কুড়িগ্রাম
বখাটের অপমান সইতে না পেরে কিশোরীর আত্মহত্যা!
কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারীতে রবিবার সকালের বখাটের অপমান সইতে না পেরে গলায় ফাঁস দিয়ে ১৬ বছরের এক কিশোরীর আত্মহত্যা করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
নিহত মিষ্টি আক্তার (১৬) উপজেলার সদর ইউনিয়নের পূর্ব দেওয়ানের খামার গ্রামের ফেডারেশন পাড়ার মুকুল হোসেনের মেয়ে।
নিহতের পরিবার জানায়, কিশোরী মিষ্টি একটি প্যাকেজিং (ঠোংগা) তৈরির দোকানে কাজ করতো। গত তিন-চার দিন আগে পাশের বাড়ির বখাটে নাঈম সরকার মিষ্টির শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে। পরে বিষয়টি মীমাংসার জন্য সালিশি বৈঠক হয়। কিন্তু বৈঠকে কোনো সমাধান না হওয়ায় মেম্বার সাহেব আইনি পদক্ষেপ নেয়ার পরামর্শ দেন। এরপর থেকে আইনি পদক্ষেপ না নিতে কিশোরী মিষ্টিকে হুমকি দেয় নাঈমের পরিবার।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা!
তারা জানায়, রবিবার সকালে কাজে যাওয়ার উদ্দেশ্য মিষ্টি বাড়ি থেকে বের হলে নাঈম ও তার পরিবারের সদস্যরা অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে লাঠি দিয়ে মারার চেষ্টা ও অপমান করে। এই অপমান সহ্য করতে না পেরে বাড়ি ফিরে ঘরের দরজা বন্ধ করে আত্মহত্যা করে মিষ্টি।
এ ঘটনার পর থেকে নাঈমের পরিবারের সদস্যরা পলাতক রয়েছে।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য (মেম্বার) সোহরাব হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন: ঈদে নতুন জামা না পেয়ে অভিমানে কিশোরীর আত্মহত্যা
ভুরুঙ্গামারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন জানান, কিশোরীর লাশ উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে এবং ময়নাতদন্তের জন্য কুড়িগ্রাম মর্গে পাঠানো হবে। অভিযোগ পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কুড়িগ্রামে আটকের ৩ ঘন্টা পর বাংলাদেশিকে ফেরত বিএসএফের
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী সীমান্তে আটকের তিন ঘন্টা পর হাবিবুল ইসলাম (৪১) নামে এক বাংলাদেশিকে ফেরত দিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। শনিবার সকাল ১১টার দিকে তাকে ফেরত দেয় তারা। এর আগে এদিন সকাল ৮টার দিকে তাকে আটক করে বিএসএফ।
আটক হাবিবুল ইসলাম ফুলবাড়ী উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের গোড়কমন্ডল কৃঞ্চানন্দ বকসী গ্রামের হাসমত আলীর ছেলে।
আরও পড়ুন:চুয়াডাঙ্গায় বিজিবি-বিএসএফের সীমান্ত বৈঠক
বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, হাবিবুল ইসলাম শনিবার সকালে ভারতীয় সীমান্তের আন্তর্জাতিক মেইন পিলার ৯২৯ এর কাছ দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করে। তিনি কোচবিহার জেলার দিনহাটা থানার মরাকুটি ভূরামপাকিস্থি এলাকার বাসিন্দা ফেলদেওয়ারের জেমিত দিনহাজিরায় পাট কাটতে যায়। এসময় ভারতীয় গিদালদহ ক্যাম্পের টহলরত এক বিএসএফ সদস্য তাকে আটক করে। খবর পেয়ে বিএসএফ সদস্যদের কাছে বাংলাদেশি ওই নাগরিককে ফেরত দিতে মৌখিকভাবে জানায় বিজিবি। এ ঘটনার তিন ঘন্টা পর বেলা ১১টার দিকে হাবিবুল ইসলামকে বিজিবি’র মাধ্যমে ফেরত দেয় বিএসএফ।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে লালমনিরহাট ১৫ বিজিবি’র গোড়কমণ্ডল ক্যাম্পের ক্যাম্প কমান্ডার মো. খলিলুর রহমান জানান, আটকের খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে দিনমজুরকে ফেরত চেয়ে বিএসএফ’র কাছে অনুরোধ জানাই আমরা। এর তিন ঘন্টা পর তারা আটক বাংলাদেশিকে ফেরত দেয়।
আরও পড়ুন:ঢাকায় বিজিবি-বিএসএফ ডিজি পর্যায়ের সীমান্ত সম্মেলন শুরু
পাটগ্রাম সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি আহত
কুড়িগ্রামে বিদ্যুৎপৃষ্টে ২ জনের মৃত্যু
কুড়িগ্রামে পৃথক স্থানে বিদ্যুৎপৃষ্টে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার উলিপুর উপজেলার পৌরসভা এলাকার ১ নং ওয়ার্ডের পশ্চিম নাওডাঙ্গা গ্রামের আদর্শ পাড়ায় এবং ফুলবাড়ী উপজেলায় এই পৃথক ঘটনা দুটি ঘটে।
নিহতরা হলেন- ওই গ্রামের মফিজল হকের ছেলে নুরনবী মিয়া (১৮) এবং উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের অনন্তপুর গ্রামের তোবার উদ্দিনের ছেলে রফিকুল ইসলাম (৪৫)।
এলাকাবাসী ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, সকালে ঘুম থেকে উঠে বাড়ির পাশের জমিতে ধানের চারা লাগানোর জন্য জমি প্রস্তুত করতে যান নুরনবী। সেই জমির সীমানায় পোতানো বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে সংযুক্ত আর্থিং তারের গোড়ায় মাটি তুলে দেয়ার সময় কোদালের আঘাতে নড়বড়ে হয়ে যায় আর্থিং তারটি। পরে বাড়ি গিয়ে ঘটনাটি জানায় নুরনবী। পরে সে আবার জমিতে ফিরে এসে বিষয়টি বিদ্যুৎ অফিসকে না জানিয়ে নিজে নিজে ঠিক করার চেষ্টা শুরু করে। এ সময় আর্থিং তারটি বিদ্যুতের মূল তারের সঙ্গে লেগে যায়। সঙ্গে সঙ্গে নুরনবী বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয় এবং ঘটনাস্থলেই মারা যান।
এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে পল্লী বিদ্যুতের উলিপুর উপজেলা জোনাল অফিসের এজিএম রাকিবুল হাসান বলেন, ‘বিদ্যুতের আর্থিং তার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার বিষয়টি আমাদের আগে জানানো হলে আমরা নিজেরাই ঠিক করতাম। আমরা কাউকে নিজে নিজে এগুলো ঠিক করতে বলি না। ঘটনার পরপরই আমাদের লোক পাঠিয়ে মেরামত করেছি। এক্ষেত্রে সবাইকে আরও সচেতন হতে হবে।’
অপর দিকে, রফিকুল ইসলাম বৈদ্যুতিক সেচ দিয়ে পুকুরের পানি সেচতে গিয়ে বিদ্যুৎপৃষ্ট হন। পরে স্থানীয়রা তাকে দ্রুত উদ্ধার করে ফুলবাড়ী হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
উলিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত র্কমর্কতা (ওসি) ইমতিয়াজ কবির ও ফুলবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত র্কমর্কতা (ওসি) ফজলুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এ ব্যাপারে থানায় ইউডি মামলা দাযের করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: নীলফামারীতে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে শিশুর মৃত্যু
বরিশালে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে বাস চালকের সহকারীর মৃত্যু
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে মন্দির ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে রাতের অন্ধকারে মন্দির ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন কুড়িগ্রামের পুলিশ সুপার সৈয়দা জান্নাত আরা। এছাড়াও ঘটনা তদন্তে ঘটনাস্থলে জনপ্রতিনিধিসহ পুলিশের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারা সেখানে উপস্থিত রয়েছেন। মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে ১টার দিকে উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের নাগডাঙ্গা গ্রামে স্থানীয় রতিকান্ত রায়ের বাড়ি সংলগ্ন মন্দিরে এই ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে জমি সংক্রান্ত বিরোধে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে এ ধরনের ঘটনা ঘটানো হতে পারে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রতিকান্ত রায়ের দাদা শিরিষ চন্দ্র রায় প্রায় ৩৫ বছর আগে লালমনিরহাট জেলার মোগলহাট এলাকার আব্দুস ছামাদ ঘাটিয়ালের কাছে তিন দাগে ৬০ শতক জমি বিক্রি করেন। সেই জমির মধ্যে দুই শতক জায়গায় মন্দিরটিও ছিল। ছামাদ ঘাটিয়ালের এক স্ত্রী ও তার দুই ছেলে দীর্ঘদিন ধরে সেখানেই বসবাস করে আসছিল। এরমধ্যে মন্দিরের দুই শতক জায়গার পরিবর্তে অন্য জায়গায় দুই শতক জমি রেওয়াজ বদল করে লিখে দেয়ার জন্য চাপ দিয়ে আসছিল ছামাদের দুই ছেলে। এনিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সালিশ বৈঠকে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। সর্বশেষ গত ৬ মে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি, মেম্বার ও ইউপি চেয়ারম্যান দুই শতক জায়গা মন্দির ও সড়কের জন্য ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত সালিশ বৈঠককারীরা চাপিয়ে দেন ছামাদের দুই ছেলের ওপর।
এরপর সোমবার (৮আগস্ট) দুপুরে মন্দির সংলগ্ন জায়গায় অবস্থিত বাঁশ কাটতে যায় ছামাদের বড় ছেলে শহিদুল। সে একটি বাঁশ কাটার পর রতিকান্ত ও তার ভাই শিবচরণ বাঁশ কাটতে বাঁধা দেয়। এনিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরে রাতেই মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় এলাকার উভয় সম্প্রদায়ের লোক হতবাক। যারাই এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকুক না কেন ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনের দাবি স্থানীয়দের।
আরও পড়ুন: বাগেরহাটে মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুর, আটক ৩
মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা পরিবারের সদস্য মহাদেব ওরফে পঁচা রায়ের ছেলে রতিকান্ত রায় জানান, পারিবারিকভাবে আমার বাপ-দাদারা মন্দিরে পূজা-অর্চনা করে আসছে। মাঝরাতের দিকে প্রতিবেশীদের ডাকে ঘুম থেকে উঠে দেখি মন্দিরে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। নেভানোর আগে মন্দিরের ৪০ভাগ আগুনে পুড়ে গেছে। কারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে আমি দেখতে পাইনি। আমি এর বিচার চাই।
এদিকে অভিযোগের তীর যাদের দিকে তাদের মধ্যে ছামাদ ঘাটিয়ালের ছোট ছেলে দিনমজুর আজিমুল জানান, ১৯৮৮ সালে তার বাবা ছামাদ ঘাটিয়াল তার মাসহ দুই ভাইকে তিন দাগে ৬০শতক জমি কিনে এখানে বাড়ি করে দেন। ছামাদ ঘাটিয়াল আরেক স্ত্রীসহ লালমনিরহাট জেলার মোগলহাটে বসবাস করেন। এখানে তিন দাগে প্রাপ্ত ৩৫ শতক, ১১শতক ও ১৪ শতক দাগের মধ্যে ১৪ শতক জমির মধ্যে মন্দিরটি পড়ে যায়। এনিয়ে রতিকান্ত ও তার ভাই শিবচরণের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে এই পরিবারের দ্বন্ধ চলে আসছিল। এর আগে ২০০৭ সালে তাকে, তার মা ও স্থানীয় চার হিন্দু পরিবারের সদস্যদের নামে মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছিল। গত সোমবার (৮আগস্ট) তার বড় ভাই শহিদুল মন্দিরের পিছন থেকে একটি বাঁশ কাটতে যায়। এনিয়ে শহিদুলের সঙ্গে রতিকান্ত ও শিবচরণের মধ্যে ঝগড়া হয়। তারপর রাতেই মন্দিরে আগুনের ঘটনা ঘটে। মন্দিরে আগুন দিলে আমাদের কি লাভ। আমাদেরকে ফাঁসানোর জন্য এটা করা হয়েছে। আমরা এখানে প্রায় ৩০টি হিন্দু পরিবারের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে মিলেমিশে বসবাস করে আসছি। আমরা এই কাজ কেন করতে যাবো।
ফুলবাড়ী নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের হিন্দু বৌদ্ধ খৃষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রতন রায় বলেন, প্রতিমা ভাংচুর ও মন্দিরে আগুন ধরিয়ে দেয়ার ঘটনা তাদের জন্য হুমকি। দুর্বৃত্তরা হিন্দুদের মাঝে আতংক সৃষ্টি করতে এ ঘটনা ঘটাতে পারে। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে। সুষ্ঠু বিচার না পেলে প্রয়োজনে আন্দোলনের পথ বেচে নেয়া হবে।
বিষয়টি নিয়ে ফুলবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানান, আমরা ১০টার দিকে খবর পেয়ে সকাল সাড়ে ১০টায় ঘটনাস্থলে পৌঁছাই। এখানে সকলের সঙ্গে কথা বলে অনুমান করা হচ্ছে রাত ১২টা থেকে ১টার মধ্যে দুর্বৃত্তরা মন্দিরে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটিয়েছে। এখানে এসে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের বিষয়টিও উঠে এসেছে। আমরা উভয়পক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। এ ঘটনায় থানায় মামলা দেয়ার জন্য ক্ষতিগ্রস্তদেরকে জানিয়েছি। তারা নিজেদের মধ্যে বুঝে পরবর্তীতে মামলা করবে বলে জানিয়েছে। মামলা হলে তদন্ত করে প্রকৃত ঘটনা জেনে পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে কারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে এখন পর্যন্ত তা জানা যায়নি।
পুলিশ সুপার সৈয়দা জান্নাত আরা জানান, আমি দুপুরে ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করেছি। সকল পক্ষের সঙ্গে কথাও বলেছি। এ ব্যাপারে মামলা করার নির্দেশ দিয়েছি। মামলা হলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আরও পড়ুন: পটুয়াখালীতে মন্দিরে কোরআন রাখার অভিযোগে গ্রেপ্তার ১
নোয়াখালীতে মন্দিরে হামলা ও লুঠপাটের ঘটনায় গ্রেপ্তার ৪
কুড়িগ্রামে বজ্রপাতে নারীর মৃত্যু
কুড়িগ্রামের সদর উপজেলায় বজ্রপাতে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। রবিবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার বেলগাছা ইউনিয়নে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত মিনারা বেগম (৪৫) পশ্চিম কল্যাণ গ্রামের দিনমজুর দবির উদ্দিনের স্ত্রী।
আরও পড়ুন: বজ্রপাতে মাগুরায় এসএসসি পরিক্ষার্থীসহ মৃত্যু ২
বেলগাছা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান লিটন মিয়া বলেন, ‘সকালে বৃষ্টির সময় কাজের খোঁজে বের হন মিনারা বেগম। এ সময় হঠাৎ বৃষ্টির প্রকোপ বাড়লে তিনি বাড়ির পাশে খোলা মাঠে একটি ইউক্যালিপটাস গাছের নীচে আশ্রয় নেন এবং সেখানে বজ্রপাতে তার মৃত্যু হয়।’
জুয়া খেলাকে কেন্দ্র করে ছুরিকাঘাতে যুবকের মৃত্যু
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলায় জুয়া খেলাকে কেন্দ্র করে ছুরিকাঘাতে আহত যুবক চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। বুধবার (২৭ জুলাই) রাত ৯টার দিকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
নিহত মজিদুল ইসলাম (৩৩) উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের চরগোরকমন্ডল এলাকার আবেদ আলীর ছেলে।
এর আগে মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) দিবাগত রাতে উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের চরগোরকমন্ডলের ধরলা নদীর তীরবর্তী এলাকায় কয়েকজন যুবক মিলে তাসের মাধ্যমে জুয়া খেলা শুরু করে। খেলা শেষে প্রতিপক্ষ একই এলাকার জেল হোসেনের ছেলে হারান মিয়া (৪২) নিহত যুবকের কাজ থেকে টাকা ছিনতাই করার চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে ওই যুবককে পেটে চুরিকাঘাত করে ৪০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যান।
এ সময় মজিদুলের সহযোগী তৈয়ব আলী দ্রুত তাকে উদ্ধার করে প্রথমে ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে তার অবস্থা অবনতি হলে ভোর রাতে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ভর্তি করেন। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই যুবক মারা যান।
ফুলবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফজলুর রহমান যুকরের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
পড়ুন: সন্তানদের জবানবন্দি রেকর্ড: বাবুলের ভাই ও মাগুরার সমাজসেবা কর্মকর্তাকে হাইকোর্টের তলব
শাবি শিক্ষার্থী বুলবুল হত্যায় ৩ জনের সম্পৃক্ততা মিলেছে: পুলিশ
সন্ধ্যা-সকাল ৫দিন বন্ধ থাকবে সোনাহাট সেতু
ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় মেরামতের জন্য কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারীর সোনাহাট স্থলবন্দর সড়কের সোনাহাট সেতু পাঁচ দিন সন্ধ্যা-সকাল বন্ধ ঘোষণা করেছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ।
বিভাগের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয় যে ২২ জুলাই (শুক্রবার) হতে আগামী ২৭ জুলাই (বুধবার) সন্ধ্যা ৬টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত সোনাহাট সেতু বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এই সময় স্থল বন্দর থেকে ঢাকাগামী ও ঢাকা থেকে স্থলবন্দরগামী ভারী পণ্যবাহী ট্রাক ও যান চলাচল বন্ধ থাকবে।
এই বিষয়ে উপজেলার সোনাহাট ইউনিয়নের উত্তর ভরতের ছড়া এলাকার অটো চালক জাহিদ মিয়া বলেন, পাঁচ দিন সেতু বন্ধ থাকলেও আমরা তো ভুরুঙ্গামারী শহরে সন্ধ্যার আগ পর্যন্ত যাত্রী নিয়ে যেতে পারবো। এ কয়েকদিন একটু কষ্ট করে চলি।
আরও পড়ুন: ভোলায় ট্রাক-অটোরিকসাসহ বেইলি ব্রিজ ভেঙে খালে, আহত ৩
সোনাহাট স্থল বন্দরের আমদানি-রপ্তানি কারক সমিতির সভাপতি আবু তাহের বলেন, স্থলবন্দর চালু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত সাতবার এই সেতুর সংস্কার কাজ করা হয়েছে। তখন দিনে মালামাল পরিবহন করা গেলেও রাতের বেলা সংস্কার কাজ চলছিল তাতে স্থলবন্দরে পণ্য আমদানি রপ্তানিতে কোনো ধরনের বিঘ্ন সৃষ্টি হয়নি। এভাবে কাজ করলে আশা করি সমস্যা হবে না।
আরও পড়ুন: রাঙ্গামাটিতে বেইলি ব্রিজ ভেঙে ট্রাক নদীতে, নিহত ৩
কুড়িগ্রাম সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ব্রিজের প্লেটগুলো আগের থেকে অনেক বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। তাই দুর্ঘটনা এড়াতেই মূলত আমরা পাঁচ দিন সেতু সংস্কারের জন্য ঘোষিত প্রতিদিনের নির্ধারিত সময়ের জন্য বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। পাঁচ দিন বন্ধের জন্য মাইকিং করেছি, হয়ত তিন দিনের মধ্যে কাজ শেষ হয়ে যাবে। অর্থাৎ নির্ধারিত দিনের আগেই সংস্কার কাজ শেষ হয়ে গেলে সঙ্গে সঙ্গে চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হবে।
ধাওয়া খেয়ে নদীতে পড়ে নিখোঁজ, ভাই-বোনের লাশ ফেরত দিল বিএসএফ
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী সীমান্তে বিএসএফের ধাওয়ায় নদীতে ডুবে মৃত দুই শিশুর লাশ উদ্ধারের দুইদিন পরে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে কাশীপুর ইউনিয়নের ধর্মপুর সীমান্তে আন্তর্জাতিক পিলার ৯৪২ এর সাব পিলার ৮ এস’র পাশে বিএসএফ-বিজিবি পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে লাশ হস্তান্তর করে বিএসএফ।
নিহত শিশুর চাচা নেওয়াশী ইউনিয়ন ওয়ার্ড সদস্য আজিজুল জানান, তার ভাই রহিজ উদ্দিন ১৫ বছর আগে কাজের সন্ধানে অবৈধভাবে ভারতের হরিয়ানা রাজ্যে যান। একটি ইটভাটায় কাজ করেন। সেদেশেই ওই দুই শিশুর জন্ম ও বেড়ে ওঠা।
আরও পড়ুন: বিজয়ের ৫০ বছর উপলক্ষে বিএসএফকে মিষ্টি উপহার
তিনি জানান, শনিবার ভোরে দালালের মাধ্যমে রহিচ উদ্দিন (৩৮) ও তার স্ত্রী সামিনা খাতুন (৩৩) তাদের দুই সন্তানকে নিয়ে অবৈধভাবে ভারত থেকে বাংলাদেশে আসছিলেন। সীমান্তে নীলকমল নদীর তীরে বিএসএফ সদস্যরা তাদের ধাওয়া করলে দালালদের কথা অনুযায়ী তারা নদীতে ঝাঁপ দেন। কিন্তু নদীতে প্রবল স্রোত থাকায় শিশু দুটি ভেসে যায়। তবে রহিচ উদ্দিন ও তার স্ত্রী সামিনা খাতুন প্রাণে বেঁচে যান। পরদিন বরিবার নদী থেকে শিশু দুটির লাশ উদ্ধার করে বিএসএফ।
কুড়িগ্রামে বয়ে যাচ্ছে মৃদু তাপপ্রবাহ, বিপাকে শ্রমজীবী মানুষ
কুড়িগ্রামে বয়ে যাচ্ছে মৃদু তাপপ্রবাহ। মঙ্গলবার জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৫ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা আরও দু-তিনদিন অব্যাহত থাকতে পারে বলে কুড়িগ্রামের রাজারহাট আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সবুর হোসেন।
মঙ্গলবার বিকালে তিনি জানান, আজ কুড়িগ্রাম জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৫ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এতে করে জেলাজুড়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এই অবস্থা আরও দু-তিন দিন চলতে পারে।
এই কর্মকর্তা বলেন, 'আগামী ২৪ ঘন্টায় কোথাও কোথাও বৃষ্টি হতে পারে। আগামী দুই-তিন দিন তাপমাত্রা বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলেও রাতের তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকতে পারে।'
তবে এদিকে আবার বিদ্যুৎ বিপর্যয়ে অতিষ্ঠ এ জেলার মানুষ। গত কয়েকদিনের ভ্যাপসা গরমে জনজীবন যখন অতিষ্ঠ তখন বিদ্যুতের এমন আসা-যাওয়ার লুকোচুরি খেলায় বেকায়দায় পড়েছেন জেলার বিভিন্ন উপজেলার মানুষজন।
সদরের পাঁচগাছী ইউনিয়নের নুরুল মিয়া বলেন, দিনে-রাতে বিদ্যুৎ কতবার যায় আসে তার কোন হিসাব নেই, খুব সমস্যা হচ্ছে। আমি অটোরিকশা চালাই রাতে চার্জ হচ্ছে না। এখন গাড়ি চার্জ দেই কখন, আর ভাড়া মারি কখন।
একই এলাকার কম্পিউটার ব্যবসায়ী নুরুন্নবী বলেন, কারেন্ট ঠিকমত না থাকায় ব্যবসা-বাণিজ্যে খুব সমস্যা হচ্ছে, একবার গেলে দুই ঘন্টা থাকেনা, আবার আসে অল্প সময়ের জন্য আবার চলে যায়। এভাবে আসা যাওয়া করলে আমরা ব্যবসা করি কিভাবে।
এদিকে তীব্র গরমে বিপাকে পড়েছেন শিশু ও বৃদ্ধরা। গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পরেছেন খেটে-খাওয়া ও শ্রমজীবী মানুষজন। যেসময় বিদ্যুৎ থাকে ফ্যানের বাতাসেও স্বস্তি মিলছে না।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে কমেছে নদ-নদীর পানি, বেড়েছে ভাঙন
কুড়িগ্রাম পৌরশহরের ফল ব্যবসায়ী আবু মিয়া বলেন, কয়েকদিন থেকে প্রচুর গরম পড়ছে দোকানে থাকা যাচ্ছে না। ব্যবসা না করলে তো আর চলবে না। যতই গরম হোক না কেন আমার দোকানে থাকতে হবে। তবে বিদ্যুৎ যদি নিয়মিত থাকত তাহলে গরমটা একটু কম বোঝা যেত।
জিয়া বাজার এলাকার কুঠির শিল্পের ব্যবসায়ী মাঈদুল ইসলাম বলেন, প্রতি সপ্তাহে আমি দুই দিন বিভিন্ন প্রকার মালামাল এখানে বিক্রি করি। আজ বাঁশের তৈরি ১০০ হাত পাখা বিক্রি করলাম। যা এবছর সর্বোচ্চ। এ বছরে কোনদিন এত হাতপাখা বিক্রি করতে পারি নাই। যে গরম পড়ছে আশা করছি আরও ৫০টা হাতপাখা বিক্রি করতে পারবো।
এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম-লালমনিরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির দায়িত্বে থাকা লালমনিরহাটের আদিতমারি জোনের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মোস্তফা কামাল বলেন, গ্যাস স্বল্পতা ও জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধিতে মূলত বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে। এ কারণেই মুলত সারাদেশের মত কুড়িগ্রামেও লোডশেডিং হচ্ছে।
আরও পড়ুন: বন্যায় কুড়িগ্রামে কৃষি খাতে ক্ষতি ১২৭.৫৪ কোটি টাকা
কুড়িগ্রামে কমেছে নদ-নদীর পানি, বেড়েছে ভাঙন
কুড়িগ্রামে নদ-নদীর পানি কমে বন্যা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নতি হয়েছে। তবে বানভাসিদের কষ্ট রয়েই গেছে। বাড়িঘর থেকে পানি নেমে যেতে শুরু করলেও নিজ বাড়িতে ফিরতে পারছেন না তারা। আরও বেশ কয়েকদিন সময় লাগতে পারে।
এদিকে, এক সপ্তাহ ধরে জেলার সবকটি নদ-নদীতে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এ যেন মরার ওপর খাঁড়ার ঘা। একদিকে বন্যার চাপ অন্যদিকে নদী ভাঙন। এতে বন্যার্ত ও নদী পাড়ের মানুষের মধ্যে মারাত্মক সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। ভাঙনের মাত্রা তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে।
আরও পড়ুন: অসময়ে যমুনার ভাঙনে দিশেহারা নদীপাড়ের মানুষ
তাছাড়া বন্যার পানি নেমে গেলেও পানিবাহিত নানা রোগ দেখা দিয়েছে। খাদ্য সংকট অনেক এলাকায় দেখা দিলেও সরকারি বেসরকারি পর্যায়ে যে ত্রাণ সহায়তা দেয়া হচ্ছে তা পর্যাপ্ত নয় বলে জানিয়েছে বানভাসিরা। অনেকেই একবার ত্রাণ পেলেও আরও প্রয়োজন বলে জানান।
একদিকে বন্যার চাপ অন্যদিকে নদী ভাঙন। এতে বন্যার্ত ও নদী পাড়ের মানুষের মধ্যে মারাত্মক সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।
সোমবার বিকালে স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের সূত্রে জানা গেছে, তিস্তা, ধরলা, দুধকুমর ও ব্রহ্মপুত্র নদের ২২টি পয়েন্টে এখন ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে তিস্তা নদীর তীব্র ভাঙনে রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়াল ডাঙা ইউনিয়নের পাড়ামৌলা,ঘড়িয়ালডাঙা ও খিতাব খাঁ এলাকায় এবং সদর উপজেলার ধরলা নদীর ভাঙনে হলোখানা ইউনিয়নের সারডোব গ্রাম এবং উলিপুরে ব্রহ্মপুত্র নদের তীব্র ভাঙনে বজরা গ্রামে দেড় শতাধিক বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলিন হয়েছে। আরও ঘর বাড়ি,শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য স্থাপনা নদী ভাঙনে হুমকিতে রয়েছে।
আরও পড়ুন: সিলেটে নদী ভাঙনে হুমকির মুখে বিশ্বনাথের গোবিন্দনগর গ্রাম
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, তিস্তা ও ধরলার বেশ কয়েকটি পয়েন্টে তীব্র নদী ভাঙন চলছে। তবে ভাঙন প্রতিরোধে বিভিন্ন পয়েন্টে বালুর বস্তা ফেলে নিবারণের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলে জানান তিনি।