ড. এ কে আব্দুল মোমেন
জাতীয় নির্বাচন: মোমেন, ইমরানের সম্পদ বেড়েছে, কমেছে নাহিদের
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে সিলেটের ছয়টি আসনে হলফনামা জমা দিয়েছেন প্রার্থীরা।
তাদের মধ্যে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান দুই মন্ত্রী ও সাবেক এক মন্ত্রীও হলফনামায় সম্পদের বিবরণ দিয়েছেন নির্বাচন কমিশনে (ইসি)।
হলফনামা ঘেঁটে দেখা গেছে, একাদশ জাতীয় সংসদের তুলনায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রভাবশালী এ তিন প্রার্থীর সম্পদ বিবরণীতে এসেছে বড় পরিবর্তন।
বর্তমান দুই মন্ত্রীর সম্পদ বাড়লেও কমেছে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের।
সিলেট-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের বাৎসরিক আয় কমেছে ৯ লাখ ৭০ হাজার ১৯৫ টাকা।
তবে অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ বেড়েছে ৩ কোটি ৯৩ লাখ ৫৪ হাজার ৫০৬ টাকার। তার স্থাবর সম্পদও বেড়েছে ৫৭ লাখ ৫১ হাজার ৭১০ টাকার। আর স্ত্রীর নামে আগে ১৩ লাখ টাকার অস্থাবর সম্পদ ছিল, এখনও ততটুকুই আছে।
স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী ড. এ কে আব্দুল মোমেন হলফনামায় পেশা হিসেবে দেখিয়েছেন রাজনীতি ও অন্যান্য। আয়ের উৎস বাড়ি, অ্যাপার্টমেন্ট, দোকান বা অন্যান্য ভাড়া বাবদ ৩ লাখ ৯৮ হাজার ৪২৪ টাকা দেখিয়েছেন। পেশা থেকে বছরে আয় ১২ লাখ ৬০ হাজার টাকা, ব্যাংকের মুনাফা বাবদ ৯ লাখ ৬০ হাজার ৫৫২ টাকা আয়।
আরও পড়ুন: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন: ৪৭ জন ইউএনও বদলির অনুমোদন ইসির
অস্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে নগদ ৩৪ লাখ ২৩ হাজার ২৪১ টাকা, আর্থিক প্রতিষ্ঠানে নিজ নামে জমা ৩ কোটি ৯৬ লাখ ১০ হাজার ৬৯৫ টাকা, শেয়ার ৮ লাখ টাকার, সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ ১০ লাখ টাকা, যানবাহন দেখিয়েছেন ২০ লাখ টাকার, স্বর্ণালংকার স্ত্রীর নামে ৫ লাখ টাকা, ইলেকট্রনিক সামগ্রী ৫ লাখ, স্ত্রীর নামে আসবাবপত্র ৩ লাখ টাকার এবং নিজ নামে অন্যান্য আয় ৫ লাখ ৭৭ হাজার ৯১ টাকা দেখিয়েছেন।
স্থাবর সম্পদের মধ্যে অকৃষি জমি অর্জনকালীন মূল্য দেখিয়েছেন ২২ লাখ ৫০ হাজার টাকা, দালান-কোঠা অর্জনকালীন মূল্য ১৯ লাখ ৭৫ হাজার ৮৮৫ টাকা, বাড়ি/অ্যাপার্টমেন্টের অর্জনকালীন দাম ৪ কোটি ১৯ লাখ ৩১ হাজার ৮২৫ টাকা।
ব্যাংকে দায়দেনা ও মামলা নেই তার। আর গত ৫ বছরে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির মধ্যে দেখিয়েছেন ঢাকা-সিলেট ৬ লেন রাস্তার কাজ চলমান, সিলেট-কুমারগাঁও ও বাধাঘাট-এয়ারপোর্ট ৪ লেন রাস্তার কাজ চলমান, ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের কাজ প্রায় শেষের পথে।
সিলেট-৪ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য সরকারের প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদের বাৎসরিক আয় বেড়েছে ১৪ লাখ ৮৮ হাজার ৮২৮ টাকা। সেই সঙ্গে অস্থাবর সম্পদ বেড়েছে ৪ কোটি ৫২ লাখ ৮৫ হাজার ৮৭১ টাকার।
স্ত্রীর নামে অস্থাবর সম্পদ ৫ কোটি ৭৬ লাখ ৯৫ হাজার ৭৩ টাকা দেখিয়েছেন হলফনামায়। একাদশ সংসদ নির্বাচনকালীন হলফনামায় স্ত্রীর নামে স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ছিল ২ কোটি ৭৪ লাখ ৩৭ হাজার ৩৬৪ টাকা। সে হিসেবে মন্ত্রীর স্ত্রীর সম্পদ বেড়েছে ৩ কোটি ৩ লাখ ৫৭ হাজার ৭০৯ টাকার।
ইমরান আহমদের শিক্ষাগত যোগ্যতা বিএ অনার্স। পেশায় চা ব্যবসায়ী ও পরামর্শক। হলফনামায় বছরে আয় দেখিয়েছেন ৬ লাখ ৬৩ হাজার ৩৮০ টাকা। শেয়ার-সঞ্চয়পত্রে আমানত ৩ লাখ ৩১ হাজার ২০০ টাকা, চাকরি থেকে আয় ৩২ লাখ ৮৪ হাজার ১৯৬ টাকা, ব্যাংক সুদ থেকে প্রাপ্ত ১ লাখ ৬১ হাজার ৪৭৫ টাকা।
অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নগদ আছে ৩১ লাখ ৫৫ হাজার ১৯ টাকা। আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমার পরিমাণ ১ কোটি ৫৭ লাখ ৫৭ হাজার ৪০৭ টাকা, স্ত্রীর নামে আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা ৩ কোটি ৫৭ লাখ ৮৩ হাজার ৯ টাকা, ২ লাখ ৬২ হাজার ও ৭ লাখ টাকা শেয়ারে বিনিয়োগ আছে।
আরও পড়ুন: নির্বাচন নিরপেক্ষ করতে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের ইসির নির্দেশ
যানবাহন আছে ৪৭ লাখ ৭০ হাজার ৫৩৫ টাকা মূল্যের প্রাডো জিপ নিজ নামে, স্ত্রীর নামে আছে দুইটি গাড়ি ১৬ লাখ ২২ হাজার ও ২৬ লাখ ১৫ হাজার টাকা মূল্যের। স্বর্ণালংকার আছে স্ত্রীর নামে ৫০ হাজার টাকার। ইলেকট্রনিক সামগ্রী ও আসবাবপত্র নিজ নামে ৯০ হাজার টাকার এবং অন্যান্য ব্যবসায় বিনিয়োগ ১ কোটি ২৯ লাখ ২৫৮ টাকা।
স্থাবর সম্পদ রয়েছে কৃষি জমি ৪ দশমিক ৪৭ একর পৈত্রিক সূত্রে এবং স্ত্রীর নামে ৭৫ লাখ ১৮ হাজার ৫৬০ টাকা মূল্যের ১০৫ শতক, অকৃষিজ জমি নিজ নামে ৪ দশমিক ৫ একর, যার ক্রয়কালীন মূল্য ৫৫ হাজার টাকা, স্ত্রীর নামে ৫ কাটা জমি ১ লাখ ৫০ হাজার টাকার। ২৫ শতক জায়গাতে স্ত্রীর নামে ৬ তলা বাড়ি ১ কোটি ১ লাখ ৫৬ হাজার ৫০৪ টাকা মূল্যের, রয়েছে চা ও রাবার বাগান এবং মৎস্য খামার। তবে ব্যাংকে দেনা ও মামলা নেই তার।
সিলেট-৬ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের শিক্ষাগত যোগ্যতা বিএ। পেশা দেখিয়েছেন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে সংসদ সদস্য, সভাপতি, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটি।
তিনি বছরে আয় দেখিয়েছেন ৫০ লাখ ৩০ হাজার ১১৩ টাকা, যা গত নির্বাচনে দেখিয়েছিলেন ৩২ লাখ ১০ হাজার ৪১০ টাকা। অস্থাবর সম্পদ দেখিয়েছেন ১ কোটি ৯ লাখ ৯৩ হাজার ১৩২ টাকার। একাদশ সংসদ নির্বাচনে অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ছিল ২ কোটি ১৬ লাখ ৩৩ হাজার ৩৯ টাকা।
এবার স্থাবর সম্পদ দেখিয়েছেন ২২ লাখ ২৮ হাজার ৪৪০ টাকার। গত নির্বাচনে স্থাবর সম্পদ দেখান ৬৬ লাখ ৪৮ হাজার ৪৪০ টাকার।
আরও পড়ুন: ময়মনসিংহের ডিসিকে প্রত্যাহার, সুনামগঞ্জের ডিসিকে বদলির নির্দেশ ইসির
ক্রীড়াক্ষেত্রে মণিপুরীরা সুনামের সঙ্গে অবদান রাখছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ক্রীড়াক্ষেত্রে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মণিপুরীরা সুনামের সঙ্গে অবদান রাখছে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
একই সঙ্গে তাদের ক্রীড়ানৈপুণ্য ও আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নে সরকার কাজ করছে বলে জানান তিনি।
শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) তিনি সিলেটের আবুল মাল আব্দুল মুহিত ক্রীড়া কমপ্লেক্সে মাহা বাংলাদেশ আন্তঃ মণিপুরী ফুটবল চ্যাম্পিয়ন ট্রফির পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ মণিপুরী স্পোটর্স অ্যাসোসিয়েশন এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সিলেটে চারটি খেলার মাঠ বানানোর পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। ইতোমধ্যে দুটি মাঠের অনুমোদন পাওয়া গেছে।
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগ আবারও বিজয়ী হবে আশাবাদ পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেনের
পারস্পরিক সহমর্মিতা-বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে: মোমেন
পারস্পরিক সহমর্মিতা ও বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
তিনি বলেন, সব মানুষ এক মহান সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব। সব ধর্মের অনুসারীদের মধ্যে পারস্পরিক সহমর্মিতা ও বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে।
শনিবার (২৫ নভেম্বর) সিলেট জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট আয়োজিত পুরোহিত ও সেবাইত সম্মেলন ২০২৩- এ প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন মোমেন।
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগ দেশের উন্নয়নকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
মন্ত্রী বলেন, মানবতাকে আমাদের সবকিছুর উপরে স্থান দিতে হবে।
এক ধর্ম সম্পর্কে অন্য ধর্মের অনুসারীদের জানা ও বোঝার চেষ্টা বাড়ানোর উপর গুরুত্বারোপ করে মোমেন বলেন, এই দেশ সবার। আমরা সবাইকে নিয়েই বঙ্গবন্ধুর উন্নত সমৃদ্ধ ও অসাম্প্রদায়িক সোনার বাংলা গড়তে চাই।
ধর্মীয় ও আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে পুরোহিত ও সেবাইতদের দক্ষতা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের পরিচালক অধ্যাপক শিখা চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ছিলেন ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব মু. আ. হামিদ জমাদ্দার, সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) হোসাইন মো. আল-জুনায়েদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদীপ দাশ, হিন্দু কল্যাণ বোর্ডের ট্রাস্টি অশোক মাধব রায় ও ইঞ্জিনিয়ার পি. কে. চৌধুরী এবং হিন্দু কল্যাণ বোর্ডের সচিব ড. কৃষ্ণেন্দু কুমার পাল।
আরও পড়ুন: যথাসময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, পেছানো হবে না: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
নির্বাচন কেন্দ্রিক সহিংসতা বন্ধে সব দলকে আন্তরিক হতে হবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
'মার্কিন প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা' দাবি করা ব্যক্তিকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করা উচিত: মোমেন
‘মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের উপদেষ্টা’ দাবি করা ব্যক্তি সম্পর্কে রবিবার (২৯ অক্টোবর) পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, কোনো ব্যক্তি সহিংসতার আহ্বান জানালে অবিলম্বে তাকে গ্রেপ্তার করা উচিত, সে যে দেশেরই হোক না কেন।
মিয়া জাহিদুল ইসলাম আরেফির বিষয়ে তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার ব্যক্তিগত মতামত হলো যেই সহিংসতার আহ্বান জানায়, তাকে গ্রেপ্তার করা উচিত। আমি সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলব।’
রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে আহতদের দেখার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় মোমেন এসব কথা বলেন।
আরেফি নিজেকে ‘মার্কিন প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা’ হিসেবে পরিচয় দিয়েছিলেন এবং গতকাল শনিবার তিনি বিএনপির সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যে দলের নেতা-কর্মীরা পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা করেছে, তাদের লজ্জিত হওয়া উচিত। ‘এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। তাদের প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়া উচিত।’
মোমেন বলেন, নিরাপত্তাকর্মীদের উপর এ ধরনের হামলা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। ‘তাদের (হামলাকারীদের) দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া উচিত, যাতে কেউ এই ধরনের হামলার পুনরাবৃত্তি করতে সাহস না পায়।’
আরেফি সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন বোকা নন, যে এই ধরনের লোককে এখানে পাঠাবেন। ‘আমি এটা বিশ্বাস করি না।’
‘জো বাইডেনের উপদেষ্টা’ হিসেবে পরিচয় দেওয়া মিয়া আরেফিকে বিএনপি নেতারা ঢাকায় দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নিয়ে আসেন এবং একটি সংবাদ সম্মেলন করেন।
আরও পড়ুন: চ্যালেঞ্জ নিতে চাই এবং মোকাবিলা করতে প্রস্তুত: মোমেন
চীনকে হারাতে চাইলে টাকার ঝুড়ি ও সাশ্রয়ী প্রস্তাব নিয়ে আসুন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন শনিবার (২৮ অক্টোবর) বলেছেন, চীনকে পরাজিত করতে চাইলে অন্যান্য দেশের ভয় দেখানো ও উপদেশ দেওয়ার পরিবর্তে টাকার ঝুড়ি ও সাশ্রয়ী মূল্যের প্রস্তাব নিয়ে আসা উচিত।
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘আপনারা যদি চীনকে হারাতে চান, তাহলে আপনাদেরও চীনাদের মতো টাকার ঝুড়ি ও সাশ্রয়ী মূল্যের প্রস্তাব নিয়ে আসা উচিত। শুধু উপদেশই আমাদের সন্তুষ্ট করে না।’
তিনি সাম্প্রতিক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ উভয় সফরে এই কথা বলেছেন বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
এর আগে তিনি ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ‘নেভিগেটিং চ্যালেঞ্জস: বাংলাদেশ’স রেসপন্স টু দ্য কারেন্ট গ্লোবাল সিচুয়েশন’- শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।
কূটনৈতিক ম্যাগাজিন ডিপ্লোম্যাটস ওয়ার্ল্ড সেমিনারের আয়োজন করে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ইউরোপ সফরকে ‘অত্যন্ত সফল’ উল্লেখ করে মোমেন বলেন, ইউরোপীয় দেশগুলো বাংলাদেশের কথা শুনেছে এবং তারা এখন তহবিল নিয়ে আসছে।
তিনি বলেন, ইউরোপীয় নেতারা বাংলাদেশের নেতৃত্ব ও উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।
তিনি আরও বলেন, এটি বাংলাদেশের জন্য একটি বড় অর্জন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে সব ধর্মের নাগরিকের অধিকার সমান: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
মোমেন বলেন, মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের নামে চাপ সৃষ্টি করে অনেক দেশ তাদের পণ্য বিক্রি করতে চায়।
তিনি বলেন, জনগণের কল্যাণ নিশ্চিত করাকে অগ্রাধিকার দেওয়ায় বাংলাদেশ এখন সামরিক সরঞ্জাম কিনতে চায় না।
২০২১ থেকে ২০২৭ সাল পর্যন্ত তারা ৩০০ বিলিয়ন ইউরো পর্যন্ত সরকারি ও বেসরকারি বিনিয়োগের জন্য, নির্ভরশীলতার পরিবর্তে অপরিহার্য সংযোগ স্থাপন করা এবং বিশ্বব্যাপী বিনিয়োগের ঘাটতি বন্ধ করা তাদের লক্ষ্য।
ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লেন বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরামে ইইউ ও বাংলাদেশের সম্পর্ক জোরদার ও উন্নয়নের লক্ষ্যে একটি নতুন অংশীদারিত্ব ও সহযোগিতা চুক্তি নিয়ে আলোচনার সূচনা করেন।
এই উপলক্ষে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতের টেকসই সবুজ পরিবর্তনে অবদান রাখার জন্য নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রকল্পের জন্য ৪০০ মিলিয়ন ইউরো মূল্যের চুক্তি সই করেছে ইইউ, ইউরোপিয়ান ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (ইআইবি) ও বাংলাদেশ। এটি দেশের জলবায়ু প্রশমন লক্ষ্যমাত্রা পূরণেরও লক্ষ্য।
৭০ মিলিয়ন ইউরো মূল্যের শিক্ষা সহায়তা, ভালো কাজ, সবুজ নির্মাণ, ই-গভর্নেন্স ও লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধ এই পাঁচটি অতিরিক্ত সহযোগিতামূলক কর্মকাণ্ড চালু করা হয়েছিল।
প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লেন বলেন, ‘ইইউ ও বাংলাদেশ ৫০ বছর ধরে নির্ভরযোগ্য ও বিশ্বস্ত অংশীদার। এখন আমরা গ্লোবাল গেটওয়ের অধীনে সবুজ পরিবর্তনের সুযোগগুলো কাজে লাগাতে, এই অংশীদারিত্বকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। ইউরোপীয় কমিশন, ইআইবি ও বাংলাদেশ নবায়নযোগ্য জ্বালানিকে সমর্থন করতে এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা বাহিনীতে যোগ দেবে। এই ৪০০ মিলিয়ন ইউরো বিনিয়োগ বাংলাদেশের জনগণ এবং এর অর্থনীতির জন্য একটি পরিবর্তন সৃষ্টি করবে।’
আরও পড়ুন: আমরা এগুলোকে গুরুত্ব দিই না: বিএনপির কর্মসূচি সম্পর্কে পররাষ্ট্রমন্ত্রী
গুরুত্বপূর্ণ সময়ে প্রধানমন্ত্রীর ব্রাসেলস সফর বাংলাদেশ-ইইউ সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
আমরা এগুলোকে গুরুত্ব দিই না: বিএনপির কর্মসূচি সম্পর্কে পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন রবিবার (২২ অক্টোবর) বলেছেন, সরকার বিএনপির ২৮ অক্টোবরের কর্মসূচিকে খুব বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে না। এটিও ১০ ডিসেম্বর মতোই একটি কর্মসূচি।
তিনি বলেন, ‘এগুলো (এই ধরনের কর্মসূচি) আসে আর যায়। এগুলোকে আমরা গুরুত্ব দিই না। আমরা এটা নিয়ে চিন্তিত নই।’
রবিবার (২২ অক্টোবর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
এর আগে রবিবার তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, আগামী ২৮ অক্টোবর ঢাকার রাজপথ আওয়ামী লীগের নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
একই দিন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ২৮ অক্টোবর তাদের দলের ঢাকায় মহাসমাবেশ করার পরিকল্পনা আছে, রাজপথ দখল করার নয়।
আরও পড়ুন: বিদেশিদের ‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’ চলচ্চিত্রটি দেখা উচিত: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী সবাইকে গুজবে কান না দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, দেশের মানুষ অশিক্ষিত নয় যে তারা এগুলো বিশ্বাস করবে। ‘মানুষ যথেষ্ট স্মার্ট ও বুদ্ধিমান। তারা জ্ঞানী।’
মোমেন বলেন, খালি কলসি বাজে বেশি এবং কিছু লোক সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘প্রথমত আমি বলতে চাই গুজবে কান দেবেন না। আমরা প্রায়ই এই ধরনের গুজব শুনতে পাই।’
মোমেন বলেন, এমনকি একটি দল গুজব ছড়ায় যে সজীব ওয়াজেদ জয়কে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়তে হবে এবং তার সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ‘কত বড় মিথ্যা!’
তিনি বলেন, মনে হচ্ছে আজকাল খুব বেশি অপপ্রচার হচ্ছে এবং যারা গুজব ছড়াচ্ছে কিছু গণমাধ্যম তাদের সাহায্য করছে।
আরও পড়ুন: অশুভ শক্তিকে পরাজিত করে সুন্দর বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংঘাতের কোনো প্রভাব বাংলাদেশে পড়বে না: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
শক্তিশালী, স্থিতিশীল, স্বনির্ভর বাংলাদেশ ভারতের জন্য সর্বোত্তম নিরাপত্তা গ্যারান্টি দিতে পারে: মোমেন
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, যে বাংলাদেশের একটি স্থিতিশীল আর্থ-সামাজিক অবস্থা ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ককে একটি নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারে এবং ভারতের জন্য সর্বোত্তম নিরাপত্তা গ্যারান্টি নিশ্চিত করতে পারে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সম্পদ ও কর্মশক্তিকে কার্যকরভাবে একীভূত করতে, সহযোগিতার জন্য জনসমর্থনকে একত্র করতে এবং উপ-অঞ্চলের পূর্ণ পুনরুজ্জীবন অর্জনের জন্য উন্নয়নই বাংলাদেশের অগ্রাধিকার হওয়া উচিত।
শুক্রবার সিলেটে একটি উৎসবে তিনি বলেন, ‘আমাদের সুযোগ অফুরন্ত- একবার আমরা (সম্পূর্ণ) উপলব্ধি করতে পারলে, এটি সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে আরও উচ্চতায় নিয়ে যেতে ব্যাপক অবদান রাখবে।’
সিলেট-শিলচর উৎসব হল দুটি শহরকে যুক্ত করার উৎসব: সিলেট ও শিলচর।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এই বিবৃতি দিয়েছেন কারণ আঞ্চলিক এই দুই দেশ তুলনামূলক ও পরিপূরক প্রতিযোগিতার পূর্ণ সুবিধা গ্রহণ করে স্বার্থ ও ভাগ্যের একটি অত্যন্ত পরস্পর নির্ভরশীল সম্প্রদায়ে পরিণত হয়েছে।
মোমেন আশা প্রকাশ করেন, অভিন্ন সংস্কৃতি, একই ধরনের খাবার এবং দুই দেশের অভিন্ন আকাঙ্খা প্রদর্শনের মাধ্যমে সিলেট-শিলচর উৎসব বিশেষ করে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে সম্পর্ক আরও মজবুত করতে খুবই কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।
মন্ত্রী বলেন, উৎসবটি উভয় পক্ষের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের একসঙ্গে শান্তি ও সমৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা ও পর্যালোচনা করতে এবং বিশ্বাস ও বোঝাপড়া তৈরি করতে পারে।
মোমেন বলেন, ‘আমাদের ভাগ্য ওতপ্রোতভাবে জড়িত এবং আমাদের ভবিষ্যৎ ভাগ করা সমৃদ্ধির উপর ভিত্তি করে রচিত। বাংলাদেশ একটি বৈশ্বিক শক্তি হিসেবে ভারতের উত্থানকে তার নিজের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার একটি বড় সুযোগ বলে মনে করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘একটি শক্তিশালী, স্থিতিশীল ও স্বনির্ভর বাংলাদেশ’ ভারতের জন্য সর্বোত্তম নিরাপত্তা গ্যারান্টি নিশ্চিত করতে পারে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কে কোনো টানাপোড়েন নেই: পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন
দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে কৌশলগত অংশীদারিত্ব 'শান্তিপূর্ণ অঞ্চল' তৈরি করতে পারে: মোমেন
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) বলেছেন, যৌথ শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য কৌশলগত অংশীদারিত্ব দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিবেশীদের মধ্যে সহযোগিতায় একটি শান্তিপূর্ণ অঞ্চল প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করতে পারে।
তিনি বলেন, ‘যদি আমরা ভাগ করে নেওয়া সমৃদ্ধির কথা চিন্তা করি, তবে আমাদের প্রতিবেশীদের সঙ্গে নিয়ে এগোতে হবে।’
মোমেন বলেন, বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার বন্ধুত্বপূর্ণ প্রতিবেশীদের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়া সমৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতার নীতি অনুসরণ করছে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় তারা শান্তির সংস্কৃতি প্রচারের মাধ্যমে এ অঞ্চলে অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের পক্ষে কথা বলছেন।
১১তম বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সংলাপ-২০২৩-এর উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মোমেন বলেন, বাংলাদেশ ‘আত্মবিশ্বাস’ নিয়ে ‘এগিয়ে’ যাচ্ছে। ‘নিঃসন্দেহে ভারত এই অঞ্চলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দেশ এবং বাংলাদেশ অবশ্যই নিজেকে এই অঞ্চলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দেশ হিসেবে দাবি করতে পারে।’
তিনি বলেন, এই দুই প্রতিবেশীর অংশীদারিত্ব এই দেশগুলোর পাশাপাশি এই অঞ্চলে শান্তি ও সমৃদ্ধি আনতে গুরুত্বপূর্ণ।
মোমেন বলেন, ‘আমরা আমাদের যাত্রায় ভারতের সঙ্গে আমাদের সহযোগিতা ও সহায়তা জোরদার করার ওপর জোর দিচ্ছি।’
আরও পড়ুন: সিলেটে বাংলাদেশ-ভারত ফ্রেন্ডশিপ সংলাপ শুরু বৃহস্পতিবার
ভুল তথ্য-অপপ্রচার মোকাবিলা করতে প্রবাসীদের প্রতি মোমেনের আহ্বান
দেশের জন্য সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে বাংলাদেশি প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
তাদের সত্য তথ্য ও পরিসংখ্যান দিয়ে ভুল তথ্য ও অপপ্রচারের বিরুদ্ধে লড়াই করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
তিনি বাংলাদেশকে বিশ্বের সঙ্গে সংযুক্ত করতে তাদের ভূমিকার প্রশংসা করেন এবং তাদের দেশের অর্জনগুলো তুলে ধরার আহ্বান জানান।
সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রবিবার নিউইয়র্কের কুইন্সের সেন্টার ফর নন-রেসিডেন্ট বাংলাদেশির উদ্যোগে আয়োজিত ‘ব্র্যান্ডিং বাংলাদেশ থ্রু ইউএন পিসকিপিং অ্যান্ড এনআরবি’-শীর্ষক অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
ড. মোমেন বাণিজ্য ও অভিন্ন মূল্যবোধ উভয় ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার শক্তিশালী সম্পর্কের ওপর জোর দেন।
তিনি প্রবাসীদের দেশের সঙ্গে সংযুক্ত থাকতে এবং উভয় দেশের আর্থ-সামাজিক অগ্রগতিতে অবদান রাখতে উৎসাহিত করেন।
ড. মোমেন বাংলাদেশে সহনশীলতার কথা তুলে ধরেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় তা (সহনশীলতা) প্রকাশ পায়; সেসময় জাতিগত নিপীড়ন, অবিচার ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে দেশবাসী দৃঢ়ভাবে রুখে দাঁড়িয়েছিল। শেষ পর্যন্ত ৩০ লাখ মানুষের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা অর্জন করেছিল।’
তিনি বলেন, ‘এই সংগ্রাম বাঙালি জাতির সাহস ও আত্মত্যাগের দৃষ্টান্ত।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কে কোনো টানাপোড়েন নেই: পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন
তিনি দুর্ভিক্ষ ও জলবায়ু বিপর্যয়সহ স্বাধীনতার পরের চ্যালেঞ্জগুলো স্বীকার করেছেন, যার ফলে পশ্চিমারা বাংলাদেশকে ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ হিসেবে অভিহিত করেছিল।
মোমেন বলেন, ‘তবে কয়েক বছর ধরে, বাংলাদেশ একটি প্রাণবন্ত অর্থনীতিতে বিকশিত হয়েছে। রপ্তানি ও জিডিপিতে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি এর সাক্ষী। এটি এখন বিশ্বব্যাপী ৩৫তম বৃহত্তম অর্থনীতি হিসেবে দাঁড়িয়েছে, উল্লেখযোগ্যভাবে দারিদ্র্য হ্রাস করেছে এবং বিভিন্ন সামাজিক সূচকে উন্নতি করেছে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫-১৯৯০ সালে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৩ দশমিক ২ শতাংশ। এখন গড় প্রবৃদ্ধির হার ৬ দশমিক ৮ শতাংশ।
তিনি বলেন, ২০০১-২০০৬ সময়কালে বাংলাদেশকে ‘উগ্রবাদ, জিহাদি ও সন্ত্রাসের ঘাঁটি’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল। সুখবর হলো এখন আর সেদিন নেই।
তিনি বলেন, জাতির পিতার জঘন্য হত্যাকাণ্ডের পর কুখ্যাত ইনডেমনিটি আইন প্রণয়ন করা হয়। যা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত খুনিদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে বরং নজিরবিহীন আইনি দায়মুক্তি দেয়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, খুনিদের সম্মানজনক চাকরি ও পদে ভূষিত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: সবার সহযোগিতা ছাড়া সহিংসতামুক্ত নির্বাচনের নিশ্চয়তা দিতে পারবে না সরকার: মোমেন
ড. মোমেন বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে চিহ্নিত করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করেন।
তিনি বলেন, ‘তার নির্দেশনায় বাংলাদেশ আর্থ-সামাজিক সূচক, জলবায়ু কূটনীতি এবং মানবিক প্রচেষ্টায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছে।’
ড. মোমেন জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে শীর্ষ অবদানকারী হিসেবে বাংলাদেশের ভূমিকা তুলে ধরে শান্তি ও নিরাপত্তার প্রতি বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতির ওপর জোর দেন।
তিনি ১২ মিলিয়ন বাংলাদেশি প্রবাসীর অমূল্য অবদানের স্বীকৃতি দিয়েছেন। যারা রেমিট্যান্স এবং বিভিন্ন খাতে অবদানের মাধ্যমে তাদের দেশকে সমর্থন করে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান, সেন্টার ফর এনআরবি’র চেয়ারপার্সন এম এস শেকিল চৌধুরী, ইউএস অ্যাম্বাসেডর অব পিস, ইউএন অ্যান্ড এক্সপার্ট ডব্লিউএইচও ড. সিমা কারেতনয়া, নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কনসাল জেনারেল নাজমুল হুদা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: ‘বন্ধু পরামর্শ দিতে পারে’: মোমেন
মন্তব্য করার আগে সাইবার নিরাপত্তা আইন পড়ুন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন সংসদে পাস হওয়া সাইবার নিরাপত্তা বিল-২০২৩ পড়ার পরামর্শ দিয়েছেন। কারণ সরকার মনে করে এই আইন নিয়ে যেসব উদ্বেগ ছিল, সেগুলোর সমাধান করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আগে আইনটি পড়ুন।’
মোমেন প্রশ্নকর্তাকে জিজ্ঞাসা করেন, কেউ ইন্টারনেটে তার মা বা বোন সম্পর্কে খারাপ কিছু লিখলে তিনি কী করবেন?
তিনি বলেন, মানুষ আইনের সমালোচনা করলেও, কোনো সমস্যায় পড়লে সমাধানের জন্য এটিই ব্যবহার করে।
ব্রিফিংয়ে উপস্থিত পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেন, আগের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে কেন্দ্র করে সব উদ্বেগের সমাধান করা হয়েছে এবং নতুন সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্টে যথাযথভাবে স্থান দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা সত্যিই আশা করি সবাই এটাকে ভালোভাবে গ্রহণ করবে।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের তুলনায় পশ্চিমা বিশ্বে অনেক কুখ্যাত আইন এবং জ্ঞানের অভাবে সঠিক তুলনা বাস্তবে দেখা যায় না।
তিনি আরও বলেন, ‘দয়া করে তুলনা করে তারপর মন্তব্য করুন।’
চারটি ধারায় অপরাধকে জামিন অযোগ্য রেখে সংসদে বুধবার পাস করা হয়েছে সাইবার সিকিউরিটি বিল-২০২৩।
এটি বহুল আলোচিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের স্থলে প্রতিস্থাপনের প্রস্তাব করা হয়েছে। যেখানে ১৪টি ধারার অধীনে অপরাধ জামিন অযোগ্য ছিল।
বিল অনুযায়ী, পুলিশ পরিদর্শক পদমর্যাদার কর্মকর্তারা কোনো পরোয়ানা ছাড়াই কাউকে তল্লাশি ও গ্রেপ্তারের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। তবে মিথ্যা মামলা হলে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য করে শাস্তিরও বিধান রাখা হয়েছে।
চারটি জামিন অযোগ্য অপরাধ হলো- কম্পিউটারের প্রধান তথ্য পরিকাঠামোতে অনুপ্রবেশ, কম্পিউটার সিস্টেমের ক্ষতি, সাইবার সন্ত্রাসী কার্যকলাপ এবং হ্যাকিং সম্পর্কিত অপরাধের সঙ্গে সম্পর্কিত।
আইনে চারটি ধারার অপরাধ জামিন অযোগ্য রাখা হয়েছে।
ধারা-১৭ তে রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য অবকাঠামো ও অন্যান্য ক্ষেত্রে অনুপ্রবেশ সংক্রান্ত অপরাধের বিধান,ধারা-১৯ -এ রয়েছে কম্পিউটার ও কম্পিউটার সিস্টেমের ক্ষতি সাধনের বিষয়টি, ধারা-২৭ এ রয়েছে সাইবার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও এ ধরনের অপরাধ সংঘটনের বিষয়টি এবং ধারা-৩৩ এ রয়েছে হ্যাকিং সম্পর্কিত অপরাধের বিষয়।
ইতোমধ্যে দায়ের করা মামলাগুলো বিদ্যমান আইন- ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অধীনে চলবে কারণ প্রস্তাবিত আইনে একটি বিধান যুক্ত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: সাইবার নিরাপত্তা বিল-২০২৩ সংসদে পাস
মার্কিন প্রতিক্রিয়া
বাংলাদেশের সংসদে নতুন সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট পাসের বিষয়টি উল্লেখ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
বৃহস্পতিবার মার্কিন দূতাবাস বলেছে, ‘আমরা দুঃখিত যে নতুন আইনটি যাতে আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ হয় তা নিশ্চিত করার জন্য পর্যালোচনা ও ইনপুট দেওয়ার মতো পর্যাপ্ত সুযোগ বাংলাদেশ সরকার অংশীজনদের দেয়নি।’
দুর্ভাগ্যবশত তারা বলেছে, সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্টে তার পূর্বসূরি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অনেক ধারা থেকে যাচ্ছে।
নতুন আইনেও মত প্রকাশের স্বাধীনতায় বাধা রয়েছে, জামিন অযোগ্য অপরাধ রয়েছে এবং সমালোচকদের আটক, গ্রেপ্তার ও তাদের মুখ বন্ধ করার জন্য খুব সহজেই এই আইনের অপব্যবহার করা যেতে পারে।
প্রস্তাবিত রেজোলিউশন
ইউরোপীয় পার্লামেন্ট বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির অবনতির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে একটি যৌথ নন-লেজিসলেটিভ রেজোলিউশন প্রস্তাব উত্থাপন করেছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কোনো অপপ্রচার হলে সরকার চোখ বন্ধ করে বসে থাকতে পারে না।
তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করি কমন সেন্স প্রাধান্য পাবে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন বলেন, যারা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছেন তা তাদের ব্যাপার, কিন্তু বাংলাদেশ ইতিবাচক কাজের বিষয়ে মনোযোগ দিচ্ছে।
আরও পড়ুন: সাইবার নিরাপত্তা আইনের ৪২ ধারার প্রয়োজন আছে: আইনমন্ত্রী
সাইবার নিরাপত্তা আইনের খসড়া চূড়ান্ত করার আগে অংশীজনদের মতামত নেওয়া হবে: আইনমন্ত্রী