার বাকি তিনটি ডুবে যাওয়া ট্রলারের পাঁচজন উদ্ধার হওয়ার পর নোয়াখালীর হাতিয়ায় রয়েছে।
আরও পড়ুন: বঙ্গোপসাগরে ট্রলারডুবি: ৩৪ জেলে নিখোঁজ
বঙ্গোপসাগরে ট্রলারডুবি: ১১ জেলে নিখোঁজ, উদ্ধার ৮
ঝড়ের কবলে লঞ্চ, ৭০ যাত্রী উদ্ধার
বৈরি আবহাওয়ার কবলে আটকে পড়া ঢাকাগামী এম ভি আল-ওয়ালিদ-৯ লঞ্চের ৭০ জন যাত্রীকে উদ্ধার করেছে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড।
শনিবার বেলা সাড়ে ১১ টায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোস্টগার্ড দক্ষিণ জোনের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কে এম শাফিউল কিঞ্জল।
কোস্টগার্ড জানায়, শুক্রবার রাত সোয়া ৯ টার দিকে ভোলার ইলিশা লঞ্চঘাট থেকে এম ভি আল-ওয়ালিদ-৯ লঞ্চটি ৬০ থেকে ৭০ জন যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে। রাতে সোয়া ১২ টার দিকে লঞ্চটি মেহেন্দিগঞ্জের কালিগঞ্জ উলানিয়া লঞ্চঘাটের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় বৈরি আবহাওয়ার কবলে পড়ে। এসময় লঞ্চটি কালিগঞ্জ উলানিয়া লঞ্চঘাটের পল্টুন সংলগ্ন ব্লকের ওপর উঠে যায়।
বিষয়টি কোস্টগার্ড দক্ষিণ জোনের অধীনস্থ কালীগঞ্জ স্টেশনের সদস্যরা অবগত হয় এবং দ্রুততার সঙ্গে ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করেন। এসময় লঞ্চের ৬০-৭০ জন যাত্রীকে উদ্ধার করা হয়।
আরও খবর: বরিশালে পানিতে ডুবে শিশুসহ ২ জনের মৃত্যু
বরিশাল লঞ্চঘাটে ঢাকামুখী মানুষের ঢল
‘টবগী-১’ খনন শুরু, গ্যাস সংকট কাটাতে সহায়তার আশা
দক্ষিণাঞ্চলীয় জেলা ভোলার শাহবাজপুর গ্যাসক্ষেত্রের উন্নয়ন কূপ ‘টবগী-১’ খনন শুরু করেছে পেট্রোবাংলা।
নুতন এ কূপ খননের মাধ্যমে প্রতিদিন ২০ থেকে ২৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়ার আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। দেশীয় গ্যাসের উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে গ্যাস সংকট কাটাতে সহায়তার আশা পেট্রোবাংলার সহযোগী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানির (বাপেক্স)।
রাশিয়ার রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত গ্যাস জায়ান্ট গ্যাজপ্রমকে ‘টবগী-০১’ কূপ খননের জন্য ঠিকাদার হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
বাপেক্স অস্থির বৈশ্বিক তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) বাজারে দেশীয় উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য সরকারের উদ্যোগের একটি অংশ হিসেবে গ্যাজপ্রমকে নিয়োগ করেছে।
শুক্রবার সকালে ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার টবগী ইউনিয়নে নতুন এ কূপ খনন কাজের উদ্বোধন করেন জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. মাহবুবর হোসেন। এসময় পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান ও বাপেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক উপস্থিত ছিলেন।
খনন কাজ উদ্বোধনের পর পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান নাজমুল আহসান জানান, দেশীয় গ্যাস উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। এ কূপটি তিন হাজার ৫০০ মিটার পর্যন্ত গভীরে খনন করা হবে। আজকে যে খনন কাজ শুরু হলো তা থেকে প্রতিদিন ২০ থেকে ২৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়ার আশা করেন তিনি। যা গ্যাস সংকট পূরণে সহায়তা করবে।
বাপেক্সের ব্যববস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলী জানান, গ্যাসের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে এ কূপ খনন তার মধ্যে অন্যতম। খনন কাজের মধ্যদিয়ে গ্যাসের উৎপাদন বাড়ানোর প্রক্রিয়া আরও একধাপ এগিয়ে গেল।
আরও পড়ুন: কৈলাশটিলা গ্যাসক্ষেত্র: ১০ মে থেকে আসবে ১৭-১৯ এমএমসিএফডি গ্যাস
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানান, বাপেক্সে নকশা ও লোকেশন অনুযায়ী আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান রাশিয়ার গ্যাজপ্রম কূপ খনন কাজ পরিচালনা করছে। শাহবাজপুর গ্যাসক্ষেত্রে এর আগে চারটি কূপ ও শাজবাজপুর ইস্ট নামের আরও একটি কূপ খননের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ‘টবগী-০১’ ষষ্ঠ কূপ।
এছাড়াও এর আগে ভোলা সদর উপজেলায় ভোলা নর্থ নামের আরেকটি কূপ খনন করা হয়েছে। এরপর সদর উপজেলার ইলিশা এলাকাসহ আরও দুটি কূপ খনন করা হবে বলে বাপেক্স এমডি জানিয়েছেন। এর মধ্যে শাহবাজপুরের চারটি কূপ থেকে ভোলার বিদ্যুৎ প্লান্ট ও তিন হাজার গ্রাহককে গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে। শাহবাজপুর ও ভোলা নর্থ কূপে দেড় টিসিএফ গ্যাস মজুদ আছে যা আরও বাড়বে বলে আশা বাপেক্সের।
আরও পড়ুন: বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্রে পুনরায় পূর্ণ উৎপাদন শুরু
মেঘনার পানি বিপদসীমার ওপরে, ভোলায় ৮ গ্রাম প্লাবিত
সাগরে নিম্নচাপের প্রভাবে আবারও উপকূলীয় দ্বীপজেলা ভোলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। শনিবার মেঘনার পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এর ফলে ভোলার রাজাপুর ইউনিয়নের কমপক্ষে আটটি গ্রাম প্লাবিত হয়ে প্রায় ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। মেঘনার অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে সকাল বিকাল দুই বেলা ভাসছে ওই এলাকার মানুষ। গত চারদিন ধরে জোয়ারের পানিতে ১৯ ছাগল মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
ভোলার রাজাপুর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য হেলাল উদ্দিন জানান, গত কয়েক দিনের অতি জোয়ারের পানিতে তাদের ইউনিয়নের ৩ নং সামপুর, দাইয়া, মেদুয়া, কন্দকপুর, ৪নং ওয়ার্ড, চর মনোশা একাংশ ও মধ্য সামপুর গ্রাম সকাল ও বিকালে দুই বেলা জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়। বাঁধের ভিতরে ও বাইয়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে করে ৩ থেকে ৪ ফুট পানিতে প্রায় ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। মানুষের দুর্ভোগ এখন চরম আকার ধারণ করেছে।
স্থানীয়রা জানান, বহু মানুষের আমন ধানের জালা খেত নষ্ট হয়ে গেছে। রাস্তাঘাট থেকে শুরু করে মানুষের ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। অসংখ্য পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। গবাদি পশু মারা যাচ্ছে।
সূত্র জানায়, রাজাপুর ইউনিয়নে রনি মাতাব্বরের ছয়টি, করিমের আটটি, বাহাউদ্দিননে তিনটি, রেজাউলের দুটি ছাগাল মারা গেছে। এছাড়াও বহু ছাগল অসুস্থ হয়ে পড়েছে। মাঝের চর, মদপুরসহ চরাঞ্চল জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিবার্হী প্রকৌশলী মোহাম্মদ হাসানুজ্জামান জানান, ভোলায় মেঘনার পানি শনিবার বিপদসীমার ৯৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রভাহিত হচ্ছে। তবে বেড়ি বাঁধ ভেঙে বা উপচে কোথাও পানি প্রবেশের ঘটনা ঘটেনি।
আরও পড়ুন: বঙ্গোসাগরে নিম্নচাপ: ভোলার ১০ গ্রাম প্লাবিত
জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি: বিপাকে ভোলার লক্ষাধিক জেলে
বঙ্গোসাগরে নিম্নচাপ: ভোলার ১০ গ্রাম প্লাবিত
বঙ্গোসাগরে নিম্নচাপ ও পূর্ণিমার প্রভাবে ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার ঢালচর ইউনিয়ন ও মনপুরা ইউনিয়নের অন্তত ১০টি গ্রাম জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এতে করে প্রায় ২২ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।
ঢালচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুস সালাম জানান, অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে প্রায় দেড় হাজার মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। সকাল ১০টা থেকে বিকাল পর্যন্ত প্রায় ৮ ঘন্টা জোয়ারের পানিতে ভাসতে হচ্ছে ঢালচরের মানুষকে। বৃহস্পতিবার সকালে সেখানে গত তিন দিনের মধ্যে সর্বোচ্চ পানি উঠেছে।
তিনি আরও বলেন, জোয়ারের ৪ থেকে ৫ ফুট পানিতে মানুষের ঘর-বাড়ি, রাস্তাঘাট, অন্যান্য প্রতিষ্ঠান তলিয়ে যায়। ভেসে গেছে পুকুরের মাছ। বহু ঘর-বাড়ি ও রাস্তাঘাট বিধ্বস্ত হয়েছে। গবাদি পশুর কি পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা এখনও জানা সম্ভব হয়নি।
অপরদিকে জেলার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা মনপুরার কাউয়ারটেকে ঢাকাগামী লঞ্চ ঘাট এলাকা জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়।
আরও বলুন: বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ: কক্সবাজারে পর্যটকদের সমুদ্রে নামতে নিষেধাজ্ঞা
কলাতলী চরের ইউপি সদস্য মো. রহমান জানান, বেড়ি বাঁধহীন সদ্য ঘোষিত নতুন চর কলাতলী ইউনিয়নের বেশিরভাগ এলাকা ৫ ফুট জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে।
এছাড়াও বিচ্ছিন্ন চরনিজাম, বদনারচর, ঢালচর ও চর শামসুদ্দিনে জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ওই সব চরে বসবাসরত ২০ হাজারের ওপরে মানুষ বুধবার ও বৃহস্পতিবার পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন।
উপজেলার মনপুরা ইউনিয়নের কাউয়ারটেক এলাকার বাসিন্দারা জানান, জোয়ারের পানিতে ঘর-বাড়ি সব ডুবে গেছে। প্রতিদিন জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাই তারা জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা করছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) এর ডিভিশন-২ এর উপসহকারি প্রকৌশলী আবদুর রহমান গণমাধ্যমকে জানান, মেঘনার পানি বুধবার বিপদসীমার ৬৯ সেন্টিমিটার ও বৃহস্পতিবার ৭০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। জোয়ারের পানিতে চরাঞ্চলসহ বেড়ি বাঁধের বাইরের এলাকা চার ফুট জোয়ারে প্লাবিত হয়েছে।
আরও পড়ুন: বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ: বাগেরহাটের নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধি
জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি: বিপাকে ভোলার লক্ষাধিক জেলে
মেঘনা ও তেঁতুলিয়ায় ইলিশ সংকট, তার ওপর হঠাৎ করেই জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছে উপকূলীয় দ্বীপ জেলা ভোলার লক্ষাধিক জেলে।
শুক্রবার রাতে তেলের দাম বৃদ্ধি ঘোষণার পর শনিবার থেকেই অনেক জেলেই মাছ ধরতে যায়নি।
সদরের তুলাতুলি মাছঘাট এলাকায় দেখা গেছে, অনেক জেলে নদী থেকে নৌকা, ট্রলার ও জাল তুলে নিয়েছে। অনেকে আবার ঘাটে অলস সময় পার করছেন। এতে করে মাছের আড়ৎগুলোতে অনেকটা জেলে শূন্য ছিল।
আরও পড়ুন: জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি: চট্টগ্রামে বাস চলাচল বন্ধ
জেলেরা জানান, এমনিতেই নদীতে দিন রাত জাল ফেলেও তেমন একটা ইলিশ পাওয়া যায় না। দুই-চারটি পাওয়া গেলে তা দিয়ে খরচের টাকাও উঠে না। তার ওপর এখন তেলের দাম বৃদ্ধিতে তাদের খরচ আরও বেড়ে গেল। তাই তারা নদীতে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন।
জেলে আমিনুল জানান, শুক্রবার বিকালে ৮৫০ টাকার ১০ লিটার ডিজেল কিনে নদীতে গেছেন। ফিরে এসে মাত্র ৫০০ টাকার মাছ বিক্রি করেছেন। পরদিন সকালে তেলের জন্য গেলে প্রতি লিটার তেল ১১৫ টাকা চাচ্ছে দেখে কন্টেইনার নিয়ে বাড়ি ফিরে যান। এই পরিস্থিতি কী করবেন ভেবে পাচ্ছেন না তিনি।
জেলেরা জানান, তেল ও খাবারসহ কয়েক হাজার টাকার মালামাল নিয়ে নদীতে মাছ ধরতে যেতে হয়। গুটি কয়েক ইলিশ পাওয়া গেলেও তা দিয়ে খরচের টাকাও ওঠে না।
আড়তদার মো. ইউনুছ জানান, তার আড়তে ১২টি জেলে ট্রলার মাছ বিক্রি করে। নদীতে মাছ কম থাকায় আগে থেকেই অর্ধেক ট্রলার নদীতে যায় না। এর মধ্যে তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় শনিবার সকাল থেকে একটি ট্রলারও নদীতে যায়নি।
আরও পড়ুন: জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি: গণপরিবহন বন্ধে দেশজুড়ে যাত্রীদের দুর্ভোগ
ভোলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, ভোলা জেলায় নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা এক লাখ ৪৪ হাজার। এর মধ্যে সাগরে মাছ শিকারে যায় ৬৪ হাজার জেলে। তবে নিবন্ধিন ছাড়াও আরও প্রায় কয়েক হাজার জেলে রয়েছে।
ভোলার জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লা এমদাদুল্যাহ জানান, তেলের মূল্য বৃদ্ধিতে জেলেদের ওপর প্রভাব পড়বেই। কারণ তেলের ওপর নির্ভর করেই জেলেদের নদীতে যেতে হয়। তবে তেলের মূল্য বৃদ্ধিতে মাছের মূল্যও বৃদ্ধি পাবে।
স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা নিহত: ভোলা থানার ওসিসহ ৩৬ পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা
ভোলায় পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের সংর্ঘষে স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মী আব্দুর রহিম নিহত হওয়ার ঘটনায় ভোলা মডেল থানার ওসি (তদন্ত) আরমান হোসেনকে প্রধান আসামি করে ৩৬ জন পুলিশের নামে আদালতে হত্যা মামলা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে ভোলা জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আলী হায়দারের আদালতে নিহত আব্দুর রহিমের স্ত্রী খাদিজা বেগম বাদী হয়ে এই হত্যা মামলা করেন।
মামলার আইনজীবী আমিরুল ইসলাম বাছেত মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মী আব্দুর রহিম নিহত হওয়ার ঘটনায় করা হত্যা মামলায় উল্লেখ করা হয়, ৩১ জুলাই কেন্দ্রীয় বিএনপি কর্মসূচী তেল,গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি ও লোডশেডিং এর প্রতিবাদে বিএনপির বিক্ষোভ মিছিলে অংশগ্রহণকারী স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মী আবদুর রহিম ওসি (তদন্ত) আরমান হোসেনের গুলিতে নিহত হয়। এ ঘটনায় ৩০২ এবং ৩৪ ধারায় নিহতের স্ত্রী খাদিজা বেগম বাদী হয়ে আদালতে ওসি (তদন্ত) আরমান হোসেনসহ ৩৬ জনের নামে হত্যা মামলা করেছেন।
এ ব্যাপারে ভোলা মডেল থানার ওসি (তদন্ত) আরমান হোসেন জানান, তিনি এখনো মামলা বিষয় জানেন না। তিনি বলেন, ‘আমরা ঘটনার দিন সরকারি দায়িত্ব পালন করতে গিয়েছি। আমরা কাউকে আঘাত করার উদ্দেশ্যে যাইনি। তারা বেআইনী সাবেশ করেছে। ইটপাটকেল ছুঁড়ে মেরেছে। আগুন লাগাতে গেছে। বিএনপির লোকজন ইটপাটকেল ছুঁড়েছে। আমাদের পুলিশকে গুলি করেছে। পুলিশ আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে।’
আরও পড়ুন: ভোলায় বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষ: ঢাকায় ছাত্রদল নেতার মৃত্যু
ছাত্রদল নেতার মৃত্যু: ভোলায় চলছে বিএনপির হরতাল